সরকারি ছুটির দিনে আইকিউএয়ারের তালিকায় চরম অবনতি না হলেও বাতাসের নিম্ন মানে শীর্ষ দশে রয়েছে ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে রোববার সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে বাতাসের নিম্ন মানে ১০০টি শহরের মধ্যে সপ্তম ছিল ঢাকা।
আগের দিন শনিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে বাতাসের নিম্ন মানে শহরগুলোর মধ্যে নবম অবস্থানে ছিল ঢাকা।
আজ সকালের ওই সময়ে বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে শীর্ষে ছিল উত্তর থাইল্যান্ডের বৃহত্তম শহর চিয়াংমাই। আগের দিন সকাল ১০টা ৫ মিনিটেও এ দিক থেকে শীর্ষে ছিল শহরটি।
আজ সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল ঘানার আক্রা ও ভারতের দিল্লি।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, রোববার সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১১ দশমিক ৮ গুণ বেশি। একই সময়ে চিয়াংমাইয়ের বাতাসে পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ডব্লিউএইচওর আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৩০ দশমিক ৮ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকাল ১০টা ৪৩ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৫৩। এর মানে হলো সে সময়টাতে অস্বাস্থ্যকর ছিল রাজধানীর বাতাস।
একই সময়ে চিয়াংমাইয়ের বাতাসের স্কোর ছিল ২০৫। এর অর্থ হলো ওই সময়ে খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাস নিতে হয় চিয়াংমাইবাসীকে।
আরও পড়ুন:অ্যামাজন নদীর গোলাপী ও ধূসর রঙের ডলফিন একটি বিপন্ন প্রায় প্রজাতি। পৃথিবীতে পাওয়া কয়েকটি স্বাদু পানির ডলফিনের মধ্যে এটি অন্যতম।
গত সপ্তাহে ব্রাজিলের অ্যামাজন নদীর একটি উপনদীতে ১২০টি ডলফিনের মৃতদেহ ভাসতে দেখা গেছে। বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছেন, মারাত্মক খরা এবং তীব্র গরমে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাজিলের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন মন্ত্রণায়ের একটি গবেষণা সংস্থা মামিরাউয়া ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, সোমবার টেফে লেকের আশেপাশে আরও দুটি মৃত ডলফিন পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে ইনস্টিটিউটের সদস্য মরিয়ম মারমনটেল বলেন, ‘আমরা গত সপ্তাহে ১২০টি মৃত ডলফিনের তথ্য নথিভুক্ত করেছি।’
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পানির উচ্চ তাপমাত্রাই ডলফিনগুলোর মৃত্যুর কারণ। গত সপ্তাহ থেকে টেফে লেক অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০২ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে৷
তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ওই এলাকার জলাশয়গুলোও হাজার হাজার মাছও মারা গেছে বলে জানিয়েছে সেখানকার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো।
অ্যামাজন নদীতে ডলফিন এমন একটি প্রজাতি যা পৃথিবীতে অবশিষ্ট অল্প কিছু মিঠা পানির ডলফিন প্রজাতির মধ্যে পড়ে। বিলুপ্তপ্রায় এ প্রাজাতিটিকে বাঁচাতে জীবিত ডলফিনগুলিকে উদ্ধার করতে পশুচিকিত্সক এবং জলজ স্তন্যপায়ী বিশেষজ্ঞদের দল পাঠানো হয়েছে। ব্রাজিলের চিকো মেন্ডেস ইনস্টিটিউট ফর বায়োডাইভারসিটি কনজারভেশনের পক্ষ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল ডলফিনগুলো উদ্ধারে গিয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে শুধু খরা ও উচ্চতাপই যে ডলফিনগুলোর মৃত্যুর কারণ, এ বিষয়ে এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। অন্যান্য সম্ভাব্য কারণ খতিয়ে দেখার চেষ্টা করছেন তারা। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলেও ডলফিনগুলোর মৃত্যু হতে পারে ধারণা তাদের।
গত সপ্তাহের শেষের দিকে লেক টেফের পানির তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, যা বছরের এই সময়ের গড় তাপমাত্রা থেকে ১০ ডিগ্রি বেশি। পানির তাপমাত্রা কয়েক দিনের জন্য মাঝে কিছুটা কমলেও রোববার তা আবার বেড়ে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হয়। সে সময় লেকে অন্তত ৭০টি মৃত ডলফিন দেখা যায়।
এ ঘটনার জন্য পরিবেশকর্মীরা অস্বাভাবিক গরমের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করেছেন।
মামিরাউয়া ইনস্টিটিউটের ভূ-স্থানিক সমন্বয়কারী আয়ান ফ্লিসম্যান বলেন, ‘খরা অ্যামাজন অঞ্চলের নদী তীরবর্তী সম্প্রদায়গুলোর ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলছে। ভাল মানের পর্যাপ্ত পানি থাকায় অনেক সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।’
