রাজধানীর গুলিস্তানে গোলাপশাহ মাজার এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ মো. আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী ও তার স্ত্রী। তাৎক্ষণিক সাহায্য চেয়েও ঘটনাস্থলের সীমানা জটিলতায় পুলিশ এগিয়ে আসেনি। পরবর্তীতে অভিযোগ করেন পল্টন থানায়।
কোনো অগ্রগতি না দেখে ঘটনার পরদিন ঘটনাস্থল থেকে ফেসবুক লাইভে আসেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। পুলিশের কাছ থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। এরপর টনক নড়ে পুলিশের।
মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। ঢাকার কেরানীগঞ্জ ও জুরাইন থেকে জিসান এবং রানা নামে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার দুপুরে গুলিস্তানের গোলাপশাহ মাজার এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে রিকশায় করে যাওয়ার সময় ছিনতাইয়ের শিকার হন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মামুন ও তার স্ত্রী। ছিনতাইকারীরা অধ্যাপকের স্ত্রীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়। ডিবির অভিযানে স্বর্ণের চেইনটিও উদ্ধার হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘জিসান ও রানা পেশাদার ছিনতাইকারী। চেইনটি ছিনিয়ে নিয়েছিল জিসান। তার বিরুদ্ধে দস্যুতার পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ পর্যন্ত সাতবার কারাগারে গেছে সে। কারাগার থেকে বেরিয়ে একই অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার দুজন চেইন ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে স্বর্ণের চেইনটি উদ্ধার করা হয়েছে।’
তিন থানার সীমানা জটিলতা নিয়ে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গোলাপশাহ মাজারের যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেখানে গোয়েন্দা পুলিশের তিনটি বিভাগের সীমানা রয়েছে। এগুলো হলো রমনা বিভাগ, মতিঝিল বিভাগ ও লালবাগ বিভাগ। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি হয়তো আশপাশে পুলিশ পাননি। তবে তার লাইভটি দেখে ডিবির মতিঝিল বিভাগ দ্রুত মূল ছিনতাইকারীসহ দুজনকে আইনের আওতায় এনেছে।’
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রাজীব আল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘২৯ এপ্রিল দুপুরে গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় রিকশার পেছন থেকে অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্ত্রীর গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। ১ মে পল্টন থানায় মামলা হয়। মামলা হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার যাত্রাবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, জুরাইনসহ বিভিন্ন এলাাকায় অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় দুটি এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ফার্মগেটের ফার্মভিউ সুপারমার্কেটের সামনের ব্যস্ত সড়কে যানজটের মধ্যে পাঁচ সেকেন্ডের ব্যবধানে ককটেল দুটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বিস্ফোরণে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী বলে জানা গেছে। তবে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
আহত একজনের মাথা থেকে রক্তপাত হতে দেখা যায়। অন্যজন পেটে আঘাত পেয়েছেন। বিস্ফোরণের পর ব্যস্ত রাস্তাটি মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তা ও ফুটপাতে থাকা লোকজন আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সরোয়ার আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের কথা শুনেছি। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে।’
অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যার পর নারায়ণঞ্জ শহরের খানপুর থেকে একটি মিছিল বের করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের ডন চেম্বার এলাকায় এসে তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। পরে চাষাঢ়ার দিকে এগিয়ে মিশনপাড়া মোড়ে ফের ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে তারা পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ডিবি পুলিশের একটি টিম। এরপর সদর থানা পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবরোধ কর্মসূচির নামে ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার আগেই তারা পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।’
রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নবম দফায় দেয়া দলটির অবরোধ কর্মসূচির আগের দিন সন্ধ্যায় এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশি বাধায় পণ্ড করে দিলে তারা এ সরকারের পদত্যাগের একদফাসহ মহাসমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। সমমনা জোটগুলোও এই কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালন করেছে। এরপর থেকে পর্যায়ের ক্রমে তারা প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শুক্র ও শনিবার ছুটির দুইদিন বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি করে যাচ্ছে। এই পর্যন্ত তারা আট দফায় অবরোধের কর্মসূচি পালন করেছে। কাল থেকে নবম দফায় দলটির অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
আরও পড়ুন:হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তরল স্বর্ণের ‘ডিম’, বিস্কুট ও অলংকারসহ চার যাত্রী আটক হয়েছে। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), এনএসআই ও ঢাকা কাস্টমসের এক অভিযানে উদ্ধার হওয়া মোট স্বর্ণের পরিমাণ ৬ কেজি ৯৫৬ গ্রাম।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক শনিবার রাতে জানান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে পেস্ট ফর্মের গোল্ড, গোল্ড বিস্কুট এবং স্বর্ণের অলংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আটক চার যাত্রীর মধ্যে মো. আলী হোসেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সযোগে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন। এছাড়া যাত্রী জসীম উদ্দিন, লিটু মিয়া ও মোহাম্মদ জুম্মন খান এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন।
