মনোনয়নপত্র দাখিলের মধ্য দিয়ে জমে উঠেছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আর মূল আলোচনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই জাহাঙ্গীর আলম গুম হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, কালকের পর হয়তো আমার পায়ে শেকল পরাতে পারে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
অপরদিকে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেছেন, ‘আমার শক্তি জনগণ। আমি কাউকে প্রতিপক্ষ মনে করি না। নৌকার পক্ষে জনতা আছে, তাই আমি কাউকে নৌকার প্রতিপক্ষ মনে করি না।’
বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে আজমত উল্লাহ খান ও জাহাঙ্গীর আলমসহ মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন আটজন প্রার্থী। এর আগে বুধবার মেয়র পদে আরও চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন।
দুপুর ১২টার দিকে নেতাকর্মীদের নিয়ে শহরের বঙ্গতাজ অডিটরিয়ামে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আসেন নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান। পরে তিনি অল্প কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলামের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তবে আচরণবিধি ভঙ্গ করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বাইরে গাজীপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়ন জমা দেয়ার সময় আজমত উল্লা খানের সঙ্গে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মণ্ডল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান মতি, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান সরকার রাসেল ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আজমত উল্লা খান যা বললেন
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় আজমত উল্লাহ খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা আমাদের অস্তিত্বের নির্বাচন, দুর্নীতমুক্ত সিটি করপোরেশন গঠনের নির্বাচন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠান গড়ার নির্বাচন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গাজীপুর সিটি করপোরেশনকে স্মার্ট নগরী উপহার দিতে চাই।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘গাজীপুর নগরবাসী চায় একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সিটি করপোরেশন গঠিত হোক। আমি নির্বাচিত হলে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত জনকল্যাণমুখী একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিটি করপোরেশনকে গড়ে তুলব।’
আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সব নেতা-কর্মী ঐক্যবদ্ধ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত ইনশাআল্লাহ।’
জাহাঙ্গীর আলম যা বললেন
সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং জাহাঙ্গীর আলম তার মায়ের পক্ষে বিকেল ৩টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এসময় জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য আসকর আলী, সাবেক সহ-দফতর সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম এবং সাবেক গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদির উপস্থিত ছিলেন।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ, প্রধানমন্ত্রী ও নৌকা আমার কাছে একটা শ্রদ্ধার জায়গা। আমি ব্যক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। যে এই শহরকে ধ্বংস করবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি।
‘আমার মা বলেছেন যে শহর রক্ষা করতে যা প্রয়োজন তা করো। সে হিসেবে মায়ের দোয়া ও সহযোগিতা নিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছি। আমি ভোটের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেব কে খারাপ আর কে ভালো। কে অন্যায়কারী আর কে সৎ। সত্যকে প্রকাশ ও প্রতিষ্ঠিত করতে মা ও ছেলে মিলে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি আমার শহর রক্ষা করতে চাই। শহরের মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত করেছিল। আমি শহরের মানুষের কাছে একটা পরীক্ষা দিতে চাই। নির্বাচন থেকে স্বেচ্ছায় সরে যাওয়ার কোনো পথ নেই। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার জন্য। আমি এই শহরের মানুষকে নিয়ে লড়তে চাই, যদি না আমাকে সরিয়ে দেওয়া না হয়।’
তিনি বলেন, ‘কালকের পর হয়তো আমার পায়ে শেকল পরাতে পারে। আমাকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে। আমাকে গুম করতে পারে। আমি দেশবাসী ও নগরবাসীকে বলে যাই- যদি আমার মৃত্যু হয়, আপনারা বিশ্বাস করবেন যে এই শহর রক্ষা করতে গিয়ে যা যা ভাল কাজ আছে আমি সব করেছি।’
নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও সুন্দর ভোট প্রত্যাশা করে জাহাঙ্গীর আরও বলেন, ‘আজ আমার কাছ থেকে সব ছায়া সরে গেছে। কিন্তু আল্লাহর ছায়া, মায়ের ছায়া, নগরবাসীর ছায়া এবং দেশের আপামর জনগণের ছায়া রয়েছে। এই নগরীতে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। আমি কোনো অন্যায় করে থাকলে এই শহরের মানুষ ভোটের মাধ্যমে তার বিচার করবে। আর যদি ভালো কিছু করে থাকি তাহলে অবশ্যই সত্যের জয় হবে।’
মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন রনি
একইদিন সকালে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান উদ্দিন সরকারের ভাতিজা সরকার শাহনুর ইসলাম রনি। রনি বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক সম্পাদক নুরুল ইসলাম সরকারের ছেলে। নুরুল ইসলাম সরকার গাজীপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বর্তমানে কারাগারে বন্দি।
মনোনয়নপত্র জমাদানের পর রনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি বিএনপি পরিবারের সন্তান। আমার চাচা, বাবা সবাই বিএনপির রাজনীতি করেন। আমি ইতোমধ্যে অনেকউঠোন বৈঠক করেছি। তৃণমূল কর্মীদের সমর্থন পেয়েছি। সে কারণে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করব। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
বিএনপির পক্ষ থেকে সমর্থন বা বাধা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএনপি হয়তো নির্বাচনে আসছে না। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ের বিএনপির সমর্থন আমার প্রতি রয়েছে। আমি বুঝেশুনেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, আমার সঙ্গে সবাই থাকবেন। শুধু বিএনপি নয়, রাজনৈতিক দল-মত নির্বিশেষে সবাই আমাকে সমর্থন করবেন। আমার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খানের সঙ্গে।’
আচরণ বিধি লঙ্ঘন: দুই মেয়র ও এক কাউন্সিলর প্রার্থীকে শো-কজ
আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে দুই মেয়র প্রার্থী এবং একজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা। নোটিশপ্রাপ্তরা হলেন- স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) আব্দুল্লাহ আল মামুন মণ্ডল, জাতীয় পার্টি মনোঈত প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন ও নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী সনজিৎ মল্লিক।
শো-কজ নোটিশে ২৮ এপ্রিলের (শুক্রবার) মধ্যে প্রচার সংক্রান্ত সব পোস্টার ও বিলবোর্ড নিজ খরচে অপসারণের নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়াও ওই বিধিমালার অধীনে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইন ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, নির্বাচন সুশৃংখল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রার্থীদের আচরণবিধি মেনে চলতে বিভিন্ন এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৩০ এপ্রিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দিন ৮ মে। প্রতীক বরাদ্দ হবে ৯ মে এবং ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে।
সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৮৪ হাজার।
আরও পড়ুন:পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে জনগণের অধিকার পরিপূর্ণ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। থাইল্যান্ড থেকে চিকিৎসা শেষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষ নয় বিএনপি এমনটা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, পিআর পদ্ধতিতে এদেশের মানুষ অভ্যস্ত নয়, এতে জনগণের অধিকার পরিপূর্ণ হবে না। দেশে যে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট আছে তা থেকে উদ্ধারের একমাত্র পথ হচ্ছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচন চায়, সংকট নিরসনের একমাত্র পথ দ্রুত নির্বাচন। যারা সংস্কার চাচ্ছে না, সেটা তাদের দলের ব্যাপার।
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হোক, এটাই প্রত্যাশা।’
এর আগে গত বুধবার সকালে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে স্ত্রীসহ চিকিৎসার জন্য ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। দেশে ফিরে সুস্থ আছেন বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়েছে। সোমবার ১১ আগষ্ট দুপুর ১ টায় নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে এই সম্মেলনের অধিবেশনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম
উদ্বোধনের শুরুতেই জাতীয় সংগীত ও দলীয় গান পরিবেশন করে সন্মান প্রদর্শন করা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল শহীদ ও জুলাই আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি নতুনভাবে দল পরিচালনার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলীম ও এ এইচ এম ওবায়দুর রহমান চন্দন।
