চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩টি আবাসিক হলের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার। শিক্ষার্থীদের দুপুরের ও রাতের খাবারের জন্য নির্ভর করতে হয় ডাইনিংয়ের ওপর।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে ২০২১ সালে হলের খাবারের দাম ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা করা হয়। দাম বাড়লেও মান না বাড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল অসন্তোষ।
এরই মধ্যে রোজাতে হলগুলোর ডাইনিংয়ে খাবারের দাম ২৫ টাকা থেকে এক লাফে ৩৫ টাকা এবং সেহরির দাম ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে প্রভোস্ট কমিটি। গত ২২ মার্চ প্রভোস্ট কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এমনিতেই হলের খাবারের মান ঠিক নেই। ভর্তুকি না দিয়ে হঠাৎ দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়ে হচ্ছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শিক্ষার্থীদের আয় বাড়েনি, উল্টো ব্যয় লাগামে হিমশিম খেতে হয়েছে। এ ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় শিক্ষার্থীদের কোনো প্রতিনিধিও সেখানে উপস্থিত ছিল না। এতে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, হলের খাবারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি কোনো ধরনের ভর্তুকি দেয় না। হলের স্টাফদের বেতন, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলকে ভর্তুকি হিসেবে ধরা হয়।
দান বাড়ানোর সিদ্ধান্তে বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়েছে সমালোচনা। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোতে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. স্বপন মিয়া ফেসবুকে লেখেন, ‘২০১৯ সালে ১ম বর্ষে থাকাকালে ২০ টাকার বিনিময়েও দুবেলা খাইতে পারিনি টাকা বাচানোর জন্য। একবেলা খেয়ে দিন পার করে দিসি। তাই খুব ভালো করে জানি ক্ষুধা কি জিনিস। ১ম বর্ষে যারা আছে তাদের জন্য ৩৫ টাকা আত্মহত্যার মত। অনেকের ২৫ টাকা দিয়ে দুবেলা খাওয়ার সামর্থ্য নেই, সেখানে ৩৫ টাকা অনেক বেশি। মাননীয় প্রভোস্ট, দয়া করে আমাকে ক্ষুধার্থ রাখবেন না। আমার খাবার নিশ্চিত করুন।’
আসাদ নেওয়াজ নামের এক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘মাননীয় প্রশাসন, দয়া করে আমাদের একটা জোরে লাথি মেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। কারণ এই তল্লাটে থাকার মতো অবস্থা আর রইল না। এবার সত্যই সেই বাপ-দাদাদের বলে যাওয়া কথাটাই সত্যি হচ্ছে। পেটে গামছা বেধে পড়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’
তিনি বলেন, ‘সরকার প্রতি বছর যে কোটি কোটি টাকা বাজেট দিচ্ছে, সেখান থেকে নূন্যতম একটা অংশ ভর্তুকি হিসেবে দিলেও তো আজ এই দিন দেখতে হতো না। এটা কোনোদিনও একটা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ড হতে পারে না। একটা নোটিশ নেই, পূর্বের কোনো ঘোষণা ছাড়াই এভাবে দাম বাড়ালো। এটা কোনোদিনও আমরা মেনে নেবো না। হাজার হাজার শিক্ষার্থী এভাবে না খেয়ে মরে যেতে পারি না। সবাই এভাবে চুপ থাকলে এটাই ফিক্সড হয়ে যাবে।’
মিলন শেখ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন বাড়ে, কর্মচারীদের বেতন বাড়ে, খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বাড়ে কিন্তু কখনোই বাড়েনা শিক্ষার্থীদের ইনকাম। শিক্ষার্থীদের তো কোন ইনকামই নেই তাহলে বাড়বে কেমনে? শিক্ষার্থীদের বাড়ে শুধু খরচ। এই খরচ শিক্ষার্থীরা কেমনে মিটাবে? বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এই বিষয়ে ভাবা উচিৎ। অতিদ্রুত হল ডাইনিংয়ের খাবার মূল্য কমিয়ে মানসম্মত খাবার দেয়ার জন্য ম্যানেজারদেরকে নির্দেশ দেয়া হোক।’
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘আলোচনা ছাড়া হুট করে কোন কিছুর সিদ্ধান্ত নিয়ে তা আরোপ করা একধরনের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিফলন। গণতান্ত্রিক দেশে শিক্ষকদের এ ধরনের বিরুপ আচরণ কোনভাবেই কাম্য নয়। আমরা শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলতে চাই খাবারের দাম বৃদ্ধি প্রত্যাহার করতে হবে। সেই সঙ্গে মানসম্মত খাবার পরিবেশন করতে হবে এবং অন্য ধর্মালম্বী শিক্ষার্থীরা যেন রমযানে খাবার গ্রহণে কোন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন না হয় তার বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি হল প্রভোস্টদের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একত্রে সেহরি খাওয়ার অনুরোধ জানান।
এ বিষয়ে আলাওল হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ ফরিদুল আলম বলেন, ‘হলের খাবারের দাম না বাড়ালে আগের মেনু দেয়া যাচ্ছিল না। মুরগি না দিয়ে শুধু ডিম-সবজি দেয়া হচ্ছিল। ডাইনিং ম্যানেজাররাও চালাতে পারছিল না। তাই আমরা রেগুলার খাবার ও সেহরিতে ১০টাকা বাড়িয়েছি। বাজারে সবকিছুর দাম প্রায় ৫০ শতাংশ হারে বেড়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাড়তি টাকা কোথা থেকে দিবে। খাবারে সরাসরি ভর্তুকি দেয়ার সুযোগ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের এখানে ব্যবসা করারও সুযোগ নেই। ডাইনিং ম্যানেজার যদি এই টাকার মধ্যে কিছু করতে না পারে কীভাবে হবে। তাকে খরচটাও তুলতে হবে। তাদের আমরা কোনো ব্যবসাও করতে দিই না। উল্টো তাদের লস হয় বলে তারা কান্নাকাটি করে।’
