চট্টগ্রামের আনোয়ারায় মাল্টা চুরির অভিযোগে দুই শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালত গ্রেপ্তার ওই নারীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তার ৫০ বছর বয়সী ওই নারীর নাম নূর সেহের। তিনি একই উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের নুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ভুক্তভোগী ১০ ও ১৫ বছর বয়সী দুই শিশু একই এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, গত রোববার নিজ গাছের মাল্টা চুরির অভিযোগে প্রতিবেশী দুই শিশুকে গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন অভিযুক্ত নূর সেহের। মারধরের ওই ভিডিওটি মোবাইল ফোনেও ধারণ করেন তিনি। শুরুতে ভুক্তভোগী শিশুরা মারধরের বিষয়টি গোপন রাখলেও শুক্রবার তাদের স্বজনরা প্রতিবেশীর মাধ্যমে ভিডিওটি দেখতে পান। পরে এক শিশুর বড় ভাই বাদী হয়ে আনোয়ারা থানায় মামলা করেন।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাছান বলেন, ‘মামলা দায়েরের পর শুক্রবার ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার আমরা তাকে আদালতে হাজির করেছি। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ’
চুরি হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস অফিসের মঙ্গলবার রাতের এক বিবৃতিতে সরকারের এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা জবাবদিহিতা ও ন্যায়বিচারের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং চুরি হওয়া অর্থ বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফেরত আনতে বিশ্বজুড়ে অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করব।’
অর্থ পাচারের ঘটনায় বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ন্যায়বিচার দাবি করে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জনগণের অর্থ ও সম্পদ চুরির ঘটনা এবং বিগত সরকারের লোকজন যারা এ সম্পদ চুরির সঙ্গে জড়িত, তা পূর্ণাঙ্গ তদন্তের আওতায় আনা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘যদি আত্মসাৎ থেকে লাভবান হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা আশা করি সেই সম্পদ বাংলাদেশে ফেরত দেওয়া হবে, যেখানে জনগণ এর ন্যায্য মালিক।’
লন্ডনের দ্য সানডে টাইমস পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনূস টিউলিপ সিদ্দিক সম্পর্কে বলেন, তিনি হয়তো লন্ডনে সুনির্দিষ্ট অর্থ ও সম্পত্তির উৎস সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না, তবে এখন তিনি তা জানেন। তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে সরকার কাজ করছে, যাতে জনগণের অর্থ চুরি হওয়ার ঘটনা চিহ্নিত ও তা উদ্ধার করা যায়।
এ ধরনের সহযোগিতা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অপরাধের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আমরা আশা করি এবং বিশ্বাস করি, যুক্তরাজ্যসহ সব বন্ধুপ্রতিম সরকার এই অপরাধগুলোর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়াবে। দুর্নীতি, যারা এটি করে, তারা এবং তাদের কিছু প্রিয় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব ছাড়া বাকি সকলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে।
‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ৫ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতির তদন্ত পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির মাত্রা কেমন ছিল, তা চিহ্নিত করেছে। এ ধরনের প্রকল্পে জনগণের সম্পদের অপব্যবহার শুধু বাংলাদেশের জনগণকে বঞ্চিত করেনি, বরং দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতার পথেও বাধা সৃষ্টি করেছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কোটি কোটি ডলারের সরকারি তহবিল চুরি বাংলাদেশকে একটি উল্লেখযোগ্য আর্থিক ঘাটতির মধ্যে ফেলেছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশ থেকে চুরি করা তহবিল তার জনগণের। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আমরা আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে কাজ চালিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন:হাওর অঞ্চলে সারের বাফার গুদাম করা হবে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. ছাইফুল আলম।
তিনি বলেন, ‘হাওর অঞ্চলের কৃষকদের জন্য অনেক দূর থেকে সার সরবরাহ করতে হয়। এ কারণে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যায়। এ অবস্থায় হাওর অঞ্চলে সারের বাফার গুদাম করা প্রয়োজন।
‘সম্প্রতি কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে জুম মিটিংয়ে এখানকার কৃষি কর্মকর্তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ হলরুমে সোমবার দুপুরে আয়োজিত অবহিতকরণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
রবি/২০২৪-২৫ অর্থবছরে বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় বোরো আবাদ বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়ে কর্মশালার আয়োজন করে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘কিশোরগঞ্জ খাদ্য উদ্বৃত্ত জেলা এবং হাওর খুবই বৈচিত্র্যময়। আমরা যদি কৌশলী হই, এখানকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারি এবং সঠিকভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে খাদ্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব।’
বিএডিসির কর্মকর্তাদের এখানে কিছুটা অবহেলা রয়েছে উল্লেখ করে এ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিষয়টি সচিব মহোদয় অবহিত আছেন। এ অবহেলা কাটিয়ে উঠতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ফসলের মাঠ যদি ভালো না হয়, তবে বীজও ভালো হবে না। সে জন্য আগে ফসলের মাঠ ভালো করতে হবে। বীজ সরবরাহের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে যে এলাকার জন্য যে জাত উপযোগী, সেটাই দিতে হবে।’
