ময়মনসিংহে বাড়িতে বৃষ্টির পানি যাওয়ার জন্য পাইপ লাইন বসানোকে কেন্দ্র করে সাবেক সেনা সদস্য মমতাজ উদ্দিনকে হত্যার ঘটনায় আরেক সাবেক সেনা সদস্য মো. রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে সোমবার রাতে নেত্রকোণার সদর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
৬২ বছর বয়সী গ্রেপ্তার রেজাউল করিম নেত্রকোণার পূর্বধলা থানাধীন খামারহাটি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ময়মনসিংহ নগরীর আকুয়া চুকাইতলা এলাকায় বসবাস করতেন।
৫৮ বছর বয়সী নিহত মমতাজ উদ্দিন নগরীর একই এলাকার বাসিন্দা।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয় জানান, সাবেক সেনা সদস্য মমতাজ উদ্দিন ও সাবেক সেনা সদস্য মো. রেজাউল করিমের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তাদের বসতবাড়িতে বৃষ্টির পানি যাওয়ার জন্য পাইপ লাইন বসানোকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত ২৫ মার্চ সকাল ৯টার দিকে মমতাজ উদ্দিনের সাথে রেজাউল করিম, তার ছেলে শেখ মাহমুদুল হাসান হৃদয়, শেখ মাকসুদুল হাসান সাগর ও স্ত্রী শরিফা আক্তারের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়।
তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে রেজাউল করিমসহ তার দুই ছেলে ও স্ত্রী মমতাজ উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্য বাঁশের লাঠি ও কাঠের বাটাম দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে।
এ সময় গুরুতর আহত অবস্থায় মমতাজ উদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মমতাজের স্ত্রী পারভীন আক্তার। স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) ময়মনসিংহ সেনানিবাসে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কোম্পানি অধিনায়ক মেজর আখের মুহম্মদ জয় বলেন, ‘এ ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে রেজাউল করিমসহ চারজনকে আসামি করে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটি জানতে পেরে ছায়াতদন্ত শুরু করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে র্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রেজাউল করিমের পালিয়ে থাকার অবস্থান জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ভারতীয় অংশে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
পাটগ্রামের কালীরহাট সীমান্তের ভারতীয় অংশে রোববার রাত পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ওই বাংলাদেশি ২৫ বছর বয়সী ইউসুফ আলী।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, রোববার গভীর রাতে ইউসুফ আলীসহ তার সঙ্গীরা গরু পারাপারের জন্য সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। এ সময় ভারতীয় অংশের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার ১৬৯ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ান মীররাপা ক্যাম্পের টহল দল তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ইউসুফ আলী গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই নিহত হন। এ সময় তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান। পরে বিএসএফের সহযোগিতায় মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
৬১ বিজিবির (তিস্তা) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতীয় অংশে বিএসএফের গুলিতে ইউসুফ আলী নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আমাদের টহল টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। আমরা পতাকা বৈঠকের আহ্বান করেছি। বিএসএফের পক্ষ থেকে সাড়া পেলে পতাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করব।’
চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে চলন্ত রিকশার ওপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে প্রাণ হারানো রিকশাচালক জাহেদুলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) করে দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল সোমবার এফডিআরের নথিপত্র জাহেদুলের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অনুরোধে ওই রিকশাচালকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দিতে বিদ্যুৎ সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জুন সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম কোর্ট হিল শাখায় রিকশাচালকের স্ত্রী উম্মে কুলসুম ও বাবা মো. মাহাতাব আলীর নামে ৫ লাখ টাকার এফডিআর খোলে পিডিবি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হুছাইন মুহাম্মদ বলেন, ‘পিডিবির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল স্থায়ী আমানতের নথিপত্র জাহেদুলের স্বজনদের হাতে তুলে দিয়েছেন।’
গত ১৪ মে সকালে নগরীর অক্সিজেন মোড়ে হাজি ওয়াজেদ পেট্রোল পাম্পের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দিকে রিকশা চালিয়ে যাওয়ার পথে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে দগ্ধ হন রিকশাচালক জাহেদুল। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
অক্সিজেন এলাকায় ছিঁড়ে পড়া ওই তার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। ওই ঘটনার পর রিকশাচালকে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পিডিবি চট্টগ্রাম শাখার প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম, তবে রিকশাচালকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত করে দেয়ার ঘোষণার পর পিছিয়ে আসেন তিনি।
রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা এখান থেকে (চট্টগ্রাম কার্যালয়) একটা আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু যেহেতু এখন একটা হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্টের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি, তাই আর এগোচ্ছি না।’
