মাসে ১০ হাজার টাকা করে চাঁদা দাবি করেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ২ দিনে ১৫ হাজার টাকার খাবার খেয়ে বিল পরিশোধ না করার অভিযোগ উঠেছে। হোটেলে ঢুকে জোর করে খাবার খাওয়া সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
অভিযুক্তদের সবার পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় তাদের সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ওই দোকানের কর্মচারীরা ছবি দেখে ওই কাজে নেতৃত্ব দেয়া কয়েকজনকে শনাক্ত করেছেন, যাদের তিনজনই ছাত্রলীগের নেতা।
শনাক্ত হওয়া ওই তিনজন হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সহ-সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন বিষয়ক উপ-সম্পাদক সাকিবুল সুজন এবং স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক উপ-সম্পাদক সিফাত আহমেদ।
সাকিবুল সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের এবং সিফাত আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
আরেক অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়নের একান্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
হোটেল মালিক পক্ষ বলছে, অভিযুক্ত এই তিনজনের মধ্যে আরিফুল ইসলাম ও সাকিবুল সুজন এই ঘটনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় কয়েক ব্যক্তি এসে হোটেলের ম্যানেজার ইলিয়াস হোসেনকে বলেন, ‘এখানে হোটেল ব্যবসা করতে হলে আমাদেরকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হবে।’
হোটেল ম্যানেজার টাকা দিতে অক্ষমতা প্রকাশ করলে তারা হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যান। যাওয়ার সময় টাকার ব্যবস্থা করে যোগাযোগের জন্য একজন তার মোবাইল নম্বর দিয়ে যান। পরে জানা যায়, ওই মোবাইল নম্বরটি ছাত্রলীগ নেতা সাকিবুল সুজনের।
মালিক পক্ষের দাবি, বিষয়টি নিয়ে একই দিন রাতে তারা সাকিবুল সুজন ও সিফাতের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ডাস চত্বরে বসেন। তারা চাঁদা দাবির বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতকে জানাতে চাইলে সাকিবুল সুজন বলেন যে তার ভুল হয়ে গেছে। ওই সময় সেখানে বিভিন্ন হল পর্যায়ের আরও দুইজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। তারা অভিযুক্তদের ক্ষমা করে দিতে বলেন।
হোটেলের কর্মচারীরা জানান, ৬ মে সন্ধ্যায় ১৮ থেকে ২০ জন তাদের হোটেলে আসেন। তারা সবাই ইচ্ছেমতো পরোটা আর গরুর বট খান। বিল আসে চার হাজার টাকা। খাওয়া শেষে তারা চলে যাওয়ার সময় বিল পরিশোধের কথা বললে তারা বলেন- সব টাকা আরিফ (আরিফুল ইসলাম) ভাই দেবেন।
হোটেলের কর্মচারী খোকন বলেন, ‘আমরা তো কোনো আরিফ ভাইকে চিনি না। এ বিষয়ে তাদেরকে আমরা জিজ্ঞাসাও করিনি। কারণ জিজ্ঞাসা করলেই মারবে এমন অবস্থা। এরপর ৭ মে আসেন ২৫জন। এদিনও প্রত্যেকে কয়েক প্লেট করে মাংস নিছে। তারা চাইছে আমরা দিছি। না দিলে তো আমাদের মারত।
‘তাদের খাওয়া শেষে দেখি শাহবাগ থানা পুলিশের একজন দারোগা (এসআই শাহরিয়ার জীবন)। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলে আসেন তাদের সেই আরিফ ভাই আর সাকিবুল সুজন। তখন আরিফ ভাই আমাদের হোটেল বন্ধ করে রাখতে বলেন।
‘আরিফ ভাই এও বলে যান, তাদের সঙ্গে কথা না বলে যেন আমরা হোটেল না খুলি। আর টাকা না দিলে আমাদের দোকান মালিক কবির ভাইকে তুলে নিয়ে যাবেন বলেও হুমকি দেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলে যান, মাসে ১০ হাজার টাকা না দিলে পরিস্থিতি মাঝেমধ্যেই এমন হবে।’
এই কর্মচারী আরও বলেন, ‘সে সময় শাহবাগ থানার দারোগা আরিফ ভাইকে বলেন, দোকান বন্ধ রাখবে কেন ভাই? দোকান চলুক। তখন সেই আরিফ ভাই বলেন, এই ছেলেরা যদি কালকে এসে আবার ঝামেলা করে সেই দায়দায়িত্ব আপনি নেবেন?