জমিতে সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জমিতে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সার ব্যবহার করা হচ্ছে। সুষম মাত্রায় সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের ভূমিকা রাখতে হবে। কৃষকদেরকে বোঝাতে হবে।
‘জৈব সারের ব্যবহার বাড়াতে হবে। জৈব সার ব্যবহারে রাসায়নিক সারের ওপর চাপ কমে আসবে এবং মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।’
কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ উইং) কৃষিবিদ আবু মো. এনায়েত উল্লাহ।
কর্মশালায় জেলার ১৩টি উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, কৃষক ও সংবাদকর্মীরা অংশ নেন।এতে বিভিন্ন সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন তারা।
আরও পড়ুন:মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তে অভিযান চালিয়ে ২ কেজি ১৮ গ্রাম ওজনের ১৮টি স্বর্ণের বারসহ নুর হোসেন (৪৮) নামের ভারতীয় এক নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সীমান্তের ১০৪ নম্বর পিলারের কাছ থেকে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
নুরের বাড়ি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার হৃদয়পুর গ্রামে।
৬ বিজিবি চুয়াডাঙ্গা ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, মুজিবনগরের সীমান্ত মাঠের মধ্যে দিয়ে স্বর্ণ চালান হবে, এমন খবরের ভিত্তিতে সীমান্তের মেইন পিলার ১০৪-এর সাব পিলার ৫-এর কাছে অবস্থান নেন মুজিবনগর সীমান্ত চৌকির (বিওপি) টহল কমান্ডার হাবিলদার রফিকুল ইসলামসহ বাহিনীর সদস্যরা। সন্দেহভাজন একজন বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করলে তাকে চ্যালেঞ্জ করেন বিজিবির সদস্যরা। ওই সময় পালানোর চেষ্টা করলে বিজিবি সদস্যরা তার পেছনে ধাওয়া করেন।
পরে মাঠের মধ্যে থেকে আটক করা হয়। ওই সময় নুর হোসেনের শরীর তল্লাশি চালান বিজিবির সদস্যরা। তার কোমরের সঙ্গে প্যান্টের ভেতর স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো তিনটি প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। প্যাকেটের মধ্য থেকে ২ কেজি ১৮ গ্রাম ওজনের ১৮টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় হাবিলদার রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ ছাড়াও স্বর্ণের বারগুলো মেহেরপুর ট্রেজারি অফিসে জমার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে অবস্থানরত অবৈধ বিদেশি নাগরিকদের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
৩১ জানুয়ারির মধ্যে বৈধ কাগজপত্র করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরীর স্বাক্ষর করা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘অনেক বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন/কর্মরত আছেন। এমতাবস্থায় অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থানরত/কর্মরত ভিনদেশি নাগরিক যারা ইতোপূর্বে সতর্কীকরণে বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আগামী ৩১ জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জন করবেন না তাদের বিরুদ্ধে The foreigners Act, 1946 অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন কর্মসূচি পালন করছেন পুলিশের ৪০তম ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) ব্যাচ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্তরা।
সচিবালয়ে ১ নম্বর গেটের বিপরীতে উসমানী উদ্যান সংলগ্ন রাস্তায় মঙ্গলবার অনশন কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
এর আগে সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটায় সংবাদ সম্মেলনে তারা আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।
অব্যাহতি পাওয়া ক্যাডেট এসআই নিশিকান্ত বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমাদের কোনো অভিভাবক নেই। রাষ্ট্র আমাদের নাগরিক মনে করে কি না, জানি না। দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলতে থাকবে।
‘৪৩তম বিসিএসে যারা বঞ্চিত তাদের দাবিগুলো পুলিশের মাধ্যমে ভেতরে পৌঁছাচ্ছে, কিন্তু আমাদের মেসেজগুলো সেভাবে পৌঁছাচ্ছে কি না, জানি না।’
সুবীর নামে অব্যাহতি পাওয়া আরেক ক্যাডেট এসআই বলেন, ‘একটা চাকরির জন্য আজ আমরা রাস্তায়। আমাদের কী দোষে এত বড় শাস্তি দিচ্ছে, জানি না। আমাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত।
‘আমরা এখনও অনশন করছি। দাবি পূর্ণ না হওয়া অবধি এটা চলবে। আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি এখনও নির্ধারিত হয়নি।’
রাজশাহীর সারদায় পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ৩১০ এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অব্যাহতি দিয়ে ক্যাডেট এসআইদের যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, তাতে বলা হয়েছিল, ‘আপনি বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৪০তম ক্যাডেট এসআই/২০২৩ ব্যাচে গত ২০২৩ সালে ৫ মে এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণরত আছেন। বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি প্যারেড মাঠে গত ১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিট থেকে ৪০তম বিসিএস (পুলিশ) প্রফেশনালস ব্যাচ-২০২৩-এর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুশীলন প্যারেড কার্যক্রম চলমান ছিল।
