কক্সবাজারে ভাসমান ট্রলার থেকে উদ্ধার হওয়া দশজন পরিকল্পিত হত্যার শিকার হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআই ঢাকা থেকে স্পেশাল টিম কাজ করছে। ইতোমধ্যে তারা সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযানও শুরু করেছে।
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সোমবার দুপুরে কক্সবাজারে এসব তথ্য জানান। তিনি আরও জানান, হাত-পা বাঁধা পচন ধরা মরদেহগুলোর পরিচয় শনাক্ত করেছেন স্বজনরা।
ডিআইজি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল সোমবার দুপুরে কক্সবাজার হাসপাতাল মর্গে যান। এ সময় ডিআইজি ট্রলারডুবির ঘটনায় নিহতদের কয়েকজন স্বজনের সঙ্গে কথা বলেন। স্বজনরাও তার কাছে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় সেখানে সিআইডি ও পিবিআইর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা সুনিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না কীভাবে হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনা ঘটেছে এবং কারা ঘটিয়েছে। আমাদের ইনভেস্টিগেটররা (তদন্তকারী) কাজ করছেন। ঢাকা থেকে সিআইডি, পিবিআইয়ের দল এসে অনুসন্ধান শুরু করেছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি।’
নিহতরা সবাই মহেশখালী ও চকরিয়ার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে ৬ জনেরই বাড়ি মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর মিঠাছড়ি এলাকায়। স্থানীয় মোহাম্মদ হোসেনের ছেলে নুর কবিরের মাধ্যমে ওই এলাকার ৫ কিশোর সাগরে যায়। কিন্তু নুর কবির ছাড়া বাকি ৫ কিশোর পেশায় জেলে নয়৷ হঠাৎ কেন তারা সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিল তা-ও স্বজনরা বুঝে উঠতে পারছেন না।
স্বজনরা বলেন, সাগরের নাজিরারটেক এলাকায় ভাসমান অবস্থায় যে ট্রলার থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার হয়েছে সেটির মালিক মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকার মোহাম্মদ রফিকের ছেলে শামসুল আলম। তিনি নিজেও সাগরে মাছ ধরতে যান তার নিজের ট্রলারে। ৭ এপ্রিল মাঝিমাল্লা নিয়ে তিনি সাগরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তারা।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গ থেকে বের হয়ে আহাজারি করছিলেন হাশেম বানু নামে এক নারী। তার দাবি, মর্গে তার ভাইকে তিনি শনাক্ত করতে পেরেছেন। তার ভাইয়ের নাম শামসুল আলম।
১৪ বছরের কিশোর পারভেজের ভাই রহিম উদ্দিন জানান, তার ভাই কখনো জেলে ছিল না। কেন তাকে সাগরে নেয়া হয়েছে তাও তিনি নিশ্চিত নন। শরীরে থাকা পোশাক দেখে ভাইকে শনাক্ত করেছেন রহিম। তারও সন্দেহ, পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া মরদেহ গুলোর চেহারা শরীরের প্রায় ৯৫ শতাংশ গলে গেছে। এর ফলে তাদের শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বজনদের দাবি অনুযায়ী ১০ মরদেহের পরিচয়ই শনাক্ত হওয়া গেছে। কিন্তু মরদেহগুলো গলে গেছে। তাই ডিএনএ টেস্টের সিদ্ধান্ত ছাড়া পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। তারপরও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সিনিয়ররা নেবেন।’
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. আশিকুর রহমান বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়না তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। একে একে প্রত্যেক মরদেহের ময়না তদন্ত করা হচ্ছে।
যে ১০ জনের পরিচয় স্বজনের দাবিমতো শনাক্ত করা হয়েছে তারা হলেন- মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ার রফিক মিয়ার ছেলে সামশুল আলম, শাপলাপুর ইউনিয়নের মিটাছড়ি গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে সাইফুল ইসলাম, জাফর আলমের ছেলে সওকত উল্লাহ, মুসা আলীর ছেলে ওসমাণ গনি, সাহাব মিয়ার ছেলে সাইফুল্লাহ, মোহাম্মদ আলীর ছেলে পারভেজ মোশাররফ, মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে নুরুল কবির, চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের কবির হোসাইনের ছেলে সাইফুল ইসলাম, শাহ আলমের ছেলে মোহাম্মদ শাহজাহান ও চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকার জসিম উদ্দীনের ছেলে তারেক জিয়া।
মাছ ধরার যে ট্রলার থেকে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেটি শনিবার বিকেলে নাজিরারটেক কূলের কাছাকাছি টেনে নিয়ে আসে আরেকটি মাছ ধরার ট্রলার। যার মাঝি ছিলেন গুরা মিয়া। ওই ট্রলারে মরদেহগুলো বরফ ও মাছ রাখার স্টোরে হাত-পা বেঁধে ঢুকিয়ে দরজা পেরেক ঠুকে আটকে দেয়া ছিল।
আরও পড়ুন:সীমান্ত হত্যার বিষয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী আইসিপিতে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন এবং বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের মধ্যে বৃহস্পতিবার সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিবি ঠাকুরগাঁও সেক্টর সদরদপ্তরের কমান্ডার কর্নেল মুহাম্মদ তৌহিদুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ ১২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ ঘটিকায় ভারতের অভ্যন্তরে ফুলবাড়ীতে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বিজিবির পক্ষে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান, ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মুহাম্মদ তৌহিদুর রহমান এবং বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