‘এ সময় এসব আলোচনা একজন ভিডিও করলে তাকে মারধর করে তার ভিডিও ডিলিট করে পুলিশের হাতে তুলে দেন ওই আরিফ ভাই। একইসঙ্গে বলেন, তাকে যেন থানায় আটকে রাখা হয়। এরপর আমরা বিস্তারিত আমাদের মালিক কবির ভাইকে জানিয়েছি। তিনি যার কাছ থেকে দোকান ভাড়া নিয়েছেন তাকে জানিয়েছেন। আর তিনিই ছাত্রলীগের সঙ্গে আলোচনা করে ঝামেলা মেটানোর চেষ্টা করছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, অভিযোগ আসার পর সত্যতা জানতে কয়েকজনকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। তারা আমাকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই দোকানের কর্মচারীদের একটা ঝামেলা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ঘটনার সময় উপস্থিত এসআই শাহরিয়ার জীবন বলেন, ‘ছাত্ররা দোকানের কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। পরে তারা দোকান বন্ধ করে দিতে চাইছে। আর ভিডিও করায় একজনকে মেরে তাকে ভয় দেখাতে আমার হাতে তুলে দেয়া হয়। অবশ্য আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি।’
দোকানের কর্মচারী খোকন বলেন, ‘এই ঘটনার পর আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি- কোন সময় তারা আবার চলে আসে। তবে ঘটনার সময় আমাদের হোটেলে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। আমরা আজকে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়েছি।’
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দেবে বলে জানায় মালিক পক্ষ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কাউকে কোনো দোকান বন্ধ রাখতে বলা বা চাঁদা দাবি করিনি। সেদিন কয়েকজন ছোট ভাই এসে আমাকে বলে, এই হোটেলে খাবার খেয়ে তাদের পেট খারাপ করেছে। পরে আমি তাদেরকে ঝামেলা না করে চলে যেতে বলি। এতোটুকুই। আর কিছু হয়নি। বাকি যা বলা হচ্ছে সব মিথ্যা-বানোয়াট।’
আর কোনো কথা জিজ্ঞাসা করার সুযোগ না দিয়ে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আরও কয়েকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আরেক অভিযুক্ত সাকিবুল সুজনও চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমার ফোন নম্বর কে দিয়ে আসছে আমি জানি না। আমি সেখানে ছিলাম না। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমি সম্প্রতি এই কবির হোটেলে যাইনি।
‘আর ডাস চত্বরে আমাদের সঙ্গে সিনিয়ররা বসেছিলেন। সেখানেও আমি বলেছি, এই ঘটনায় আমি জড়িত নই।’
অন্য অভিযুক্ত সিফাতও ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি আর আমার বন্ধু সুজন সেখানে খেতে গিয়েছি। খাওয়ার সময় তাদের খাবারে পোকা পেয়েছি। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়েছে। কিন্তু আমরা টাকা পরিশোধ করে এসেছি। আর কোনো ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই।’
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, ‘দোকান মালিক যদি আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তাহলে আমরা তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
সিটি করপোরেশনের রাস্তার ওপর খাবারের দোকান থাকবে কেন- এমন প্রশ্ন তুলে সে বিষয়েও সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, ‘এই অভিযোগ আসার পর আমি ঘটনার সত্যতার ব্যাপারে জানতে কয়েকজনকে সেখানে পাঠিয়েছি। তারা আমাকে জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই দোকানের কর্মচারীদের একটা ঝামেলা হয়েছে।
‘তবে এই ঘটনায় আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির যে অভিযোগ উঠেছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আরিফ এ কাজ করেননি।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনও লিখিতভাবে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রবিবার এ তথ্য জানানো হয়।
ড. ইহতেসাম উল হক এ বি এম রেজাউল করীমের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আগের ডিজি অবসরে যাওয়ার এক মাসের বেশি সময় পর এ পদে নিয়োগ দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
গত ৪ জানুয়ারি চাকরি শেষ করে অবসরে যান মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক রেজাউল করীম।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর ২১ আগস্ট মাউশির মহাপরিচালকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাগনে অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন।
ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা দেশের ১৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে সরকার।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
তার পোস্ট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোণার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে শুধু শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করেছে সরকার।
