ঢাকার আদালত থেকে গত বছর দুই জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা স্বীকার করে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) ও অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন বলেছেন, সে সময় কোনো এক জায়গায় সমন্বয়ের অভাব ছিল।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বৃহস্পতিবার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফীন দীপন হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান এবং আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব গত বছরের ২০ নভেম্বর দুপুরে পুলিশের চোখ-মুখে গ্যাস স্প্রে করে পালিয়ে যান।
ঢাকার বিচারিক আদালত এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের এ দুই সদস্যকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় দায়িত্বরত পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
এ ঘটনা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া জঙ্গিদের ধরা যাচ্ছে না, তা নয়; আমরা অনেক জঙ্গিকে ধরেছি। অনেক জঙ্গিকে খুঁজে বের করেছি। যারা পালিয়েছেন তাদের ধরার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। নিশ্চয়ই আমরা ধরে ফেলব।’
ওই বক্তব্যের এক দিন পর র্যাবপ্রধান সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুই জঙ্গি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অবশ্যই আমাদের ব্যর্থতা ছিল। শুধু পুলিশকেও এককভাবে বলি না; পুলিশের সঙ্গে সকলের একটা সমন্বয় থাকার কথা ছিল। এখানে সমন্বয়ের কোথাও অভাব ছিল।’
সমন্বয়ের অভাব নিয়ে খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘সমন্বয়ের অভাব থাকার কারণে ওখানে যেভাবে লোক থাকার কথা ছিল বা যখন তারা রওনা করেছে, তখন যেই তথ্য জানানোর কথা ছিল, সেই জায়গাগুলোতে কোথাও অভাব ছিল, যার কারণে এমনটা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আপনারা সামনে নিশ্চিত থাকতে পারেন যে, আমরা যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। আমরা চাইব আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য।’
র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের চলমান নিষেধাজ্ঞা নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করবে কি না, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে র্যাবপ্রধান বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞায় কোনো সমস্যা হবে না, আমাদের কাজে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আমাদের কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়ে কিছু কিছু প্রশ্ন তারা জানতে চেয়েছে। আমরা সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিয়েছি নথি-প্রমাণসহ।
‘সে ক্ষেত্রে আমাদের কাজের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই, তবে আমরা ইচ্ছা করলেই যা কিছু করতে পারি না, আমাদের বিধিমালা রয়েছে। র্যাব ফোর্সেস এলিট ফোর্স। কোনো সদস্য বিন্দুমাত্র কোনো অন্যায় করেছে, এমন কোনো নজির নেই যে, সে সেখান থেকে রেহাই পেয়েছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানা এলাকায় মেহেদী হাসান রাকিব নামে এক যুবককে মারধরের মামলায় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালত এ আদেশ দেয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জেনারেল রেকর্ড অফিস (জিআরও) শাখার পুলিশ পরিদর্শক মো. আবু তাহের বলেন, ‘পাঁচলাইশ থানার মেহেদী হাসান নামে এক যুবককে অপহরণ, মারধর ও হত্যার হুমকির মামলায় কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনু আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ মার্চ মামলার বাদী মেহেদী হাসান রাকিব চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে একুশে ড্রাগ হাউজ নামে একটি ফার্মেসিতে ছিলেন। এ সময় সেখানে থাকা বন্ধু অভিজিতের মোবাইলে ফোন করে কথা বলতে থাকেন কাউন্সিলর টিনু। পাশে মোবাইলে অন্যজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন রাকিবও।
কণ্ঠস্বর শুনে টিনু অভিজিতের কাছে তার পাশে থাকা ব্যক্তির পরিচয় জানতে চান। রাকিবের নাম শুনে তিনি ক্ষিপ্ত হন এবং তার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন। কথোপকথনের কয়েক মিনিটের মধ্যে ৫-৬টি মোটরসাইকেলে করে ১৫-২০ জন যুবক ফার্মেসির সামনে আসেন।
রাকিবকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে কাপাসগোলা এলাকায় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কাউন্সিলর আগে থেকেই বসা ছিলেন। রাকিবকে চেয়ারে বসিয়ে কয়েকজন যুবক ঘিরে ধরেন এবং কাউন্সিলর তাকে মারধর করেন ও হত্যার হুমকি দেন।
এ ঘটনায় গত ৪ মার্চ নগরের পাঁচলাইশ থানায় কাউন্সিলর নুর মোস্তফা টিনুসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন রাকিব।
আরও পড়ুন:খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়িটি হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে বাড়ি হস্তান্তরে তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দিয়েছে।
আদালত রায়ে বলেছে, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) অন্যান্য সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণ হয়েছে যে সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িতে বসবাস করছেন সেটি সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি।
