× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Working parents fear increasing child abuse in Chittagong
google_news print-icon

চট্টগ্রামে শিশু নিপীড়ন বাড়ছে, আতঙ্কে কর্মজীবী বাবা-মা

চট্টগ্রামে-শিশু-নিপীড়ন-বাড়ছে-আতঙ্কে-কর্মজীবী-বাবা-মা
আলিনা ইসলাম আয়াত ও আবিদা সুলতানা আয়নী ওরফে আঁখি মনি। চট্টগ্রামে দুটি শিশুই নির্মম হত্যার শিকার হয়। ছবি কোলাজ: নিউজবাংলা
চট্টগ্রামে গত ৭ মাসে শিশু খুনের ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে চারটি। হত্যার শিকাররা সবাই কন্যা শিশু। একই সময়ে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮টি। হত্যা-ধর্ষণের শিকার এসব শিশুর পরিবারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা-বাবা উভয়ে নিম্নবিত্ত কমজীবী। একাকী বাসায় থাকা শিশুরা হত্যা, ধর্ষণসহ নানা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।

চট্টগ্রামে বাড়ছে শিশুদের প্রতি নির্যাতন-নিপীড়নের ঘটনা। একের পর এক খুন হচ্ছে শিশু। গত ৭ মাসে চট্টগ্রামে শিশু খুনের ঘটনা ঘটেছে কমপক্ষে চারটি। হত্যার শিকাররা সবাই কন্যা শিশু। একই সময়ে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮টি।

পুলিশের তথ্যমতে, ওই চার শিশুর তিনটিই হত্যার আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আবার প্রতিটি ঘটনাই ঘটেছে চট্টগ্রাম শহর এলাকায়। এই চার শিশুর মধ্যে দুটির মা ঘটনার সময় বাসায় থাকলেও বাকি দুটি শিশুর মায়েদের একজন গার্মেন্ট কর্মী ও অন্যজন ভিক্ষাবৃত্তি করেন।

এই একই সময়ে চট্টগ্রামে কন্যা শিশু ধর্ষণের ৮টি ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে৷ এর মধ্যে ৩ টি ঘটেছে শহরে৷ এই ৩ শিশুর মা-বাবাও কর্মজীবী। তাদের প্রায় সবাই তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

একের পর শিশুর প্রতি নিপীড়নের ঘটনায় উদ্বেগ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করছে সাধারণ মানুষের মনে৷ অন্যদিকে নিপীড়নের শিকার শিশুদের অধিকাংশের বাবা-মা নিম্ন আয়ের কর্মজীবী হওয়ায় এসব ঘটনা শ্রমজীবী মা-বাবার মধ্যে বাড়তি আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।

নিম্নবিত্ত কর্মজীবী বাবা-মায়েরা দিনের অধিকাংশ সময় বাসার বাইরে থাকেন। আর এই পুরো সময়টা শিশুকে একাকী বাসায় থাকতে হয়। এ অবস্থায় পরিচিত বা স্বল্প পরিচিতদের কেউ কেউ যৌন হেনস্তা করছে কন্যা শিশুদের। অনেক ক্ষেত্রে তা ধর্ষণ এমনকি হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত গড়াচ্ছে।

অপরাধ বিজ্ঞানীদের মতে, কর্মজীবী মায়েরা সারাদিন বাইরে থাকায় শিশুরা বাসায় একা ও অরক্ষিত অবস্থায় থাকে৷ এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে চারপাশে ভালো মানুষের ছদ্মবেশে থাকা কিছু আড়ালে মানসিক বিকারগ্রস্থ ব্যক্তি তৎপর হয়ে ওঠে। তারা অনেকটা অরক্ষিত এসব শিশুর ওপর নিপীড়ন চালায়।

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানার পোর্ট কলোনি এলাকার একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে ৭ বছর বয়সী সুরমার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে ওসমান হারুন মিন্টু নামে এক রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ওই শিশুর বাবা রিকশাচালক ও মা ভিক্ষাবৃত্তি করেন। বিরিয়ানির লোভ দেখিয়ে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে মিন্টু।

