× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Also Deoi Oil famous watermelon will go all the way
google_news print-icon

‘আরো দেওই অইলে খ্যাতের তরমুজ সব পইচ্চা যাইবে’

আরো-দেওই-অইলে-খ্যাতের-তরমুজ-সব-পইচ্চা-যাইবে
ভারী বর্ষণে ক্ষেতের তরমুজ নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় বরগুনার চাষিরা। ছবি: নিউজবাংলা
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, ‘ভারী বর্ষণে বরগুনার প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে প্রায় শত কোটি টাকার তরমুজ নষ্ট হতে পারে। তবে বৃষ্টি না বেশিরভাগ তরমুজ রক্ষা করা সম্ভব হবে।’

‘কাইলগো বিয়ালে যেইরহম কলসের কান্দায় দেওই বরছে এই রহম যদি আবারো দেওই নামে তয় মোগো খ্যাতের তরমুজ সব পইচ্যা যাইবে। এই তিনডা মাস দিনেরে দিন রাইতেরে রাইত কই নায়, খালি খ্যাতের পিছে খাটছি। আর কয়ডা দিন গ্যালেও তরমুজ কাইট্টা আডে উডাইতে পারতাম। হঠাত দেওইডা নাইম্মা মোগে সাড়ে সর্বনাশ করছে। এই ক্ষতি ক্যামনে কাডাইয়া উডমু মোরা।’

ভারি বর্ষণে ক্ষেতে পানি জমার পর বরগুনা সদরের এম বালিয়াতলী এলাকার তরমুজ চাষী ফজলুল হক এভাবে হতাশা ব্যক্ত করেন।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বরগুনাসহ উপকূলে টানা তিন ঘণ্টা ভারি বর্ষণ হয়। এতে জেলার সব তরমুজ ক্ষেতেই পানি জমে যায়। সন্ধ্যার পর বৃষ্টি কমলে আটঘাঁট বেঁধে ক্ষেতে নামেন চাষিরা। সেচ পাম্প দিয়ে রাতভর প্রচেষ্টায় ক্ষেতের জলাবদ্ধতা দূরীকরণের চেষ্টা চালান তারা।

বুধবার সকালে বরগুনা সদরের হেউলীবুনিয়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টানা ভারি বর্ষণে তরমুজের ক্ষেতে পানি জমে গেছে। এতে পচন ধরার পাশাপাশি তরমুজ পরিপক্ব হওয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

‘আরো দেওই অইলে খ্যাতের তরমুজ সব পইচ্চা যাইবে’
বরগুনা সদরের হেউলীবুনিয়া এলাকায় ভারী বর্ষণে তরমুজের ক্ষেতে জমে যাওয়া পানি নালা কেটে বের করার চেষ্টায় এক চাষি। ছবি: নিউজবাংলা

তরমুজ চাষী রেজাউল করিম বলেন, ‘মুই প্রায় ১৬০ শতাংশ জমিতে তরমুজ লাগাইছি। দেওইতে সব খ্যাতই তলাইয়া গ্যাছে। কেবল তরমুজটা পোক্ত অইয়া ওডা শুরু হরছেলে। বেডের মাডি ভিজা, এই তরমুজে পঁচন ধইর‌্যা নষ্ট অইয়া যাইতে।’

রেজাউল জানান, ভারী বর্ষণের কারণে ইতোমধ্যে ক্ষেতের ২৫ ভাগ তরমুজ নষ্ট হয়ে গেছে। আরও দু-একদিন বৃষ্টি থাকলে দুই-তৃতীয়াংশ তরমুজ নষ্ট হয়ে যাবে। একই অবস্থা এই এলাকার হাজার হাজার চাষির তরমুজ ক্ষেতের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর বরগুনায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের আশাবাদ ছিল হেক্টরপ্রতি ৪০ টন ফলন হবে।

