× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

বাংলাদেশ
Chhatra League leaders trying to tarnish Prof Tanjims image Students statement
google_news print-icon

অধ্যাপক তানজীমের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের চেষ্টায় ছাত্রলীগ নেতা: শিক্ষার্থীদের বিবৃতি

অধ্যাপক-তানজীমের-ভাবমূর্তি-ক্ষুণ্নের-চেষ্টায়-ছাত্রলীগ-নেতা-শিক্ষার্থীদের-বিবৃতি
ঢাবি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। কোলাজ: নিউজবাংলা
আত্মহত্যার চেষ্টা করা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক এসএম এহসান উল্লাহ ওরফে ধ্রুব যে ক্লাসে অধ্যাপক তানজীমের বিরুদ্ধে অপমানের অভিযোগ করেছেন, সেই ক্লাসে উপস্থিত ৫৩ শিক্ষার্থী বিবৃতি দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে অপমানের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগের যে নেতা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন, তার বিরুদ্ধে একজোট হয়ে শনিবার রাতে বিবৃতি দিয়েছেন সহপাঠীরা।

আত্মহত্যার চেষ্টা করা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক এসএম এহসান উল্লাহ ওরফে ধ্রুব যে ক্লাসে অধ্যাপক তানজীমের বিরুদ্ধে অপমানের অভিযোগ করেছেন, সেই ক্লাসে উপস্থিত ৫৩ শিক্ষার্থী ওই বিবৃতি দেন।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, এহসান ধ্রুবর সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার কার্যকারণ ব্যক্তিগত। ধ্রুব নিজের রাজনৈতিক পরিচয় জুড়ে দিয়ে একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করছেন।

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বলা হয়, একজন নারী শিক্ষার্থীকে হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করতে একজন সচেতন শিক্ষকের যে ভূমিকা পালন করার কথা, অধ্যাপক তানজীম তাই করেছেন। ধ্রুবর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক উসকানি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও অমূলক এবং তা প্রতিরোধ করতে তারা সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করবেন।

বিবৃতিতে সেদিনের ক্লাসে উপস্থিত ৫৩ শিক্ষার্থীর সবার স্বাক্ষর দেওয়া আছে। ওই বিজ্ঞপ্তির সমর্থনে ব্যাচের আরও ২১ শিক্ষার্থী স্বাক্ষর দিয়েছেন।

এতে বলা হয়, ঘটনার দিন ক্লাসে প্রায় ৬০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এহসান ধ্রুব তার ফেসবুক প্রোফাইলে বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানকে দোষী উল্লেখ করে আত্মহননের ঘোষণা প্রচার করেন। সেই পোস্টে তিনি তানজীম স্যারকে প্রেরণ করা একটি মেইলের স্ক্রিনশটও যুক্ত করেন। এহসান ধ্রুবর প্রচারিত একপাক্ষিক বার্তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি মহল বিভ্রান্তিবশত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ প্রচার করতে শুরু করে এবং ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে অবস্থান গ্রহণ করে। এই প্রেক্ষিতে জনমনে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি দূর করতে আমরা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীবৃন্দ, যে ঘটনার প্রেক্ষিতে এহসান ধ্রুবর এই প্রতিক্রিয়া সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে নিজেদের বক্তব্য এবং অবস্থান স্পষ্ট করছি।’

এতে বলা হয়, “ঘটনার শুরু ২ মার্চ, বৃহস্পতিবার বিকেলে, তানজীম স্যারের ক্লাস চলাকালীন। সম্ভবত ক্লাস শুরু হওয়ার আগে এহসান ধ্রুব স্বপ্রণোদিত হয়ে তানজীম স্যারের কাছে ব্যাচের একটা বিষয়ে অভিযোগ দেয়। যে ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিযোগ, সেই ঘটনায় তার (ধ্রুব) কোনো সংশ্লিষ্টতাও নেই। সে (ধ্রুব) ক্লাসে আসার আগেই স্যার আমাদের ক্লাস শুরু করেন এবং ইতোমধ্যে তিনি সহপাঠীদের নিয়ে গুজব ছড়ানোকে ইর‍্যাশনাল বিহেভিয়ার (অযৌক্তিক আচরণ) হিসেবে অভিহিত করেন। এরপরে তিনি আমাদের পড়ানো শুরু করেন।

“ক্লাসের মাঝামাঝি সময়ে এহসান ধ্রুব ক্লাসরুমে প্রবেশ করে। ক্লাসের শেষের দিকে স্যার ধ্রুবকে দাঁড়াতে বলেন এবং তার রটানো গুজবের সূত্র সমন্ধে জানতে চান। ধ্রুব কোনো ব্যক্তির নাম প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এর বদলে স্ক্রিনশট দেখানোর ইচ্ছা পোষণ করে। তানজীম স্যার এরপরও নাম বলায় গুরুত্ব আরোপ করলে সে নাম বলতে ব্যর্থ হয়। তানজীম স্যার তখন সহপাঠীদের নামে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হতে বারণ করেন। প্রত্যুত্তরে এহসান ধ্রুব আশ্চর্জজনকভাবে ‘They conspired against me so I conspired against them’ (তারা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে বলে আমিও তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছি) এই স্বীকারোক্তিমূলক বাক্যটি ব্যবহার করে যা শুনে স্বাভাবিকভাবে আমরা অবাক হই।

