শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বাড়িতে ফিরেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
গত দুই দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, চিকিৎসকের পরার্মশে শুক্রবার তিনি (শামীম ওসমান) বাড়িতে চলে গিয়েছেন, তবে বর্তমানে বাড়িতে বিশ্রামে আছেন।
আর আগে শাহ নিজাম জানিয়েছিলেন, ‘খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম, ঠিকমতো না ঘুমানোর কারণে শামীম ওসমান অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত সহকারী হাফিজুর রহমান মান্নান বলেন, ‘এমপি সাহেবের (শামীম ওসমান) শারীরিক অবস্থান এখন ভালো। তিনি অনেকটা সুস্থতা বোধ করায় বাড়িতে চলে এসেছেন, তবে চিকিৎসকের পরার্মশে আছেন।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংসদের সহধর্মিণী সালমা ওসমান লিপি ও ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে শামীম ওসমানের সুস্থতা কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সবার দোয়া চান।
অয়ন নিউজবাংলাকে জানান, তার বাবা (শামীম ওসমান) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই সময় তিনি সবার কাছে তার বাবার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন।
এর আগে সালমা ওসমান লিপি ফেসবুকে লিখেন, ‘সংসদ সদস্য শামীম ওসমান গতকাল (বুধবার) রাত থেকে অসুস্থ। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপনারা সবাই উনার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।’
দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৪৩ নেতাকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বিএনপি। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মো. ছালাহ উদ্দিন রিমনও রয়েছেন। বাকিদের মধ্যে ৩৮ জন পুরুষ কাউন্সিলর ও ৪ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন।
সোমবার রাতে কেন্দ্র থেকে সিলেট মহানগর বিএনপির কাছে বহিষ্কারের আদেশ আসে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘সিলেটে সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ৪৩ জনকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ৪১ নেতা-কর্মী প্রথমে দল শোকজ করেছে। কিন্তু তারা শোকজের কোনো জবাব দেননি। এরপর কেন্দ্রে আরও দুজনের নাম পাঠানো হয়। সব মিলিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া সিলেটের ৪৩ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।’
সোমবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বহিষ্কারাদেশে বলা হয়েছে, ‘সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আপনি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব সন্তোষজনক নয়। আপনার নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গত ১৫ বছর ধরে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে করা গুম, খুন ও সরকারি পৈশাচিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে এমন পরিবারসহ গণতন্ত্রকামী জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষার প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। দলীয় গঠনতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী প্রাথমিক সদস্যপদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হলো।’
এর আগে ৩ জুন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আলাদাভাবে এসব শোকজ নোটিশ ইস্যু করেছেন।
শোকজ নোটিশে বলা হয়, ‘১৫ বছর ধরে অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপিসহ জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে খালেদা জিয়া দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে কারাভোগ করছেন। বিএনপি এই অবৈধ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অথচ দলের সদস্য হয়ে ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে দলীয় বড় সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করেছেন। সুতরাং কেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, তার কারণ দেখিয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে জমা দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।’
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বিএনপি বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাচ্ছে না। কিন্তু সিলেটে যারা দলের সিদ্ধান্ত আমান্য করে প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের বিএনপি আজীবন বহিষ্কার করেছে।’
২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত চারবার নির্বাচন হয়েছে। ২০০৩ সালে প্রথম নির্বাচনে বিজয়ী হন বদর উদ্দিন কামরান; ২০০৮ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনেও তিনি মেয়র নির্বাচিত হন কারাগার থেকে। ২০১৩ সাল থেকে মেয়র পদে আছেন বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এবার তিনি দলের সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচনে প্রার্থী হননি।
আগামী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে।
আরও পড়ুন:সাতক্ষীরা ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আট ট্রাক পেঁয়াজ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আসার অপেক্ষায় আছে আরও ১০ ট্রাক পেঁয়াজ।
সোমবার সন্ধ্যায় ওই পেঁয়াজের ট্রাকগুলো প্রবেশ করে। আর বাকি ১০ ট্রাক পেঁয়াজ আসার কথা রয়েছে মঙ্গলবার।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের কর্মকর্তারা এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। খবর বাসসের
ভোমরা সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ খাঁন জানান, প্রতি টন পেঁয়াজ ২২০ মার্কিন ডলার থেকে ২৫০ মার্কিন ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। দেশীয় পেঁয়াজের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে গত ১৫ মার্চ থেকে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। এ সুযোগে বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় ওঠে।
তিনি আরও বলেন, পেঁয়াজ আমদানি শুরু হওয়াই অসাধু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম কমানো সম্ভব হবে এবং সাধারণ মানুষ নায্য মূল্যে পেঁয়াজ কিনতে পারবে।