কৃষি বিভাগের প্রত্যাশা অনুসারে বরগুনায় তরমুজের ফলনও আশানুরূপ হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী, বুড়িরচর, নলটোনা ও সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি তরমুজের আবাদ হয়েছে।

এছাড়া আমতলী উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় তরমুজের আবাদ হয়েছে। ভারি বর্ষণের ফলে ওইসব এলাকার তরমুজ নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, ‘ভারী বর্ষণে বরগুনার প্রায় ১১ হাজার হেক্টর জমির তরমুজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে প্রায় শত কোটি টাকার তরমুজ নষ্ট হতে পারে। তবে বৃষ্টি না বেশিরভাগ তরমুজ রক্ষা করা সম্ভব হবে। আমরা কৃষকদের সেচে সহযোগিতাসহ এ অবস্থায় করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি।’

আরও পড়ুন:
টুকরা করে তরমুজ বেচবে ‘স্বপ্ন’
তরমুজের সেরা ৯ স্বাস্থ্যগত উপকারিতা, জানেন কী

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
India opens and closes sluice gates at will finance adviser

ভারত ইচ্ছেমতো স্লুইস গেট খোলে আর বন্ধ করে: অর্থ উপদেষ্টা

ভারত ইচ্ছেমতো স্লুইস গেট খোলে আর বন্ধ করে: অর্থ উপদেষ্টা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে বক্তব্য দেন। ছবি: সংগৃহীত
ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে পলিটিকাল ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু নদীর পানির হিস্যা নীতি ছিল। ভারতের কোনো যুক্তিই নেই আমাদের পানি না দেয়ার। এটা নিয়ে ভারতকে চাপ দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নিজেদের মধ্যে পলিটিকাল ইস্যু থাকতে পারে, কিন্তু নদীর পানির হিস্যা নীতি ছিল। ভারতের কোনো যুক্তিই নেই আমাদের পানি না দেয়ার। এটা নিয়ে ভারতকে চাপ দিতে হবে।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উজানে যৌথ নদীর পানি প্রত্যাহার: বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ শীর্ষক এই সেমিনারের আয়োজন করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, বাংলাদেশ।

ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ভারতে যখন পানির চাপ থাকে তখন আমাদের এদিকে স্লুইস গেটগুলো খুলে দেয়। আবার ওখানে যখন পানির স্বল্পতা থাকে তখন গেটগুলো বন্ধ করে দেয়।

‘তারা ইচ্ছেমতো এটা করছে। আর সেজন্য আমরা পানি পাচ্ছি না। এতে করে আমাদের চাষাবাদে সমস্যা হচ্ছে। দিন দিন মরুভূমির মতো হয়ে হচ্ছে। গ্রাউন্ড ওয়াটার লেভেল নেমে যাচ্ছে। আমরা আর কত সহ্য করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলো অনেক চ্যালেঞ্জিং। এগুলোতে জনগণের সাপোর্ট প্রয়োজন। শুধু ফারাক্কা নয়; অভিন্ন আরও যে ৫৪টি নদী আছে, সেগুলো থেকে যাতে ন্যায্য হিস্যা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি পায় সেজন্য আমরা কাজ করব।’

আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন নিউ ইয়র্কের আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ টিপু সুলতান, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।

আরও পড়ুন:
চাঁদাবাজের এক দল গেলে আরেক দল আসে: অর্থ উপদেষ্টা
রাঘববোয়ালদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা আরও দৃশ্যমান হবে: অর্থ উপদেষ্টা
হাজার টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সহজে নেয়া যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা
বাংলাদেশে চলমান সব প্রকল্প অব্যাহত রাখবে জাপান: অর্থ উপদেষ্টা
দেশের অর্থনীতির গতি থেমে যায়নি, মন্থর হয়ে আছে: অর্থ উপদেষ্টা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Russia is giving 30 thousand tons of fertilizer to Bangladesh free of cost

বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে ৩০ হাজার টন সার দিচ্ছে রাশিয়া

বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে ৩০ হাজার টন সার দিচ্ছে রাশিয়া সারের স্তূপ করা বস্তা। ছবি: বাসস
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, উরাচেম গ্রুপ বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বন্ধুত্ব ও গভীর আন্তরিকতার নিদর্শন হিসেবে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে এ সার দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে ৩০ হাজার টন পটাশ সার দেবে রাশিয়া।

দেশটির উরাচেম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী দিমিত্রি কনিয়েভ স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে কৃষি মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, উরাচেম গ্রুপ বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির আওতায় বন্ধুত্ব ও গভীর আন্তরিকতার নিদর্শন হিসেবে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বাংলাদেশকে এ সার দেবে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

ঢাকায় রুশ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত একেতেরিনা সেমেনোভা বুধবার এ সংক্রান্ত একটি চিঠি কৃষি উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর কাছে হস্তান্তর করেন।

ওই চিঠির উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাশিয়ার পিজেএসসি ইউরালকালি বিশ্বের মধ্যে অন্যতম পটাশ সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সাল থেকে পিজেএসসি ইউরালকালি জিটুজি ভিত্তিতে জেএসসি বৈদেশিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এক মিলিয়ন টনেরও বেশি এমওপি সার সরবরাহ করে।

আরও পড়ুন:
হত্যাচেষ্টা মামলায় শমী কায়সার তিনদিনের রিমান্ডে
শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে আরও ৫৮ ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি
নির্বাচন কমিশন গঠনে ৭ নভেম্বরের মধ্যে নাম আহ্বান
‘ইসি গঠনে সৎ, যোগ্য ও দক্ষদের নাম অগ্রাধিকার পাবে’
নির্বাচন কমিশন গঠনে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি 

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Special train for agricultural products from Chapainawabganj suspended

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিশেষ ট্রেন স্থগিত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিজাত পণ্যের জন্য বিশেষ ট্রেন স্থগিত কৃষিপণ্য নিয়ে গত ২৬ অক্টোবর থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। ছবি: ইউএনবি
ট্রেনটির প্রতি শনিবার কৃষিপণ্য পরিবহন করার কথা ছিল। ঢাকার তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছানোর আগে নাচোল ও আমনুরা জংশনসহ ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করার কথা ছিল।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কৃষিপণ্য কম খরচে ঢাকায় পরিবহনের লক্ষ্যে চালু করা বিশেষ ট্রেন স্থগিত করা হয়েছে।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপক সুজিত কুমার বিশ্বাস জানান, শুক্রবার রাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করে।

গত ২৬ অক্টোবর থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

ট্রেনটির প্রতি শনিবার কৃষিপণ্য পরিবহন করার কথা ছিল। ঢাকার তেজগাঁও স্টেশনে পৌঁছানোর আগে নাচোল ও আমনুরা জংশনসহ ১৩টি স্টেশনে যাত্রাবিরতি করার কথা ছিল।

প্রথম দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্টেশন থেকে কোনো ধরনের কৃষিপণ্য ছাড়াই ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় বিশেষ ট্রেনটি।

বিশেষ ট্রেন চালুর পর চাষিদের কাছ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি জানিয়ে সুজিত বলেন, ‘তারা ট্রেনে করে কৃষিপণ্য পরিবহনে আগ্রহী নয়। কর্তৃপক্ষ এটি স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
ছিনতাইয়ের অভিযোগে দুজনকে পিটিয়ে হত্যা
ট্রেনের সময়সূচিতে বিপর্যয় কাটেনি, ২ ট্রেনের যাত্রা বাতিল
১১ ঘণ্টা পর খুলনার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
সাড়ে ৮ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল শুরু
চলন্ত ট্রেন থেকে ইঞ্জিন বিচ্ছিন্ন, ভয়াবহ দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Livestock advisor calls for egg to be declared essential food

ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য ঘোষণার আহ্বান প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার

ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য ঘোষণার আহ্বান প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টার রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) শুক্রবার দুপুরে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। ছবি: ইউএনবি
ডিমের উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। ‘সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ডিমকে অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য হিসেবে ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ডিম সহজলভ্যতার দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ডিম প্রাপ্যতার কোনো বৈষম্য থাকবে না। সব শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে যাদের ডিম বেশি দরকার, তাদের জন্য তা সরবরাহ করতে হবে।

তিনি জানান, ডিমের মূল্য কমাতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে (কেআইবি) শুক্রবার দুপুরে বিশ্ব ডিম দিবস-২০২৪ আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

ডিমের উৎপাদন বাড়াতে গ্রামের নারীদের হাঁস-মুরগি পালনে উৎসাহিত করতে আহ্বান জানিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, ‘আগে গ্রামীণ নারীরা হাঁস-মুরগি পালন করতেন। গ্রামেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। এতে তারা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখতে পারতেন। ‘সেই অবস্থা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। এ জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে হবে।’

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বছরের আশ্বিন-কার্তিক মাসে সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় ডিমের চাহিদা বাড়ে। ডিম সাধারণ খামারি থেকে কয়েক দফা হাত বদল হয়ে ভোক্তার কাছে যায়। এ কারণেই ডিমের দাম বেড়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘এ জন্য উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত সরাসরি কীভাবে ডিম পৌঁছানো যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। এ ছাড়া রমজানে ডিমের ব্যবহার কমে যায়।

‘তাই মজুত নয়, চাহিদার আলোকে আমাদের কোল্ডস্টোরেজ করার চিন্তা করতে হবে। বন্যার কারণে দেশের অনেক খামার নষ্ট হয়েছে। এসব খামার উৎপাদনে যেতে কিছুটা সময় লাগছে। সব মিলিয়ে সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।’

সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের মূল্য বাড়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয় নিয়ে কাজ করছে সরকার। বাজারে নিয়মিত অভিযান চলছে। পাইকারিতে কিছুটা দাম কমেছে। দ্রুতই দাম নাগালে আসবে।’

আরও পড়ুন:
শেখ হা‌সিনা ভারতে না অন্য কোথাও, জানে না সরকার
পূজার নিরাপত্তা নিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে উস্কানিমূলক খবর প্রচার হচ্ছে
সাত প্রতিষ্ঠানকে সাড়ে ৪ কোটি ডিম আমদানির অনুমতি
অংশীজনের পরামর্শের ভিত্তিতে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন: তথ্য উপদেষ্টা
সরকার বিদেশি অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Floods Crop loss of Rs 500 crore in Sherpur leaves farmers distraught

বন্যা: শেরপুরে ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক

বন্যা: শেরপুরে ৫০০ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি, দিশেহারা কৃষক শেরপুরে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়া ফসলের মাঠ। ছবি: নিউজবাংলা
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, ‘এবারের বন্যায় প্রায় দুই লাখ কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।  ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের সার-বীজ দেয়া হবে। এ ছাড়া কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।’

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় শেরপুরের পাঁচ উপজেলায় ৫০০ কোটি টাকার বেশি ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

জেলায় ফসল হারিয়ে দিশেহারা কৃষকরা। সরকারি সহযোগিতা ছাড়া ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।

প্রতি বছর শেরপুর জেলা খাদ্যে উদ্বৃত্ত হলেও এবার খাদ্য ঘাটতি হবে বলে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে শেরপুরের মানুষ। এবারের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়ক, বাড়িঘর, প্রাণিসম্পদ ও ফসলি জমি, তবে এখনও পানিবন্দি রয়েছে নিম্নাঞ্চলের অনেক পরিবার।

জেলায় দুর্ভোগে রয়েছেন পানিবন্দি এলাকার মানুষজন। খাদ্য উদ্বৃত্তের এ জেলার কৃষকরা এবার অর্ধেক ফসলও উৎপাদন করতে পারবে না।

