বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও প্রসারে জাতিসংঘের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে সরকার।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তার্ক-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তার অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন।
সরকারের কার্যকর উদ্যোগের ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার অনেক কমেছে বলে আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার এই আইনের অপব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে সজাগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এ সংক্রান্ত আইনের গুড প্রাকটিস নিয়ে সরকার আলোচনা করছে। আইনটি নিয়ে সরকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও পরামর্শ করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি প্রস্তাবিত আইনের একটি খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। আইনটি নিয়ে সরকার অংশীজনদের নিয়ে পরামর্শ করছে।
বৈঠকে হাইকমিশনার জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের পঁচাত্তর বছরপূর্তি উপলক্ষে তার অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
আইনমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা সফল করতে জাতিসংঘের অধিকতর শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
বৈঠকে জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয় সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনড় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সেদেশের কংগ্রেসের ছয় সদস্যের চিঠি দেয়ার বিষয়টিও হোয়াইট হাউস অবগত।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের (এনএসসি) স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন্সের পরিচালক অ্যাডমিরাল জন কিরবি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারাইন জ্যাঁ পিয়ের সংবাদ সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল- “বাংলাদেশে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘন’ বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে চিঠি দিয়ে ছয় কংগ্রেসম্যান অনুরোধ করেছেন। দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বানও জানানো হয়েছে সেখানে। পাশাপাশি ওই চিঠিতে বাংলাদেশের জনগণকে অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচনের জন্য সম্ভাব্য সর্বোত্তম সুযোগ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?”
জবাবে জন কিরবি বলেন, ‘আমরা আমাদের অবস্থানে অনড় এবং এই যোগাযাযোগের (চিঠি পাঠানো) বিষয়েও আমি অবগত। বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার লক্ষ্যে আমরা অনড় অবস্থানেই আছি।
‘এই দায়বদ্ধতা থেকেই সম্প্রতি পররাষ্ট্র দপ্তর ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের (অবাধ ও সুষ্ঠু) নির্বাচন আয়োজনে বাধাদানকারীদের ভিসা দেয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস সদস্য বব উড ২ জুন নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ২৫ মে লেখা চিঠিটিসহ একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে লেখা ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী বাকি কংগ্রেস সদস্যরা হলেন- স্কট পেরি, ব্যারি মুর, টিম বারচেট, ওয়ারেন ডেভিডসন এবং কিথ সেল্ফ। তারা সবাই বিরোধী রিপাবলিকান পার্টির সদস্য।
চিঠিতে বাংলাদেশকে অবাধ নির্বাচনের একটি সর্বোত্তম সুযোগ করে দেয়ার জন্য কঠোর ব্যক্তিগত নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সেনাদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়।
চিঠিটির বিষয়ে সোমবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে ছয় কংগ্রেসম্যান চিঠি দিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলবে সরকার।
তিনি বলেন, ‘এরকম চিঠি অতীতেও এসেছে, ভবিষ্যতে আরও বড় আকারে আসতে পারে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে এ ধরনের কার্যক্রম তত বাড়তে থাকবে।’
বিভিন্ন লবিস্ট ফার্ম বা শক্তির কাজ করার বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তারা তাদের কাজ করবে, আমরা আমাদের কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেন- বাংলাদেশের মানুষ আমাদের শক্তি।’
