× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Jabi students death after falling ill family says planned murder
google_news print-icon

অসুস্থ হয়ে জবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবার বলছে পরিকল্পিত হত্যা

অসুস্থ-হয়ে-জবি-শিক্ষার্থীর-মৃত্যু-পরিবার-বলছে-পরিকল্পিত-হত্যা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজু আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত
ওয়ারী থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া গেলে স্থানীয় থানার মাধ্যমে পুলিশই মামলা করবে। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র রাজু আহমেদের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে।

খিঁচুনি ও শ্বাসকষ্টে অচেতন অবস্থায় রাজুর মৃত্যু হলেও ঘটনার চার দিন পর পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয় বলে দাবি করা হচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চেয়েছেন রাজুর বাবা।

রাজুর পরিবার ও তার বন্ধুরা জানান, গ্রামের বাড়ি পঞ্চগড় থেকে ফিরে শনিবার পুরান ঢাকার নারিন্দার একটি মেসে হঠাৎ খিঁচুনি দিয়ে রাজু অচেতন হয়ে পড়েন। পরবর্তী সময়ে অবস্থা খারাপ দেখে রাজুর সহপাঠী ও মেসের অন্যরা তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

রাজুর পরিবারের দাবি, তাদের বাসার টিউবওয়েলের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে কেউ ঘুমের ওষুধ বা এমন জাতীয় কোনো রাসায়নিক মিশিয়ে দিয়েছিল, যার ফলে বিষক্রিয়ায় রাজুর মৃত্যু হয়। একই টিউবওয়েলের পানি পান করে রাজুর পরিবারের বাকি সদস্যরাও বমি করে ও দুই দিন অতিরিক্ত ঘুমে মগ্ন ছিলেন।

রাজুর বাবা কৃষক আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার আগের দিন শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে রাজু, রাজুর মা এবং বোন একসাথে খাবার খায়। খাবার খাওয়ার পর রাজুর মা ও বোনের বমি হয়। আমি সকালের নাশতা ও টিউবওয়েলের পানি খেয়ে মাঠে বীজ বুনতে যাই।

‘এরপর বাসায় ফিরে মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে শরীর খারাপ অনুভব করি। পরে বাসায় ফিরে দেখি রাজু, রাজুর মা ও আমার ছোট মেয়ে ঘুমাচ্ছে। মাঠে কাজ থাকায় শরীর খারাপ লাগলেও আমি কাজে চলে যাই। এরপর সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে এসে দেখি, ওরা সবাই তখনও ঘুমাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার বড় বোন (রাজুর ফুফু) ওদেরকে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়াশব্দ দেয়নি। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টায় রাজুর ঢাকায় যাওয়ার ট্রেন থাকায় রাত ৮ টার দিকে তাকে টেনে তুলে তার ফুফু। ততক্ষণে শরীর খারাপ থাকায় আমিও ঘুমিয়ে যাই।

‘রাজুর ফুপু ওকে তুলে দিয়ে, জামা কাপড় গুছিয়ে দিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় রান্না করা খাবার টিফিন বক্সে দিয়ে বাসার পাশের এক ভ্যানগাড়িতে তুলে দেয়। তিনি রাজুকে স্টেশনে পৌঁছে দেন। সেখানে রাজুর ক্লাসমেট একই বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়ার সঙ্গে তার দেখা হয়।’

রাজুর বাবার ভাষ্য অনুযায়ী, ভ্যানচালক সাদিয়াকে বলে রাজুকে একটু দেখে রাখতে এবং তার বাসায় সবাই যে অসুস্থ সে বিষয়টিও জানান। পরবর্তী সময়ে ঢাকার ট্রেনে ওঠার আগেই রাজু তার এই সহপাঠীকে তার অসুস্থতার কারণ সন্দেহজনক বলে জানান।

তিনি জানান, তাদের টিউবওয়েলে হয়তো কেউ কিছু দিয়েছে এবং বাসার সবাই এই পানি খেয়ে ঘুমাচ্ছে।

রাজুর রুমমেট শরীয়তুল্লাহ জানান, শনিবার বিকেলে রাজুর খাওয়া-দাওয়ার পর তিনি তার গায়ে হাত দিয়ে দেখেন শরীর অনেক গরম। তখন কারণ জানতে চাইলে রাজু তাকে তাদের বাসায় এক আশ্চর্যজনক ঘটনা ঘটেছে এবং সবাই টানা ঘুমাচ্ছে বলে জানান।

