প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। নগরীর প্রধান প্রধান সড়কে ব্যানার, ফেস্টুন আর ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দেয়া বার্তা।
শনিবার হবে প্রধানমন্ত্রীর এই সফর। তিনি এখানে শতাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বিকেলে নগরীর সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন দলীয় সভাপতি। ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটিয়ে স্মরণকালের বৃহৎ জনসভা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
জাতীয় নির্বাচনের আগে ময়মনসিংহে তার সফর কেন্দ্র করে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ও দিকনির্দেশনার প্রতীক্ষায় দলের নেতা-কর্মীরা। বিশাল জনসভায় জমায়েতকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীর জন্য প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেছেন স্থানীয় সংগঠন জনউদ্যোগ ও নাগরিক আন্দোলনের নেতারা।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিমানবন্দর, আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজকে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা, হাসপাতালটিকে তিন হাজার শয্যার হাসপাতাল করা, ময়মনসিংহ নগরীর সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ যানজট নিরসন ও অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় করা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর উপলক্ষে ময়মনসিংহ থেকে আটটি রুটে বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব ট্রেনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন সমাবেশস্থলে আসবেন।
ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে সফল করতে ১০ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটানোর প্রস্তুতি নিয়েছি। ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিগত সময়ে ময়মনসিংহের মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছু চায়নি। নেত্রী যা অনুধাবন করেছেন তাই দিয়েছেন। এবারও চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। উনি যা ভালো করবেন তাই দেবেন, আমরা তাতেই খুশি।’
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম বলেন, ‘আমরা নেত্রীর জনসমাবেশে ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটিয়ে নেত্রীর মুখে হাসি ফোটাতে চাই। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। নেতা-কর্মীরাও সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছেন।
‘জননেত্রী শেখ হাসিনার আগমনে এই অঞ্চলের সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে এবং নেতাকর্মীদের মনোবল আরও চাঙা হবে। আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকেই ক্ষমতায় আনবে জনগণ।’
স্থানীয় সংগঠন জনউদ্যোগের আহ্বায়ক আইনজীবী নজরুল ইসলাম চুন্নু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরকে ঘিরে আমরা উচ্ছ্বসিত আনন্দিত। জনউদ্যোগের পক্ষ থেকে বিমানবন্দর ও আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম নির্মাণসহ ১৮ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি, নেত্রী আমাদের দাবি পূরণ করবেন।’
জেলা নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম বলেন, ‘বিভাগ গঠনের প্রায় সাড়ে সাত বছর হলেও অবকাঠামোগত আমরা দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন দেখতে পারছি না। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শয্যার চেয়ে রোগী প্রায় ১০ গুণ বেশি। রোগীরা শয্যা না পেয়ে বারান্দা, করিডোর, মেঝেতে এবং কোনো কোনো সময় শৌচাগারের পাশে থেকে চিকিৎসা সেবা নেন।
‘তিন হাজার শয্যার হাসপাতাল, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় করা, শেরপুর জেলার সঙ্গে রেল যোগাযোগ, শহরের যানজট নিরসনে জোড়ালো পদক্ষেপ নেয়াসহ ২৩ দফা যৌক্তিক দাবি উত্থাপন করেছি। আশা করছি প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি নজরে নিয়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।’
ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ সদর দপ্তরের অধিনায়ক মো. মহিবুল ইসলাম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ ও সরকারের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবের বিভিন্ন টিম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে টহলরত অবস্থায় থাকবেন। ইতোমধ্যেই সমাবেশস্থলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে টহল শুরু করে দিয়েছে র্যাবের টিম।’
জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক স্তরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সাদা পোশাকের গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তায় প্রায় ৩ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডারের যেসব দোকান রয়েছে সেগুলোতে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নে যেসব বিষয় জড়িত প্রত্যেকটি বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিরাপত্তার প্রশ্নে আমরা কোনো ছাড় দেব না।’
রেলওয়ে ময়মনসিংহের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ প্রসাদ সরকার জানান, শনিবার ময়মনসিংহ জেলায় যাতায়াতের জন্য গফরগাঁও-ময়মনসিংহ, নান্দাইল-ময়মনসিংহ, দেওয়ানগঞ্জ বাজার-জামালপুর-ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা-ময়মনসিংহ, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান-ময়মনসিংহ, গৌরীপুর-ময়মনসিংহ, ঈশ্বরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, জারিয়া-ঝাঞ্জাইল-ময়মনসিংহ রুটে আটটি স্পেশাল ট্রেন চালানো হবে।
তিনি জানান, এসব ট্রেনে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে সব স্টেশন থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে আসবে।
এর আগে ২০১৫ সালের ১৩ অক্টোবর ময়মনসিংহ বিভাগ ঘোষণার পর ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর সার্কিট হাউজের জনসভায় ১০৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৯৩টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ চার বছর পর আবারও এই নগরীতে আসছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
রাজধানীতে চলাচল করা এক গণপরিবহনের হেলপারের বিরুদ্ধে যাত্রীকে মারধর ও ছুরি হাতে তাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর ইসিবি চত্বর থেকে কারওয়ানবাজারের দিকে আসার পথে এ ঘটনা ঘটে।
আক্রান্ত বাসযাত্রী নুরুন্নবী দৈনিক পত্রিকায় সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘ইসিবি চত্বর থেকে কারওয়ান বাজারে আসার জন্য ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্ট সার্ভিসের একটি বাসে উঠি। হেলপার ভাড়া চাইলে এই পথের জন্য ২৫ টাকা দেই। কিন্তু সহকারী আরও ৫ টাকা দাবি করেন।
‘ভাড়া নিয়ে বচসার এক পর্যায়ে বাসের সহকারী আমাকে মারধর শুরু করলে অন্য যাত্রীরা তাকে থামান। ইতোমধ্যে বাসের হেলপার আমার জামা ছিঁড়ে ফেলেন। পরে ফার্মগেট পার হয়ে তেজতুরি বাজার ফুটওভার ব্রিজের কাছে আমি নেমে যাই। সেখানে ছেঁড়া জামা খুলে ফুটপাত থেকে একটি গেঞ্জি কিনে পরে নেই।’
নুরুন্নবী জানান, ওই বাসটি কারওয়ান বাজার ঘুরে আবার ফার্মগেটের দিকে আসতে থাকে। তখন তিনি আবার সেই হেলপারকে তার দিকে আসতে দেখে ভয়ে একটি মিষ্টির দোকানে ঢুকে পড়েন। এ সময় হেলপার ওই দোকান থেকে একটি ছুরি নিয়ে তাড়া করলে আশপাশের লোকজন তাকে থামান। এ সময় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চান নুরুন্নবী।
বেলা ২টার পর একজন পুলিশ সদস্য ফার্মগেটে এসে নুরুন্নবীকে সঙ্গে নিয়ে ফার্মগেটে ট্রাস্ট ট্রান্সপোর্টের কাউন্টারে যান। সেখানে দায়িত্বরত ব্যক্তিকে বিষয়টি খুলে বললে অভিযুক্তকে খুঁজে বের করার তোড়জোড় চলে।
এ ব্যাপারে ট্রাস্ট পরিবহনের চিফ সুপারভাইজার তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের পরিবহনের সুনাম ক্ষুণ্ন করবে। আমরা চেষ্টা করছি হেলপারকে চিহ্নিত করতে। অনেক চালক ও হেলপারকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আমরা দ্রুতই দোষীকে শনাক্ত করব।’
তেজগাঁও থানা পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ ও বাস মালিক পক্ষ দোষীকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে। দোষী হেলপারকে চিহ্নিত করার পর তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গোপালগঞ্জ সদরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংঘর্ষ, পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় কমপক্ষে ২৫জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে সদর থানার ওসিসহ আইন-শৃংখলা বাহিনীর ১০ সদস্য রয়েছেন।
