রাজধানীর সাভারে একটি ফার্নিচারের দোকানে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার বেশি ফার্নিচার পুড়ে গেছে বলে দাবি দোকান মালিকের।
শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পাশে পল্লীবিদ্যুত এলাকায় এস রহমান টিম্বার ট্রেডার্স ফার্নিচারের দোকানে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ডিইপিজেড ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার প্রণব চৌধুরী ঘটনাটি নিশ্চিত করেন।
দোকান মালিক সোহরাব হোসেন জানান, ঈদের ছুটিতে দোকান বন্ধ ছিলো। রাতে মার্কেটের সিকিউরিটি পাহাড়ায় থাকলেও সকাল ৭টার দিকে চলে যায়। আজ সকালে সিকিউরিটি চলে যাওয়ার পর ৮টার দিকে আগুন লাগার খবর পাই। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে দোকানের সমস্ত ফার্নিচারসহ কাঠ ও মালামাল পুড়ে যায়। প্রায় ১ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে আমার৷ আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
প্রণব চৌধুরী জানান, ‘ফার্নিচার দোকানে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমাদের তিনটি ও জিরাবো মডার্ণ ফায়ার সার্ভিসের আরও তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা চালায়।
‘প্রায় ২ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে দোকানে থাকা ফার্নিচার ও কাঠসহ মালামাল পুড়ে যায়। প্রাথমিক ভাবে অগ্নিকান্ডের কারণ জানা যায়নি।’
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোপন ষড়যন্ত্র করেছেন মন্তব্য করে এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)।
সংগঠনটির সভাপতি কামরুল হাসান তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক ডাবলু শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গঠনে পুলিশের সকল সদস্য অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে ও দেশপ্রেমের চেতনা নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে।
‘পুলিশ বাহিনীর যে সকল বিতর্কিত সদস্য গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচারের বিষয়ে বাংলাদেশ পুলিশের সকল সদস্য একমত পোষণ করে।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সম্প্রতি গণহত্যা, দুর্নীতি, মানিলন্ডারিংসহ একাধিক মামলায় জড়িত পলাতক আইজিপি বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্সে একটি ষড়যন্ত্রমূলক সভায় অংশগ্রহণ করেছে বলে জানা যায়, যেখানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে তার একটি বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে, যা বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের গোচরীভূত হয়।
‘ওই বক্তব্যটি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী ও এর সদস্যদের পেশাদারত্বকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে বলে বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন মনে করে।’
বিপিএর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এ ধরনের সভায় অংশগ্রহণ এবং বক্তব্য প্রদান দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। ব্যক্তির দায়ভার কখনও কোনো বাহিনী বহন করে না। ২০১৩ সালে হেফাজতের বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সংঘটিত গণহত্যা, হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির ঘটনায় সম্পৃক্ততা ও একাধিক দুদকের মামলায় অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সকল পুলিশ সদস্য মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ।
‘বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশন এ জাতীয় ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফুলের রাজধানীখ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী অঞ্চলের ফুলচাষিরা।
তিনটি দিবসকে সামনে রেখে নিজেদের খেতের ফুলগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
চাষিদের আশা, সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে এবং তারা লাভবান হতে পারবেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী, নাভারণ ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে নানা জাতের ফুল। এ অঞ্চলের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ অন্তত ১৩ ধরনের ফুল।
