জামিনে মুক্তি পেয়ে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি বলেছেন, গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশ নানাভাবে আমাকে মানসিকভাবে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমি প্রেগন্যান্ট বলার পরেও পানি খেতে চাইলে প্রায় এক ঘণ্টা পানি দেয়নি। তবে কারাগারের ভেতরে জেলারসহ অন্যান্যরা খুব মানবিক।
গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর শনিবার সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি গাজীপুরে স্বামীর একটি জমি দখল চেষ্টা নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলামের বিতর্কিত ভূমিকা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে সমালোচনা করেন মাহি। শঙ্কা প্রকাশ করে জানান, তার স্বামী রকিব সরকার দেশে আসলে-তাকে নানাভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করা হবে।
এ নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নিয়ে লাইভ করার বিষয়টি উচিত হয়নি। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার কারণেই এমনটা করেছি।
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল জানিয়ে মাহি বলেন, আমি শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি (গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম) বিরুদ্ধে কথা বলেছি,পুরো পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলিনি। আমি পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যাইনি। তিনি দাবি জানান, তাদের বিরুদ্ধে হওয়া দুটি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি গাজীপুর জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান।
গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করিম বলেন, মাহির জামিনের কাগজপত্র সন্ধ্যায় কারাগারে পৌঁছায়। পরে তা যাচাই-বাছাই করে সত্যতা পাওয়া গেলে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের দিকে তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়া হয়। কারাগারের গেটে উপস্থিত মানুষদের ভিড় ঠেলে সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটের দিকে গাড়িতে করে মাহিয়া মাহি কারাগার এলাকা ত্যাগ করেন।
শনিবার বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও এক ব্যবসায়ীর করা জমি দখলের মামলায় মাহিয়া মাহির জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন শুনানিতে অংশ নেন মাহিয়া মাহির পারিবারিক আইনজীবী রিপন চন্দ্র সরকার। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আনোয়ার সাদত সরকার ও আইনজীবী কামরুল হাসান।
রিপন চন্দ্র সরকার বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ দুটি মামলাতেই মাহিয়া মাহির জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশ নিরাপত্তার কড়া বেষ্টনীতে থাকায় এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে আদালতে নিয়ে যাওয়ায় দুপুরের শুনানিতে প্রথমবার আমরা জামিনের আবেদন করতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, আমার মক্কেল আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বলেই মামলা হওয়ার পরও দেশে চলে এসেছেন। তাছাড়া তিনি নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় শারিরিকভাবে অসুস্থ। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আদালত মাহিয়া মাহিকে জামিন দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে মো. মামুন নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে এই ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
মিরপুর এলাকার বাসিন্দা মামুন এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
নিহতের পরিবারের দাবি, চোর ভেবে শিশু হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক ও হেলপারেরা মিলে মামুনকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।
নিহতের বড় ভাই মাসুদ রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামুন সকালে মা ও তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আসে। পরে পরিবারের সদস্যদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। দুপুরের দিকে এক ব্যক্তি ফোন করে জানায় যে আমার ভাই খুন হয়েছে। হাসপাতালে এসে জানলাম আনসার সদস্য ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেসের চালক ও হেলপাররা চোর বলে ধাওয়া দিয়ে ধরে পিটিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই কোনো অপরাধ করে থাকলে তার বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। একজন মানুষকে এভাবে কেন ওরা পিটিয়ে মারবে। এখন ওর বউ-বাচ্চার দায়িত্ব কে নেবে? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘শুনেছি জনতা গণধোলাই দিয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
নির্দিষ্ট করে আনসার সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নিহতের মরদেহ উদ্ধারকারী শেরে বাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এএসএম আল মামুন সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহ শেরে বাংলা নগর হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
বিকেল ৪টার দিকে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মামুন পেশায় একজন চা বিক্রেতা। শিশু হাসপাতালের সামনে ঘোরাফেরার সময় তাকে চোর সন্দেহে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নিহতের পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছেন।’
শেরে বাংলা নগর থানার পরিদর্শক ( অপারেশন) শাহজাহান মন্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তার নাম-ঠিকানা এখনও জানতে পারিনি। তাকে ঢাকায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।’
মারধর করে হত্যার ঘটনায় আনসার সদস্য সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ঢাকা মহানগর আনসারের জোন কমান্ডার মো. আম্বার হোসেনের কাছে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ইতোমধ্যে একজনকে ঢাকার বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করছে পুলিশ।
