মাসে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ২ দিনে ১৫ হাজার টাকার খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে। হোটেলে ঢুকে জোর করে খাবার খাওয়া সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তদের সবার পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ওই দোকানের কর্মচারীরা ছবি দেখে ওই কাজে নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজনকে শনাক্ত করেছেন, যাদের তিনজনই ছাত্রলীগের নেতা।
শনাক্ত হওয়া ওই তিনজন হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাকিবুল সুজন এবং স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সিফাত আহমেদ।
সাকিবুল সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের এবং সিফাত আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
আরেক অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের একান্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
হোটেল মালিক পক্ষ বলছে, অভিযুক্ত এই তিনজনের মধ্যে আরিফুল ইসলাম ও সাকিবুল সুজন এই ঘটনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় কয়েক ব্যক্তি এসে হোটেলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেনকে বলেন, ‘এখানে হোটেল ব্যবসা করতে হলে আমাদেরকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।’
হোটেল ম্যানেজার টাকা দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যান। যাওয়ার সময় টাকার ব্যবস্থা করে যোগাযোগের জন্য একজন তার মোবাইল নম্বর দিয়ে যান। পরে জানা যায়, ওই মোবাইল নম্বরটি ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল সুজনের।
মালিক পক্ষের দাবি, বিষয়টি নিয়ে একই দিন রাতে তারা সাকিবুল সুজন ও সিফাতের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ডাস চত্বরে বসেন। তারা চাঁদা দাবির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে জানাতে চাইলে সাকিবুল সুজন বলেন যে তার ভুল হয়ে গেছে। ওই সময় সেখানে বিভিন্ন হল পর্যায়ের আরও দুইজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। তারা অভিযুক্তদের ক্ষমা করে দিতে বলেন।
হোটেলের কর্মচারীরা জানান, ৬ মে সন্ধ্যায় ১৮ থেকে ২০ জন তাদের হোটেলে আসেন। তারা সবাই ইচ্ছেমতো পরোটা আর গরুর বট খান। বিল আসে চার হাজার টাকা। খাওয়া শেষে তারা চলে যাওয়ার সময় বিল পরিশোধের কথা বললে তারা বলেন- সব টাকা আরিফ (আরিফুল ইসলাম) ভাই দেবেন।
হোটেলের কর্মচারী খোকন বলেন, ‘আমরা তো কোনো আরিফ ভাইকে চিনি না। এ বিষয়ে তাদেরকে আমরা জিজ্ঞাসাও করিনি। কারণ জিজ্ঞাসা করলেই মারবে এমন অবস্থা। এরপর ৭ মে আসেন ২৫জন। এদিনও প্রত্যেকে কয়েক প্লেট করে মাংস নিছে। তারা চাইছে আমরা দিছি। না দিলে তো আমাদের মারত।
‘তাদের খাওয়া শেষে দেখি শাহবাগ থানা পুলিশের একজন দারোগা (এসআই শাহরিয়ার জীবন)। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলে আসেন তাদের সেই আরিফ ভাই আর সাকিবুল সুজন। তখন আরিফ ভাই আমাদের হোটেল বন্ধ করে রাখতে বলেন।
‘আরিফ ভাই এও বলে যান, তাদের সঙ্গে কথা না বলে যেন আমরা হোটেল না খুলি। আর টাকা না দিলে আমাদের দোকান মালিক কবির ভাইকে তুলে নিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলে যান, মাসে ১০ হাজার টাকা না দিলে পরিস্থিতি মাঝেমধ্যেই এমন হবে।’
এই কর্মচারী আরও বলেন, ‘সে সময় শাহবাগ থানার দারোগা আরিফ ভাইকে বলেন, দোকান বন্ধ রাখবে কেন ভাই? দোকান চলুক। তখন সেই আরিফ ভাই বলেন, এই ছেলেরা যদি কালকে এসে আবার ঝামেলা করে সেই দায়দায়িত্ব আপনি নেবেন?