গদখালীতে বৃহস্পতিবার সকালে ফুলের পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরেই চাষিরা বিভিন্ন যানবাহনে তাদের উৎপাদিত বাহারি সব ফুল নিয়ে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে বিক্রির জন্য দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়া বাজারে ফুলের জোগানও বেশি। গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, গাঁদা ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম।
মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে গোলাপ আগে বিক্রি হয়েছে পাঁচ টাকা দরে, গত বৃহস্পতিবার সে গোলাপ বিক্রি হয় আট থেকে ১০ টাকা দরে।
ফুল চাষের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সামনের তিন দিবসে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে।
গত বৃহস্পতিবার বাজারে প্রতিটি গোলাপ বিক্রি হয় ৮ থেকে ১০ টাকা। এ ছাড়া জারবেরা প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, জিপসি আঁটির প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাধা প্রতি হাজার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রংভেদে ৮ থেকে ১২ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস ৩ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উৎসব যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দাম ততই বাড়ছে।
ফুলচাষি পলাশ হোসেন বলেন, ‘১০ কাঠা জমিতে গোলাপ চাষ করেছি। গত দুই দিন আগে গোলাপের দাম ছিল পাঁচ টাকা। আজ আট থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠেছে।
‘আশা করছি সামনের দিনগুলোতে ফুলের দাম আরও বাড়বে এবং আমরা লাভবান হতে পারব।’
ফুলচাষি সোহান হোসেন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে জারবেরা চাষ করেছি। এ বছর ফুলের ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। এখন ১০ থেকে ১২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
‘আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুলের দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনের দিবসগুলোতে দাম আরও বাড়বে এবং লাভবান হতে পারব।’
কুষ্টিয়া থেকে ফুল কিনতে আসা ব্যবসায়ী শাকিল হোসেন বলেন, ‘প্রায় ১৫ হাজার টাকার ফুল কিনেছি। গোলাপ ফুলটা বেশি কিনেছি। অন্যান্যবারের তুলনায় এ বছর বেশি লাভ হবে বলে আশা করছি।’
গদখালী ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর জানান, সারা বছর ফুল বিক্রি হলেও মূলত বসন্তবরণ, ভালোবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘিরে ফুল বেচাকেনা বেশি হয়। তিন দিবসকে ঘিরে গদখালী বাজারে ফুলের বেচাকেনা জমে উঠেছে।
তিনি জানান, উৎসবের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, ফুলের দামও ততই বাড়ছে। বাজারদর ভালো পেয়ে ফুলচাষি, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা খুশি। বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বসন্তবরণ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে ১০০ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গদখালী অঞ্চলে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চাষ করেন চাষিরা। প্রায় ছয় হাজার চাষি এ ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় অনিয়ম করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিইসি) বীজ ও সারের ডিলারশিপ নিয়েছেন সরকারি কলেজের প্রভাষক ও কৃষি কর্মকর্তা। তাদের স্বজনদেরও একই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০০৯ অনুসারে, একজন সরকারি চাকরিজীবী হয়ে অন্য কোথাও থেকে কোনো ধরনের সুযোগ- সুবিধা নেওয়ার বিধান নেই। একই সঙ্গে একজন ব্যক্তি একের অধিক ডিলারশিপ নিতে পারবেন না।
অন্যদিকে আচরণ বিধিমালার ১৭ (১) নম্বর ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অন্য বিধান অনুসারে, কোনো সরকারি কর্মচারী সরকারের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া কোনো ব্যবসায় জড়াতে পারবেন না অথবা দায়িত্বের বাইরে অন্য কোনো কাজ কিংবা চাকরি নিতে পারবেন না।’
