রাজধানীর রামপুরায় মদ্যপ অবস্থায় তরুণ-তরুণীকে আটক করে বিপাকে পড়ে গেছে থানা পুলিশ। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাণ্ডব চালিয়েছে এই দুজন।
পুলিশ সূত্র জানায়, রোববার রাতে মদপ্য অবস্থায় সাদমান নামে এক তরুণ প্রাইভেট কার চালিয়ে কয়েকটি গাড়ির ক্ষতি সাধন করেন। এ সময় তার পাশে সারাবান তহুরা নামে এক তরুণী ছিলেন। এ সময় জনতা তাদের প্রাইভেট কারটি আটক করে।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে রামপুরা থানার পুলিশ ভ্যানে করে ওই দুই তরুণ-তরুণীকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসে। তাদেরকে যখন হাসপাতোলে আনা হয় তখন সাদমানকে হ্যান্ডকাফ পরানো ছিল। আর এক নারী পুলিশ সদস্য ওই তরুণীর হাত ধরে নিয়ে আসেন।
চিকিৎসক তাদেরকে ভর্তি দেন এবং স্টমাক ওয়াশের পরামর্শ দেন। রাতে স্টমাক ওয়াশ করে হাসপাতাল কক্ষে নেয়ার পর শুরু হয় ওই দুই তরুণ-তরুণীর তাণ্ডব। তাদের সেই তাণ্ডব থেকে স্টমাক ওয়াসারসহ পুলিশ কর্মকর্তা, আনসার সদস্য, মেডিক্যাল স্টাফ, এমনকি অন্যান্য রোগীর স্বজনরাও রেহাই পাননি।
তারা রামপুরা থানা পুলিশের দারোগাসহ সব পুলিশ সদস্যকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও ধাক্কা মারতে থাকেন। একইসঙ্গে হুমকি দিয়ে বলতে থাকেন- ‘হ্যান্ডকাফ খুলে দে। তা না হলে তোদের খবর আছে।’
এ ধরনের অস্বাভাবিক আচরণের শিকার অন্যরা এ সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা বলতে থাকেন- এই বেয়াদব দুটিকে লাঠিপেটা করে পুলিশ থানায় নিয়ে হাজতে ভরছে না কেন? তাহলে কি এই মাদকাসক্ত তরুণ-তরুণীর কাছে পুলিশ অসহায়?
অবশেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাদের তাণ্ডবের কাছে নতি স্বীকার করে রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজন ওই তরুণের হ্যান্ডকাফ খুলে দেন।
এসআই সজন বলেন, ‘রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে মদপ্য অবস্থায় এই তরুণ প্রাইভেট কার চালিয়ে কয়েকটি গাড়ির খতি সাধন করেন। পরে জনতা তাদের প্রাইভেট কারটি আটক করে। আমরা খবর পেয়ে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া মোড়ে আবুল হোটেলের সামনে কালো রঙের ব্যক্তিগত গাড়ি থেকে মদ্যপ অবস্থায় এই দুই তরুণ-তরুণীকে আটক করি। পরে স্টমাক ওয়াশ দেয়ার জন্য ওদেরকে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। তাদের এমন আচরণের ঘটনায় মামলা হবে।’
জুমার নামাজের আগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে বর্তমান খতিব ওয়ালিউর রহমান ও সাবেক খতিব রুহুল আমিনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খতিব ওয়ালিউর রহমান মুসল্লিদের উদ্দেশে খুতবা (বক্তব্য) দেয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নামাজ শুরুর আগে খতিব ওয়ালিউর রহমান খান বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এ সময় খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন তার অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মুকাররম মসজিদে প্রবেশ করে খতিবের মাইক্রোফোন কেড়ে নিয়ে মিম্বরের কাছে বসে থাকা মুসল্লি ও খাদেমের ওপর হামলা চালান। হামলা-সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক লোক আহত হন।
নামাজ পড়তে আসা আবদুল হামিদ বলেন, ‘সাবেক এই ইমাম যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বসে সমস্যার সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে লোক এনে হামলা চালান। এটা সত্যিই লজ্জাজনক।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এটি বড় কোনো ঘটনা নয়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
তিনি জানান, বায়তুল মুকাররম উত্তর গেট ও পল্টন মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন ইউএনবির প্রতিবেদক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় আট শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেছে। প্রাথমিকভাবে তাদের আবাসিক সিট বাতিল করেছে হল প্রশাসন। শনিবার তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ শুক্রবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রক্টর বলেন, ‘অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীর সিট বাতিল করা হয়েছে। আগামীকাল আমরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করব। এরপর অধিকতর তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’
ওই আট শিক্ষার্থী হলেন- পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন শাহ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জালাল মিয়া ও আবদুস সামাদ, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের আল হোসাইন সাজ্জাদ, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল আলম, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ কবির ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবদুস সামাদ।
