সরকার জাতিকে অশিক্ষা-কুশিক্ষা দিয়ে দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা: সংকট ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই আলোচনার আয়োজন করে নাগরিক ফোরাম।
মঈন খান বলেন, ‘আমি মনে করি, আদিম ও আজকের সভ্য সমাজের মধ্যে যে ব্যবধান তা দিয়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা মানুষকে পরিবর্তন করেছে। আর আজ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এমন কিছু হচ্ছে যেটা আবার সভ্য সমাজ থেকে মানুষকে আদিম সমাজে নিয়ে যাচ্ছে। শুধু শিক্ষক সমাজ নয়, প্রতিটি সাধারণ মানুষকে এই শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।’
নতুন সিলেবাস বা পাঠক্রম নিয়ে কারা ছিনিমিনি খেলছে, তাদের উদ্দেশ্য কী সেটা জানা দরকার বলে উল্লেখ করেন আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দেশে একটা নিজস্ব চিন্তাধারা, ধর্ম, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি থাকে। তার পরিপন্থী কোনো কিছু সেই দেশের মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়াটা ভালো নয়। এখন সেটাই হচ্ছে আমাদের ওপর।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকার আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য নিয়ে অনেক উদাহরণ দিয়ে থাকে। তারা কীভাবে শক্তিশালী দেশ। অনেকে উত্তর দেয়, তারা ধনী দেশ। আমি বলি, না। বিশ্বের সেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। আর প্রথম একশ’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ৫০ থেকে ৭৫টিই আমেরিকার। এতেই প্রমাণ হয় আমেরিকা অর্থ ও শিক্ষা উভয় ক্ষেত্রেই শক্তিশালী।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. এহছানুল হক মিলন, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান প্রমুখ।
জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মানসিক সমস্যায় পড়েছেন এমন শিক্ষার্থীদের ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশই মনে করেন এর পেছনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ভূমিকা রয়েছে। তাদের মধ্যে আবার ২৬ দশমিক ১ শতাংশ এই মানসিক সমস্যার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহারকে পুরোপুরি দায়ী করেছেন।
ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগই অবসর কাটাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এবং অনেকেই আসক্তি অনুভব করছেন।
আঁচল ফাউন্ডেশনের সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিজীবনের প্রভাব, আচরণগত প্রভাবসহ নানা বিষয়ও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
শনিবার আঁচল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রভাব: কতটুকু সতর্ক হওয়া জরুরি’ শীর্ষক সমীক্ষা প্রকাশ করা হয়। অনলাইন মাধ্যমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষার ফল তুলে ধরেন ফাউন্ডেশনের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস ইউনিটের সদস্য ফারজানা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত সমীক্ষার কাজ হয়েছে। সমীক্ষায় ১৭৭৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন, যার মধ্যে নারী ৪৯ দশমিক ৫ এবং পুরুষ ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এ ছাড়া তৃতীয় লিঙ্গের আছেন শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ।
জরিপে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭২ দশমিক ২ শতাংশ জানিয়েছেন, তারা জীবনে কখনো না কখনো মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮৫ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, এই সমস্যার পেছনে ইন্টারনেটের ভূমিকা রয়েছে।
মানসিক সমস্যার কারণ হিসেবে ইন্টারনেটকে পুরোপুরি দায়ী মনে করেন ২৬ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী। আর মোটামুটি দায়ী ভাবেন ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী।
সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থীর বয়স ১৬ থেকে ১৯ বছর, ৭৬ দশমিক ৩ শতাংশের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছর এবং ১০ দশমিক ৫ শতাংশের বয়স ২৬ থেকে ৩০ বছর। এসব শিক্ষার্থীর ৬২ দশমিক ৩ শতাংশ অপরিমিত ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
সমীক্ষা বলছে, পড়াশোনার কাজে ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। কিন্তু পড়াশোনার ফাঁকে অনলাইনে প্রবেশ করলে ৫২ দশমিক ৬ শতাংশের পড়াশোনার মনোযোগ হারিয়ে যায়।
জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব
