বাতাসের নিম্নমানের দিক থেকে আইকিউএয়ারের তালিকায় নিয়মিত শীর্ষ দশে থাকা ঢাকার বায়ুর মানের আরও উন্নতি হয়েছে।
দূষিত বাতাসে বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার শীর্ষে ছিল বাংলাদেশের রাজধানী। তবে রোববার শীর্ষ পাঁচ থেকে বের হতে পেরেছিল মহানগরী। সোমবার ঢাকার বাতাসের মান আরও ভালো হয়েছে।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুর নিম্নমানের দিক থেকে ১৮তম স্থানে ছিল বাংলাদেশের রাজধানী। আগের দিন রোববার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে শহরগুলোর মধ্যে দূষিত বাতাসে ষষ্ঠ ছিল ঢাকা।
র্যাঙ্কিংয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল রাশিয়ার ক্রাসনয়ারস্ক, মঙ্গোলিয়ার উলানবাতোর ও পোল্যান্ডের ক্রাকো।
আইকিউএয়ার জানিয়েছে, আজ সকালের ওই সময়ে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ৮.৯ গুণ বেশি। রোববার কাছাকাছি সময়ে সেটি ছিল ১৮ দশমিক ৯ গুণ বেশি। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সেটি ছিল ৬৪.১ গুণ বেশি।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি খারাপ, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়।
তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
আজ সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১২৩। এর মানে হলো সে সময়টাতে ঢাকার বাতাস সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ছিল। রোববার সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৭১। এর অর্থ হলো সে সময়টাতে অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয় রাজধানীবাসীকে।
এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ৩৭০। সে সময়টাতে বিপজ্জনক বাতাসের মধ্যে থাকতে হয়েছে ঢাকাবাসীকে।
আরও পড়ুন:এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগ উঠে ইমন কাজীর বিরুদ্ধে। পরবর্তীতে তিনি খুন হন। এ মামলায় ওই নারীর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া আল-আমিন শেখ শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।
সোমবার বরিশালের হিজলা থানার গোবিন্দপুর খন্না এলাকায় অভিযান চালিয়ে আল-আমিনকে তার শ্বশুরবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার ওয়ারী বিভাগ।
মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি জানান, গত শনিবার কদমতলীর পশ্চিম মোহাম্মদবাগ সোনা মারিয়া জামে মসজিদের দক্ষিণ পাশে বস্তাবন্দী ইমন কাজীর মরদেহ পাওয়া যায়। পরে ভুক্তভোগীর বাবা কদমতলী থানায় মামলা করেন। মামলাটি ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি ডেমরা জোনাল টিম। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যার সঙ্গে জড়িতকে শনাক্ত করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি আরও জানান, ইমন কাজী ও আল-আমিন শেখ পেশায় অটোরিকশাচালক। সেই সুবাদে আল-আমিনের বাড়িতে ইমনের যাতায়াত ছিল। একপর্যায়ে আল-আমিনের স্ত্রীর সঙ্গে ইমন পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠে। আল-আমিন বিষয়টি জানতে পেরে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ইমনকে পাঁচ হাজার টাকা ধার দেয় আল-আমিন। কয়েকদিন পর ধারের টাকার জন্য ইমনকে চাপ দিতে থাকে।
গত ৩০ মে আল-আমিন ভুক্তভোগী ইমনকে কৌশলে তার বাসায় আনেন। সেখানে তাকে কোকের বোতলে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানোর পর গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘হত্যার পর ইমনের অটোরিকশাটি গেন্ডারিয়ার গঙ্গা শাহ মাজার এলাকায় ফেলে দেয়া হয়। পরদিন সন্ধ্যায় ইমনের মরদেহ বস্তায় ভরে কদমতলীর হেনোলাক্স গলির একটি ডোবায় ফেলে পালিয়ে বরিশালে শ্বশুরবাড়ি চলে যান আল-আমিন।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ ত্বরান্বিত করতে ইউনাইটেড নেশনস অফিস ফর প্রজেক্ট সার্ভিসেস, বাংলাদেশ (ইউএনওপিএস) তৃতীয় বারের মতো ফ্ল্যাগশিপ গোলটেবিল বৈঠক এসডিজি ক্যাফের আয়োজন করেছে।
মঙ্গলবার তাদের কার্যালয়ে ওই আয়োজন হয়।
এসডিজি-৬ এর ওপর গুরুত্বারোপ করে ওয়াটারএইডের সহযোগিতায় এতে এবার ‘বাংলাদেশ’স জার্নি ইন এনসিউরিং অ্যাকসেস টু সাসটেইনেবল ওয়াশ সার্ভিসেস’ শীর্ষক আলোচনা হয়।
এবারের পর্বে এসডিজি ক্যাফেতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকার, একাডেমিয়া, বুদ্ধিজীবী, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী ও পরামর্শকদের প্রতিনিধিসহ মূল অংশীদাররা।
অনুষ্ঠানে এসডিজি-৬ অর্জন, বাংলাদেশে টেকসই ওয়াশ সেবা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়া এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করার ক্ষেত্রে অর্থপূর্ণ সংলাপ ও গঠনমূলক আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তা ছিলেন ওয়াটারএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান।
