আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। একটি ‘মডেল’ নির্বাচনের তাগিদ দিয়েছে দেশটি। এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে বাংলাদেশ।
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ সময় সোমবার রাতে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে বৈঠকের পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মোমেন বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন নিয়ে আলাপ হয়েছে। তারা চান এখানে একটি মডেল নির্বাচন হবে। আমি বলেছি, অবশ্যই, আমরাও মডেল নির্বাচন চাই। আমাদের রক্তে গণতন্ত্র, আমাদের রক্তে জাস্টিস।
‘আমরা ৩০ লাখ প্রাণ দিয়েছি গণতন্ত্র, জাস্টিস ও সম্মান সমুন্নত রাখার জন্য। তবে এ বিষয়ে আপনাদের সাহায্য চাই। আপনারাও আমাদের সাহায্য করেন যাতে করে আমরা অবাধ, সুষ্ঠ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে পারি।’
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলা বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু, র্যাব, ব্যবসা-বাণিজ্য, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করা খুনি রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনসহ দ্বিপক্ষীয় নানা ইস্যুতে আলোচনা করে ঢাকা-ওয়াশিংটন। রোহিঙ্গা ইস্যুও বিশেষ গুরুত্ব পায় বৈঠকে।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে তার দেশের প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ব্লিংকেন বলেন, বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সারা বিশ্বের দৃষ্টি রয়েছে। এ অঞ্চল এবং সারা বিশ্বের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়, তা নিশ্চিতের বিষয়ে সবার মনোযোগ রয়েছে।
নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যবেক্ষককে স্বাগত জানানোর কথা দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান মোমেন। তবে দেশটিতে অবস্থানরত কোনো বাংলাদেশি নাগরিক রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে পর্যবেক্ষক হতে পারবে না বলে বার্তা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমরা তোমাদের (যুক্তরাষ্ট্র) পর্যবেক্ষককে স্বাগত জানাতে চাই। তোমরা আসো। আমরা বলেছি, তোমরা যত পারো পর্যবেক্ষক পাঠাও। গত নির্বাচনে ২৫ হাজার পর্যবেক্ষক ছিল। কিন্তু পর্যবেক্ষক অবশ্যই বাংলাদেশি অরিজিন কেউ হতে পারবে না, যারা রাজনৈতিক দলের ব্যানারে পর্যবেক্ষক হতে চাইবে।’
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করার বিষয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা ব্লিংকেনের কাছে তুলে ধরে মোমেন বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য আমরা কী করেছি, আমরা ফটো আইডি তৈরি করেছি, যাতে ভুয়া ভোট না হয়। আমরা বিশ্বাসযোগ্য ব্যালট বাক্স করেছি। আমরা একটা স্বাধীন নির্বাচন কমিশন করেছি।’
নির্বাচনের সময় কমিশন স্বাধীন জানিয়ে মোমেন বলেন, ‘নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন সুপ্রিম। তারা ইচ্ছে করলে যেকোনো লোককে বদলি করতে পারে, যেকোনো লোককে সাসপেন্ড করতে পারে। কমিশনের এগুলো করার ক্ষমতা রয়েছে এবং তারা করেছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১৪ বছরে কয়েক হাজার নির্বাচন হয়েছে। স্বল্প সংখ্যক কিছু অনিয়ম হয়েছে। সেখানে কমিশন ব্যবস্থা নিয়েছে। আমরা আশা করছি, নির্বাচন কমিশন একটা স্বচ্ছ নির্বাচন পরিচালনা করতে পারবে। তবে নির্বাচন একা একা হয় না।’
সরকারের একার পক্ষে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মনে করেন মোমেন। তার ভাষ্য, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু শুধু সরকার করতে পারবে না। সেটার জন্য সব বিরোধী দলকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদেরও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য কমিট করতে হবে। তাদের অংশগ্রহণ ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন…।’
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে একজন মানুষও যেন প্রাণ না হারায় সেই চাওয়ার কথা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন মোমেন।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে নির্বাচনে লোক মারা যায়। আমরা চাই না একটা লোক মারা যাক। আমাদের এখানে হাসি-আনন্দে নির্বাচন হয়। তবে আমরা খুব ইগোস্টিক, এত উদ্বেলিত হই যে, লোক মেরে ফেলি। আমরা চাচ্ছি, নির্বাচন ইস্যুতে আমাদের একটা লোকও যেন না মারা যায়।’
আরও পড়ুন:ভোটের দিন নির্বাচনী কাজে সাংবাদিকদের সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নানা আলোচনা-সমালোচনার পর আগের নীতিমালা সংশোধন এনে মঙ্গলবার এমন নির্দেশনা জারি করেছে সাংবিধানিক এ সংস্থাটি।
