পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধ পথে অস্ত্র চোরাচালান করে ভুয়া লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রয় এবং স্বনামধন্য বেসরকারি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়া চক্রের মূলহোতা পলাশসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ এর একটি যৌথ দল রোববার রাতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন পলাশ শেখ, মনোয়ার হোসেন, রশিদুল ইসলাম, নাজীম মোল্লা, মারুফ হোসেন ও নাইমুল ইসলাম।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ওয়ান শুটার গান, ৭টি একনলা বন্দুক, ২টি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ওয়ান শুটারের গুলি ২ রাউন্ড, একনলা বন্দুকের গুলি ৬৭ রাউন্ড, ০ দশমিক ২২ বোর রাইফেলের গুলি ৪০ রাউন্ড, ১১টি জাল লাইসেন্স, ১৯টি বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তার নামীয় সিলসহ অন্যান্য সামগ্রী।
গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, চক্রটি অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে রিভলবার, পিস্তল ও একনলা বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র চোরাচালান করত। পরবর্তীতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অভিনব কৌশলে ভুয়া ও জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র বিক্রির জন্য বেসরকারি বিভিন্ন স্বনামধন্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত চাকরি দিতে আকৃষ্ট করে আগ্রহীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিত। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৪ থেকে ৫ জন।
র্যাব জানায়, চাকরি দেয়ার জন্য জনপ্রতি ২ থেকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে। অবৈধ অস্ত্র ও ভুয়া লাইসেন্স পাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে চাকরি করত। এ ছাড়াও চক্রটি বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে চড়া দামে জাল লাইসেন্স তৈরি করে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করত।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, পলাশ ২০০৪ সালে স্থানীয় একটি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে। জীবিকার তাগিদে ২০১৩ সালে ঢাকায় আসে এবং একটি স্বনামধন্য সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরু করে। সিকিউরিটি গার্ডের চাকরিরত অবস্থায় ২০১৫ সালে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ভুয়া লাইসেন্স করা একটি অবৈধ বন্দুক কিনে একটি বেসরকারি ব্যাংকে অধিক বেতনে সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি শুরু করে। পরবর্তীতে সে নিজেই অবৈধ পথে অস্ত্র চোরাচালান ও বিক্রি শুরু করে এবং ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল তৈরি করে।
তিনি আরও জানান, পলাশের নেতৃত্বে চক্রটি সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার নামের সিল তৈরি করে জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করতে থাকে। দীর্ঘদিন ধরে একটি স্বনামধন্য বেসরকারি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সুবাধে ওই প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অবস্থান তৈরি হওয়ায় বিভিন্ন চাকরি প্রার্থীদের অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখাত। এ যাবত ২০ থেকে ২৫ জনের কাছে অর্থের বিনিময়ে ভুয়া লাইসেন্স করা অস্ত্র বিক্রি করেছে।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, এ চক্রের কাছ থেকে ভুয়া লাইসেন্স ও অস্ত্র যারা কিনেছে তাদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সিকিউরিটি নিয়োগ দেয়া প্রতিষ্ঠানকে এ সব নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নেয়া জরুরি।
আরও পড়ুন:নওগাঁয় এক কলেজ ছাত্রী নিহতের মামলায় প্রেমিক ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান শনিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে গ্রেপ্তার দুজনকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, নওগাঁর সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশ থেকে গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ২২ বছর বয়সী তাবাসসুম আক্তার রিংকু নামের এক কলেজ ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত তাবাসুম আক্তার রিংকু জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার রায়কালি ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় রায়কালী টেকনিক্যাল বিএম কলেজের এইচএসসি ভোকেশনাল ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন।
