আশা ছিল বড় চাকরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবেন। বাড়িতে বড় দালান বানিয়ে পরিবারকে সুখে রাখবেন। কিন্তু সেই আশা অধরাই থেকে গেল মাসুদ খানের।
পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকার রোববার সকাল ৮টার দিকে দুর্ঘটনায় নিহত হন মাসুদ।
গোপালগঞ্জের আদমপুর গ্রামের আমজেদ আলী খানের মাস্টার্স পাস করা ছেলে ২৭ বছর বয়সী মাসুদ খান। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে দর্শন বিভাগের মাস্টার্স পাস করেন।
নিহত মাসুদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত তিন দিন আগে ঢাকা থেকে মা-বাবা ও পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে বাড়িতে আসেন মাসুদ। রোববার খুব ভোরে ইমাদ পরিবহনে ঢাকা যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঢাকা আর যাওয়া হলো না। বাস খাদে পড়ে সমাধি হলো একজন স্বপ্নবাজ তরুণের।
মরদেহ নিতে এসে মাসুদের বড় ভাই শফিক খান বারবার ভাইয়ের জন্য মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কোনোভাবেই ভাইয়ের এমন করুণ মৃত্যু তিনি মেনে নিতে পারছেন না। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন শফিক খান।
মাসুদ খানের ভাই শফিক খান বলেন, ‘কথা ছিল বড় চাকরি করে পরিবারের দায়িত্ব নিবে মাসুদ। মাস্টার্স পাস করে ঢাকাতেই ছোটখাটো কম্পিউটারের কাজ করত। যা ইনকাম করতো তা দিয়ে নিজে চলে বাড়িতেও টাকা-পয়সা পাঠাত। আর মাঝে মাঝে বড় চাকরিতে যোগ দিতে পরীক্ষা দিত। অল্প দিনের মধ্যেই চাকরি পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই চাকরি আর করা হলো না। কীভাবে এই শোক মেনে নিব। আমার প্রাণের ছোট ভাইকে আর পাব না, এটা মানতে পারছি না।’
মাসুদের বন্ধু শাকিব হোসেন বলেন, ‘আমরা একই গ্রামে ছোট থেকে বড় হয়েছি। মাসুদ আমার চেয়েও অনেক মেধাবী ছিল। সে মুকসেদপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা কলেজে দর্শন বিভাগের অর্নাস ও মাস্টার্স শেষ করে। আমাকে মাঝে মাঝেই বলতো, বড় চাকরি করে বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সেই চাকুরি আর তার করা হলো না। তার জন্য বুকটা ভেঙে চৌচির হয়ে যাচ্ছে।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, রোববার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়ে-মুচড়ে যায় বাসটি। এ ঘটনায় নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্তের জন্যে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মাদারীপুরে চার্জার ফ্যান অতিরিক্ত দামে বিক্রি করায় খান ইলেকট্রনিক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান পরিচালনা করে ওই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সদর উপজেলার পুরান বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তর মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদাউস।
জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, ‘লোডশেডিং ও তাপমাত্রা বেশি থাকার সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী চার্জার ফ্যানের দাম বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ আসে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খান ইলেকট্রনিক্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’
এসময় অন্য দোকানদারদের সতর্ক করা হয় বলে জানান তিনি।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
উপজেলা সদর বাজারে মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক বন্ধ ছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষ দুপুরেও পুরোপুরো থামেনি। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে মহাসড়কে। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লা-১১ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মুজিবুল হক ও তার বিরোধী পক্ষ চৌদ্দগ্রামের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমানের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন। মিজানুরের পক্ষ মঙ্গলবার একটি শো-ডাউনের আয়োজন করে উপজেলায়।
সকালে শো-ডাউন ঠেকাতে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন মুজিবুল হকের অনুসারীরা। এক পর্যায়ে সদরে মিজানুরের সমর্থকরা শো-ডাউন শুরু করলে ধাওয়া দেন মুজিবুল হকের সমর্থকরা। এ সময় সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পৌনে এক ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সরেজমিনে সকাল ১০টার কিছু সময় পর দেখা যায়, মহাসড়কের মাঝে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে অর্ধশত লোকের দুইটি দল। প্রত্যেকের হাতে লাঠিসহ দেশীয় অস্ত্র। সংঘর্ষের সময় আটকা পড়ে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, যাত্রীবাহী গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন। দুর্ভোগে পড়েন নারী শিশুসহ হাজারো যাত্রী।
চৌদ্দগ্রাম বাজারের মহাসড়কে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ শোনা গেছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকেও এমন পরিস্থিতি ছিল।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের বরাতে জানা যায়, বিদ্রোহীদের শো-ডাউনে যেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা-কর্মীরা আসতে না পারেন সেজন্য মহাসড়কের মোড়ে মোড়ে তল্লাশি চালানো হয়। এতে প্রাইভেট, মাইক্রো, বাস, ট্রাক, পিকআপ ও অ্যাম্বুল্যান্সে তল্লাশি করা হয়।
মিয়া বাজার হাইওয়ে পুলিশের ইনচার্জ লোকমান হোসেন বলেন, ‘চৌদ্দগ্রাম বাজারে যানজট রয়েছে। আমরা নিরসনের চেষ্টা করছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া টিপু নিউজবাংলাকে ২৩ জন আহতের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:খুলনাকে পরিকল্পিত ও পরিচ্ছন্ন স্মার্ট সিটি গড়ে তুলতে ৪০ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় খুলনা প্রেসক্লাবে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি।