‘অপরদিকে বিএসএফের পক্ষে বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি শ্রী সুরিয়া কুমার শর্মা এবং শিলিগুড়ি ও কিষাণগঞ্জ সেক্টরের ডিআইজিগণসহ বিএসএফের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বৈঠকে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক জয়ন্ত কুমার সিংহকে (১৫) গুলি করে হত্যার প্রতিবাদে বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ওপর গুলি চালানো হবে না মর্মে বিজিবি প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করেন।
‘সীমান্তবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত উভয় দেশের নাগরিকদের মধ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম রোধ ও আন্তসীমান্ত অপরাধ দমনকল্পে বিজিবি-বিএসএফ যৌথভাবে কাজ করার ব্যাপারে একমত পোষণ করে। অত্যন্ত সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুপুর ১৩৩০ ঘটিকায় বৈঠকটি শেষ হয়।’
আরও পড়ুন:ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত পুলিশ পরিদর্শক আরাফাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৩ সদস্যরা।
গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি। ওই দিন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে নিহতদের একটি ভ্যানে তুলে পুলিশ সদস্যরা লাশ পুড়িয়ে দেয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখা থেকে শুক্রবার পাঠানো খুদেবার্তায় গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর আফতাবনগর এলাকা থেকে ইন্সপেক্টর আরাফাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
এর আগে একই ঘটনায় অভিযুক্ত ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফিকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
চেক নিয়ে ঘুরছেন সাংবাদিকরা, অথচ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরার ব্যাংক একাউন্টে টাকা নেই। ব্যাংক থেকে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে বার বার। এমন প্রতারণার প্রতিবাদে বসুন্ধরা সিটির সামনে মানববন্ধন করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়েছেন সাংবাদিকরা। কেড়ে নেয়া হয়েছে ব্যানার।
চেক দেয়ার পরও প্রতারণা আর হয়রানির প্রতিবাদে আজ (বৃহস্পতিবার) প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের (ইডব্লিউএমজিএল) দৈনিক কালের কণ্ঠ, ডেইলি সান ও অনলাইন পোর্টাল বাংলানিউজ২৪ডটকম থেকে বিনা নোটিশে ছাঁটাই হওয়া সংবাদকর্মীরা।
ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদের তোয়াক্কা না করে নিজেদের মনগড়া হিসাবে ছাঁটাইকৃত শতাধিক কর্মীকে, দশ ভাগে বিভক্ত করে জানুয়ারি ২০২৪ থেকে দশটি চেক দেয় বসুন্ধরা। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ব্যাংকে চেক জমা দিলে প্রতিষ্ঠানটির একাউন্টে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকায় নিজেদের পাওনা পাননি ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। বার বার ব্যাংক থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে ইতোমধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান কালের কণ্ঠের ছাঁটাইকৃত সাংবাদিক লায়েকুজ্জামান।
পাওনা না পেয়ে অর্থাভাবে অনেকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বসুন্ধরার চেক প্রতারণার শিকার অনেকের পক্ষে চিকিৎসা ব্যয় ও ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। এরই প্রতিকার চেয়ে আজ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়ে এসেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা। তাদের প্রত্যাশা, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হস্তক্ষেপে বসুন্ধরা গ্রুপ দ্রুতই পাওনা পরিশোধ করবে সাংবাদিকদের। হয়রানি আর ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে বঞ্চিত সংবাদকর্মীদের।
সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। এর মধ্যে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা এবং সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে। বাকি দুটি বিস্ফোরক মামলা।
বুধবার এসব মামলায় জামিন পান বাবর। বিষয়টি বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল।
তিনি বলেন, ‘আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করলে আমরা বিরোধিতা করি। তবে বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। সেদিন সাবেক মেয়র জি কে গৌছসহ অন্য আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। তবে শারীরিক অসুস্থতায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জরুরি কাজে ঢাকায় থাকায় উপস্থিত ছিলেন না।
‘আদালত ১১ সেপ্টেম্বর শুনানি ও আদেশের জন্য রেখে দিয়েছিলেন। বুধবার বিজ্ঞ বিচারক চারটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমরা রোবার আদালতে বেইল বন্ড জমা দেব।’
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া। এ ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে আসামি করে মামলা হয়। বিএনপি নেতা আরিফসহ অন্য আসামিরা জামিনে রয়েছেন।