অনেক কৃষকের দাবি, তার ঋণ নিয়ে আবাদ করেছেন। এখন সে ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঝিনাইগাতীর কৃষক আমনচাষি কবির বলেন, ‘ঋণ নিয়ে আবাদ করছি। এহন তো সব শেষ। ঋণই বা কেমনে দিমু আর এ বছর পোলাপান নিয়া চলমু কেমনে।’

ঝুলগাঁওয়ের আমিনুল বলেন, ‘আবাদ তো করছি কর্জ কইরা। এহন পানির বিল কেমনে দিমু? ধান বেইচ্চা দেয়ার কথা আছিল।’

দড়িকালীনগর গ্রামের রমিজ মিয়া বলেন, ‘চড়া সুদে ঋণ নিয়া ৫০ বিঘা জমিতে আবাদ করছিলাম। ৮৮ সালের পর এত ভয়াবহ বন্যা আমরা কখনো দেহি নাই।

‘সব ধান শেষ আমার। এক ছটাক ধান বাড়ি নিয়া যাবার পামু না। আর ঋণ তো এহন বোঝা। কেমনে কী করি, আল্লাহ জানে।’

জেলার প্রায় এক হাজার হেক্টর জমির সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গরজরিপাড়ের হামিদুল বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়া শিম লাগাইছিলাম। বানের পানি সব শেষ করে দিছে।’

ধার-কর্জের মূলধন সব হারিয়ে দিশেহারা বলে জানান তিনি।

ঝুলগাঁওয়ের সামাদ মিয়া বলেন, ‘লাউ লাগাইছিলাম ৪ কাঠা জমিনে। সব পানির নিচে। আমরা সরকারি সহযোগিতা চাই। তা না হলে আর বাঁচন নাই।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় এবার প্রায় ৯২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছিল। বন্যায় রোপা-আমন, সবজি ও আধা চাষে ৩২ হাজার ১৫৭ হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এবার ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬ টন চাল। ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৯১০ টন ধানক্ষেতের। জেলায় সব মিলিয়ে ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, ‘অতি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চলতি আমন আবাদের ৪৭ হাজার হেক্টর জমির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর সবজি আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার হেক্টর, তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। বন্যার পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপণ সম্ভব হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এবারের বন্যায় প্রায় দুই লাখ কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে তাদের সার-বীজ দেয়া হবে। এ ছাড়া কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হবে।’

আরও পড়ুন:
বন্যা: শেরপুরে গবাদি পশুর খাদ্য সংকট
বন্যা: শেরপুরে ভেসে গেছে ৭১ কোটি টাকার মাছ
শেরপুরে বন্যার্তদের পাশে সেনাবাহিনী
শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কমেনি দুর্ভোগ
বন্যা: শেরপুরে প্রাণহানি বেড়ে ৭, পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ

মন্তব্য

বাংলাদেশ
In Meherpur 4 days of rain caused crop damage of about 5 thousand hectares 

মেহেরপুরে ৪ দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি 

মেহেরপুরে ৪ দিনের বৃষ্টিতে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি  মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ছাতিয়ান মাঠে বৃষ্টিতে ফসলের অবস্থা। কোলাজ: নিউজবাংলা
গাংনী উপজেলার কৃষক মামুন আলী বলেন, ‘আমার চার বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ ছিল। গাছগুলো থেকে কেবল সপ্তাহখানেক হবে মরিচ সংগ্রহ করা শুরু করেছি। এমন সময় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গাছের গোড়া সব ডুবে গেছে।’

মেহেরপুরে টানা চার দিন বৃষ্টি শেষে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহওয়ায় দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়া মাঠের ফসল।

জেলায় অনেক ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। পানি কমে যাওয়ায় বতর্মানে দেখা মিলেছে জমিতে থাকা ফসলের, যার অধিকাংশই নষ্ট হয়ে গেছে।

