বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবা ও পণ্যের দাম কমানো, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি, বর্তমান সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিভাগগুলোতে সমাবেশ করছে বিএনপি।
দুপুর ও বিকেলে এসব সমাবেশে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নিয়েছেন।
ঢাকা
রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায় ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এতে প্রধান অতিথি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ ছাড়া ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা সমাবেশে অংশ নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম
নগরীর কাজীর দেউড়ী এলাকায় বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা, যাতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
রাজশাহী
শহরের সোনাদিঘী মোড় এলাকায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
খুলনা
মহানগরীর কে ডি ঘোষ রোডের কেসিসি মার্কেট ও জেলা পরিষদ ভবনের সামনে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
সিলেট
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকীর সভাপতিত্বে শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে নগরের রেজিস্টারি মাঠে এ সমাবেশ শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
ফরিদপুর
বিএনপির সাংগঠনিক বিভাগ ফরিদপুর শহর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউট মাঠে সমাবেশে প্রধান অতিথি করা হয়েছে দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুকে।
রংপুর
বিভাগীয় শহরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা, যাতে প্রধান অতিথি দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান।
ময়মনসিংহ
নগরের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে রয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
বরিশাল
নগরের জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে সমাবেশে অংশ নিয়েছে বিএনপি, যাতে প্রধান অতিথি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
কুমিল্লা
বিএনপির সাংগঠনিক আরেক বিভাগ কুমিল্লার টাউন হল প্রাঙ্গণে সমাবেশে অংশ নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এতে প্রধান অতিথি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিউজবাংলার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি আরাফাত বিন হাসান, রাজশাহী প্রতিনিধি আহসান হাবিব অপু, খুলনা প্রতিনিধি আওয়াল শেখ, সিলেট প্রতিনিধি দেবাশীষ দেবু, ফরিদপুর প্রতিনিধি রাশেদুল হাসান কাজল, রংপুর প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরুজ্জামান মিন্টু, বরিশাল প্রতিনিধি তন্ময় তপু ও কুমিল্লা প্রতিনিধি মাহফুজ নান্টু]
আরও পড়ুন:তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি নেতারা চান না যে বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পান। তারা যদি তা চাইতেন তাহলে আদালতে গিয়ে বড় বড় আইনজীবী দিয়ে মামলা লড়তেন।’
মঙ্গলবার রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতির পিতার ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বিশেষ শিশুদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের মাতব্বরিটা আর থাকে না। সে জন্য ওনারা চান না যে খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পান।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা কিছুদিন আগে বলেছিলেন, খালেদা জিয়া এমন অসুস্থ যে বিদেশে নেয়া না হলে তিনি মারা যাবেন। তাদের কথায় মনে হচ্ছিল, তারা চাচ্ছিলেন খালেদা জিয়া মারা যান। উনি বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চিকিৎসায় ভালো হয়ে গেলেন।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘এখন কোনো ইস্যু নেই। খালেদা জিয়ার অসুস্থতার ইস্যু হালে পানি পায়নি। ১০ ডিসেম্বর বড় একটা অশ্ব ডিম্ব পেড়েছিল। তাদের আন্দোলনে তাদের নেতা-কর্মীরাও সাড়া দেয়নি। তাই এখন তারা রোড এক্সিডেন্টের মধ্যে গেছে।’
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ. রহমান, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগ জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণসহ অন্যান্য নেতা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তাকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৩৭তম ব্যাচের ছাত্র সনজিত দাস ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদ্য বিদায়ী সভাপতি। এর আগে তিনি জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়েছে, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে সনজিত চন্দ্র দাসকে গ্রেড-৯ এর বেতনের সর্বোচ্চ ধাপ (প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদকাল বা সন্তুষ্টি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার পদে যোগদানের তারিখ থেকে যুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হলো।
