‘আমাকে থানায় আশ্রয় দিন। ওরা আমার ওপর আবার হামলা চালাবে। আমি বাঁচতে চাই, বাঁচতে দিন।’
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় হাজির হয়ে এমনভাবে পুলিশের কাছে সহায়তা চাইছিলেন উপজেলাটির কাঞ্চনে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সাংবাদিক সোহেল কিরণ। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের স্থানীয় প্রতিনিধি।
রোববার স্থানীয় একটি হাসপাতাল থেকে সোহেল থানায় গিয়ে হাজির হন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা। থানায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করার পর পুলিশ পাহারায় তাকেকে আবার হাসপাতালে পাঠানো হয়।
৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার কাঞ্চন মধ্য বাজার এলাকায় সোহেল কিরনের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। রক্তাক্ত আহত অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয় স্থানীয় একটি হাসপাতালে। এ ঘটনায় কাঞ্চন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রসুল কলি ও তার সহযোগী আফজালসহ অজ্ঞাত আরও ৮ জনকে আসামি করে মামলা করেন আহত সাংবাদিকের ছোট ভাই।
তবে পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এদিকে সংবাদকর্মীর ওপর হামলার ঘটনার পর থেকে মানববন্ধন করে আসছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
আহত সাংবাদিকের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, ‘গতকাল (শনিবার) থেকে আওয়ামী লীগের নেতা কলি ও তার লোকজন মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। তাই বড় ছেলে সোহেলসহ পুরো পরিবার নিয়ে থানায় হাজির হয়েছি।’
সাংবাদিক সোহেল বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের জের ধরে কলি, আফজালসহ তার বাহিনীর লোকজন আমার ওপর হামলা চালায়। মামলা করার পাঁচ দিন পার হয়ে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। বরং মামলা করে আমরা উল্টো বাড়তি আতঙ্কে আছি। তাই প্রাণ বাঁচাতে থানায় গিয়েছি আশ্রয় নিতে।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (রূপগঞ্জ) আবির হোসেন বলেন, ‘অপরাধী যেই হোক ধরাছোঁয়ার বাইরে নয়। সাংবাদিক কিরণকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পলাতক আসামিদের ধরতে তাদের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি সাংবাদিকের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে পুনরায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নির্বাচনী তফশীল ঘোষণার আগে নভেম্বর মাসে নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরুর দাবিতে রংপুরে পদযাত্রা ও স্বারকলিপি প্রদান কর্মসূচি পালন করেছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। রোববার ভারী বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলুর নেতৃত্বে নগরীর শিক্ষা কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে পদযাত্রা বের হয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। এরপর জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, সদস্য সচিব অ্যাড. মাহফুজ-উন-নবী ডনসহ অন্যরা।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী আসাদুল হাবীব দুলু বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাঝে মধ্যে বলছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু হবে। কিন্তু কখন শুরু হবে, কীভাবে শুরু হবে সেটি স্পষ্ট করেনি। সে জন্য আমরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নেমেছি। আজ (রোববার) রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীবেষ্টিত ৫ জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্বারকলিপি দেওয়া হলো। আগামী ৯ অক্টোবর গণমিছিল ও গণসমাবেশ এবং ১৬ অক্টোবর নদী-নদীর অববাহিকার ১৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মশাল প্রজ্বলন কর্মসূচি পালিত হবে। এসব শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও যদি সরকার দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগী না হয়, তবে লাগাতার কঠোর কর্মসূচি দিয়ে রংপুরকে অচল করে দিতে বাধ্য হব।
তিনি বলেন, সরকার বলছে জানুয়ারিতে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু হবে। কিন্তু নির্বাচনী তফশীল ঘোষণা হলে সেই কাজ ঝুলে যেতে পারে। সরকার যেহেতু এ প্রকল্প বাস্তবায়নে টাকা দিতে চেয়েছে। তাই অভ্যন্তরীণ অর্থ দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করা হোক। এটি যত তাড়াতাড়ি হবে, সরকার এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিক বলে আমরা আশ্বস্ত হব। আমরা এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।
টানা ছুটির পর আবারও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- রাকসু নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হয়েছে রোববার থেকে। প্রার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, টুকিটাকি চত্বর, পরিবহন মার্কেট, অ্যাকাডেমিক ভবন সংলগ্ন সড়কগুলোতে প্রচারপত্র বিতরণ করতে দেখা গেলেও ছুটির পর হওয়ায় সংখ্যায় অনেকটাই কম।
এদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের প্রচারণার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এতে ৫-১৪ অক্টোবর পর্যন্ত আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালাতে পারবে প্রার্থীরা। রোববার এ কথা বলেছেন প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা সেতাউর রহমান। তিনি বলেন, আগামী ১৬ অক্টোবর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হচ্ছে। কমিশন জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সংসদ, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রচারণা ৫-১৪ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। সে কারণে যথাযথভাবে আচরণবিধি অনুসরণে সকলকে প্রচারণা করতে হবে। এর আগে, প্রতিষ্ঠানিক সুবিধার দাবিতে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ক্যাম্পাস শাটডাউন ঘোষণা করেন। এতে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়তে থাকেন। এতে ছাত্রদলসহ অনেকে ভোট পেছানোর দাবি তোলেন। ফলে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জরুরি সভায় ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য ভোটগ্রহণ পেছানোর সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