টেফ ৬০ হাজার বাসিন্দার শহর। তবে এখন নদীগুলো শুকনো থাকায় তার সরকার বিচ্ছিন্ন সম্প্রদায়গুলোকে সরাসরি খাবারও সরবরাহ করতে পারছেন না।
আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার আবহাওয়া অফিস জানায়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মঙ্গলবার দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝরি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
বাংলাদেশে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ২।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে এ কম্পন অনুভূত হয় বলে গুগলের আর্থকোয়াক অ্যালার্ট সিস্টেমের তথ্য থেকে প্রথম জানা যায়।
পরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়্যারলেস সুপারভাইজার জহিরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ৫.২ মাত্রার ভূমিকম্প ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত হয়েছে৷ এর উৎপত্তিস্থল ঢাকা থেকে ২৩৬ কিলোমিটার উত্তরে আসামে।
বাংলাদেশ, ভারত ছাড়াও নেপাল, ভূটান এবং চীনেও অনুভূত হয়েছে এর কম্পন।
তবে ইউএসজিএস জানায়, ভূমিকম্পটি ৫.৪ মাত্রার। আসামের গোয়ালপাড়া থেকে ২৪ কিলোমিটার দক্ষিণে ছিল এর উৎপত্তিস্থল। উৎপত্তিস্থলে ভূমিকম্পটির গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা। রিখটার স্কেলে ওই কম্পনের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ২। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল টাঙ্গাইলে।
এর আগে, গত ১৪ আগস্ট রাত নয়টার দিকে রাজধানীসহ সারাদেশে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
আরও পড়ুন:গত কয়েক দিন ধরেই রাজধানীসহ দেশজুড়ে তীব্র দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমে জনজীবন বিপর্যন্ত। শরতকালে যেখানে হুটহাট বৃষ্টির কারণে পরিবেশে শীতলতা বজায় থাকার কথা, সে সময় এমন গরমে অস্বস্তি রয়েছেন সবাই। সারাদেশে কমবেশি বৃষ্টি ঝরলেও রাজধানীতে তার দেখা নেই একদমই।
শুক্রবার বিকেলের দিকে হালকা বৃষ্টির পর ঢাকার বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। ফলে গরমের মাত্রাও বাড়ে। তবে রাত বাড়তে বাড়তে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসে। টানা বৃষ্টি না হলে এই গরম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে গরম নিয়ে সুখবর দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী ৩ অক্টোবর থেকে ঢাকায় দুদিন টানা বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে রাজধানীর তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমে আসবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি আরও ঘনীভূত হতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।
লঘুচাপের প্রভাবে সাগর ও নদী কিছুটা উত্তাল থাকায় নদীবন্দরগুলোয় ১ নম্বর এবং সমুদ্রবন্দরগুলোয় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানান, গতকাল বৃষ্টি হওয়ায় আজকে গতকালের তুলনায় তাপমাত্রা কমে এসেছে। সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অল্প অল্প বৃষ্টি হচ্ছে।
তিনি জানান, ঢাকায় আগামী ৩ ও ৪ অক্টোবর বেশি বৃষ্টি হবে। এতে তাপমাত্রা আরও কিছুটা কমে আসবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।
তাপপ্রবাহের বিষয়ে বলা হয়, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, বগুড়া, রংপুর, সৈয়দপুর ও পঞ্চগড় জেলাসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল নিকলিতে ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ঢাকায় ৩৫ দশমিক ৫ রাজশাহীতে ৩৬, রংপুরে ৩৬ দশমিক ৫, ময়মনসিংহে ৩৬ দশমিক ৪, সিলেটে ৩৬, চট্টগ্রামে ৩২ দশমিক ৮, খুলনায় ৩০ দশমিক ৫ এবং বরিশালে ৩০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এদিকে সাগরের বিশেষ সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, মধ্য উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপ আকারে বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে আজ রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলগুলোর ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন:নাটোরের গুরুদাসপুরে দুই শিকারির বাড়ি থেকে অর্ধশত পাখি উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা।