এ ঘটনার পর দিন দুপুরে নিহতের মা শাহিনা বেগম বাদি হয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার চারদিন পর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর উপজেলার মাটিয়াকুরি গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে নাঈম হোসেন ও তার বাবা আলাউদ্দীন আলীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানান ওসি। এ সম্পর্কে তিনি জানান, নিহত রিংকু ও নাঈমের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের প্রেমে পরিবারে বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে গত ২৭ নভেম্বর সকালে তারা কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটি অটোরিকশা করে রাজশাহী কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
দুজনের মধ্যে নওগাঁ কোর্টে অথবা রাজশাহীতে কোর্টে বিয়ে করা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক আর ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে সদর উপজেলার চকগৌড়ি মেইন রাস্তায় অটোরিকশা থেকে রিংকু পড়ে যায়। এতে মাথা ও হাত পায়ে গুরুতর যখম হলে তাকে বাঁচানোর জন্য নাঈম দ্রুত মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তার অবস্থা খারাপ দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
নাঈম ভয় পেয়ে তার বাবা আলাউদ্দীনের সঙ্গে আলোচনা করলে তার বাবা রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেয় তাকে। এরপর নাঈম দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্স যোগে রিংকুকে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
নাঈম ও তার বাবা ভয় পেয়ে রিংকুর মরদেহ রাতের আঁধারে তিলকপুর ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামের তুলশীগঙ্গা নদীর বেড়িবাঁধের পাশে ফেলে পালিয়ে যায়।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘এ ঘটনায় দুই জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাবা ও ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নওগাঁর মহাদেবপুরে একটি ট্রাকে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাট চকগৌরি এলাকায় ট্রাকটিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে ইঞ্জিনসহ ট্রাকটির সামনের অংশ পুড়ে গেছে।
মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলপ্রধান আশরাফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ট্রাকটি হাট চকগৌরি এলাকার একটি সেতুর পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। ট্রাকে কোনো মালামাল ছিল না। দুর্বৃত্তরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে ট্রাকটির সামনের অংশে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে মহাদেবপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই স্থানীয়রা আগুন নিভিয়ে ফেলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগুনে ট্রাকের ইঞ্জিনসহ সামনের দিকে বেশ কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।’
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে মহাদেবপুর থানার ওসি মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘আগুনে ট্রাকের সামনের অংশ পুড়ে গেছে। আমাদের ধারণা, অবরোধ সমর্থকরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের আটক করা হবে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় দুটি এবং নারায়ণগঞ্জ শহরের খানপুর এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে ফার্মগেটের ফার্মভিউ সুপারমার্কেটের সামনের ব্যস্ত সড়কে যানজটের মধ্যে পাঁচ সেকেন্ডের ব্যবধানে ককটেল দুটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বিস্ফোরণে যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মোটরসাইকেলের দুই আরোহী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী বলে জানা গেছে। তবে তারা নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
আহত একজনের মাথা থেকে রক্তপাত হতে দেখা যায়। অন্যজন পেটে আঘাত পেয়েছেন। বিস্ফোরণের পর ব্যস্ত রাস্তাটি মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায়। রাস্তা ও ফুটপাতে থাকা লোকজন আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
তেজগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সরোয়ার আলম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের কথা শুনেছি। পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়েছে।’
অন্যদিকে শনিবার সন্ধ্যার পর নারায়ণঞ্জ শহরের খানপুর থেকে একটি মিছিল বের করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নবাব সলিমুল্লাহ সড়কের ডন চেম্বার এলাকায় এসে তারা বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। পরে চাষাঢ়ার দিকে এগিয়ে মিশনপাড়া মোড়ে ফের ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে তারা পালিয়ে যান।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় ডিবি পুলিশের একটি টিম। এরপর সদর থানা পুলিশের দুটি টিম ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি শাহাদাৎ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবরোধ কর্মসূচির নামে ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার আগেই তারা পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে অভিযান চলছে।’
