‘ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন’ উদ্বোধনকে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার একটি মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার বিকেলে গণভবন থেকে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভারত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বোতাম টিপে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন উদ্বোধন করেন।
ভারতীয় লাইন অফ ক্রেডিট (এলওসি) থেকে নেয়া প্রায় ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ভারতীয় রুপি ব্যয়ে নির্মিত ১৩১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের (আইবিএফপিএল) মাধ্যমে বাংলাদেশে ডিজেল রপ্তানি করবে ভারত।
পাইপলাইন উদ্বোধনের পর উভয় প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। পারস্পরিক সুবিধার জন্য দেশ দুটির মধ্যে কানেক্টিভিটি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন তারা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটি বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে। ভারত আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু। আমাদের দুই দেশের এই বন্ধুত্ব অটুট থাকুক সেটাই আমি চাই।
‘বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেটাকে আমরা কার্যকর করতে চাই। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে আমরা আরও উন্নত করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে দুই দেশের জনগণের সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণে আমরা যেন একসঙ্গে কাজ করে যেতে পারি সেটাই আমাদের লক্ষ্য। কারণ আমরা চাই আমাদের দেশের এই উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হোক।
‘মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর এবং সিলেট, চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নত করেছি। এগুলো ভারতের জন্য সম্পূর্ণ উন্মুক্ত করে দিচ্ছি যাতে এই বন্দরগুলো ব্যবহারে ভারতের কএনা অসুবিধা না হয়। এর ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য আরও সহজ হবে এবং দুই দেশের মানুষই লাভবান হবে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা সারাদেশে এক শ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। আমি চাই, ভারতের বিনিয়োগকারীরা সেখানে আরও বিনিয়োগ করুন। আমরা দুই দেশই তাতে লাভবান হব।’
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী দিনেও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের মতো আরও সফলতা দুই দেশ যৌথভাবে উদযাপন করবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে একইসঙ্গে কাজ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী পাইপলাইনটি চালু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে উভয় দেশের প্রকল্প-সংশ্লিষ্টদের বিশেষ করে ভারতের যারা দিন-রাত পরিশ্রম করে এই পাইলাইন নির্মাণ করেছেন তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
পাইপলাইন নির্মাণে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ায় ভারত সরকার ও আসামের মুখ্যমন্ত্রীসহ আসামের জনগণের প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে বছরে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হয়। এখন পাইপলাইন নির্মাণের ফলে বছরে প্রায় ১০ লাখ টন ডিজেল আমদানি করা সম্ভব হবে।
‘এর মাধ্যমে আসামের একটি ভাল বাজার বাংলাদেশে সৃষ্টি হলো যেখানে এই ডিজেল মানুষের উন্নয়নের কাজে লাগবে এবং আসামবাসীও লাভবান হবে, ভারতবাসীও লাভবান হবে।
‘পার্বতীপুরে বর্তমানে আমাদের স্টোরেজ ক্যাপাসিটি ১৫ হাজার টন। এই স্টোরেজ ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি রামপাল মৈত্রী তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট এবং ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রূপসা রেলওয়ে সেতু উদ্বোধনের জন্য পুণর্বার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কৃতজ্ঞ, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সরকার ও জনগণ অকুন্ঠ সমর্থন জানিয়েছিল। বাংলাদেশ-ভারত মিত্রবাহিনীর যৌথ অভিযানেই একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সমস্যাগুলো একে একে সমাধান করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে- গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া সড়ক ও রেল যোগাযোগগুলো একে একে উন্মুক্ত করা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার, উন্নয়নে একযোগে কাজ করে যাওয়া এবং ভারতের কাছ থেকে উন্নয়নে বিভিন্ন সহযোগিতা প্রাপ্তি, সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারকরণ, দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি প্রভৃতি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে শতভাগ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ইতোমধ্যে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ভারত থেকে ১ হাজার ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছি। বিদ্যুৎ খাতে উপ-আঞ্চলিক পর্যায়সহ দ্বিপাক্ষিক আরও কয়েকটি উদ্যোগ বাস্তবায়নাধীন। আর এই সহযোগিতার ফলে আমাদের বন্ধুত্ব আরও গভীর হচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে সমুদ্র সীমানার পাশাপাশি স্থল সীমানা নিয়ে দুই দেশের পারস্পরিক সমস্যার সমাধান করতে পারায় ভারতের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং জনগণকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।
২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তিনি ভার্চুয়ালি এই পাইপলাইন প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন:তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘সাংবাদিকরা সমাজের অনুন্মোচিত বিষয় তুলে আনেন, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেন। সাংবাদিকতা একটি মহৎ পেশা। অপরাধ ও অপপ্রচারের সঙ্গে সাংবাদিকতাকে মেলানো যাবে না।’