আদালতে সালাম মুর্শেদীর পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ। দুদকের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। আর রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অনীক আর হক।
আব্দুস সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, ‘জনস্বার্থের মামলায় বাড়ি ছেড়ে দেয়ার রায় বিরল। এর আগে কখনও উচ্চ আদালত এরকম রায় দেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’
এর আগে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গুলশানের এই বাড়ি সালাম মুর্শেদীর দখলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থে রিট করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিট আবেদনে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে ‘খ’ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন।
রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেয়া গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছিল পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে চিঠি আমলে না নেয়ায় ২০২২ সালের ৪ জুলাই আবারও চিঠি দেয়া হয়।
চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দিয়ে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সে ব্যাখ্যা দিতে অনীহা দেখিয়েছেন।
রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে আদেশ দেয়। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়। আর বাড়িসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিলের নির্দেশ দেয় আদালত। পরে পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না করতে উভয় পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতকে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল–জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছে ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। পরে ৩ মার্চ এ সংক্রান্ত রুলের ওপর শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য দিন ঠিক করে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে করা মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সাবেক সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিকী মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। আগের দিন একই আদালত তাকে এক দিনের রিমান্ড দিয়েছিল।
একই মামলায় অবন্তিকার সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকী দু দিনের রিমান্ডে আছেন।
কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ওসি ফিরোজ হোসেন রিমান্ডের আদেশের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দুজনকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি দল ডিএমপির কাছ থেকে দুজনকে রোববার রাতে কুমিল্লায় নিয়ে আসে।
গত শুক্রবার রাতে কুমিল্লার বাসায় অবন্তিকার ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি প্যাঁচানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়।
মৃত্যুর আগে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন তিনি, যাতে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন বলে জানান। আত্মহত্যার জন্য সহপাঠী আম্মান ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে দায়ী করেন এ শিক্ষার্থী।
অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় আম্মান ও দ্বীন ইসলামকে পুলিশ আটক করার কথা শনিবার রাতে জানান ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান।
পাবনা বেড়া উপজেলায় রাতের অন্ধকারে কবরস্থান থেকে ১৫টি কঙ্কাল চুরির অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার আমিনপুরে সোমবার রাতে নতুন বাজার গোরস্থানে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকালে বিষয়টি টের পান স্থানীয়রা।
চুরি হওয়া এক মরদেহের স্বজন মাসুদ রানা বলেন, ‘এটা ভাবতেই অবাক লাগছে। মহাসড়কের পাশে এই কবরস্থান থেকে কঙ্কাল চুরি কোনো সাধারণ ঘটনা নয়। আমাদের দাবি পুলিশ দ্রুত এই ঘটনা উদঘাটন করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন।’
আরেক স্বজন জাহিদ হাসান বলেন, ‘এতো দিন আমরা দেখে আসছি আমাদের দেশে বেঁচে থাকা অবস্থায় মানুষের নিরাপত্তা নেই। এখন দেখছি মরে গেলেও মানুষের লাশেরও নিরাপত্তা নেই।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে আমিনপুর থানার ওসি হারুন-উর-রশীদ বলেন, রাতের কোনো এক সময় কবর খুঁড়ে কঙ্কাল চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আজকে সকালে স্বজনরা কবরস্থানে দোয়া করতে গেলে সেখানে কবর খোঁড়া অবস্থায় দেখতে পান।
বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে ও তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত বলা যাবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ এবং তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক আবুল কাসেম মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ওই দম্পতিকে পাঁচ কোটি টাকা জরিমানা করেছে আদালত। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবিরসহ ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডের সাজা দেয়া হয়েছে।
