ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস্ লিমিটেডের (চিনিকল) জমি নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার নারগুণ কহর পাড়া ফার্মের জমিতে শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয় ও পুলিশের ভাষ্য, ঠাকুরগাঁও চিনিকলের জমিটি আখ রোপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছিল। পরে মাহাবুব রহমান নামে একজন ও তার পরিবার জমিটির মালিকানা দাবি করে সেখান ঘর তৈরি করেন। শনিবার জমিটি দখলমুক্ত করতে যায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ। এ সময় জমির মালিকানা দাবি করা মাহাবুবের পরিবার তাদের বাধা দিতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়েছেন স্থানীয়রা। সেখানে ২০-২৫ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, আখ রোপণের জন্য প্রস্তুত করা ১ একর ৩৭ শতক জমি বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করে ভেতরে গাছ রোপণ ও ছোট ছোট ঘর বানিয়েছেন জমিটির মালিকানা দাবি করা মাহাবুব রহমানের পরিবার। ঠাকুরগাঁও চিনিকল কর্তৃপক্ষ গিয়ে ওইসব ঘরবাড়ি ভেঙে জমি দখলমুক্ত করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাহাবুব রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জমির রেকর্ডীয় মালিক। দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি চিনিকল কর্তৃপক্ষকে বলছি। তারা কোনো কথা শুনছিল না। তাদের কাগজপত্রও দেখিয়েছি, কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছিল না। তাই গত ৪ ফেব্রুয়ারি জমির চারপাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে নিজের দখলে নিয়েছিলাম। আজ তারা সন্ত্রাসী কায়দায় হামলা চালিয়ে জমির গাছ উপড়ে ফেলেছে এবং ঘরগুলো ভেঙে ফেলেছে, বাঁশের বেড়া তুলে ফেলেছে।’
মাহাবুব রহমান বলেন, ‘চিনিকল কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ করেছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছিল। আজকের হামলার ঘটনা চিনিকল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত।’
মাহাবুবের ভাই সোহেল রানা বলেন, ‘পুলিশ বলেছিল আমরা কোর্টকে না জানিয়ে চিনিকলের জমি দখল করে ভুল করেছি। আমাদের এভাবে দখল করা ঠিক হয়নি স্বীকারও করেছি। যেহেতু তারা থানায় অভিযোগ করেছে, তাহলে এমনভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় আজ হামলা চালাল কেন? আমরা আমাদের ক্ষতিপূরণ ও ঘটনার বিচার দাবি জানাই।’
ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস্ লিমিটেডের প্রশাসনিক মহাব্যবস্থাপক সুভাস চন্দ্র সিংহ বলেন, ‘জমিটি ঠাকুরগাঁও চিনিকলের (সরকারি) সম্পত্তি। গত ৪৪ বছর ধরে চিনিকল এটি ভোগ দখল করে আসছে। এ মৌসুমে আখ রোপণের জন্য এখানে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছিল, কিন্তু সম্প্রতি এটি কোনো কাগজপত্র ছাড়াই জবর দখল করে নেন তারা (মাহাবুবের পরিবার)। আমরা থানায় অভিযোগ করি। তারা উভয় পক্ষকে ডেকে বলেন, যদি কাগজপত্র ঠিক থাকে এবং কোর্টের অনুমতি থাকে তাহলে তারা জমি পাবে। তাদের কোর্টের কোনো অনুমতি নেই। আজ আমরা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে এখানে তাদের উচ্ছেদ করতে এসেছি। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা আক্রমণ চালায়। আমাদের দুজন আহত হয়েছেন।’
ঠাকুরগাঁও সুগার মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহজাহান কবির নিউজ বাংলাকে বলেন, ‘সরকারের জমি অবৈধভাবে কেউ দখল করবে এটা অন্যায়। আমাদের জমিতে আমরা আখ রোপণ করব। সেখানে পাঁচ টন আখের বীজ রাখা হয়েছিল। তারা সব কাজে বাধা দিয়ে নিজেদের দখলে নেয়ার চেষ্টা করেছে। আমাদের শ্রমিকরা আজ আখ রোপণ করতে গেলে তারা হামলা করেছে।’
শাহজাহান কবির আরও বলেন, ‘আমরা কাগজ চেয়েছিলাম, তারা কোনো কাগজ দিতে পারেনি। আমি এটাও বলেছিলাম, যদি তারা আইনগতভাবে জমি পেয়ে থাকে তাহলে আমি তাদের সহযোগিতা করব।’
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, ‘সরকারের দখলে থাকা জমি হঠাৎ কেউ দখল করেছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ এলে দুই পক্ষকে ডেকে সংঘর্ষে যেতে নিষেধ করা হয়েছে এবং কাগজপত্র ঠিক থাকলে আইনি সহায়তা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে আজকের হামলা ও উচ্ছেদের বিষয়টি আগে থেকে কেউ আমাদের জানায়নি।’
ওসি আরও বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বাগেরহাটের রামপালে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে দুই যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
রামপাল থানার বড় দূর্গাপুর পুটিমারি গ্রামের স্থানীয় পলাশের ঘেরের টংঘরে শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ধর্ষণের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে ওই দুজনকে আটক করা হয়।
আটক দুজন হলেন উপজেলার পাড়গোবিন্দপুর গ্রামের রাসেল শেখ ও কালেখার গ্রামের রাকিব হোসেন সজল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রহমত নামের আরেক যুবক পলাতক।