ঘটনার দুই দিন পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রিকশাচালকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুৎ সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এই বিষয়ে সে সময় চট্টগ্রামের ডিসি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছিলেন, “সকালে আমি প্রতিমন্ত্রী সাহেবের সাথে কথা বলেছি, মারা গেলেন যে রিকশাচালক, উনার তো ৭ মাসের একটা বাচ্চা আছে। উনাকে কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কি না। তো উনি আমার কাছ থেকে বিস্তারিত জানলেন। জিজ্ঞেস করলেন যে এটা কাদের, পিডিবির কি না। লাইনটা পিডিবির জানার পর উনি বললেন যে, ‘আমি পিডিবির চেয়ারম্যানকে বলে দিব ৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দেয়ার জন্য।’ উনি আমাকে বললেন যে, পিডিবির চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ সচিব সাহেবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য।”
ডিসি আরও বলেন, ‘তো আমি বিদ্যুৎ সচিবের সাথে যোগাযোগ করেছি। বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান মহোদয় বললেন যে, নিহত রিকশাচালকের পরিবারে উপযুক্ত কেউ থাকলে একটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন।’
দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর পর রিকশাচালকের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে না আনায় অপহৃত পাঁচ রোহিঙ্গার মধ্যে এক কিশোরের বাম হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাসায় পাঠিয়েছে অপহরণকারীরা। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া ওই কিশোর ১৬ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলম আলীখালী ২৫ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক ডি-২২-এর সামসু আলমের ছেলে।
এর আগে শুক্রবার রাতে আলীখালী ক্যাম্প থেকে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত অন্য ব্যক্তিরা হলেন একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান, আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ এবং মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম।
ওই ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে জাহাঙ্গীর আলমের একটি হাত বিচ্ছিন্ন করে, কাটা হাতসহ তাকে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জাহাঙ্গীর আলমের চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, অপহরণকারী চক্রটি অপহৃত অন্য চারজনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে, না দিলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম জানান, ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন সদস্য ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অপহরণের শিকার রোহিঙ্গাদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানান, আলীখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
আরও পড়ুন:একের পর এক জনপ্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা মামলায় ঘটনায় স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের আন্দোলনের মুখে অবশেষে বেলকুচি থানার ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার বিকেলে তাকে প্রত্যাহার করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানান, ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহারের পর বেলকুচি থানার নতুন ওসি হিসেবে খায়রুল বাশারকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেলকুচির পৌর কাউন্সিলর মাহাবুবুল আজাদ তারেকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় রোববার মানববন্ধন করেন জনপ্রতিনিধিরা।
এ সময় উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ বলেন, ‘প্রায় ৬ মাস আগে বেলকুচি থানার ওসির দায়িত্বে আসেন আসলাম হোসেন। এর পর থেকে বেলকুচি উপজেলায় ৬ জন জনপ্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা পর্যন্ত নেয়া হয়নি। উপরন্তু আমাদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের এই সাধারণ সম্পাদক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহার না করা হলে জনপ্রতিনিধিরা কলম বিরতিতে যাবেন।’
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জাতীয় পার্টি।
রোববার এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জাপার দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ইয়াহ্ইয়াকে আগে শোকজ হয়। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়া পার্টির মহাসচিব মুজিবুল চুন্নুর সুপারিশে পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতির আদেশ অনুমোদন করেন।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে গত নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়ে জামানত হারান।
গত নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট-২ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবার সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান। দুজনের বাড়িই একই এলাকায়।
গত ১২ মে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর একটি নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী তার পক্ষে ভোট চান বলে অভিযোগ ওঠে।
সিলেট সিটি করেপারেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন দলটির সিলেট মহানগর শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। ইয়াহ্ইয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ১৩ মে দলের চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করেন বাবুল। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় জাতীয় পার্টি।
নোটিশে বলা হয়, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী গত ১২ মে রাত ৯টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায় মঞ্চে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রেখে ভোট চেয়েছেন। দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও এমন কর্মকাণ্ড সুস্পষ্টভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ও স্বার্থের পরিপন্থী। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে কেন শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, এ বিষয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