রোববার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। নবম দফায় দেয়া দলটির অবরোধ কর্মসূচির আগের দিন সন্ধ্যায় এই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশি বাধায় পণ্ড করে দিলে তারা এ সরকারের পদত্যাগের একদফাসহ মহাসমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। সমমনা জোটগুলোও এই কর্মসূচি যুগপৎভাবে পালন করেছে। এরপর থেকে পর্যায়ের ক্রমে তারা প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবার এবং শুক্র ও শনিবার ছুটির দুইদিন বিরতি দিয়ে ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি করে যাচ্ছে। এই পর্যন্ত তারা আট দফায় অবরোধের কর্মসূচি পালন করেছে। কাল থেকে নবম দফায় দলটির অবরোধ কর্মসূচি চলবে।
আরও পড়ুন:হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তরল স্বর্ণের ‘ডিম’, বিস্কুট ও অলংকারসহ চার যাত্রী আটক হয়েছে। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), এনএসআই ও ঢাকা কাস্টমসের এক অভিযানে উদ্ধার হওয়া মোট স্বর্ণের পরিমাণ ৬ কেজি ৯৫৬ গ্রাম।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক শনিবার রাতে জানান, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে পেস্ট ফর্মের গোল্ড, গোল্ড বিস্কুট এবং স্বর্ণের অলংকার উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আটক চার যাত্রীর মধ্যে মো. আলী হোসেন ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সযোগে দুবাই থেকে ঢাকায় আসেন। এছাড়া যাত্রী জসীম উদ্দিন, লিটু মিয়া ও মোহাম্মদ জুম্মন খান এমিরেটস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন।
জিয়াউল হক জানান, যাত্রীরা বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর এপিবিএন, এনএসআই ও কাস্টমস যৌথ আভিযান চালায়। এ সময় ওই যাত্রীরা পায়ুপথে স্বর্ণ বহন করছেন বলে সন্দেহ হলে তাদেরকে আটক করা হয়। পরে উত্তরায় অবস্থিত হলি ল্যাব ডায়গনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে এক্স-রে করলে তাদের পায়ুপথে স্বর্ণের অস্তিত্ব নিশ্চিত হওয়া যায়।
এপিবিএন-এর এই কর্মকর্তা জানান, আলী হোসেনের কাছে ডিম্বাকৃতির তিনটি পেস্ট গোল্ড (৮৮০ গ্রাম), গোল্ড বিস্কুট ও অলংকারসহ মোট এক কেজি ৯৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। আর জসীম উদ্দিনের কাছ থেকে ডিম্বাকৃতির ৯টি পেস্ট গোল্ড (এক কেজি ৯৫০ গ্রাম), গোল্ড বিস্কুট ও অলংকারসহ মোট ২ কেজি ১৬৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়।
এছাড়া মোহাম্মদ জুম্মন খানের কাছ থেকে এক কেজি ৫৩৪ গ্রাম স্বর্ণ পাওয়া যায়। অপরদিকে লিটু মিয়ার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ২ কেজি ১৬৪ গ্রাম স্বর্ণ।
আটক চারজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা করার মধ্য দিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় চিকিৎসকের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতাল নামে বেসরকারি হাসপাতালটিতে শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে।
এতে রোগীর স্বজনরা ও স্থানীয়রা শনিবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালটিতে অবস্থান নিয়ে কর্মরত স্টাফদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, তবে ঘটনার পর চিকিৎসক ও হাসপাতালটির ম্যানেজারকে পাওয়া যায়নি।
প্রাণ হারানো ২৬ বছর বয়সী নিপা আক্তার ভবেরচর এলাকার মো. শামীমের স্ত্রী।
নিপার স্বজনরা জানায়, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে তাকে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মিয়াজী টি.এইচ. মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে ডা. রাজিয়া বেগমের তত্ত্বাবধানে প্রসূতি নিপার সিজারিয়ান অপারেশন শুরু হয়।
অপারেশন শুরুর ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে তাদের জানানো হয় মেয়ে বাচ্চা হয়েছে, বাচ্চার অবস্থা ভালো। কিন্তু দীর্ঘ দুই ঘণ্টা পরও নিপাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় তাদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পরে তাদের জানানো হয় বাচ্চার মায়ের অবস্থা খারাপ তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে।
