খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের প্রতিবাদ; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের সব বিভাগীয় সদরে শনিবার সমাবেশ করছে বিএনপি।
এদিকে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে সিলেট ও খুলনায় একই দিনে একই নগরীতে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। সিলেটে রেজিস্ট্রি মাঠে বিএনপি ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে। আর খুলনায় আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করবে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে। কেসিসি মার্কেটের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে বিএনপি।
দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের পাল্টাপাল্টি এই কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টির শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সিলেট
সিলেটের রাজপথে নিজেদের শক্তি দেখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দল শনিবার দুপুরে নগরের পৃথক স্থানে কর্মসূচি দিয়েছে। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল দুটি এর মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে চাইছে।
জানা যায়, প্রায় ৫ বছর পর একই দিনে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে সিলেটের রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর আগে সবশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মুখোমুখি হয় তারা। ওইদিন খালেদা জিয়ার সাজার রায়কে কেন্দ্র করে ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অনেকে। এরপর উভয় দল নানা ইস্যূতে রাজপথে সরব থাকলেও কখনও মুখোমুখি হয়নি।
তবে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি না থাকলেও গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নগরের রিকাবীবাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
শনিবার ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ ও ‘শান্তি সমাবেশ’-এর মাধ্যমে আবার রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। দীর্ঘদিন পর একই দিনে দুই দলের কর্মসূচির কারণে সংঘাতের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। তবে দুই দলের নেতাদের প্রত্যাশা, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে সমাবেশ।
‘আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেপ্ততারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে গত জানুয়ারিতেই সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। শনিবার বেলা ২টায় সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে এই সমাবেশ শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
সমাবেশ সফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটজুড়ে কর্মিসভা, পথসভা, জনসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের চেষ্টা করছেন তারা। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে দলটির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবরে চিঠিও দেয়া হয়েছে।
এই সমাবেশ সফলে নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার প্রস্তুতি সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
তিনি বলেন, ‘৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিএনপি আহূত বিভাগীয় সমাবেশ ইতিহাস সৃষ্টি করবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুধু জাতীয়তাবাদী শক্তি নয়, গণতন্ত্রকামী সিলেটবাসীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সূচনা হয়েছে। সিলেটবাসী সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ সফলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
অপরদিকে একই দিনে সিলেটে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথমে এই সমাবেশ বিএনপির সমাবেশস্থল রেজিস্ট্রি মাঠে করার ঘোষণা দেয় দলটি। পরে স্থান পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিকেল ৩টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। শান্তি সমাবেশ সফলেও প্রচার চালাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের শক্ত অবস্থানের জানান দিতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।
শান্তি সমাবেশ সফল করতে বৃহস্পতিকার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সভা করে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। এতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে স্ব স্ব ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশে অংশগ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নি-সন্ত্রাস রুখে দিতে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। কোনোভাবেই তাদেরকে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।’
দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর ব্যাপক শো-ডাউনের প্রস্তুতির কারণে হঠাৎ করেই সিলেটের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে উত্তাপ। উঁকি দিচ্ছে সংঘাতের শঙ্কাও।
তবে বিএনপি শান্তিুপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চায় জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা আশাবাদী এটা কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। যার যার কর্মসূচি যার যার মতো করে পালন করবেন। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা এলে তা জয় করে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের সমাবেশ সফল করবে। আমরা সেরকম প্রস্তুতি নিয়েছি।’
বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করলে সংঘাত হবে না জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পক্ষে। রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে। তাই আমরা উদারতা দেখিয়ে নিজেদের কর্মসূচির স্থানও পরিবর্তন করেছি। এখন বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা না করে তবে আমাদের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে।’
দুই দলের পৃথক কর্মসূচির কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। নগরের সব মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরের প্রবেশপথগুলোতে পেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
খুলনা
খুলনা নগরীর কেসিসি মার্কেটের সামনে ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ আয়োজনে প্রস্তুতি সেরেছে বিএনপি। একই দিনে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে ‘শান্তি সমাবেশ’ করবে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ। দুই দলের নেতাদের কাছ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পুলিশ বলছে, একই দিনে ও সময়ে নগরীতে দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশের কথা মাথায় নিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, শনিবার বিকেল ৩টায় শিববাড়ি মোড়ে তাদের শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানার পরিচালনায় ওই বিশেষ বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
মেয়র খালেক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এই শান্তি সমাবেশকে জনসতায় পরিণত করে ষড়যন্ত্রকারীদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে হবে। খুলনায় শান্তি সমাবেশের কথা শুনে বিএনপি নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারা নানাবিধ ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে শুরু করেছে।
বিএনপির এ ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া যাবে না। বিএনপি-জামায়াতকে মোকাবেলা করতে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’
মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ জানান, শান্তি সমাবেশে সফল করার জন্য তাদের নানমুখী প্রস্তুতি চলছে।
অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন ও আওয়ামী সন্ত্রাস-নির্যাতনের প্রতিবাদ; বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য কমানোসহ ১০ দফা দাবিতে বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে দেশের সব বিভাগীয় সদরে এই সমাবেশ পালন করবে।
খুলনা মহানগর বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার দুপুরে শহীদ হাদিস পার্ক সংলগ্ন কেসিসি মার্কেটের সামনে তারা সমাবেশ করবে। এর আগে বিএনপির পক্ষ থেকে সমাবেশের জন্য সোনালী ব্যাংক চত্বর বা শহীদ হাদিস পার্ক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) থেকে বিএনপিকে কেসিসি মার্কেটের সামনে সমাবেশের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
অনুমতি পাওয়ার পর সমাবেশস্থলে শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে মাইক টানানো শুরু করে বিএনপি।
দলীয় সূত্র জানায়, কেসিসি মার্কেট ও জেলা পরিষদের সামনের সড়কে থানার মোড় অভিমুখী মঞ্চ হচ্ছে। খুলনা মহানগর ও জেলাসহ বিভাগের অন্য সব জেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেবেন।’
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘আমাদের সমাবেশ ঘিরে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি ও হয়রানি করছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ আহ্বান করেছে। ‘বিএনপি শান্তিপূর্ণ রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাই খুলনায় শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা হবে। সমাবেশে খুলনা বিভাগের বিএনপি, সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। ইতোমধ্যে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি সংবলিত লিফলেট ও হ্যান্ডবিল বিতরণ করা হয়েছে।’
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য (মিডিয়া সেলের দায়িত্বে) মিজানুর রহমান মিল্টন জানান, খুলনা বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিশেষ অতিথি থাকবেন ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিভাগীয় সাংগঠনিক (ভারপ্রাপ্ত) সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ অন্যরা।
খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল-মামুন বলেন, ‘শনিবার যেহেতু দুই দলের পাল্টাপাল্টি সমাবেশ, তাই পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের একাধিক ইউনিটের পাশাপাশি সিভিল পোশাকে গোয়েন্দারা শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থানগুলোতে বস্থান করবেন। তেমন কোনো ঝামেলা হবে না আশা করছি।’
আরও পড়ুন:ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে টিকে রাখার জন্য নজিরবিহীন দুর্নীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মহান স্বাধীনতার দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গুম, খুনের মাধ্যমে তারা মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ৫২ বছর আগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষের ভোটের, কথা বলার ও লেখার অধিকার নেই। এক কথায় কোনো অধিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন প্রচেষ্টা নিয়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তারা বাকশাল করছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আজ বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমরা গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। দেশের মানুষ তার অধিকার, ভোটের অধিকার এবং শান্তিতে বসবাস করার অধিকার আদায়ে আন্দোলন শুরু করেছে।
‘আজকের এই দিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করছি তারা গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হবে।’
কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, ডা. জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি সংগ্রাম করছে দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখন যে স্বপ্ন ছিল, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। আজকে এত বছর পরেও আমাদের গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে। আমাদের লড়াই- সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
‘আমাদের ভোটের অধিকার হারিয়ে গেছে, আমাদের কথা বলার অধিকার হারিয়ে গেছে। সাংবাদিকদের সত্য কথা লেখার অধিকার হারিয়ে গেছে। এখানে কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আমরা এই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের কী দুর্ভাগ্য! দেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণীকে শুধু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের জন্য তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাসিত করা হয়েছে। ৩৫ লাখের বেশি আমাদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।’
ওই সময় বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘এই মহান দিনে, স্বাধীনতার শুভলগ্নে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে শপথ গ্রহণ করছি, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, চাল, ডাল, তেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য ও দেশকে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা যে সংগ্রাম শুরু করেছি, তা চালিয়ে যাব।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বীর মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের দোসর ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জিয়াউর রহমানকে নিয়ে বিএনপির নানা বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম সরকার, যে সরকার মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ করেছিল এবং বাংলাদেশে স্বাধীনতাযুদ্ধ পরিচালনা করেছিল, সেই সরকারের অধীনে জিয়াউর রহমান একজন চাকুরে ছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় যদি কেউ একজন মুক্তিযোদ্ধাকে পানি খাইয়েছে বা এক বেলা ভাত খাইয়েছে, সেই অপরাধে পাকিস্তানিরা তাকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করেছে, তার বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে, নির্যাতন করেছে। আর জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে আর তার স্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানিরা নতুন বউয়ের মতো আদর-যত্ন করে। এতেই তো প্রমাণিত হয়, জিয়াউর রহমান আসলে মুক্তিযোদ্ধার ছদ্মাবরণে পাকিস্তানিদের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘বিএনপি নেতারা ২১ বছর ধরে ইতিহাস বিকৃতি করেছেন। সেই বিকৃতি যখন ঠেকে গেছে, তখন তাদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে এবং সেই কারণে মির্জা ফখরুল সাহেবরা আবোল-তাবোল বকা শুরু করেছেন।’
স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে শনিবার বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ভুলে একাত্তরের ২৫ মার্চে গণহত্যা হয়েছিল।
এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে রোববার জাতীয় স্মৃতিসৌধে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পাকিস্তান যা বলে, তারা (বিএনপি) তাই বলে। কারণ তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় উজ্জীবিত, তাদের হৃদয়ে পাকিস্তানি চেতনা। তারা এমনটাই বলবে, এটাই হওয়া সমীচীন।’
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য নূহ-উল-আলম লেনিনকে দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য করা হয়েছে৷
শনিবার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি লেলিনকে পৌঁছে দেয়া হয়েছে৷
নূহ-উল-আলম লেনিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আমাকে আজ (শনিবার) এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন।’
প্রসঙ্গত, লেলিন দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের মুখপত্র উত্তরণ-এর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এর আগে দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক, প্রচার সম্পাদক এবং সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সংলাপের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) চিঠিকে ‘অতীতের মতো ভোট করার লেটেস্ট কৌশল’ বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ইসির এই চিঠির বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দলের স্থায়ী কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
শনিবার মহানগর নাট্যমঞ্চে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) দেয়া চিঠির প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কমিশনের কিছু করার ক্ষমতা নেই। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের ঘোষণা দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘অতীতে কেউ ভোট দিতে পেরেছেন? আগের মতো ভোট আর চলবে না। জাপানের রাষ্ট্রদূত তো বলেই ফেললেন যে, বাপের জন্মে শুনিনি যে আগের রাতে ভোট হয়। ওই জন্য এখন আবার নতুন নতুন কৌশল। তার মধ্যে লেটেস্ট কৌশল হচ্ছে নির্বাচন কমিশনের চিঠি।’
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বৃহস্পতিবার বিকেলে ডিও পত্রের মাধ্যমে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
ওই চিঠির প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কোনো ক্ষমতা আছে নাকি? সে পারবে এই প্রশাসনকে সোজা করতে?’
এ সময় দলের নেতাকর্মীরা ‘ন ‘না’স্লোগান দিতে থাকলে তিনি বলেন, ‘সঠিক কথা। এই নির্বাচন কমিশন চিