রাজধানীর খিলক্ষেতে এলাকায় পাওনা ২ লাখ টাকা চাওয়ার জের ধরে ভ্রমর, হাতুড়ি ও কাটার দিয়ে ভিকটিমকে হত্যার ঘটনায় দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম ইকরাম হোসেন মোল্যা।
শনিবার রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত শান্ত ও সিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে খিলক্ষেত থানা পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আবদুল আহাদ নিউজবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেল ৩টায় খিলক্ষেত থানার ডুমনী এলাকার বাসিন্দা ইকরাম হোসেন মোল্যা নামে এক যুবকের নিখোঁজ সংক্রান্ত সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
নিখোঁজ ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে পাওয়া যাচ্ছে না বলে ভিকটিমের পরিবার জানায়। পরদিন সকালেই ডুমনী এলাকার কাউন্সিলর গলি ছাড়িয়ে বালুচর এলাকায় একটি মরদেহ পাওয়া গেলে ভিকটিমের পরিবার তা শনাক্ত করে।
তিনি আরও জানান, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ভিকটিম বৃহস্পতিবার রাতের অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং কাদের সঙ্গে ভিকটিম যোগাযোগ করে তার সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে দুজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে খাতা সেলাইয়ের ভ্রমর, ভিকটিমকে হত্যায় ব্যবহৃত কাটার ও একটি হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিমের সঙ্গে একই এলাকায় বসবাস করা শান্তর ২ লাখ টাকা লেনদেন সংক্রান্ত ঝামেলা চলছিল। ভিকটিম ইকরাম শান্তকে বালুর ব্যবসার জন্য ২ লাখ টাকা দেন। সঠিকভাবে লাভ না দেয়ায় ইকরাম তার অর্থ ফেরত চাইলে অভিযুক্ত শান্ত তা না দেয়ার পাঁয়তারা করতে থাকে।
জিজ্ঞাবাদে আরও জানা যায়, একইসঙ্গে অন্য অভিযুক্ত সিদ্দিক ভিকটিম ইকরামের ওপর ক্ষেপে ছিল। কারণ সিদ্দিকের ধারণামতে ভিকটিম ইকরাম সিদ্দিকের মাকে তার বেপরোয়া জীবনযাপন নিয়ে বিচার দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্দিকের সঙ্গে তার মায়ের ঝগড়া হয় এবং সিদ্দিক ৫ দিন ধরে বাসার বাইরে অবস্থান করতে থাকে। অভিযুক্ত শান্ত ও সিদ্দিক তাদের ক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম ইকরামকে হত্যার পরিকল্পনা সাজায়।
যেভাবে হত্যা
ডিসি মো. আবদুল আহাদ বলেন, বৃহস্পতিবার শান্ত ভিকটিমকে ফোন করে ডুমনী বালুচর এলাকায় ডেকে নিয়ে আসে। পরে তারা পরিকল্পনামাফিক ভ্রমর, হাতুড়ি ও কাটার ব্যবহার করে ভিকটিমকে হত্যা করে। পরবর্তীতে ভিকটিমের মরদেহ পাশের বিলের কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়।
আসামি শান্ত রোববার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর আসামি সিদ্দিককে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
আরও পড়ুন:নাটোরে হত্যা ও বিস্ফোরণ মামলায় নির্দিষ্ট তারিখে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
মঙ্গলবার দুপুরে নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শরীফ উদ্দিন এ আদেশ দেন।
মামলার বরাতে আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর রাতে নাটোর শহরের রেল স্টেশন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে আসার পথে আলাইপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতা দুলুসহ তার সমর্থকরা পিস্তল, রিভলবার, দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে বহরের পথরোধ করে হামলা চালায়। হামলার সময় গুলিবিদ্ধ হন স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মী পলাশ। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পরের দিন আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মোর্তজা আলী বাবলু বাদী হয়ে দুলুকে প্রধান আসামি করে ১৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ১৬ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এছাড়া ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোর জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম মাসুমের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের শান্তিপূর্ণ একটি মিছিল জেলা বিএনপি কার্যালয় অতিক্রম করার সময় দুলুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ছবির নির্দেশে মিছিলে হামলা করে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। ঘটনার দিনই ছাত্রলীগ নেতা মাসুম বাদী হয়ে ছবিকে প্রধান আসামি করে ৩৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনের নামে মামলা করেন।
২০১৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শহরের কানাইখালি এলাকায় বিএনপি নেতা বাবুল চৌধুরীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের মিছিলে হামলা চালানো হয় এবং ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি শহরের তেবাড়িয়া এলাকায় আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালিতে বিএনপি হামলা চালায় বলেও অভিযোগ ওঠে। সেসময় গুলি করে যুবলীগকর্মী রাকিব রায়হানকে হত্যা করা হয়।
এসব মামলায় শুনানির নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত না হওয়ায় দুলু ও তার স্ত্রী ছবির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
এ বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন বলেন, ‘আসামি রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু অসুস্থ থাকায় আদালতের ধার্যকৃত তারিখে হাজির হতে পারেননি। এজন্য হাসপাতালের চিকিৎসা সনদ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। আর স্বামীর অসুস্থতায় সেবাযত্ন করায় সাবিনা ইয়াসমিন ছবিও আদালতে হাজির হতে পারেনি। আদালতে সময় প্রার্থনা করেছিলাম। তবে তা নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হব।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, ‘হত্যা মামলার আসামি দুলু আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে নানা আবেদন করে দীর্ঘদিন আদালতে অনুপস্থিত। নানা কূটকৌশলে তিনি আদালতের সময় নষ্ট করছেন। এ বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে বিচারক তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।’