“এরপর তানজীম স্যার তাকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে নিজের সহপাঠীদের সম্পর্কে কী বলা যায় আর যায় না সেটি তার বোঝা উচিত। প্রত্যুত্তরে যখন ধ্রুব কিছু বলতে চায়, তখন স্যার তাকে থামিয়ে বলেন যে, একজনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার কারণে সেই ব্যক্তির সম্পর্কে কুৎসা রটনা করার অধিকার তার (ধ্রুব) নেই। এরপর স্যার ক্লাস থেকে বেরিয়ে গেলে ধ্রুব তার কাছে ক্ষমা চাইতে যায়। পরবর্তীতে স্যার তার সাথে নিচে নেমে তাকে ফুচকা খাওয়ান।”

বিবৃতিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের সহপাঠী ধ্রুবর ফেসবুক পোস্ট এবং আত্মহননের চেষ্টা বেশ দুঃখজনক, কিন্তু একটা ব্যাপার ভালোভাবে স্পষ্ট করা প্রয়োজন যে, এই পুরো ঘটনার সাথে এহসান ধ্রুবর রাজনৈতিক পরিচয়ের কোনোই যোগসূত্র ছিল না। এহসান ধ্রুবকে খুঁজে বের করতে আমাদের ব্যাচ এবং সম্পূর্ণ বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ সর্বাধিক তৎপরতা প্রদর্শন করেছে। আমরা তার দ্রুততম সুস্থতা কামনা করছি, তবে ওপরে বর্ণিত প্রেক্ষাপট এবং পরশু থেকে এখন অব্দি ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে কিছু কথা স্পষ্ট করা অত্যধিক জরুরি।

‘এহসান ধ্রুবর সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার কার্যকারণ একান্তই ব্যক্তিগত। এই ঘটনায় অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানের ভূমিকা অত্যন্ত দায়িত্বশীল ছিল এবং তা নির্দ্বিধায় প্রশংসার দাবিদার। একজন নারী শিক্ষার্থীকে হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করতে একজন সচেতন শিক্ষকের যে ভূমিকা পালন করার কথা, তিনি তাই করেছেন। ঠিক কী কারণে এহসান ধ্রুব এই ঘটনার সাথে নিজের রাজনৈতিক পরিচয় জুড়ে দিয়ে একজন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করল, তা ক্লাসে উপস্থিত পঞ্চাশের অধিক শিক্ষার্থীর কাছে দুর্বোধ্যই বটে।’

তারা বলেন, ‘তানজীম স্যার এই ঘটনা চলমান অবস্থায় ছাত্রলীগ কিংবা কোনো প্রকার রাজনৈতিক পরিচয়ের দিকে বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত না করলেও স্যারের নামে এই ধরনের কুৎসা রটানো কিংবা বিদ্বেষমূলক আচরণ সত্যিই দুঃখজনক। এহসান ধ্রুবর ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক উসকানি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক ও অমূলক এবং তা প্রতিরোধ করতে শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের প্রত্যেক শিক্ষার্থী সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করবে, এই প্রত্যয় আমরা ব্যক্ত করতে চাই। পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক এবং শিক্ষার্থী মহলকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।’

বিচার চেয়ে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খানের বিচার চেয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।

তাদের অভিযোগ ছিল, অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান তাদের নেতা ধ্রুবকে ক্লাসে অপমান করেছেন। সে অপমান সহ্য করতে না পেরে তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।

সংগঠনটির ভাষ্য ছিল, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ধ্রুব। পরে তাকে শহীদুল্লাহ হলের পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ফেসবুক স্ট্যাটাস

আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ছাত্রলীগ নেতা এ নিয়ে ‘এন্ড অফ দ্য জার্নি’ শিরোনামে ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, সালাম জানবেন। আমার খুব ইচ্ছা ছিল আপনার সাথে দেখা করার; আপনার একটা ছবি তোলার। পূরণ হলো না। জীবনের সব ইচ্ছা পূরণ হয় না। কী আর করা, কিন্তু আপনার কাছে আমি আমার সাথে হওয়া অন্যায়ের বিচার দিয়ে গেলাম!’

পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘প্রিয় তানজিম স্যার, আপনার পরে আমার আর কোনো রাগ নেই। ভালো থাকবেন। বাবা মা, ক্ষমা করে দিও।

‘ভেবেছিলাম দোকান ঘুরে ঘুরে দুই-একটা করে কিনব। এক দোকানেই দুই পাতা বিক্রি করল। সন্দেহ হচ্ছে ঔষধে ভেজাল আছে। যদি ভেজাল না থেকে থাকে তাহলে এন্ড অফ দ্য জার্নি (যাত্রা বা জীবনের সমাপ্তি)।’

এই পোস্টের নিচে ধ্রুব অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খানকে মেইল করার একটি স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করেন। সেই মেইলের সাবজেক্ট দেয়া হয়েছে ‘থ্যাংকস ফর কিলিং মি স্যার।’

মেইলে ধ্রুব লিখেছিলেন, ‘আই ডিড’ন্ট ডিজার্ভ দ্যাট। আই ওয়েন্ট টু ইউ অ্যাজ মাই টিচার কজ আই ওয়াজ’ন্ট গিল্টি। ইফ ইউ ওয়ান্টেড টু প্রিভেন্ট দ্য রিউমার, ইউ কুড ডু ইট জাস্ট বাই ওয়ার্নিং এভরিওয়ান, বাট ইউ চুজ টু হিউমিলিয়েটেড মি (আমি এটা আশা করিনি। শিক্ষক বলে আপনার কাছে গিয়েছিলাম, কারণ আমি দোষী ছিলাম না। গুজব ঠেকাতে চাইলে আপনি সবাইকে সতর্ক করে সেটা করতে পারতেন, কিন্তু আপনি আমাকে অপমান করার সিদ্ধান্ত নিলেন)।

‘আপনি আপনি যতই অস্বীকার করেন, আমি ছাত্রলীগ করি বলে আপনি এমন করেছেন। ডিইউ ক্যাম্পাস নোজ মি মোর অ্যাজ আ ফটোগ্রাফার দ্যান এ বিএসএল অ্যাকটিভিস্ট (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কর্মীর চেয়ে ফটোগ্রাফার হিসেবেই আমার বেশি পরিচিতি)। আমি রাজনীতিতে সক্রিয়ও না দীর্ঘদিন ধরে। আমার সাথেই অন্যায় করা হয়েছে, আপনিও আমার সাথে অন্যায় করলেন। থ্যাংকস ফর কিলিং মি (আমাকে হত্যার জন্য ধন্যবাদ)।’

কী বলেছিলেন অধ্যাপক তানজীম

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান শুক্রবার নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, “গত সোমবার এহসান আমার রুমে আসে। রুমে এসে সে নিজের পরিচয় দিয়ে গত বছর হওয়া একটি ট্যুর নিয়ে একটা মেয়েকে ঘিরে খুব অশ্লীল কথা বলে। এরপর আমি তাকে বলি, তুমি কার সামনে এসব কথা বলছ? আমি তোমার শিক্ষক। আর আমিই তো তাদের ট্যুরে নিয়ে গেছি। আর আমি কি এতটাই দায়িত্বজ্ঞানহীন যে, আমার উপস্থিতিতে আমার শিক্ষার্থীরা এসব কাজ করবে?

“এরপর সে বলে, ‘স্যার এটা সত্য। এটা অনেকেই বলাবলি করছে।’ তারপর আমি বলি, যারা বলছে, তুমি আমাকে নামগুলো বলো। ডিপার্টমেন্ট নিয়ে এত বাজে কথা; এগুলো বন্ধ হওয়া জরুরি। এর মধ্যে সে ওই মেয়েটাকে নিয়ে অনেক কথা বলার চেষ্টা করছে। আমি তাকে বলি, এটা তোমাদের পারসোনাল সমস্যা। আমি এটা নিয়ে আলাপ করতে চাই না।”

তিনি বলেছিলেন, ‘পরে শুনেছি এই ছেলের সাথে সেই মেয়ের বন্ধুত্ব ছিল। একপর্যায়ে এই ছেলে সেই মেয়েকে প্রপোজ করে, কিন্তু মেয়েটি রাজি হয়নি। ধ্রুবর ভাষ্য, রিজেক্ট করার পর থেকে সেই মেয়ে এবং তার বন্ধুরা তাকে অপদস্ত করে বেড়ায়।’

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ অধ্যাপক বলেছিলেন, ‘সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার এক শিক্ষকের অনুরোধে আমি তাদের একটা ক্লাস নিতে যাই। যদিও তাদের কোনো কোর্স আমি পড়াই না। তখন ক্লাস শেষে আমি তাকে দাঁড় করাই। তাকে বলি, তুমি যে সুন্দরবন ট্রিপ নিয়ে এত আজেবাজে কথা বলছো আর সেটি আমার রুমে গিয়ে আমাকেও বলেছো, এটা কি ঠিক? তোমার আশেপাশে থাকা সবাই তো তোমার বন্ধু। তাদের সম্পর্কে কি এত আজেবাজে কথা বলা যায়?

‘এরপর আমি তাকে বলি, এই রিউমারটা থামানো জরুরি। কারণ এটি আমার এবং ডিপার্টমেন্টের জন্য খারাপ। তুমি যদি অনেস্ট হও তাহলে যারা এটি তোমাকে বলেছে তাদের নামগুলো বলো। কারণ এটি আর বেশিদূর আগানো উচিত না। এরপর সে নাম বলতে না চাইলে আমি তাকে বলি, ওকে। এবার মুখটা স্টপ করে বসো। আমি আর এই বিষয়ে কথা বলতে চাই না।’

