চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৭ জন। এখনো চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৮ জন। অবশ্য প্রকৃত হতাহতের সংখ্যা অর্ধশতাধিক বলে দাবি স্থানীয়দের। কারণ আহত অনেকেই চমেক হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে ব্যক্তিগতভাবে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কানে কম শুনছেন কদমরসুল এলাকার অর্ধশতাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তিন শতাধিক।
এই ঘটনায় মামলা হয় দুইদিন পর। মামলার পর আরও তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ১৬ আসামির কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পলাতক বললেও প্রকাশ্যেই ঘুরছেন আসামিরা। এমনকি বুধবার জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির ডাকে হাজিরও হয়েছিলেন আসামিদের অনেকেই। ঘটনার পাঁচদিন পরও অভিযুক্তরা আইনের আওতায় না আসায় বিচার নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি-তদন্ত আবু সাইদ বলেন, ‘বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত আবদুল কাদিরের স্ত্রী রোকেয়া বেগম ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তবে আসামিরা গা ঢাকা দেয়ায় কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। তারপরও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি আসামিদের আইনের আওতায় আনার জন্য। তাছাড়া মামলার তদন্ত কার্যক্রমও চলছে এখনো।’
বিস্ফোরণের পরদিন সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগীদের কেউ মামলা না করলে পুলিশ দায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবে। এরপর ৬ মার্চ মধ্যরাতে বিস্ফোরণে নিহত আব্দুল কাদের মিয়ার স্ত্রী রোকেয়া বেগমের দেয়া এজহারে মামলা রেকর্ড করে পুলিশ।
মামলায় কারখানা মালিক তিন ভাই মো. মামুন উদ্দিন, পারভেজ হোসেন সন্টু এবং মো. আশরাফ উদ্দিন বাপ্পি ছাড়াও কারখানার ১৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে এজহারনামীয় আসামি করা হয়। মালিকপক্ষের তিন ভাইয়ের মধ্যে মামুন উদ্দিন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাকি দুজন পরিচালক হিসেবে রয়েছেন।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন, ম্যানেজার আব্দুল আলীম, অপারেটর ইনচার্জ শামসুজ্জামান শিকদার, অপারেটর খুরশিদ আলম, অপারেটর সেলিম জাহান, নির্বাহী পরিচালক মো. কামাল উদ্দিন, অফিসার সামিউল আোম এবং শান্তনু রায়, সুপারভাইজার ইদ্রীস আলী, সানাউল্লাহ, সিরাজ উদ-দৌলা, রাকিবুল এবং রাজিব। এ ছাড়াও দায়িত্বে অবহেলাকারী সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের অজ্ঞাত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আসামি করা হয়েছে মামলায়।
আড়াই ঘণ্টা আগেই বেরিয়ে যান অপারেটর ইনচার্জ:
সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে অপারেটরদের ইনচার্জ শামসুজ্জামান শিকদার। তবে ঘটনার দিন মেয়ের বিয়ের জন্য বিস্ফোরণের আড়াই ঘণ্টা আগেই কারখানা থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে না থাকলেও আমাকে আসামি করা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলামই না, তাহলে আমার দায়িত্বে অবহেলা হয় কীভাবে? ওইদিন ২টার দিকে আমার মেয়ের বিয়ের জন্য ম্যানেজারকে বলে বেরিয়ে গিয়েছিলাম আমি। অপারেটিংয়ে ছিলেন প্রবেশ লাল শর্মা, (বিস্ফোরণে নিহত) এরপর কীভাবে কী হয়েছে জানিনা।’
তবে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের একাধিক কর্মকর্তার দাবি অক্সিজেন প্ল্যান্ট অপারেশনে ত্রিশ বছরের বেশি অভিজ্ঞতা শামসুজ্জামানের। তিনিই কলম, কম্প্রেশার, সেপারেশন সবকিছু রক্ষণাবেক্ষণ করতেন। তারই অধীনে অপারেটররা অপারেটিং করতেন। তিনি উপস্থিত থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যেত বলে দাবি তাদের।
সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের অপারেটর খুরশেদ আলম বলেন, ‘আমরা শামসুজ্জামান শিকদারের অধীনে কাজ করতাম। উনিই আমাদের ইনচার্জ। ঘটনার সময় উনি ছিলেন না, ওনি দুপুরে বেরিয়ে গিয়েছিলেন মেয়ের বিয়ের কথা বলে। উনি থাকলে এই ঘটনা নাও ঘটতে পারত।’
অন্য প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীকেও আসামি করার অভিযোগ:
বিস্ফোরণের ঘটনায় করা মামলার ৭ নম্বর আসামি সেলিম জাহান। মামলার এজহারে তাকে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টের অপারেটর হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তিনি মূলত সীমা গ্রুপের আরেকটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘অক্সিকো লিমিটিড’ কারখানার অপারেটর।