‘এ সময়ে পুলিশ একাডেমি কর্তৃক পূর্বনির্ধারিত মেন্যু অনুযায়ী প্যারেডে অংশগ্রহণকারী সব প্রশিক্ষণার্থীকে প্যারেড বিরতিতে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। কিন্তু আপনি (প্রশিক্ষণার্থী এসআই) ওই সরবরাহ করা নাশতা না খেয়ে হইচই করে মাঠে চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেন।
‘আপনি অন্য প্রশিক্ষণরত ক্যাডেট এসআইদের পরস্পর সংগঠিত করে একাডেমি কর্তৃপক্ষকে হেয় প্রতিপন্ন করে চরম বিশৃঙ্খলা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করতে থাকেন। এ ছাড়াও আপনি অন্যদের সঙ্গে হইচই করতে করতে নিজের খেয়াল খুশিমতো প্রশিক্ষণ মাঠ থেকে বের হয়ে নিজ ব্যারাকে চলে যান।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় ডাকাতি করতে এসে গৃহবধূকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নিজ কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার।
তিনি জানান, সোমবার রাতে নওগাঁর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়, যারা আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দুটি ধারালো হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার চকজামদই মুচিপাড়া এলাকার শরিফুল ইসলাম পচা (২৯), চকজামদই এলাকার তারেক হোসেন (২৬), বনসেতর এলাকার সোলাইমান আলী (৩৮), গৌড়রা বৌদ্দপুর এলাকার সাগর হেসেন (১৯), বন্দীপুর এলাকার রুবেল সরদার (২৮), নিয়ামতপুর উপজেলার জিনারপুর (সাবিলপুর) এলাকার রিপন আলী (৩০) ও মহাদেবপুর উপজেলার চককন্দর্পপুর এলাকার সাগর হেসেন (১৯)।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি জানান, গত ৯ ডিসেম্বর রাতে মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর গ্রামের একটি বাড়িতে ডাকাত দল প্রবেশ করে। তারা বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বর্ণের চেইন, টাকা লুট করে। ডাকাতির মধ্যেই তারা গৃহবধূকে তুলে নিয়ে বাড়ির কাছে ফাঁকা মাঠে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রামবাসীর সহায়তায় ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।
এসপি আরও জানান, এ ঘটনায় ১০ ডিসেম্বর থানায় একটি মামলা হয়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের অভিযানে সোমবার রাতে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও জানান, আসামিদের আদালতে পাঠানো হলে তিনজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে সাবেক এক ছাত্রদল নেতার।
ছাত্রদলের ওই নেতার নাম আবদুর রহমান (৩৩), যিনি জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের হীরাপুর গ্রামের মাওলানা সাইদুল হকের ছেলে।
আবদুর রহমান সোনাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে সোমবার সন্ধ্যার দিকে তার মৃত্যু হয়।
আবদুর রহমানের চাচা মো. হানিফ অভিযোগ করেন, ‘গতকাল (সোমবার) ভোররাতের দিকে যৌথবাহিনী হাওলাদার বাড়িতে অভিযান চালায়। একপর্যায়ে আমার ভাতিজা আবদুর রহমান ও একই বাড়ির আরেক ভাতিজা হাবিবুর রহমানকে তাদের ঘর থেকে আটক করে যৌথবাহিনী।
‘আটকের পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সামনে মারধর করা হয়। এরপর সকালে স্থানীয় পশ্চিমপাড়ার বাবুলের দোকানের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তাদের কাছ থেকে কার্তুজ ও কিরিচ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়। এরপর সকাল আট-নয়টার দিকে তাদের সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।’
হানিফ জানান, থানায় সোপর্দ করার পর তারা সেখানে গিয়ে তার ভাতিজাকে গুরুতর আহত অবস্থায় দেখতে পান। তখন তারা পুলিশকে অনুরোধ করেন তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে। পুলিশ জানায়, আইনি প্রক্রিয়া শেষে আদালতে পাঠানোর পর আদালতে আবেদন করলে সেখান থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।
হানিফ অভিযোগ করেন, সারা দিন থানা থেকে তার ভাই ও ভাতিজাকে আদালতে না পাঠিয়ে পাঠানো হয় বিকেল পাঁচটায়। আদালতে তাদের উপস্থাপনের পর গ্রহণ না করে আগে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বললে পুলিশ তাদের বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ভর্তির কিছুক্ষণ পর তার ভাই আবদুর রহমান মারা যান। আর ভাতিজা হাবিবুর রহমান একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এলাকায় তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, ‘সকালে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাই। তখন তাদের মারধরের ঘটনা ঘটেনি। যখন তাদের পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়, তখন তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল না। তখন তাদের স্থানীয় বজরা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
‘আবদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মারামারির ঘটনায় দায়ের হওয়া পূর্বের তিনটি মামলা রয়েছে। আর হাবিবের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই। তাদের কাছ থেকে রাইফেলের লম্বা দুইটি গুলি ও তিনটি রাম দা উদ্ধার করা হয়েছে।’
ওসি মোরশেদ আলম জানান, যুবকের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মঙ্গলবার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রাজিব আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে পুলিশ আবদুর রহমান ও হাবিবুর রহমান নামের দুই যুবককে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাৎক্ষণিক তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
‘ভর্তির পর সন্ধ্যা ছয়টা ২০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আবদুর রহমান মারা যান। তাদের দুইজনেরই শরীরে নীলা-ফোলা জখম ছিল।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য