তানজীমউদ্দিন বলেছিলেন, “এরপর সে বসা থেকে আবার উঠে দাঁড়ায়। সে বলে, ‘স্যার আমি কিন্তু ঠিক আছি।’ তখন আমি বলি, আমি এটা নিয়ে আর কোনো কথাই বলতে চাই না। এরপর আমাদের ক্লাস শেষ হয়ে যায়। তখন সে আবার আমার সামনে আসে। আমি তাকে বলি, তুমি আমার থেকে দূরে থাকো। আমি কথা বলতে চাই না।

“এরপর আমি আরও কিছুদূর আগানোর পর সে আবার আসে। বলে, ‘স্যার আপনি আমাকে হিউমিলিয়েট (অপমান) করেছেন। মেয়েটা এবং তার বন্ধুরাও আমাকে হিউমিলিয়েট করে।’ আমি তাকে বলি, তাদের হিউমিলিয়েশনের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। আমি তোমার কাছে শুধু জানতে চেয়েছি, কারা এগুলো ছড়াচ্ছে। এর বেশি কিছু তো আমি তোমার কাছ থেকে জানতে চাইনি। এরপর আমি যখন লিফটের সামনে যাই, তখন সে কান্নাকাটি করে আমাকে বলে, ‘আমি আত্মহত্যা করলে আপনি দায়ী থাকবেন।’ এসব বলে সে চলে যায়।”

পরের অবস্থা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এ শিক্ষক বলেছিলেন, “পরে আমি নিচে নেমে তার দুজন সহপাঠীর সাথে কথা বলছিলাম। তখন ধ্রুব আমাদের ক্রস করে চলে যাচ্ছিল। তখন আমি তাদের দুজনকে বললাম যে, ধ্রুবকে একটু ডাকো; আমি একটু কথা বলি। সে আসলে আমি তাকে বলি, তুমি কি কোনো মানসিক চাপে আছো? আমি তাকে বলি, তুমি কি দুপুরবেলা বা সকালে খেয়েছ? সে বলে, ‘না স্যার।’ তখন আমি তাকেসহ আরও কয়েকজনকে নিয়ে খেতে যাই।

“এরপর ফুচকা খাই। এ সময় আমি তাকে বোঝালাম যে, একটা মেয়ের ঘটনা নিয়ে কেন তুমি পিছনে পড়ে থাকছো? তোমার কাজ তো পড়ালেখা করা। মন দিয়ে পড়াশোনাটা করো। তখন সে আবারও বলল যে, আমি তাকে হিউমিলিয়েট করেছি। আমি বলি, তুমি মানসিক চাপে আছো। তোমার বাবার নম্বরটা আমাকে দাও। আমি কথা বলি।

“এরপর সে আবার বলে, ‘স্যার আপনি আমাকে হিউমিলিয়েট করেছেন, কারণ আমি ছাত্রলীগ করি।’ তার কথা শুনে আমি আকাশ থেকে পড়ি। বলি ছাত্রলীগের সাথে এটার কী সম্পর্ক? এটাকে এভাবে দেখো না। সে বলে, ‘না, ছাত্রলীগ করি বলেই আপনি আমাকে অপমান করেছেন।’ এরপর তাকে আরও বুঝিয়ে আমি বাসায় চলে যাই।

“এরপর রাতে যখন আমি শিক্ষক ক্লাবে যাই, তখন একজন ছাত্রের মাধ্যমে আমি পোস্টের বিষয়টা জানতে পারি। এরপর তার বাবাকে ফোন দিই। তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার মা ফোন ধরে। উনার সাথে আমি কিছুক্ষণ কথা বলি। এরপর আমি তার হলে তার কয়েকজন বন্ধুকে পাঠাই। তারা তাকে খুঁজে পায়নি। পরে আমি তাকে কল দিই। সে ফোন কেটে দেয়। এরপর আমার সাবেক এক শিক্ষার্থীকে আমি তার নাম্বারটা দিয়ে তাকে লোকেট করতে বলি। পরে তার অবস্থান জানা যায়।”

আরও পড়ুন:
ভারতে মামলায় খালাস: দেশে ফেরার অপেক্ষায় সালাউদ্দিন
ইবিতে নির্যাতন: ৫ ছাত্রীকে বহিষ্কারের নির্দেশ হাইকোর্টের
নারায়ণগঞ্জে মিলের আগুন নিয়ন্ত্রণে, জ্বলছে গুদাম
পরীমনির ঘুম নেই, ভক্তরা কি খবর রাখেন
প্রাইভেটকারের ধাক্কায় গেট পড়ে নিরাপত্তাকর্মী নিহত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

বাংলাদেশ
Clash between three groups of Chabi Chhatra League heated campus

চবি ছাত্রলীগের তিন গ্রুপে সংঘর্ষ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

চবি ছাত্রলীগের তিন গ্রুপে সংঘর্ষ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় চবি শাখা ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপ। ছবি: নিউজবাংলা
চবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের জের ধরে শুক্রবার দুপুর থেকেই দুই গ্রুপের মধ্য উত্তেজনা বিরাজ করে; সন্ধ্যায় তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে নেতার লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের আরেকাংশের (সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের তিনটি গ্রুপের মধ্যে ভিন্ন ঘটনায় ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন।