প্রধানমন্ত্রীর এসাইমেন্ট অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর সনজিত চন্দ্র দাস নিজউবাংলাকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার অভিভাবক। উনি যেখানে যেভাবে আমাকে পাশে রাখবেন আমি সেভাবেই কাজ করে যাব। এটি আমার পরম সৌভাগ্য যে তিনি আমাকে তার পাশে থেকে কাজ করার সুযোগ দিয়েছেন। এই পদে তার পাশে থেকে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেব।’
প্রধানমন্ত্রীর এসাইমেন্ট অফিসার হিসেবে আরও দু’জন কাজ করছেন। তারা হলেন-আফরোজা বিনতে মনসুর ওরফে গাজী লিপি ও মুহম্মদ আরিফুজ্জামান নূরনবী।
ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) মেরামতে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বিদায়ী নুরুল হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতে এই অর্থ চাওয়া হয়েছে।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন এসব ইভিএম মেরামত করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণে ব্যবহার করতে চায়।
মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বরাদ্দ নিশ্চিত করতে বিশেষ কোনো যুক্তি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অশোক কুমার বলেন, ‘না, বিশেষ কোনো যুক্তি তুলে ধরা হয়নি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশন ইভিএম ব্যবহার করতে চায়। আর সে লক্ষ্যেই এসব ইভিএম মেরামতের জন্য ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনকে ইভিএম সরবরাহ করে বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ)। ১ লাখ ১০ হাজার ইভিএম মেরামতে ১ হাজার ২৬০ কোটি টাকা চেয়েছিল প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানটি৷
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমপক্ষে দেড় শ’ আসনে ইভিএম ব্যবহারের লক্ষ্যে ৮ হাজার ৭১১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছিল কমিশন। কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেই প্রকল্প আপাতত স্থগিত করেছে সরকার। ফলে হুদা কমিশনের রেখে যাওয়া দেড় লাখ ইভিএম-এর ওপরই কমিশনকে নির্ভর করতে হচ্ছে। কিন্তু এর মধ্যে ৪০ হাজার মেশিন প্রায় ব্যবহার অযোগ্য। এ অবস্থায় দ্বাদশ ভোটের আগে এসব মেশিন মেরামতে বরাদ্দ না পেলে পুরনো পদ্ধতি ব্যালটে ফিরে যেতে হবে কমিশনকে।
ইভিএম মেরামতে টাকা বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হচ্ছে- নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সোমবার এমন তথ্য জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান। সে সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এখনও টাকার নিশ্চয়তা পাইনি। চাহিদাকৃত অর্থের অর্ধেক চলতি অর্থবছরে এবং বাকিটা আগামী অর্থবছরে দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তাব পাঠাচ্ছি। এখন অর্থ বিভাগ টাকার সংস্থান করলে আমরা ইভিএমের ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হব।’
আরও পড়ুন:সাংবাদিক ও বিএনপি নেতা শওকত মাহমুদকে দল থেকে বহিষ্কার করা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। মঙ্গলবার দলটির পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান পদসহ সাধারণ সদস্য পদ থেকেও তাকে বহিষ্কার করার বিষয়টি জানানো হয়।
বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দলের নেতৃত্ব শওকত মাহমুদকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
‘ন্যাশনাল কমিটি ফর সিভিল রাইটস জাতীয় ইনসাফ কায়েম কমিটি’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে ১৬ মার্চ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠন এবং সেই সরকারকে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান প্রণয়ন ও তার অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানো হয়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক লেখক ও এনজিও ব্যক্তিত্ব ফরহাদ মজহার এবং সদস্য সচিব সাংবাদিক শওকত মাহমুদ। দলকে না জানিয়ে আরেক সংগঠনের ব্যানারে এমন দাবি জানানোয় শওকত মাহমুদকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, শওকত মাহমুদকে এর আগে একাধিক বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় বিএনপি। সবশেষ ২০২২ সালের এপ্রিলে পেশাজীবী সমাজের ব্যানারে একটি সমাবেশ ডেকে সরকার পতনের আহ্বানের পটভূমিতে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এছাড়া ২০২০ সালের ডিসেম্বর এবং ২০১৯ সালেও তাকে এমন নোটিশ দেয়া হয়।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও পেশাজীবী পরিষদের ব্যানারে শওকত মাহমুদের নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করায় তাকে এসব কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। অভিযোগ আনা হয়, এসব কর্মসূচিতে বিএনপির নাম ব্যবহার করা হলেও বাস্তবে দলের কোনো সংশ্লিষ্টতা ছিলো না।