৪০ দফা ইশতেহারের প্রথমেই রয়েছে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও পরিবেশবান্ধব খুলনা গড়ার প্রত্যয়। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি নির্মাণ ও নগর পরিকল্পনায় সবুজকে প্রাধান্য দেয়া হবে। সবুজ খুলনা গড়ে তুলতে এলাকাভিত্তিক পরিকল্পিত বনায়ন করা হবে। বাড়িভিত্তিক সবুজায়নে উৎসাহিত করা হবে। নগর পরিকল্পনায় পরিবেশকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হবে। নগরায়ন হবে পরিবেশবান্ধব। জমি, বায়ু, শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া হবে।’
ইশতেহারে দ্বিতীয় দফায় নগরীতে পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খালেক। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে নগরীতে বিদ্যমান পার্ক ও উদ্যানগুলোর প্রয়োজনীয় সংস্কার ও উন্নয়ন করা হবে। এছাড়া উন্মুক্ত সুবিধাজনক স্থানে একটি বড় পার্ক, লেডিস পার্ক ও ২টি শিশুপার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে। নদী-সংলগ্ন স্থানে ভ্রমণের জন্য ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।’
স্মার্ট খুলনা গড়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, বাস স্টপেজসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্য ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে একটি ই-লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিক সমস্যা জানানো, সেবা ও প্রয়োজনীয় তথ্য সমৃদ্ধ মোবাইল অ্যাপ চালু করা হবে। সকল সেবাসমূহকে পর্যায়ক্রমে ডিজিটাল করা হবে এবং ই-সেবা চালু করা হবে।’
খালেকের ৪০ দফার মধ্যে আরও রয়েছে- জলাবদ্ধতা দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ড্রেন পরিষ্কার, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃক্ষ পরিচর্যা ও সংরক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন ও নিরাপদ স্বাস্থ্যকর খুলনা সিটি গড়ে তোলা, সুলভ মূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা, সূর্যোদয়ের আগেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সম্পন্ন, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, পথচারী-বান্ধব ফুটপাত, মানবিক উন্নয়নের খুলনা, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান উপযোগী নগরী, সিভিক সেন্টার গড়ে তোলা, অনুদান তহবিল চালু, মিডিয়া সেন্টার চালু ও সেরা সংবাদ পুরস্কার প্রবর্তন, কবরস্থান ও শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিবছর প্রতিযোগিতার আয়োজন, স্মার্ট ডিজিটাল খুলনা, নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানচিত্র প্রদর্শন, অংশগ্রহণমূলক ও সুশাসিত খুলনা, ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস মিটিগেশন সেল স্থাপন, হটলাইন নগর তথ্য কেন্দ্র চালু, পরিকল্পনা প্রণয়নে পরামর্শক কমিটি গঠন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উন্নয়ন ও বিকাশ, জলাশয় ও পুকুর সংরক্ষণ, শিশুদের সাঁতার শেখানোর বিশেষ উদ্যোগ, নগরীর বাজারগুলোর আধুনিকায়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা প্রদান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, ওয়াসা, কেডিএ, রেলওয়ে, টেলিকমিউনিকেশন ও বিদ্যুৎ পরিষেবার উন্নয়ন, কেসিসিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, উন্নয়ন কার্যক্রম নিয়ে বুলেটিন প্রকাশ এবং খুলনা মহানগরী সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ।
ইশতেহার ঘোষণার আগে গত পাঁচ বছরে বাস্তবায়ন করা উন্নয়ন প্রকল্পের বর্ণনা দেন সদ্য বিদায়ী মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
এসময় তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে দেশের সকল উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে-যা প্রায় ৩ বছর স্থায়ী ছিল। সে কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে বিশাল এ কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। ফলে নগরবাসীকে হয়ত কিছুটা দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।’
অনিচ্ছাকৃত ও অনাকাঙ্খিত এ বিলম্বের জন্য নগরবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। তবে চলমান উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত হলে খুলনা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি স্বাস্থ্যকর নগরীতে পরিণত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সদ্য বিদায়ী এ মেয়র।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পারভীন জাহান কল্পনা, কেসিসি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক কাজী আমিনুল হক, আওয়ামী লীগ নেতা এম ডি এ বাবুল রানা, অ্যাডভোকেট সুজিত কুমার অধিকারী, সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই কৃষক আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের ধ্বজনগর গ্রামের সীমান্তের কাছের জমিতে কৃষকরা গরু চড়াতে গেলে ওই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন ৫৫ বছর বয়সী আর্জন আলী ও ৪০ বছর বয়সী ইকবাল ভূঁইয়া।
গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান আহতদের বরাত দিয়ে জানান, গোপীনাথপুরের ধ্বজনগরের বাসিন্দা আর্জন ও ইকবাল সীমান্তের পাশের জমিতে গরু চড়াতে যান।