টেকনাফে ৬ জন মানবপাচার চক্রের সদস্যদের আটক করেছে বিজিবি। আটকৃতরা হলেন- টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ মিস্ত্রীপাড়ার প্রবাসী আখের আলীর স্ত্রী শামসুন্নাহার, রোহিঙ্গা হোসনে আরা, নুরুন্নিসা, মোহাম্মদ ইসমাইল, হারুন, ইউসুফ আলী। এ সময় কালু মিয়া ও হাশেম মোল্লাসহ আরও চারজন পালিয়ে যায়।
টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (২ বিজিবি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, একটি রুদ্ধশ্বাস অভিযানে শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়া এলাকা থেকে মানবপাচার চক্রের ৬ জন সক্রিয় সদস্যকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। পরে বিজিবির কঠোর নজরদারি এবং তৎপরতার কারণে মিয়ানমার থেকে লোকজনকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে পাচার করতে সম্পূর্ণরূপে ভেস্তে যায়।
তিনি আরও জানান, গোপন সূত্রের খবরে ৪ অক্টোবর সাগর পথে মিয়ানমার থেকে পাচার করে বেশ কিছু বিদেশি নাগরিককে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে লুকিয়ে রেখে তাদের বিভিন্ন ক্যাম্পে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাচারকারী চক্র। এই ভয়ংকর দুরভিসন্ধি আঁচ করতে পেরেই তৎপর হয়ে ওঠে বিজিবি। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ২ বিজিবির অধিনায়কের নেতৃত্বে তাৎক্ষণিকভাবে মানবপাচারবিরোধী একটি সুপরিকল্পিত অভিযান শুরু হয়। বিজিবির আভিযানিক দলটি শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়া এলাকার মোছা. শামসুন্নাহারের বাড়িটি ঘেরাও করবার সময় বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চক্রের দুজন সন্দেহভাজন বাড়ির পেছনের দিক দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবির টহল দল দ্রুত বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে প্লাস্টিকের ছাউনি দেওয়া একটি ঘর থেকে বাড়ির মালিক মোছা. শামসুন্নাহারসহ মানবপাচারকারী চক্রের ৬ জন সদস্যকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটকদের বরাতে বিজিবির ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বাড়ির মালিক শামসুন্নাহার টাকার বিনিময়ে পাচার করে আনা এই লোকজনকে সাময়িকভাবে তার বাড়িতে লুকিয়ে রাখতেন। তারা মিয়ানমার থেকে লোকজনকে অবৈধভাবে পাচার করে এনে বিভিন্ন ক্যাম্পে নিয়ে যায় এবং মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে তাদের এফডিএমএন কার্ড পেতে সাহায্য করারও কাজ করে থাকে।
মানবপাচার চক্রের ধৃত সদস্যদের বর্তমানে স্থানীয় থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ নির্বাচনে (চাকসু) শাখা ছাত্রীসংস্থার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়ে নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে পত্র জমা দিয়েছে চবি ছাত্রদল। গত বৃহম্পতিাবর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান স্বাক্ষরিত এ পত্র জমা দেওয়া হয়েছে। তবে অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে ছাত্রী সংস্থার চবি শাখার নেতৃবৃন্দ।
ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদকের এই অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘গত ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে ছাত্রীসংস্থার নেত্রীরা ফার্স্ট এইড বক্স বিতরণ করেছেন, যাতে নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়েছে। আমরা আরও অবগত হয়েছি ঐ হলের প্রভোস্ট তাদের সহযোগিতা করেছেন। হল ছাত্রীসংস্থা ও প্রভোস্টের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’
চবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, শামসুন নাহার হলে নির্বাচনী আচারবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দিয়েছি নির্বাচন কমিশনে। এক্ষেত্রে হলের প্রভোস্ট জড়িত আছেন। তিনি চাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য। এক্ষেত্রে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন। এছাড়া এই হলের প্রভোস্টের এমন আচরণ পক্ষপাতমূলক বলে আমি মনে করছি।
তবে এমন অভিযোগ নাকচ কওে চবির ইসলামী ছাত্রীসংস্থার সেক্রেটারি নাহিমা আক্তার দ্বীপা জানান, আমরা ফার্স্ট এইড বক্সটি হলে দিয়েছিলাম গত ২২ আগস্ট৷ চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই আমরা এটা দিয়েছি। তবে নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু হলে আমরা এটা সরিয়ে নিই৷ পরবর্তীতে হলে এক ছাত্রীর দরকার হলে এটি ব্যবহার করেন। কিন্তু এটাকে শামসুন্নাহার হলের ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকেও যথাযথ উত্তর দিয়েছি।’
শামসুন নাহার হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. বেগম ইসমত আরা হক বলেন, ‘ফার্স্ট এইড বক্সটি হলে ২২ আগস্ট থেকে ছিল। তবে তখন ছাত্রীসংস্থার মেয়েদের রুমে ছিল এবং ওখান থেকেই মেয়েরা প্রয়োজনে ব্যবহার করত। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার একটি মেয়ের জরুরি দরকার হলে ছাত্রীসংস্থার মেয়েরা এটি সিকিউরিটি গার্ডের টেবিলে দিয়ে যায়। কিন্তু পরদিনই তারা আবার দুঃখ প্রকাশ করে এটি সরিয়ে নেয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, ‘ফার্স্ট এইড বক্সটি হল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ছাত্রীসংস্থা ও প্রভোস্টকে শোকজ করা হয়েছে। ওনাদের মতামতের পর যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
