তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ তার শৈশবের স্মৃতি জড়ানো বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এই প্রবীণ শিক্ষক শনিবার মারা যাওয়ার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম সফররত তথ্যমন্ত্রী তার প্রিয় শিক্ষকের বাসভবনে ছুটে যান। তিনি প্রয়াত শিক্ষকের মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তিনি মরহুমের আত্মার শান্তি কামনা করেন ও পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ড. হাছান এক শোকবার্তায় বলেন, ‘১৯৬৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মুসলিম হাইস্কুলে শিক্ষকতা করা মোহাম্মদ ইসহাক ছিলেন অত্যন্ত শিক্ষিত, প্রজ্ঞাবান, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্সের পর লেবাননের বৈরুতে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন মোহাম্মদ ইসহাক।
‘শিক্ষকতায় আসা এই মানুষটি চাইলে তৎকালীন সিভিল সার্ভিসের একজন সেরা অফিসার হতে পারতেন। কিন্তু শিক্ষকতার মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবাকেই জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন তিনি। আদর্শ শিক্ষকের অনন্য উদাহরণ হিসেবে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
১৯৭৮ সালে এসএসসির পর স্কুলজীবন শেষে বহু বছর পেরিয়ে গেলেও শত ব্যস্ততার মধ্যেও মন্ত্রী হাছান মাহমুদ মাঝেমধ্যেই তার প্রিয় শিক্ষক মোহাম্মদ ইসহাককে দেখতে গেছেন।
১৯৩৯ সালের ১৭ জুন নোয়াখালীর রামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ ইসহাক। তিন দশকের শিক্ষকতা জীবনে তিনি চট্টগ্রামের সরকারি মুসলিম হাইস্কুলে ইংরেজির প্রবাদপ্রতিম শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসীকে সাময়িক বরখাস্ত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় এর আগে তাকে বিভাগীয় সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
উপাচার্য জানান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীর বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এজন্য সিন্ডিকেটে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হবে না, সেই জবাব চাওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসী নিজ বিভাগের এক ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ এক বছর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সে সঙ্গে ওই শিক্ষক তার নিজ স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে জানিয়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করারও আশ্বাস দেন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের কক্ষে তার সঙ্গে ওই শিক্ষার্থী থাকা অবস্থায় দীর্ঘ সময় দরজা বন্ধ দেখা যায়। বিষয়টি বিভাগের অন্য শিক্ষকদের নজরে এলে তা জানাজানি হয়। এরপর ওই নারী শিক্ষার্থী শিক্ষককে বিয়ে করতে বললে তিনি আপত্তি জানান।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিভাগীয় চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। পরে গণিত বিভাগের একাডেমিক সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাডেমিক কার্যক্রমে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সে সঙ্গে বিভাগের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন দেয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এদিকে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমন সাময়িক বহিষ্কারের পর তাকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তাকেও কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না তা জানতে চেয়েছে প্রশাসন।
এর আগে ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।
সিন্ডিকেট সভায় আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়নি। এজন্য এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
এর আগে ১৫ মার্চ রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর এবং এক সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরোজ সাদাফ অবন্তিকা।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তুমুল আন্দোলন শুরু হয়। তখন শিক্ষার্থীরা অতীতে বিভিন্ন যৌন নিপীড়নের অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। এতে নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন:সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২৯ মার্চ। ইতোমধ্যে সেই পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শুরু হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর ফল প্রকাশ করা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন শুরু হলেও ঈদের আগে খুব একটা সময় পাওয়া যাবে না। চলতি সপ্তাহ ছাড়া আগামী সপ্তাহে মাত্র দুদিন সময় পাওয়া যাবে। এ ছাড়া কয়েকটি জেলা থেকে উত্তরপত্র ঢাকায় পাঠাতে দেরি হবে।