‘আনসার সদস্য মারেনি। ফুটেজে আনসার সদস্যদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এটা ভুল তথ্য। মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে।’
বরিশাল -২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের সামনে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস সরদারের ওপর হামলার ঘটনায় দলটির তিন নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পলাশ, শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রিয়াজুল ইসলাম কাজী ও বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য জসিম উদ্দিন রুবেলকে সাময়িকভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলো।
এ বিষয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারি সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখ জনক। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে মারধর ও লাঞ্চনার শিকার হন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ৪৫ বছর বয়সী ইদ্রিস সরদার ।
তিনি জানান, হামলার ঘটনার আগ মুহুর্তে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে সালাম দিয়ে কুশল-বিনিময় করতে যান তিনি। তখন উজিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল তাকে দেখে কটুক্তি করেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এমপির সামনে হাফিজুরের অনুসারীরা মারধর শুরু করেন।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে ৭টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতে স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সকালে জীবননগর উপজেলার মোল্লাবাড়ীর মোড় এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এসময় এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৭টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৮২৯ দশমিক ২৭ গ্রাম (৭১ ভরি ৪ রতি)। আটক চোরাকারবারি জুয়েল হোসেন দর্শনার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, স্বর্ণের বারগুলো শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন জুয়েল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে টিকে রাখার জন্য নজিরবিহীন দুর্নীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মহান স্বাধীনতার দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গুম, খুনের মাধ্যমে তারা মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ৫২ বছর আগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষের ভোটের, কথা বলার ও লেখার অধিকার নেই। এক কথায় কোনো অধিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন প্রচেষ্টা নিয়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তারা বাকশাল করছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আজ বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমরা গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। দেশের মানুষ তার অধিকার, ভোটের অধিকার এবং শান্তিতে বসবাস করার অধিকার আদায়ে আন্দোলন শুরু করেছে।
‘আজকের এই দিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করছি তারা গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হবে।’
কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, ডা. জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:প্রতারণার অভিযোগে আটক নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন (৪৫) র্যাব হেফাজতে মারা গেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র্যাবের হাতে আটক হন জেসমিন। তিনি শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
র্যাবের ভাষ্য, জেসমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল।
মৃত জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক (মন্টু) বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে র্যাব আটকের পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকি। পরে জানতে পারি যে, সে নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখি র্যাবের লোকজন তার চারপাশে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সে মারা যান। ’
জেসমিনের পরিবারের ভাষ্য , জেসমিনের সঙ্গে তার স্বামীর ডিভোর্স হয় ১৭ বছর আগে। এরপর সে তার এক সন্তানকে অত্যন্ত কষ্ট করে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে লালন-পালন করছিল। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ কেউ করতে পারেননি।
মৃতের ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদ হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমার মা চক্রান্তের শিকার হয়েছে। র্যাবের হেফাজতে নির্যাতন চালানোয় আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ’
এ বিষয়ে র্যাব-৫-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, সুলতানার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগ পায় র্যাব। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ ছিল। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখে র্যাব অভিযোগের সত্যতা পায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাকে রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাজশাহীতে নেওয়ার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
ফেনীর সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে বিগত বছরের মতো এবারও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। গ্রীষ্মকালের জনপ্রিয় সুস্বাদু এই ফলটির উৎপাদন ভালো হলেও লাভের একটি বড় অংশ খেয়ে চলে যায় পাইকারদের পকেটে। এতে ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
তারা বলছেন, তরমুজের চাষাবাদ ব্যয়বহুল হওয়ায় ধার-দেনার পাশাপাশি পাইকারদের থেকে অগ্রিম টাকা নিতে হয়। এতে তাদের তেমন একটা লাভ হয় না। এ বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী বছর থেকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় পাঁচ বছর আগে তরমুজ চাষের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে মাত্র ৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছিল। এ বছর কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ৩ শ ৮১ হেক্টরের বিপরীতে চাষ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে ।