শরীয়তুল্লাহর ভাষ্য অনুযায়ী, পরবর্তী সময়ে রাজু খেলা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েন। তারপর হঠাৎ খিঁচুনি ওঠার মতো হয় এবং তিনি গিয়ে রাজুকে নাড়াচাড়া করে কোনো সাড়া না পেয়ে তার আরেক রুমমেট আরাফাতকে জানান। তারপর তারা রাজুর অন্য বন্ধুদের জানিয়ে তাকে আজগর আলী হাসপাতালে নিয়ে যান।

রাজুর সহপাঠী ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত জানান, আজগর আলী হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলা হয়। দেরি না করে অ্যাম্বুলেন্সে করে রাজুকে ঢাকা মেডিক্যালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান। পরবর্তী সময়ে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়, তবে এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন রাজুর বাবা।

রাজুর বাবা আকতারুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। টাকা-পয়সা না থাকলে মামলা চালাব কীভাবে? তাই প্রথমে মামলা করতে চাইনি।

‘এখন গ্রামের সবাই মামলা করার পরামর্শ দিচ্ছেন। তাই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুষ্ঠু বিচারের জন্য রাজুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সবার সহযোগিতা চাই।’

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘এই ঘটনায় ময়নাতদন্ত হয়েছে। আমরা মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। সংশ্লিষ্ট থানাকেও জানানো হয়েছে।’

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ময়নাতদন্ত হয়ে গেছে, তবে এখনও আমরা রিপোর্ট হাতে পাইনি। ঘটনার পর রাজুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। স্থানীয় থানার মাধ্যমেও যোগাযোগ করা হয়েছিল, তবে তারা মামলা করতে চাননি।

‘এখন তারা চাইলেও মামলা করতে পারবেন না। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে অস্বাভাবিক কিছু পাওয়া গেলে স্থানীয় থানার মাধ্যমে পুলিশই মামলা করবে। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি।’

আরও পড়ুন:
জবি ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ হকারদের
জবি শিক্ষার্থীদের পেটাল স্থানীয়রা
২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দাবি
গুচ্ছ নয়, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী ভর্তি চায় জবি শিক্ষক সমিতি
জবি ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীর মামলা

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
The National Conference on Journalism Media and Communication is starting tomorrow

জাবিতে সাংবাদিকতা,গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল

জাবিতে সাংবাদিকতা,গণমাধ্যম ও যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে কাল সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক সম্মেলনের লোগো। ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় এ সম্মেলন সম্পর্কে সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন,  ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার স্থান, আর গবেষণাকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিতে কনফারেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি মূলত জ্ঞানের আদান-প্রদান। শিক্ষক, গবেষক এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এখানে তাদের জ্ঞান বিনিময় করবেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের আয়োজনে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী জাতীয় সম্মেলন ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদের নতুন কলা ভবনের চতুর্থ তলায় সোমবার সকাল নয়টায় সম্মেলনটি শুরু হবে। দুই দিনব্যাপি চলা সম্মেলনটি শেষ হবে বুধবার।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত আলেকজান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডে।

সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নূরুল আলম। তাছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন ড.মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, এবং এমআরডির পরিচালক হাসিবুর রহমান।

মুখ্য আলোচক হিসেবে থাকবেন জিআইজেএন বাংলার সম্পাদক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।

এ জাতীয় সম্মেলনে মোট ২৬টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ এ প্রবন্ধগুলো উপস্থাপন করবেন।

সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং যোগাযোগ শীর্ষক জাতীয় এ সম্মেলন সম্পর্কে সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার স্থান, আর গবেষণাকে একটি উন্নত পর্যায়ে নিতে কনফারেন্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি মূলত জ্ঞানের আদান-প্রদান। শিক্ষক, গবেষক এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পৃক্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এখানে তাদের জ্ঞান বিনিময় করবেন।

‘কনফারেন্সে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে জ্ঞানের আদান-প্রদান হয়, জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা, জ্ঞান চর্চা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব।’

সম্মেলনের বিভিন্ন সেশনে আলোচক এবং সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দেশবরেন্য শিক্ষক,গণমাধ্যম কর্মী ও গবেষকেরা।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Demonstration demanding the resignation of the Provost in Jabi Hall

জাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ

জাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ জাবির শহীদ সালাম-বরকত হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে রোববার বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন হলের ছাত্ররা। ছবি: নিউজবাংলা
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমি হলের সমস্যাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু সেখান থেকে বাজেট দেয়া হয়নি। তাই হলের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছি না।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলের প্রভোস্টের পদত্যাগসহ দুই দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন হলের আবাসিক ছাত্ররা।