আরও পড়ুন:কুমিল্লার দেবিদ্বারে গ্রামের চলাচলের রাস্তা নির্মাণের জের ধরে মো. রহিম সরকার নামে এক গাড়িচালককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় বিএনপির দুই নেতা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বক্রিকান্দি গ্রামের মধ্যনগর বহুমুখী মাদ্রাসার পূর্ব পাশে সোমবার সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা আহত রহিমকে উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
এই হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার আহত রহিম সরকারের স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার দেবিদ্বার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে বাদী এজাহারে প্রধান আসামি হিসেবে বিএনপি নেতা কাউছার ভূইয়া ও মুমিন ভূঁইয়ার নাম উল্লেখ করলেও তাদেরকে বাদ দিয়ে মামলা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত কাউছার আহম্মদ ভূঁইয়া দেবিদ্বার উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। অপরজন মুমিন ভূঁইয়াই বিএনপি নেতা হিসেবে বেশ পরিচিত।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রহিম সরকার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘সোমবার সকাল ৬টার দিকে আমি গ্রামে রাস্তায় হাঁটতে বের হই। এ সময় বিএনপির ক্যাডার কাউছার আহাম্মদ ভূইয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসী মুমিন ভূইয়া, শাহাদাত ভূইয়া, আবু সাঈদ ভূইয়া, নাজিম ভূইয়াসহ আর কয়েকজন মোটর সাইকেল দিয়ে আমার গতিরোধ করে।
‘সন্ত্রাসীরা আমাকে টেনেহিঁচড়ে মধ্যনগর বহুমুখী মাদ্রাসার পূর্ব পাশে একটি কালভার্টের ওপর নিয়ে যায়। সেখানে তারা রামদা, লোহার রড, হকিস্টিক ও গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আমাকে গুরুতর আহত করে। তারা আমার দুই পা ও দুই হাত ভেঙে দেয়। আমি চিৎকার করলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। পরে হামলাকারীরা আমাকে মৃত ভেবে রাস্তায় ফেলে যায়।’
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামী হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। তার পুরো শরীর রড, রামদা ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমি সোমবার থানায় কাউসার ও মুমিনসহ ৮/১০ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছি। কাউসার ও মুমিনেরর নাম আমি মূল এজাহারে দিলেও ওসি বলেন যে তাদের নামে মামলা নেয়া যাবে না।
‘ওসি আমাকে ধমক দিয়ে ও চাপ প্রয়োগ করে একটি কাগজে সই নেন। মঙ্গলবার জানতে পারি যে কাউছার ভূঁইয়া ও মুমিন ভূইয়াকে বাদ দিয়ে ওসির বানানো মনগড়া এজাহারে মামলা রুজু করা হয়েছে।’
দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর এ বিষয়ে বলেন, ‘এজাহার থেকে নাম বাদ দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বাদীর দায়ের করা এজাহারে উল্লেখ করা সবার নাম মামলার এফআইআর-এ দেয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
সংবিধান সংরক্ষণ করা বিচার বিভাগের সবার পবিত্র দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেছেন দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মঙ্গলবার দুপুরে সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধের মূল বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই স্মৃতিসৌধ আমাদের শহীদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্মিত হয়েছে। আমি ও আমার সহকর্মীরা এখানে এসেছি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য৷
‘শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, এ দেশের সংবিধান তৈরি হয়েছে। এই সংবিধানকে সংরক্ষণ করা আমি ও আমার সহকর্মীদের প্রত্যেকের পবিত্র দায়িত্ব। আমরা সেভাবেই শপথ নিয়েছি। এই শপথে বলীয়ান থাকার জন্য আবারও এসেছি স্মৃতিসৌধে।’
পরিদর্শন বইয়ে প্রধান বিচারপতি লেখেন, ‘ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলার স্বাধীনতার আন্দোলনে শাহাদাৎ বরণকারী সব শহীদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লাখ শহীদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। শ্রদ্ধা জানাই ২ লক্ষাধিক মা-বোনের প্রতি।
‘জাতীয় স্মৃতিসৌধে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করছি যে মহান আদর্শ আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তিসংগ্রামে আত্মনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলো- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার মূলনীতিসমূহ আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে ও ব্যক্তি জীবনে দৃঢ়ভাবে অনুসরণ করবো।
‘বীর শহীদগণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ও এর সুপ্রীম কোর্ট। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে আমি ও সুপ্রীম কোর্টের উভয় বিভাগের মাননীয় বিচারপতিগণের পক্ষ থেকে সকল শহীদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।’
এর আগে সকাল ১১টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন:ডেঙ্গু টেস্টে সরকার নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও সাধারণ ফ্রিজে রক্ত সংরক্ষণসহ কয়েকটি অভিযোগে সাভারের আশুলিয়ায় একটি হাসপাতাল সিলগালা করেছে দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই সময় প্রতিষ্ঠানটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আশুলিয়ার শ্রীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে দ্বীপ জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা জানান, হাসপাতালটি ডেঙ্গু টেস্টে সরকার নির্ধারিত ফি ৩০০ টাকার পরিবর্তে সাধারণ রোগীদের কাছ থেকে ৫০০ টাকা আদায় করছিল।
এ ছাড়া সাধারণ ফ্রিজে রক্ত সংরক্ষণ, মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট পাওয়ার অভিযোগে হাসপাতালটিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাসহ সিলগালা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