স্থানীয় তরমুজ চাষি আইয়ুব নবী ফরহাদ বলেন, এ অঞ্চলে উৎপাদিত ওশেন সুগার, গ্লোরি, বাংলালিংক, ব্ল্যাক বেরি জাতের তরমুজ আকারে অনেক বড় ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এর বেশ চাহিদা। চলতি বছর আমি ২২০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। সব মিলিয়ে এতে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
সোনাগাজীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে তরমুজ চাষের জন্য কৃষকদের অগ্রিম টাকা দিয়ে রাখেন আব্দুল কাদির পাইকার। তিনি বলেন, আমরা কৃষকদের অগ্রিম টাকা দিয়ে দিই। এ টাকা অনেকদিন পড়ে থাকে। আবার আমরা মাঠ থেকে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ করে তা বাজারে নিয়ে যাই।
সরেজমিনে দেখ যায়, একটি বড় তরমুজ মাঠ থেকে কেনা পড়ে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। সেটি বাজারে নিয়ে বিক্রি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ নিয়ে কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সরকারি ঋণ সহায়তা না পাওয়ায় ধার-দেনা আর দাদন পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত আছি আমরা। পাইকাররা সিন্ডিকেট করে। আমরা ন্যায্য দাম পাই না।
ফেনী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, ফেনী নদীর বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চলের পলিমাটি তরমুজ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এখানে তরমুজের ভালো ফলন হয়। এবার আমরা প্রণোদনা না দিলেও আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। আগামী বছর থেকে আমরা প্রণোদনা দেয়ার কথা ভাবছি।
আরও পড়ুন:বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হলেও তাতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। তাছাড়া ওই ঘটনায় হ্যাকাররা কোনো ধরনের টাকাপয়সাও দাবি করেনি। এমন দাবি সম্পর্কিত কোনো তথ্য বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী রোববার এমনটা দাবি করেছেন।
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিমান প্রতিমন্ত্রী।
এ সময় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শফিউল আজিম বলেন, ‘ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হলেও এ নিয়ে টাকা চাওয়ার বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।’
রাষ্ট্রীয় শতভাগ মালিকানাধীন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ই-মেইল সার্ভার হ্যাক হয় ১৭ মার্চ। সেদিন বেলা সোয়া ২টার দিকে সার্ভার হাতিয়ে নিয়ে হ্যাকাররা বিমানকে প্রথম নিজেদের দাবির কথা জানায়।
বিমান সূত্রে জানা যায়, ২১ মার্চ হ্যাকাররা জানায় যে তাদের কাছে বিমানের ১০০ গিগাবাইটের বেশি ব্যক্তিগত ও গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া বিমানের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে অনেক ডেটা তারা ডাউনলোড করে রেখেছে। বিমান তাদের দাবি মেনে না নিলে তারা নিজেদের ব্লগে এগুলো প্রকাশ করে দেবে।
২২ মার্চ বিকেলে হ্যাকাররা বিমানকে আরেকটি বার্তা পাঠায়। ওই বার্তায় বলা হয়, ‘গণমাধ্যমে আপনারা বলছেন যে কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি। কিন্তু আপনারা ভুল।’
ফ্লাইট, বিমানের যাত্রী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাসপোর্টের তথ্যসহ আরও বেশকিছু তথ্য হাতিয়ে নেয়া হয়েছে বলে হ্যাকাররা বিমানকে জানায়।
জানা যায়, ১০ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করে। অন্যথায় সব তথ্য ফাঁস করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেয় তারা।
এ ঘটনার ছয় দিন পর ২৩ মার্চ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিমান তাদের ই-মেইল সার্ভার র্যানসমওয়্যার দ্বারা আক্রান্তের কথা জানায়।
হ্যাকাররা বিমানের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করেছে- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিমান প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হ্যাকাররা টাকা দাবি করেছে বলে যে কথাটা উঠেছে সেটি সঠিক নয়। এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ বিষয়ে বিমান আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। টাকা দাবি করার এ খবর ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘হ্যাকাররা ফায়ারওয়ালের ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। এ কারণে তারা বেশি ক্ষতি করতে পারেনি। তারা তেমন কোনো তথ্য নিতে পারেনি। সাইবার অ্যাটাক হলে যা কিছু করতে হয় তা বিমানের পক্ষ থেকে করা হয়েছে। জিডি করা হয়েছে, সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
৯ দিনেও কেন ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা যায়নি- এমন প্রশ্নে এমডি শফিউল আজিম বলেন, ‘বিমানের পরিচালনায় বা অপারেশনাল কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি, যথারীতি কাজ করছে। কোনো বিষয়ে অসুবিধা হয়নি। আজও কাজ চলছে। আমরা আশা করি আগামীকাল সোমবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে এ ঘটনার একটি পরিপূর্ণ চিত্র দিতে পারব।’
বিমান সাইবার হামলার শিকার হতে পারে- এমন আগাম সতর্ক বার্তা দেয়া হয়েছিল কিনা জানতে চাইলে শফিউল আজিম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো সতর্ক বার্তা দেয়া হয়নি। যৌথভাবে বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। এই দলের কাজ শেষ হলে জানা যাবে। তবে বিমানের বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি।’
বিমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতির কারণে হ্যাকাররা এ ঘটনা ঘটানোর সুযোগ পেয়েছে কিনা জানতে চাইলে বিমানের এমডি বলেন, ‘আমাদের কোনো ঘাটতি থেকে থাকলে সেগুলো আমরা সামনে তুলে নিয়ে আসব। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা কিভাবে ঠেকানো যায় তা নিয়েও বিমান কাজ করবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য