১৫ অক্টোবর খুলশি থানার ঝাউতলা এলাকায় খাবারের লোভ দেখিয়ে ৮ বছর বয়সী কন্যা শিশুকে ধর্ষণের দায়ে খাবার হোটেল মালিক নজির আহম্মদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর ১০ দিন পর নগরীর জামালখান এলাকায় নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী মারজানা হক বর্ষা। নিখোঁজের ৩ দিন পর একই এলাকার সিকদার হোটেলের পাশের নালা থেকে শিশুটির বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মিন্টু নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর এক সপ্তাহ না পেরুতেই ২ নভেম্বর নগরীর আকবর শাহ থানার কর্নেল হাট জোন্স রোড এলাকায় ধর্ষণের শিকার হয় ৫ বছর বয়সী আরেক কন্যা শিশু। এ ঘটনায় আলমগীর খান নামে এক রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এরপর ১৫ নভেম্বর নগরীর ইপিজেড এলাকায় বাসার পাশে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় ৫ বছর বয়সী আলিনা ইসলাম আয়াত৷ ৯ দিন পর ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আবির নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মুক্তিপণের জন্য আয়াতকে অপহরণের পর হত্যার স্বীকারোক্তি দেয় আবির।

ওই একই মাসের শেষ দিকে ২৭ নভেম্বর নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায় বাসায় বাবা-মা না থাকার সুযোগে পৌনে ২ বছর বয়সী কন্যশিশুকে ধর্ষণ করে পার্শ্ববর্তী ভবনের নিরপত্তা প্রহরী দুলাল। এ সময় শিশুর ৭ বছর বয়সী ভাইকে কৌশলে দোকানে পাঠিয়ে দেয় অভিযুক্ত ব্যক্তি। পরদিন শিশুর মায়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুলালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

সবশেষ ২১ মার্চ নগরীর পাহাড়তলী এলাকার বাসা থেকে আরবি পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় ১০ বছর বয়সী আবিদা সুলতানা আয়নী ওরফে আঁখি মনি। ঘটনার ৮ দিন পর একই এলাকা থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় রুবেল নামে এক সবজি বিক্রেতাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

চট্টগ্রামে শিশুদের প্রতি একের পর এক এসব নিপীড়নের ঘটনায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নিম্নবিত্ত কর্মজীবী বাবা-মায়েরা। নগরীর রৌফাবাদ এলাকায় কথা হয় গার্মেন্ট কর্মী জসীমের সঙ্গে। এক কন্যার জনক জসীমের স্ত্রীও গার্মেন্টকর্মী। ১২ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে প্রতিদিন বাসায় একা রেখেই কর্মস্থলে যেতে হয় তাদের।

নিউজবাংলাকে জসীম বলেন, ‘যে অবস্থা চলতেছে, আমরা সন্তান একা বাসায় রেখে গিয়ে সবসময় দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকি। ছেলে সন্তান হলে খুব বেশি সমস্যা নেই। কিন্তু আমার মেয়েকে সবসময় বাসায় একা রেখেই যেতে হয়।

‘চাকরি না করলে তো খেতে পারব না। এখন শহরে একের পর এক যে ঘটনাগুলো ঘটছে, ফেসবুক ও টিভিতে দেখলে ভয় লাগে। এগুলো আমাদের মনের ভয় আর দুশ্চিন্তাটা বাড়িয়ে দেয়। সবসময় ভয় হয়, সন্তানটা বিকারগ্রস্ত কার‌ো চোখে পড়ে যায় কি না। সারাদিন কাজ করলেও মন পড়ে থাকে বাসায়।’

এ বিষয়ে কথা হয় অপরাধ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ ধরনের অপকর্ম বা বীভৎস কর্মের প্রধান কারণ হচ্ছে আমাদের পরিবার গঠনের প্রক্রিয়া সঠিক পন্থায় যাচ্ছে না। আমরা সন্তান জন্ম দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু এরপর ওদের বেড়ে ওঠার যে সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি না। যথার্থ নীতি-নৈতিকতা, শিক্ষা বা আমরা যেগুলো বলি সামাজিক শিক্ষা- যা মানুষের আচরণকে সংযত করে, সুসংহত করে, সে বিষয়গুলো আমরা পরিবার থেকে আমাদের ছেলে-মেয়েদের দিতে পারছি না।

‘পরিবার হচ্ছে শিশুর প্রথম ও প্রধান শিক্ষাঙ্গন। মিনিমাম ৬ বছর পর্যন্ত পরিবার থেকেই তারা প্রথম শিক্ষা পায়। তারা যখন স্কুলে যাচ্ছে, সেখানেও তাদের ন্যূনতম নীতি-নৈতিকতা বা আরেকজনের প্রতি সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, শ্রদ্ধা, ভালোবাসার বিষয়গুলো কী জিনিস সেগুলো আমরা ওদের শিক্ষা দিচ্ছি না৷