‘এ সময় এসব আলোচনা একজন ভিডিও করলে তাকে মারধর করে তার ভিডিও ডিলিট করে পুলিশের হাতে তুলে দেন ওই আরিফ ভাই। একইসঙ্গে বলেন, তাকে যেন থানায় আটকে রাখা হয়। এরপর আমরা বিস্তারিত আমাদের মালিক কবির ভাইকে জানিয়েছি। তিনি যার কাছ থেকে দোকান ভাড়া নিয়েছেন তাকে জানিয়েছেন। আর তিনিই ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনা করে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, অভিযোগ আসার পর সত্যতা জানতে কয়েকজনকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তারা আমাকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই দোকানের কর্মচারীদের একটা ঝামেলা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ঘটনার সময় উপস্থিত এসআই শাহরিয়ার জীবন বলেন, ‘ছাত্ররা দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। পরে তারা দোকান বন্ধ করে দিতে চাইছে। আর ভিডিও করায় একজনকে মেরে তাকে ভয় দেখাতে আমার হাতে তুলে দেয়া হয়। অবশ্য আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’
দোকানের কর্মচারী খোকন বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি- কোন সময় তারা আবার চলে আসে। তবে ঘটনার সময় আমাদের হোটেলে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। আমরা আজকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছি।’
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দেবে বলে জানায় মালিক পক্ষ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কাউকে কোনো দোকান বন্ধ রাখতে বলা বা চাঁদা দাবি করিনি। সেদিন কয়েকজন ছোট ভাই এসে আমাকে বলে, এই হোটেলে খাবার খেয়ে তাদের পেট খারাপ করেছে। পরে আমি তাদেরকে ঝামেলা না করে চলে যেতে বলি। এতোটুকুই। আর কিছু হয়নি। বাকি যা বলা হচ্ছে সব মিথ্যা-বানোয়াট।’
আর কোনো কথা জিজ্ঞাসা করার সুযোগ না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আরও কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরেক অভিযুক্ত সাকিবুল সুজনও চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ফোন নম্বর কে দিয়ে আসছে আমি জানি না। আমি সেখানে ছিলাম না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি সম্প্রতি এই কবির হোটেলে যাইনি।
‘আর ডাস চত্বরে আমাদের সঙ্গে সিনিয়ররা বসেছিলেন। সেখানেও আমি বলেছি, এই ঘটনায় আমি জড়িত নই।’
অন্য অভিযুক্ত সিফাতও ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি আর আমার বন্ধু সুজন সেখানে খেতে গিয়েছি। খাওয়ার সময় তাদের খাবারে পোকা পেয়েছি। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়েছে। কিন্তু আমরা টাকা পরিশোধ করে এসেছি। আর কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘দোকান মালিক যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে আমরা তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
সিটি করপোরেশনের রাস্তার ওপর খাবারের দোকান থাকবে কেন- এমন প্রশ্ন তুলে সে বিষয়েও সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, ‘এই অভিযোগ আসার পর আমি ঘটনার সত্যতার ব্যাপারে জানতে কয়েকজনকে সেখানে পাঠিয়েছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই দোকানের কর্মচারীদের একটা ঝামেলা হয়েছে।
‘তবে এই ঘটনায় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আরিফ এ কাজ করেননি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও লিখিতভাবে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে হেফজ বিভাগের এক শিক্ষার্থীর দুই নিতম্ব এবং পায়ের তলা পুড়িয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার হোমনায় মাদ্রাসার মুহতামিমের (প্রধান) বিরুদ্ধে। আহত ওই শিক্ষার্থীকে মঙ্গলবার রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলার নয়াকান্দি মমতাজিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোর উপজেলার চান্দেরচর গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় মা হাফেজা বেগম মাদ্রাসার মুহতামিম হাফেজ মো. সাইফুল ইসলাম হাবিব, সহযোগী শিক্ষক আতিকুল ইসলামসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে হোমনা থানায় মামলা করেন। মূল অভিযুক্ত মুহতামিম ও আসামি তিন শিক্ষার্থী পালিয়ে গেছেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