পূর্বরোষের জেরে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সংঘর্ষে জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের (সহ-সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা। অপরদিকে একই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে নেতার লাইনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় বিজয় ও সিএফসি গ্রুপের আরেকাংশের (সভাপতির অনুসারী) কর্মীরা।

বিবাদমান গ্রুপগুলোর মধ্যে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী এবং সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত৷

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু। অন্যদিকে সিএফসির একাংশের নেতৃত্বে রয়েছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল, অন্য অংশের নেতৃত্বে আছেন সহ-সভাপতি সাদাফ খান। বিজয় গ্রুপের নেতৃত্বে দিচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস।

চবি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের জের ধরে শুক্রবার দুপুর থেকেই দুই গ্রুপের মধ্য উত্তেজনা বিরাজ করে; সন্ধ্যায় তা সংঘর্ষে রুপ নেয়। এসময় সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহজালাল হল ও সিএফসির কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে একে অপরের দিকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।

সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।

চবি ছাত্রলীগের তিন গ্রুপে সংঘর্ষ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের সদস্য মোহাম্মদ শরীফ উদ্দীন বলেন, ‘আগের ঘটনার জের ধরে জুম’আর নামাজের পর সিক্সটি নাইন গ্রুপের আকিব জাবেদ আবারও আমাদের গ্রুপের সিনিয়রদের গালিগালাজ করে। এই ঘটনার রেশ ধরেই সন্ধ্যায় ঝামেলা হয়।’

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘দুই গ্রুপের মধ্য উত্তেজনা দেখা দিয়েছিল। সমাধানের জন্য আলোচনা চলছে।’

লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ

এদিকে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটে লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় সিএফসির একাংশ ও বিজয় গ্রুপের কর্মীরা।

ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা জানান, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তায় অবস্থান নেয় দুটি গ্রুপের কর্মীরা। এসময় দুই গ্রুপের কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি শুরু হয়।

এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘কোনো ঝামেলা হয়নি। প্রোগ্রাম শেষে জুনিয়রদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হতে পারে, আমার জানা নেই।’

তবে বিজয় গ্রুপের নেতা শখা ও ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

চবি ছাত্রলীগের তিন গ্রুপে সংঘর্ষ, উত্তপ্ত ক্যাম্পাস

থমথমে ক্যাম্পাস

বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষের পর থেকে ক্যাম্পাস জুড়ে উত্তেজনা ও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শুক্রবার দুপুরেও সিক্সটি নাইন ও সিএফসি গ্রুপের কর্মীদের পাল্টাপাল্টি স্লোগান দিতে শোনা যায়। সন্ধ্যায় চলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘মারামারিতে আহত চারজন আমাদের এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।’

সার্বিক বিষয়ে সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি৷ দুই পক্ষকে শান্ত করে হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির বৈঠক চলছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন:
বহিষ্কার কাগজে-কলমে, দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্যাম্পাসে
চবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৬
প্রক্টরকে চবি ছাত্রলীগের স্মারকলিপি, ৭ দাবি

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Today I came back to school after 51 years

‘৫১ বছর পর আবার স্কুলে এসেছি’

‘৫১ বছর পর আবার স্কুলে এসেছি’ কুমিল্লায় শুক্রবার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে র‍্যালি বের করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেন, ‘নবাব ফয়জুন্নেছা উপমহাদেশের গর্ব। আমি তার জীবনী পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তার বাড়িটিকে প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য জাতীয় সংসদে কথা বলেছি।’

‘আজ ৫১ বছর পর আবার স্কুলে এসেছি। আমাদের অনেক শিক্ষক, অনেক বান্ধবী আজ বেঁচে নেই। তাদের কথা খুব মনে পড়ছে।’

কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রী ও এসএসসি ৭১ ব্যাচের শিরিন হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন স্কুলে পড়ি, তখন যুদ্ধ চলছিল। স্কুল থেকে আমরা দেশের জন্য স্বাধীনতার স্লোগান দিতাম। ওইবার আমাদের পরীক্ষা হয়নি। পরের বছর আমরা পরীক্ষা দিয়েছি।’

কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার স্কুলটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা একত্রিত হন স্কুল প্রাঙ্গণে। সেখানে সবাই তাদের ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করেন।

পল্লী বিদ্যুতের কর্মকতা আফজালুন নেছা বলেন, ‘৩৬ বছর পর বান্ধবীদের সঙ্গে দেখা হলো। আমি গতকাল (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি দেখতে স্কুল মাঠে ছিলাম। আমরা ৮৯ ব্যাচের ছয়জন বান্ধবী আজ (শুক্রবার) দেখা করেছি; একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছি।’

খিলগাঁও মডেল কলেজের সহযোগী অধ্যক্ষ ইয়াকুতেন্নেছা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘৫৭ বছর আগের কথা। আব্বা আমাকে হাতে ধরে স্কুলে এনেছিলেন।

‘সেদিনের কথা মনে পড়ছে। কী যে আনন্দ লাগছে! আমি এ স্কুলের এসএসসি ৬৬ ব্যাচ।’

