রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির বেজমেন্টে উড়ছিল কিছু মাছি। আর তা দেখে সন্দেহ হলে ডাকা হয় র্যাবের ডগ স্কোয়াডকে। ডগ স্কোয়াডের সদস্যদের একটি জায়গায় বারবার হাঁটাহাঁটি দেখে ফায়ার সার্ভিস নিশ্চিত হয়, এই নির্ধারিত স্থানেই চাপা পড়ে আছেন কেউ।
এরপর সেখানে একটা একটা করে ইট ও ভবনের ভাঙা অংশ সরিয়ে বুধবার বিকেলে একে একে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে মরদেহ দুটি পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘রাজউক ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনটিকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছিল। এরপরও আমরা সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে একদম ম্যানুয়ালি অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।’
তিনি বলেন, ‘অভিযানকালে আমরা দেখেছি ভেতরে অনেক মাছি। তখন আমরা র্যাবের ডগ স্কোয়াডকে সেখানে ডাকি। ডগ স্কোয়াড সেখানে বারবার হাঁটাহাঁটি করে। তখন আমরা নিশ্চিত হই ওখানেই মরদেহ থাকতে পারে। আমরা একটি একটি করে ইট সরিয়ে সম্পূর্ণ ম্যানুয়ালি মরদেহ দুটি উদ্ধার করতে সক্ষম হই।’
মরদেহ উদ্ধার সম্পর্কে আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘ভবনটির একদম বেজমেন্টে অনেক ইটচাপা অবস্থায় মরদেহ দুটি পড়েছিল।’
আরও কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কি না এবং তাদের উদ্ধার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি তিনজন নিখোঁজ। এরমধ্যে আপনারা দেখতে পেলেন যে আমরা দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। এখন আমরা মালিক সমিতি, ভবন মালিক, দোকান মালিকদের সঙ্গে কথা বলবো, ক্রস চেক করবো আরো কেউ নিখোঁজ রয়েছে কি না। থাকলে উদ্ধারে চেষ্টা করা হবে।’
পরবর্তী উদ্ধার অভিযান কিভাবে পরিচালিত হবে জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা এখন তদন্ত কমিটির প্রধান ডিরেক্টর (অপস)-এর সঙ্গে বসবো, বসে প্ল্যান করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। আমরা আমাদের উদ্ধার অভিযান বন্ধ করি নাই। তবে আমরা কোনো ইন্সট্রুমেন্ট ব্যবহার করতে পারিনি। শুধু লক কাটার ব্যবহার করতে পেরেছি।’
ভবনের ভেতরে ধ্বংসস্তূপে আপনারা অস্বাভাবিক কিছু দেখেছেন কি না, বিস্ফোরণের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানতে পেরেছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা ধ্বংসস্তূপ, ধুলাবালি, ধোঁয়া দেখেছি। বিস্ফোরণের কি কারণ হতে পারে তা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কারণ বলা যাবে।’
মঙ্গলবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসি বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারের একটি ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা, আরেকটি পাঁচতলা।
এর মধ্যে সাততলা ভবন কুইন টাওয়ারের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অনেকে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে বিস্ফোরণের ঘটনায় মঙ্গলবারই ১৮ জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে উদ্ধার হয় দুই মরদেহ।
আরও পড়ুন:রাজধানীর তুরাগে মাদক মামলার আসামি ধরতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে তুরাগের ফুলবাড়িয়া বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত তুরাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ৪৫ বছর বয়সী শাহিনুর রহমানকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি বাসায় রাত সাড়ে সাতটার দিকে মাদক মামলার আসামি রশিদকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আসামির ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন এসআই শাহিনুর। তিনি বুক এবং পেটের মাঝামাঝি স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন।
ওসি জানান, গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আসামি রশিদের বিরুদ্ধে মাদক মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন:যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানের ওপর হামলার অভিযোগ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।
শুক্রবার দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র ব্রায়ান সিলার সংবাদমাধ্যমে এ বিবৃতি পাঠান।
এতে বলা হয়েছে, ‘সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খান গত সপ্তাহে তার মিরপুরের বাসার সামনে যে আক্রমণের শিকার হয়েছেন সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস অবগত আছে। আমরা আশা করছি সঠিক বিচারের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হবে।’
ফেসবুকে শুক্রবার এক পোস্টে সামি লিখেছেন, গত ১৭ মার্চ চারজন দুষ্কৃতিকারী আমার ছোট ভাই মাহিনুরকে তার পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসার সামনে রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। ব্যক্তিগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন অফিসকেও জানিয়েছি।
এ বিষয়ে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ১৭ মার্চ রাতে ঘটনার সংবাদ পেয়েই পুলিশ পাঠানো হয়। মাহিনুর আহমেদ খানের কাছে ঘটনাটি বিস্তারিত জানার পর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাকে লিখিত অভিযোগ করতে বলা হয়। তবে তিনি তখন অভিযোগ করেননি।