জিয়াউল হক জানান, যাত্রীরা বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর এপিবিএন, এনএসআই ও কাস্টমস যৌথ আভিযান চালায়। এ সময় ওই যাত্রীরা পায়ুপথে স্বর্ণ বহন করছেন বলে সন্দেহ হলে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে উত্তরায় অবস্থিত হলি ল্যাব ডায়গনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে এক্স-রে করলে তাদের পায়ুপথে স্বর্ণের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া যায়।
এপিবিএন-এর এই কর্মকর্তা জানান, আলী হোসেনের কাছে ডিম্বাকৃতির তিনটি পেস্ট গোল্ড (৮৮০ গ্রাম), গোল্ড বিস্কুট ও অলংকারসহ মোট এক কেজি ৯৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। আর জসীম উদ্দিনের কাছ থেকে ডিম্বাকৃতির ৯টি পেস্ট গোল্ড (এক কেজি ৯৫০ গ্রাম), গোল্ড বিস্কুট ও অলংকারসহ মোট ২ কেজি ১৬৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়।
এছাড়া মোহাম্মদ জুম্মন খানের কাছ থেকে এক কেজি ৫৩৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। অপরদিকে লিটু মিয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ কেজি ১৬৪ গ্রাম স্বর্ণ।
আটক চারজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করার মধ্য দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতাল নামে বেসরকারি হাসপাতালটিতে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
এতে রোগীর স্বজনরা ও স্থানীয়রা শনিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে কর্মরত স্টাফদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে ঘটনার পর চিকিৎসক ও হাসপাতালটির ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি।
প্রাণ হারানো ২৬ বছর বয়সী নিপা আক্তার ভবেরচর এলাকার মো. শামীমের স্ত্রী।
নিপার স্বজনরা জানায়, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে ডা. রাজিয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি নিপার সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়।
অপারেশন শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে তাদের জানানো হয় মেয়ে বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চার অবস্থা ভালো। কিন্তু দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও নিপাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় তাদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে তাদের জানানো হয় বাচ্চার মায়ের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে।
এর পর নিপাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ভাষ্য, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অনেক আগেই নিপার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজিয়া বেগমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোগীর আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ছিল। আমি অপারেশন করার পরে বিষয়টি ধরতে পেরেছি। আমি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলাম। এখানে আমার কোনো অবহেলা ছিল না।’
গজারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে।’
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাজশাহী-৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোয় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার শনিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যাহার ওই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই জিলালুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদকে পৌর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সদস্যরাও। ফুল দেয়ার সেই ছবি মুহূর্তেই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর তাকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়।
স্থানীদের অভিযোগ, এস আই জিলালুর রহমান ২০২২ সালে ২৭ মার্চ তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যোগদানের পর থেকেই মেয়র আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং তিনি শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্বমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, ‘নৌকার এক প্রার্থীকে ফুলেল শুভেচ্ছা দেয়া হয়েছে এমন একটি ছবি নজরে এসেছে। এরপরই তাকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে।’
তবে এস আই জিলালুর নিউজবাংলার কাছে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে কাউকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যে ছবি প্রচার করা হচ্ছে, সেটা অনেক আগের। প্রায় এক বছর আগের। প্রতিপক্ষের লোকজন এটি ছড়াচ্ছে। আমি এরই মধ্যে পুলিশ লাইনে চলে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ ভারত থেকে ফেরার পর তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছিল, সে ছবিটি এখন প্রচার করা হচ্ছে।’
রাজধানীর ডেমরায় একটি বাসায় প্রবাসী স্বামীর ওপর অভিমান করে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
ডেমরার পশ্চিম বক্স নগরে শুক্রবার দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক বেলা আড়াইটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৪ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ রোজি আফসানা রিমাকে ঢামেকে নিয়ে আসা তার মা আসমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সৌদি প্রবাসী নয়ন মিয়ার ১১ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ১০ বছর বয়সের এক মেয়ে আছে। ৬ মাস আগে নয়ন ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দালালের মাধ্যমে সৌদিতে কোম্পানির কাজে যায়। কিন্তু সেখানে কোনো কাজ না পাওয়ায় পুলিশের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হতো তাকে।