২৮ বছর বয়সী ওই মুহতামিম একই উপজেলার নয়াকন্দি গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে। গ্রেপ্তার শিক্ষক আতিকুল ইসলাম মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার শ্রীকাইল গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির এক বিশেষ সভায় মঙ্গলবার মুহতামিমকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন, ‘দেখে মনে হয়েছে, ১০-১২ দিন আগেই পুড়েছে। দুই নিতম্বেই পুড়ে গিয়ে গভীর ঘাঁ হয়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়েছে।’
নির্যাতিত শিশু আবদুল কাইয়ুম জানায়, ওইদিন সে তার অন্য সহপাঠীদের সঙ্গে খেলাচ্ছলে দুষ্টুমি করছিল। এক ফাঁকে তার পরণের লুঙ্গি খুলে যায়। এর শাস্তি হিসেবে ওইদিন (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে মুতামিম তাকে অফিসে নিয়ে শিক্ষক আতিকুল এবং তিন শিক্ষার্থীর সহযোগিতায় তার নিতম্ব এবং পায়ের তলায় গরম ইস্ত্রি লাগিয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দেন।
ভুক্তভোগীর মা হাফেজা বেগম বলেন, ‘খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় গেলে সে আমাকে দেখে কাঁদতে থাকে। ছেলের মানসিক অবস্থা বুঝে তাক বাড়ি নিয়ে আসি। বাড়িতে এসে সে তার জখমের জায়গা দেখিয়ে পুরো ঘটনা বলে। তারা আমার ছেলের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছে।’
এ বিষয়ে ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, ‘সন্ধ্যায় সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। ছেলেটিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি।’
হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘আবদুল কাইয়ুমকে গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে পোড়ার ঘটনায় মুহতামিম হাফেজ সাইফুল ইসলাম, শিক্ষক আতিকুল ইসলামহ আরও তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মা হাফেজা বেগম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আতিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।’
আরও পড়ুন:আইইএলটিএস পরীক্ষা দিয়ে যারা দেশের বাইরে অভিভাসন, চাকরি বা পড়ালেখা করতে যেতে চান, তাদের জন্য সুখবর নিয়ে এলো ব্রিটিশ কাউন্সিল। ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার এই পরীক্ষায় এতদিন কোনো একটি বিষয়ে আশানুরূপ ফল না আসলে আবার সব বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে হতো পরীক্ষার্থীদের। তবে সেই সমস্যার সমাধান করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এখন থেকে শোনা, পড়া, বলা ও লেখা- কোনো একটি বিভাগে কাঙ্ক্ষিত ফল অর্জনে ব্যর্থ হলে শুধু ওই বিভাগের জন্য পরীক্ষা দিতে আবেদন করা যাবে। ওয়ান স্কিল রিটেক নামের এই পরীক্ষা ব্যবস্থা ভারত, পাকিস্তানের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে চালু থাকলেও এতদিন সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল বাংলাদেশের পরীক্ষার্থীরা। এটি চালুর ফলে একদিকে যেমন কমবে খরচ, অন্যদিকে সব বিভাগে পরীক্ষার প্রস্তুতির ঝামেলা থেকেও মিলবে মুক্তি।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের জনসংযোগ শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রতি সেকশনের ফরম্যাট ও সময় স্বাভাবিক আইইএলটিএস পরীক্ষার মতোই থাকবে। তবে, বাকি তিনটি সেকশনের দক্ষতা যাচাইয়ের প্রয়োজনীয়তা কাটিয়ে অনেকটা সময় বাঁচাতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে আইইএলটিএস অ্যাট দ্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরিচালক অ্যান্ড্রু ম্যাকেঞ্জি বলেন, ‘গ্রাহকদের ফিডব্যাক অনুযায়ী এই ওয়ান স্কিল রিটেক ফিচারটি চালু করা হয়েছে। আমরা জানি, সঠিক প্রস্তুতি এবং সহায়তার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীরা সেরা স্কোর অর্জন করতে পারবেন। তবুও যদি কেউ মনে করে থাকেন যে প্রথম চেষ্টায় ইংরেজি দক্ষতার সঠিক মূল্যায়ন পাননি, তারা ওয়ান স্কিল রিটেকের মাধ্যমে শুধু একটি স্কিলে পুনরায় পরীক্ষা দিতে পারবেন। আমাদের বিশ্বাস, এতে করে পরীক্ষার সঠিক মূল্যায়ন হবে।’