‘আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় পাঠদান প্রক্রিয়া ও বইয়ের কনটেন্টগুলোতেও ছোটবেলা থেকে নীতিনৈতিকতা বা হৃদয়ের গভীরে কোনো কিছু হবে- এমন কিছু নেই।’

অপরাধীরা আইনের ফাঁক-ফোকরে পার পেয়ে যাওয়াকে দোষেন এই অপরাধ বিজ্ঞানী। বলেন, ‘যারা এই বীভৎস ভয়ঙ্কর অপকর্মগুলো করছে, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসছি আমরা। কিন্তু আইনের অসংখ্য ফাঁকফোকর ও আইনসংশ্লিষ্ট কতিপয় অর্থলোভী মানুষের সাহায্যে অল্প শাস্তির পর দুই-চারদিনের মধ্যে ওরা জামিন পেয়ে যায়।

‘এক্ষেত্রে অনেক সময় দেখা যায় নিম্নবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্তরা আদালতে দৌড়াতে পারেন না। এ ধরনের ভুক্তভোগীরা আইনের সুরক্ষা কতটা পাচ্ছে তা রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। শিশু-কিশোরদের প্রটেক্ট করার জন্য প্রয়োজনে আইনের প্রক্রিয়া ও প্রয়োগ সংশোধন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের রক্ষা করার জন্য, অপরাধীদের আইনের সত্যিকার কঠোর কাঠামোয় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে না পারলে সামনের দিনগুলোতে আরো কঠিন কিছু হয়তো আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে৷’

এসব ঘটনা বন্ধে অপরিকল্পিত নগরায়ন বন্ধের দিকে জোর দেয়ার তাগিদ দেন তিনি। বলেন, ‘নিপীড়নের শিকার শিশুদের অধিকাংশই দরিদ্র বা নিন্মবিত্ত পরিবারের৷ কেউ কেউ কর্মজীবী শিশু-কিশোর, কেউ বস্তিতে থাকে। তাদের জন্য রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে প্রতিটি অলি-গলিতে, প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় এমন সব প্রতিষ্ঠান থাকা দরকার যেখানে ওই শিশুদের জন্য ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা থাকবে।’

প্রশ্ন তুলে এই অপরাধ বিজ্ঞানী বলেন, ‘এই যে নিম্ন আয়ের কর্মজীবী বাবা-মায়ের সন্তান ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনে শিকার হচ্ছে, এই পরিবার শহরমুখী কেন হল? এটা হয়েছে অপরিকল্পিত নগরায়নের নিকৃষ্টতম কর্মজজ্ঞের কারণে।

‘শহরে যত গার্মেন্টস পল্লী আছে, সেগুলো কেন আমরা গ্রামে করছি না? গ্রামাঞ্চলে কারখানাগুলো করলে তো এই মানুষগুলো শহরমুখী হবে না। আমাদের কৃষিতে আরও নজর দিতে হবে। মানুষ যেন শহরমুখী না হয় সে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেননা আমরা যত শহরমুখী হচ্ছি তত বেশি দুর্বৃত্তায়নের শিকার হচ্ছি।’

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Evyzing Three of the three murder cases are the death sentence of three people

ইভটিজিং: তিন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়

ইভটিজিং: তিন হত্যা মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ডের রায়

ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় তিন জনকে হত্যার মামলায় তিন জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক মাসুদ করিম এ রায় দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো—রাকিবুল হাসান সৌরভ ওরফে সৌরভ প্রধান, শিহাব প্রধান এবং রনি বেপারী। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—শাকিব প্রধান, শামীম প্রধান, অনিক বেপারী, রায়হান এবং জাহাংগীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর।

তাদেরকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর বিল্লাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।ৎ

এক মেয়েকে ইভটিজিং করা নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ মার্চ উত্তর ইসলামপুর এলাকায় আওলাদ হোসেন মিন্টুর বাড়ির সামনে অভি, ইমনসহ অন্যদের নিয়ে সালিশ হয়। সেখানে তাদের ইভটিজিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

পরে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস করে দেয়া হয়। তবে, এর কিছু সময় পর অভির নেতৃত্বে কয়েকজন ইমন, শাকিব ও আলফাজের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় ইমন বাঁশ দিয়ে অভিকে আঘাত করতে গেলে তা গিয়ে লাগে সৌরভের গায়ে। সৌরভের সাথে ইমন ও শাকিবের হাতাহাতি হয়।

এ ঘটনায় সৌরভের বাবা জামাল হোসেন আওলাদ হোসেনের কাছে তাৎক্ষণিক বিচার দাবি করে। পরে রাত ১১টার দিকে আবার সালিশে বসেন তারা।