‘এ সকল বিষয় নিয়ে আজ তিন দিন ধরে আমার মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছিল। আজ দুপুরে নয়ন ফোনে বলে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও, আমি বাংলাদেশে চলে আসব। এরপর ঝগড়া শুরু হলে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে ফোন কেটে দিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় জর্জেটের ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পরে।
‘পরে আমরা টের পেয়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে রুম থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকার শাহিন নামে এক দালালের মাধ্যমে জমি বিক্রি করে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে ছয় মাস আগে কোম্পানির কাজে সৌদিতে যায় নয়ন। সেখানে তাদের কোম্পানির কোনো লোক গ্রহন না করায় তারা জানতে পেরেছে এটা ভুয়া কোম্পানি। আমাদের এলাকা থেকে মোট আটজন যুবককে এই দালাল সৌদিতে নিয়ে যায়, তাদেরও একই অবস্থা।’
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ডেমরা থেকে এক গৃহবধূকে অচেতন অবস্থা ঢামেকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি ডেমরা থানা কে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর মিছিলে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে প্রদর্শন করা আগ্নেয়াস্ত্রটি বাতিলের জন্য সুপারিশ করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট স্বাক্ষরিত একটি সুপারিশপত্র শুক্রবার বিকেলে নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মাহমুদুল হক বলেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্রটির লাইসেন্স নড়াইল জেলা থেকে ইস্যু করা। এই কারণে নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।’
সুপারিশপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) মিছিল নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য যাওয়ার সময় কাঞ্চন পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলির গানম্যান মো. আশিকুজ্জামানের নামে নড়াইল জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি হতে ইস্যুকৃত শটগান নিয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে অস্ত্রটি উচিয়ে প্রার্থীর পক্ষে শ্লোগান দেয়ায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সুপারিশের প্রেক্ষিতে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা অনুযায়ী লাইসেন্সটি বাতিল ও আগ্নেয়াস্ত্রটি সরকার বরাবর জব্দ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
এর আগে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিলে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে সুপারিশ করা হয়।
গত ২৯ নভেম্বর দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় গোলাম দস্তগীর গাজীর মিছিলে প্রকাশ্যে অস্ত্র প্রদর্শন করেন তার অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম রসুল কলির গানম্যান আশিকুজ্জামান। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে অস্ত্রটি ও আস্ত্রের বিপরীতে লাইসেন্সটি জব্দ করে পুলিশ।
পরে ৩০ নভেম্বর মন্ত্রী গাজীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠান নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সভাপতির দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র সহকারী জজ শেখ আনিসুজ্জামান।
এই বিচারক গোলাম দস্তগীর কিংবা তার প্রতিনিধিকে তাঁর কার্যালয়ে শুক্রবার সকালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ারও নির্দেশ দেন।
কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, গত ২৯ নভেম্বর দুপুরে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী সশস্ত্র কর্মীসহ মিছিল নিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যা নির্বাচন আচরণবিধিমাল ২০০৮ এর ৬(ঘ), ৮(ক) ও (খ), ১১(ঘ) এবং ১২ এর গুরুতর লঙ্ঘণ।
এ দিকে, শুক্রবার সকালে গোলাম দস্তগীর গাজীর এক প্রতিনিধি সিনিয়র সহকারী জজ শেখ আনিসুজ্জামানের কক্ষে উপস্থিত হয়ে গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন বলে জানান ওই আদালতের পেশকার ইবনে সাউদ।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর এবার সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারকেও (ইউএনও) পর্যায়ক্রমে বদলির নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ইসির উপ-সচিব মো. মিজানুর রহমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে নির্দেশনাটি পাঠান।
চিঠিতে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের নিমিত্তে সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত প্রদান করেছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বর্তমান কর্মস্থলে ১ বছরের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে, তাদের অন্য জেলায় বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।
এর আগে দেশের সব থানার ওসিদের বদলি করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয় ইসি। তাদের বদলির ক্ষেত্রেও আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের (ওসি) পর্যায়ক্রমে বদলি করার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে যেসব থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের অধিক চাকরিকাল সম্পন্ন হয়েছে তাদের অন্য জেলায়/অন্যত্র বদলির প্রস্তাব আগামী ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রেরণ করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় উল্লিখিত সিদ্ধান্ত অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশিত হয়ে বিনীত অনুরোধ করা হলো।
প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। মনোনয়ন বাছাই চলবে শুক্রবার থেকে আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।
নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর। প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচারণা চালাতে পারবেন ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য