বাগেরহাট জেলা পুলিশের মিডিয়া সেলের পরিদর্শক বাবুল আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া কিশোরী তার মামার বাড়িতে যাচ্ছিল। পথে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের রনসেন মোড়ে গেলে বিকেল সাড়ে ৫টা দিকে রহমত ও রাসেল শেখ তাকে একটি মোটরসাইকেলে উঠিয়ে বড় দুর্গাপুর পুটিমারি গ্রামের পলাশের ঘেরের টংঘরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ছিলেন রাকিব হোসেন সজল।
তিনি আরও জানান, ওই সময় তিন যুবক কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এরপর তারা রাত সাতটার দিকে কিশোরীকে তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে ঝালকাঠিতে ১০০ পাউন্ডের কেক কাটা হয়েছে।
জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেক কাটার এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা অন্য রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে শত পাউন্ডের কেকটি কাটেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফারাহ্ গুল নিঝুম। এতে জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন এবং জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার দেশে নেয়া হয় বিভিন্ন কর্মসূচি। কেন্দ্রীয়ভাবে বাদ জোহর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, বাদ আসর ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
একই সঙ্গে সকালে মেরুল বাড্ডায় বৌদ্ধ মন্দিরে বৌদ্ধ সম্প্রদায়, খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (সিএবি) মিরপুর ব্যাপ্টিস্ট চার্চে ও বেলা ১১টায় ঢাকেশ্বরী মন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করে। এসব কর্মসূচিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য (এমপি) উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ইন্তেকাল করেছেন।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শুক্রবার রাত ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
আবদুস সাত্তারের একমাত্র ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আবদুস সাত্তার সাত মাসেরও বেশি সময় ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন। সেই সমস্যার কারণে তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল তার।
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামের আবদুল হামিদ ভূঁইয়া ও রহিমা খাতুনের সংসারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি পদে ছিলেন দীর্ঘদিন।
আবদুস সাত্তার ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও জুনের নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে সারা দেশের চোখ ছিল আবদুস সাত্তারের দিকে। বিএনপি ছেড়ে আসা এ নেতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপনির্বাচনে দেখিয়েছেন রাজনীতির ভিন্ন রূপ। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন আবদুস সাত্তার।
আরও পড়ুন:মহাসড়কে ফেনীর ছাগলনাইয়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় সাবেক সেনা কর্মকর্তাসহ একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার তিন আরোহী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার নিজকুঞ্জরা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন সেনাবাহিনীর সাবেক সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও সেনা কল্যাণের চট্টগ্রাম শাখার কর্মকর্তা ৫৯ বছরের আবু তাহের, তার স্ত্রী ৪৮ বছলেরর সালমা আক্তার ও অজ্ঞাত আরেকজন।
নিহতের আবু তাহেরের ভাই ছাগলনাইয়ার ঘোপাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তার ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বাংলাবাজারে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে তারা নিহত হন।
সাদেক হোসেন আরও বলেন, বিপরীত দিক থেকে আসা শ্যামলী পরিবহনের একটি গাড়ি সিএনজিটিকে চাপা দিলে মারা যান তারা।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রুহুল মহসিন সুজন বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গেল সপ্তাহের তিন দিনের প্রবল বর্ষণে গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে করতোয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানির স্রোতে ইতোমধ্যে হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা গ্রামের নদীর বামতীর বাঁকে অন্তত ১৫০ মিটার বাঁধ ধসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর এমন আগ্রাসী রূপে ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। তাদের সহযোগিতা করছে স্থানীয়রা।