‘ফলে ঈদের আগে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না। আশা করছি, ঈদের ছুটি শেষে অফিস খোলার পরপরই তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করতে পারব।’
প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দুই বিভাগের ৪১৪টি কেন্দ্রে একযোগে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় প্রার্থী ছিলেন প্রায় সাড়ে ৩ লাখ।
এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে তিন বিভাগের ২২ জেলায় লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের লিখিত পরীক্ষার ফল ইতোমধ্যে প্রকাশ হয়েছে। তাতে উত্তীর্ণ হয়েছেন ২০ হাজার ৬৪৭ জন প্রার্থী।
তারও আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোতে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৯ হাজার ৩৩৭ জন। মৌখিক পরীক্ষা শেষে প্রথম ধাপে ২ হাজার ৪৯৭ জনকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটে (আইবিএ) প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে যাওয়া এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠায় ওই নিয়োগ আটকে গেছে। ইনস্টিউটটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম বোর্ড অফ গভর্ন্যান্স এই নিয়োগ আটকে দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বোর্ডের সভায় সভাপতিত্ব করেন। উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন লাউঞ্জে সোমবার বিকেল ৩টায় এই বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠা ওই শিক্ষকের নাম সাজু সাহা। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বিভাগেরই এক সাবেক ছাত্রী এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন।
সম্প্রতি সাজু সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র প্রভাষক পদের জন্য আবেদন করেছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের সভাপতিত্বে হওয়া নিয়োগ বোর্ড সাজু সাহাসহ চারজনকে নিয়োগের জন্য মনোনীত করে।
সোমবার বিকেলে অনুষ্ঠিত বিজি (বোর্ড অফ গভর্ন্যান্স) বোর্ডে এটি পাস হওয়ার কথা ছিল। এর আগের দিন রোববার সাজু সাহার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের বিষয়টি সামনে এনে সংবাদ প্রকাশ করে নিউজবাংলা।
বিজি বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি এখন রিভিউ করার জন্য সিলেকশন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।’
সিলেকশন বোর্ডের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, ‘বিষয়টি আজ বোর্ড অফ গভর্ন্যান্সে উঠেছিল। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। সেখান থেকে এটি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য।’
এর আগে রোববার নিউজবাংলায় প্রকাশিত সংবাদে ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে বলা হয়, অধ্যাপক সাজু সাহা কাউন্সেলিং করানোর নামে তাকে নিপীড়ন করেছেন উল্লেখ করে সাবেক ওই ছাত্রী বলেন, ‘তিনি আমার গায়ে হাত দিয়েছেন। আমাকে তার সঙ্গে হুক-আপ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। ওনার প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য রেস্টুরেন্টে আমার পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছেন। এসবের ট্রমায় আমি এক সেমিস্টার ক্লাসেও নিয়মিত হতে পারিনি।’
তিনি বলেন, ‘এসব আমি এতোদিন উপস্থাপন করার সাহস পাইনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইরুজ অবন্তিকার ঘটনার পর আমি এগুলো সামনে আনার সাহস পাই।’
সাবেক ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘সাজু সাহা ভয়ে আছেন আমার অভিযোগের ব্যাপারে। কারণ তিনি তো জানেন, তিনি আমার সাথে এসব করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেও উনি নিশ্চিত একই কাজ করবেন নারী শিক্ষার্থীদের সাথে। ওনার বিচার নিশ্চিত করেই ছাড়বো আমি, শুধু সময়ের অপেক্ষা।’