তিনি বলেন, ‘আমি সীমায় কাজ করতাম না। আমি অক্সিকোর লোক। তবে একই গ্রুপের মালিকের হওয়ায় বিভিন্ন সময় সীমায় যেতাম, কিন্তু বিস্ফোরণের অন্তত তিনদিন আগ পর্যন্ত আমি সীমায় যাইনি।’
বর্তমানে অক্সিকো লিমিটেড বন্ধ থাকলেও তিনি বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন বলে জানান।
তবে মামলার বাদি রোকেয়া বেগমের ছেলে রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘অক্সিকো কিছুদিন আগে বন্ধ হয়ে গেছে। অক্সিকোর কর্মীদের সীমায় নিয়ে আসা হয়েছিল। তাই সেও অক্সিকোতে ছিল, এজন্য তাকে আসামি করা হয়েছে।’
কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ছিলেন নিহত কাদের:
অর্থাভাবে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মীদের কারখানা থেকে ছাঁটাই করায় আব্দুল কাদের আগেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছিলেন বলে এজহারে উল্লেখ করেছেন তার স্ত্রী রোকেয়া বেগম। এজহারে তিনি লিখেন, ‘১০ থেকে ১৫ দিন পূর্বে কথা বলার সময় বলেছিল যে কারখানা থেকে অর্থের অভাবে মালিকপক্ষ অনেক অভিজ্ঞ ও দক্ষ শ্রমিক-কর্মচারীকে ছাঁটাই করেছে। বর্তমানে যারা কাজ করছে তারা প্রায়ই অনভিজ্ঞ এবং অদক্ষ। আল্লাহই জানেন কখন যে কি দুর্ঘটনা ঘটে যায়। একথা শুনে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এর কয়েকদিন না যেতেই ৪ মার্চ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।’
প্ল্যান্টে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এজাহারে আরও বলা হয়, ‘ঘটনার পর তার স্বামীর কর্মস্থলের কেউ তাদের নূন্যতম খোঁজখবর নেননি, কোনো সহায়তাও করেননি।’
তার অভিযোগ, যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে বিপজ্জনকভাবে গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ, নিয়মিত পরীক্ষাপূর্বক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা না রাখা এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুর্ঘটনা মোকাবিলা করার মতো প্রশিক্ষিত জনবল না থাকায় ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছে মালিকপক্ষ:
শুক্রবার বিকেলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামাল জানান, শুরুতে নিহতদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দুই লাখ টাকা নির্ধারণ করেছিল মালিক পক্ষ। পরে মালিকপক্ষ ও সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আসেন।
সেখানে তাদের জানানো হয়েছে অন্তত বিএম কন্টেইনার ডিপুর মত নিহতদের যেন ১০ লাখ টাকা করে দেয়া হয়। যাদের অঙ্গহানি হয়েছে তাদের ৫ লাখ ও যারা সাধারণ আহত হয়েছে তাদের ২ লাখ টাকা করে দিতে হবে। মালিকপক্ষ এতে সম্মত হয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলেই নতুন নির্ধারিত অংকের চেক সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে মালিকপক্ষ।
তিনি বলেন, ‘এখানে একটা বিষয় হচ্ছে নিহতদের ১০ লাখ টাকাটা তারা দুই ভাগে দিচ্ছে। কারণ নিহত শ্রমিকদের শ্রম আউন অনুযায়ী ২ লাখ টাকা দিতে হবে। তাই শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওই দুই লাখ টাকা করে দিয়ে আমাদের ৮ লাখ টাকা করে চেক দিয়েছেন। তাছাড়া বাকীদের চেকও হস্তান্তর করা হয়েছে। চেকগুলো ইতোমধ্যে অনেকেই সংগ্রহ করেছেন, যারা করেননি সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন, ওনার কাছে জমা আছে।’
এর আগে বুধবার নিহতদের ২ লাখ টাকা করে দেয়ার কথা জানিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞাপ্তি পাঠায় সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের ব্যবস্থাপক ইফতেখার উদ্দিন।
আরও পড়ুন:টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় দুই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সোমবার (৭ জুলাই) রাতে মুন্নি খাতুন (২৫) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সিজারিয়ান অপারেশনের সময় মারা যান। এর আগে ৮ জুন ওই ক্লিনিকেই আখি খাতুন (২২) নামের আরেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরপর এমন দু’টি মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ক্লিনিক মালিকের ছেলে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেস্টা করছে বলে জানাগেছে।
সোমবার রাতে মুন্নির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ক্লিনিক মালিক আবুল হোসেনের ব্রাকপাড়া এলাকার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ। পরে তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহত মুন্নি খাতুন উপজেলার তারাগুনিয়া ব্রাকপাড়া এলাকার মঞ্জু হোসেনের মেয়ে। আর নিহত আখি খাতুন পূর্ব কবিরাজপাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