এ সময় জামাল হোসেনের লোকজন আওলাদ হোসেন, আফজাল হক, ইমন, শাকিবদের ওপর হামলা করে। অভি ও শিহাব ইমনকে, রনি আওলাদ হোসেনকে এবং শিহাব শাকিবকে ছুরিকাঘাত করে। তাদের চিৎকারে লোকজন এলে জামালদের লোকজন পালিয়ে যায়। আহত তিন জনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য অপর দুই জনকে নেওয়ার পথে শাকিব মারা যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় আওলাদ হোসেন ২৫ মার্চ মারা যান। এ ঘটনায় ২৬ মার্চ আওলাদ হোসেনের স্ত্রী খালেদা আক্তার মুন্সীগঞ্জ থানায় ১২ জনের নামে মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে মুন্সীগঞ্জ সিআইডির ইন্সপেক্টর আসলাম আলী অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।

মামলার বিচার চলাকালে আদালত ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Ramna Bottom bombing Declaration on Death Reference and Appeal begins

রমনা বটমূলে বোমা হামলা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু

রমনা বটমূলে বোমা হামলা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু

প্রায় দুই যুগ আগে রাজধানীর রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলার ঘটনায় হত্যা মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায় ঘোষণা শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ রায় ঘোষণা করা হবে।

এর আগে, গত ৩০ এপ্রিল এ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর রায়ের জন্য আজকের দিন ঠিক করেন হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট একই বেঞ্চ।

২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে পয়লা বৈশাখের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা হয়। এতে ঘটনাস্থলে ৯ জন নিহত হন

পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন। এ ঘটনায় করা মামলা ‘রমনায় বোমা হামলা মামলা’ হিসেবে পরিচিতি পায়।

মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে কারাগারে থাকা দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর হাইকোর্টের ওই বেঞ্চের কার্যতালিকায় ওঠে। পেপারবুক উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে শুনানি শুরু হয়।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও সরওয়ার আহমেদ। দুই আসামির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান।

রাজধানীর রমনা বটমূলে বোমা হামলার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রুহুল আমিন রায় দেন। রায়ে মুফতি হান্নানসহ আটজনের মৃত্যুদণ্ড এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মুফতি হান্নান ছাড়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন— আকবর হোসেন, আরিফ হাসান, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই মো. তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, আবদুল হাই ও শফিকুর রহমান। তবে সিলেটে গ্রেনেড হামলার মামলায় মুফতি হান্নানের মৃত্যুদণ্ড ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে।

বিচারিক আদালতের রায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডিত ব্যক্তিরা হলেন শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, সাব্বির, শেখ ফরিদ, আবদুর রউফ, ইয়াহিয়া ও আবু তাহের।

প্রসঙ্গত, কোনো ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে কোনো আসামির মৃত্যুদণ্ড হলে তা কার্যকরে হাইকোর্টের অনুমোদন লাগে। এটি ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি দণ্ডাদেশের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের জেল আপিল, নিয়মিত আপিল ও বিবিধ আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। ডেথ রেফারেন্স এবং এসব আপিল ও আবেদনের ওপর সাধারণত একসঙ্গে শুনানি হয়ে থাকে।

মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের পর আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের (ডেথ রেফারেন্স) জন্য রায়সহ নথিপত্র হাইকোর্টে আসে, যা ২০১৪ সালে ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। এরপর শুনানির পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, কারাগারে থাকা আসামিরা পৃথক আপিল ও জেল আপিল করেন।

হত্যা মামলায় পেপারবুক (মামলার বৃত্তান্ত) প্রস্তুতসহ আনুষঙ্গিক প্রক্রিয়ার পর ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল ২০১৬ সালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে প্রথম শুনানির জন্য ওঠে। শুনানিও শুরু হয়। পরে কার্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।

এ নিয়ে আলোচিত এই মামলায় আট আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ও আপিল হাইকোর্টের তিনটি বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠলেও শুনানি শেষে মামলাটি নিষ্পত্তি হয়নি। এরপর আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের ওই দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৮ ডিসেম্বর কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে এ মামলায় আজ রায় হতে যাচ্ছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In the Cyber ​​Protection Ordinance the previous five cases will also be canceled Asif Nazrul

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে আগের ৯টি ধারা বাতিল, মামলাও বাতিল হবে: আসিফ নজরুল