এর পর নিপাকে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকের ভাষ্য, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অনেক আগেই নিপার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে মেমোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রাজিয়া বেগমের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রোগীর আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা ছিল। আমি অপারেশন করার পরে বিষয়টি ধরতে পেরেছি। আমি তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দিতে বলেছিলাম। এখানে আমার কোনো অবহেলা ছিল না।’
গজারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘নিহতের স্বজনরা থানায় এসেছেন। এ বিষয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার প্রক্রিয়া চলছে।’
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রাজশাহী-৪ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোয় এক পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার শনিবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যাহার ওই পুলিশ কর্মকর্তা রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই জিলালুর রহমান।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থী তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র আবুল কালাম আজাদকে পৌর আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পুলিশ সদস্যরাও। ফুল দেয়ার সেই ছবি মুহূর্তেই সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর তাকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়।
স্থানীদের অভিযোগ, এস আই জিলালুর রহমান ২০২২ সালে ২৭ মার্চ তাহেরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে যোগদানের পর থেকেই মেয়র আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেন এবং তিনি শুরু থেকেই পক্ষপাতিত্বমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলেন।
রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বলেন, ‘নৌকার এক প্রার্থীকে ফুলেল শুভেচ্ছা দেয়া হয়েছে এমন একটি ছবি নজরে এসেছে। এরপরই তাকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছে।’
তবে এস আই জিলালুর নিউজবাংলার কাছে অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘নির্বাচনকে ঘিরে কাউকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয় নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে যে ছবি প্রচার করা হচ্ছে, সেটা অনেক আগের। প্রায় এক বছর আগের। প্রতিপক্ষের লোকজন এটি ছড়াচ্ছে। আমি এরই মধ্যে পুলিশ লাইনে চলে আসছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ ভারত থেকে ফেরার পর তাকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছিল, সে ছবিটি এখন প্রচার করা হচ্ছে।’
রাজধানীর ডেমরায় একটি বাসায় প্রবাসী স্বামীর ওপর অভিমান করে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
ডেমরার পশ্চিম বক্স নগরে শুক্রবার দুপুর একটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক বেলা আড়াইটার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৪ বছর বয়সী ওই গৃহবধূ রোজি আফসানা রিমাকে ঢামেকে নিয়ে আসা তার মা আসমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের সঙ্গে সৌদি প্রবাসী নয়ন মিয়ার ১১ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের ১০ বছর বয়সের এক মেয়ে আছে। ৬ মাস আগে নয়ন ৫ লক্ষ টাকা খরচ করে দালালের মাধ্যমে সৌদিতে কোম্পানির কাজে যায়। কিন্তু সেখানে কোনো কাজ না পাওয়ায় পুলিশের ভয়ে পালিয়ে থাকতে হতো তাকে।
‘এ সকল বিষয় নিয়ে আজ তিন দিন ধরে আমার মেয়ের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছিল। আজ দুপুরে নয়ন ফোনে বলে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যাও, আমি বাংলাদেশে চলে আসব। এরপর ঝগড়া শুরু হলে কথা কাটাকাটি এক পর্যায়ে ফোন কেটে দিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় জর্জেটের ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পরে।
‘পরে আমরা টের পেয়ে শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তাকে রুম থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকার শাহিন নামে এক দালালের মাধ্যমে জমি বিক্রি করে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে ছয় মাস আগে কোম্পানির কাজে সৌদিতে যায় নয়ন। সেখানে তাদের কোম্পানির কোনো লোক গ্রহন না করায় তারা জানতে পেরেছে এটা ভুয়া কোম্পানি। আমাদের এলাকা থেকে মোট আটজন যুবককে এই দালাল সৌদিতে নিয়ে যায়, তাদেরও একই অবস্থা।’
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ডেমরা থেকে এক গৃহবধূকে অচেতন অবস্থা ঢামেকে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত বলে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি ডেমরা থানা কে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য