এদিকে সোমবার এই শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেলে এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অপরদিকে এদিন দুপুরেই ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেন অধ্যাপক সাজু সাহা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের রায় হাইকোর্ট স্থগিত করার পর নিজেরা বর্তমানে সংকটময় মুহূর্তে আছেন উল্লেখ করে এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সন্ধ্যায় বুয়েটের এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অনুরোধ জানানো হয়। এ সময় সেখানে শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। সবার পক্ষ হয়ে তিনজন শিক্ষার্থী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তবে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করেননি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি পূর্ণ ভরসা এবং আস্থা রাখি। তাদের কাছ থেকেই আমরা শিক্ষা গ্রহণ করি, তারাই আমাদের প্রতিটি ক্লাসরুম, প্রতিটি ল্যাবের নায়ক। আমরা গত চার বছরে এমনটা কখনও অনুভব করিনি যে তারাও চান পুনরায় ছাত্ররাজনীতি প্রবেশ করে সেই অন্ধকার দিনগুলো ফিরে আসুক।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, ‘শিক্ষকরা কখনোই আমাদের অকল্যাণ চাননি এবং কখনও চাইবেনও না। তারা সবসময় সব শিক্ষার্থীর পক্ষেই ছিলেন। আমরা আমাদের বুয়েটের সব শিক্ষকের কাছে আর্জি জানাচ্ছি- আপনারা এমন সংকটের মুহূর্তে আমাদের পাশে এসে দাঁড়ান।’
এর আগে সোমবার সকালে এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুয়েটে রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধের রায় স্থগিতের আদেশ দেন।
বুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠন ও এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণার বিজ্ঞপ্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রিটটি করেন।
এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা বুয়েটের শিক্ষার্থীরা দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি সম্পূর্ণ সম্মান ও আস্থা রাখি। আমরা বুয়েট প্রশাসনের কাছে দাবি রাখব- এ বিষয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামত বিচার বিভাগে যথাযথভাবে ভুলে ধরা হোক। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি না থাকার আমাদের যে দাবি তার যৌক্তিকতা নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ এবং আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল।’
‘ছাত্র রাজনীতি আমাদের জন্য ভালো কিছু বয়ে আনেনি’
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘যে ছাত্র রাজনীতি র্যাগিং কালচারকে প্রশ্রয় দেয়, ক্ষমতার অপব্যবহারের পথ খুলে দেয়, যার বলি হতে হয় নিরীহ ছাত্রদেরকে তা আমাদের জন্য ভালো কিছু কখনোই বয়ে আনেনি, আনবেও না। এর চরমতম মূল্য হিসেবে আমরা আমাদের কেমিকৌশল ৯৯-এর সাবেকুন্নাহার সনি আপু, যন্ত্রকৌশল ০৯-এর আরিফ রায়হান দ্বীপ ভাই এবং সবশেষ তড়িৎকৌশল ১৭-এর আবরার ফাহাদ ভাইকে হারিয়েছি।’
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দিতে পারি।’
‘অ্যালামনাইরাও ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের পক্ষে’
লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘দেশ ও বিদেশের নানা প্রান্ত থেকে আমাদের বুয়েটের অ্যালামনাইরাও ইতোমধ্যে আমাদের ক্যাম্পাস ছাত্র রাজনীতিমুক্ত রাখার মতামতের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে একাত্মতা পোষণ করছেন এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজ নিজ জায়গা থেকে তারা আমাদের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করছেন।’
উপাচার্যের প্রতি অনুরোধ
বুয়েটের উপাচার্য সত্যপ্রসাদ মজুমদারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা আমাদের মাননীয় উপাচার্য স্যারের ওপর আস্থা পোষণ করি। তার সদিচ্ছা সবসময় আমাদের পক্ষে ছিল বলেই আমরা বিশ্বাস করি।
‘উপাচার্য স্যারের প্রতি আমাদের আর্জি, তিনি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে নিয়ে আপামর বুয়েট শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের যে আকাঙ্ক্ষা তা সব আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করেন।’
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬ বিভাগের ১৪টিতে নেই স্থায়ী অধ্যাপক। অধ্যাপক ছাড়াই শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করছে বিভাগগুলো, যার ফলে ভালো মানের গবেষণা, অভিজ্ঞ শিক্ষকদের পাঠদান, মানসম্মত উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত এসব বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলেও অধ্যাপক পদে হয়নি। কয়েকটি বিভাগ অধ্যাপক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও ন্যূনতম আবেদন না পড়ায় পরবর্তীতে পদগুলোতে প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান মফস্বল এলাকায় এবং ভিন্ন জায়গায় একই চাকরিতে ভালো সুযোগ সুবিধা থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চান না অধ্যাপকরা। এ ছাড়াও ইবিতে শিক্ষক রাজনীতির প্রভাব থাকায় গবেষণাপ্রেমী যোগ্য প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টিতে চাকরি করতে চান না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে আটটি অনুষদভুক্ত মোট ৩৬টি বিভাগ চলমান রয়েছে। এর মধ্যে ২২টি বিভাগে অধ্যাপক রয়েছে ২৪৪ জন, সহযোগী অধ্যাপক রয়েছে রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ১৪টি বিভাগে ৫৪ জন, সহকারী অধ্যাপক রয়েছে ২২টি বিভাগে ৭৫ জন এবং ১০টি বিভাগে মোট প্রভাষক রয়েছেন ২০ জন।