আরও পড়ুন:গত কয়েকদিন থেকে সারা দেশে বয়ে চলেছে তীব্র দাবদাহ। সূর্য ওঠার পর থেকেই বাইরে বের হওয়া বা কাজ করা এক প্রকার দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। রাতেও তাপ কমার আভাস নেই।
গরমে অতিষ্ঠ হয়ে বৃষ্টির জন্য বিশেষ প্রার্থনা করছে দেশের বিভিন্ন জেলার মানুষ। এমনকি নেচে-গেয়েও বৃষ্টির কামনা করার খবর এসেছে গণমাধ্যমে। কিন্তু, কবে নামবে স্বস্তির বৃষ্টি? কবে থেকে কমবে গরম এ বিষয়ে সবাই জানতে উদগ্রীব।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আরও অন্তত পাঁচ থেকে ছয়দিন থাকতে পারে তাপপ্রবাহ। তাছাড়া বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে আগামী দিনগুলোতে আরও বেশি ভ্যাপসা গরম অনুভূত হতে পারে।
সারাদেশে আজ দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানায়, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসমূহ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যহত থাকতে পারে।
আজ সকাল থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরও বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। পরবর্তী তিন দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বলা হয়েছে, এ সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।
ঢাকায় আজ দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘন্টায় ৮ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। সকালে ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ।
ঢাকায় আজ সূর্যাস্ত সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় হবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে।
আরও পড়ুন:দেশের সব কারাগারে শূন্যপদে এক মাসের মধ্যে চিকিৎসক নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
আদালত বলেছে, কারাগারে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই গরিব। এজন্য কারাগারে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে এই গরিব মানুষগুলোকে বাঁচান।
আদালত বলেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করবেন না। মানুষের সেবার জন্য ক্ষমতা ব্যবহার করুন।
মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানিকালে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জে আর খান রবিন। আর কারা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রথমে আদালত জানতে চায় কারাগারে কতজন ডাক্তার নিয়োগ হয়েছে। জবাবে কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, ১২৫ জন।
আদালত বলে, এই ১২৫ জন দিয়ে বাদ বাকি কীভাবে কাভার করছেন? কারা অধিদপ্তরের আইনজীবী জানান, কাজ চলছে।
এ সময় আদালত বলে, কত বছর লাগবে? ডাক্তারের তো অভাব নেই। নিয়োগ দেন না কেন? কেন্দ্রীয় কারাগারেই দিচ্ছেন না, তাহলে জেলা কারাগারের অবস্থা তো আরও খারাপ বলে মন্তব্য করে আদালত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা থেকে আপনারা বের হতে পারছেন না। এটা যে স্বাধীন দেশ তা মনেই হয় না। শুধু চিঠি চালাচালি করছেন। ক্ষমতা অপব্যবহার করার জন্য না, মানুষের সেবা করার জন্য। কারাগারে গরিব মানুষ থাকে, ধনীরা থাকলেও ডিভিশন পান অনেকেই। গরিব মানুষদের বাঁচান।
পরে আদালত কারা অধিদপ্তরের আইনজীবীর উদ্দেশে বলে, ‘আমরা এক মাস পর তারিখ রাখছি। আপনি রিকুইজিশন দেবেন।’
এরপর আদালত শুনানি মুলতবি করে।
আরও পড়ুন:টানা তাপপ্রবাহে অস্বস্তিতে মানুষ। সঙ্গে যোগ দিয়েছে লোডশেডিং। ঘরে-বাইরে গরমের দাপট। কোথাও বসে থাকলেও শরীর দিয়ে বেয়ে পড়ছে ঘাম। এই দুর্বিষহ অবস্থা থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেতে এখন আকাশের দিতে তাকিয়ে আছে সবাই।
তবে এ আশা ভঙ্গ করে দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টির ফোঁটা হয়তো পড়বে। কিন্তু গরম এতে কমবে না। বরং রাতের দিকে গরম আরও বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার সকাল ৯ থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন তথ্য দিয়েছে অধিদপ্তর।
অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এতে বলা হয়, রাজশাহী ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও বরিশাল বিভাগসহ এবং রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে জানিয়ে আবাহওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।
মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই সময়ের মধ্যে রাঙ্গামাটিতে বৃষ্টি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৪ মিলি মিটার।
আরও পড়ুন:সিটি করপোরেশনের কাজে অনিয়ম, অবৈধ সম্পদ ও দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) হাজির হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে দুদক কার্যালয়ে আসেন তিনি।
দুদকের সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান জানান, সকাল ১০টার আগেই জাহাঙ্গীরের একজন আইনজীবী দুদক কার্যালয়ে আসেন। এরপর তিনি এসে হাজির হন।
ভুয়া ব্যাংক হিসাবে অবৈধ লেনদেন, বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে জাহাঙ্গীর আলমকে গত ১৬ মে নোটিশ দেয় দুদক। এ ছাড়া আলাদা নোটিশে ২১ ও ২২ মে হাজির হয়ে বক্তব্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন দুদকের উপ-পরিচালক ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা মো. আলী আকবর।
গত ১৮ মে দুদকের তলবে হাজির হতে এক মাস সময় চেয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করেন জাহাঙ্গীর আলম। এ বিষয়ে কোনো জবাব না পেয়ে ২১ মে দুদকে উপস্থিত হয়ে সময় চাওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে আসেন তিনি। পরে দুদক তাকে চলতি মাসের ৬ ও ৭ তারিখ দুদকে হাজির হয়ে বক্তব্য দিতে বলে।
চলমান লোডশেডিং কেন হচ্ছে তার কারণ ও ব্যাখ্যা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সোমবার এক পোস্টে তিনি এসব কথা জানান।
পোস্টে তিনি বলেছেন, তীব্র গরম এবং সেইসাথে লোডশেডিংয়ের কারণে সবার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কারোরই কাম্য নয়। অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের পেছনে বেশকিছু কারণ আছে, যা সবার জানা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের অজানা নয়, করোনা মহামারির ধাক্কা, পরবর্তীতে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্ব জ্বালানি বাজারে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাস, কয়লা, ফার্নেস অয়েলসহ সকল প্রকার জ্বালানির মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়, সেইসাথে প্রাপ্যতা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। যে সংকট এখনও চলমান।
‘অন্যদিকে, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বেড়েছে লাগামহীনভাবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রাথমিক জ্বালানি যথা গ্যাস, কয়লা ও ফার্নেস অয়েল আমদানিতে অনেকটা প্রভাব পড়েছে। ফলশ্রুতিতে বর্তমানের এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিং।’
‘তবে আমরা খুব দ্রুতই জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করছি’ বলে পোস্টে জানান তিনি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে দিনরাত পরিশ্রম করে আমরা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ২০০৮ সালেও দেশের মাত্র ৪৪ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেতেন, সেখানে আজ শতভাগ জনগোষ্ঠী বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে যা, বিশেষ করে, দক্ষিণ এশিয়ায় নজিরবিহীন ঘটনা।
‘শতভাগ বিদ্যুতায়নের ফলে জাতীয় অর্থনীতি ও সকল ধরনের উৎপাদনে অভাবনীয় গতি এসেছে। এতে দেশজুড়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বিগত এক যুগে আমরা দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়েছি ৫ গুণেরও বেশি।
‘বর্তমানে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭,৩৬১ মেগাওয়াট (ক্যাপটিভসহ)। ফলে উৎপাদন সক্ষমতার দিক থেকে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারের নজিরবিহীন উর্ধ্বগতির কারণেই আমরা এই অনাকাঙ্ক্ষিত লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছি।’
পোস্টে তিনি সর্বোপরি জনগণের ভোগান্তিতে দুঃখ প্রকাশ করেন। সে সঙ্গে তিনি এ পরিস্থিতি সাময়িক, খুব দ্রুতই আমরা ভালো অবস্থায় ফিরে আসবো বলে আশ্বস্ত করেন।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘২০০৮ সালের আগে সারা দেশে দিনে ১৬-১৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকত না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেই কঠিন সময় পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশ স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিদ্যুৎ খাতের ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।’