সোমবার সদর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে ফল ঘোষণা করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফল বাতিলের দাবিতে পরাজিত তিন প্রার্থীর (মেম্বার) সমর্থকেরা নির্বাচনী মালামাল (ইভিএম) আটকে দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় সদর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ওসির গাড়ি ভাংচুর করা হয়।
সোমবার সন্ধ্যায় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চরমানিকদাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষকালে সদর থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুদ ও আইন-শৃংখলা বাহিনীর ১০ সদস্যসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে তিনজন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন- সদর থানার ওসি মো. জাবেদ মাসুদ, এসআই নাজমুল আলম, এএসআই আসাদুজ্জামান, কনস্টেবল রোকন মিয়া, মুস্তাফিজুর রহমান ও পারভেজ; ২৩ আনসার ব্যাটেলিয়ানের সহকারী প্লাটুন কমান্ডার মো. হায়দার আলী, আনসার সদস্য সবুজ বালা, শাওন বিশ্বাস, লক্ষ্মী বিশ্বাস ও এসিল্যান্ডের ড্রাইভার ইব্রাহিম শরীফ।
এছাড়া পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন কালাম শেখ, ইয়াসিন শেখ ও সম্রাট মোল্লা। গ্রেপ্তার এড়াতে আহত অন্যরা শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
সদর থানার ওসি জাবেদ মাসুদ রাতে জানান, এলাকার পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় খাইরুল কাজী ও কালাম শেখ নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে।
বিকাশ এজেন্টের ১৫ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় এক নামধারী সাংবাদিকসহ চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোর্শেদুল হাসান এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারী রুহুল আমিন, সহযোগী প্রসেনজিৎ রায়, খাদেমুল ইসলাম এবং মোন্নাফ আলীসহ চার ছিনতাইকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে খাদেমুল ইসলাম লাল দৈনিক চৌকশ নামে একটি পত্রিকার প্রতিনিধি এবং নাগেশ্বরী রিপোর্টার্স ক্লাবের সহ-সাধারণ সম্পাদক।
তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ে ব্যবহৃত একটি মোটর সাইকেল, ৩টি মোবাইল ও ছিনতাই করা টাকার মধ্যে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার বিকাশ এজেন্ট জনতা ট্রেডার্স কর্মী শুভ কুমার রায় ও বিদ্যুৎচন্দ্র বর্মণ ভূরুঙ্গামারী ইসলামী ব্যাংক শাখা থেকে ১৫ লাখ টাকা তুলে মোটরসাইকেলে চড়ে কচাকাটা যাচ্ছিল। পথিমধ্যে লক্ষিমোড়ে ছিনতাইকারীরা তাদের থামিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে ভূরুঙ্গামারী ও কচাকাটা থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে।
র্যাব সদস্যদের শাসক না হয়ে জনগণের সেবক হতে বলেছেন বাহিনীটির মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন। ক্যাম্প ইনচার্জরা সাধারণ মানুষের কথা শোনেন না- এমন অভিযোগ যেন আর শুনতে না হয় সে বিষয়েও ব্যাটালিয়নগুলোর অধিনায়ক ও সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছেন তিনি।
র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও র্যাব মেমোরিয়াল ডে-২০২৩ উপলক্ষে সোমবার র্যাব মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। র্যাব সদর দপ্তরের শহীদ লে. কর্নেল আজাদ মেমোরিয়াল হলে এই আয়োজন করা হয়।
দরবারে বিভিন্ন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক, ক্যাম্প কমান্ডারসহ উপস্থিত কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘আমরা শাসক না, সেবক হতে চাই। আমরা চাই নিরীহ, অসহায়, বিপদগ্রস্ত মানুষকে আন্তরিকতা দিয়ে সহযোগিতা করতে। দেখবেন দিন শেষে, চাকরি জীবন থেকে অবসরে গিয়ে আত্মতৃপ্তি পাবেন। আর যদি উল্টোটা করেন তাহলে আপনার বিবেক আপনাকে কষ্ট দেবে।’
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ আমরা শহীদ পরিবারের কথা শুনেছি। আমরা হয়তো তাদেরকে কিছু আর্থিক সহায়তা ও উপহার দেই। কিন্তু যে সন্তান পিতাহারা, যে স্ত্রী স্বামীহারা হয়েছেন তাদের শূন্যতা আমরা পূরণ করতে পারব না। আমাদের দায়িত্ব হবে শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, সব ধরনের সহযোগিতা করা।’
তিনি বলেন, ‘আমি বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের খবর পেয়েছি। সিও’দের কাছে গেলে কথা শোনে, কথা বলে; কিন্তু ক্যাম্প ইনচার্জরা তা শোনে না, যা মার্ক করা হয়েছে। যেকোনো প্রান্তের মানুষ যখনই কোনো ক্যাম্পে যাবে তাকে অবশ্যই অ্যাটেন্ড করতে হবে।