তবে ২২টি বিভাগে ২৪৪ জন অধ্যাপক থাকলেও সামাজিকবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ, সমাজকল্যাণ বিভাগ, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ, আইন অনুষদভুক্ত ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভুক্ত মার্কেটিং বিভাগ, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগ, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ, প্রকৌশল অনুষদভুক্ত বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং জীববিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ফার্মেসি বিভাগ, কলা অনুষদভুক্ত ফাইন আর্টস বিভাগে এখনও কোনো অধ্যাপক নেই।
এদিকে ফাইন আর্টস এবং শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ দুটিতে অধ্যাপক ছাড়াও নেই কোনো সহযোগী ও সহকারী অধ্যাপক। তবে ফার্মেসি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৪ জন থাকলেও শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন ৩ জন।
এ বিষয়ে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক এইচ এম নাহিদ বলেন, ‘আমি অধ্যাপকের চেয়ে একটি বিভাগে অবকাঠামোর গুরুত্ব বেশি বলে মনে করি। অবশ্যই একজন অধ্যাপক যে সার্ভিস দিতে পারবে তা সবাই পারবে না, তবে অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছাশক্তির ওপর বিষয়গুলো নির্ভর করে। আমরা নানান সংকটের মধ্যে দিয়েও আমরা আমাদের ক্লাস পরীক্ষা চলমান রেখে আমাদের শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিচ্ছি।’
ফাইন আর্টস বিভাগে কোনো অধ্যাপক না থাকায় বিভাগটিতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএইচএম আক্তারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিভাগে সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পরে আমি যতটুকু শুনেছি, বিভাগে শেষ দুইবার যে নিয়োগ হয়েছে দুইবারই সিনিয়র পদের সার্কুলার ছিল। সে সময় কোনো আবেদন না থাকায় পদগুলোতে প্রভাষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একটি বিভাগ থাকার মানে হচ্ছে সে বিভাগে অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক ৪টি পদই জরুরি।’
তিনি আরও বলেন, ‘একজন সদ্য পড়াশোনা শেষ করা প্রভাষক আর একজন অধ্যাপকের মধ্যে অনেক তফাৎ। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকদেরও অনেক কিছু শেখার বিষয় থাকে।’
একজন অধ্যাপক এবং একজন প্রভাষকের কাছে শিক্ষার্থীরা যে জ্ঞান অর্জন করে তাদের মধ্যে কোনো তারতম্য হয় কিনা জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. আব্দুল মুঈদ বলেন, ‘একজন প্রভাষক আর অধ্যাপকের পাঠদানের মধ্যে তারতম্য তো রয়েছেই। এমন তো না একটা মানুষ হুট করে অধ্যাপক হয়ে গেল। তাকে কিন্তু ১০-২০ বছর বিভিন্ন অভিজ্ঞতার ধাপ পার হয়েই এই জায়গায় আসতে হয়। এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে শিক্ষার্থীরা অনার্স-মাস্টার্স পাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে যাচ্ছে অথচ কোনো অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষকের পাঠদান পায়নি।’
তিনি বলেন, ‘তাই মন চাইলেই একটি বিভাগ খোলা উচিত না। যদিও এতে আইনি কোনো অসুবিধা নেই, তবে নীতিগতভাবে নিয়ম হচ্ছে বিভাগটিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়ার আগে প্রথমে অধ্যাপক নিয়োগ দেয়া। নিয়োগ পাওয়ার পরে সেই অধ্যাপক এক বছর ধরে কারিকুলাম সাজাবে, তৈরি করবে এবং কোর্স ডিজাইন করবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এইম আলী হাসান বলেন, ‘আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন সরাসরিভাবে অধ্যাপক পদে কারও নিয়োগ হয় না, পদোন্নতির মাধ্যমে শিক্ষকরা এটি পেয়ে থাকেন। তবে আমরা কয়েকটি বিভাগে কয়েকবার অধ্যাপক পদে নিয়োগের সার্কুলার ছাড়লেও কোনো আবেদন আসেনি। এখন বিভাগগুলো যদি পদ খালি থাকা সাপেক্ষে প্লানিং করে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আবেদন করে তাহলে আমরা আবার সার্কুলার ছাড়তে পারি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত আসে সাধারণত বিভাগগুলোর প্ল্যানিং কমিটি থেকে। অধ্যাপক পাওয়া যেহেতু কঠিন। তাই আমরা চেষ্টা করি নিচের দিকের পোস্টগুলোতে নিয়োগ দেয়ার, কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র দুটি। কোনো বিভাগে অধ্যাপক নেই আবার কোনো বিভাগে শুধু অধ্যাপক আছে লেকচারার নেই। এ নিয়ে বিভাগগুলোর কোনো উদ্যোগও আমি দেখি না।