শিক্ষার্থীরা বলেছেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি তাদের পড়াশোনার মনোযোগ নষ্ট করছে। ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইন্টারনেটে সময় ব্যয় তাদের স্বাভাবিক জীবনে ‘প্রচণ্ড নেতিবাচক’ প্রভাব ফেলছে এবং ৫৭ দশমিক ২ শতাংশের স্বাভাবিক জীবনে ‘কিছুটা নেতিবাচক’ প্রভাব ফেলছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা জানিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন। জরিপে শিক্ষার্থীদের ১৩ দশমিক ১ শতাংশ বলেছেন, ইন্টারনেটের ব্যবহার তাদের আত্মকেন্দ্রিক করে তুলেছে। এ ছাড়া ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ বলেছেন, অযাচিত কাজে সময় নষ্ট হচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের ৫৮ দশমিক ৭ শতাংশের প্রতিদিন পরিমিত ঘুম হয় না। তাদের মধ্যে ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী পরিমিত ঘুম না হওয়ার পেছনে তাদের ইন্টারনেট ব্যবহারকে পুরোপুরিভাবে দায়ী করেছেন।
পর্নোগ্রাফিতে আসক্তির বিষয়ও উঠে এসেছে সমীক্ষায়। শিক্ষার্থীদের ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি বা যৌন উত্তেজক বিষয়-সম্পর্কিত ওয়েবসাইট দেখেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের প্রভাব
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। অন্যের সফলতা ১০ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর মনে হতাশার সৃষ্টি করেছে। এ ছাড়া সামাজিক মাধ্যম থেকে জানা অন্যের সফলতার খবর ১০ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ঈর্ষাকাতর করে তোলে এবং ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ নিজেকে নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন। অন্যদিকে, ৩৪ দশমিক ৪ শতাংশ শিক্ষার্থী এ ধরনের খবর থেকে উৎসাহিত হন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করছে। জরিপের তথ্য অনুসারে ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থীর ধৈর্যশক্তির হ্রাস ঘটে, ২৬ শতাংশ হঠাৎ রেগে যান, ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ চুপচাপ হয়ে যান। অন্যদিকে, ৩০ দশমিক ২ শতাংশ শিক্ষার্থী মনে করেন, তারা যখন অফলাইনে থাকেন তখন একাকিত্বে ভোগেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘মানসিক সমস্যা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে মানসিক অসুস্থতা তৈরি হয়। শিক্ষার্থীদের বড় অংশই সৃজনশীল কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না। খেলার মাঠ কমে যাচ্ছে। বিকল্প হিসেবে তাদের কাছে ইন্টারনেট চলে যাচ্ছে। এ ছাড়া সাংস্কৃতিক চর্চাও আগের চেয়ে কমে গেছে।’
সমস্যা সমাধানে আঁচল ফাউন্ডেশন কিছু সুপারিশ করেছে, ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘ডিজিটাল লিটারেসি প্রোগ্রাম’ চালু করা, কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা রাখা, খেলাধুলা ও ব্যায়ামাগারের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা।
আঁচল ফাউন্ডেশনের সভাপতি তানসেন রোজের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের প্রোগ্রামার বিপ্লব চন্দ্র সরকার এবং টাঙ্গাইলের ডেপুটি সিভিল সার্জন মারুফ আহমেদ খান।
আরও পড়ুন:তীব্র দাবদাহে প্রাথমিকের পর এবার মাধ্যমিকের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ বাস্তবায়িত হবে।
বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক-২) এস এম জিয়াউল হায়দার হেনরী স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, সারাদেশে চলমান তাপপ্রবাহের সতর্কতার কারণে দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শ্রেণী কার্যক্রম আগামী ৮ জুন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আগামী শুক্র ও শনিবার মিলে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা তিন দিন ছুটি পাচ্ছে।
গত ৪ জুন তীব্র দাবদাহের কারণে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাঠদান ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। অর্থাৎ এ ৪ দিন শিশুদের বিদ্যালয়ে যেতে হবে না।
এ বিষয়ে দেওয়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী তীব্র দাবদাহের কারণে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনা করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবহাওয়ার সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী, দিনাজপুর, যশোর ও সৈয়দপুর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট বিভাগ এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
এছাড়া, চট্টগ্রাম বিভাগে দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে।
আরও পড়ুন:গুচ্ছভুক্ত দেশের ২২টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষের বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থীদের ‘এ’ ইউনিটের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে। পরীক্ষায় পাসের হার ৪৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