ভোট চুরির অপবাদ যুক্তরাষ্ট্রেও আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, অন্য দেশকে অপবাদ দেয়ার আগে নিজের দেশে ভোট চুরির অপবাদগুলো থামান।
মঙ্গলবার রাজধানীর বংশালে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্কুল মাঠে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিটগুলোর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর এক প্রতিবেদনে সোমবার বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ দেশের গণতন্ত্র পরিস্থিতিসহ নানা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয় ওই প্রতিবেদনে।
এ সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পৃথিবীর কোন দেশে ত্রুটিমুক্ত গণতন্ত্র আছে? যারা বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন, তাদের দেশেও গণতন্ত্র ত্রুটিমুক্ত নয়। অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ার আগে ঘরের খবর নেন।
‘আজও যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার পরাজয় মেনে নেননি। বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বলেন, আপনাদের দেশেও গান অ্যাটাক হয়। অন্যের সমালোচনা করার আগে নিজেদের চেহারা দেখুন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি যতই নালিশ করুক, বিদেশিদের কথায় বাংলাদেশের মানুষ ভোট দেবে না। বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে ত্রুটিমুক্ত করতে শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্হাকে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে আইনগতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে।’
বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে, লবিস্ট নিযোগ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন কাঁদায় আটকে গেছে। আন্দোলনের এ গাড়ি আর উঠবে না। তাদের আন্দোলনে জনগণ নেই। নেতা-কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। তাই তাদের এখন অবলম্বন ষড়যন্ত্র, নাশকতা ও চোরাগোপ্তার পথ। সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।’
শেখ হাসিনার মতো দেশে এত উন্নয়ন অর্জন কোনো নেতা করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিএনপির পদযাত্রা মানেই পতন যাত্রা। বিএনপির আন্দোলন কাঁদায় আটকে যাওয়া গরুর গাড়ির মতো আটকে গেছে। এ গাড়ি আর উঠবে না। বিএনপির আন্দোলনের গাড়ি খাদে পড়েছে। এখন তারা ষড়যন্ত্র করছে।
‘তাদের আন্দোলন এখন নাশকতা। বিএনপির আন্দোলন এখন আর জমছে না। কার সঙ্গে খেলবে আওয়ামী লীগ? এবার খেলা হবে নির্বাচনে। খেলা হবে আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, নাশকতার বিরুদ্ধে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাঈনুদ্দিন রানার সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজার সঞ্চালনায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। অব্যাহত এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএন) টিভিকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব মঙ্গলবার সকালে সম্প্রচার হয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশটি রাতে প্রচারিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমি মনে করি যে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এই যুদ্ধ (ইউক্রেনে) বন্ধ করতে বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত।’
যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি আমরা। কোনো বিরোধ থাকলে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমরা কখনই কোনো ধরনের আগ্রাসন বা কোনো সংঘর্ষকে সমর্থন করি না।’
তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বিখ্যাত সাংবাদিক রিচার্ড কোয়েস্টের নেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং ঋণ দেয়ার মাধ্যমে চীনের সৃষ্ট মরণফাঁদ ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি অনুসরণ করছি, তাই যখন আমরা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আক্রমণ দেখি, আমরা অবশ্যই এর বিরোধিতা করি। যুদ্ধ এক পক্ষের দ্বারা সংঘটিত হতে পারে না, উভয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভূখণ্ডে (স্বাধীনভাবে) বসবাস করার এবং তাদের নিজস্ব অঞ্চল রক্ষার অধিকার রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তার দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমর্থন করে এমন প্রতিটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলের কাছাকাছি, চীন, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত। যারা আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছেন, আমরা তাদের সঙ্গে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তারা বিনিয়োগ করছে এবং কিছু নির্মাণকাজ করছে, ‘এটিই মূল কথা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল নই।’
