র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও র্যাব মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে র্যাব মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারের দরবারে বীরত্বপূর্ণ ও সেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ র্যাব মহাপরিচালক পদক পেয়েছেন ৮৫ সদস্য।
বিশেষ সম্মাননা (সাহসিকতা) ৩৫ জন ও বিশেষ সম্মাননা (সেবা) পুরস্কার পেয়েছেন ৫০ র্যাব সদস্য।
উত্তরা কুর্মিটোলাস্থ র্যাব সদর দপ্তরের শহীদ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে সোমবার আভিযানিক কার্যক্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের পদক পরিয়ে দেন মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন।
এর আগে তিনি শহীদ র্যাব সদস্যদের স্মৃতি স্মরণে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও শহীদ র্যাব সদস্যদের পরিবারের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
এবারের দরবারে রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিন মরদেহ উদ্ধার করায় র্যাব ডগ স্কোয়াডের এক কুকুরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এবারই প্রথম র্যাবের ডগ স্কোয়াডের একটি কুকুর র্যাব মহাপরিচালক পদক পেল।
রাজধানী ঢাকায় দখল হয়ে যাওয়া খালগুলোর মধ্যে মাত্র ১৫টি খনন করলেই জলাবদ্ধতা সমস্যার প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান হতে পারে বলে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি) সম্প্রতি রাজধানীর নয়টি জলাবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে চলমান সমস্যার সমাধান তুলে ধরেছে।
‘ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা ও আমাদের দখলকৃত খাল’ শীর্ষক গবেষণাটি পরিচালনা করা হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে।
আরডিআরসি যেসব খাল খননের সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো- রূপনগর মেইন খাল, বাউনিয়া খাল, বাইশটেকি খাল, সাংবাদিক কলোনি খাল, কল্যাণপুর খাল, ইব্রাহিমপুর খাল, পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল, রায়েরবাজার খাল, জিরানী খাল, রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত, ধোলাই খাল, কদমতলী খাল ও মান্ডা খাল।
গবেষণায় রাজধানীর জলাবদ্ধতার ‘হট স্পট’ হিসেবে নয়টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। সেগুলো হলো- পল্লবী শিয়ালবাড়ি, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিং; কালশী ও মিরপুর-১১; টোলারবাগ, আহমেদনগর ও পাইকপাড়া; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুল; কলাবাগান, ধানমন্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড ও হাতিরপুল; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমন্ডি ও ঢাকা নিউমার্কেট; রামপুরা ও বাড্ডা; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজার এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগ।
আরডিআরসি’র চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘এক সময় ঢাকা থেকে বৃষ্টির পানি সরতে পারে এমন ৭৭টি খাল ও লেক ছিল। সেগুলোর বেশিরভাগই আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে দখল করা হয়েছে। এর মধ্য থেকে চিহ্নিত ১৫টি খাল খনন করতে পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা সমস্যার ৮০ শতাংশ সমাধান হয়ে যাবে।’
এসব জলাশয় পরিষ্কার করতে হলে স্থানীয় জনগণ ও কমিউনিটির সম্পৃক্ততা এবং দৃঢ় রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
খালগুলো পুনরুদ্ধারে মোহাম্মদ এজাজ একটি মডেল অনুসরণের পরামর্শ দেন। সিটি করপোরেশন-সংশ্লিষ্ট খাল এলাকা এবং তীরগুলো পুনরুদ্ধার ও স্থাপত্যের পরিকল্পনা করার জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার পর উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
তিনি জানান, মডেলটিতে বলা হয়েছে জনগণকে জলাশয়ের নিজ নিজ অংশ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণের নিশ্চয়তা দিয়ে জলাশয় তৈরিতে উৎসাহিত করতে হবে।
যেসব এলাকায় বেশি জলাবদ্ধতা দেখা যায়, খননের জন্য চিহ্নিত খালগুলো ওইসব এলাকার সঙ্গে যুক্ত কি না সেটি খেয়াল রাখা হয়েছে।
১৫টি খালের মধ্যে পল্লবী শিয়ালবাড়ী, রূপনগর ও ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে রূপনগর মেইন খাল খনন করতে হবে। বাউনিয়া খাল, বাইশটেকি খাল ও সাংবাদিক কলোনি খাল খনন করলে কালশী ও মিরপুর-১১ নম্বরের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
অন্যদিকে টোলারবাগ, আহমেদ নগর ও পাইকপাড়ার জন্য কল্যাণপুর খাল; শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া ও কাফরুলের জন্য ইব্রাহিমপুর খাল ও কল্যাণপুর খাল এবং কলাবাগান, ধানমন্ডি ২৭, কাঁঠালবাগান, গ্রিনরোড ও হাতিরপুলের জন্য পান্থপথ বক্স কালভার্ট খাল খনন করতে হবে।
পাশাপাশি রামপুরা ও বাড্ডার জন্য রামপুরা খালের দক্ষিণ প্রান্ত; হাজারীবাগ, নবাবগঞ্জ, রায়েরবাজার, পশ্চিম ধানমন্ডি ও ঢাকা নিউমার্কেটের জন্য রায়েরবাজার খাল ও জিরানী খালের শেষ অংশ; সূত্রাপুর, ওয়ারী, নবাবপুর, কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, নারিন্দা ও তাঁতীবাজারের জন্য ধোলাই খাল এবং জুরাইন, সিদ্ধিরগঞ্জ, জাকের মঞ্জিল, শ্যামপুর, পূর্ব জুরাইন, সাদ্দাম মার্কেট ও রায়েরবাগের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য কদমতলী খাল ও মান্ডা খাল খনন করতে হবে।