মঙ্গলবার রাতে ফল প্রকাশের পর গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং জিএসটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা ২০২২-২৩ এর টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহবায়ক চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাছিম আখতার নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট ওয়েবাসাইটে ফল প্রকাশ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে ফল দেখতে পারবেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ইমদাদুল হক জানান, ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন করেছিলেন ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৩ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৯ জন। পরীক্ষায় পাস নম্বর ৩০ ও এর বেশি পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৬৮ হাজার ৩২২ জন। এটা মোট পরীক্ষার্থীর ৪৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৮৬ দশমিক ৫০ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন শাহরিয়ার আলম পাটোয়ারী। তিনি সিলেটের স্কলারহোমের শিক্ষার্থী। তার পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
ভর্তি পরীক্ষায় ৮৮ জনের খাতা বাতিল হয়েছ। তাদের মধ্যে ৫ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার, ভুল রোল নম্বর লেখায় ২৯ জনের খাতা বাতিল, ডুপ্লিকেট রোল লেখায় ১১ জনের খাতা বাতিল ও সেট নম্বর ভুল লেখায় ৪৩ জনের খাতা মূল্যায়ন করা হয়নি।
উপাচার্য অধ্যাপক নাছিম আখতার জানান, ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৫ নম্বরের উপরে পেয়েছেন মাত্র একজন। ৮০ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৫ জন, ৭৫ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৪০ জন, ৭০ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৫৬১ জন, ৬৫ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ১৪৭৭, ৬০ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৩ হাজার ৭২৯, ৫৫ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৭ হাজার ৯১০, ৫০ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৬৭১ জন শিক্ষার্থী। এবার সর্বনিম্ন নম্বর মাইনাস ১৩ দশমিক ২৫।
শনিবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে এই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বিজ্ঞান ইউনিটে ৯ হাজার ৮৭৫টি আসনের বিপরীতে সারাদেশে মোট পরিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৬৬ হাজার ৯৩৩ জন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষামেলা ‘এডুকেশন এক্সপো -২০২৩’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশগ্রহণ করে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (সিইউবি)।
মঙ্গলবার দিনব্যাপী চলা এ এক্সপোর আয়োজন করে এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব)। সকলের জন্য উন্মুক্ত এ অনুষ্ঠান সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়ে চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে সিইউবিসহ ৬০টির বেশি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের গবেষণা, প্রকাশনা ও উদ্ভাবন নিয়ে হাজির হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এক্সপোতে একাডেমি-ইন্ডাস্ট্রিজ লিংকেজ সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিইউবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক।
অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সিইউবি’র মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক উদ্ভাবিত ‘গুডউইল অ্যাম্বাসেডর কার্ড’। এই কার্ডের মাধ্যমে যে কোনো শিক্ষার্থী কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে বিশেষ সুবিধা নিয়ে ভর্তি হতে পারবে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য পদে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।
সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে উপসচিব ড. মো. ফরহাদ হোসেনের সই রয়েছে।
এতে বলা হয়, অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে ইউজিসির পূর্ণকালীন সদস্য হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ দেয়া হলো।
চার বছর তিনি এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সরকার প্রয়োজন মনে করলে তাকে যে কোনো সময় অব্যাহতি দিতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়।
হাবিবুর রহমান। জন্মগতভাবেই নেই দুই হাত। তবুও দমে যাননি তিনি। ছোট বেলা থেকে পা দিয়ে লিখেই চালিয়ে গেছেন পড়াশোনা। স্কুল, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে এবার অংশ নিয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ভর্তিযুদ্ধে। এ বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়েই বড় আলেম হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