অনিয়মে যুক্তদের ভাষ্য
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী নওগাঁতে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ফজলে রাব্বি। তিনি তার স্ত্রী সম্পা বেগমের নামে বিএডিসির বীজের লাইসেন্স বাগিয়ে নিয়ে কৌশলে ডিলারশিপ বিক্রি করে খাচ্ছেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই নওগাঁ শহরে বসবাস করলেও তারা পোরশা উপজেলায় ‘সাইফ ট্রেডার্স’ নামের ঠিকানা ব্যবহার করে লাইসেন্স নিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সম্পা বেগম তার নামে লাইসেন্স স্বীকার করে বলেন, ‘আমি নওগাঁ বসবাস করলেও পোরশায় আমার দোকান রয়েছে। ওখানে একটি ছেলে আছে। সে দোকান চালায়।’
দোকানের ঠিকানা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী রাব্বি নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে চাকরি করেন। তিনি সব বলতে পারবেন।’
সাইফ ট্রেডার্স নামের কোনো দোকান পোরশা বাজারে পাওয়া যায়নি। দোকানের সঠিক ঠিকানা কোথায় জানতে চাইলে সম্পা কোনো সদুত্তর না দিয়ে কথা না শোনার ভান করে ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফজলে রাব্বির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই লাইসেন্সটা আমার স্ত্রী সম্পার নামে করা আছে।’
নিয়মিত বীজ তোলেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘ভাই অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান। আপনাদের অনেক সাংবাদিক আসে; চা খেয়ে যায়।
‘সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। আপনি অফিসে আসেন, চা খেয়ে যান।’
ওই বক্তব্যের পর সংযোগটি কেটে দেন তিনি।
এদিকে জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার মেসার্স জিমান ট্রডার্স নামে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন নিয়ে রেখেছেন বিএডিসির সার লাইসেন্সের ডিলারশিপ। প্রোপাইটারে জায়গায় রয়েছে তার নিজের নাম।
তার ছেলে জিমানের নামে নিয়ামতপুর বাজারে রয়েছে দোকান। নিয়মিত বিএডিসির সার ও বীজ তুলে বিক্রি করেন তিনি।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর সরকারি কলেজের প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, ‘লাইসেন্সটা অনেক আগে করা ছিল। তখন আমার কলেজ সরকারি হয়নি। ২০১৮ সালে আমার কলেজ সরকারি হয়েছে।’
‘তাহলে দীর্ঘ সাত বছর ধরে সরকারি ডাবল সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করছেন। এটার সুযোগ রয়েছে কী?’
উল্লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই একাধিক জায়গা হতে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি তিন মাস আগে ডিসি অফিসে লাইসেন্স বাতিলের আবেদন জানিয়েছি।’
এদিকে ধারাবাহিকভাবে গত মাসেও সরকারি গুদাম থেকে সার তুলেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘লাইসেন্সটা আমার ছেলের নামে হস্তান্তর করা হবে। তার প্রক্রিয়া চলছে।’
অপরদিকে ধামইরহাট উপজেলার ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলাম তার নিজ নামে নিয়ে রেখেছেন বিসিআইসির সার ডিলারশিপ। সরকারি গুদাম থেকে নিয়মিত সার তুলে উপজেলার আমাইতাড়া বাজারে বিক্রি করছেন তিনি।
এ বিষষে জানতে ধামইরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তৌহিদুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘আসলে ওটা অনেক আগে করা হয়েছিল। পরে আমার কলেজ সরকারীকরণ হয়।
‘সরকারি একাধিক জায়গা হতে সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি বেআইনি হয়েছে। আমি লাইসেন্সটা ট্রান্সফার করে দেব।’
‘আপনি তো এখনও নিয়মিত সার তোলেন।’ এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আসলে এখন ইরি-বোরো মৌসুম চলছে তো। তাই একটু তুলতেছি।’
যা বলছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা
ডিলারশিপের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নওগাঁর উপপরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা এটা করতে পারে না।’
‘আপনার অধিদপ্তরে এমন অনেকে রয়েছে। তাহলে তাদের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?’