এদিন বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। চলবে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত। কাউন্সিলে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং দুটি সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জেলার ১৪টি ইউনিটের ১ হাজার ৪১৪ ভোটার গোপন ব্যালটে জেলা বিএনপির নেতৃত্ব নির্ধারণ করবেন।
কাজেই সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ পদ কারা পাচ্ছেন, কারা হাসবে জয়ের হাসি, কাদের নেতৃত্বে চলবে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের সাংগঠনিক কার্যক্রম তা নিয়ে চলছে গুঞ্জন।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেলা বিএনপির সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। এতদিন নানা সীমাবদ্ধতায় সম্মেলন করতে না পারলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বেশ ঘটা করে সম্মেলনের আয়োজন করেছে দলটি। তাই সম্মেলন ঘিরে পুরো শহর সেজেছে নতুন কমিটির নেতৃত্বে আসা নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে। এই সম্মেলন ঘিরে ১৭ বছর হামলা, মামলা, নির্যাতন ও কারাবরনে জর্জরিত নেতাকর্মীরা ফিরে পেয়েছেন প্রাণচাঞ্চল্য। কর্মীরাও মুখে আছেন নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে।
এই সম্মেলনে নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে তৃনমূল থেকে শুরু করে শহরের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। অনেক নেতাকর্মী ভাবছেন নতুন নেতৃত্ব আসবে, আবার কেউ কেউ ভাবছেন ধারাবাহিক নেতার মধ্যে দুই একজন জয়ী হতে পারেন।
তবে নেতাকর্মীরা বলছেন, যারা বিএনপির রাজনীতিতে রাজপথে ছিলেন, রাজপথ থেকে উঠে এসেছেন, রাজনীতিতে যাদের দলীয় পরিচয় বেশি, যারা কর্মী বান্ধব তারাই আসুক নেতৃত্বে। দলের দুর্দিনে যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা যেন সঠিক মূল্যায়ন পান। এছাড়াও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে নতুন করে দলকে পুনরুজ্জীবিত ও সুসংগঠিত করে আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে ভূমিকা রাখবে এমন নেতৃত্ব চান নেতাকর্মীরা।
দলীয় সুত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন মামুনুর রহমান রিপন। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন হয়নি।
এরপর ২০২২ সালে আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নুকে আহ্বায়ক ও বায়েজিদ হোসেন পলাশকে সদস্য সচিব করে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছিল।
পট পরিবর্তনের পর বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুসারে, ঘোষিত সম্মেলন উপলক্ষে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। গত রোববার (৩ আগষ্ট) তফসিল ঘোষণা করেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী ও বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা। পরের দিন সোমবার জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এই দুইটি পদপ্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। একই দিনে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই ও চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়।
উল্লেখ, সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজমুল হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু, জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান তুহিন, পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবদুস শুকুর, জেলা বিএনপির সাবেক কোষাধ্যক্ষ এস এম মামুনুর রহমান ও জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য এ বি এম আমিনুর রহমান।
সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়ার জন্য লড়ছেন চারজন। তারা হলেন- জেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেন পলাশ, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল হক বেলাল। এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের জন্য আটজন মনোনয়ন তুলেছেন। তারা হলেন শফিউল আজম (ভিপি) রানা, নূর-ই আলম, ফরিদুজ্জামান, খায়রুল আলম, শবনম মোস্তারী, সুলতান মামুনুর রশিদ, কামরুজ্জামান কামাল ও জহুরুল হক।
এদিকে এই সম্মেলনের আগের দিন রোববার (১০ আগস্ট) দুপুর ২টায় নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে সম্মেলনের কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকাকে ‘বিতর্কিত’ উল্লেখ করে সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম বেলাল।
জুলাই ঘোষণাপত্র অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিএনপি’র শীর্ষ ৫ জন নেতা। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির ৫ সদস্য এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
বিএনপি’র মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অন্যান্য সদস্যরা হলেন- বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ডক্টর আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সালাহউদ্দিন আহমদ।