টেকসই ও ব্যবহারযোগ্য ওয়াশ সেবা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বর্তমান পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে তিনি ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মানুষের একমাত্র মৌলিক চাহিদা হলো নিরাপদ পানি ব্যবহারের সুযোগ। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে মানুষের জন্য পানির উৎসের উন্নতির ক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে নিরাপদ পানি ব্যবহারের সুযোগ বৃদ্ধি করতে আরও প্রচেষ্টা চালাতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, এ বিষয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো কার্যকরী উপায়ে অবদান রাখতে সক্ষম হবে। যেন এসডিজি-৬ এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি, মানুষের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা যায়।’
অনুষ্ঠানে ইউএনওপিএস বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সুধীর মুরালিধরন বলেন, ‘এসডিজি ক্যাফের এই পর্বটি অন্তর্দৃষ্টিপূর্ণ আলোচনার সুযোগ করে দিয়েছে এবং টেকসই এবং অভিগম্য ওয়াশ পরিষেবাগুলো বিকাশের জন্য বর্তমান বাস্তবতা এবং ভবিষ্যত পথকে তুলে ধরেছে। ইউএনওপিএসের ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা থেকে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকায় ওয়াশ পরিকাঠামো উন্নয়নের ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে। গ্রামীণ ও শহুরে জনবসতি এবং প্রতিষ্ঠানে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা তৈরি এবং ওয়াশ-এর বিধান বিকাশের দীর্ঘ সময় ধরে আমরা কাজ করে আসছি।’
তথ্য আদান-প্রদান, অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ ও সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখছে এসডিজি ক্যাফে।
দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ইউএনওপিএস বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টার অংশ এ এসডিজি ক্যাফে।
সফলভাবে এসডিজি অর্জনের কৌশল নির্ধারণ ও অর্থপূর্ণ সংলাপে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ওয়াটারএইড, ওয়াটারডটঅর্গ, প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন, সিমাভি, এসএমভি নেদারল্যান্ডস ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ১০ জুন সমাবেশ ও মিছিল করতে চায়। এ জন্য অনুমতি চেয়ে মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জামায়াতের ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল ডিএমপি কার্যালয়ে যান।
তবে আবেদনটি গ্রহণ করে অনুমতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরে জানানোর কথা বলেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি সদর দপ্তরের যুগ্ম-কমিশনার (অপারেশন্স) বিপ্লব কুমার সরকার সাংবাদিকদের বলেন, ‘জামায়াতের প্রতিনিধি দল ডিএমপি সদর দপ্তরে এসেছিলেন। তারা ১০ জুন রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের অনুমতি চান। কমিশনারের কার্যালয় থেকে আবেদনপত্রটি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে অনুমতি দেয়া হবে কি হবে না, সে সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে।’
বিকেল ৪ টা ৪০ মিনিটের দিকে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে জামায়াতের প্রতিনিধি দলের প্রধান সাইফুর রহমান বলেন, ‘জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ সমাবেশ করতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছি।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের পরিচালক আশরাফুল আলম ইমন জানান, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমানসহ বন্দীদের মুক্তি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে গত ৫ জুন সমাবেশ ও মিছিল করতে চেয়ে তারা আবেদন করেন।
ওই সময় কর্মদিবসের কথা বলে ডিএমপি কমিশনার আবেদনটি নাকচ করে দেন। তাই কর্মসূচি বাস্তবায়নে তারা আবারও আবেদন করেছেন।
আরও পড়ুন:লিচুর বিচি গলায় আটকে রাজধানীর হাজারীবাগে অনিক নামের এক বাক প্রতিবন্ধী শিশু নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুপুর ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
১২ বছর বয়সী অনিকের মা পারভিন আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে বাক প্রতিবন্ধী ছিল। সকালে আমি কয়েকটি লিচু ছুলে রাখি ওকে খাওয়াবো বলে। বাটি রেখে আমি বারান্দায় গেলে ওই ফাকে সে নিজেই লিচু নিয়ে মুখে দেয়। এসময় তার গলায় লিচুর বিচি আটকে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলেও বাঁচানো গেল না।’
‘ছেলেটাকে আমি খুব কষ্ট করে লালন-পালন করেছি। পাঁচ বছর আগে ওর বাবা বিয়ে করে অন্যত্র চলে গেছে। এখন আমি আর কী নিয়ে বাঁচবো?