সোমবার ইবি’র ধর্মতত্ত্ব অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি।
হাবিবুরের বাবা আব্দুস সামাদ পেশায় কৃষক ও মা হেলেনা খাতুন গৃহিনী। চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট হাবিবুর।
২০২০ সালে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৬৩ ও ২০২৩ সালে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৫৭ নিয়ে উত্তীর্ণ হন তিনি। প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে দেশ সেবায় নিয়োজিত হতে চান হাবিবুর। সেই স্বপ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান তিনি।
এর আগে হাবিবুর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আলিম পরীক্ষার পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন জাগে। পরিবারের অনুপ্রেরণা পেয়েই আমি আজ এতদূর আসতে পেরেছি। তবে কখনো প্রতিবন্ধকতার কারণে হেয় শিকার হতে হয়নি। সবাই ভালোভাবে নিয়েছে। আমি জীবনে ভালো মানুষ হতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইচ্ছাশক্তি থাকলে সবকিছু সম্ভব। চেষ্টা করলেই আল্লাহ উত্তম প্রতিদান দিবেন। চেষ্টা না করলে আসলে কোনো কিছু সম্ভব না।
‘সবাইকে চেষ্টা করা উচিত। কষ্ট হবে, বিপদ আসবে। এর মাধ্যমে জয় করতে হবে। চেষ্টা না করলে কোনো কিছুই সম্ভব নয়।’
হাবিবুরের প্রতিবেশী আজমল হোসেন বলেন, ‘সে সম্পর্কে আমার ভাতিজা হয়। শারীরিক গঠনে অন্য দশজনের মতো না হলেও কোন দিক দিয়ে সে পিছিয়ে নেই। হাবিবুর ছোট থেকেই অনেক মেধাবী।’
আরও পড়ুন:তীব্র তাপদাহের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ আপাতত বন্ধ হচ্ছে না। তবে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম পরিচালনায় ৬টি শর্ত মানার নির্দেশ দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
সোমবার মাউশির এক অফিস আদেশে যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শাখা রয়েছে, সেই স্কুলগুলোর প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির কার্যক্রমও আগামী ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এ ছাড়াও পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রাত্যহিক সমাবেশ স্থগিত ও রোদের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খেলাধুলাসহ অন্যান্য কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
তবে ৭ জুন থেকে অর্ধবার্ষিকী মূল্যায়ন ও পরীক্ষা থাকায় মাধ্যমিক স্তর বন্ধ হচ্ছে না বলে জানায় মাউশি।
মাউশির অফিস আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর, ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র কর্তৃক প্রকাশিত তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা অনুসারে, আগামী ৫ থেকে ৬ দিন দেশের ওপর দিয়ে চলমান মৃদু, মাঝারি তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এর আলোকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে ছয়টি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
সেগুলো হলো-
#যেসব স্কুলে প্রাথমিক স্তর সংযুক্ত রয়েছে সেখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির কার্যক্রম আগামী ৮ জুন পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
#পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রাত্যহিক সমাবেশ স্থগিত থাকবে।
#শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রোদের মধ্যে খেলাধুলাসহ অন্যান্য কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে।
#শিক্ষার্থীদের পর্যাপ্ত পানি পানের পরামর্শ দিতে হবে। শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনে নিজ বাসা থেকে পর্যাপ্ত পানি সাথে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে।
#শ্রেণিকক্ষে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের জন্য প্রতিষ্ঠানের সকল জানালা ও দরজা সম্পূর্ণ খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
#শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষক মিলনায়তন ও কর্মচারীদের কক্ষে প্রয়োজনীয় বৈদ্যুতিক পাখা সক্রিয় রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর নিম্ন মাধ্যমিক স্তর বন্ধ ঘোষণা করা হলেও অর্ধবার্ষিকী মূল্যায়ন ও পরীক্ষার কারণে মাধ্যমিক স্তর বন্ধ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।
তিনি জানান, মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকবে। কারণ, ৭ জুন থেকে অর্ধবার্ষিকী মূল্যায়ন ও পরীক্ষা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে মাধ্যমিক স্তরের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে গরমের কারণে গতকাল রোববার দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত মোট চার দিন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য