পাউবো গাইবান্ধার তথ্য অনুযায়ী, জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও করতোয়ার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করতোয়া নদীর পানি গোবিন্দগঞ্জের কাটাখালী পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ছাড়া ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ির তিস্তামুখ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, ঘাঘট নদীর পানি জেলা শহরের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২০১ সেন্টিমিটার এবং তিস্তা নদীর পানি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পয়েন্টে ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবো ও স্থানীয়রা জানান, প্রবল বৃষ্টি আর নদীর স্রোতে বুধবার থেকে হোসেনপুর ইউনিয়নের চেরেঙ্গা গ্রামের করতোয়া নদীর বামতীর এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ব্লক ধসে ভাঙন শুরু হয়। এতে অন্তত দেড় শ মিটার বাঁধ ধসে যায়।
বাঁধের চলমান ভাঙন রক্ষা করা না গেলে ২০টির বেশি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান এলাকাবাসী। এ ছাড়া হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ফলে জিও ব্যাগের মাটি-বালি সংকট দেখা দিয়েছে বলেও জানায় পাউবো কর্তৃপক্ষ।
হোসেনপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রতি বছর পানি বৃদ্ধি পেলেই এই এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এখন এখানে অর্ধেক বাঁধ ধসে গেছে। বাঁধ ছিঁড়ে গেলে এখানকার ২০টির বেশি গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাড়িঘর তলিয়ে যাবে; নষ্ট হবে ফসলি জমি, মাছের ঘের। মানুষ ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে।’
তিনি জানান, এখানে এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলাচ্ছে। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ এলাকার লোকজন সার্বক্ষণিক পাহারা দিচ্ছে। এখানকার ভাঙন রোধে পরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ জরুরি।
পাউবো গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘গেল ২৪ ঘণ্টায় করতোয়ায় ১২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ২৩ সেস্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টি এবং উজানের ঢলে পানি বৃদ্ধির কারণে স্রোতের সঙ্গে পলাশবাড়ীর হোসেনপুরে বাঁধ কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
‘ভাঙন শুরুর পর থেকেই আমরা জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে ভাঙনের ঝুঁকি অনেকাংশেই কমে গেছে।’
আরও পড়ুন:ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে ভারি বৃষ্টিপাতে মাটির ঘর ধসে দুই সহোদরের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুইজন হলো ওই গ্রামের কৃষক মন্নাফ মিয়ার সন্তান ১২ বছর বয়সী রাফিন ও ১০ বছর বয়সী মিশু।
এ ঘটনায় শিশু দুটির বাবা মন্নাফ, মা রোকসানা ও তাদের সহোদর ইশু আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ইশুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিজয়নগর থানার ওসি রাজু আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘মন্নাফ, তার স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে মাটির ঘরে থাকতেন। শুক্রবার ভোররাতে সবাই একসঙ্গে ওই মাটির ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ওই সময় ভারি বৃষ্টি শুরু হলে তাদের মাটির ঘরটি ধসে পড়ে। এতে তারা পাঁচজনই মাটির নিচে চাপা পড়েন।
‘পরে তাদের জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মন্নাফের এক মেয়ে রাফিন ও ছেলে মিশুকে মৃত বলে জানান।’
এ ব্যাপারে পত্তন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাটির ঘর ভেঙে চাপা পড়া পরিবারটি সাবেক চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান রতনের আত্মীয় হয়। অতি বৃষ্টিতে মাটিতে নরম হয়ে ভেঙে পড়ে পাঁচজনই মাটি চাপা পড়ে।
‘ওই সময় বিকট শব্দ হলে প্রতিবেশীরা এসে মাটি চাপা থেকে তাদের বের করেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ. ইরফান উদ্দিন আহমেদ জানান, মাটি চাপা পড়ে এক পরিবারের দুই ভাই-বোনের মৃত্যুর বিষয়টি দুঃখজনক। জেলা প্রশাসক শাহগীর আলমের সঙ্গে কথা বলে আর্থিক সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় এক নারী নিহত হয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদীর মোহনায় শুক্রবার দুপুরে এ দুর্ঘটনায় পড়ে স্পিডবোটটি।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী ফিরোজা খাতুন সেন্টমার্টিন দ্বীপের ডেইলপাড়ার এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক নারী সদস্য।
টেকনাফ উপজেলার ইউএনও আদনান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘দুপুরে দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলমের মালিকানাধীন স্পিডবোটটি ২১ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়ার পথে নদীর মাঝামাঝি মোহনায় হঠাৎ তলা ফেটে সেটি ডুবে যায়। দুর্ঘটনার খবরে কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই নারীকে মৃত ঘোষণা করেন। অবৈধভাবে এ রুটে চলাচলকারী স্পিডবোটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘নাফ নদীতে যাত্রীবাহী স্পিডবোট ডুবিতে সাবেক এক নারী ইউপি সদস্য নিহত হয়েছেন। আরও কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিদের বিষয়ে আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।’
মন্তব্য