ইয়াকুতেন্নেছার পাশে থাকা তার বান্ধবী রওশন আক্তার বেগম আনন্দ নিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে আজ ঈদ মনে হচ্ছে। আমি এ আয়োজনে যোগ দিতে কত বছর ধরে যে অপেক্ষা করছিলাম।’

ওই সময় ৯১ ব্যাচের ছাত্রী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জোবাইদা নূর খান বলেন, ‘সপ্তাহের সব দিন আমাদের কাছে আনন্দের ছিল। স্কুলের ম্যাম যারা ছিলেন, তারা সবাই কড়া শাসনে রাখতেন। তাদের এমন শাসনের কারণে আজ আমিও শিক্ষক হয়েছি; সম্মানিত হয়েছি।’

দেড় শ বছর পূর্তি উপলক্ষে সকাল ৯টায় কুমিল্লা টাউন হল থেকে আনন্দ র‍্যালি বের হয়। র‍্যালি উদ্বোধন করেন কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম বাহাউদ্দীন বাহার।

অনুষ্ঠান উদ্বোধন শেষে তিনি বলেন, ‘নবাব ফয়জুন্নেছা উপমহাদেশের গর্ব। আমি তার জীবনী পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তার বাড়িটিকে প্রত্নসম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করার জন্য জাতীয় সংসদে কথা বলেছি।

‘আমাদের সৌভাগ্য নারী জাগরণের অগ্রদূত নবাব ফয়জুন্নেছা আমাদের কুমিল্লার মেয়ে। তিনি কুমিল্লাকে সমৃদ্ধ করেছেন।’

আরও পড়ুন:
শিক্ষা অফিসারের রোষানলে পদ গেল প্রধান শিক্ষকের
কুমিল্লায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে জলাবদ্ধতা, বিশুদ্ধ পানির সংকট
নদীগর্ভে চিলমারীতে বিলীন স্কুলের পাঠদান রৌমারীতে
ভরা বর্ষায় ফুলকপি চাষে সাড়া জাগাচ্ছেন রাসেল
ছাগলের পাতা খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষে প্রাণ গেল একজনের

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Jabi Senate Teacher Election Date Announced

জাবি সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

জাবি সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার। ফাইল ছবি
১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অফিসার ক্লাবে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।

দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামী ১৬ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সিনেট শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও সিনেট নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবু হাসান বৃহস্পতিবার তার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনের সাময়িক ভোটার তালিকা প্রকাশ হবে ২৪ সেপ্টেম্বর। সাময়িক ভোটার তালিকার ব্যাপারে আপত্তি জমার সময় ২৬ সেপ্টেম্বর। এ ছাড়া চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ ২৭ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র জমার শেষ সময় ২ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৪ অক্টোবর ও বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ হবে ৫ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৮ অক্টোবর ও ৯ অক্টোবর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে।

১৬ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অফিসার ক্লাবে ভোটগ্রহণ হবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবু হাসান বলেন, ‘এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হলেও এখন নিয়মতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

‘ভোটগ্রহণে যতটুকু প্রস্তুতি প্রয়োজন, তা নেয়া হবে। নির্বাচনের দিন যথাযথ প্রক্রিয়ায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ১৯(১)(জে) ধারা অনুযায়ী সিনেট সদস্য হিসেবে ৩৩ জন শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়ে থাকে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মেয়াদ তিন বছর হলেও পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচিত সব সদস্য সিনেটর হিসেবে বহাল থাকেন।

২০১৫ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ জাবির সিনেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন হয়েছিল।

মন্তব্য

বাংলাদেশ
He is walking around the campus with expulsion papers
চবি ছাত্রলীগ

বহিষ্কার কাগজে-কলমে, দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্যাম্পাসে


বহিষ্কার কাগজে-কলমে, দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন ক্যাম্পাসে চবি ক্যাম্পাসে সাংবাদিককে মারধর করে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হওয়া শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিতে দেখা যায়। ছবি: নিউজবাংলা
চবি ক্যাম্পাসে এক সাংবাদিককে মারধর করে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন শাখা ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। অথচ বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিতে দেখা যায় তাদের।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অনিয়মে বহিষ্কারের আইনটি যেন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। চবি শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতা ক্যাম্পাস থেকে বহিষ্কৃত হলেও ক্যাম্পাসেই দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায় তাদের।

বহিষ্কৃত হয়েও তারা থাকছেন হলে, করছেন নিয়মিত ক্লাস, দিচ্ছেন পরীক্ষা। আবার রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও তাদের নিয়মিত অংশ নিতে দেখা যায়।

চবি ক্যাম্পাসে এক সাংবাদিককে মারধর করে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন শাখা ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা। অথচ বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মোটরসাইকেল নিয়ে শোডাউন দিতে দেখা যায় তাদের।

ওই দুই নেতা হলেন শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপদপ্তর সম্পাদক আরাফাত হোসেন রায়হান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, বহিষ্কারের মেয়াদের মধ্যে বহিষ্কৃত কেউ ক্যাম্পাসে কিংবা হলে অবস্থান করতে পারবেন না। এ ছাড়া কোনো অ্যাকাডেমিক কার্যক্রমেও অংশ নিতে পারবেন না।