ওই সময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। আহতরা বর্তমানে কসবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যপারে ৬০ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অধিনায়ক মো. আশিক উল্লাহ জানান, বিএসএফের ছররা গুলিতে দুই বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের পতাকা বৈঠক করে বিষয়টির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার দাউদকান্দিতে অতিরিক্ত গরমে অসুস্থ হয়ে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবাল সকাল সাড়ে ১০টায় দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর আফতাব-সুবল হাইস্কুলে এই ঘটনা ঘটে।
ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ওই স্কুল ছাত্রীর নাম হাবিবা আক্তার। সে তিতাস উপজেলার নাগেরচর গ্রামের জিয়াউল হকের মেয়ে।
স্থানীয়রা জানান, আজ খুব গরম পড়েছিলো। কোনো কাজে স্কুলের বাইরে আসলে অসুস্থ হয়ে পড়ে হাবিবা।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সকাল ১০টায় বিদ্যালয়ের প্রথম ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস চলার শেষ পর্যায়ে ওই ছাত্রীর মা নাস্তা নিয়ে স্কুলে আসেন। সকাল থেকে মেয়ে কিছু খায়নি বলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান তিনি। নাস্তায় রুটি ও তালের শাঁস ছিল। প্রথম ক্লাস শেষে রুটি না খেয়ে শুধুমাত্র তালের শাঁস খায় হাবিবা। একটু পর তার বমি শুরু হয়। বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকায় রেফার করা হলে পথেই তার মৃত্যু হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ‘ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে স্কুল থেকে তাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। এর মাঝেই তার আত্মীয়-স্বজনকে খবর দেয়া হয়।’
দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তৌহিদ আল হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর সে অচেতন ছিল। আমরা তাকে ঢাকায় রেফার করি। তার সাথে দুইজন মহিলা ছিলেন। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবারো দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরিয়ে এনে ভর্তি করা হয়। এখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তার মৃত্যুর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে ডা. তৌহিদ বলেন, ‘খাদ্য বিষক্রিয়া কিংবা অতিরিক্ত গরমেও মেয়েটির মৃত্যু হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
এদিকে কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় কুমিল্লায় তাপমাত্রা ছিলো ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এ বছরে কুমিল্লায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভারতীয় পেঁযাজ আমদানি শুরু হওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। দুদিনের ব্যবধানে বাজারে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৪০ টাকা।
সোমবার বিকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসিজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় পেয়াঁজবাহী ট্রাক আসা শুরু হয়। এ দিন ৫৬ ট্রাকে ১ হাজার ৬৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ১৩৩ ট্রাকে ২৭৭৭ দশমিক ৪০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনামসজিদ স্থল বন্দর কাস্টমের ডেপুটি কমিশনার প্রভাত কুমার সিংহ।
আজ সকাল থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। দুপুরে শহরের পুরাতন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে। দুদিন আগেও ৯০-৯৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া দেশি পেয়াঁজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা দরে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের চাঁদলাই এলাকার বাসিন্দা ও পুরাতন বাজারের পেঁয়াজের ব্যবসায়ী একরামুল হক জানান, তিনি রবিবার ৮৮ টাকা কেজি দরে ১ হাজার কেজি দেশি পেঁয়াজ কিনেছিলেন, সেই পেঁয়াজ এখন লসে বিক্রি করছেন। কেজিতে তার লস হচ্ছে প্রায় ২৮-৩০ টাকা।
মো. পলাশ নামে আরেক মসলা ব্যবসায়ী জানান, দুদিন আগে ৯০-৯৫ টাকায় বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। গতকাল ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হলেও, আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়।
তারপরও বাজারে ক্রেতা নাই বললেই চলে বলে জানান তিনি।
পুরাতন বাজারের অন্যতম পেঁয়াজ আড়তের মালিক আনারুল ইসলাম জানান, তা মঙ্গলবার ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসায় পেয়াজের দাম কমেছে ৩০-৪০ টাকা। আগামীতে আরও কমবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বিয়েবাড়ির ‘গেট’ স্থাপনকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। ওই সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধসহ আহত ২০ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বুরহানপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার গেদা মিয়া চৌধুরীর ছেলে রাহিম চৌধুরীর বিয়ে। এ জন্য সড়কের ওপর তারা গেট স্থাপন করেন।
মঙ্গলবার সকালে ৮ থেকে ১০ জন যুবক বিয়ের গেট জাকির হোসেনের বাড়ির সামনে হওয়ায় তাদের মানহানি হয়েছে দাবি করে ভাঙচুর করে জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
পরে রাহিম চৌধুরীসহ পঞ্চায়েতের লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে জাকির হোসেন ও তার লোকজনের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয় পক্ষ থেকে গুলি ছোড়ার শব্দ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ডালিম আহমেদ বলেন, ‘প্রত্যক্ষদর্শীরা সংঘর্ষ চলাকালে গুলির শব্দ শুনেছেন বলে জানান। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা যাবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য