স্বাধীনতার পর ঢাকায় ৫৭টি খাল থাকলেও বর্তমানে এই সংখ্যা নেমে এসেছে ২৬টিতে, যার অধিকাংশের অবস্থাই বেশ নাজুক। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় রাজধানী। চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কার্যালয়কে ক্ষতিগ্রস্তদের আস্থার জায়গা হিসেবে পরিণত করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেছেন সংস্থাটির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। এখানে কোনো ‘আয়না ঘর’ ও ‘ভাতের হোটেল’ সংস্কৃতি থাকবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে শনিবার আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক ডিবি অফিস এক সময় তারকাদের আড্ডাস্থল হয়ে ওঠার বিষয়টিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ডিবি অফিস নায়ক-নায়িকাদের আড্ডাখানা নয়। এটা ক্ষতিগ্রস্তদের আস্থার জায়গা হবে, ন্যায়বিচার পাওয়ার জায়গা হবে।’
জবাবদিহি ও সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘ডিবি একটি জনবান্ধব সংগঠনে পরিণত হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
‘আমরা ডিবি অফিসকে জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। অসহায় ও ভুক্তভোগীদের সমস্যার কথা শোনা হবে, তারা আইনি সহায়তা পাবেন।’
রেজাউল করিম আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমার নজরদারিতে কেউ নির্যাতনের শিকার হবেন না। ডিবি অফিসের কথা শুনলে মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু অপরাধীরাই আমাদের ভয় পাবে। আমি যতদিন এই পদে আছি ততদিন সততা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাব।’
অতীতের পুলিশি ব্যর্থতা তুলে ধরতে গিয়ে রেজাউল করিম মল্লিক আগের ঘটনার কথা তুলে ধরেন যেখানে ‘উচ্চাভিলাষী ও অপেশাদার’ কর্মকর্তারা পুরো পুলিশ বাহিনীর অবস্থানের সঙ্গে আপস করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের মনোবল ভেঙে পড়া এবং পূর্ববর্তী সরকারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান ছিল নজিরবিহীন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন আমরা আগে কখনও হইনি।
‘আমার নেতৃত্বে এ ধরনের ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হবে না। ডিবি অফিসে অন্যায় সহ্য করা হবে না।’
বাহিনীর কলঙ্কিত ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে মল্লিক বলেন, ‘ডিবিতে দক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যারা সংগঠন পুনর্গঠনে সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।
‘ডিবির হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার এবং সাধারণ মানুষ যাতে অন্যায় নিপীড়ন থেকে মুক্ত হতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ার মধ্যে থেকে কাজ করছি।’
স্বচ্ছতার প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি আইনের ঊর্ধ্বে নই। ডিবির কোনো সদস্য অনৈতিক বা অপেশাদার কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের জবাবদিহি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না।’
আরও পড়ুন:নির্বাচন বিলম্ব হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে মন্তব্য করে মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার এবং দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই।
রাজধানীর এফডিসিতে শনিবার গণতন্ত্র সুরক্ষায় জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
অনুষ্ঠানে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সংবিধান পুনর্লিখন নয়, সংস্কার করা যেতে পারে। পুনর্লিখন করলে বিপদ হবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লব ব্যর্থ হলে সামাজিক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে।’
বর্ষীয়ান এ সাংবাদিক বলেন, ‘এখনকার যুগে সেনা শাসন সম্ভব নয়। সেনা শাসন হলে উন্নয়ন সহযোগীরা সহায়তা বন্ধ করে দিবে।
‘আমেরিকা, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সেনা শাসনের বিপক্ষে, তবে বিপ্লব ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ ব্যর্থ হবে। আর বাংলাদেশ ব্যর্থ হলে আমরা অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি হব।’
মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে ড. ইউনূস একজন বিশ্বনন্দিত ভালো লোক, তবে প্রশাসন পরিচালনা করার জন্য আরও কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সংস্কারের জন্য অনন্তকাল সময় দেওয়া যায় না।’
মানবজমিন সম্পাদক বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিচার বিলম্ব হলে ফ্যাসিস্টরা আবার ফিরে আসার ঝুঁকি রয়েছে। একই সাথে হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রাপ্তিতেও সংশয় সৃষ্টি হবে।’