এ নিয়ে গত ১৪ আগস্ট প্রক্টরকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ, তবে চিঠি দিয়েও মেলেনি প্রতিকার।

আক্ষেপ করে ভুক্তভোগী এ সাংবাদিক বলেন, ‘বহিষ্কার হওয়ার পরও দোষীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে অংশগ্রহণ ও হলে অবস্থানসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বহিষ্কারাদেশ শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।

‘বহিষ্কৃতরা আমাকে দেখে উপহাসমূলক আচরণ এবং আমার দিকে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে তাকিয়ে থাকে। তাদের এমন আচরণে আমি খুবই শঙ্কিত। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা না নেয়ায় আমি অনিরাপদ বোধ করছি।’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালেদ মাসুদ ও আরাফাত হোসেনসহ শাখা ছাত্রলীগের সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা-কর্মীরা পুরো ক্যাম্পাসে বাইক শোডাউন দিচ্ছেন। ওই সময় খালেদ মাসুদের বাইকের পেছনে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদাফ খানকে দেখা যায়। আলাদা বাইকে আরাফাত রায়হানসহ সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা-কর্মীদের দেখা গেছে।

জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ও সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা সাদাফ খান বলেন, ‘সে (খালেদ মাসুদ) ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের বিষয়টা প্রশাসন দেখবে, আমরা তো প্রশাসন নই। সে আমাদের ছোট ভাই, ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে থাকতেই পারে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মো. ফরিদুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যাদের বহিষ্কার করা হবে, তারা কেউ ক্যাম্পাসে থাকতে পারবে না। এটা নিশ্চিতের দায়িত্ব প্রক্টরিয়াল বডির।’

চবি সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রশাসনের বহিষ্কার কিংবা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শুধুই লোক দেখানো। বহিষ্কৃত কিংবা শাস্তিপ্রাপ্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে হলে অবস্থান করছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিচ্ছে। প্রক্টরিয়াল বডির সঙ্গেও বৈঠক করছে। এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। প্রশাসনের এরূপ নির্লিপ্ততার নিন্দা জানাই।’

এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি তাদের দেখলে ব্যবস্থা নেব।’

আরও পড়ুন:
চবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৬
এডিসি হারুনকাণ্ড: তদন্তের সময় বাড়ল আরও ৩ দিন
এডিসি হারুনকাণ্ড: আরও ৭ দিন সময় চেয়েছে তদন্ত কমিটি
এডিসি হারুনকাণ্ডে সব পক্ষেরই দায় পেয়েছে তদন্ত কমিটি
শাবিতে ছাত্রলীগের হাতাহাতি, হলের কক্ষ ভাঙচুর

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Clash between two groups of BCL in Chabi injured 6

চবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৬

চবি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ৬ চবিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে সংঘর্ষ জড়ায় শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপ। ছবি: নিউজবাংলা
সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘দুই পক্ষ এখন শান্ত আছে। সবাইকে হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত ৬ জন, তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই উপগ্রুপের কর্মীরা। সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অন্তত ছয় জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের চিকিৎসক।

বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

সংঘর্ষে জড়ানো শাখা ছাত্রলীগের গ্রুপ দুটি হলো সিক্সটি-নাইন ও সিএফসি। প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশের হস্তক্ষেপে ছয়টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

সিক্সটি নাইন সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিন এবং সিএফসি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু, অন্যদিকে সিএফসির নেতৃত্বে আছেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল ও সহ-সভাপতি সাদাফ খান।

সংর্ষের সময় সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা শাহ জালাল হল ও সিএফসির কর্মীরা শাহ আমানত হলে অবস্থান নিয়ে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায়। এ সময় দুই গ্রুপের কর্মীদের লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া দিতে দেখা যায়।

ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিক্সটি নাইন ও সিএফসির দুই কর্মীর মধ্যে বাদানুবাদ ও কথা-কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যাল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. আবু তৈয়ব বলেন, ‘ছয়জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। পাঁচজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পাথরের আঘাতে কয়েকজনের মাথা ফেটে গেছে।

সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘কি নিয়ে ঝামেলা, সেটা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’

সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘সিক্সটি নাইনের ছেলেরা উস্কানি দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে। আকিব জাভেদ নামের ওদের এক কর্মী আমাদের হলের (শাহ আমানত) এসে মাতলামি শুরু করে। এরপর এটা নিয়ে কথা-কাটাকাটি, ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ শুরু হয়। আমাদের তিন কর্মী আহত হয়েছে।’

সহকারী প্রক্টর নাজেমুল আলম বলেন, ‘দুই পক্ষ এখন শান্ত আছে। সবাইকে হলে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। আহত ৬ জন, তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Duet student dies after losing control of motorcycle

গাছে বাইকের ধাক্কা, প্রাণ গেল ডুয়েট ছাত্রের

গাছে বাইকের ধাক্কা, প্রাণ গেল ডুয়েট ছাত্রের প্রতীকী ছবি
নিহত ডুয়েট শিক্ষার্থী সোহেল রানার গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার বাউনিয়া গ্রামে।

গাজীপুর মহানগরে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) এক ছাত্র নিহত হয়েছেন।

ডুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।

প্রাণ হারানো ২৩ বছর বয়সী সোহেল রানার বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থানার বাউনিয়া গ্রামে।

সোহেলকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তার বন্ধু আহসান হাবিব বলেন, ‘গত রাতে দুই বন্ধু মিলে ডুয়েট ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় মোটর বাইক দ্রুত টার্ন নেয়ার সময় একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে গুরুতর আহত হয় সোহেল। তাকে শহীদ তাজউদ্দীন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার অবস্থার অবনতি হয়।

‘পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসলে রাতে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।’

মন্তব্য

বাংলাদেশ
Shabi Vice Chancellor proud of Talibani culture

‘তালেবানি কালচার’ নিয়ে গৌরবান্বিত শাবি উপাচার্য

‘তালেবানি কালচার’ নিয়ে গৌরবান্বিত শাবি উপাচার্য ফাইল ছবি
শাবি উপাচার্য বলেন, ‘আমি বলেছি- সাড়ে ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হবে। এ কারণে তারা (শিক্ষার্থী) এটার নাম দিয়েছে তালেবানি কালচার। এটা যদি তালেবানি কালচার হয়, তাহলে আমি এই কালচার নিয়ে খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়েই আমি থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’

‘তালেবানি কালচার নিয়ে নিজে খুব গৌরবান্বিত’ বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ।

বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, এখানে (বিশ্ববিদ্যালয়) ওপেন কালচার ছিল। ছেলেমেয়েরা যা খুশি তাই করতে পারত; কেউ কিছু বলতে পারত না, কারণ তাদের বয়স ১৮ বছর। কিন্তু আমি বলেছি- সাড়ে ১০টার মধ্যে হলে ঢুকতে হবে। এ কারণে তারা (শিক্ষার্থী) এটার নাম দিয়েছে তালেবানি কালচার। এটা যদি তালেবানি কালচার হয়, তাহলে আমি এই কালচার নিয়ে খুবই গৌরবান্বিত, এটা নিয়েই আমি থাকতে চাই। আমি ওপেন কালচার চাই না।’

বুধবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটরিয়ামে আয়োজিত তথ্য অধিকারবিষয়ক এক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমগীর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী উপাচার্য মো. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ আমিনা পারভীন ও ইউজিসির সচিব ফেরদৌস জামান।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘আপনারা চান কি না, আমি জানি না। আমি চাই না, আমার ছেলেমেয়েরা, সন্তানেরা...ঘুরে বেড়াক। তাদের বাবা-মায়েরা সারা রাত ঘুরে বেড়ানোর জন্য পাঠাননি। বাবা–মায়েরা কিন্তু উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকেন, টেনশনে থাকেন- আমার মেয়ে কোথায় আছে, ছেলে কোথায় আছে। সেজন্য তাদের দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। আমরা তাদের গার্ডিয়ান, আমরা তাদের হেফাজতকারী। আমরা কিন্তু ওই জিনিসটা অ্যালাউ করব না, কোনোভাবেই করব না।’

‘তালেবানি কালচার’ নিয়ে গৌরবান্বিত শাবি উপাচার্য

সেমিনারে মূল আলোচকের বক্তব্য দেন ইউজিসির জনসংযোগ ও তথ্য অধিকার বিভাগের উপপরিচালক মো. আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, ‘দেশকে পরিবর্তন করতে হলে, দেশের টেকসই উন্নয়ন করতে হলে নিজেদের ভূমিকা রাখতে হবে।’

শাবির ভূয়সী প্রশংসা করে ড. আলমগীর বলেন, ‘নিজেদের কীভাবে পরিবর্তন করতে হয়, দেশের জন্য ভূমিকা রাখতে হয়, তা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় দেখিয়ে দিয়েছে। কারণ গত বছর ইউজিসির মূল্যায়নে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৩৬তম, কিন্তু এ বছর তারা ইউজিসির সব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে। তাই আমি বলব, আমাদের যে রিসোর্স আছে তা কাজে লাগিয়ে দেশের পরিবর্তনে কাজ করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ও গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি শিক্ষকের পিএইচডি ফেলোশিপ থাকা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদের গবেষক হিসেবে তৈরি করতে হবে। অনেকে বলবে, আমাদের দেশ থেকে শিক্ষার্থী বিদেশে পিএইচডি করতে চলে যাচ্ছে, আমার কীভাবে তাদের ধরে রাখব? এজন্য পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে হবে। তাই দেশের সম্পদ কেমন আছে না আছে, সেটার ওপর জোর না দিয়ে নিজেদের কাজ ও দায়িত্বকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।’

তথ্য মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে আমাদের দেশে তথ্য অধিকার আইন পাস হয়। এটি দেশের জন্য অনেক গুরুত্ব বয়ে নিয়ে এসেছে। তথ্য অধিকার বাস্তবায়নের ফলে যেকোনো প্রতিষ্ঠান সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে থাকে। আশা করি, এ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের গুণগত কাজের জন্য অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’

আরও পড়ুন:
শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শাবিপ্রবির ১০ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

মন্তব্য

p
উপরে