ভোমরা শুল্ক স্টেশনের তথ্য কর্মকর্তা শান্ত হাওলাদার জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আট ট্রাক পেঁয়াজ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আরও আট থেকে ১০টি ট্রাক প্রবেশ করতে পারে।
এর আগে ২ মাস ২২ দিন বন্ধ থাকার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফের পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয় সোমবার। রাত ৮টার দিকে ৩টি ট্রাকে ৭৫ টন পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ভারতীয় অংশে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
পাটগ্রামের কালীরহাট সীমান্তের ভারতীয় অংশে রোববার রাত পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ওই বাংলাদেশি ২৫ বছর বয়সী ইউসুফ আলী।
বিজিবি সূত্রে জানা যায়, রোববার গভীর রাতে ইউসুফ আলীসহ তার সঙ্গীরা গরু পারাপারের জন্য সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেন। এ সময় ভারতীয় অংশের কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থানার ১৬৯ রানীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ান মীররাপা ক্যাম্পের টহল দল তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে ইউসুফ আলী গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানেই নিহত হন। এ সময় তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান। পরে বিএসএফের সহযোগিতায় মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যায়।
৬১ বিজিবির (তিস্তা) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভারতীয় অংশে বিএসএফের গুলিতে ইউসুফ আলী নামের এক বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আমাদের টহল টিম ঘটনাস্থলে রয়েছে। আমরা পতাকা বৈঠকের আহ্বান করেছি। বিএসএফের পক্ষ থেকে সাড়া পেলে পতাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করব।’
চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড়ে চলন্ত রিকশার ওপর বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে প্রাণ হারানো রিকশাচালক জাহেদুলের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত (এফডিআর) করে দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল সোমবার এফডিআরের নথিপত্র জাহেদুলের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অনুরোধে ওই রিকশাচালকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দিতে বিদ্যুৎ সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ জুন সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম কোর্ট হিল শাখায় রিকশাচালকের স্ত্রী উম্মে কুলসুম ও বাবা মো. মাহাতাব আলীর নামে ৫ লাখ টাকার এফডিআর খোলে পিডিবি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা হুছাইন মুহাম্মদ বলেন, ‘পিডিবির কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল স্থায়ী আমানতের নথিপত্র জাহেদুলের স্বজনদের হাতে তুলে দিয়েছেন।’
গত ১৪ মে সকালে নগরীর অক্সিজেন মোড়ে হাজি ওয়াজেদ পেট্রোল পাম্পের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দিকে রিকশা চালিয়ে যাওয়ার পথে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে দগ্ধ হন রিকশাচালক জাহেদুল। পরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার।
অক্সিজেন এলাকায় ছিঁড়ে পড়া ওই তার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি)। ওই ঘটনার পর রিকশাচালকে ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন পিডিবি চট্টগ্রাম শাখার প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম, তবে রিকশাচালকের পরিবারকে ৫ লাখ টাকার স্থায়ী আমানত করে দেয়ার ঘোষণার পর পিছিয়ে আসেন তিনি।
রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা এখান থেকে (চট্টগ্রাম কার্যালয়) একটা আর্থিক ক্ষতিপূরণের চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু যেহেতু এখন একটা হ্যান্ডসাম অ্যামাউন্টের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি, তাই আর এগোচ্ছি না।’
ঘটনার দুই দিন পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে রিকশাচালকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিদ্যুৎ সচিব ও পিডিবির চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
এই বিষয়ে সে সময় চট্টগ্রামের ডিসি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছিলেন, “সকালে আমি প্রতিমন্ত্রী সাহেবের সাথে কথা বলেছি, মারা গেলেন যে রিকশাচালক, উনার তো ৭ মাসের একটা বাচ্চা আছে। উনাকে কোনো আর্থিক সহায়তা দেয়া যায় কি না। তো উনি আমার কাছ থেকে বিস্তারিত জানলেন। জিজ্ঞেস করলেন যে এটা কাদের, পিডিবির কি না। লাইনটা পিডিবির জানার পর উনি বললেন যে, ‘আমি পিডিবির চেয়ারম্যানকে বলে দিব ৫ লাখ টাকার এফডিআর করে দেয়ার জন্য।’ উনি আমাকে বললেন যে, পিডিবির চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ সচিব সাহেবের সাথে যোগাযোগ করার জন্য।”
ডিসি আরও বলেন, ‘তো আমি বিদ্যুৎ সচিবের সাথে যোগাযোগ করেছি। বিদ্যুৎ সচিব হাবিবুর রহমান মহোদয় বললেন যে, নিহত রিকশাচালকের পরিবারে উপযুক্ত কেউ থাকলে একটি চাকরির ব্যবস্থা করবেন।’
দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর পর রিকশাচালকের পরিবারকে দাফন-কাফনের জন্য ২৫ হাজার টাকা দেয়া হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়িয়ে না আনায় অপহৃত পাঁচ রোহিঙ্গার মধ্যে এক কিশোরের বাম হাত কবজি থেকে বিচ্ছিন্ন করে বাসায় পাঠিয়েছে অপহরণকারীরা। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায় অপহরণকারীরা।
কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে গত শনিবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
কবজি বিচ্ছিন্ন হওয়া ওই কিশোর ১৬ বছর বয়সী জাহাঙ্গীর আলম আলীখালী ২৫ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক ডি-২২-এর সামসু আলমের ছেলে।
এর আগে শুক্রবার রাতে আলীখালী ক্যাম্প থেকে জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত অন্য ব্যক্তিরা হলেন একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস, মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান, আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ এবং মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম।