নীতিমালার ৬ নম্বর নির্দেশনায় সংশোধন আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক।
ওই নির্দেশনায় আগে বলা হয়েছিল, সাংবাদিকরা ভোটের কাজে মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন না, তবে সংশোধনের পর এখন বলা হয়েছে, সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য যৌক্তিক সংখ্যক গাড়ির স্টিকার দেয়া হবে।
সংশোধিত নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতার আলোকে স্থানীয় প্রশাসন (রিটার্নিং অফিসার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার সমন্বিতভাবে) প্রকৃত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র প্রেস আইডির কপি, এনআইডির কপি এবং যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হবে সেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দিতে হবে।
রিটার্নিং অফিসার বা রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যাচাই বাছাই শেষে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দেবেন। কোনো সাংবাদিকের জন্য গাড়ির স্টিকার দেয়া হলে স্টিকারের ক্রমিক নম্বর রেজিস্টারে লিখে রাখতে হবে। এ ছাড়া নীতিমালার অন্যান্য বিষয় আগের মতোই আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে নির্বাচনে বাধাদানকারীদের ভিসার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে বিধিনিষেধ আরোপের প্রক্রিয়া শুরু করেছে, কোনো পক্ষ নেয়া এর উদ্দেশ্য নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার।
স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নে তিনি এ কথা জানান।
মিলার বলেন, ‘আমি বলব, যেমনটা আমরা আগেও বলেছি, যেমনটা গত মে মাসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এ নতুন নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তখনও আমরা বলেছিলাম, এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে নির্বাচনে কারও পক্ষ নেয়া নয়। এর উদ্দেশ্য বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করা বা সমর্থন করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার যখন আমরা এ নতুন ভিসা বিধিনিষেধ কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছিলাম তখন আমরা উল্লেখ করেছি, এতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’
বিএনপি চেয়ারপারসনকে মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে মিলার জানান, এ বিষয়ে তার কোনও মন্তব্য নেই।
ভিসা নীতিতে গণমাধ্যমের ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে এক প্রশ্নের জাবাবে তিনি জানান, ভিসা-সংক্রান্ত রেকর্ড গোপনীয় হওয়ায় সুনির্দিষ্ট সদস্য বা ব্যক্তি- কার জন্য এ নীতি প্রযোজ্য হবে, তার ঘোষণা তারা দেননি।
তবে তারা এ বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, এ নীতি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য, ক্ষমতাসীন দল ও রাজনৈতিক বিরোধীদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
আরও পড়ুন:তিন দিনের সফরে বুধবার নিজ জেলা পাবনায় যাচ্ছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বাসসকে বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আগামীকাল বিকেলে তিন দিনের সফরে পাবনার উদ্দেশে রওনা হবেন। তিনি সেখানে একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন এবং জেলার বিভিন্ন পেশাজীবী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।’
প্রজাতন্ত্রের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল শপথ নেয়ার পর এটি হবে পাবনায় তার দ্বিতীয় সফর।
কর্মসূচি অনুযায়ী রাষ্ট্রপ্রধান জেলার সাথিয়া উপজেলায় নৌকাবাইচ-পূর্ব এক জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন।
তিনি শহরের পাবনা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গণে ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট একটি জেনারেল হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।
রাষ্ট্রপতির আগমনকে কেন্দ্র করে পাবনা শহর ও আশপাশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন এ উপলক্ষে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।
রাষ্ট্রপতিকে তার পৈতৃক বাড়িতে স্বাগত জানাতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ।
