সাতক্ষীরায় দিনদিন বেড়েই চলেছে দেশের ‘সাদা সোনা’ খ্যাত রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের ঘটনা। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না অসাধু মাছ ব্যবসায়ীদের এ কর্মকাণ্ড।
অসাধু ব্যবসায়ীদের দমনে মাঝে মাঝে অভিযান চালায় প্রশাসন। কিন্তু বেশিরভাগ সময় প্রশাসনের নজর এড়িয়ে বিভিন্ন মাছ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে অপদ্রব্য পুশকৃত গলদা ও বাগদা চিংড়ির চালান।
রপ্তানিকারকদের অজান্তেই ওই মাছ চলে যাচ্ছে ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আর সেখানে গিয়ে চিংড়িতে ধরা পড়ছে ‘ম্যালাকাউট গ্রিন’ নামের একটি পদার্থ।
ম্যালাকাউট গ্রিন এক ধরনের টেক্সটাইল ডাই। যা মাছের ক্ষেত্রে অ্যান্টি প্রোটোজোয়াল ও অ্যান্টি ফাঙ্গাস হিসেবে কাজ করে। রপ্তানি হওয়া কোনো মাছে এই পদার্থের উপস্থিতিতে পেলে তা আবার দেশে ফেরত আসছে। ফলে নিজেদের অজান্তেই আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
এভাবে পথে বসার উপক্রম হয়েছেন দেশের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক।
সম্প্রতি সাতক্ষীরার একজন ব্যবসায়ীর চার কন্টেইনার চিংড়ি ইউরোপ থেকে দেশে ফেরত এসেছে। এতে দিনদিন বিশ্ববাজারে সুনাম ও ঐতিহ্য হারাচ্ছে সাতক্ষীরার চিংড়ি। মাঝেমধ্যে রপ্তানিতে পড়ছে নিষেধাজ্ঞা। ব্যাপক হারে হচ্ছে চিংড়ির দরপতন।
জেলার শ্যামনগর, কালীগঞ্জ, সদর, তালা, আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ সক্রিয় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে দীর্ঘদিন ধরে তারা এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিরিঞ্জ ও সুঁচের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য চিংড়িতে জেলি, সাগুদানা, ফিটকির’র মিশ্রণ, পানিতে ভেজানো চিড়া ও ভাতের মাড়ের মিশ্রণ ইনজেক্ট করে চিংড়ির ওজন ও সাইজ বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
খুচরা ক্রেতারা স্থানীয় ঘের ও আড়ত থেকে চিংড়ি কিনে বাড়িতে নিয়ে পরিবারের সবাই মিলে তাতে অপদ্রব্য পুশ করছে। পরে গ্রেড অনুসারে পুশকৃত ওই চিংড়ি চড়া দামে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানে বিক্রি করে অর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ফলে শুধু বিশ্ববাজারে নয়, দেশের বাজারেও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা।
রপ্তানিযোগ্য বাগদা ও গলদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ ঠেকাতে সম্প্রতি কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন দেবহাটার পারুলিয়া চিংড়ি বণিক সমিতি। অপদ্রব্য পুশের সময় কোনো অসাধু ব্যবসায়ী হাতেনাতে ধরা পড়লে জরিমানার পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সমিতির নেতৃস্থানীয়রা। এর মধ্যে কয়েকজন অসাধু চিংড়ি ব্যবসায়ীকে জরিমানাও করেছেন তারা। সমিতির তৎপরতায় বর্তমানে দেবহাটার পারুলিয়ায় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বেশ কমেছে। তবে জেলার অন্যান্য এলাকাগুলোতে দেদারসে চলছে এই অবৈধ কাজ।
এদিকে পারুলিয়ায় অপদ্রব্য পুশ কার্যক্রম চালাতে না পেরে অসাধু ব্যবসায়ীরা বর্তমানে আশপাশের এলাকাগুলোতে গোপনে আস্তানা গেড়েছেন।
পারুলিয়া চিংড়ি বণিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্নুর বলেন, ‘আমাদের তৎপরতায় পারুলিয়াতে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা অনেক কমে গেছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন আশপাশের এলাকা থেকে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করে তারপর পারুলিয়াসহ বিভিন্ন মৎস্য শেডে এনে বিক্রি করছেন।
‘উপজেলার গাজীরহাট মৎস্য শেড, শশাডাঙ্গা মৎস্য শেড এবং আশাশুনির মহিষকুড়, হলদিপোতা ব্রীজ এলাকা, বদরতলা মৎস্য শেড ও ব্যাংদহা এলাকা এখন অসাধু ব্যবসায়ীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।’