পারভিন আক্তারের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার মাইজদী থানা এলাকায়। বর্তমানে হাজারীবাগ গজমহল পুরাতন থানা এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।
ঢামেক পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক-এর মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি হাজারীবাগ থানাকে জানানো হয়েছে।’
আরও পড়ুন:নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ র তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার রাতে রাজেন্দ্রপুরে র্যাবের চেকপোস্টে তল্লাশির সময় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান বাহিনীর মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ‘নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন রাকিবসহ তিন সদস্যকে বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ অর্থসহ গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা গাজীপুর হয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুরের দিকে যাচ্ছিলেন।
‘র্যাব-১ ও র্যাব- ৭ এর অভিযানিক দল গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন করে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে সংগঠনের সূরা সদস্য ও অর্থ শাখার প্রধান মোশারফ হোসেন রাকিব, জাকারিয়া হোসাইন এবং আহাদুল ইসলাম মজুমদার সিফাত ওরফে মামিদকে গ্রেপ্তার করেন। অভিযান চলাকালীন সময় কিছু সদস্য পালিয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাহাড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের কারণে তারা চলে এসেছেন। এসব সশস্ত্র প্রশিক্ষণ নেয়া সদস্যরা বিভিন্ন অপরাধের জন্য সংগঠিত হচ্ছিলেন।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বাসায় তেলাপোকা মারার স্প্রেতে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বালাইনাশক কোম্পানি দ্য পেষ্ট কন্ট্রোলের কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি মঙ্গলবার ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় সোমবার রাতে বালাইনাশক কোম্পানি পেষ্ট কন্ট্রোলের কর্মকর্তা টিটু মোল্লাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তিনি ওই বাসায় তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেছিলেন। তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করছি।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় নিহত শিশুদের বাবা মোবারক হোসেন তুষার সোমবার তিনজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন। তদন্ত চলছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর আসামির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
পুলিশ জানিয়েছে, গত শুক্রবার বসুন্ধরার আই ব্লকের একটি নতুন বাসায় পেস্ট কন্ট্রোল সার্ভিসের কর্মীরা তেলাপোকা মারার বিষ স্প্রে করেন। এর দুদিন পর পরিবারটি রোববার ওই বাসায় ওঠে। বাসায় প্রবেশ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা।
পরে তাদের হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে রোববার সকালে ৯ বছরের শাহিল মোবারত জায়ান মারা যায়। একইদিন রাত ১০টায় মারা যায় ১৫ বছরের শায়েন মোবারত জাহিন।
এ ছাড়া মারা যাওয়া দুই শিশুর মা শারমিন জাহান লিমা ও বাবা মোবারক হোসেন বিষক্রিয়ায় অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বর্তমানে তারা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।
রাজধানীর খিলক্ষেত বরুয়া বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মেছের আলীর মরদেহ উদ্ধার হয় ২৩ মে। মরদেহে আঘাতের কোনো চিহ্ন ছিল না। এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি হত্যাকাণ্ড তা-ও নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ।
ঘটনার মোড় ঘুরে যায় একটি ব্যাগের হদিস পাওয়ার পর। মরদেহ উদ্ধারের পরদিন ঘটনাস্থলের পাশে ওই ব্যাগটি পায় পুলিশ। আর এই ব্যাগের সূত্র ধরেই পুলিশ নিশ্চিত হয় যে এটি হত্যাকাণ্ড। শেষ পর্যন্ত শনাক্ত হয় হত্যাকারী।
মেছের আলী হত্যার ঘটনায় রোববার রাতে রমজান আলী নামে একজনকে শ্রীপুরের মাওনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে খিলক্ষেত থানা পুলিশ। আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ক্যান্টনমেন্ট জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, খিলক্ষেতের বরুয়া বাজার সংলগ্ন বাসা থেকে ২০ মে রাতে বের হয়ে নিখোঁজ হন মেছের আলী। ২৩ মে বিকেলে বরুয়ার বোয়ালিয়া খাল সংলগ্ন আশিয়ান হাউজিং প্রজেক্টের বালুর চর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মেছের আলীর ছেলে আল আমিন বাদী হয়ে খিলক্ষেত থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।
মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় এবং প্রকাশ্যে কারও সঙ্গে মেছের আলীর শত্রুতা না থাকায় স্বাভাবিকভাবে ধারণা করা হচ্ছিল যে মেছের আলীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এমন ধারণা থেকেই পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যা মামলা করা হয়নি।