মানের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘মানের বিষয়ে আমরা বলে দিছি আগের চাইতে মানটা যেন বাড়ানো। খাবারের আইটেম যাতে বাড়ানো হয়, ঝোল যাতে পাতলা না থাকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। আমরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে বাধ্য হয়ে দামটা বাড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় একটা নির্দিষ্ট বাজেটে চলে। বিশ্ববিদ্যালয় বাড়তি টাকা কোথা থেকে দিবে। এর বাইরে সরকার হলের ছেলেদের খাবারের জন্য বাড়তি টাকা দেবে? আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন ভাবে আলোচনা করেছি। কেউ কোনো আপত্তি করেনি, শুধু বলেছে খাবারের মানটা যেন ঠিক থাকে। এখন সারাদেশে অর্থনৈতিক সংকট, সেই চাপটা আমাদের ওপর এসেও পড়েছে।’
আরও পড়ুন:হাবিবুর রহমান। জন্মগতভাবেই নেই দুই হাত। তবুও দমে যাননি তিনি। ছোট বেলা থেকে পা দিয়ে লিখেই চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। স্কুল, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে এবার অংশ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভর্তিযুদ্ধে। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েই বড় আলেম হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
সোমবার ইবি’র ধর্মতত্ত্ব অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
হাবিবুরের বাবা আব্দুস সামাদ পেশায় কৃষক ও মা হেলেনা খাতুন গৃহিনী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট হাবিবুর।
২০২০ সালে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৬৩ ও ২০২৩ সালে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫৭ নিয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশ সেবায় নিয়োজিত হতে চান হাবিবুর। সেই স্বপ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তিনি।
এর আগে হাবিবুর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আলিম পরীক্ষার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন জাগে। পরিবারের অনুপ্রেরণা পেয়েই আমি আজ এতদূর আসতে পেরেছি। তবে কখনো প্রতিবন্ধকতার কারণে হেয় শিকার হতে হয়নি। সবাই ভালোভাবে নিয়েছে। আমি জীবনে ভালো মানুষ হতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছু সম্ভব। চেষ্টা করলেই আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিবেন। চেষ্টা না করলে আসলে কোনো কিছু সম্ভব না।
‘সবাইকে চেষ্টা করা উচিত। কষ্ট হবে, বিপদ আসবে। এর মাধ্যমে জয় করতে হবে। চেষ্টা না করলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়।’
হাবিবুরের প্রতিবেশী আজমল হোসেন বলেন, ‘সে সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়। শারীরিক গঠনে অন্য দশজনের মতো না হলেও কোন দিক দিয়ে সে পিছিয়ে নেই। হাবিবুর ছোট থেকেই অনেক মেধাবী।’
আরও পড়ুন:নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনস্থ অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
এ ছাড়া মানববন্ধনে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য-দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, হামলা এবং মামলার মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক মতানুসারীদের দমন-নিপীড়নের প্রতিবাদও জানান সাদা দলের নেতারা।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা দাবি করেন, আমেরিকা ভিসানীতির মাধ্যমে বৈশ্বিক পর্যায়ে অপমানের ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। তারা মনে করেন, এই নীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে উগান্ডা-নাইজেরিয়ার সমপর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে কারা দায়ী, সরকার কেন তাদের ধরছে না। কারণ তারা সরকারের চেয়ে আরও শক্তিশালী। তারাই সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেজন্য নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সারাদেশের মানুষ আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছে। আমরা তাদের সাথে একাত্মতা জানাই।
যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, বাংলাদেশে এখন যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে সেটা নজীরবিহীন। লোডশেডিংয়ের কারণে বাংলাদেশের জনজীবন এখন বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। এই মুহুর্তেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে বিদ্যুৎ নেই, অথচ সব বিভাগে ক্লাস চলছে। বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে লুটপাটের একটা নজির আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের জীবন একেবারে যখন নাবিশ্বাস উঠেছে, তখন আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এর প্রতিবাদও করতে পারবো না। আমাদের উপর নানাভাবে মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম শহীদুল ইসলাম বলেন, আমরা সবসময় চাই, এদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। ভোটারবিহীন নির্বাচন যেন আর না হয়। বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, রাতের আঁধারে ভোটের মাধ্যমে আপনারা যেভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন সেই দিন শেষ হয়ে গিয়েছে, আর নয়।
মানববন্ধনে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন খান, অধ্যাপক আব্দুস সালাম, অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন আহমেদ এবং সহযোগী অধ্যাপক এম এ কাউসার প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চারুকলা’ ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ১৩০টি আসনের বিপরীতে এই ইউনিটের এবারের ভর্তি পরীক্ষায় চার হাজার ৭২৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২১২ জন পাস করেছেন।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অবস্থিত আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল শ্রেণিকক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান।
‘চারুকলা’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী নিসার হোসেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অন্য বছর চারুকলা ইউনিটের সাধারণ জ্ঞান ও অঙ্কন পরীক্ষা আলাদা দিনে হলেও এবার দুই পরীক্ষায় এক সঙ্গে নেয়া হয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল চারুকলা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
এই ইউনিটে প্রথম হয়েছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সৌম্যদিপ্ত মন্ডল। তার ভর্তি পরীক্ষার রুল নম্বর ৪১০৭০২৪। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮২ আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ১০২ নম্বর।
দ্বিতীয় হয়েছেন আদমজী ক্যান্টেনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শাফাত হোসাইন রিশতা। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৮১.৫ নম্বর। আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ১০১.৫ নম্বর।
তৃতীয় হয়েছেন আদমজী ক্যান্টেনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী হৃদিতা নৌশিন। তিনি ১০০ নম্বরের ভর্তি পরীক্ষায় পেয়েছেন ৭৯.৭৫ নম্বর। আর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফলসহ ১২০ নম্বরের মধ্যে পেয়েছেন ৯৯.৭৫ নম্বর।
এই ইউনিটের ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (https://admissions.eis.du.ac.bd) থেকে ফলাফল জানতে পারছেন৷ এ ছাড়া ফোনের মেসেজ অপশনে রবি, বাংলালিংক বা টেলিটক নম্বর থেকে DU টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়েও ফলাফল জানা যাবে৷
‘চারুকলা’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীকে ১৮ জুন বেলা ৩টা থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বিস্তারিত ফরম ও বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণ করতে হবে৷
কোটায় আবেদনকারীদের ৬ জুন থেকে ১২জুন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম চারুকলা অনুষদের ডিন কার্যালয় থেকে সংগ্রহ করতে হবে৷ তা যথাযথভাবে পূরণ করে ওই সময়ের মধ্যে ডিন কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
কারো ফলাফল নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা নিরীক্ষার জন্য ফি দেয়া সাপেক্ষে ৬ জুন থেকে ১২জুন পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের ডিন কার্যালয়ে আবেদন করা যাবে৷
গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে ভুয়া প্রবেশপত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আটক হয়েছেন এক তরুণ। পরীক্ষা দিতে আসা প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতেই মূলত তিনি ওই কাজ করেন। ছাড়া পেতে পরে মুচলেকা দিতে হয়েছে তাকে।
গুচ্ছের বিজ্ঞান শাখার ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) কেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে।
আটক তরুণ সাইফুল্লাহ্ জাহান প্রিন্স ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র।
এক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্র সংগ্রহ করে তিনি কেন্দ্রে প্রবেশ করেন। কিন্তু দেখা করে বের হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আটক করে।
সাইফুল্লাহ্ জানান, প্রেমিকার সঙ্গে মামা আসায় পরীক্ষাকেন্দ্রের বাইরে তিনি দেখা করতে পারছিলেন না। তাই তিনি ওই কাজ করেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আবেগের বশে ছেলেটি এ ধরনের কাজ করেছে। তবে অপরাধের জন্য তিনি লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে আর এমন কাজ করবেন না বলেও জানিয়েছেন।’