মুন্নির পরিবারের সদস্যরা জানান, গর্ভাবস্থায় জটিলতা দেখা দিলে সোমবার তাকে উপজেলার বিভিন্ন ক্লিনিকে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা ঝুঁকির কথা বলে কুষ্টিয়া বা রাজশাহীতে রেফার করার পরামর্শ দেন। সন্ধ্যায় তাকে তারাগুনিয়া থানার মোড় বাজারের আবুল হোসেনের মালিকানাধীন তারাগুনিয়া ক্লিনিক নামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হলে কর্তৃপক্ষ সিজারিয়ানে সম্মত হয়। কিন্তু রাত ৯টার দিকে অপারেশনের সময়ই মুন্নির মৃত্যু হয়।
এ বিষয়ে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের মালিক আবুল হোসেন বলেন, “রোগী কীভাবে মারা গেছে সেটা ডাক্তাররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি নিজে অপারেশনে ছিলাম না, তাই কিছু জানি না। টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।”
অপারেশনকারী চিকিৎসক ডা. সফর আলী বলেন, “রোগীকে ওটিতে আনার আগে অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসক ওষুধ প্রয়োগ করেন। আমরা ওটিতে ঢুকেই দেখি রোগী স্ট্রোক করেছে। এরপর দ্রুত নবজাতকের প্রাণ রক্ষায় সিজারিয়ান সম্পন্ন করি।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন বলেন, “একই প্রতিষ্ঠানে পরপর দুই প্রসূতির মৃত্যু অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। আজই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “গতকাল রাতে তারাগুনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় ক্লিনিক এলাকায় উত্তেজনা ও হট্টগোলের আশঙ্কায় আমি তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ পাঠাই। পরে জানতে পারি, নিহত নারীর এলাকা থেকে কিছু লোকজন ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে হামলা চালায়। আমরা দ্রুত সেখানে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শুনেছি দুই পক্ষ নিজেদের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করে নিয়েছে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এক মাসের মধ্যে দুইজন রোগীর মৃত্যু অত্যান্ত দুঃখজনক। ঘটনায় কর্তৃপক্ষকে বলবো তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
একই ক্লিনিকে এক মাসের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ (বোরহানউদ্দিন-দৌলতখানের) সাবেক সংসদ সদস্য মো: হাফিজ ইব্রাহিমের নামে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে সেলিম নামে এক ব্যক্তির দেওয়া অভিযোগটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড়মানিকায় শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিতে গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া স্বাক্ষাতকারে এ দাবি করেন হাফিজ ইব্রাহিম।
এর আগে দৈনিক ইত্তেফাক, সমকাল, যায়যায়দিন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকার ডিজিটাল প্লাট ফরমে একটি সংবাদে দেখা যায়, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে হাফিজ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ তুলে সেলিম নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকর্মীদের হাফিজ ইব্রাহিম বলেন, সংবাদটি ডিজিটাল প্লাট ফরমে প্রকাশ হওয়ার পর আমার নজরে আসে। আমি মনোযোগ দিয়ে তার অভিযোগ শুনি। যে ব্যক্তি আমার নামে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আমার নির্বাচনী এলাকার বাসিন্দা না। আমি খবর নিয়ে জেনেছি, তিনি ভোলা-১ সদর আসনের বাসিন্দা ভোলা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী মরহুম মোশারেফ হোসেন শাহজাহানের বাড়ির পাশে তার বাড়ি। আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সেলিম নামে ওই ব্যক্তির সাথে তার আপন ভাতিজি জামাইয়ের দীর্ঘদিন ধরে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ রয়েছে তার ভাতিজি জামাই তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে থাকতে পারে এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই। এমনকি ওই বিষয়ে ভোলা সদর থানায় মামলা রয়েছে।
হাফিজ ইব্রাহিম আরও বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। পতিত সরকারের পলাতক একটি কুচক্রী মহল বিএনপির নামে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে ও দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এই ঘটনার পেছনে যে আসল সত্য রয়েছে তা উদঘাটন করুন।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজশাহী মহানগরীর একটি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করেছে র্যাব-৫।
রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর টিকাপাড়া এলাকার একটি বালুর স্তূপের আনুমানিক ২ ফুট গভীর থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।
সোমবার সকালে র্যাব-৫ এর মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
অভিযানে একটি ৭.৬২ মি.মি. বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন এবং এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫; সিপিএসসি’র একটি আভিযানিক দল জানতে পারে, ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন লুট হওয়া অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ম্যাগাজিন ও গুলি দুষ্কৃতকারীরা বোয়ালিয়া থানাধীন টিকাপাড়া এলাকায় লুকিয়ে রেখেছে। পরে নিরপেক্ষ সাক্ষীদের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে বালুর স্তূপের ভেতর থেকে বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি উদ্ধার করে র্যাবের গোয়েন্দা দল।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাসস’কে জানান, এটি পুলিশের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র। তবে কোন থানার অস্ত্র সেটি নিশ্চিত করা যায়নি। কারণ পিস্তলের গায়ে বাট নম্বর ঘষা-মাজার চিহ্ন স্পষ্ট। উদ্ধারকৃত বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও গুলি বোয়ালিয়া থানায় জিডির পর হস্তান্তর করা হয়েছে।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের উদ্যোগে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট শুরু হয়েছে । উক্ত খেলা উদ্বোধন করেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ( বিএনপি) কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির ১ নং সদস্য , জেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির ।
শনিবার (৫ জুলাই) বিকাল ৪ টায় শিবালয় সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহীদ জিয়া স্মৃতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট উদ্বোধন করা হয় ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, মানিকগঞ্জ জেলা যুবদলের আহবায়ক কাজী মোস্তাক হোসেন দিপু, জেলা বিএনপির সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপি'র সহ-সভাপতি এবং জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো: লোকমান হোসেন, উপজেলা বিএনপি সভাপতি রহমত আলী লাভলু, সম্পাদক মিজানুর রহমান লিটন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, জেলা কৃষকদলের সহ-সভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ,জেলা বিএনপির সাবেক প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো: ফেরদৌস রহমান, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মো: হোসেন আলী, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক মো: শহিদুল ইসলাম ।
এছাড়া উপস্থিত ঘিওর উপজেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক মো: রাজা মিয়া মেম্বার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আসিফ ইকবাল রনি, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আখতারুজ্জামান আক্তার, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক মামিনুল ইসলাম মমিন, জেলা যুবদলের সদস্য মোসলেম উদ্দিন,জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান অয়ন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম জিহাদ প্রমূখ । সভাপতিত্ব করেন,মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার মহিদুর রহমান কাজল ।
প্রধান অতিথি এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়া রহমান এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এদেশে প্রথম ফুটবল খেলাকে আন্তর্জার্তিক পর্যায়ে নিয়ে যান। তাদের চেষ্টায় সার্ফ ফুটবল টুর্ণামেন্ট আয়োজন করার সম্ভব হয়। মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে যুব সমাজকে খেলার মাঠে আনতে হবে । মাদক মুক্ত সমাজ গড়তে হলে খেলাধুলার বিকল্প নাই ।
স্থানীয় মোহামেডান ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত টুর্ণামেন্টে নক-আউট পদ্ধতিতে আটটি দল অংশ নিচ্ছে। উদ্বোধনী খেলায় টাইব্রেকারে মানিকগঞ্জ কৈট্রা ফিউচার ফুটবল একাডেমী ৫-৪ গোলে পাবনার নবযুগ মিলন সমিতিকে হারায়। রেফারি ছিলেন আবুল কালাম।
মন্তব্য