ওই ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা পাঁচ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে জাহাঙ্গীর আলমের একটি হাত বিচ্ছিন্ন করে, কাটা হাতসহ তাকে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে জাহাঙ্গীর আলমের চিকিৎসা চলছে।
তিনি আরও জানান, অপহরণকারী চক্রটি অপহৃত অন্য চারজনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে, না দিলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
টেকনাফ থানার ওসি মো. আবদুল হালিম জানান, ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন সদস্য ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অপহরণের শিকার রোহিঙ্গাদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা জানান, আলীখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত রোহিঙ্গাদের উদ্ধারের তৎপরতা চলছে।
আরও পড়ুন:একের পর এক জনপ্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও মিথ্যা মামলায় ঘটনায় স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের আন্দোলনের মুখে অবশেষে বেলকুচি থানার ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে প্রশাসন। সোমবার বিকেলে তাকে প্রত্যাহার করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল জানান, ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহারের পর বেলকুচি থানার নতুন ওসি হিসেবে খায়রুল বাশারকে নিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বেলকুচির পৌর কাউন্সিলর মাহাবুবুল আজাদ তারেকের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় রোববার মানববন্ধন করেন জনপ্রতিনিধিরা।
এ সময় উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনিয়া সবুর আকন্দ বলেন, ‘প্রায় ৬ মাস আগে বেলকুচি থানার ওসির দায়িত্বে আসেন আসলাম হোসেন। এর পর থেকে বেলকুচি উপজেলায় ৬ জন জনপ্রতিনিধির ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় থানায় মামলা পর্যন্ত নেয়া হয়নি। উপরন্তু আমাদের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি ফোরামের এই সাধারণ সম্পাদক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ওসি আসলাম হোসেনকে প্রত্যাহার না করা হলে জনপ্রতিনিধিরা কলম বিরতিতে যাবেন।’
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে পাশ কাটিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাওয়ায় দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জাতীয় পার্টি।
রোববার এই সিদ্ধান্ত হয় বলে জাপার দপ্তর সম্পাদক এমএ রাজ্জাক খান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ ইয়াহ্ইয়াকে আগে শোকজ হয়। তার জবাব সন্তোষজনক না হওয়া পার্টির মহাসচিব মুজিবুল চুন্নুর সুপারিশে পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহম্মদ কাদের তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতির আদেশ অনুমোদন করেন।
জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে সিলেট-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে গত নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হয়ে জামানত হারান।
গত নির্বাচনে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট-২ থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। এবার সিলেট সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান। দুজনের বাড়িই একই এলাকায়।
গত ১২ মে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর একটি নির্বাচনী সভায় অংশ নিয়ে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী তার পক্ষে ভোট চান বলে অভিযোগ ওঠে।
সিলেট সিটি করেপারেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন দলটির সিলেট মহানগর শাখার আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম বাবুল। ইয়াহ্ইয়ার চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ১৩ মে দলের চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ করেন বাবুল। তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৪ মে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয় জাতীয় পার্টি।
নোটিশে বলা হয়, ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী গত ১২ মে রাত ৯টার দিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায় মঞ্চে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে বক্তব্য রেখে ভোট চেয়েছেন। দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও এমন কর্মকাণ্ড সুস্পষ্টভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ও স্বার্থের পরিপন্থী। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে কেন শাস্তিমূলক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না, এ বিষয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।
ওই কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব পাওয়ার পর দল থেকে বহিষ্কৃত হলেন ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী।
এ ব্যাপারে সোমবার ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীর বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
তবে নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ ওঠার পর ইয়াহ্ইয়া চৌধুরী বলেছিলেন, আমি এলাকাবাসীর আয়োজনে একটি অনুষ্ঠানে গিায়েছিলাম। সেটি দলীয় কোন অনুষ্ঠান ছিলে না। কারো পক্ষে ভোটও চাইনি।
আনোয়ারুজ্জামানের সমর্থনে ওই সভাটি হয় নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ঝেরঝেরিপাড়ায়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই সভার ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে ইয়াহ্ইয়া চৌধুরীকে বলতে শোনা যায়, দল মত নির্বিশেষে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করে সিলেটের উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামানকে বিজয়ী করতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, আনোয়ারুজ্জামান একজন ভালো মনের মানুষ। দীর্ঘদিন থেকে আমি চিনি। তিনি নগরবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। আগামী ২১ জুন নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানাই।
মন্তব্য