হলের প্রধান ফটকের সামনে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ওই সময় হল অফিসে তালা মেরে দেন বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো আগামী দুই দিনের ভেতর হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডুর পদত্যাগ করা ও হলের সব সমস্যা সমাধান করা।

বিক্ষোভ সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের ছাত্র সাজ্জাদ সৌভিক বলেন, ‘আমাদের হলের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না। হলের সামনে পানি জমে থাকে। সিয়াম চত্বরে পানির কারণে বসা যায় না। খেলার মাঠের অবস্থা ভালো না। বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই। আমরা এ প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই।’

দর্শন বিভাগের ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘যে প্রভোস্টের কাছে ছাত্ররা সমস্যার কথা নিয়ে গেলে তার সময় নষ্ট হয় বলে মনে করেন, সে প্রভোস্টকে আমাদের হলে দরকার নেই। আমাদের দাবি হলো দুই দিনের ভেতর প্রভোস্টকে পদত্যাগ করতে হবে ও হলের সব সমস্যা সমাধান করতে হবে।’

ওই সময় বিক্ষোভ সমাবেশে হলের প্রায় দুই শ ছাত্র উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যান কুমার কুন্ডু বলেন, ‘আমি হলের সমস্যাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, কিন্তু সেখান থেকে বাজেট দেয়া হয়নি। তাই হলের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছি না।’

আরও পড়ুন:
জাবিতে স্নাতক পরীক্ষায় সেরাদের বৃত্তি দেবে বিসিএস ফোরাম
বোনকে বাঁচাতে গিয়ে আহত জাবি ছাত্রীর মৃত্যু
বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা জাবি ছাত্রীকে
জাবির জার্নালিজম বিভাগের ফ্যাক্ট-চেকিং কর্মশালা
শোক দিবস উপলক্ষে জাবি বিসিএস অফিসার্স ফোরামের আলোচনা ও দোয়া

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Banks dont give money to entrepreneurs even if they give loans to buy Mercedes Naufel

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল

মার্সিডিজ কিনতে লোন দিলেও উদ্যোক্তাদের টাকা দেয় না ব্যাংক: নওফেল শনিবার চট্টগ্রামের বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্য দিচ্ছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। ছবি: নিউজবাংলা
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

বর্তমানে পুঁজির অভাবে উদ্যোক্তা হওয়া কঠিন বলে মন্তব্য করে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘উদ্যোক্তা হওয়া যে কী কষ্ট, পুঁজি সংগ্রহ করা যে কী কঠিন! আমি এই জেনারেশনের অংশ হিসেবে জানি, ব্যাংক আমাদের ৫ লাখ টাকাও লোন দেয় না। এটাই বাস্তবতা। এখন আমি যদি সারাদিন আপনাদের বলি উদ্যোক্তা হন, সেক্ষেত্রে ছাত্র হিসেবে আপনাকে কে টাকা দেবে?’

অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘যার রেঞ্জ রোভার গাড়ি আছে তাকে মার্সিডিজ কেনার জন্য ব্যাংক টাকা দেবে। কিন্তু ব্যাংক উদ্যোক্তাদের কোনো টাকা পয়সা দেবে না।’

শনিবার চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী।

নিজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে একসময় ১০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডও দেয়নি ব্র্যাক ব্যাংক। তারপর যখন সরকারের মন্ত্রী হয়েছি, তখন ২০ লাখ টাকার ক্রেডিট কার্ডের জন্য তারা নিজেরাই রাজি হয়েছে। কারণ তখন তারা জানে, আমি যদি ঋণখেলাপী হই, নির্বাচন করতে পারব না কখনও। তাই তারা বিনা সিকিউরিটিতে ক্রেডিট কার্ড দিতে এসেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে, আমার জনগণের যে সঞ্চিত অর্থ, বিনিয়োগের নামে তা গুটিকয়েক ব্যাবসায়ীর হাতে তুলে দিচ্ছি। সাধারণ উদ্যোক্তারা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। এখন আমি ৫ লাখ টাকাই পেলাম না, ৫ কোটি টাকার ব্যবসা করব কোথা থেকে? তাই আমি বলব, ওই পুঁজির দিকে তাকিয়ে থাকলে চলবে না। আমরা যদি দক্ষ হই, তবেই আত্মনির্ভরতা সম্ভব।’