‘এখন পর্যন্ত যেসকল বিভাগে অধ্যাপক আছে লেকচারার নেই এমন কোনো বিভাগ থেকে ফাইল আসেনি, তবে কিছু বিভাগের কথা আমি শুনেছি যে তারা অপেক্ষায় আছেন কখন তারা অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপক এর যোগ্যতা অর্জন করবেন। তারপরেই তখন এই বিষয়ে উদ্যোগ নিবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা শিক্ষক নিয়োগের সার্কুলার ছাড়লেও তেমন কোনো সাড়া পাই না। শেষ যে বিভাগে নিয়োগ ছিল সেখানেও মাত্র তিনটি আবেদন পেয়েছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা দিয়েছিল ২ জন।’
শিক্ষক নিয়োগে আবেদন না করতে চাওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, ‘প্রথমত হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়টি মফস্বলে, দ্বিতীয়ত একই বিষয়ে ভিন্ন জায়গায় ভালো সুযোগ।’
অধ্যাপকের মাধ্যমে পাঠদান না পাওয়া শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জ্ঞানের ঘাটতি থাকছে কি না তা এভাবে বলা যাবে না। কারণ আমাদের নতুন যারা শিক্ষক অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, লেকচারার এরাও তো অত্যন্ত ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট, তবে হ্যাঁ অভিজ্ঞতা বলে একটা জিনিস থাকে একজন অধ্যাপক বা গার্ডিয়ানের বয়সী একজন বিভাগে থাকলে বহু সমস্যার সমাধান সম্ভব হতে পারে।’
আরও পড়ুন:আগামী জুনের মধ্যে ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করবে সরকার। সে জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রুমানা আলী।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টার দিকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কেউ যেন প্রতারিত না হয় কিংবা কেউ যেন প্রতারণা না করতে পারে সে জন্য সরকার সব ব্যবস্থা নেবে। আগামী জুনের মধ্যেই ১০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে পরিদর্শন করেছি। সেখানে খুব ভালোভাবে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, তবে এ বছর নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম।’
এ সময় প্রতিমন্ত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের তৃতীয় ও শেষ ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় আজ। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোতে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে লিখিত পরীক্ষা।
এ ধাপে কুমিল্লা জেলায় ৩২ হাজার ১৯৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী ১৪ হাজার ৭৬৭ জন এবং পুরুষ ১৭ হাজার ৪৩২ জন।
আরও পড়ুন:শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেট সভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম।
এর আগে ১৮ মার্চ শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও হত্যাসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেয়া হচ্ছে জানিয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ দেন শিক্ষার্থী কাজী ফারজানা মীম।
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওই বিভাগের শিক্ষক আবু সাহেদ ইমন ও বিভাগের চেয়ারম্যান জুনায়েদ আহমেদ হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর ১৯ মার্চ একই অভিযোগে প্রতিকার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও রাষ্ট্রপতির মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে আবেদন করেন এই শিক্ষার্থী।
জবি’র ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এই ছাত্রী আবেদনে বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে উপাচার্যের কাছে বিচার চেয়ে আবেদন করে তিনি এখনও বিচার পাননি। তার বিভাগের অভিযুক্ত শিক্ষক তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। ওই শিক্ষকের সমর্থনে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে স্নাতক পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেল করিয়েছেন।
সহপাঠীদের কাছ থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে মানসিকভাবে নির্যাতন করেন। তারা মৃত্যুর হুমকি দিয়ে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য