ঘটনাস্থল থেকে ব্যাগ উদ্ধার
মরদেহ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে সেখানে একটি ব্যাগ পান পুলিশের তদন্তকারীরা। সেই ব্যাগের ভেতরে কাস্তে, কম্বলসহ কিছু কাপড় ও মিনা নামে একজনের জন্ম নিবন্ধন ও টিকা কার্ড পাওয়া যায়।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাগ উদ্ধারের পর মিনা ও তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। কিন্তু তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, শাহাবুদ্দিন নিজেও একটি ঘটনার শিকার।
হত্যা রহস্যে নাটকীয় মোড়
শাহাবুদ্দিন ও মিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ক্যান্টনমেন্ট জোনের এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগে মিনার স্বামী শাহাবুদ্দিন তাদের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যাওয়ার উদ্যোগ নেন। সে লক্ষ্যে সহজ-সরল এই মানুষটি নারায়ণগঞ্জ থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে আসেন।
রেলওয়ে স্টেশনে বয়স্ক এক লোকের সঙ্গে শাহাবুদ্দিনের কথা হয়। তাকে ভাতিজা সম্বোধন করে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমিও নেত্রকোণায় যাব, চল একসাথেই যাই। আমরা যদি এখানে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করি তাহলে অনেক সময় লেগে যাবে।’
ওই ব্যক্তি বিকল্প রাস্তার কথা বলে শাহাবুদ্দিনকে বাসে করে নিয়ে আসেন কারওয়ান বাজারে। সেখানে তিনি শাহাবুদ্দিনকে চা খাওয়ান। চেতনানাশক মেশানো ওই চা খাওয়ার তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন শাহাবুদ্দিন। আর এই ফাঁকে তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ ও পকেটে থাকা ৪০০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান ওই বয়স্ক ব্যক্তি। পরবর্তীতে সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় শাহাবুদ্দিন নেত্রকোণায় পৌঁছেন।
শাহাবুদ্দিনের ব্যাগ যেভাবে মেছের আলীর মরদেহের পাশে
তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় ওই বয়স্ক ব্যক্তির সন্ধান পায় পুলিশ। তার নাম রমজান আলী। থাকেন গাজীপুরের শ্রীপুরে। তিনি মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে চা বা অন্যান্য খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে ছিনতাই করেন। কয়েক বছর ধরে এই কাজ করে আসছিলেন তিনি।
খিলক্ষেতের বরুয়া বাজার ও মেছের আলীকে যেখানে পাওয়া যায় সেই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০ মে একজন বয়স্ক লোক অটোরিকশায় মেছের আলীর সঙ্গে যাচ্ছেন। তার কাঁধে ঝুলানো র্যাক্সিনের একটি ব্যাগ। আর এই ব্যাগের ভেতরে ছিল শাহাবুদ্দিনের ব্যাগটি, যা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়।
ব্যাগের মধ্যে থাকা মিনা নামে এক নারীর জন্ম নিবন্ধন কার্ডের সূত্র ধরে খু্ঁজে বের করা হয় তার স্বামী শাহাবুদ্দিনকে। এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তির সহযোগিতায় পুলিশ পায় রমজানের তথ্য।
এডিসি ইফতেখায়রুল বলেন, ‘এই দুটি ঘটনা একই ব্যক্তি ঘটিয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা শ্রীপুর থেকে রমজান আলীকে গ্রেপ্তার করি। তিনি মেছের আলীকে চেতনানাশক খাইয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘রমজান আলী মেছের আলীকে চেতনানাশক খাইয়ে তার কাছে থাকা টাকাপয়সা নিয়ে চম্পট দেয়। অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকা মেছের আলী অতিরিক্ত চেতনানাশক প্রয়োগে মারা গেছেন কিনা তা ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
চার হাজার টাকার লোভে মেছের আলীকে হত্যা
শাহাবুদ্দিনের মতো মেছের আলীকেও টার্গেট করে চেতনানাশক খাইয়ে তার কাছে থাকা ৪ হাজার টাকা নিয়ে যান রমজান।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এডিসি ইফতেখায়রুল জানান, মেছের আলী নিখোঁজের দিন রমজানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। মেছের আলীর সবজির ভ্যানে বসেই অনেকক্ষণ কথা হয় দুজনের। রাতে বাসা থেকে মেছের আলী বের হয়ে রেলগেটের সামনে আসেন। সেখানে এক জায়গায় বসার পর রমজানা তাকে চা পান করান। চেতনানাশক মেশানো ওই চা পান করার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মেছের আলী। পরে তার কাছে থাকা চার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে দেহ টেনে নিয়ে বড় বড় ঘাস আছে এমন জায়গায় ফেলে আসেন রমজান।’
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মেছের আলীর সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর রমজান দেখতে পান যে তার কাছে ৪ হাজার টাকা রয়েছে। এই চার হাজার টাকার লোভেই মেছেরকে দেয়া চায়ে চারটি চেতনানাশক বড়ি মিশিয়ে দেন তিনি।
‘মেছের আলীকে ফেলে যাওয়ার সময় রমজান আলী ভুলবশত ওই ব্যাগটি ঘটনাস্থলে ফেলে যান। আর ওই ব্যাগের সূত্র ধরেই আসামিকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য