তিনি বলেন, ‘ওয়ান স্কিল রিটেক গ্রহণ করা প্রতিষ্ঠানগুলো আবেদনকারীর মানের সঙ্গে আপস না করেও প্রতিষ্ঠানে ভর্তি আরও সহজ করে তুলতে পারবেন। পরীক্ষার্থীদের পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে এ উদ্যোগ নিয়ে আইইএলটিএস অংশীদাররা গর্বিত।’
আইইএলটিএস ওয়ান স্কিল রিটেক দেয়া পরীক্ষার্থীরা একটি দ্বিতীয় টেস্ট রিপোর্ট ফর্ম পাবেন, যা অভিবাসন ও পড়ালেখার উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। অর্জনকৃত স্কোরের ভিত্তিতে পুরনো অথবা নতুন টেস্ট রিপোর্টের মধ্যে যেকোনোটাই বেছে নিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা।
মূল পরীক্ষার ৬০ দিনের মধ্যে আইইএলটিএস ওয়ান স্কিল রিটেক বুক করা যাবে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশশা বলেন, ‘নতুন এ ফিচার যুক্ত করার ফলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইইএলটিএস টেস্ট এখন একমাত্র প্রধান হাই-স্টেকস টেস্ট, যার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের আইইএলটিএস পরীক্ষার্থীদের সেরা স্কোর অর্জনে সহায়তা করব। এই উদ্যোগের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জনে সহযোগিতা করে আমাদের প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করে তুলতে পেরে আমরা গর্বিত।’
আরও পড়ুন:জ্ঞানভিত্তিক পেশাদারিত্ব, ট্রেনিং এবং ক্যাপাসিটি ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগ, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং বই পড়ার প্রতি আগ্রহী করার অনন্য কার্যক্রমের স্বীকৃতি হিসেবে গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
ইন্ডিয়ান সোসাইটি ফর ট্রেইনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইএসটিডি) কলকাতা চ্যাপ্টারের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ৬ষ্ঠ রিজিওনাল কনফারেন্সে ১৫ ও ১৬ সেপ্টেম্বর ভারতের কলকাতা শহরের বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয় এই কনফারেন্স।
১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত আইএসটিডি এশিয়ান সাবকন্টিনেন্টে প্রতি বছর বিভিন্ন কনফারেন্স আয়োজন করে আসছে। এ বছরের কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘লেভারেজিং সাসট্যানেবিলিটি থ্র টেকনোলজি ফর এজাইল অরগানাইজেশন”।
এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী এবং পশ্চিমবঙ্গের শ্রম ও আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।
গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট রওশন আলি বুলবুল এবং তাকে উত্তরীয় পরিয়ে দেয়া হয়।
রওশন আলি বুলবুল বলেন, ‘আমরা বই পড়ার, শেখার ও শেখানোর যে আন্দোলন শুরু করেছি তা আমাদেরকে অনেক দূর এগিয়ে দিয়েছে। ভালো কাজ তৃপ্তিদায়ক। আর তার জন্যে স্বীকৃতি পাওয়া আরও বেশি আনন্দের কারণ আমাদের ভালো কাজকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আইএসটিডিকে বিশেষ ধন্যবাদ।"
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশ সংগঠন ছিলো কনফারেন্সের স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার।
এতে বাংলদেশ থেকে গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের ১৩ জন সদস্য অংশগ্রহণ করেন। সদস্যরা হলেন রওশন আলী বুলবুল, মোহাম্মাদ ইকরাম হোসেন, ইলিয়াস হোসেন, শোয়েব মাহমুদ রিয়াদ, মো. এমরান হোসেন, মো. মামুনুর রশিদ, রাহিদুল ইসলাম, মোশতারী বেগম, সুজিত কুমার দাস ও ফারজানা কাদের সহ অনেকে।
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্যরা ব্যক্তিপর্যায়ে নিজেদের এবং প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির জন্যে এসব কনফারেন্সে নিয়মিতই অংশ নিয়ে থাকেন। সংগঠনটি ইতিমধ্যে তাদের বিষয়ভিত্তিক সরাসরি পাঠচক্রের ২২৮ তম সপ্তাহ শেষ করেছে।
গ্রীন এইচ আর প্রফেশনালস বাংলাদেশের সদস্যরা ব্যক্তিপর্যায়ে নিজেদের এবং প্রতিষ্ঠানের সমৃদ্ধির জন্যে এসব কনফারেন্সে নিয়মিতই অংশ নিয়ে থাকেন। সংগঠনটি ইতিমধ্যে তাদের বিষয়ভিত্তিক সরাসরি পাঠচক্রের ২২৮ তম সপ্তাহ শেষ করেছে।
দুইদিন ব্যাপী এই কনফারেন্সে প্রথমদিন মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রঞ্জন কুমার মহাপাত্র, এক্সেকিউটিভ ডিরেক্টর এন্ড হেড অব ইন্ডিয়ান অয়েল ইনস্টিটিউট অফ পেট্রোলিয়াম ম্যানেজমেন্ট।
এছাড়াও কনফারেন্সে ৬ টি প্যানেল ডিসকাশন, ১০ টি পেপার প্রেজেনটেশন এবং স্পিরিচুয়ালিটি এন্ড ওয়েলনেস এর উপর ২ টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
প্যানেল আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে ছিল- ফিউচার অফ ওয়ার্ক, ব্যালেন্সিং অটোমেশন এন্ড হিউমান ক্যাপিটাল, আনলিশিং দি পাওয়ার অফ হিউমান ক্যাপিটাল থ্র এনালাইটিক্স, দি চ্যালেঞ্জ অফ এডুকেটিং দি নেক্সট জেনারেশন অফ লিডার, মার্শালিং কাটিং এজ টেকনোলজি ফর টুমোরোস ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এসব আলোচনায় ২৪ জনের মতো অভিজ্ঞ এইচআর ব্যক্তিত্ব, স্পেশালিষ্ট এবং ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ছিলেন গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের উপদেষ্টা মোশাররফ হোসেন, প্রফেসর ড. ফরিদ আহমদ সোবহানি এবং ইউসুফ ইফতি।
মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনায় বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার দিক নির্দেশনা ও তথ্যভিত্তিক এই আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে অংশগ্রহণ গ্রীন এইচ আর-এর সদস্যদের অনুপ্রাণিত করেছে যার মাধ্যমে তাঁরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে কৌশলগত অবদান রাখতে পারবেন। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান তথা দেশের মানবসম্পদ ব্যাবস্থাপনা আরো এগিয়ে যাবে। গ্রীন এইচ আর বাংলাদেশের অংশগ্রহণ এই সম্মেলনকে এক অনন্য মাত্রা দিয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইনস্টিটিউট অফ রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইএস-এর শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড শুরুর সময় বাধা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
রোববার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের তৃতীয় তলায় উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অবস্থান নেন তারা। এই নেতা-কর্মীদের অবস্থান নেয়ার ফলে স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় এবং উপাচার্য তার নিজ কক্ষে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
এর আগে রিমোট সেনসিং অ্যান্ড জিআইস-এর একজন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৩ জন প্রার্থীর নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টা থেকে। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এসে প্রার্থীদের উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষ থেকে বের করে দেন এবং নিয়োগ বোর্ড যাতে না বসে সে লক্ষ্যে উপাচার্য অফিসের প্রধান গেটে অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী অবস্থান নেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক প্রার্থী জানান, নিয়োগ বোর্ড শুরু হওয়ার কথা ছিল সকাল ১০টায়। তারা যথাসময়ে উপাচার্য অফিসের অপেক্ষমাণ কক্ষে বসেছিলেন। এরপর শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী এসে বলেন, আজকে নিয়োগ বোর্ড বসবে না এবং তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলে। তারপর থেকেই তারাা উপচার্য অফিসের বাইরে প্রায় ২ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন।
নিয়োগ বোর্ডে বাধা প্রসঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক আশরাফুল আলম গোলদার বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিরোধী এমন কারো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ হোক তা আমরা চাই না৷ আমাদের দাবিটি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কয়েকবার জানানো হলেও তিনি তা আমলে নেননি। উপাচার্য স্যার আজকে আমাদের অপারগ হয়ে জানিয়েছেন, তিনি চান কিন্তু অনেকের চাপে তা সম্ভব হয় না।’
তিনি আরো বলেন, ‘উপাচার্য বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী লোকদের শিক্ষক হিসেবে নেবেন না এবং তাদেরকে শিক্ষক হিসেবে নিতে কোনো ধরনের চাপ অনুভব করছেন না। এ বিষয়ে আমরা উপাচার্যের সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই।’