এমন প্রশ্নে প্রোগ্রামের ব্যস্ততার কথা বলে ফোন লাইন কেটে দেন এ কর্মকর্তা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল বলেন, ‘ইউএনও, কৃষি অফিস যাচাই-বাছাই করে জেলা কমিটিকে প্রস্তাব পাঠাই। তারপর অনুমোদন দেওয়া হয়।
‘সরকারি চাকরি করে বিএডিসি কিংবা বিসিআইসির ডিলারশিপ লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পূর্ব অনুমতিও নিতে পারত এ ক্ষেত্রে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত কমিটি।
এতে কমিটির কিশোরগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি, স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর, তিনি ছিলেন ফ্যাসিস্টের ১৫ বছরের অন্যতম সহযোগী। হাজার হাজার মানুষকে গুম, খুন, হত্যা করে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেওয়া, আয়নাঘরে বন্দি করেছেন, বনবাসে পাঠিয়েছেন, পাচার করেছেন, নির্মমভাবে অত্যাচার করে হত্যা করার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার যতটুকু দায় রয়েছে, কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল)-এর সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুরও ততটুকু দায় রয়েছে।
‘স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী চুন্নুর বিরুদ্ধেও কিশোরগঞ্জের ছাত্রসমাজ অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবে। সে যে স্পর্ধা দেখাচ্ছে, সে যে মাঠে আসতে চাচ্ছে, আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, তাকে ছাত্রসমাজ রুখে দেবে।’
দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলার নবগঠিত কমিটির পরিচিতি ও কর্মপরিকল্পনা সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলন হয়।
এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল ৩২১ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেন। এতে ইকরাম হোসেনকে কিশোরগঞ্জ জেলার আহ্বায়ক ও ফয়সাল প্রিন্সকে সদস্য সচিব করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উদ্দেশে ইকরাম হোসেন বলেন, ‘দিল্লিতে বসে আপনি যদি কোনো ধরনের চক্রান্ত করেন, ষড়যন্ত্র করেন, তাহলে আপনি ইতিমধ্যে লক্ষ করেছেন, এই তরুণ বিপ্লবীরা ঘুমিয়ে যায় নাই। আপনি যে স্পর্ধা দেখিয়েছেন ছাত্রলীগ, যুবলীগের গুন্ডা বাহিনী, তারা দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে শহীদ করার পরও ন্যূনতম তাদের ভ্রুক্ষেপ নেই, তাদের কোনো অনুশোচনা নেই।
‘আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, যাদের হাতে দুই হাজার ছাত্র-জনতার রক্ত লেগে আছে, যারা ছাত্র-জনতাকে পঙ্গু করেছে, নিঃস্ব করেছে, তাদের আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। কিশোরগঞ্জেও আওয়ামী লীগের ব্যানারে কোনো রাজনীতি চলবে না। যারাই স্পর্ধা দেখাবে, আমরা তাদের প্রতিহত করব।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স, মুখ্য সংগঠক শরিফুল হক জয়, মুখপাত্র সাব্বিরুল হক তন্ময়, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান রনি, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ইয়াজ ইবনে জসীম, যুগ্ম সদস্য সচিব আদিফুর রহমান, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক রহমত উল্লাহ চৌধুরী হাসিনসহ অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তাদের একজন বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় প্রকল্পের নামে শত শত কোটি টাকা লুটপাট করেছে ফ্যাসিস্টরা। এলজিইডি, রোডস এন্ড হাইওয়ে, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীরা টাকার পাহাড় গড়েছে।
‘আন্দোলনে নিহত ও আহতদের নিয়ে মামলা বাণিজ্য হয়েছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘৬ মাস পরে কমিটি হইছে। কমিটি দরকার তাই হইছে। আমাদের দরকার দেশকে সংস্কার করা। ৫ আগস্টের পর কারা বাসস্ট্যান্ড দখল করছে, তা কি আমরা জানি না? যতদিন পর্যন্ত দেশটাকে সুন্দর করতে না পারি, ততদিন পর্যন্ত থাকব।
‘আমরা ক্ষমতার জন্য এখানে আসিনি। চাকরির বাজারও দখল করে রেখেছে। মন্ত্রীর ছেলে মন্ত্রী হবে, এমন বাংলাদেশ আমরা চাই না।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযমের মৃত্যু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের ওসমানী পৌর স্টেডিয়ামে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক এমপি শামীম ওসমানের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তৎকালীন জামায়াতের আমির গোলাম আযমের বিরুদ্ধে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা করে শহরের এক গডফাদার নারায়ণগঞ্জের সড়কে ৭২ ফুট লম্বা ব্যানার টানিয়েছিলেন।