রাজধানীর শুক্রাবাদে জমে থাকা গ্যাসের আগুনে বাবা ও মায়ের পর মৃত্যু হয়েছে মোহাম্মদ বায়েজিদ (৩) নামের শিশুর।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় পরিবারটির তিন সদস্যের সবার মৃত্যু হলো।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে জমে থাকা গ্যাসের আগুনে একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়। তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম শুক্রবার জানান, শুক্রাবাদ এলাকা থেকে শিশুসহ একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাত ১০টার দিকে শিশু বায়েজিদ মারা যায়। তার শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এ ঘটনায় বাবা, মা ও শিশুসহ একই পরিবারের তিনজনই মারা গেলেন।
বায়েজিদের মামা মানিক মিয়া জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী থানার ছাতিরচর গ্রামে। শিশুটি পরিবারের সঙ্গে শুক্রাবাদের একটি বাসায় ভাড়া থাকত।
আরও পড়ুন:নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট।
ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের মিডিয়া সমন্বয়ক ইমতিয়াজ সেলিমকে (৪২) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ ভোরে (৪ অক্টোবর, ২০২৪) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করে।
‘তার বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা রয়েছে। এ ছাড়া পল্লবী ও খিলগাঁও থানার আরও দুটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি সে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘উল্লেখ্য, তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাকে বিজ্ঞ আদালতে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।’
ভারতের সঙ্গে করা সব গোপন চুক্তি প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত তাহমিদ ও মাসুদ রানার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা অন্য দেশের সঙ্গে যেসব গোপন চুক্তি করেছেন তা প্রকাশ করা হোক।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতালি, জার্মানিসহ পৃথিবীর কোথাও গণতন্ত্রকামী মানুষ ফ্যাসিস্টদের পুনরুত্থান হতে দেয়নি। বাংলাদেশেও হবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী শহীদ পরিবারের সদস্যদের যেন সরকারি চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়।’
গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পক্ষে হাঁটতে শুরু করেছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করারও আহ্বান জানান রিজভী।
আর্থিক সহযোগিতা প্রদানকালে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন, বিএনপি নেতা বজলুল বাছিত আঞ্জু, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বৃহস্পতিবার জামিন দিয়েছে আদালত।
মাহমুদুর রহমানের মুক্তি চেয়ে প্রতিবাদ ও নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আস সামছ জগলুল হোসেনের আদালত জামিনের এ আদেশ দেন।
মাহমুদুরের আইনজীবী জয়নাল আবেদীন মেজবাহ বলেন, ‘মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা মামলায় দেয়া সাজার বিরুদ্ধে আজ আমরা আপিল করেছি। আদালত আপিল আবেদন গ্রহণ করেন।
‘এরপর আমরা মাহমুদুর রহমানের জামিন চেয়ে আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন। এ ক্ষেত্রে তার কারামুক্ত হওয়ার আর কোনো আইনগত বাধা থাকল না।’
অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর আত্মসমর্পণ করে আপিলের শর্তে মাহমুদুর রহমানের জামিন আবেদন করেন আইনজীবী।
ওই দিন শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত জামিন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। একই সঙ্গে তাকে কারাগারে ডিভিশন দেয়ারও আদেশ দেয় আদালত।
আইনজীবী মেজবাহ বলেন, ‘মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগে সাজা দেয়া হয়। প্রশ্নবিদ্ধ বিচারিক প্রক্রিয়ায় ত্বরিত গতিতে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছিল।
‘রায় ঘোষণা করা বিচারকের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’
প্রেক্ষাপট
সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁচজনকে দুটি ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।
আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয় আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও এক মাসের কারাভোগ করতে হবে বলে আদেশে জানানো হয়।
একই আইনের ১২০ (খ) ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) আসামিদের দুই বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
রায়ে বিচারক উল্লেখ করেন, দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যেকোনো সময় থেকে জাসাসের সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা ঢাকার পল্টনের জাসাস কার্যালয়, যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহর, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় একত্রিত হন। তারা পরস্পর যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে এবং তার তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে যুক্তরাষ্ট্রে অপহরণ ও হত্যার ষড়যন্ত্র করেন।
ওই ঘটনায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলা করেন।
ওই মামলায় ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
মামলায় জয়সহ ১২ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য