চীন থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়ে আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক। আমরা বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে বেশিরভাগ ঋণ নিয়ে থাকি। চীন থেকে আমাদের ঋণ খুবই কম। এটা শ্রীলঙ্কা বা অন্য কারো মতো নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অকারণে সরকার কোনো ঋণ বা কোনো মেগা প্রকল্প নেয় না। কোনো মেগা প্রকল্প বা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করি কোন প্রকল্প থেকে আমরা রিটার্ন পেতে পারি এবং আমরা সুবিধাভোগী হব।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের কী প্রয়োজন জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, তারা যেন তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়। শুধু তাই নয়, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপও শুরু করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে, তারা সঠিকভাবে সাড়া দিচ্ছে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইতিমধ্যে চীন, আসিয়ান দেশ, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সাথে কথা বলেছে এবং মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ দেয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেছে।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, মিয়ানমার সরকার কারো কথাই শুনছে না। এটাই সমস্যা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশি (এক কোটি) মানুষের প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা (১২ লাখ) বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ হয়ে উঠছে। কারণ দেশটিতে অতিরিক্ত জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে। আমাকে তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:
বিছানায় শুয়ে মোবাইল চালাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। পা টিপছেন শাখা ছাত্রলীগেরই দুই নেতা।
এমনই একটি ছবি সোমবার দিনজুড়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক ও সমালোচনা।
শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের ৩১১ নম্বর কক্ষের চিত্র এটি। এই কক্ষে থাকেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল। অন্যদিকে পা টিপতে থাকা দুই নেতা হলেন, উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ ও উপক্রীড়া সম্পাদক শফিউল ইসলাম।
তবে সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের দাবি ছবিটি আড়াই বছর আগের। তার অসুস্থ থাকাকালীন এই ছবি দিয়ে অপরজনীতি করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
রুবেল বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম, আমার ছোট ভাই দুইজন আমার সেবা করেছে। এটা মানবিক বিষয়। ছাত্রলীগের সভাপতি বলে কি কেউ আমার সেবা করতে পারবে না? আমার সঙ্গেরই কেউ সেই সময় ছবি তুলে এখন অপরাজনীতি করছে।
তিনি বলেন, অসুস্থ হলে মানুষ মানুষকে এমনিতেই দেখতে আসে, সেবা-যত্ন করে। এটা একটা স্বাভাবিক বিষয়। ছবিতে ওষুধপথ্য দেখা যাচ্ছে। যারা অপরাজনীতি করছেন তারা অমানবিক কাজ করছেন। আমি নিজেও প্রেসিডেন্ট হয়ে পা টিপেছি, সেবা করেছি, এমন ছবিও আমার ওয়ালে দিয়েছি। সেটা ভাইরাল করুক।
পা টেপার বিষয়ে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের উপকর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক শামীম আজাদ বলেন, রুবেল ভাই অসুস্থ ছিলেন। আমরা ওনার পায়ে মলম লাগিয়ে দিয়েছি। পরিবারে কেউ অসুস্থ হলে অন্যরা যেমন সেবা করেন, এটাও তেমন।
বিশ্ববদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেজাউল হক রুবেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০০৬-০৭ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি স্নাতক পাস করেন ২০১০ সালে। স্নাতকোত্তর পাস করেছেন ২০১৩ সালে। আর ২০১৯ সালে ১৪ জুলাই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান। সভাপতির মেয়াদ এক বছর হলেও তিনি এখনো এই পদে রয়ে গেছেন। তার শিক্ষাবর্ষের অন্য শিক্ষার্থীরা অন্তত ৯ বছর আগে স্নাতকোত্তর শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়েছেন। তবে তিনি এখনও ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য