‘আশা করি আপনাদের সেই আস্থা ও সমর্থন অব্যাহত থাকবে। সবাই মিলে আমরা দ্রুততম সময়ে এই ভোগান্তি পাড়ি দিতে সমর্থ হবো’, জানান প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:আগামী নির্বাচন চ্যালেঞ্জের হবে মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের সেভাবে প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচনটা একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ নানা ধরনের চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র হয়।
সোমবার গণভবনে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের জীবন যখন একটু উন্নত হয়, তখনই এ দেশের কিছু কুলাঙ্গার দেশের বিরুদ্ধে সব জায়গায় বদনাম করে বেড়ায়, মিথ্যা বলে বেড়ায়। আর কিছু আছে বিদেশি অনুদানের টাকা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দেয়।
‘যারা আমাদের স্বাধীনতায় বিশ্বাসই করেনি, যারা গণহত্যা চালিয়েছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ ও নির্যাতন করেছে- তারা আছে, তাদের আওলাদ আছে; তারা সারাক্ষণ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেই যাচ্ছে। যারা স্বাধীনতার সময় আমাদের সমর্থন করেনি তাদের সঙ্গেই তাদের সব আত্মীয়তা। এটা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক।’
নির্বাচনে কারচুপি করা বিএনপির অভ্যাস মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ভোট চুরি করা তাদের রেকর্ড। গণতন্ত্র হরণ করা তাদের রেকর্ড। ওদের মুখেই এখন আবার আমরা গণতন্ত্র শুনি!
যারা মিলিটারি ডিক্টেটরের হাতে তৈরি দল, তাদের কাছে গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়। তাদের কাছে ভোটের কথা শুনতে হয়। চুরি করা যাদের অভ্যস, সেই চোরদের কাছ থেকে বাংলাদেশের জনগণ কী শুনবে, কী দেখবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ সালের নির্বাচনেও তো কম কারচুপি হয়নি। ১৯৯৬ সালে এই খালেদা জিয়াকেই বাংলাদেশের মানুষ ভোট চুরির অপরাধে বিতাড়িত করেছে। আবার ২০০৬ সালে নির্বাচনে ১ কোটি ২৩ কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোট চুরি করতে গেছে। তখনও জনগণের আন্দোলনেই তাদের বিদায় নিতে হয়েছে।’
আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়ে দলটির প্রধান বলেন, ‘আমাদের সংগঠন যথেষ্ট শক্তিশালী। সংগঠনটা যেন আরও মজবুত থাকে সে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ত্যাগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দিনের পর দিন কারাবরণ, অত্যাচার-নির্যাতন, তারপর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধ করে যুদ্ধাহত হয়ে বাংলাদেশের পুনর্গঠন কাজ- এখানে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের যথেষ্ট অবদান রয়েছে।’
বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেন, আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার চেষ্টা, স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলা, জয় বাংলা মুছে ফেলা, বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ইতিহাস মুছে ফেলা- অনেক অপকর্মই করা হয়েছে। আসলে সত্য এক সময় না এক সময় উদ্ভাসিত হবেই। সত্য কেউ মুছে ফেলতে পারে না। আজকে সেটাই হয়ে গেছে।
‘৭ই মার্চের ভাষণ আন্তর্জাতিক মর্যাদা পেয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে। জয় বাংলা স্লোগান আবার ফিরে এসেছে।’
বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে এটুকু করতে পেরেছি এই ১৪ বছরে। ২০০৮ এ সরকারে আসার পর একটানা ক্ষমতায় থাকার ফলে দেশে স্থিতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশ আছে বলেই বাংলাদেশের এই উন্নতিটা সম্ভব হয়েছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের তৈরি হতে হবে, এগিয়ে যেতে হবে। এটাকে আমাদের স্থায়ী করতে হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমার শক্তিশালী সংগঠন আছে। সংগঠনের শক্তিশালী নীতিমালা আছে। আমাদের একটা লক্ষ্য আছে, একটা পরিকল্পনা আছে। সুষ্ঠু পরিকল্পনা নিয়ে, জনগণকে নিয়ে উন্নয়নের কাজ করি বলেই আমরা সাফল্য আনতে পেরেছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য