তিনি বলেন, তারপরও আমরা খোঁজে বের করার চেষ্টা করছি কে বা কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। শুক্রবার শাহিনুর আহমেদ খান লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন। উনি আসলেই অভিযোগ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:প্রথম রোজা ও সরকারি ছুটির দিনে আইকিউএয়ারের তালিকায় অনেক বেশি উন্নতি না হলেও বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে শীর্ষ ১০ ছাড়তে পেরেছে ঢাকা।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে শুক্রবার বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে বাতাসের নিম্ন মানে ১০০টি শহরের মধ্যে ১১তম অবস্থানে ছিল ঢাকা।
একই সময়ে বাতাসের নিম্ন মানের দিক থেকে শীর্ষে ছিল ইরাকের রাজধানী শহর বাগদাদ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল ভারতের দিল্লি ও ভিয়েতনামের হ্যানয়।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৭ দশমিক ৯ গুণ বেশি। একই সময়ে বাগদাদের বাতাসে পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল ডব্লিউএইচওর আদর্শ মাত্রার চেয়ে ২৩ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
বেলা ১১টা ৫৬ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১১১। এর মানে হলো সে সময়টাতে সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল রাজধানীর বাতাস। একই সময়ে বাগদাদের বাতাসের স্কোর ছিল ১৮২। এর অর্থ হলো ওই সময়ে অস্বাস্থ্যকর বাতাস নিতে হয় বাগদাদবাসীকে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ভুইয়াপাড়ায় নির্মাণাধীন ভবনের পাইলিংয়ের লোহার পাইপ মাথায় পড়ে এক পথচারী মারা গেছে।
খিলগাঁও ভুইয়াপাড়া নুরানী মসজিদের সামনের রাস্তায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টার দিকে ঘটনাটি ঘটে।
নিহতের বড় ভাই আবুল কাশেম স্বপন জানান, নিহত ৩০ বছর বয়সী আবুল বাছের সোহেলের বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের উপজেলার বটতলি গ্রামে। বর্তমানে তিনি খিলগাঁও ভুইয়াপাড়া এলাকায় পরিবার সন্তান নিয়ে থাকতেন। পেশায় তিনি ব্যাটারীচালিত রিকশার চালক ছিলেন।
খিলগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বিকেলে ভুইয়াপাড়া নুরানী মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার পথে নির্মানাধীন ভবনের পাইলিংয়ের লোহার পাইপ সোহেলের মাথার ওপর পরে ঘটনাস্থলেই ওই পথচারী মারা যান। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহতের বড় ভাই আবুল কাশেম স্বপন বলেন, ‘বিকেলে বাসা থেকে নুরানী মসজিদের পাশে চা খেতে যান। ওই মুহূর্তে পাইলিং মাথায় পরে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি।’
আরও পড়ুন:পবিত্র রমজান মাসে কোনো দোকানদার ক্রেতার কাছে সরকার নির্ধারিত বাজারমূল্যের বেশি নিলে এবং তা প্রমাণ হলে সংশ্লিষ্ট দোকান বন্ধ করে দেয়া হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মহাখালী কাঁচাবাজার পরিদর্শন এবং মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড উদ্বোধনকালে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন।
মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড উদ্বোধনের আগে মেয়র ঢুকে পড়েন মহাখালী কাঁচাবাজারে। প্রথমে দুটি মুদি পণ্যের দোকানে এবং পরে একটি চালের দোকানে যান। সেখানে মূল্য তালিকা অনুযায়ী দোকানে পণ্যের দরদাম পরীক্ষা করেন। এ সময় তিনি দোকানদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'ডিসপ্লেতে প্রদর্শিত নির্ধারিত মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি দাম নিলে দোকান বন্ধ করে দেব। কেউ ছাড় পাবেন না।'
ডিসপ্লে বোর্ড উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মেয়র বলেন, ‘অন্যান্য দেশে রমজান বা অন্য কোনো উৎসব এলে ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের জন্য ছাড় দেন। আর আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করেন। এটা খুবই লজ্জাজনক।
‘আমরা কাউন্সিলরকে আহ্বায়ক করে বাজার মনিটরিং কমিটি করে দিয়েছি। এছাড়া আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, কাউন্সিলররা মাঠে থাকবেন। কেউ বেশিমূল্য নিচ্ছে কি না তা জানতে আমরা মনিটরিং করব পুরো রমজান মাস।’
তিনি জানান, প্রতিদিন বিকেল ৩টায় পণ্যের দাম জানিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ডিএনসিসির মনিটরিং টিমের কাছে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হবে। সেই মূল্য পাওয়ার পর তা ডিজিটাল বোর্ডের মাধ্যমে সবার কাছে তুলে ধরা হবে।’
মহাখালী কাঁচাবাজারে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রুহুল আমিন, ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহ. আমিরুল ইসলাম, সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আ. ন. ম তরিকুল ইসলাম, অঞ্চল-৩ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল বাকী, বাজার মনিটরিং কমিটির আহ্বায়ক ও ৩২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ হাসান নূর ইসলামসহ অন্যান্য কাউন্সিলর এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:পবিত্র রমজানে রাজধানীতে যানজটের মাত্রা কমিয়ে আনতে ১৫টি নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া শাখা থেকে নির্দেশনাগুলো জানানো হয়।