এদিকে, সোমবার রাতে বিএনপি’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকটি রাজধানীর গুলশানে বিএনপি’র চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১০টায় শেষ হয়।
বৈঠকে ভার্চুয়ালি সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে ঘেরাও করতে চাওয়া নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান খোকাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা চিঠিতে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। তবে বহিষ্কারের বিষয়টি বুধবার সকালে প্রকাশ পায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব। তিনি বলেন, বহিষ্কারের তথ্যটি সঠিক।
চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলীয় নীতি, আদর্শ ও সংহতির পরিপন্থি কার্যকলাপের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার বিএনপির সদস্য লুৎফর রহমান খোকাকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে, গত ২৩ জুলাই বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার ফতুল্লায় সোনালি সংসদ মাঠে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন লুৎফর রহমান খোকা। তিনি বলেন, শাহ আলমের (নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী) জন্য আমরা নমিনেশন আনবো। প্রয়োজনে আমরা আত্মাহুতি দেবো কেন্দ্রীয় অফিসের সামনে। তারেক রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে ও বিএনপির মহাসচিবকে ঘেরাও করবো।
তিনি বলেন, বিএনপির সর্বোচ্চ মহলকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ফতুল্লাকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করা হয়, তাহলে কাউকে ছাড়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, এখানে কোনো জোট চলবে না। এই খেলা আর খেলবেন না। ধানের শীষ ছাড়া ফতুল্লায় কিছু চলবে না। ফতুল্লার জনগণের আবেগ, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না। ফতুল্লার মানুষদের প্রিয় নেতা শাহ আলমকে বাদ দিয়ে এখানে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া মানেই জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা।
এদিকে এই ঘটনার দুই দিন পর বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ঘেরাও করার মন্তব্যটি সঠিক হয়নি বলে স্বীকার করেন লুৎফর রহমান খোকা। তিনি বলেন, মন্তব্যটি স্লিপ অব টাং বলতে পারেন। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রায় ৮০ ভাগ ভোটার বিএনপির। এখানে যদি জোটের অন্য কাউকে দেওয়া হয়, তাহলে সেটা ভোটারদের জন্য কষ্টদায়ক। বিষয়টি কেন্দ্রকে বোঝাতে গিয়ে একটু বেশি বলে ফেলেছি। এটা আমার ঠিক হয়নি
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত না করে এবং একটি সঠিক গণতান্ত্রিক কাঠামো জাতীয় নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা না করে কোনও প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) এক আলোচনাসভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি তাদের সমালোচনা করেন যারা মনে করেন, সংস্কার রাতারাতি বা কয়েকটি বৈঠকের মধ্য দিয়েই হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্কার একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করতে হয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।’
বিএনপি নেতা বলেন, যদি সরকার মনে করে যে, তারা চাইলেই কাল থেকে পুলিশ ঘুষ নেওয়া বন্ধ করে দেবে, তাহলে সেটা হবে না। ‘আপনাকে এমন একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে যেখানে ঘুষ নেওয়াকে নিরুৎসাহিত করা হয়।’
জিয়া পরিষদ এই আলোচনাসভার আয়োজন করে, যার শিরোনাম ছিল ‘জুলাই অভ্যুত্থান: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’। এটি গত বছরের গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়।
ফখরুল দেশের উন্নয়নে বাধা হিসেবে বিদ্যমান আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের আমলাতন্ত্র উন্নয়নের একটি বড় বাধা। এটি একটি নেতিবাচক আমলাতন্ত্র এবং এটিকে একটি ইতিবাচক কাঠামোয় রূপান্তর করতে হবে। তা করতে হলে মূলত জনগণকে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনগণের কাছে ফিরে যাওয়া, তাদের চাহিদা বোঝা এবং সেই চাহিদাকে রাষ্ট্র পরিচালনায় প্রতিফলিত করা।
নির্বাচন চাওয়ার কারণে বিএনপিকে ঘিরে চলমান সমালোচনার প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে কথা বলা শুরু করতেই বলা হলো, বিএনপি শুধু নির্বাচন চায়। কিন্তু কেউ কি ভেবে দেখেছে, আমরা কেন নির্বাচন চাই?’
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, নির্বাচন ছাড়া প্রকৃত জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করা যায় না। ‘আর যদি প্রতিনিধি না থাকে, তাহলে তারা কীভাবে সংসদে যাবে? আর যদি নির্বাচিত সংসদ না থাকে, তাহলে কীভাবে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে?’
