সারা দেশে দিনে তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে রাতের তাপমাত্রা।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এমন ইঙ্গিত দেয়া হয়।
পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
দিনভর আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
তাপমাত্রার বিষয়ে পূর্বাভাসে জানানো হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়ার সঙ্গে সাধারণত গরমও একটু বাড়ে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার অবস্থা নিয়ে বলা হয়, সামান্য পরিবর্তন হতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে। শুক্রবার ঢাকায় সূর্যোদয় হবে ভোর সোয়া ৬টায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বুধবার দেশের সর্বোচ্চ ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিল রাঙ্গামাটিতে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন ১৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়।
আরও পড়ুন:যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের দ্রুত ও আন্তর্জাতিক সমাধানের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এই সমস্যার সমাধান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হাতে, বাংলাদেশের একার হাতে নয়।
শুক্রবার ঢাকার একটি হোটেলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা বিষয়টি উত্থাপন অব্যাহত রাখব। মালয়েশিয়া আমাদের এই কাজে সহযোগিতা করবে। আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না। এটি এমন একটি বিষয় যা আমাদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধান করতে হবে।’
তিনি জানান, তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কারণ এটি মালয়েশিয়ার জন্যও একটি সমস্যা। সেখানেও স্বল্পসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী রয়েছে।
ড. ইউনূস বলেন, ‘আমাদের এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। আমরা আসিয়ান, মালয়েশিয়ার সরকার এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করি।’
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে আসিয়ানের পরবর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া।
অধ্যাপক ইউনূস রোহিঙ্গা সংকটের দুটি দিক তুলে ধরেন- গত সাত বছর ধরে ১২ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে এবং এর সংঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রতি বছর গড়ে জন্ম নেয়া ৩২ হাজার শিশু।
তিনি বলেন, ‘জন্ম হার নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন নয়, তাদের জীবনে কী ঘটছে সেটাই আসল ব্যাপার। তরুণদের একটি সম্পূর্ণ নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে। এটা ক্ষুব্ধ তরুণদের একটি প্রজন্ম। তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বলেন, ‘পুরো বিশ্বের জন্য উদ্বেগের বিষয় হলো এটি একটি টিকিং টাইম-বোম্ব, যা যেকোনো উপায়ে বিস্ফোরিত হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘অবিচ্ছিন্ন প্রবাহের সঙ্গে প্রতিদিন নতুন প্রবেশও ঘটছে। এই উদ্বেগ আমি মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেছি। তিনি পুরোপুরি সমর্থন করেন এবং আমাদের অবস্থান বোঝেন।
‘মালয়েশিয়া এই সমস্যার আন্তর্জাতিক সমাধানের জন্য আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক ফোরামের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেন।
প্রসঙ্গত, সাত বছর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশু মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়।
কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
২০২৪ সালে মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো আশ্রিত রোহিঙ্গা ও আশপাশের সম্প্রদায়ে বাংলাদেশিসহ ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষকে সহায়তার জন্য ৮৫ কোটি ২০ লাখ ডলারের আবেদন করে। ইউএনএইচসিআর-এর মতে, এই আবেদনটির বিপরীতে অর্থায়ন অপর্যাপ্তই রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে সংক্ষিপ্ত সফর শেষ করে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা ত্যাগ করেন।
আনোয়ার ইব্রাহিম প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের আমন্ত্রণে সরকারি সফরে শুক্রবার ঢাকায় আসেন।
প্রধান উপদেষ্টা দুপুর ২টার দিকে তাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান। সেখানে তাকে গার্ড অফ অনার দেয়া হয়।
বাংলাদেশ সফরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী, সংসদ সদস্য (এমপি) ও শীর্ষ বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরকালে আনোয়ার ইব্রাহিম হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন।
এরপর বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি ঘণ্টা দুয়েক সময় কাটান।
আনোয়ার ইব্রাহিম ও অধ্যাপক ইউনূস দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন এবং এরপর হোটেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং সেখানে পরিদর্শক বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি ছিল বাংলাদেশে কোনো বিদেশি সরকার প্রধানের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ থেকে ১৮ হাজার শ্রমিক প্রবেশের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। একইসঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে বাংলাদেশের সঙ্গে ‘সমন্বিত কৌশলগত অংশীদারত্বের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার উল্লেখ করে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, তার সরকার সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষে প্রথম ধাপে ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিকের মালয়েশিয়ায় প্রবেশের বিষয়ে অবিলম্বে মনোযোগ দেবে।
শুক্রবার ঢাকায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী এমন প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস শ্রমিক ইস্যুতে এই ঘোষণা দেয়ার জন্য দেশের সব মানুষের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ইউএনবির এক প্রশ্নের জবাবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পুরো ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা অত্যন্ত স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। আমাদের শ্রমিক দরকার, তাদের আধুনিক দাস হিসেবে গণ্য করা যাবে না। তারা বাংলাদেশ বা অন্য যে দেশ থেকেই আসুক না কেন। আমি এখানকার মতো আগেও প্রকাশ্যে এ কথা বলেছি।’
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বাংলাদেশকে সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি বা বিদেশি- কারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দেন।
বর্তমানে আনুমানিক আট লাখ বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় বসবাস ও কাজ করছেন। তাদের মধ্যে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে চলতি বছরের মে মাসের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার লাখ অভিবাসী হয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত একান্ত বৈঠক করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি তার পুরনো বন্ধুকে ঢাকায় স্বাগত জানাতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ তারা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে একে অপরকে চেনেন।
অধ্যাপক ইউনূস ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লব, ছাত্র ও জনগণের আত্মত্যাগ এবং পূর্ববর্তী সরকারের হত্যাযজ্ঞ নিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
প্রধান উপদেষ্টা মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর নেতাদের সঙ্গে তার দীর্ঘ সম্পর্কের কথাও বলেন।
তারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকস্থলে যাওয়ার জন্য একই গাড়িতে ওঠেন।
দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তারা রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ- এই তিনটি মূল ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করেন।
অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা সহায়তা, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরা হয় বৈঠকে।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়া আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে। সে বিষয় এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এ ছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসিয়ানে বাংলাদেশের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে উত্থাপন করা হয়।