ওই কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব পাওয়ার পর দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী।
এ ব্যাপারে সোমবার ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ ওঠার পর ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বলেছিলেন, আমি এলাকাবাসীর আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে গিায়েছিলাম। সেটি দলীয় কোন অনুষ্ঠান ছিলে না। কারো পক্ষে ভোটও চাইনি।
আনোয়ারুজ্জামানের সমর্থনে ওই সভাটি হয় নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই সভার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, দল মত নির্বিশেষে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে সিলেটের উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে বিজয়ী করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আনোয়ারুজ্জামান একজন ভালো মনের মানুষ। দীর্ঘদিন থেকে আমি চিনি। তিনি নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। আগামী ২১ জুন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানাই।
বাতাসা খাইয়ে অচেতন করে স্কুল শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ মামলায় বাগেরহাটে কাইয়ুম শেখ নামে এক কবিরাজ গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে গ্রেপ্তারকৃত আসামীকে আদালতের মাধ্যমে বাগেরহাট কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে সোমবার ভোরে ফকিরহাট থানা পুলিশের একটি দল জেলার চিতলমারী উপজেলার কলাতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৪৫ বছর বয়সী কাইয়ুম শেখ ফকিরহাট উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের মতলেব শেখের ছেলে।
পুলিশ জানায়, সোমবার (২৯ মে) বিকেল ৩টার দিকে হাতের আঁচিল তুলতে এক বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে কবিরাজ কাইয়ুম শেখের বাড়িতে যায় ওই শিক্ষার্থী। কবিরাজ আঁচিল তোলার চিকিৎসার সময় রোগীর সঙ্গে অন্য কেউ থাকা যাবে না বলে তার বান্ধবীকে বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। পরে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে মেয়েটিকে বাতাসা খেতে দেন। এরপর মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাতে অভিযুক্ত কাইয়ুম শেখের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফকিরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করেন।
ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলীমুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত আসামী কাইয়ুম শেখকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সারা দেশের ন্যায় তীব্র তাপদাহে ওষ্ঠাগত বাগেরহাট জেলাবাসীর প্রাণ। মরার ওপর খাড়ার ঘায়ের মতো এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। একদিকে গরমে ফ্যান বন্ধ, অন্যদিকে রাতে অন্ধকার। সব মিলিয়ে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানগুলোতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে জেলার মানুষ।
সোমবার বিকেল ৩টায় বাগেরহাটে ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে মোংলা আবহাওয়া অফিস। এর আগে রোববার জেলার তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আগামী সাতদিন এমন তাপদাহ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে বৃষ্টি হলে জেলার তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন মোংলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ মো. হারুন অর রশিদ।
এদিকে, তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে জেলার সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের।
রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত ও সঙ্গে লোডশেডিং থাকায় ভোগান্তির মাত্রা দ্বিগুণ হয়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। তীব্র গরম ও রোদের তাপে কৃষক, দিনমজুর, রিকশাচালকরা কাজ করতে পারছেন না।
এদিকে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে বেচাকেনা বেড়েছে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানগুলোতে। জেলার হারিকেন, কুপি ও হাতপাখার দোকানগুলোতে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করার মতো।
মাত্রই যাত্রী নামিয়ে গরমে দরদর করে ঘামছিলেন রিকশাচলক করিম শেখ। তিনি বলেন, ‘তীব্র গরমে ঘরে-বাইরে কোথাও শান্তি নেই। রিকশার হ্যান্ডেলের সাথে ছাতা বেঁধে কোনোমতে সূর্যের তাপ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছি। কিন্তু গরম কি আটকানো যায়!
‘পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হয়েছি। কারণ একদিন ইনকাম না হলে পরেরদিন আমাকে পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’
শহরের দক্ষিণ সরুই এলাকার বাসিন্দা আলম শেখ বলেন, ‘এত গরম আমার জীবনে দেখিনি। সে সঙ্গে কষ্ট আরও বাড়িয়েছে লোডশেডিং। ঘরে ও রাস্তায় কোথায়ও দাঁড়াতে পারছি না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চারবার গোসল করেছি। তাতেও শান্তি পাচ্ছি না।’
বাগেরহাট শহরের নাগের বাজার এলাকার ব্যবসায়ী দিপক সাহা বলেন, ‘গরম ও লোডশেডিংয়ে আমরাও কষ্টে আছি। তবে হাতপাখা ও হারিকেনের চাহিদা অভাবনীয় হারে বেড়েছে। আগে যেখানে দিনে এক থেকে দুটি হাতপাখা, হারিকেন ও চেরাগ (কুপি) বিক্রি হয়েছে, সেখানে দিনে ১০ থেকে ১৫টি হারিকেন ও চেরাগ বিক্রি হচ্ছে।’
নাগেরবাজার এলাকার হাতপাখা দোকানী লক্ষ্মী রানী সাহা বলেন, ‘গত কয়েক বছরে হাতপাখার এমন চাহিদা দেখিনি। আমার দোকানে যত হাতপাখা ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে হাতপাখার অর্ডার দিয়েছি। বেচাকেনা অনেক ভালো।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য