এ সময় ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘উচ্চশিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করার একটা আন্তর্জাতিক প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানে। অনেকে অর্থ খরচ করে সেই উচ্চশিক্ষা নেয়ার জন্য, সেটি যেভাবেই হোক।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউক্রেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো ইংরেজি ভাষাভাষী দেশ নিজেরা একটা র‍্যাঙ্ক টেবিল বানিয়েছে নিজেদের কিছু পত্রিকাকে দিয়ে। সেই র‍্যাঙ্কিং তারাই করে, সেখানে ইংরেজি ভাষার বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে খুব কম স্থান দেয় তারা। সেখানে পড়তে গেলে আমাদের শতকোটি টাকা ব্যয় হয়ে যায়। তারা মনে করে, তারা একটা উচ্চশিক্ষার বাজার সৃষ্টি করেছে।’

শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি দক্ষতা অর্জনে দিকেও জোর দেয়ার তাগিদ দিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাখ লাখ শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট হচ্ছে প্রতিবছর। বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে শুধু দেশের অর্থনীতির জন্য প্রস্তুত করার কথা নয়, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে তৈরি করার কথা। গ্লোবাল সিটিজেন হওয়ার জন্য মানসিকতা থাকতে হবে সবার। আমাদের দৃষ্টিসীমা সেভাবেই নির্ধারণ করতে হবে। এই ভূখণ্ডে আমি নিজেকে আবদ্ধ রাখব না, বিশ্ব নাগরিক হিসেবে সারা বিশ্ব আমার কর্মক্ষেত্র হবে। সেখানে আমি যেন কাজ করতে পারি। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা যথেষ্ট নয়।’

‘যথেষ্ট নয় এজন্য যে, আমরা যখন কর্মক্ষেত্রে যাই, আমাদের ৯৯ শতাংশ শিক্ষার্থী কাজ করতে পারেন না। ১ শতাংশেরও কম শিক্ষকতা ও গবেষণায় যান। কর্মক্ষেত্রে আমরা যখন যাই, সেক্ষেত্রে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমরা নিয়েছি, তা যথেষ্ট নয়। সেটা কর্মজীবনের জন্য যথেষ্ট উপযোগীও নয়। এই শিক্ষার প্রয়োগিক মূল্য খুব কম।’

এ সময় সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাবেক উপাচার্য ড. এ কে আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘স্ট্যানফোর্ডে স্টিভ জবস স্নাতকদের উদ্দেশে বলেছিলেন- অন্যকে নকল করতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত এই জবন নষ্ট করো না। তোমার মনে যা আসে তাই করবে। তোমার বিবেক যা বলবে তাই করবে। তোমার মস্তিষ্ক যা চিন্তা করে তাই করবে। আজকের স্নাতকদের প্রতিও আমার একই আহ্বান।’

আরও পড়ুন:
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ২২ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The administration does not know the need to install AC in the workplace
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন এসিতে ভরে গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ও বিভিন্ন অফিস কক্ষ। ছবি: নিউজবাংলা
জবির প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বেড়েই চলছে অনুমোদনহীন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রের (এসি) ব্যবহার। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই চলছে এসি লাগানোর মহোৎসব। পরিকল্পনা ছাড়াই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসির ব্যবহারে বেড়েছে বিদ্যুতের ব্যবহার। এতে বাড়ছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও।

সরকারি নিয়মানুযায়ী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার, বিভাগের চেয়ারম্যান, ইন্সটিটিউট পরিচালক, দপ্তর প্রধান ও এর সমমানের পদধারীদের অফিস কক্ষে এসি ব্যবহারের অনুমোদন রয়েছে। তবে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে জবির বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষ, শ্রেণিকক্ষ, এমনকি বিভিন্ন দপ্তরেও এসি লাগানো হচ্ছে। নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো এসব এসির কারণে তৈরি হয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ২০ হাজার শিক্ষক-শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জবির ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মচারী বলেন, ‘বিভাগের প্রয়োজনেই এসি লাগানো হয়ে থাকে। বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে কোম্পানি থেকে সরাসরি এসিগুলো কেনা হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকট আর রিকুইজিশন দেয়া হয় না। ফলে প্রকৌশল দপ্তরও বিষয়গুলো জানে না।

‘কোম্পানির লোকজনই এসে এসিগুলো লাগিয়ে দিয়ে যায়। কোনো সমস্যা হলে বা এসি নষ্ট হলে কোম্পানির লোক বা বাইরে থেকে এসির মিস্ত্রি এনে সারানো হয়।’