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় রসায়ন বিভাগের তিন প্রভাষককে নিয়োগ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইতোমধ্যে নবনিযুক্ত প্রভাষকরা বিভাগে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। এ সময় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদিয়া আফরিন পাপড়িকে নিয়োগ দেয়া হয়নি৷ এ ঘটনার জের ধরে উপাচার্য অফিস অবরোধ করেছেন নেতাকর্মীরা।
রসায়ন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নবনিযুক্ত তিনজন প্রভাষক ৩৯ ব্যাচ, ৪২ ব্যাচ ও ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী৷ তারা প্রত্যেকেই নিজ বর্ষে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন। তবে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পাপড়ি স্নাতকে চতুর্থ ও স্নাতকোত্তরে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল করে বহিস্কৃত ও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাই তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এদিকে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে নিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম বন্ধ থাকার পর অনিবার্য কারণ উল্লেখ করে নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এ বিষয়ে ডেপুটি রেজিস্ট্রার গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, অনিবার্য কারণবশত রোববারের নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নিয়োগ বোর্ডের তারিখ এখনো চূড়ান্ত নয়, চূড়ান্ত হলে এরপর জানিয়ে দেয়া হবে।
ইন্সটিটিউট অফ রিমোট সেন্সিং-এর পরিচালক অধ্যাপক শেখ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বিভাগের জন্য শিক্ষক নিয়োগ খুবই জরুরি ছিল। একটি শুন্য পদের বিপরীতে ২৩ জন ক্যান্ডিডেট ছিল। তবে বোর্ড স্থগিত হওয়া খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আখতারুজ্জামান সোহেল বলেন, ‘প্রশাসন কাকে নিয়োগ দিবে সে বিষয়ে আমাদের কোনো মত নেই৷ সাধরণ শিক্ষার্থী নিয়োগ পেলে আমাদের সমস্যা নাই, কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী কেউ যেন নিয়োগ না হয়৷ এ ছাড়া নিয়োগে স্বজনপ্রীতি বিষয়টি যেন প্রত্যাহার হয় সেটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী কারো নিয়োগ না দেয়ার দাবিকে আমরা সমর্থন করি৷ আমরা চাই না মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পরিপন্থী কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে আসুক।’
ছাত্রলীগের এ ধরনের বাধা ভবিষ্যতে নিয়োগ বোর্ডকে প্রভাবিত করবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘আমি মনে করি এ ধরনের ঘটনার মাধ্যমে নিয়োগ বোর্ড কখনো প্রভাবিত হবে না। নিয়োগ বোর্ড নিয়ম মোতাবেক চলবে।’
আরও পড়ুন:জীবনের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেছেন পাঠদানে। শিক্ষার্থীদের সফলতাই ছিল তার সাফল্য। শিক্ষকতার ৪০ বছর তিনি বাইসাইকেলেই যাতায়াত করেছেন স্কুলে।
এমন এক শিক্ষকের বিদায় ছিল বৃহস্পতিবার। চিরচেনা সেই ক্লাসে এখন আর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে আসবেন না তিনি।
প্রিয় শিক্ষককে বিদায় জানাতে সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা করলেন ব্যাপক আয়োজন। ফুলে সজ্জিত গাড়ি, সামনে মোটরসাইকেলের শোডাউন। হাত নাড়িয়ে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে ফিরছেন বাড়ি।
এতসব আয়োজন কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের বিদায় উপলক্ষে।
৪০ বছরে শিক্ষকতার জীবনের ইতি টেনে বৃহস্পতিবার বাড়ি ফিরেন শিক্ষক সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ম্যানেজিং কমিটি ও সাবেক শিক্ষার্থীরা অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় জানান জাতি গড়ার এ কারিগরকে।
ফুলে সজ্জিত গাড়িতে বিদায়ের আগে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সংবর্ধনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সৈয়দ মো. আবদুল আউয়ালের ব্যক্তিত্ব ও দায়িত্বশীল শিক্ষকতার প্রশংসা করেন অতিথিরা। স্কুল, ম্যানেজিং কমিটি, বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার সামগ্রী দেয়া হয় তাকে।
