দিনে প্রচণ্ড গরম আবার ভোর থেকে সকাল ৯টা পযর্ন্ত ঘন কুয়াশা- এমন আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে মেহেরপুরে বাড়ছে ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা, যার অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক।
সরকারি হাসপাতালে প্রতিদিনই জ্বর-সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তির সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে রোগী বেশি হওয়ায় অনেকের জায়গা হয়েছে হাসপাতালের বেডসহ প্রবেশ পথে, মেঝেতে এমনকি সিঁড়ির ওপরে।
গত কয়েক দিনে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও জেলার বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে পাঁচ শতাধিকের বেশি শিশু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
চিকিৎসকেরা বলছেন, দিনে গরম ও মধ্য রাতে ঠান্ডা পড়ায় শিশুরা কখনও ঘেমে যাচ্ছে, আবার কখনও ঠান্ডার কবলে পড়ছে, এতে শিশুরা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে এক সপ্তাহ ব্যবধানে দ্বিগুনের বেশি বেড়েছে শিশু রোগীর সংখ্যা।
অভিভাবকেরা বলছেন, ডায়রিয়া ও ঠান্ডায় আক্রান্ত শিশুদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়ার পর, হাসপাতালে ভর্তি করেও কোনো লাভ হচ্ছে না। আবার হাসপাতালে এসে জায়গা পাওয়াটাও কঠিন যাচ্ছে। তাই মেঝেতে কিংবা সিঁড়ির ওপরে যেখানে জায়গা হচ্ছে সেখানে থেকেই ভালো চিকিৎসা পাবার আসায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গাংনী উপজেলা ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গাংনী ৫০ শয্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশু ওয়ার্ডে গত ৭ দিনে ২৪০ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। তাদের মধ্যে ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় দেড় শতাধিক, বাকিরা ঠান্ডাজনিত রোগে। বর্তমানে ২০ শয্যা শিশু বেডের বিপরীতে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন ৫৬ জন।
শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ৫০ বেডের বিপরীতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৭৮ জন শিশু, গত এক সপ্তাহে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৫৬ জন, আর এক মাসে ডায়রিয়া ও ঠান্ডাজনিত কারণে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৪৯৮ জন।
আর হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গত ৭ দিনে প্রাপ্তবয়স্ক ৫০ ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১৭ জন। তবে গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়াই আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
শুক্রবার বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, শয্যার থেকে বেশি রোগী থাকায় বেশ কয়েকজনকে রাখা হয়েছে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের প্রবেশ পথের মেঝেতে, কেউবা সিঁড়ির ওপরে, বাথরুমের প্রবেশ পথে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নিতে আসা এ উপজেলার নওদা পাড়া গ্রামের তাহেরা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ে ভালই ছিল হঠাৎ করে একবার পাতলা পায়খানা হলো। তার আধা ঘন্টা পর থেকে আটবার পায়খানা হয়ে মেয়ে আমার নেতি (দুর্বল) হয়ে গেলে। তারপরে এ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। প্রথম দিন মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। আজ দুপুরের পর বেড পেয়েছি।’
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা ৬ মাস বয়সী শিশু রওফের মা আমেনা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলের ঠান্ডা লাগা এক সপ্তাহের বেশি হয়ে গেল। গ্রামের ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করেছি, তবে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। আমি তিনদিন আগে গাংনী হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছি। এখানকার ডাক্তাররা বলছে বাবুর নিউমোনিয়া হয়ে গেছে। দেখি আল্লাহর উপর ভরসা রেখে চিকিৎসা নিচ্ছি।’
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ডায়রিয়াজনিত কারণে ভর্তি সদর উপজেলার আমদহ গ্রামের সোহাগি খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমি বুধবার ডাইরিয়ার কারণে এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছি। এখানে এসে দেখি কোনো জায়গা খালি নেই। তারপরও ভালো চিকিৎসা পাওয়ার আসায় আমি সিঁড়ির ওপরে এক পাশে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন একটু ভালোর দিকে।’
মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের সাহেব আলীর মা বলেন, ‘আমার ছেলে আজ দুদিন ধরে ডায়রিয়া হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। কিছুতেই পায়খানা কমছে না। খালির পানির মতো পায়খানা করে যাচ্ছে। একটা ছোট ঘর তার মধ্যে আমার মত আরও পাঁচজন অন্য বাচ্চা চিকিৎসা নিচ্ছে। কষ্ট হলেও ভালো চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আসায় এখানে ভর্তি হয়েছি।’
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এম ও ডা. আব্দুল্লাহ আল মারুফ জানান, দিনে গরম রাতে ঠাণ্ডা পড়ছে। এমন আবহাওয়ার কারণে বাচ্চাদের গরম কাপড় পরালে অনেক সময় ঘেমে গিয়ে ঘাম শরীরেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আবার রাতের বেলায় ফ্যান চালিয়ে রাখলে ভোরে ঠাণ্ডা পড়ছে। এতে শিশুরা বেশি ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ বাচ্চাদের অভিভাবক মায়েদের একটু বেশি সর্তক হতে হবে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আর এমও ডা. মোখলেচুর রহমান জানান, বতর্মানে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ৫০টি আসনের বিপরীতে ৭৮ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী যারা বর্তমানে ভর্তি আছেন, তাদের সেবার কোনো কমতি হচ্ছে না। আমাদের বেডের তুলনায় বেশি রোগী ভর্তি আছে এটা ঠিক। তবে আমাদের মেডিসিনের কোনো কমতি নেই, পাশাপাশি হাসপাতালের ডাক্তার থেকে নার্স সকলেই সেবা প্রত্যাশীদের প্রতি আন্তরিক।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য