তানভীর ও জেসমিন ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন তানভীরের ভায়রা হল-মার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিযা, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক, আবদুল মতিন ও তসলিম হাসান।
প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ভুঁইফোড় প্রতিষ্ঠানটি রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকে লুটে নিয়েছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা, যা সোনালী ব্যাংকের মোট ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণের প্রায় অর্ধেক।
২০১০-১২ সালের মধ্যে ঋণের নামে এই পরিমাণ টাকা ব্যাংক থেকে বের করে নিয়ে এখন কারাগারে আছেন জেসমিন ইসলাম ও তানভীর মাহমুদসহ আটজন।
এ ঘটনায় ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর রমনা থানায় ৩ হাজার ৮৯৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১টি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কুমিল্লায় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার তৈরি ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে বিএসটিআই।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ অভিযানে অবৈধভাবে তৈরিকৃত মালামাল ধ্বংস এবং সিলগালা করা হয় কারখানা।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইর যৌথ অভিযানে সোমবার কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার শুভপুর এলাকায় ওই কারখানায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এ সময় অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে মেয়াদোত্তীর্ণ সফট ড্রিংকস পাউডার উৎপাদন ও বিক্রির অপরাধে মেসার্স সিয়াম ফুড প্রোডাক্টসকে বিএসটিআই আইন-২০১৮ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় ৬০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এ ছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অবৈধ মালামাল ধ্বংস করা হয় এবং কারখানার উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসন কুমিল্লার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এ মোবাইল কোর্টে প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিএসটিআই কুমিল্লার কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম শাকিল।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে ডাকাত সন্দেহে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহতদের পরিচয় মিলেছে। তাদের মরদেহগুলো মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তবে নিহতের কোনো স্বজন এখন পর্যন্ত তাদের খোঁজে আসেননি।
নিহতরা হলেন- আড়াইহাজার উপজেলার কালাপাহাড়িয়া ইউনিয়নের ঝাউকান্দী নিতাইটেক গ্রামের ৪৮ বছর বয়সী আব্দুল রহিম, একই উপজেলার জালাকান্দি গ্রামের ৩৫ বছর বয়সী নবী হোসেন ও সোনারগাঁ উপজেলার মুছারচর গ্রামের ৪০ বছর বয়সী জাকির হোসেন।
আরও এক জনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। তার পরিচয় শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশের তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এছাড়া আহত অবস্থায় রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্ত্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়েছে আড়াইহাজার উপজেলা জাঙ্গালিয়া গ্রামের ৪৫ বছর বয়সী মোহাম্মদ আলীকে।
পুলিশ জানায়, রোববার রাত একটার দিকে বাঘারী গ্রামের বিলের পাড়ে ৭/৮ জনের একটি দল ডাকাতির উদ্দেশ্যে অবস্থান নেয়। এ সময় স্থানীয়দের কয়েকজন তাদের দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেন। পরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিলে গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে তাদের ঘিরে ফেলে। এ সময় ডাকাত দলের সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের ধরে পিটুনি দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনজন। অন্যরা বিলে ঝাঁপ দেন। পরে বিল থেকে উঠিয়ে আরও দুজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে। আহত দুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পর আরও একজন মারা যান।
সংঘবদ্ধ পিটুনিতে নিহত চারজন ডাকাত দলের সদস্য বলে জানিয়েছেন সোনারগাঁ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘নিহত তিনজনের পরিচয় মিলেছে, আরও একজনের পরিচয় শনাক্ত করতে সিআইডি কাজ করছে। যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে, তাদের সবার নামেই মামলা আছে।’
মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের লোকজন পাওয়া গেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।
ঘটনাস্থল থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। আর জাকিরের মরদেহ ঢামেকের মর্গে আছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া নিহতের ঘটনায় থানায় মামলার পর পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এদিকে, বিকেল গড়িয়ে রাত হয়ে গেলেও নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিহতদের কোনো স্বজন যোগাযোগ করেছে বলে জানা যায়নি। নিহত তিনজনের কোনো আত্মীয়-স্বজন তাদের খোঁজে বা মরদেহ বুঝে নিতে আসেননি বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ।
মন্তব্য