ফলে অপদ্রব্য পুশ কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সে সঙ্গে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে ওই এলাকাগুলোতে অভিযান পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘চলতি মৌসুমে সাতক্ষীরায় ৬৮ হাজার হেক্টর জমিতে প্রায় ৬০ হাজার ঘেরে চিংড়ি চাষ করা হচ্ছে। এর মধ্যে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ২৬ হাজার টন এবং গলদা চিংড়ির ১০ হাজার টন। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করায় দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
‘অবৈধ পুশ বন্ধে আমরা এর ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরে জেলার ঘের মালিক, চাষি ও ব্যবসায়ীদেরকে বিভিন্নভাবে সচেতন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় পুশকৃত চিংড়ি জব্দ করে তা বিনষ্ট করা হয়েছে।’
সাতক্ষীরার চিংড়ির সুনাম রক্ষায় এ ধরনের কার্যক্রম অব্যহত থাকবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে জৈনসার ইউনিয়নের ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে জেলা পুলিশের বিশেষ কর্মসূচিতে যোগ দি ৩০ শিক্ষার্থী অতিরিক্তি গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
অভিভাবকদের অভিযোগ, জেলা পুলিশের সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে রোববার বেলা ১১টার দিকে তীব্র গরমে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের খোলা মাঠে দীর্ঘ সময় অ্যাসেম্বলি করানো হয়। কর্মসূচিতে সিরাজদিখান থানার এএসআই কামরুল ইসলাম যৌন হয়রানি ও মাদকবিরোধী বক্তব্য দেয়ার সময় ওই শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আমিন উদ্দিন বলেন, ‘দুই মাস আগেই আমাদের স্কুলে অ্যাসেম্বলি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর পরিবর্তে শ্রেণিকক্ষে প্রার্থনা ও শপথ করানো হয়।
‘কামরুল ইসলাম নামে সিরাজদিখান থানার একজন অফিসার আমাদের বিদ্যালয়ে এসে সচেতনতামূলক কথা বলার জন্য শিক্ষার্থীদের মাঠে বের করেছিলেন। ওই সময় শিক্ষার্থীরা গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে।’
সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আঞ্জুমান আরা বলেন, ‘ভবানীপুর বিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে আমার এখানে চিকিৎসা নিয়েছে।’
মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান রিফাত জানান, বিদ্যালয়গুলোর নিয়মিত এসেম্বলিতে অল্প সময়ের জন্য শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি ও মাদক বিষয়ক সচেতনতামূলক বার্তা দেয়া হয়। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পুলিশ ও সরকারি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ভিডিওকে ‘গুজব’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো সুযোগ নেই।’
সম্প্রতি ডিবি প্রধান হারুন সিঙ্গাপুরে নিজের ও স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য ১৩ দিনের ছুটি নেন।
ছুটির আদেশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তিনি আর দেশে ফিরবেন না বলে গুঞ্জন ওঠে।
রোববার নিজ কার্যালয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমাকে নিয়ে নয়, গত কয়েকদিন ধরে দেখা যাচ্ছে দেশের বাইরে থেকেও কিছু লোক সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে ভিডিও করছে। তারা বলছে, অনেক সরকারি কর্মকর্তা দেশের বাইরে যাওয়ার পর ফিরবেন না। এটা সম্পূর্ণ গুজব। সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি প্রাপ্তি একটি দীর্ঘ ও জটিল প্রক্রিয়া। এর জন্য একাধিক স্তরে অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদেরও অন্যদের মতোই পরিবার আছে এবং বিশেষ কারণে তাদের ছুটির প্রয়োজন হয়।’
‘কেউ যদি মনে করে এ ধরনের ভিডিও বানালে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়বে, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। তারা পুলিশের বিরুদ্ধে এসব কথা ছড়িয়ে ভিউ পেতে পারে, অর্থ উপার্জন করতে পারে। কিন্তু আমি পুলিশের মনোবল ভাঙার কোনো কারণ দেখছি না।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরের ভাষানটেকে এক সেনা কর্মকর্তার বাসা থেকে চুরি হওয়া পিস্তল চার বছর পর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) শনিবার রাতে বরিশালের গৌরনদী থেকে আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করে।