নির্দেশনাগুলোর বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শহরকে যানজটমুক্ত রাখতে আমাদের পুলিশ সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। রমজানে সাধারণ মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সবার জন্য এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সবাইকে আইনে মেনে চলার অনুরোধ থাকছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ঢাকা মহানগরীতে দূরপাল্লার ও আন্তঃজেলা বাস টার্মিনালের ভেতরের কোনো বাস সড়কে রেখে বা থামিয়ে যাত্রী উঠাবে না। সংশ্লিষ্ট বাসের প্রতিনিধিদের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে।
২. ঢাকা মহানগরীতে আন্তঃজেলা ও দূরপাল্লার বাসগুলো টার্মিনাল সংলগ্ন প্রধান সড়কের অংশ দখল করে দাঁড়াবে না।
৩. ভ্রমণকালে ঢাকা মহানগরের প্রবেশ ও বের হওয়ার পথে গণপরিবহনগুলোকে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
৪.ঢাকা মহানগরী থেকে ছেড়ে যাওয়া দূরপাল্লার যানবাহনকে অতিরিক্ত যাত্রী ও মালামাল বহন থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. আন্তঃজেলা পরিবহনের যাত্রী বা গমন প্রত্যাশীদের প্রধান সড়কে এসে অপেক্ষা বা দাঁড়িয়ে না থেকে টার্মিনালের ভেতরে অবস্থান করার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
৬. ঢাকা মহানগরী থেকে দূরপাল্লার রুটপারমিটবিহীন বা অননুমোদিত রুটে কোনো বাস চলাচল করবে না। সংশ্লিষ্ট সবাই বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলবেন এবং কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করবেন।
৭. বাসে যাত্রীদের অপরিচিত কারও কাছ থেকে কিছু না খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
৮. সংশ্লিষ্ট যাত্রীরা অবশ্যই যানবাহনে টিকিট সঙ্গে রাখবেন।
৯. যাত্রীদের মালামাল নিজ হেফাজতে সাবধানে রাখবেন।
১০. কোনো যানবাহনই ছাদে ও অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না।
১১. যাত্রী তোলার ক্ষেত্রে বাসের চালকরা এমন কোনো অসম প্রতিযোগিতায় অংশ নেবেন না যাতে সড়কে শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটে ও জীবনহানির আশঙ্কা থাকে।
১২. সকালে অফিসে গমনাগমনকারী প্রত্যেককে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসা থেকে রওনা হবেন।
১৩. ইফতারের আগে আগে বাসায় রওনা না দিয়ে পর্যাপ্ত সময় হাতে নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
১৪. স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের ক্ষেত্রে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, বাস ইত্যাদি বাহন ব্যবহার না করে হেঁটে চলাচল করবেন।
১৫. টার্মিনালভিত্তিক কাউন্টারগুলোতে ভাড়ার চার্ট প্রদর্শন করতে হবে।
ইফতার সামগ্রী তৈরিতে পোড়া তেল, বিষাক্ত নন-ফুড গ্রেড কালার ও কেমিক্যাল ব্যবহার না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আসন্ন রমজানে খাবারে হাইড্রোজসহ কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার, পরিবেশনের ক্ষেত্রে নন-ফুড গ্রেড প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার, রান্নার জায়গায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, ডাস্টবিন ও খাবার তৈরির উপাদান/রান্না করা খাবার পাশাপাশি রাখা থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানানো হয়।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে হোটেল-রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী ও চকবাজার ইফতার সামগ্রী বিক্রয়কারী ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বিষয়ক এই সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার এই আহ্বান জানান।
সভায় খাবার খোলা অবস্থায় বিক্রির জন্য সংরক্ষণ, বিক্রয়কারী ও পরিবেশনকারীদের হ্যান্ড গ্লাভস ও ক্যাপ না থাকা, খাবার পরিবেশনের কাজে খবরের কাগজ ব্যবহার, খাবার তৈরিতে নন-ফুড গ্রেড কালার ব্যবহার, পোড়া তেল ব্যবহার, বাসি খাবার ফ্রিজে সংরক্ষণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি তার বক্তব্যে নানামুখী অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ঢালাও অভিযোগ না করার আহ্বান জানান। তিনি অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির বিধান করার আহ্বান জানান।
চকবাজারে ফুটপাতে ও ইফতারসামগ্রী বিক্রির দোকানে অভিযান পরিচালনা করে চকবাজারের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার কথা বলেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ.এইচ.এম. সফিকুজ্জামান।
বক্তব্য দেন পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারসহ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালক, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, বাংলাদেশ রেঁস্তোরা মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক, বিভিন্ন হোটেল-রেঁস্তোরা সমিতির প্রতিনিধিবৃন্দ, চকবাজারের বিভিন্ন ইফতারসামগ্রী বিক্রেতাসহ অন্য ব্যবসায়ীবৃন্দ এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।
বাংলাদেশ রেঁস্তোরা মালিক সমিতির মহাসচিব আলোচনায় বিভিন্ন রেস্তোঁরার মালিক ও কর্মচারীদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেয়া ও সচেতন করার কথা বলেন।
মন্তব্য