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) ইফতার আয়োজনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডিআরইউ সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল আহসান সোহেল সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। সংগঠনের সহ-সভাপতি দীপু সারোয়ারসহ বর্তমান ও সাবেক নির্বাহী পরিষদ ও সাধারণ সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক প্রথম আলোর সাংবাদিক গ্রেপ্তার হওয়া প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসের দিন জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে ১০ টাকা দিয়ে ফুঁসলিয়ে একটি ১০ বছরের ছেলেকে দিয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে কথা বলানোর চেষ্টা এবং সে না বললেও তার বক্তব্য হিসেবে সেটি প্রচার করা শুধু বাংলাদেশের সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার পরিপন্থী নয়, সাংবাদিকতার নিয়ম-নীতিরও পরিপন্থী।
‘এখানে স্পষ্টত জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ লংঘিত হয়েছে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতি কটাক্ষ করা হয়েছে। এসব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলেই মামলা হয়েছে, এর সঙ্গে সাংবাদিকতাকে না মেলানোর অনুরোধ জানাই। তবে কারও কোনো হয়রানি যেন না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'দ্রব্যমূল্য নিয়ে, সরকারের সমালোচনা করে প্রায় প্রতিদিন দেশের পত্র-পত্রিকায় লেখা হয়, টেলিভিশনে রিপোর্ট প্রচার হয়। এ নিয়ে কোনো মামলা তো দূরের কথা, কোনোদিন কাউকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশ্নও করা হয়নি।
‘অথচ এই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট পত্রিকা থেকে বিদেশি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে যে, দ্রব্যমূল্য নিয়ে রিপোর্ট করার কারণে তাদের সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এটা বলে তাদেরকে উস্কানি দেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট এই অসত্য অপপ্রচার আসলে দেশবিরোধিতা।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আর অপরাধ এক বিষয় নয়। দেশের সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো, সম্পাদক, প্রকাশক, শিক্ষক, শিল্পী, সুশীল সমাজও স্বাধীনতাকে কটাক্ষের প্রতিবাদ জানিয়েছে, বিবৃতি দিয়েছে। কারণ এখানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।’
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলিয়েটা ভালস নয়েস বলেছেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠন এবং বর্তমানে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, অন্তর্ভুক্তি ও উন্নয়নের পথ তৈরি করে বাকি বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি মডেল হিসেবে কাজ করছে।
শনিবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ৫৩তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান। সূত্র: বাসস
জুলিয়েটা নয়েস তার বক্তব্যে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয়দানে বাংলাদেশি নেতৃত্ব ও উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, ‘২০১৭ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে সংঘটিত গণহত্যা থেকে বাঁচার জন্য পালিয়ে এসেছিল এবং বাংলাদেশ তাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের সাহায্যের হাত ও হৃদয় উন্মুক্ত করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বন্ধুত্বের অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ব্যাপক পরিসরে সহযোগিতা জোরদার করেছে। দুই দেশ অভিবাসীদের এবং শক্তিশালী ব্যবসায়িক সংযোগের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
‘দুই দেশ বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ এবং আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে প্রতিরক্ষা ও উন্নয়ন অংশীদারত্ব আরও জোরদার করছে। আমি গর্বিত যে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকটে একক বৃহত্তম দাতা দেশ।’
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত ও সম্প্রসারণে আগ্রহী, যাতে তারা স্থানীয় সম্প্রদায়ের চাহিদা মেটাতে ও রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানকে এগিয়ে নিতে পারে।’
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান তার বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্রকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মূল্যবান অংশীদার মনে করে এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক সম্পর্কের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।’
ভার্জিনিয়ার স্টেট সিনেটর জে চ্যাপম্যান পিটারসেন, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ড. আহমদ কায়কাউস, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক ব্যুরোর ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ ও জড়িতদের বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি), বাংলাদেশ সম্পাদক ফোরাম ও ঢাকা বার এসোসিয়েশন।
সংগঠন তিনটির পক্ষ থেকে শনিবার পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।
তিন শতাধিক পত্রিকার প্রকাশকদের সংগঠন বিএসপি’র সভাপতি মোজাফফর হোসেন পল্টু ও সাধারণ সম্পাদক এমজি কিবরিয়া চৌধুরী বিবৃতিতে বলেন, ‘২৬ মার্চ দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত ও প্রচারিত দেশের স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে ভুয়া, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী প্রতিবেদনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ।
‘এই প্রতিবেদন সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার নীতিমালা এবং নৈতিকতার পরিপন্থী। আশা করি এ ধরনের সংবাদ প্রকাশের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
সম্পাদক ফোরামের বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম রতন ও সদস্য সচিব ফারুক আহমেদ তালুকদার। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি দৈনিক প্রথম আলোয় যেভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশন করে রাষ্ট্র ও জাতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টা করা হয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’
একইসঙ্গে রাতের অন্ধকারে গ্রেপ্তার এড়িয়ে সুনির্দিষ্ট মামলায় দোষীদের বিচারের দাবি জানান তারা।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান (মামুন) ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জোবায়ের এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রথম আলো পত্রিকায় মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট, রাষ্ট্র ও স্বাধীনতা বিরোধী সংবাদ প্রকাশ করায় সমিতির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