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশে আগের ৯টি ধারা বাতিল, মামলাও বাতিল হবে: আসিফ নজরুল মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: বাসস

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, সাইবার সুরক্ষা আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশে প্রথমবারের মতো ইন্টারনেটকে মৌলিক অধিকার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রস্তাবিত এই অধ্যাদেশে অনলাইন জুয়াকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রথমবারের মতো সাইবার স্পেসে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং যৌন হয়রানিকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে আগের আইনের ৯টি ধারা বাতিল করা হয়েছে। যা ছিল কুখ্যাত ধারা, এসব ধারাতেই ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল। মামলাগুলোও এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়া উপস্থাপন করা হয়। কিছু সংশোধন শেষে এই সপ্তাহে গেজেট আকারে প্রকাশ হতে পারে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা।

আসিফ নজরুল জানান, এছাড়া কিছু কিছু ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে দুটি অপরাধ রাখা হয়েছে, একটি হচ্ছে নারী ও শিশুর প্রতি যৌন নির্যাতনমূলক কন্টেন্ট প্রকাশ, হুমকি দেওয়া। আরেকটি হচ্ছে ধর্মীয় ঘৃণা ছড়ানো, যেই ঘৃণা ছড়ানোর মধ্যে দিয়ে সহিংসতা উসকে দেওয়া হয়। ধর্মীয় ঘৃণাকে কঠোরভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, যাতে ভুল বোঝাবুঝি না হয়, কেউ কাউকে হয়রানি করতে না পারে। এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে এই প্রথমবারের বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে যদি কোনও সাইবার অপরাধ করা হয়, সেটাকে শাস্তিযোগ্য করা হয়েছে। মত প্রকাশের ক্ষেত্রে ওই দুটি ক্ষেত্রে কারো বিরুদ্ধে মামলা হলে এটা আমলি আদালতে যাবে, যাওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেট যদি দেখেন— এই মামলার কোনো যৌক্তিকতা নেই, তাহলে প্রি ট্রায়াল স্টেজে তিনি মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন। অর্থাৎ চার্জশিটের জন্য অপেক্ষা করা লাগবে না। যদি দেখেন সম্পূর্ণ ভুয়া মামলা, এই মামলার কোনো ভিত্তি নেই, তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই মামলা বাতিল করে দিতে পারবেন।

আসিফ নজরুল বলেন, বিলুপ্ত করা বিধানগুলোর মধ্যে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় শহীদ বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কিত বিদ্বেষ বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণার যে দণ্ড দেওয়ার বিধান সেটা বিলুপ্ত করা হয়েছে। এই বিধানে প্রচুর হয়রানিমূলক মামলা হতো। মানহানিকর তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বিধান যেটা এতে প্রচুর মামলা হতো, অনেক সাংবাদিক এই মামলার ভুক্তভোগী হয়েছেন, এই ধারা সম্পূর্ণ বাতিল করা হয়েছে। আরেকটা হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে— এই ধরনের কোনও কন্টেন্ট বা কথাবার্তা বলায় প্রচুর মামলা হতো, এটাও সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে। আক্রমণাত্মক বা ভীতিকর তথ্য উপাত্ত প্রকাশ এটাও সম্পূর্ণ বিলুপ্ত করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, কোরবানি ঈদের ছুটি ৫-১০ জুন আগে থেকেই ঘোষণা করা ছিল। ১১ এবং ১২ জুন ছুটি ঘোষণা করে ১৭ মে এবং ২৪ মে এই দুই দিন সরকারি ও আধা সরকারি কর্মচারীরা কাজ করবেন। এই দুই দিন ছুটি ঘোষণা করায় ঈদুল আজহার ছুটি হবে ১০ দিন। এই অনুযায়ী ব্যাংক ও প্রাইভেট কোম্পানি তাদের মতো করে ছুটি ঘোষণা করবে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Chinmay arrested in Chittagong lawyer murder case

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার

চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যা মামলায় চিন্ময় গ্রেফতার

চট্টগ্রামে আলোচিত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় ইসকনের সাবেক সংগঠক ও বর্তমানে কারাবন্দি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার সকালে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ৬ষ্ঠ আদালতের বিচারক এস এম আলাউদ্দীন এই আদেশ দেন। শুনানিকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে নিরাপত্তা জনিত কারণে আদালতে হাজির না করে কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত করা হয়।