উপজেলার চরপিপলা গ্রামে শুক্রবার বিকেলে শিকারি সাহিদুল ইসলাম ও আবু সোমার বাড়ি থেকে পাখিগুলো উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার করা পাখিগুলোর মধ্যে ছিল ৪০টি ঘুঘু ও ১০টি বক।
গুরুদাসপুর জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান নাহিদ বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে দুই পাখি শিকারির বাড়ি যায় পরিবেশকর্মীরা। তার আগেই দুজন শিকারি পালিয়ে যায়। তাদের বাড়ি থেকে খাঁচায় বন্দি পাখিগুলো উদ্ধার করে মুক্ত আকাশে উড়িয়ে দেয়া হয়।’
ওই সময় পরিবেশকর্মী জালাল উদ্দিন, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আশিকুর রহমান, সাদেক আলীসহ স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের পশ্চিম বাঁশখালীর মানুষের প্রাণের দাবি একটি টেকসই বেড়িবাঁধ। কিন্তু তাদের সেই দাবি পূরণ হচ্ছে না কোনোভাবেই। বিদ্যমান বাঁধটুকুও অস্তিত্ব হারাচ্ছে। কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে ২৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বেড়িবাঁধটি সাগরের বুকে হারিয়ে যেতে বসেছে।
বাঁশখালী উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকায় সাগর বুকে দিনে দিনে মিলিয়ে যাচ্ছে বেড়িবাঁধ। প্রকল্প কাজে ধীরগতি ও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী এর বড় কারণ বলে অভিযোগ উঠেছে।
বেড়িবাঁধ না থাকার কারণেই ১৯৯১ সালের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ে এই জনপদে লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এরপর ঘূর্ণিঝড় আয়লা, সিডর, কোমেন, রোয়ানুর কবলে পড়ে প্লাবিত হয়ে শত শত একর ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ব্লক তৈরি ও লুটপাট-দুর্নীতি বেড়িবাঁধ টেকসই না হওয়ার অন্যতম কারণ। উপকূলীয় এই বেড়িবাঁধ নিমাণ কাজের বাজেট যা ছিল তা কেবল ছোট থেকে ছোট হয়ে এসেছে। এসব ঢাকতে অপরিকল্পিত নকশা প্রণয়ন ও যেনতেনভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কারণে মাত্র এক বছরের মাথায় তা হারিয়ে যাচ্ছে সাগর বুকে।
অনেকের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন করে দিয়েছে। আর নতুন গতিপথে স্রোত এখন সরাসরি আঘাত হানছে বেড়িবাঁধে। প্রবল স্রোতের ধাক্কায় বাঁধের কিনারাতে তৈরী হচ্ছে গভীর খাড়ি (কূপ)। তা ক্রমশ বেড়িবাঁধের ভিত নড়েবড়ে করে দিয়ে ভাঙন ত্বরান্বিত করছে।
স্থানীয়রা বলছেন, স্রোতের গতিপথ বদল, চর জেগে ওঠা- এসব বিষয় দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল বিভাগের। তারা এটার সম্ভাব্যতা যাচাই না করে ‘ধর তক্তা মার পেরেক’ টাইপের কাজ কেন করবে? আর তার খেসারত কেন উপকূলবাসী দেবে?
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, বাঁশখালী উপকূলে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে সাড়ে ৭ বছর আগে ২৫১ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০১৫ সালের ১৯ মে প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) তা পাস হয়। বঙ্গোপসাগর ও সাঙ্গু নদীর পাড়ে ১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই বাঁধ নির্মাণে কয়েক দফা সময় বাড়ানো হয়। ব্যয়ও বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় এতে ৬ দশমিক ২ কিলোমিটার বাঁধের ঢাল সংরক্ষণ, ভাঙন রোধ ও পুনরাকৃতিকরণের পাশাপাশি ৩ দশমিক ৮ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণ এবং ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার বাঁধ পুনরাকৃতিকরণের কথা রয়েছে। ২০২২ সালে প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকার মধ্যবর্তী দুটি স্থান ধসে গিয়ে বেড়িবাঁধের বেশিরভাগ অংশ সাগরে মিলিয়ে গেছে। সিসি ব্লক বেষ্টিত বাঁধের যেটুকু টিকে আছে তাতে বিশালাকার ফাটল সৃষ্টি হয়ে নিচের দিকে ক্রমশ দেবে যাচ্ছে।
ভারী কোনো জোয়ার এলেই পুরোপুরি মিশে যাবে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি হলে তড়িঘড়ি করে জিও ব্যাগ ফেলে বিষয়টি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছে পাউবো। অধিকন্তু জিও ব্যাগ ভর্তি করা হচ্ছে বাঁধের খুব কাছ থেকে বালু নিয়ে। আবার কোথাও ২০০ মিটার দূরত্বে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে জিও ব্যাগ পূর্ণ করার জন্য।
সম্প্রতি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ায় সৃষ্ট বন্যার পানি সাঙ্গু হয়ে নেমে এসেছে বঙ্গোপসাগরে। বলতে গেলে এরপর থেকে এই বাঁধে ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তবে, এই জিও ব্যাগ ভাঙন কতটা ঠেকাতে কতটা কার্যকর হবে তা নিয়ে সন্দিহান এলাকার সচেতন মহল।
পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কফিল উদ্দিন কফিল বলেন, ‘উপকূলীয় এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি একটি টেকসই বেড়িবাঁধ। কোনো বড় জোয়ার এলে বা আবহাওয়ার ভারি পূর্বাভাস পেলে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি বেড়ে যায় আমাদের মধ্যে। এই আতংক আমাদের সারাজীবনের সঙ্গী।
'ভেবেছিলাম স্থায়ী বেড়িবাঁধ হলে আমাদের সেই দুঃখটা ঘুচবে। কিন্তু বছর না যেতেই বেড়িবাঁধের এই হাল কেন, তার জবাব সংশ্লিষ্টরাই দিতে পারবেন। আমি কারও দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলতে চাই না। যেটা চাই তা হলো এটির যথাযথ সংস্কারের মাধ্যমে স্থায়ী একটা সমাধান।’
স্থানীয় বাসিন্দা অ্যডভোকেট মাইনুল হোসেন সোহেল বলেন, ‘খানখানাবাদ ইউনিয়নের কদমরসুল ও প্রেমাশিয়া এলাকার বেড়িবাঁধের অবস্থা ভয়াবহ। বড় জোয়ার এলেই প্লাবিত হবে গোটা ইউনিয়ন। এলাকার মানুষের মধ্যে প্রচণ্ড ভীতি কাজ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে সাতকানিয়া, লোহাগাড়ায় যে ভয়াবহ বন্যা ও প্রাণহানি হল সে বিষয়টা ইউনিয়নবাসীকে ভাবাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতোপূর্বে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোতে লবণাক্ত পানি ঢুকে ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ ধানি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে গেছে। উপকূলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিনির্ভর। দীর্ঘদিন এই বেড়িবাঁধ অরক্ষিত ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এলাকার মানুষ স্বপ্ন দেখেছিল একটি টেকসই বেড়িবাঁধ হবে। উল্লেখযোগ্য বরাদ্দও আমরা পেয়েছিলাম। কিন্তু যে কাজ দেখছি তাতে মনে হয় না কাঙ্ক্ষিত মান অক্ষুণ্ণ রেখে কাজ করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই হতাশাজনক। আশা করি সংশ্লিষ্ট পক্ষ এসব অভিযোগের সুরাহা করবে এবং দ্রুত টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণে ভূমিকা রাখবে।’
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম হায়দার বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড আপদকালীন অবস্থা ঠেকাতে জিও ব্যাগ দিয়ে বাঁধের অবশিষ্ট অংশ ঠেকাতে কাজ করছে। সাঙ্গু নদীর মোহনায় যে চর জেগে উঠেছে তা অপসারণ করা না হলে এই বাঁধের ভাঙন রোধ করা যাবে না। যেকোনো মুহূর্তে আমরা পুরো ইউনিয়নের সবাই বিলীন হয়ে যাব।’
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা চর ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন মন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ পরিদর্শক দল খুব তাড়াতাড়ি পরিদর্শনে আসবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। এরপর এটি ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে স্রোতের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে গেলে বেড়িবাঁধ ভাঙন রোধ করা যাবে।’
পাউবোর চট্টগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য জানার জন্য বেশ কয়েকবার তার মোবাইল ফোনে কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও সাড়া মেলেনি।
তবে ওই দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারণ সাঙ্গু নদীর মোহনায় জেগে ওঠা ওই চর। এটা ড্রেজিং করা না হলে এই ভাঙন রোধ করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীলরাই ভাল বলতে পারবেন।’
আরও পড়ুন:নাটোরে একটি গুইসাপ উদ্ধার করে অবমুক্ত করেছে পরিবেশকর্মীরা।
জেলার সদরের হাফরাস্তা এলাকা থেকে শুক্রবার দুপুরে গুইসাপটি উদ্ধার করা হয়।
গুইসাপটি উদ্ধার করা পরিবেশকর্মী ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ধানের জমির পাশে মাছ ধরার জালে একটি গুইসাপ আটকে যায়। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে আমিসহ আরও কয়েকজন মিলে গুইসাপটিকে উদ্ধার করি এবং পাশেই নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসময় উপস্থিত জনসাধারনের উদ্দেশ্যে পরিবেশের জন্য বন্যপ্রাণীর ইতিবাচক দিক সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রকৃতপক্ষে গুইসাপ কোনো সাপই নয়। এর কোনো বিষ নেই, মানুষকে দংশনও করে না।’
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী গুইসাপ সংরক্ষিত; তাই এটি হত্যা, শিকার বা এর কোনো ক্ষতিসাধন করা একেবারেই নিষিদ্ধ বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য