দেশের আটটি বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, কোথাও কোথাও হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে জানানো হয়, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গা এবং রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ঢাকায় বাতাসের গতি ও দিক নিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম/দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় বাতাসের গতিবেগ ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার, যা অস্থায়ীভাবে পশ্চিম/উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে দমকায় ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার।
ঢাকায় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১৪ মিনিটে সূর্য অস্ত যাবে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, রোববার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ৫টা ৫০ মিনিটে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে; বাড়তে পারে তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয় মাদারীপুরে। শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল বান্দরবানে। শনিবার দেশের সর্বনিম্ন ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় কিশোরগঞ্জের নিকলীতে।
আরও পড়ুন:কানাডিয়ান হাউস অফ কমন্স আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস (আইএমএলডি) আইনের বিল এস-২১৪ পাস করেছে।
এই বিল পাস হওয়ার মাধ্যমে কানাডা এখন থেকে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করবে। খবর ইউএনবির
শুক্রবার কানাডাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন জানায়, বাংলাদেশি কানাডিয়ান এবং বিশ্বব্যাপী মাতৃভাষার সমর্থকদের জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।
অনুষ্ঠানে হাইকমিশন ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো এবং পরে জাতিসংঘ কর্তৃক ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত রফিকুল ইসলাম ও আব্দুস সালামের অবদানের স্বীকৃতি দেয়।
মিশন বলেছে, ‘কানাডার পার্লামেন্টে বিল এস-২১৪ পাশ করার উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমিনুল ইসলামের অবদানকেও আমরা স্বীকৃতি দিই।’
বিলটির আলোচনা ও পাশের সময় হাউস অফ কমন্সে কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খলিলুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
কেন হার্ডি এমপি বিলটি হাউসে উত্থাপন করেছিলেন এবং এসময় সিনেটর মবিনা এস জাফর উপস্থিত ছিলেন। মবিনা এস জাফর এর আগে কানাডিয়ান সিনেটে বিলটি পাশের নেতৃত্ব দেন।
বাংলাদেশ মিশন বলেছে, ‘বিল এস-২১৪ পাশ করা ভাষাগত বৈচিত্র্য এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি কানাডার প্রতিশ্রুতিকে তুলে ধরে। বিলটি স্বীকৃতি দেয় যে ভাষা একজন ব্যক্তির পরিচয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি অপরিহার্য দিক এবং ভাষাগত বৈচিত্র্যকে উদযাপন করা, প্রচার করা এবং সংরক্ষণ করা উচিত।’
প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানের গ্রেপ্তার বিষয়ে আমেরিকাসহ ১২টি দেশের বিবৃতির সমালোচনা করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, দূতাবাসগুলোর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি তাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। ভারতের দিকে তাকান, সেখানে কয়েকদিন ধরে বিবিসির কার্যালয়ে তল্লাশি করা হয়েছে। সেখানে কি বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, বিবৃতি দিয়েছে ? দেয়া হয়নি। কারণ ভারত বড় দেশ, ভারতের শক্তি-সামর্থ্য বেশি, সেজন্য সেখানে সেই সাহস দেখাতে পারেনি।
শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরে দেওয়ানজী পুকুর পাড়ের বাসায় সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সঙ্গে রাষ্ট্রের বিকাশ, গণতন্ত্রের বিকাশ জড়িত। এর ওপর গণতান্ত্রিক রীতিনীতি চর্চার আমাদের যে সংস্কৃতি সেটিকে আরও গভীরে প্রোথিত করা নির্ভর করে। একইসঙ্গে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্বশীলতাও আছে। স্বাধীনতার নামে যদি আমরা কেউ অপসাংবাদিকতা করি তাহলে দেশের আপামর জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজ নিশ্চয় সেটিকে সমর্থন করে না। সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নামে রাজনীতি করা যে সমীচীন নয় সেটিও নিশ্চয়ই আপনারা আমার সঙ্গে একমত হবেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে কূটনীতিকদের সহায়তা কামনা করেছেন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি যে তারা (বিএনপি) জনগণের কাছে যায় না। তারা বিদেশি কূটনীতিকদের ধারে গিয়ে পদলেহন করে। আমি আশা করেছিলাম, তারা দুস্থ মানুষের সঙ্গে ইফতার করবে। সেটি না করে তারা ফাইভ স্টার হোটেলে বসে কূটনীতিকদের সঙ্গে ইফতার করেছে। সেখানে গিয়ে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য অনুনয়-বিনয় করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে দোষটা কূটনীতিকদের চেয়েও আমাদের অনেকের অনেক বেশি। কারণ আমরা গিয়ে তাদের হাতে-পায়ে ধরি একটু কিছু বলার জন্য। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার জন্য। এটি আসলে দেশবিরোধী এবং দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের শামিল।
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগর সভাপতি এম এ সালাম, দক্ষিণ জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সফর আলী উপস্থিত ছিলেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন।
জাতিসংঘের সদরদপ্তরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে প্রবাসী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ বিন মোমেন প্রবাসীদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবনের পাশাপাশি আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পণ্যের অন্যতম ভোক্তা হিসেবে প্রবাসীরা রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল তৈরিতে অবদান রাখে এবং নিজ দেশে তাদের পরিবার ও পরিচালিত ব্যবসায় অর্থ পাঠিয়ে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন।’
মন্তব্য