বৃষ্টিতে জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উঠতি সবজির।

কৃষকরা জমি থেকে পানি বের করে, কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ফসল রক্ষার্থে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তেমন একটা সুফল মিলছে না।

মেহেরপুরের তিনটি উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পানিতে নুয়ে পড়েছে ধানক্ষেত, ভেঙে পড়েছে কলা, পেঁপে, করলা, চিচিঙ্গা, শসা, ওল, লাউয়ের গাছ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাঁচামরিচ, মাসকলাই ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের।

কৃষকদের ভাষ্য, উঠতি বাঁধাকপি, ফুলকপি, মরিচের ক্ষেত থেকে পানি নেমে গেলেও রোদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পচন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। এ সবজিগুলো আর ঘরে উত্তোলন করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। এতে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

জমি থেকে পানি বের করে কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করে ফসল বাঁচানোর চেষ্টা করছেন অধিকাংশ কৃষক। তারপরও চিন্তার ভাঁজ তাদের কপালে।

কৃষকরা ফসল বাঁচাতে কতটুকু সফল হবেন, তা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। আবার রয়েছে ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা।

জেলা কৃষি বিভাগের প্রাথমিক ধারণা, মেহেরপুর জেলায় ৪২ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে চার হাজার ৮৭২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গাংনী উপজেলার কৃষক মামুন আলী বলেন, ‘আমার চার বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ ছিল। গাছগুলো থেকে কেবল সপ্তাহখানেক হবে মরিচ সংগ্রহ করা শুরু করেছি। এমন সময় টানা চার দিনের বৃষ্টিতে জমিতে পানি জমে গাছের গোড়া সব ডুবে গেছে।

‘আর গত দুই দিন বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে ঠিকই, তবে জমির অধিকাংশ গাছ মরে যেতে শুরু করেছে। এখন যে অবস্থা জমির তিন ভাগ গাছ মরে যাবে।’

আরেক কৃষক আবদুস সালাম বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছিলাম। সপ্তাহ দেড়েকের মধ‍্যেই কপি বাজারে তুলতে পারতাম। অথচ টানা বৃষ্টিতে কপির জমিতে পানি জমে যাওয়ায় সব গাছ নিস্তেজ হয়ে মরতে শুরু করেছে।’

কলাচাষি কামাল হোসেন বলেন, ‘আমার চাষিদের কাছ থেকে ২০ বিঘা কলার বাগান কেনা আছে। টানা চার দিনের বৃষ্টির সাথে বাতাস থাকায় গাছের গোড়া নরম হয়ে বাতাসে সব গাছ নুয়ে পড়েছে মাটিতে। ফলে এ বছর লোকসানে পড়তে হবে।’

ধানচাষি গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি ধান কেটে জমিতেই সারিবদ্ধ করে রাখছিলাম। জমির অর্ধেক ধান কাটা হয়েছে। এমন সময় শুরু হয় বৃষ্টি, যা চলে টানা চার দিন।

‘জমিতে পানি জমায় সব ধান তলিয়ে যায়। এখন পানি নামলেও ধানের সব গাছ বের হয়ে গেছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মেহেরপুর জেলার উপপরিচালক বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, দুই-তিন দিন পর ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হবে।

জমি থেকে পানি বের করে দেয়ার পরামর্শের পাশাপাশি এ সময়ে ক্ষেতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ না করার পরামর্শ এ কর্মকর্তার।

এ অঞ্চলের আবহওয়ার তথ‍্য নির্ণয়কারী চুয়াডাঙ্গা আবহওয়া অফিসের কর্মকর্তা রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘এ অঞ্চলে বিগত চার দিনে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৩৮ মিলিমিটার, তবে আগামী দুই-এক দিনে আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।’