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে লিখিত প্রতিশ্রুতি (মুচলেকা) নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।
আরও পড়ুন:দেশের ২২টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও বিবিএ প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান শাখার এই ইউনিটের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা।
২২ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে শনিবার দুপুর ১২টা থেকে শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী এ ভর্তি পরীক্ষা চলবে।
‘এ’ ইউনিটে অংশ নিচ্ছেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৩ পরীক্ষার্থী। মোট আসন ৯ হাজার ৮৭৫টি। ফলে আসন প্রতি লড়বেন ১৭ পরীক্ষার্থী। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মোট ১০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় প্রতি প্রশ্নের সঠিক উত্তরে নম্বর থাকবে এক। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য কাটা যাবে দশমিক ২৫ নম্বর। ১০০ নম্বরের এ ভর্তি পরীক্ষায় পাশ নম্বর ৩০।
বরাবরের মতোই আবেদনকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দেয়ার জন্য কেন্দ্র হিসেবে পছন্দ করেছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৬ হাজার ৫৩৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নটরডেম কলেজ, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজ, ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও গভ. কলেজ অফ অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স এই আটটি উপকেন্দ্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এ বছর গুচ্ছের শেষ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে নির্ধারিত রুম খোলা হয়। প্রবেশপত্র ও নির্দেশিত অন্যান্য কাগজপত্র প্রদর্শন করে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। কোনো ব্যাগ, মোবাইল কিংবা ইলেকট্রনিকস ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে বাস-ট্রাক-লেগুনা, রিক্সার কারণে সৃষ্ট এই যানজটের ফলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় পার্শ্ববর্তী সবগুলো রাস্তায় অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের ভিড়ের কারণে যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে। এর ফলশ্রুতিতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়েছে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যাত্রীরা।
এ ছাড়াও প্রচণ্ড দাবদাহে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা।
এদিকে দয়াগঞ্জ নতুন রাস্তার মোড়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললাইনের কাজ চলমান থাকায় এক লেনেই সব ধরনের যানবাহন চলাচল করছে, ফলে যাত্রাবাড়ী ও এর আশপাশের এলাকা এবং ঢাকার বাইরে থেকে যে সকল শিক্ষার্থী জবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসছে, তারা দীর্ঘক্ষণ জ্যামে আটকা পড়েছেন।
ভর্তি পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের গুণতে হচ্ছে অধিক ভাড়া। তাদের অভিযোগ, ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ নিয়ে বেশ কিছু রিকশাচালক অধিক ভাড়া আদায় করছেন।
ফারুক মিয়া নামের এক রিকশাচালক বলেন, ‘১০-২০ টাকাই তো বেশি চাই। রাস্তা ঘাটে বহুত জ্যাম। একবার ভার্সিটির ওইদিক গেলে সারাদিন লাইগা যায়।’
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা জ্যামের কারণে পরীক্ষার হলে পর্যন্ত ঢুকতে পারছে না। বাস রিক্সাসহ অন্যান্য যানবাহন একেবারেই গেটের কাছে যার কারণে জ্যামে একেবারে নাজেহাল অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রচণ্ড এই গরমে এমনিতেই মানুষের এতো ভিড় তার ভিতর এই জ্যাম সত্যিই হতাশাজনক।’
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থী হৃদয় মিত্র বলেন, ‘পরীক্ষা শুরুর ৪ ঘণ্টা আগে মোহাম্মদপুর থেকে রওনা দিয়েছি, পরীক্ষা শুরু হতে আর ৩০ মিনিট বাকি। এই গরমে এভাবে জ্যাম ঠেলে এসে পরীক্ষা দিতে আর মনোবল থাকে না।’
গুচ্ছভুক্ত ২২টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা), ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (সিলেট), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুলনা), হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (দিনাজপুর), মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (টাঙ্গাইল), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোয়াখালী), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুমিল্লা), জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (ময়মনসিংহ), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যশোর), বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (রংপুর), পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবনা), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোপালগঞ্জ), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (বরিশাল), রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাঙ্গামাটি), রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ (সিরাজগঞ্জ), বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি (গাজীপুর), শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় (নেত্রকোণা), বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (জামালপুর), পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পটুয়াখালী), কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কিশোরগঞ্জ) এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চাঁদপুর)।