তবে বিষয়টি বিভাগীয় চেয়ারম্যানের কনসার্নেই হয়ে থাকে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনের বিভিন্ন বিভাগের অফিস কক্ষে ও শ্রেণিকক্ষে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এসি লাগানো হয়েছে। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস কক্ষ, সেমিনার কক্ষসহ অধিকাংশ শ্রেণিকক্ষেও এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষকের ব্যক্তিগত রুমেও চলছে এসি।

এ ছাড়াও গণিত বিভাগের অফিস কক্ষ, শিক্ষকদের কক্ষ, সেমিনার কক্ষ ও শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। মনোবিজ্ঞান ও রসায়ন বিভাগের সেমিনার কক্ষসহ শ্রেণিকক্ষে এসি লাগানো হয়েছে। এসব বিভাগের শ্রেণিকক্ষগুলোতে শিক্ষার্থীরা না থাকার পরও এসি, লাইট, ফ্যান চালু থাকতে দেখা যায় প্রতিনিয়তই। ছুটির দিন কিংবা অফ টাইমে শ্রেণিকক্ষগুলোতে বিনা কারণে লাইট-ফ্যান জ্বলতে দেখা যায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, শুধুমাত্র নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই এক হাজার টনের বেশি এসি রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নিয়মবহির্ভূতভাবে লাগানো হয়েছে। এ ছাড়া গণিত ভবন, বিজ্ঞান ভবন, সামাজিক বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন মিলিয়ে প্রায় চারশ’ টনের বেশি এসি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে থেকেই একটি মাত্র সাব-স্টেশন থেকে পুরো ক্যাম্পাসের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। সেটির কার্যক্ষমতা কমতে কমতে বর্তমানে প্রায় ১২০০ কেভিতে নেমেছে, যা কোনোভাবেই ভবনগুলো বৈদ্যুতিক লোড নিতে পারত না। পরে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনের জন্য সাব-স্টেশনটি ২০০০ কেভি ধারণক্ষমতার করা হয়েছে।

উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এসব এসি ব্যবহারে দৈনিক যে পরিমাণ বিদুৎ খরচ হয়, তার যোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে নতুন স্থাপনকৃত বৈদ্যুতিক সাব-স্টেশনটিও। ফলে কিছুদিন পরপরই ক্যাম্পাসে বৈদ্যুতিক গোলযোগ দেখা দিচ্ছে। বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা এড়াতে চলতি বছরের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাবলগুলোর আংশিক পরিবর্তন করা হলেও তা কোনো কাজে আসছে না।

জবিতে এসি লাগানোর হিড়িক, জানে না প্রশাসন
কোলাজ: নিউজবাংলা

এর আগে গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন লাইন ও সাব-স্টেশনের সঙ্গে ডরমিটরির লাইনের তারের লুজ কানেকশনের জন্য তা ঝলসে গিয়ে পুরোপুরি আলাদা হয়ে যায়৷ লাইনের তার জোড়া দেয়ার কাজ করার জন্য সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসেই তখন বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়। কয়েক মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের লোড নিতে না পেরে চারবার শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে ও দপ্তরে ত্রুটিপূর্ণ ও ভাঙা এসি এবং অ্যাডজাস্ট ফ্যানের কারণে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবারাহের ক্যাবলগুলো বেশ পুরনো হয়ে যাওয়ায় সেগুলো থেকে নিয়মিত শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটছে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। বর্ষাকালে অল্প বৃষ্টিতে এই ক্যাবলগুলোতে আগুন ধরে যেতে দেখা যায়। এতে তৎক্ষণাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখতে হয়।

এদিকে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবনেই ৫টি ত্রুটিপূর্ণ এসি ও ১০টির অধিক ভাঙা অ্যাডজাস্ট ফ্যান রয়েছে। এতে যেমন বেড়েছে বিদ্যুৎ অপচয়ের পরিমাণ, পাশাপাশি দেখা দিয়েছে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা নয়, অনুমোদনহীন এসব এসি ব্যবহারে প্রতি মাসে বিশাল অঙ্কের বিদ্যুৎ বিলও গচ্চা দিতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়কে। চলতি বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকার বিদুৎ বিল পরিশোধ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অতিরিক্ত মাত্রায় অনুমোদনহীন এসির ব্যবহারের ফলে এর পরের তিন মাসে তা প্রায় দেড় গুণ বেড়েছে। জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসে বিদ্যুৎ বিল বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে সতেরো লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে ২০২২ সালের ৪ আগস্ট একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তাতে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসি, লাইট, ফ্যান না চালানোর নির্দেশনা দিলেও তা মানছেন না কেউই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেশিরভাগ তারই অনেক পুরনো। কোনো ভবনে বিদ্যুতের চাহিদা বেশি হয়ে গেলে ওইসব তার লোড নিতে পারে না। তখন বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে।’

হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘প্রকৌশল দপ্তরকে না জানিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এসি লাগিয়েছে। এতে তারগুলোর ওপর লোড আরও বেড়েছে। যার ফলে শর্ট সার্কিটসহ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার পরিমাণও বেড়েছে। আমরা বারবার বলার পরও তারা শোনেনি। এখন সমস্যা হলে আমাদেরকে জানানো হচ্ছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আরও পড়ুন:
টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে
জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা জবি ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ
দরজা ভেঙে জবি ছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

বাংলাদেশ
The administration is silent on the beating of the Chhatra League leader in the torture cell of Jabi Hall

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পর হলের কক্ষ দখল করে প্রতাপ চালিয়ে যাচ্ছেন আরমান খান যুব। ছবি: নিউজবাংলা
অভিযোগ উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনের ওপর এই নির্যাতন চালিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা। ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। একইসঙ্গে চালাচ্ছেন মাদকের কারবার।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে এবার নির্যাতন চালানো হয়েছে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতাকে। প্রহারের পর ভুক্তভোগীর শরীরে মদ ঢেলে তাকে মাদকাসক্ত সাজানোরও চেষ্টা করা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের আপন ছোট ভাই আরমান খান যুব ও তার সহযোগীরা এই নির্যাতন চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও হলের কক্ষ দখল করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছেন এই যুব। চালিয়ে যাচ্ছেন মাদকের কারবার।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জাহিদ হাসান ইমনকে ক্যাম্পাসে মওলানা ভাসানী হলে নিজের ‘টর্চার সেলে’ নিয়ে দফায় দফায় মারধরের পাশাপাশি ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ মর্মে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়। একইসঙ্গে সেই ঘটনার ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে শরীরে পিস্তল ঠেকিয়ে ঘটনা প্রকাশ না করার হুমকি দেয়া হয়।

বুধবার ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতা। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে ফল হয়েছে উল্টো। অভিযুক্তদের দ্বারা ম্যানেজ হয়ে গেছেন প্রক্টর।’

এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নিউজবাংলার পক্ষ থেকে প্রক্টরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রথমে ফোন ধরে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর থেকে তিনি আর সাড়া দেননি।

ভুক্তভোগী জাহিদ হাসান ইমন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের বাসিন্দা এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপ-তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক।

জাবি হলের ‘টর্চার সেলে’ ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর, প্রশাসন নীরব
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ইমন। ছবি: নিউজবাংলা

বুধবার বেলা আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি অমানুষিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী (২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ) আরমান খান যুব ছাড়াও রয়েছেন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের আরাফাত, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের তুষণ ও অজ্ঞাত আরেক ব্যক্তি।

এদের মধ্যে আরমান খান যুব বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। ক্যাম্পাসে ‘র‌্যাগের রাজা’ নামে তার পরিচিতি রয়েছে। কয়েক বছর আগে ছাত্রত্ব শেষ হলেও তিনি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলের একটি কক্ষ দখল করে রেখেছেন।

আরমান খান যুব’র বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদকের সিন্ডিকেট ও মওলানা ভাসানী হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে ‘টর্চার সেল’ পরিচালনার অভিযোগ বেশ পুরনো। মাদক কারবারি ও বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে নির্যাতন করার ঘটনাও অনেকের মুখে মুখে।

জাহিদ হাসান ইমন ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘১৩ আগস্ট সাভারের রেডিও কলোনির বউবাজার এলাকার ভাড়া বাসার মালিকের সঙ্গে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আমার মনোমালিন্য হয়। ওই ঘটনার জের ধরে আমাকে ফোন দিয়ে আরমান খান যুবর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন বাড়ির মালিকের পূর্বপরিচিত আরাফাত।

‘আমি যুবর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে আমাকে মওলানা ভাসানী হলের সামনে যেতে বলা হয়। রাত ১২টার দিকে সেখানে গেলে আমাকে মোটরসাইকেল হলের ভেতরে রেখে ১২৬ নম্বর কক্ষে যেতে বলেন যুব।’