ফখরুল বলেন, ‘আপনি দেশ চালাতে বাড়ি ও বিদেশ থেকে কয়েকজন লোক ভাড়া করে আনতে পারেন না। এটি সম্ভব নয়।’
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে বলেন, জাতির এই শোকের সময়ে আমি সকল গণতন্ত্রপন্থী সহযোদ্ধার প্রতি শান্ত ও সংহত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, বিভেদমূলক সংঘাত কিংবা জনতার উচ্ছৃঙ্খল আচরণ বন্ধ করতে হলে আমাদের সহনশীলতা ও আত্মসংযমের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের কিছু সদস্যের মাধ্যমে জনতা ও পুলিশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির এবং সহিংসতা উসকে দেওয়ার উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব গোষ্ঠীকে অনুরোধ করব, বাংলাদেশের ইতিহাসের এমন একটি শোকাবহ মুহূর্তকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকুন। এর পরিবর্তে জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং সহানুভূতি ও সংহতি প্রদর্শনের দিকেই আমাদের মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আমাদের শক্তি ব্যয় হোক নিখোঁজ প্রিয়জনদের খুঁজে বের করা, নিহতদের সঠিকভাবে তালিকাভুক্ত করা, আহতদের সর্বোত্তম চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বিমান দুর্ঘটনার মূল কারণ নির্ধারণে কর্তৃপক্ষকে নিরপেক্ষ ও কার্যকর তদন্তের সুযোগ করে দেওয়ার কাজে।
তারেক রহমান বলেন, প্রাণহানির শিকার নিরীহ ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর পাশে রয়েছে আমাদের হৃদয়ের গভীর সহানুভূতি। বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং প্রতিটি সংকটকে সংহতি নিয়ে মোকাবিলা করতে হবে।
ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রশিক্ষণ বিমান চালানো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত।
ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যারা চিকিৎসাধীন, তাদের দেখতে গতকাল সোমবার বিকাল পাঁচটার দিকে যান রুহুল কবির রিজভী। সেখানেই তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ প্রশ্ন তোলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্য নেতারা ছিলেন।
রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ এলাকা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এ এলাকার মধ্যে প্রশিক্ষণ বিমান দিয়ে উড্ডয়ন শিখবে, এটা আমার কাছে রহস্যজনক মনে হয়। এটা বিস্তীর্ণ প্রান্তরে হতে পারে। যশোর, কক্সবাজারের মতো জায়গায় হতে পারে। সেখানে পাশে সমুদ্র আছে, বিস্তীর্ণ জায়গা আছে। কিন্তু এ ধরনের ঘনবসতিপূর্ণ জায়গায় প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নেবে, এটা আমি কোনোভাবেই যেন মেনে নিতে পারছি না।’
রুহুল কবির আরও বলেন, ‘নেভিগেশন বা টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমি অবশ্যই জানব না। কিন্তু সাদা চোখে যেটা মনে হয়েছে, চারদিকে এত বাড়িঘর, মানুষ থইথই করছে, এর মধ্যে একটা প্রশিক্ষণ বিমানে প্রশিক্ষণ নিতে পারে না। এটা নিয়ে প্রশাসন, সরকারের গুরুদায়িত্ব আছে। দায়িত্বে অবহেলা করলে প্রতিনিয়ত মানুষের জীবন বিপন্ন হতে থাকবে।’
রিজভী বলেন, ‘বিমানবন্দরের পাশে কী ধরনের লোকালয় গড়ে উঠবে, তার পরিকল্পনা থাকা উচিত। আমার মনে হয়, যেসব লোকালয় গড়ে উঠেছে, তা পরিকল্পনার অংশ নয়। এত ঘনবসতি এই এলাকায় হতে পারে না।’
বিএনপির নেতাকর্মীরা এ ঘটনায় সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে জানিয়ে রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসহায়তা দেওয়া হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরা রক্তের জোগান দেওয়াসহ অন্যান্য সহযোগিতা করছে। দলের কয়েকটি কর্মসূচিও স্থগিত করা হয়েছে।
মন্তব্য