‘ক্যাম্প কমান্ডারদের বলবো, পরবর্তীতে আমি আর এ ধরনের অভিযোগ শুনতে রাজি নই। আপনি জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলেন। অবশ্যই আপনাকে মানুষকে পাবলিক হিয়ারিং দিতে হবে। প্রয়োজনে পাবলিক হেয়ারিং টাইম সকাল ১১টা থেকে ২টা করেন। কিন্তু এটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। সিওকে জানাবেন। আপনাকে অফিসে থাকতে হবে।’
র্যাব প্রধান আরও বলেন, র্যাব তার কার্য সম্পাদনার ক্ষেত্রে সচেতন কর্মদক্ষতা, সততা, নিষ্ঠা, সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সুমহান চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও পেশাদারত্ব বজায় রেখে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে স্বল্প সময়ে র্যাব ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। র্যাবের এ সাফল্য রাষ্ট্র ও সমাজে স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।’
র্যাবের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ২০২২ সালে প্রশাসনিক (সেবামূলক/প্রশংসনীয়) কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ৩৫ জন ও অপারেশনাল (সাহসিকতা/বীরত্বপূর্ণ) কাজের জন্য ৫০ জন র্যাব সদস্যকে র্যাব মহাপরিচালক পদকে ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। তবে কখনও আক্রান্ত হলে সশস্ত্র বাহিনী দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব যাতে রক্ষা করতে পারে, সেভাবেই সক্ষম করে তাদের গড়ে তোলা হচ্ছে।
সোমবার নৌবাহিনীর নবনির্মিত ‘বানৌজা শেখ হাসিনা’ সাবমেরিন ঘাঁটির কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে কক্সবাজারের পেকুয়ায় নবনির্মিত ঘাঁটিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতার দিয়ে যাওয়া পররাষ্ট্রনীতি ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’ অনুসরণ করি আমরা। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ করব না। তবে যদি কখনও তেমন পরিবেশ-পরিস্থিতি হয় তাহলে যেন আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে পারি সেভাবে আমাদেরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের বাহিনীগুলোকে তৈরি করে দিচ্ছি। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক। তারা সব ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন করুক সেটাই আমরা চাই।”
সরকার প্রধান বলেন, “জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বিশাল ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। সেখানে কর্তব্য পালনে তারা যেন কোনোভাবেই পিছিয়ে না থাকে সেভাবেই আমরা এই বাহিনীগুলোকে প্রস্তুত করছি।
“সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিরক্ষা নীতি-১৯৭৪ এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘ফোর্সেস গোল ২০৩০’ প্রণয়ন করে এবং সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও সময়োপযোগী হিসেবে রূপান্তরের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। বলেন, ‘গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে ৪টি ফ্রিগেট, ৬টি করভেট, ৪টি বড় প্যাট্রোল ক্রাফট, ৫টি প্যাট্রোল ক্রাফট ও ২টি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে।
‘সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের নতুন মাইলফলক হলো এই সাবমেরিন ঘাঁটি। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ দুটি সাবমেরিন যুক্ত করেছি। ফলস্বরূপ, আজ আমাদের নৌবাহিনী একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
‘বাংলাদেশ বর্তমানে স্থানীয় শিপইয়ার্ডে নিজের ও অন্যদের ব্যবহারের জন্য জাহাজ নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুলনা শিপইয়ার্ডে একটি বড়সহ পাঁচটি প্যাট্রোল ক্রাফট নির্মাণ সম্পন্ন করেছে।’
বঙ্গবন্ধু-কন্যা আরও বলেন, ‘এই সমুদ্র সীমায় আমাদের বিশাল সম্পদ রয়েছে। তা অর্থনীতিতে কাজে লাগাতে ‘ব্লু ইকোনমি’ নীতি বাস্তবায়ন করছে সরকার। তাছাড়া এই ক্ষেত্রে আমাদের পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা থেকে শুরু করে অনেক সুযোগ রয়েছে কাজ করার।’
বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি সংযোজনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সক্ষমতা আরও জোরালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন সরকার প্রধান।