ইমন বলেন, ‘আমি কক্ষে ঢুকতেই ঘুষি মেরে আমার নাক ফাটিয়ে দেন যুব। আমি যাতে চিৎকার করতে না পারি সেজন্য কাপড় দিয়ে আমার মুখ বেঁধে ফেলেন আরাফাত। পরে যুব ও আরাফাতসহ সেখানে উপস্থিত অন্যরা আমাকে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন।

‘আমাকে এক দফা মারধরের পর ইয়াবা সেবন করেন যুব। পরে সবাই মিলে আবারও অমানুষিক নির্যাতন শুরু করেন। এছাড়া আমার শরীরে মদ ঢেলে উল্লাস করতে থাকেন ওরা।’

ইমন জানান, দফায় নির্যাতনের পর রাত ৩টার দিকে তাকে হলের দ্বিতীয় তলার ২২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে তাকে পরিষ্কার-পরিছন্ন হয়ে আসতে বলেন তুষণ। এরপর ‘ইমন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে গালাগালি করেছেন’ বলে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি নেন। এমনকি মোবাইল ফোনে তার ভিডিও ধারণ করে রাখেন তুষণ। পরে তাকে ফের ১২৬ নম্বর কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় মারধরের ঘটনা কাউকে না জানাতে ইমনের পেটে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেন অভিযুক্তরা। কিছুক্ষণ পর আকতারুজ্জামান সোহেল ওই কক্ষে গিয়ে ইমনকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলেও ইমনকে আশ্বাস দেন।

ভুক্তভোগী ইমন বলেন, ‘ঘটনার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে বিষয়টির ব্যাপারে আগে থেকে অবহিত করেছিলাম। তার পরিপ্রেক্ষিতে মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পরদিন সকালে প্রক্টরের বাসায় যাই। তবে সেখানে গিয়ে দেখি যে আকতারুজ্জামান সোহেল প্রক্টরের বাসায় অবস্থান করছেন।

‘আমাকে ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে (গেস্টরুম) গিয়ে বসতে বলেন তিনি। এ অবস্থায় প্রক্টরের ওপর ভরসা না পেয়ে আমি চলে আসি। এরপর মারধরের বিষয়টি আল নাহিয়ান খান জয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি।’

ছাত্রলীগের এই নেতা বলেন, ‘মারধর-পরবর্তী নানা ঘটনায় প্রক্টরের ওপর আমার ভরসা উঠে গেছে। নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দেইনি। তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাদের জানিয়েছি। তবুও ঘটনার বিচার করতে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। বিচার না পেয়ে কয়েকবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছি। কারণ ওই রাতের ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে আরমান খান যুব ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেলকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা রিসিভ করেননি।

মওলানা ভাসানী হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক হুসাইন মো. সায়েম বলেন, ‘হলের ১২৬ নম্বর কক্ষে সাবেক শিক্ষার্থীরা থাকে, বিষয়টি আমি জানি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তবে মারধরের ঘটনা সম্পর্কে আমি জানি না।’

সার্বিক বিষয়ে জানতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানকে ফোন করলে তিনি ‘মিটিংয়ে আছি’ বলে ফোন কেটে দেন। এরপর একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

আরও পড়ুন:
জাবিতে শিক্ষক নিয়োগ বোর্ডে ছাত্রলীগের বাধা, অবরুদ্ধ উপাচার্য

মন্তব্য

বাংলাদেশ
There will be no electricity for two consecutive days

টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে

টানা দুই দিন ১২ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকবে না জবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক। ফাইল ছবি
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কিট মেরামত এবং ১৩ তলা-বিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবনের এমডিবিতে বৈদ্যুতিক কাজের প্রেক্ষিতে বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে।

সাব-স্টেশন লাইনের ক্যাবল পরিবর্তনসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজের জন্য আগামী ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বুধবার বিকেলে নিউজবাংলাকে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ ব্যাপারে তার স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কিট মেরামত এবং ১৩ তলা-বিশিষ্ট অ্যাকাডেমিক ভবনের এমডিবিতে বৈদ্যুতিক কাজের প্রেক্ষিতে বারো ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে।

বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে জেনারেটরের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। বিভিন্ন ল্যাব কক্ষ, ইন্টারনেট সার্ভার রুমসহ কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে। ক্যাম্পাসে বিদ্যুৎ বন্ধ থাকলেও হলে তা চালু থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ওভারহেড লাইনের বৈদ্যুতিক তার পরিবর্তনসহ অন্যান্য কাজের জন্য চলতি বছরের ২১ ও ২৮ জুলাই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আট ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল।