আরও পড়ুন:
দেশের কোথাও কোথাও অতি ভারি বৃষ্টির আভাস
বৃষ্টি: কক্সবাজারে তিন মরদেহ উদ্ধার, ৭০ জেলে নিখোঁজ
গাংনীতে সাপের দংশনে স্কুলছাত্রের মৃত্যু 
হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে সব বিভাগে
ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টি হতে পারে ৬ বিভাগে

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Gomra village of Kankrol

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’ ঝিনাইগাতির গোমড়া গ্রাম জুড়ে কাঁকরোল বাগানের সবুজ সৌন্দর্য। ছবি: নিউজবাংলা
ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

নানা ধরনের সবজির মধ্যে বিশেষ একটি জায়গা দখল করে আছে ‘কাঁকরোল’। আর ব্যাপকভাবে এই সবজির চাষ হচ্ছে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার পাহাড়ি গ্রাম গোমড়ায়। গ্রামটিতে বসবাসকারী সবাই বিভিন্ন সবজির আবাদ করেন, যার মধ্যে কাঁকরোল অন্যতম। তাই গোমড়া গ্রামটি এখন ‘কাঁকরোল গ্রাম’ নামে পরিচিতি পেয়েছে।

ভারতের মেঘালয় রাজ্যঘেঁষা গারো পাহাড়ের জেলা শেরপুর। এখানে ঝিনাইগাতী উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের একটি গ্রাম ‘গোমড়া’। এই গ্রামের চারশ’ একর জমিতে প্রায় ১২শ’ কৃষক কাঁকরোল চাষকে তাদের জীবিকার অবলম্বন হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

সরজমিনে জানা যায়, এই এলাকায় কয়েক বছর আগেও পানি ও বিদুতের অভাবে বহু জমি পতিত ছিলো। এখন এ দুটি সুবিধা পাওয়ায় আর পতিত পড়ে থাকছে না এসব জমি। কৃষি বিভাগের সহায়তা ও পরামর্শে গ্রামের প্রায় সবাই নিজের কিংবা অন্যের জমি বর্গা নিয়ে মৌসুমী সবজি চাষ করছেন।

শরৎ ঋতুর এই সময়টাতে পুরো এলাকার সবজির ক্ষেত কাঁকরোলে ছেয়ে গেছে। যদিও এসব ক্ষেতে গরম ও শীতের আগাম সবজি বেশি আবাদ করেন স্থানীয়রা। এখানকার উৎপাদিত সবজির মান ভালো হওয়ায় স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে।

গোমড়া গ্রামের কৃষি উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে এই এলাকায় পানির জন্য প্রায় সব জমিই পতিত থাকতো। কিন্তু এখন বিদ্যুৎ আসায় পানি সমস্যার সমাধান হয়েছে। আবাদের আওতায় এসেছে অনেক জমি।

‘আমরা মৌসুমভিত্তিক সবজির আবাদ করে থাকি। আমরা এখন সবজির মধ্যে কাঁকরোল লাগিয়েছি। সবজি আবাদ করে এলাকার কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।’

কৃষক হরমুজ আলী বলেন, ‘এটা পাহাড়ি এলাকা। এই এলাকায় আমরা সবজির আবাদই করি। আমি ৫০ শতাংশ জমিতে কাঁকরোল লাগাইছি। আমি এবার কাঁকরোল বিক্রি করে অনেকটা লাভবান হয়েছি। পোলাপানের লেখাপড়ার খরচ চালাচ্ছি। পাঁচ সদস্যের সংসার চলছে এই সবজি আবাদ করেই।’

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা পাহাড়ের মানুষ। আগে কী যে কষ্ট করছি! মানষের জমিতে সারাদিন কাম করে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাইছি। কোনো কোনোদিন কামও পাইতাম না। এই টাকা নিয়া বাজার করবার গেলে কষ্ট হইছে। এখন বাড়ির পাশে রহমত ভাইয়ের জমিন বাগি (বর্গা) নিয়া শুরু করছি কাঁকরোলের চাষ। এখন আল্লাহর রহমতে নিজেরা ভালা আছি।’