স্কুল সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৩ সালে নাঙ্গলকোটের টুয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন আবদুল আউয়াল। ১৯৮৩ সালে উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন। তার স্ত্রী, তিন মেয়ে ও এক ছেলে আছে।
উত্তরদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মাসুদুল হক বলেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক ও দীর্ঘদিনের সহকর্মী। এমন নম্র, ভদ্র ও জ্ঞানী মানুষ খুব কমই হয়। স্যারের বিদায়ে আমরা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি।’
বিদায় উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ইদ্রিছ মিয়া বলেন, ‘তিনি আমার ভালো একজন সহকর্মী ছিলেন। আমরা চেষ্টা করেছি ব্যতিক্রমভাবে তাকে বিদায় দিতে।’
বিদ্যালয় সভাপতি ডা. খায়রুল ইমরান অনি বলেন, ‘তিনি ভালো মানুষ। দায়িত্বের প্রতি ছিলেন আন্তরিক। তার পরবর্তী সময়গুলো ভালো কাটুক।’
৪০ বছর চাকরিজীবন শেষ করে বিদায় অনুভূতি জানাতে গিয়ে সিনিয়র সহকারী শিক্ষক আলহাজ সৈয়দ মো. আবদুল আউয়াল বলেন, ‘এটি আমার জীবনের বড় পাওয়া। আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি) বিজনেস ক্লাব-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘মিট দ্য মার্কেটিং সুপারস্টার’।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এই আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের মার্কেটিং জগতের সুপারস্টার ও মেঘনা গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) ফাস্ট-মুভিং কনজিউমার গুডস (এফএমসিজি) বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সৈয়দ আলমগীর। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র অধ্যাপক মুহাম্মদ রিদওয়ানুল হক ও সিইউবির ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর এস এম আরিফুজ্জামান।
সৈয়দ আলমগীর নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, উপস্থাপনা ও কারিগরি নৈপুণ্যসহ বিভিন্ন সফট স্কিল বা বিষয়গত পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান শুধু কাঠামোগত পাঠ্যসূচির মধ্য দিয়ে অর্জন সম্ভব নয়। এগুলো শিখতে হয় সারাজীবন জুড়ে এবং প্রতিনিয়ত ও প্রাত্যহিক জীবনযাপনের ভেতর দিয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বেনজীর রহমানের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে সিইউবির বিভিন্ন অনুষদ সদস্য ও কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সিইউবি-র শতাধিক শিক্ষার্থী এতে অংশগ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন:বিয়ে করলেন অনলাইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘টেন মিনিট স্কুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক এবং একই স্কুলের জনপ্রিয় ইংরেজি শিক্ষক মুনজেরিন শহীদ।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসের মসজিদে তাদের আকদ সম্পন্ন হয়। আয়মান ও মুনজেরিন দুজনেই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিয়ের শাড়িতে আয়মানের সঙ্গে হাতে হাত ধরা একটি ছবি পোস্ট করেছেন মুনজেরিন। তিনি লিখেছেন, আলহামদুল্লিাহ। আমি আমার তারকাকে পেয়েছি।
একই ছবি দিয়ে আয়মান লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ! অনুভূতিটা অদ্ভুত।
এই দম্পতির বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর সেনাকুঞ্জে। এরই মধ্যে আমন্ত্রণপত্রও দেয়া হয়েছে অতিথিদের।
অনেক দিন ধরে গুজব থাকলেও সম্প্রতি এই আয়মান আর মুনজেরিনের বিয়ের একটি দাওয়াতকার্ড ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এক পর্যায়ে তাদের ঘনিষ্ঠজনরা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ শেষ করে ২০১৫ সালে ‘টেন মিনিট স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন আয়মান। ফোর্বসের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সেরা ৩০০ তরুণ উদ্যোক্তার একজন তিনি।
আর মুনজেরিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে স্নাতকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান করে পরে বৃত্তি নিয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেন।
মন্তব্য