এ সময় চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তারেক হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বাড়ির রান্না ঘরের মাটির নিচে অস্ত্রটি লুকানো ছিল।
রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ রাতে বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. সামছুল হুদার বাসায় চুরি হয়।
চোর বাসার গ্রিল কেটে ভেতরে ঢুকে টাকা, ঘড়িসহ বিভিন্ন সামগ্রীর সঙ্গে লাইসেন্স করা বিদেশি পিস্তল, ৫০টি গুলি ও দুটি ম্যাগজিন নিয়ে যায়।
ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ভাষানটেক থানায় মামলা করেন।
পিবিআই জানায়, অবৈধভাবে আগ্নেয়াস্ত্র রাখায় তারেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে চুরির মামলাসহ ভাষানটেক থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় এক কেজি স্বর্ণ, তিনটি মোবাইল ফোন ও দুটি ল্যাপটপসহ এক যাত্রীকে আটক করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে দরজার কব্জার ভেতরে লুকিয়ে তিনি এসব দেশে আনেন।
রোববার সকাল পৌনে ৯টার দিকে এনএসআই ও শুল্ক গোয়েন্দাদের (সিআইআইডি) যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
আটক যাত্রীর নাম আবদুল করিম সজন। ফেনীর পরশুরাম এলাকার বাসিন্দা তিনি।
এনএসআই জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছেন তিনি৷ পরবর্তীতে তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে তাকে তল্লাশি করেন এনএসআই ও সিআইআইডির সদস্যরা।
এ সময় তার ব্যাগ থেকে দরজার কব্জার ভেতর কৌশলে লুকানো ৭৪৬ গ্রাম ওজনের ১২টি দণ্ডাকৃতির স্বর্ণের টুকরো, ১১৬ দশমিক ৫ গ্রাম ওজনের একটি বার এবং ১০০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ওই যাত্রীর ব্যাগ থেকে একটি আইফোন-১৪, একটি রেডমি ফোন ও একটি গুগল পিক্সেল মোবাইলফোন এবং দুটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়৷
কাস্টম শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলন, ‘অবৈধভাবে এসব পণ্য এনে বিপুল অংকের শুল্ক ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন:সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নগর ভবনের ছাদ থেকে লোহার পাইপ পড়ে সেনাসদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়।
মামলায় নির্মাণকাজে অবহেলাজনিত অভিযোগ আনা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ।
ওসি জানান, মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুজনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আকবর, জামাল অ্যান্ড কো.–এর সাইড ইঞ্জিনিয়ার আবদুর রাজ্জাক, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জামাল অ্যান্ড কো.–এর মালিক মো. জামাল উদ্দিন, ক্রেনচালক মো. সাদেক। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক এবং ঠিকাদারকেও আসামি করা হয়।
এর আগে শনিবার দুপুরে বন্দরবাজার এলাকার সিটি সুপার মার্কেটের নিচতলা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় নগর ভবনের ছাদ থেকে লোহার পাইপ পড়ে সেনাসদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন মারা যান।
দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার জগিরগোফার রায়পুর গ্রামে। তিনি ল্যান্স করপোরাল হিসেবে সিলেট ক্যান্টনমেন্টের ৫০ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন।
ওই ঘটনার পরপরই সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটিকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়।
তবে রাতে প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলার পর রোববার তদন্ত কমিটি পুনর্গঠন করেন মেয়র। কমিটি থেকে প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানকে বাদ দেয়া হয়।