তবে স্থানীয় চাষিদের অভিযোগ রয়েছে গ্রামের রাস্তা-ঘাট কাঁচা নিয়ে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

কৃষক হারুন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এদিকে কাঁচা রাস্তা হওয়ায় আমরা সবজি বাজারে তুলতে পারি না। নিলেও খরচ অনেক পড়ে যাওয়ায় লাভ কম হয়। সময়মতো বাজারে না নেয়ায় সঠিক দামও পাই না। আমরা কৃষকরা অবহেলিত।’

কৃষক খাইরুল বলেন, ‘এই এলাকার গ্রামীণ রাস্তাগুলো পাকা করলে আমাদের খুব উপকার হবে। আমরা কৃষকরা সবজি আবাদ করে দামটা বেশি পাইতাম। খারাপ রাস্তায় সব গাড়ি সহজে আসবার চায় না। আসলেও ভাড়া বেশি পইড়া যায়। এজন্য লাভটা কম হয়।’

যেভাবে চাষ

কাঁকরোলের বীজ কাঁকরোল গাছের নিচে হয়ে থাকে, যা দেখতে মিষ্টি আলুর মতো। মার্চ ও এপ্রিলে এই সবজির চাষ করা হয়। চারা গজানোর ৯০ থেকে ১০০ দিনের মধ্যেই এর ফলন পাওয়া সম্ভব। কাঁকরোল লতানো গাছ। স্ত্রী ফুল ও পুরুষ ফুল একই গাছে হয় না। তাই বাগানে দু’ধরনের গাছ না থাকলে পরাগায়ন ও ফলন কম হয়।

চাষে খরচ ও লাভ কেমন

কৃষকেরা বলছেন, কাঁকরোল চাষে বিঘাপ্রতি খরচ পড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় খরচ লাখ টাকার উপরে লাভ হয়ে থাকে।

কাঁকরোলের উপকারিতা

কাঁকরোল অত্যন্ত পুষ্টিকর সবজি৷ এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ক্যালসিয়াম, লৌহ, ফসফরাস, ক্যারোটিন, আমিষ, ভিটামিন এ, বি ও সি এবং খনিজ পদার্থ রয়েছে৷ কাঁকরোলে ভিটামিন সি থাকায় শরীরের টক্সিন দূর করে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

কাঁকরোলে আছে বিটা ক্যারোটিন ও আলফা ক্যারোটিন, যা ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না; ত্বককে করে উজ্জ্বল। এছাড়া কাঁকরোলের ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

কাঁকরোলের গ্রাম ঝিনাইগাতীর ‘গোমড়া’

ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হুমায়ুন দিলদার জানান, পাহাড়ের পাদদেশে কাঁকরোলের পাশাপাশি বিভিন্ন রকমের সবজির আবাদ হয়ে থাকে। সবজি চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এই সবজি কৃষক সরাসরি ঢাকার বাজারে পাঠাচ্ছে। সবজির মান ভালো হওয়ায় কৃষক দামও পাচ্ছে ভালো।

‘আমি মনে করি অন্যান্য কৃষি উদ্যোক্তা জমি ফেলে না রেখে মৌসুমভিত্তিক সবজি আবাদ করলে অবশ্যই লাভবান হবে। এ বছর এই উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে কাঁকরোলের আবাদ হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বঙ্গবন্ধু-১০০ জাতসহ উফশী চার ধানে নতুন সম্ভাবনা
পেঁয়াজ কেন আমদানি করতে হয়, জানালেন কৃষিমন্ত্রী
তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টিতে পঞ্চগড়ে মরিচচাষীদের স্বপ্নভঙ্গের শঙ্কা
দাবদাহ বাড়াচ্ছে পানির সংকট, আম-লিচু চাষিদের মাথায় হাত
বোরো উৎসবে মেতেছে কুমিল্লা

মন্তব্য

p
উপরে