রাষ্ট্রপতির আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:সারা দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে বর্ণাঢ্য আয়োজনে প্রতিনিধি সম্মেলন করল দেশের অন্যতম জাতীয় দৈনিক ‘দৈনিক বাংলা’। এ মাসেই পত্রিকাটির নবরূপে আবির্ভাবের প্রথম বার্ষিকী উৎযাপনের পর সোমবার এ প্রতিনিধি সম্মেলন করল পত্রিকাটি।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে দৈনিক বাংলার নিজস্ব কার্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পত্রিকাটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত। নবযাত্রায় শক্ত হাতে যারা দৈনিক বাংলার সুনামের ঝাণ্ডা ঊর্ধ্বে ধরে রাখতে প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছেন, সেসব তরুণ-প্রাণ সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচিত হন তিনি। পাশাপাশি তিনি পত্রিকার নীতি-আদর্শ এবং কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলেন, ‘যা কিছু ভালো তার সঙ্গে থাকবে দৈনিক বাংলা। ঐতিহ্যবাহী দৈনিক বাংলা পত্রিকাকে এগিয়ে নিতে যা যা করা প্রয়োজন, কর্তৃপক্ষ তা করবে। এই পত্রিকাকে এগিয়ে নেয়ার পথে আপনারা (সাংবাদিক প্রতিনিধিরা) সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবেন এমনটা প্রত্যাশা। জনগুরুত্বপূর্ণ খবরের যোগান দিয়ে আপনারা দৈনিক বাংলাকে পাঠকপ্রিয় পত্রিকায় রূপ দিতে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করবেন- এই আমার বিশ্বাস।’
সম্পাদক চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বলেন, ‘অফিসে বসে সাংবাদিকতা চর্চার বিষয়টি অনেকটা মেধাবৃত্তিক ও চিন্ত্যনীয়। তবে মাঠের সাংবাদিকতায় নিরাপত্তার বিষয়টি প্রধান চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। আমাদের অবশ্যই সবার আগে গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ প্রকাশের ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির শিকার হওয়া মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। তবে তথ্যানুন্ধানে গিয়ে নিজে বিপদে পড়তে হয়- এমন বিষয়েও সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ দিনশেষে সবার নিরাপত্তাটাই আসল। তাই নিজের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সত্য ও সাহসী সাংবাদিকতায় আত্মনিয়োগ করতে হবে।’
বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে সংবাদকর্মী ও সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দেশের সরকার, বিরোধী রাজনৈতিক দল, আমলা, প্রশাসন ইত্যাদি বিভাগের সঙ্গে জনগণের সমন্বয় করে গণমাধ্যম। আর এ কাজে তাদের চালিকাশক্তির ভূমিকা পালন করেন সংবাদকর্মীরা। তাই দেশের ক্ষমতা ও দায়িত্বের মধ্যে সমন্বয় সাধনচেষ্টার মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপসংস্কৃতির চর্চা দূর করে সুচিন্তা ও সুশীল মানুষ তৈরিতে যাতে পরোক্ষ ভূমিকা রাখা যায়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে সাংবাদিকদের কাজ করা উচিত।’
সম্মেলনে জেলা ও উপজেলার শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। জ্যেষ্ঠ থেকে তরুণ সাংবাদিকদের মধ্যে অনেকেই তাদের মতামত তুলে ধরেন। কাজ করতে গিয়ে তাদের চ্যালেঞ্জ, আগামীর বাংলাদেশে দৈনিক বাংলার সাফল্যে করণীয়, সাংবাদিকতায় নতুন ও উদ্ভাবনী চিন্তা, কর্মপদ্ধতি নিয়ে তারা নিজস্ব অভিমত ও পরামর্শ উপস্থাপন করেন।
পত্রিকার সম্পাদক প্রতিনিধিদের বিভিন্ন সমস্যা ধৈর্যসহকারে শোনেন এবং সেগুলো সমাধানের আশ্বাস দেন। প্রতিনিধিরাও তাদের বক্তব্যে সর্বোচ্চ চেষ্টার মাধ্যমে দৈনিক বাংলার নবযাত্রায় ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
সম্মেলন উপলক্ষে সকাল থেকেই দৈনিক বাংলা কার্যালয় প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকেন প্রতিনিধিরা। দুপুর গড়াতে না গড়াতেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে বিশালায়তনের প্রাঙ্গণটি। এরপর শুরু হয় মূল পর্বের অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠান শেষে তারা দৈনিক বাংলা ও নিউজবাংলার কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেন এবং দুই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহযোদ্ধাদের সঙ্গে পরিচিত হন।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দৈনিক বাংলার নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর আফিজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি ফারাজী আজমল হোসেন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক তানজিমুল নয়ন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি ডেইজি মওদুদ, মার্কেটিং বিভাগের মহাব্যবস্থাপক শাহাদত হোসেনসহ অনেকে।
সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নিউজবাংলার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, দৈনিক বাংলার জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক শাহিদ আবেদীন, সহযোগী ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) আব্দুল্লাহ আল মামুন, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার রাফিউল ইসলাম সরকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিয়ে যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে, এতে বাহিনী কোনো ধরনের ইমেজ সংকটে পড়বে না বলে মনে করছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তরে এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আইজিপি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতির কারণে পুলিশ ইমেজ সংকটে পড়বে, এমনটি আমি মনে করছি না।’
সম্প্রতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াতে বাধাদানের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপের কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলেন, এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্য রয়েছেন।
‘কম্বেটিং ফিউচার চ্যালেঞ্জেস ইন ট্যুরিজম সিকিউরিট: বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশ পারসপেক্টিভ’ শীর্ষক এ সভাপতিত্ব করেন ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক হাবিবুর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসুদুর রহমান।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন সংঘর্ষের সময় অস্ত্র প্রদর্শিত হয়েছে, অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের তেমন কোনে তৎপরতা দেখা যায় না, জাতীয় নির্বাচনে এই অস্ত্র কোনো প্রভাব ফেলবে কি না- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে জবাবে আইজিপি বলেন, ‘কেউই যখন কোন অস্ত্র প্রদর্শন করে, এটা নিয়ে আমরা কাজ করি। জাতীয় নির্বাচনে আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’
নির্বাচনের আগে অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ কোনো অভিযান পরিচালিত হবে কি না- সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা যথা সময় এটা করব। তবে কৌশলগত কারণে এটা আমরা এখন বলছি না।’
ঢাকার রাজপথে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ভুবনের মৃত্যু, ব্যাংক থেকে পুলিশের ডাকাতি এসব ঘটনা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘যখনই কোন ঘটনা ঘটে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। পুলিশের কোনো সদস্য জড়িত থাকলে তাকেও আমরা ছাড় দেই না। প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’
নির্বাচনকে সামনে রেখে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বাড়ছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূন্নভাবে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সন্ত্রাসী যেই হোক কাউকে আমরা ছাড় দিচ্ছি না।’
আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনকালীন সময় কমিশন আমাদের যে দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্ব আমরা যথাযথভাবে পালন করব।’
আরও পড়ুন:দেশের আট বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, চারটিতে হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য দিয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত অবস্থান করছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশে মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে দূর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গা; ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং বরিশাল, চট্টগ্রাম বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণভাবে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের (আরওকে) প্রতিষ্ঠা দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রোববার সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, দূতাবাসের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বাংলাদেশে দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকা লোকজনকে অভিনন্দন জানান প্রতিমন্ত্রী।
দেশের স্বাধীনতার প্রাথমিক পর্যায়ে ১৯৭২ সালের ১২ মে বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার স্বীকৃতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
৫০ বছরের গৌরবময় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে আরও গভীর, সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা তৈরি করে এ বন্ধুত্বকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন শাহরিয়ার আলম।
তিনি ভারতে জি-২০ নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলের মধ্যে সাম্প্রতিক বৈঠকের কথা উল্লেখ করেন।
প্রতিমন্ত্রী ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য