এ ছাড়া নওগাঁর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে নওগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়, মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মেহেরপুর বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি করা হয়েছে।
পাশাপাশি জামালপুরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং নারায়াণগঞ্জে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এখন থেকে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বলে ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়াও গোপালগঞ্জের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তন করে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
আরও পড়ুন:রাজশাহী, ময়মনসিংহ, সিলেট ও যশোর শিক্ষা বোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী বোর্ডে অধ্যাপক আ ন ম মোফাখখারুল ইসলাম, যশোর বোর্ডে অধ্যাপক খোন্দকার কামাল হাসান, সিলেট বোর্ডে অধ্যাপক শামছুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ বোর্ডে অধ্যাপক মো. শহীদুল্লাহ চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
এর আগে গত ১ জানুয়ারি এ চার শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।
ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মর্জিনা আক্তার, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. নিজামুল করিম, ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আবু তাহের ও রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. অলিউর রহমান।
দেশের ১১ শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সাধারণ ৯টি। এগুলো হলো ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, সিলেট, যশোর, বরিশাল, কুমিল্লা ও ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড।
বাকি দুটি বোর্ডের একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এবং অন্যটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। ১১ বোর্ডে কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার।
আরও পড়ুন:পাঠ্যবই ছাপা ও বিতরণে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত করে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ বলেছেন, ‘কাজটা যুদ্ধের মতো হয়েছে। ঠিক কবে নাগাদ সব বই ছাপিয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া যাবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারব না।’
বুধবার ‘পাঠ্যবইয়ের অনলাইন ভার্সন উদ্বোধন ও মোড়ক উন্মোচন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান বলছেন ১৫ জানুয়ারি আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বলছেন ৩০ জানুয়ারির মধ্যে সব বই দেয়া যাবে। আমি কিন্তু সুনির্দিষ্ট কোনো কমিটমেন্ট দেবো না। পাঠ্যবই কবে ছাপা শেষ হবে, তা নিয়ে আমি কিছু বলবো না।’
ওয়াহিদউদ্দীন মাহমুদ বলেন, ‘প্রথম সমস্যাটা হলো- আমরা বিদেশে বই ছাপাব না। তারপর শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে অনিবার্য কারণে। তাতে বইয়ের সংখ্যা বেড়েছে। যখন কাজ শুরু করা হয়েছিল, সেটা অনেক দেরিতে হয়েছে। অনেক বই পরিমার্জন করতে হয়েছে।
‘রাজনীতিতে নিরপেক্ষ বলে কিছু থাকে না। দলীয় রাজনীতিনিরপেক্ষ সবকিছু যেন বইয়ে থাকে, সেটা নিশ্চিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শিশুদের কাছে বই যাবে। সেটা ভালো কাগজে ছাপা না হলে তো হয় না। সেজন্য উন্নত মানের ছাপা, উন্নত মানের কাগজ ও মলাটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
‘তাছাড়া এনসিটিবিতে আগে যারা কাজ করেছেন তাদের অনেককে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের বসানো হয়েছে, তারা অভিজ্ঞ। কিন্তু মুদ্রণ শিল্প সমিতির যে নেতা, তাদের সঙ্গে কীভাবে বোঝাপড়াটা করতে হয়, এটা তাদের অভিজ্ঞতায় নেই। বই একটু দেরিতে পেলেও শিক্ষার্থীরা ভালো বই পাবে। বছরের মাঝামাঝি সময়ে বইয়ের পাতা ছিঁড়ে যাবে না।’
পাঠ্যবই নিয়ে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘গল্পের একেবারে শেষে গিয়ে ছাড়া যেমন ষড়যন্ত্রকারী কে তা বোঝা যায় না, এখানেও তেমন। সেটা সরকারের কেউ হোক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হোক, এনসিটিবির হোক, মজুতদার হোক, সিন্ডিকেট হোক। মানে, যে কেউ হতে পারে।
‘তবে এখনই আমি কাউকে দোষারোপ করছি না। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে আমরা একচেটিয়া ব্যবসা কমিয়ে আনবো। এটা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে থাকবে।’
নতুন যে শিক্ষাক্রম আওয়ামী লীগ সরকার করেছিল, তা বাস্তবায়নযোগ্য নয় জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘অনেকে সমালোচনা করছেন- কেন পেছনের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলাম আমরা। আমি মনে করি, যে শিক্ষাক্রম করা হয়েছিল নতুন করে, সেটাতে থাকলে শিক্ষার্থীদের আরও পশ্চাৎপদে নিয়ে যাওয়া হতো।’