আরও পড়ুন:ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চাকরিচ্যুত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক আসাদুজ্জামানকে প্রায় ছয় বছর পর পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশে বিশ্ববিদ্যালয় এ সিদ্ধান্ত নেয়।
গত সোমবার অনুষ্ঠেয় সিন্ডিকেটের ২৫৯তম সভার ৫৫ নম্বর প্রস্তাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
শিক্ষক আসাদুজ্জামান ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং বিভাগটির সাবেক সভাপতি।
তার বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৬তম সিন্ডিকেটে আসাদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল।
রেজিস্ট্রার সূত্র জানায়, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশ অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে ১৬ এপ্রিল ২০১৭ থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পুনর্বহাল করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘তিনি মামলা করলে হাইকোর্ট তার পক্ষে রায় দেয়। এ জন্য তাকে পুনর্বহাল করা হয়।’
বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে নিজ বিভাগের ছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠে আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে।
২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে উপাচার্য বরাবর এ অভিযোগ করেন।
সেই আবেদনপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, তার বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান আসাদ ২০১৪ সালের শুরুর দিকে তার সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন এবং নিয়মিত ফোন দিতেন।
পরে শিক্ষকের জোরাজুরিতে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং শিক্ষক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখান।
কিন্তু পরে ওই শিক্ষক তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাচ্ছেন না।
ওই ছাত্রী আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে প্রশাসনের কাছে বিচার দাবি করেন।
বিষয়টি নিয়ে সে সময় জরুরি বৈঠক হয়। এতে আসাদুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সত্যতা মিললে বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। আমি সম্মানের সঙ্গে পদটি ফিরে পেয়েছি। তখন আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছিল, উচ্চ আদালতে সুবিচার পেয়েছি এবং আমি যোগদান করেছি।’
আরও পড়ুন:জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হলগুলোতে আসন সংকট সমাধানের দাবিতে মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে ৪৮ ঘণ্টা ধরে অনশন করছেন এক ছাত্র।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি অনশন শুরু করেন।
ওই ছাত্রের নাম সামিউল ইসলাম প্রত্যয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
তার দাবিগুলো হলো গণরুম বিলুপ্তি, মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রদের হল ত্যাগ এবং গণরুম-মিনি গণরুমে অবস্থান করা বৈধ ছাত্রদের আসন বরাদ্দ দেয়া।
এর আগেও নিজের সিটের দাবিতে হলের অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিলেন ওই ছাত্র। তখন ৪৪৭ নম্বর কক্ষে আসন বরাদ্দ দেয়া হয়।
এদিকে প্রত্যয়ের দ্বিতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। আন্দোলনের পাশাপাশি তিনি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
সামিউল ইসলাম প্রত্যয় বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে প্রশাসনকে এই দাবিগুলো জানিয়ে আসছি। কোনো ফল না পাওয়ায় অনশন করতে বাধ্য হয়েছি।’
এ বিষয়ে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রভোস্ট সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘আমরা তার দাবিগুলো শুনেছি। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তার দাবিগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার বলেন, ‘আমি তার দাবিগুলোর সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সমস্যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রভোস্টসহ হল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা চাই না বিশ্ববিদ্যালয়ে গণরুম থাকুক।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য