আরও পড়ুন:
জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ
প্রাচীর নির্মাণে ধীরগতিতে অপেক্ষা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের
বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা জবি ছাত্রীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Legal Notice Says Discriminatory Provisions Without Halls for Married Pregnant Students

জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ

জবিতে বিবাহিত-অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের হল ছাড়ার আদেশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলটিই জবির একমাত্র ছাত্রী হল। ফাইল ছবি
লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘আমি কারোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে না, সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখার পর আমি নিজে থেকে এই নোটিশ পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালাও যদি এই রকম কিছু থেকে থাকে, তাহলে সেই বিধিমালার সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংঘর্ষিক। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বা বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) একমাত্র ছাত্রী হল বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশটি ‘বৈষম্যমূলক বিধান’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও হল প্রভোস্টের কাছে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোলায়মান তুষার বুধবার এ নোটিশ ডাক ও ইমেইলে করে পাঠিয়েছেন।

লিগ্যাল নোটিশে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বিবাহিত ও গর্ভবতী হওয়ার কারণে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে আবাসিকতা লাভ ও বসবাসের শর্তাবলী এবং আচরণ ও শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা-২০২১ এর ১৭ নং ধারা মোতাবেক বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা আবাসিক সিট পাবে না বিধায় তারা অতি দ্রুত হলের সিট ছেড়ে দেবে। অন্যথায় তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই মর্মে গত ২৫ সেপ্টেম্বর হলে নোটিশ দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘উক্ত বিধানের ফলে কার্যত বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীরা হলের আবাসিক সুবিধা গ্রহণ করে উচ্চশিক্ষা অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে ছাত্রীদের মধ্যে মারাত্মক অসন্তোষ এবং ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন বৈষম্যমূলক বিধান থাকার বিষয়টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে গুরুত্বের সঙ্গে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছে।’

নোটিশে সোলায়মান তুষার বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা অন্য স্থানের কারণে কোনো নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করিবে না। রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষ সমান অধিকার লাভ করিবেন। বিবাহিত ও গর্ভবতী ছাত্রীদের জন্য এমন নিয়ম নারীদের উচ্চশিক্ষা অর্জনের পথে অন্তরায় এবং বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ ও ২৮ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’

তিনি আরও বলেন, ‘নোটিশ প্রাপ্তির পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি বৈষম্যমূলক বিধানটি বাতিল করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হব।’

এ বিষয়ে আইনজীবী সোলায়মান তুষার বলেন, ‘আমি কারোর অভিযোগের প্রেক্ষিতে না, সংবাদমাধ্যমে খবরটি দেখার পর আমি নিজে থেকে এই নোটিশ পাঠিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালাও যদি এই রকম কিছু থেকে থাকে তাহলে সেই বিধিমালার সঙ্গে বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ২৮ (১) (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সাংঘর্ষিক। আর সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন বা বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়।’

জানতে চাইলে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. দীপিকা রাণী সরকার বলেন, ‘আমি এখনও হাতে নোটিশ পাইনি। আর হল থেকে যে নোটিশ দেয়া হয়ছে, তা বিধিমালায় রয়েছে। এর বাইরে তো কিছু করিনি।

‌‘আমি বিবাহিত কিংবা গর্ভবতী যারা তাদের তো সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু আইনি নোটিশ কেন দেয়া হবে বুঝলাম না। যারা বিবাহিত আছে তাদেরকে আবারও নোটিশ দিয়ে হল থেকে নামিয়ে দেয়া হবে। আর বিষয়টি (আইনি নোটিশ) আমাদের মধ্য থেকেই কেউ করেছে। আমি খুঁজে বের করব।’

এর আগে ২৫ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে অবস্থানরত বিবাহিত ও অন্তঃসত্ত্বা ছাত্রীদের অতি দ্রুত হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে হল প্রশাসন। একই সঙ্গে মাস্টার্সের ফল প্রকাশ হওয়া আবাসিক ছাত্রীদেরও হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনা ও চরম বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুন:
বাসে র‌্যাগিং ঠেকাতে জবি প্রশাসনের অভিনব নির্দেশনা
বিয়ের ২৭ বছর পর আলাদা হওয়ার কথা জানালেন হিউ জ্যাকম্যান
সিনিয়রদের উৎপাতের ভিডিও করায় জাবি শিক্ষার্থীকে মারধর
জবির সেই ছাত্রলীগ নেতাকে অব্যাহতি
জবি’র শিক্ষার্থী না হয়েও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা

মন্তব্য

p
উপরে