‘ডিসি, এসপির উপস্থিতিতে গডফাদার শামীম ওসমান বলেছিলেন, আমার বিরুদ্ধে খুনের অগ্রিম মামলা করে রাখেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পতিত আওয়ামী সরকারের জুলুমের শিকার হয়ে গোলাম আযম সাহেব মারা যান।’
তিনি বলেন, ‘গডফাদার আজ কোথায়? নারায়ণগঞ্জে নেই। এত অহংকার, দাম্ভিকতা ভালো না। সন্ত্রাসকে কখনও প্রশ্রয় দিতে হয় না। না হলে দুনিয়াতেই তার করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির মুহাম্মদ আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে ওই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম, ঢাকা অঞ্চল দক্ষিণের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসাইনসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন (এলজিআরডি) ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বর্তমান সরকার শিগগিরই পদক্ষেপ নেবে।
তিনি বলেন, ‘প্রথমত এটা অত্যন্ত ইতিবাচক যে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও এক ধরনের ঐকমত্য তৈরি হচ্ছে। দেশের মানুষ তৎকালীন ক্ষমতাসীন ওই দলের অগণতান্ত্রিক এবং একগুঁয়েমি মনোভাব ও কার্যকলাপ মেনে নিতে পারেনি বলেই ৫ আগস্টের আগে ও পরে তাদের মধ্যে দলটি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।
‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এমন ঐকমত্য তৈরি হলে সরকারের জন্য যেকোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।’
বার্তা সংস্থা বাসসকে শুক্রবার দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন আসিফ মাহমুদ।
রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে সরকার শিগগিরই কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আসিফ আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সাধারণ মানুষ কিংবা রাজনৈতিক দল, যে বা যারাই হই না কেন, আমরা এ দেশের জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করি। ফলে ৫ আগস্টের পরে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও চাওয়ার জায়গা আছে, সেগুলোকে প্রাধান্য দেওয়াটাই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। সে জায়গা থেকে বিএনপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের যে দাবি উঠেছে, আমি বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাতে চাই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়া ছাড়াও চারটি আইন রয়েছে, যেখানে সরকার নির্বাহী আদেশে যেকোনো দলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। তবে এটার লিগ্যাল ফ্রেমওয়ার্কটা (আইনি কাঠামো) কী হবে, এ বিষয়ে সরকার এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।’
আরও পড়ুন:পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বিনোদনের স্থান নয়, এটি প্রকৃতি সংরক্ষণের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। এসব উদ্যানকে প্রকৃতির সংরক্ষণস্থল হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, কেউ এ সংক্রান্ত কার্যকর প্রস্তাব দিলে তা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার অনুষ্ঠিত বার্ষিক বোটানিক্যাল কনফারেন্সের উদ্বোধন অধিবেশনে ঢাকাস্থ বাসভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা বলেন, ‘দেশের পাহাড়ি ও উপকূলীয় বনসহ বিপন্ন বনাঞ্চল রক্ষায় সরকার কাজ করছে। বন সংরক্ষণে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘অবৈধ দখলমুক্ত করে পুনরায় বনায়ন করতে হবে। কোনো উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন উজাড় হলে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সঙ্গে সঙ্গে পুনরায় বৃক্ষরোপণ নিশ্চিত করতে হবে।’
উপদেষ্টা জানান, শালবন পুনরুদ্ধারে একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুধু দেশীয় গাছ রোপণ করলেই হবে না। এগুলো টিকিয়ে রাখার ব্যবস্থাও জরুরি।
তিনি আরও জানান, সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে প্রাকৃতিক বন পুরোপুরি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তাই কোনো বনায়ন প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করা যাবে না।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য