তিনি বলেন, আশা করি দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত, উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার কাজে তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।’
অনুষ্ঠানে বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটি থেকে নৌবাহিনীর সুসজ্জিত একটি চৌকষ দল প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান বানৌজা শেখ হাসিনা ঘাঁটির প্রধান কমোডর এম. আতিকুর রহমানের কাছে কমিশনিং ফরমান হস্তান্তর করেন। এরপরই ঘাঁটিতে প্রথমবারের মতো পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সাবমেরিন ঘাঁটির ওপর একটি সংক্ষিপ্ত অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশনও প্রদর্শিত হয়।
আরও পড়ুন:দিনাজপুর সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বিআরটিসি বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এসময় দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন।
সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় উপজেলার দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের ২নং সুন্দরবন ইউনিয়নের দরবাপুর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জিল হক।
দুর্ঘটনায় নিহতরা সবাই পিকআপটিতে ছিলেন।
নিহতরা হলেন-চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর সাতনালা গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে ফয়জার রহমান (৩০), রানীরবন্দর গ্রামের সামসুল রহমানের ছেলে মো. সোহান (২৫) ও রানীরবন্দর গ্রামের লিয়াকত আলীর ছেলে মোস্তাকিম (২৮)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিস জানায়, সন্ধ্যার দিকে বিআরটিসির বাসটি রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে সেটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে পিকআপের চালকসহ তিনজন নিহত হন। দুর্ঘটনায় বিআরটিসি বাসের বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:জাতিসংঘ প্রকাশিত বিশ্বের সুখী দেশের তালিকায় অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ তালিকায় টানা ষষ্ঠবারের মতো শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে ফিনল্যান্ড।
সোমবার এই তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ব সংস্থাটি। ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট-২০২৩ শীর্ষক এই তালিকা কয়েকটি সূচকের হালনাগাদ তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করা হয়েছে। সূচকগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামো, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, জিডিপি, দুর্নীতি ইত্যাদি।
তালিকায় ফিনল্যান্ডের পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ডেনমার্ক ও আইসল্যান্ড। এছাড়া পাকিস্তান ১০৮, শ্রীলঙ্কা ১১২, ভারত ১২৬তম অবস্থানে রয়েছে।
এবারের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান গত বছরের তুলনায় ২৩ ধাপ অবনমন ঘটেছে । গত বছর বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৯৪তম। এ বছর তা নেমে গেছে ১১৮তম স্থানে। এশিয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের তুলনায় সুখে রয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা।
তালিকায় একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান। এছাড়া যুদ্ধরত রাশিয়ার অবস্থান ৭২ ও ইউক্রেন ৯২তম।
প্রতিবেদনটি প্রস্তুতকারীদের একজন জন হেলিওয়েল বার্তা সংস্থা সিএনএনকে বলেছেন, অপরিচিত লোকজনকে সাহায্য-সহযোগিতা করার প্রবণতা করোনাভাইরাসের মহামারির কারণে ২০২১ সালে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায়, যা ২০২২ সালে আরও বেড়েছে ।
২০২২ সালের সুখী দেশের তালিকা করতে গিয়ে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে করোনা মহামারিকে। মহামারির জের এখনও টানছে বিশ্ব। ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড মানুষের ভালো থাকার খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে, সেই সঙ্গে বেড়েছে বেকারত্ব।
২০১২ সালের পর থেকে প্রতিবছরের ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালন করা হয়। ওই বছরের ১২ জুলাই দিনটিকে ‘বিশ্ব সুখ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য