পুনর্গঠিত তদন্ত কমিটিতে সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ বদরুল হককে আহ্বায়ক করা হয়।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার হোমনায় স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান আশিক হত্যার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
এ ছাড়া দুজনকে কারাদণ্ড এবং এক আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
রোববার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন হোমনার ২৫ বছর বয়সী মো. সুজন মিয়া, ৩০ বছর বয়সী আল আমিন, ২৫ বছর বয়সী সোহেল মিয়া, ২৭ বছর বয়সী মো. শাহিন মিয়া ও ২৮ বছর বয়সী মো. সোহাগ মিয়া। সেই সঙ্গে তাদের ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ ছাড়া আকিমুল হক মধু ও আবদুর রহমানের সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। খালাস পান মো. সোহেল।
সাজাপ্রাপ্ত সোহেল মিয়া, আকিমুল হক মধু, আবদুর রহমান এবং খালাস পাওয়া মো. সোহেল ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ২০১২ সালে অষ্টম শ্রেণির ছাত্র আশিককে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়।’
আশিকের বাবা মো. হারুন ভূঁইয়া বলেন, ‘উচ্চ আদালতেও যেন এ রায় বহাল থাকে। রায় শিগগির কার্যকর চাই।’
কুমিল্লা আদালতের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান জানান, আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দিতে চলন্ত ট্রাকে ইট নিক্ষেপে আহত হন ব্যবসায়ী মো. ইব্রাহীম। গুরুতর আহত ইব্রাহীমকে তাৎক্ষণিক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তির পরামর্শ দেন চিকিৎসক।
কিন্তু ১৮ ঘণ্টায়ও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে তার জন্য আইসিইউতে শয্যা খালি পাওয়া যায়নি। এতে তার অবস্থার অবনতি হয় এবং তিনি মারা যান।
৬০ বছর বয়সী মো. ইব্রাহীম ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকার বাসিন্দা।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আহত হন তিনি।
এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা শিগগির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু ওই সময় ঢামেক হাসপাতালে আইসিইউর শয্যা খালি ছিল না।
এরপর রাজধানীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে চেষ্টা করেও আইসিইউর শয্যা পাননি স্বজনরা। বাধ্য হয়ে ১৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে এনে তাকে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে শনিবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
স্বজনরা জানান, আহত হওয়ার পর একমাত্র ছেলে ওমর ফারুক ইমনকে কল করেন ইব্রাহীম।
ইমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সহসভাপতি।
আহত ইব্রাহীম ছেলেকে বলেন, ‘ইমন, আমার চোখ-মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
এ বিষয়ে ইমন আক্ষেপ করে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেন। তিনি লিখেন, ‘আমাকে ভরসা করে বাবা কল দেন। আমি বাবার জন্য কিছু করতে পারিনি।’
ভাতিজা কামরুল হোসাইন সবুজ বলেন, ‘ঢাকা মেডিক্যালসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে খবর নিয়ে আইসিইউ না পাওয়ায় তাকে সড়ক পথে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। তিনি গাছের ব্যবসা করতেন। চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকে করে গাছ নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। চালকের পাশের আসনে বসা অবস্থায় হঠাৎ ইট এসে তার মাথার বাম পাশে আঘাত করে।’
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরা তো এ রকম কোনো অভিযোগ পাইনি। শুনেছি, বুধবার সন্ধ্যায় দুজন শিশু একটা গাড়িতে ইট মেরেছিল। ওই ইটে চালক বা তার পাশে থাকা কেউ আহত হন৷’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিস্তারিত জানতাম না। কেউ আমাদের কাছে অভিযোগও জানায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে টোল প্লাজার পাশে। ৬টার দিকে ডাকাতি হয় না বা হওয়ার কথাও না। আমরা তবুও ঘটনাটি তদন্ত করছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য