তাদের মধ্যে ফিরোজ কবির ও আবদুস সামাদ ছাড়া বাকি ছয় শিক্ষার্থীকে হল প্রশাসনের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
হত্যার ঘটনায় আটজনের সম্পৃক্ততা
এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি আটজনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বুধবার রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলের মর্মান্তিক ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অত্যন্ত দুঃখিত ও মর্মাহত। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুততার সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সচেষ্ট হয়েছে ও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় হল প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটি বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় রিপোর্ট পেশ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় তদন্ত কমিটি চিহ্নিত আটজন অভিযুক্তের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযুক্ত এই আটজনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সে ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সচেষ্ট রয়েছে এবং সবার সহযোগিতা কামনা করছে।
ছয় শিক্ষার্থীর দায় স্বীকার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম (এফএইচ) হলে তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
শুক্রবার তাদের ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হন। পরে শাহবাগ থানার সাব-ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করে। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন- জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম। তাদের মধ্যে জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপ-সম্পাদক।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হোসেন বখত চত্বর এলাকায় ময়নার পয়েন্ট গলিতে অবস্থিত ডংকা শাহর মাজার ভেঙে দেয়ার চেষ্টা হয়েছে।
শুক্রবার ফজরের নামাজের পর কিছু মুসল্লি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাজারে হামলা চালান। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ প্রশাসনের পাহারায় মাজারের আশপাশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয় মাজারটি।
এলাকার মুসল্লিরা অভিযোগ করে বলেন, ‘এই মাজারে গাঁজাসহ বিভিন্ন নেশাদ্রব্য সেবন ও অসামাজিক কার্যকলাপ চলে। এগুলো কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না। এ কারণে মাজার ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।’
এ বিষয়ে ডংকা শাহ মাজারের খাদেম আছদ আলী বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় মাজারে তালা দিয়ে বাসায় যাই। আজ সকাল ৮টার দিকে খবর পাই যে এলাকার শ্যামলের নেতৃত্বে কিছু লোক মাজার ভাঙছে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ এসে মাজারটা রক্ষা করেছে।
তিনি বলেন, ‘মাজারে থাকা দানবাক্সটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। দানবাক্সে ১৫ হাজার টাকার মতো জমা ছিল। সেই টাকাগুলো নেই। মাজারের সামনের সিঁড়ি ভেঙেছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, ‘ডংকা শাহর মাজার ভাঙচুর হয়নি। এলাকার মানুষ মাজারের কার্যক্রমের প্রতিবাদ জানিয়েছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে দানবাক্সের টাকার বিষয়ে আমি কিছু জানি না, তারা অভিযোগেও বলেনি।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসঙ্গে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে আট শিক্ষার্থীকে।
বৃহস্পতিবার রাতে জরুরি প্রশাসনিক সভার সিদ্ধান্তে বুধবার রাতে ঘটে যাওয়া শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির সভাপতি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেন। সদস্যরা হলেন- দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ তারেক চৌধুরী, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এমরান জাহান, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিছা পারভিন এবং জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমিনা ইসলাম।
কমিটিকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে একই ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে প্রাপ্ত প্রমাণাদির (ভিডিও ফুটেজ ও ফটোগ্রাফ) ওপর ভিত্তি করে ঘটনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়ায় অভিযুক্ত আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. রাজন মিয়া, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাজু আহম্মদ, ইংরেজি বিভাগের ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. মাহমুদুল হাসান রায়হান, ইতিহাস বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ, ইংরেজি বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী হামিদুল্লাহ্ সালমান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিকুজ্জামান আতিক, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সোহাগ মিয়া এবং বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব।
আরও পড়ুন:খাগড়াছড়ির ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকালে পাহাড়ি ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপায় এসে বেশ কয়েকটি গাড়ি ও দোকানে হামলা চালান। খবর পেয়ে বাঙালিরা প্রতিরোধের চেষ্টা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
ওই সময় আহত হন উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন। সংঘর্ষের সময় বেশ কিছু দোকানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির যৌথ টহল টিম কাজ করছে।
আরও পড়ুন:আগের দিনে সহিংসতায় প্রাণহানির পর শুক্রবার খাগড়াছড়ি সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ‘যেহেতু সাম্প্রতিক ১৯.০৯.২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখে খাগড়াছড়ি সদর থানা এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালি সংগঠনের লোকজন আলাদা আলাদাভাবে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেয় এবং উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং তৎপ্রেক্ষিতে অফিসার ইনচার্জ, খাগড়াছড়ি সদর থানা হতে প্রাপ্ত অধিযাজনপত্রে উক্ত এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনতির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে মর্মে উল্লেখ থাকায়, সূত্র: অফিসার ইনচার্জ, খাগড়াছড়ি সদর মডেল খানা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা-এর স্মারক নম্বর ৪০৫৬, তারিখ: ২০.০৯.২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ।
‘যেহেতু উল্লিখিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কতিপয় ব্যক্তি একত্রে মিলিত হয়ে উক্ত স্থানে শান্তিশৃঙ্খলা বিঘ্ন করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হয়, সেহেতু আমি সুজন চন্দ্র রায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অত্র উপজেলার পৌরসভা (সদর) এলাকায় অদ্য ২০.০৯.২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ তারিখ ১৪.০০ ঘটিকা হতে রাত ২১.০০ ঘটিকা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮-এর ১৪৪ ধারা মতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলাম।’
আদেশে আরও বলা হয়, ‘এ আদেশ সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।’
খাগড়াছড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে সহিংসতায় তিনজন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন।
আহত ৯ জনের মধ্যে চারজনকে চট্টগ্রামে রেফার করা হয়েছে। বাকিদের অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে জেলা শহরের স্বনির্ভর ও নারানখাইয়া এলাকায় ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। রাতভর এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করে।
জেলায় কাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, তা দায়িত্বশীল কোনো সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাতে সদর হাসপাতালে নেয়ার পর জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল (৩০) নামের তিনজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে নিশ্চিত করেন আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রিপল বাপ্পি চাকমা।
নিহত তিনজনের মধ্যে জুনান চাকমা ও রুবেলের বাড়ি খাগড়াছড়ি সদরে। ধনঞ্জয় চাকমার বাড়ি দীঘিনালায়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, জেলার দীঘিনালায় বৃহস্পতিবার বিকেলে দুই পক্ষের বিরোধের জের ধরে লারমা স্কয়ারের বাজারে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। তাতে ৫০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। ওই সময় আহত হন পাঁচজন।
তারা আরও জানান, খাগড়াছড়ি সদরে বুধবার চুরির অভিযোগে মো. মামুনকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে দীঘিনালায় বাঙালি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
বর্তমানে খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল জোরদার করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সহিদুজ্জামান জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সেনাবাহিনী ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য