ওই সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আশুলিয়া সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুর রহমান ও সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পণা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা অভিযানে অংশ নেন।
দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
মঙ্গলবার সকালে বঙ্গভবনের দরবার হলে সকাল ১১টায় রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান।
শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, রাষ্ট্রপতির স্ত্রী ড. রেবেকা সুলতানা, মন্ত্রিসভার সদস্য, উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য, জাতীয় সংসদের উপনেতা, সাবেক প্রধান বিচারপতিগণ, আপিল ও হাইকোর্ট উভয় বিভাগের বিচারপতি, জাতীয় সংসদের হুইপ, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, অ্যাটর্নি জেনারেল, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীসহ সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত ১২ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে কার্যকর হয়েছে।
সদ্যবিদয়ী প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্বপালনের সময়সীমা ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর দেশের ২৩তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৫৯ সালের ১১ জানুয়ারি নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ থানাধীন ছয়াশী (হাটনাইয়া) গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস (অনার্স), এমএসএস (অর্থনীতি) ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের বারের সনদ পেয়ে জেলা বার-কমিটি যোগদান করেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি এটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০ জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫ মার্চ যোগদান করেন এবং ১৩ ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। তিনি ২০২০ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।
তিনি ‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্র: একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকা- ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ: একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দুটি গ্রন্থ রচনা করেছেন।
বিচারপতি হিসেবে যোগদানের আগে ওবায়দুল হাসান দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং সাংবিধানিক বিষয়াদি সম্পর্কিত মোকদ্দমার একজন দক্ষ আইনজীবী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধানমন্ডি ল কলেজের একজন খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে প্রাইভেট কার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার পুরান ঢাকা থেকে মারুফ বিল্লাহ ওরফে হিমেল নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মারুফ বিল্লাহ ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনি হামলার শিকার সন্ত্রাসী তারিক সাঈদ মামুনকে বার বার ফোন দিয়ে তার অবস্থানের খোঁজ নিচ্ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা তিনি স্বীকার করেছেন।
মারুফকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এর আগে রোববার রাত ৯টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় একটি গাড়ি থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় দুজন আহত ও একজন পথচারী গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধ পথচারী হলেন ৫৫ বছরের ভুবন চন্দ্র শীল। আহত দুজন হলেন ৫৪ বছরের মো. মামুন ও ৩০ বছরের আরিফুল হক ইমন।
গুরুতর আহত অবস্থায় রাতেই ভুবনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে পরে তাকে নেয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন:র্যাব পরিচয়ে মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রবিন ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হাসান খান সাজু।
রোববার রাতে উপজেলার খাসনগর এলাকার রয়েল রিসোর্টের সামনে থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাদেরকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মোল্লার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। আদালত একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
মামলার বরাত দিয়ে সোনারগা থানার পুলিশ পরির্দশক মাহবুব আলম জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর উপজেলার মোগরাপাড়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে দুই সহযোগীকে নিয়ে ব্যবসায়ী সুমনের গাড়ি থামিয়ে ২৮৩টি মোবাইল ছিনতাই করেন ছাত্রলীগের এই দুই নেতা। পরে তিনি সোনারগাঁ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। ছাত্রলীগের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক মামলা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
আদালত পুলিশের আসাদুজ্জামান জানান, র্যাব পরিচয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগে করা মামলায় তাদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ড আবেদন জানিয়ে পুলিশ আদালতে পাঠায়। আদালত তাদেরকে একদিন করে রিমান্ডের নির্দেশ দেয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাসেল এ বিষয়ে বলেন, ‘ছাত্রলীগের মতো একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে এসব কর্মকাণ্ড করায় আমরা বিব্রত। রবিন ও সাজুর বিরুদ্ধে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আগে থেকেই ছিল।
‘আমরা জেলা ছাত্রলীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।’
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের অভিযোগে সোনারগাঁ পৌরসভা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহাবুবুর রহমান রবিনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জেলা ছাত্রলীগ। আর ২০১৯ সালে ডাকাতির মালামালসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর সোনারগাঁও পৌর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি শাহরিয়ার হাসান খান সাজুকে বহিষ্কার করে উপজেলা ছাত্রলীগ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য