জেলায় বজ্রপাতে দুই নারীসহ একজন অজ্ঞাত এক পুরুষের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের ভবানীপুর ঘাট এলাকায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা জানান, বজ্রপাতের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত পরিবারের সদস্যদের সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে ভবানীপুর ঘাটে খেয়া পারাপারের অপেক্ষায় ছিলেন কয়েকজন নারী ও পুরুষ। হঠাৎ আকাশে মেঘ জমে প্রবল বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়।
এসময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই দুই নারী ও এক পুরুষের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন, নালা দক্ষিণ গ্রামের জাকিয়া বেগম (৩৫) ও মমতাজ বেগম (৩০), এবং খোদেদাউদপুর গ্রামের এক অজ্ঞাত পরিচয় (৪০) ব্যক্তি। ঘটনায় আরও কয়েকজন সামান্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
হোমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জীবন বিশ্বাস জানান, “বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।”
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে হোমনাসহ কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় বজ্রপাতজনিত দুর্ঘটনা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা সতর্কতা ও সচেতনতা বাড়াতে প্রশাসনের উদ্যোগ কামনা করেছেন।
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দাবি করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ও সভাপতি এবং মিঠামইন উপজেলা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান শিকদার।
গত শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
এ সময় তার প্রার্থিতা সমর্থন করে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান শিকদার বলেন, কিশোরগঞ্জ-৪ নির্বাচনী এলাকার মানুষ আওয়ামী দুঃশাসন চলাকালে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সাবেক রাষ্ট্রপতির পরিবারের সীমাহীন দুর্নীতি, অত্যাচার ও স্বজনপ্রীতির কারণে হাওরের মানুষ দলিত, পিষ্ট এবং নজিরবিহীন অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলেও এর সুফল ভোগ করতে পারছেনা হাওর এলাকার মানুষ। ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে সারা দেশে বিএনপির নেতৃত্বে অভূতপূর্ব গণজাগরণ সৃষ্টি হলেও হাওর এলাকার রাজনীতিতে অনেকটাই অনুপস্থিত। দুর্বল রাজনৈতিক নেতৃত্ব, ভুল পদক্ষেপ ও নেতাদের নিস্ক্রীয়তার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এ অবস্থায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেলে দলের ঐতিহ্য ও গৌরবকে সমুন্নত রেখে হাওরে নতুন জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া দলের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ত্যাগী ও বলিষ্ট নেতৃত্বের অধিকারী হিসেবে অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান শিকদারকে সমর্থন করেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম মীর, ঢাকা জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট আরিফ খান, মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি রবিউল আলম শ্যামল, দিদারুল আলম দিদার ও পারভেজ আহমেদ বুলবুল, সাবেক সহ সভাপতি সোহরাব ভুঁইয়া ও হারুনুর রশীদ, মিঠামইন উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ঠাকুর, মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন মিয়া, মিঠামইন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব এরশাদুল হক, মিঠামইন উপজেলা জাসাসের সাবেক আহ্বায়ক মো. মহিউদ্দিন, মিঠামইন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান ভুঁইয়া, মিঠামইন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হাদিউল ইসলাম প্রমুখ।
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলে বাস উল্টে দুর্ঘটনায় মো. ফয়সাল (৪৭) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার রাত ২টার দিকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত ফয়সালের স্ত্রী রাণী আকতার (৩১) সহ আরও ৪ জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন আছে। এর আগে, গত শনিবার টানেলের পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা প্রান্তে যাওয়ার সময় বরযাত্রীবাহী বাসটি অতিরিক্ত গতির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে।
নিহত ফয়সাল নগরীর পতেঙ্গা থানার নিজাম মার্কেট এলাকার হোসেন আহমেদের ছেলে। তার দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
নিহত ফয়সালের ছোট ভাই সালাহ উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে একটি বিবাব অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বাস চালক দ্রুত গতিতে বাস চালানো কারণে টানেলের মাঝে পথে বাসটি উল্টে যায়। এসময় বাসে থাকা ৩০ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন আহত হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে আনোয়ারা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান কর্তব্যরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করলে তাদের নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে বড় ভাই ফয়সালের মৃত্যু হয়। তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বড় ভাই ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও ৪ জন গুরুতর আহত অবস্থায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। বাসচালকের অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালানোর কারণে আমরা এরকম দুর্ঘটনার শিকার হয়েছি।
আনোয়ারা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, টানেলে দুর্ঘটনায় আহত অবস্থায় ৬ জনকে আনা হয়। তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুনেছি তাদের মধ্যে ফয়সাল নামের একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
মন্তব্য