একইসঙ্গে আরো তিনটি মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে পুলিশ। পুলিশের ওপর আক্রমণ, কর্তব্যকাজে বাধা, আদালত প্রাঙ্গনে ত্রাস সৃষ্টি, হামলার অভিযোগের বাকি তিনটি মামলার শুনানি ভার্চুয়ালি আগামীকাল মঙ্গলবার হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এরআগে, গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে চিন্ময় দাসকে আলিফ হত্যাসহ চারটি মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জমা দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি মামলা আজকে ভার্চুয়াল শুনানি হয়। অন্য তিনটি মঙ্গলবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোট নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কারাগারে পাঠানোর নির্দেশকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গনে ত্রাস সৃষ্টি করে চিন্ময়ের অনুসারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা তাকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান আদালত এলাকায় আটকে রাখে তারা। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তখনই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে নগরীর লালদিঘীর পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।

সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।

এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ৫১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে আলিফ হত্যা মামলায় ২১ জনের বিরুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতার তিন আসামি-চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানান, সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা আইনজীবী সাইফুলকে তারা নির্মমভাবে হত্যা করেন।

চিন্ময় দাসের বিরুদ্ধে আরো একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলাও রয়েছে, যা গত বছরের ৩১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় পতাকা অবমাননা করে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত ছিলেন চিন্ময় ও তার অনুসারীরা। ওই মামলায় গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেফতার করা হয় তাকে।

এর মধ্যে, গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তবে রাষ্ট্রপক্ষ চেম্বার জজ আদালতে জামিনের বিরুদ্ধে আপীল করেছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Former MP Zafar Alam on a four day remand

চার দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি জাফর আলম

চার দিনের রিমান্ডে সাবেক এমপি জাফর আলম

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) জাফর আলমের (৬৯) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সোমবার (৫ মে) মামলার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট পার্থ ভদ্র এ আদেশ দেন।

আজ (সোমবার) সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আসামির সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী। তবে আসামির পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

এর আগে, গত ২৮ এপ্রিল জাফর আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত। তার আগে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। একই দিনে আওয়ামী লীগও পাল্টা সমাবেশ ডাকে।

এ সময় বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করতে পুলিশের সহায়তায় দলটির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে । হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।

জাফর আলম ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ২০২৪ সালের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। জাফর আলম ২০০৪ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত চকরিয়া পৌরসভার মেয়র ছিলেন। ২০১৪ সালে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে জয়ী হন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী সরকার পতনের পর, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চকরিয়া ও পেকুয়ায় হত্যা মামলাসহ তার বিরুদ্ধে অন্তত ১৫ থেকে ১৬টি মামলা করা হয়েছে।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Corruption at Nuclear Power Center Palaya Limited is banned from departure from 5 people

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্নীতি : প্রচ্ছায়া লিমিটেডের ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

প্রচ্ছায়া লিমিটেডের আট পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

দেশ ত্যাগে যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তারা হচ্ছেন: প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক বুশরা সিদ্দিক, শেহতাজ মুন্নাসী খান, শহিদ উদ্দিন খান, শাহিন সিদ্দিক, শফিক আহমেদ শফিক, পারিজা পাইনাজ খান, নওরিন তাসমিয়া সিদ্দিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা আনজুম।

দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এই আদেশ দেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর ছোট বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকী ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে প্রায় ৫৯ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগ অনুসন্ধানপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত সদস্য বিশিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে।

প্রচ্ছায়া লিমিটেড নামীয় প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারগণ যাতে সপরিবারে গোপনে দেশ ত্যাগ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। তিনি দেশত্যাগ করে বিদেশে পালিয়ে গেলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। তাছাড়া সার্বিক অনুসন্ধানকাজে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ সমূহ ক্ষতির কারণ রয়েছে। এজন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের বিদেশ যাত্রা রোধে আদালতের আদেশ দেয়া একান্ত প্রয়োজন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

মন্তব্য

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

তন্ময়সহ শেখ পরিবারের চারজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা শেখ তন্ময়। ছবি: সংগৃহীত

দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়, খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সালাউদ্দিন, তার ভাই শেখ সোহেল ও শেখ জালাল উদ্দিন রুবেলের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

আজ বৃহস্পতিবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিন দুদকের পক্ষে সংস্থাটির উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, বিগত সরকারের সাবেক মন্ত্রী ও বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অকল্পনীয় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট এই ব্যক্তিরা তাদের নামে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি হস্তান্তর করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন মর্মে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়।

তারা বিদেশে পালিয়ে গেলে তদন্ত কার্যক্রম দীর্ঘায়িত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আদালত তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন।

মন্তব্য

p
উপরে