তিনি বলেন, ‘দুই বছর এ শিক্ষাক্রম চালিয়ে গেলে সেখান থেকে ফেরার উপায় ছিল না। সেটা সহজও হতো না। সেজন্য আমরা সাময়িকভাবে পেছনের শিক্ষাক্রমে গেছি। এটা আবার এগিয়ে নেয়ার কাজ করা হবে।
‘এবার কিছু পরিমার্জন হয়েছে। আগামীতে আরও পরিমার্জন করা হবে, যাতে শিক্ষাক্রমে ধারাবাহিকতার কোনো ঘাটতি না থাকে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক এ বি এম রেজাউল করীম।
আরও পড়ুন:দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আজ বুধবার থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব মেডিক্যাল ভর্তি কোচিং সেন্টারের অফলাইন ও অনলাইন কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিজিএমই) মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির জন্য দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। মেডিক্যাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা এ যাবৎকালে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে পরীক্ষা গ্রহণের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন নীতিনির্ধারণী মহল সজাগ রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সরকার সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এবং সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা, সতর্কতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকল্পে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ শাখার নির্দেশনার আলোকে ১ জানুয়ারি থেকে ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সব পর্যায়ে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত মেডিক্যাল কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই সিদ্ধান্ত অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। আর ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা হবে ১৮ ফেব্রুয়ারি।
রাজধানীর সরকারি দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মিরপুরের আর সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম হবে ‘লালকুঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর ঢাকা’। আর শেখ কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম হবে ‘আনন্দ নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা’।
গত ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিদ্যালয়-২) রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রজ্ঞাপনটি মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা, ২০২৩ অনুযায়ী দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হলো। রাজধানীর মিরপুরের আর সি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘লালকুঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর ঢাকা’ এবং একই এলাকা মিরপুরের শেখ কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নাম ‘আনন্দ নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মিরপুর, ঢাকা’।”
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, ‘জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হলো এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক প্রতিবেদন-২০২৩–এর তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৫টি। এগুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৫ জন। অন্যদিকে শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন।
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জাবিসাস) ২০২৫ সেশনের কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি পদে বণিক বার্তার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মেহেদী মামুন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবদুল্লাহ আল মামুন মনোনীত হয়েছেন।
সোমবার দুপুর ২টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক খো. লুৎফুল এলাহী নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। পরে বেলা ১টা পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলে।
কার্যকরী পরিষদের অন্য সদস্যরা হলেন- সহ-সভাপতি পদে বায়েজীদ হাসান রাকিব (দৈনিক ইনকিলাব), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে জোবায়ের আহমেদ (ডিবিসি নিউজ), কোষাধ্যক্ষ পদে রাজীব রায়হান (প্রতিদিনের বাংলাদেশ) এবং দপ্তর ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে শাহ্ আলম (ডেইলি অবজারভার)।
এছাড়া কার্যকরী সদস্য হয়েছেন- সৈকত ইসলাম (জাগো নিউজ), আশরাফুল মিয়া (দ্য নিউজ) ও রাসেল মাহমুদ (ব্রেকিংনিউজনেট.কম)।
নির্বাচনে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ রেজাউল রকিব এবং ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ইউসুফ হারুন।
মন্তব্য