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরটি বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর এবং টেকসই বন্ধুত্বের অভিব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ‘কম্প্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ’-এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার কোম্পানি ও সে দেশে বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোর সমস্যা দ্রুত সমাধান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, দুর্নীতি, সুশাসন ও অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়ের সঙ্গে তারা আপস করেন না।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যত দ্রুত সম্ভব যৌথ কমিশনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে শুক্রবার অতি সংক্ষিপ্ত সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়।
৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়ে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দুপুর ২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে গান স্যালুট ও গার্ড অফ অনার দিয়ে অভ্যর্থনা জানান।
প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন এবং গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এটিই বাংলাদেশে কোনো সরকার প্রধানের প্রথম সফর।
বিমানবন্দর থেকে তাকে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। তিনি সেখানে পরিদর্শক বইয়ে সই করেন।
মালয়েশিয়া বাংলাদেশে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বেশ কয়েকটি কোম্পানিসহ মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে পাঁচ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। তারা শিক্ষাসহ আরও বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সংক্ষিপ্ত সফরে শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
দুপুর ২টার দিকে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন তিনি।
বিমানবন্দরে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয় আনোয়ার ইব্রাহিমকে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তাকে অভ্যর্থনা জানান।
ওই সময় গান স্যালুট ও গার্ড অফ অনারের মাধ্যমে তাকে সম্মান জানানো হয়।
প্রায় এক দশক পর মালয়েশিয়ার কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর এটিই বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম সফর।
বিমানবন্দর থেকে আনোয়ার ইব্রাহিমকে সরাসরি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হয়। একই হোটেলে প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম ও প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেন, বৈঠকে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন, জনশক্তি রপ্তানি, উচ্চশিক্ষা সহায়তা, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট খাতগুলো তুলে ধরা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনার আগে দুই নেতার একান্ত বৈঠকও হবে।
অধ্যাপক ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে চা-নাস্তা পর্বের আয়োজন করবেন।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানান, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন। তিনি সেখানে পরিদর্শন বইয়ে সই করবেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়া আসিয়ানের পরবর্তী চেয়ারম্যান হতে যাচ্ছে এবং রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে।
এ ছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আসিয়ানে বাংলাদেশের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার বিষয়টিও বিশেষভাবে উত্থাপন করা হবে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ সফর খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, এ সফর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করা এবং টেকসই বন্ধুত্বের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
৫৮ সদস্যের প্রতিনিধি দলে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বাণিজ্য ও বিনিয়োগমন্ত্রী, পরিবহন উপমন্ত্রী, ধর্ম উপমন্ত্রী, দুজন সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা আছেন।
দুই দেশের মধ্যকার ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গত আগস্টে আনোয়ার ইব্রাহিমকে শিগগিরই বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান অধ্যাপক ইউনূস।
বাংলাদেশে অষ্টম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশ মালয়েশিয়া।
পুরোনো বন্ধু অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস গত আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর ফোন করে ব্যক্তিগতভাবে তাকে অভিনন্দন জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।
সন্ধ্যা ছয়টা ২৫ মিনিটে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে জানিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে চারটি সমুদ্র বন্দরকে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র শুক্রবার আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানায়।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ স্বাক্ষরিত বার্তায় আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে বলা হয়, ‘সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে।
‘এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’
সতর্কবার্তায় চার বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জেলেদের উদ্দেশে বলা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বাংলাদেশ সফরে আসছেন শুক্রবার।
বিমানবন্দরে গার্ড অফ অনার দেয়া হবে তাকে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বেলা আড়াইটায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের সঙ্গে তার মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে ৫৮ সদস্যের প্রতিনিধিদল থাকবে।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক মোটর শোভাযাত্রা করে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।
পরবর্তী সময়ে দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় পর্যায়ে আলোচনা করবেন, যেখানে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, রাজনৈতিক সম্পর্ক, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, শ্রম অভিবাসন, শিক্ষা, প্রযুক্তি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিস্তৃত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বৈঠক বাংলাদেশ চলমান রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মালয়েশিয়ার সহায়তা কামনা করবে। পাশাপাশি আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে একটি ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে এগিয়ে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সফরসূচি অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে যৌথ বিবৃতি দেয়া হবে।
ঘোষিত সূচি অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আনোয়ার ইব্রাহিমই প্রথম সরকারপ্রধান যিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর অন্তর্বর্তী সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সংক্ষিপ্ত সফর শেষে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর এটি হবে বিদেশি কোনো সরকারপ্রধানের প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাষ্ট্রের সংস্কারে পাঁচটি কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্থার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংস্থার কমিশন এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পরে প্রজ্ঞাপনগুলো গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আট সদস্যের নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্থার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক এবং নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. বদিউল আলম মজুমদারকে।
নয় সদস্যের পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে সাবেক সচিব সফর রাজ হোসেনকে।
আট সদস্যের বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবুল নাঈম মমিনুর রহমান।
দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। এই কমিশনটিও আট সদস্যবিশিষ্ট।
এছাড়া আট সদস্যের জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরী।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য