এর আগে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সমাবেশে তখন প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিচ্ছিলেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ওই বোমা হামলায় এক যুবলীগকর্মী নিহত ও ২৯ জন আহত হন।
ওই ঘটনায় এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই থানায় একটি মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ বাবর, আরিফুল ও গৌছসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
লুৎফুজ্জামান বাবর নেত্রকোণা-৪ (মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরী) আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় লুৎফুজ্জামান বাবরের মৃত্যুদণ্ড হয়। তার বিরুদ্ধে আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে ছাড়পত্র দেয়। পরে কড়া নিরাপত্তা ও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়েছে।
মেডিক্যাল বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক শিশির চক্রবর্তী বলেন, ‘সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এখন সুস্থ। তিনি এখন অনেকটা স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেন। ‘সেজন্য তার সার্বিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সব প্রস্তুতি শেষে তাকে কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’
তিনি জানান, মূলত শামসুদ্দিন মানিকের হার্টে সমস্যা আছে। ১০ বছর আগে বাইপাস সার্জারি করেছিলেন। এ ছাড়া ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ আছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। প্রায় এক দশক আগে ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় তাকে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
আছাদুজ্জামান মিয়াকে বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ১০ দিন রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তক কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুজ্জামান জনিকে পুলিশি হেফাজতে ‘ক্রসফায়ারের নামে হত্যার’ অভিযোগে এই মামলা করা হয়। মামলায় আছাদুজ্জামান মিয়া এজাহারনামীয় ১২ নম্বর আসামি।
এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভার এলাকা থেকে আছাদুজ্জামান মিয়াকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের মজুমদার রাইসব্র্যান অয়েল মিলে তেলের ট্যাঙ্ক বিস্ফোরণে চার শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ৩ জন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় শ্রমিকরা ট্যাঙ্কির তেলের লাইন মেরামত করার সময় ওয়েল্ডিংয়ের ফুলকি ট্যাঙ্কের মধ্যে পড়ে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মজুমদার রাইসব্র্যান অয়েল মিলে প্রতিদিন রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদন হতো। উৎপাদিত তেল একটি ট্যাঙ্কির মধ্যে জমা করে রেখে পরে প্যাকেটজাত করে বাজরে নেয়া হতো। সেই ট্যাঙ্কির তেলের পাইপ লাইনটি সমস্যার কারণে দুপুরের দিকে মেরামত শুরু করেন কয়েকজন শ্রমিক।
মেরামত কাজ করার সময় ওয়েল্ডিংয়ের আগুনের ফুলকি তেলের ট্যাঙ্কির ভেতরে পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যে সেটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে সাতজন শ্রমিক আহত হন। তাদের মধ্যে চারজনকে কারখানার অন্যান্য শ্রমিক ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন- নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌর শহরের অফিসার্স কলোনি এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে মো. ইমরান হোসেন, একই এলাকার সোলায়মান আলীর ছেলে মোহাম্মদ আবু সাঈদ, আব্দুস সালামের ছেলে মো. মনির হোসেন ও রুবেল আহমেদ।
এছাড়া দুর্ঘটনায় আহত অন্য তিনজন জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকায় তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।
মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেডের মানবসম্পদ কর্মকর্তা রঞ্জন চক্রবর্তী জানান, ঘটনার সময় তাদের কোম্পানির ঠিকাদারের সাতজন শ্রমিক রাইস ব্র্যান তেল উৎপাদনের কনটেইনার মেরামতের কাজ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ কনটেইনারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে শ্রমিকরা হতাহত হয়।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ছিলিমপুর) ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) লালন হোসেন জানান, নিহতদের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল করিম রেজা জানান, তেলের ট্যাঙ্কির পাইপ ওয়েল্ডিং কাজের সময় ট্যাঙ্কির বিস্ফোরণে চার শ্রমিক নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা কাজ করছেন। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শেরপুর ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার বখতিয়ার উদ্দিন জানান, মজমুদার কোম্পানিতে আগুন লেগেছে- এমন সংবাদ পেয়ে তারা দ্রুত সেখানে যান। কিন্তু ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন কোম্পানির লোকজন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য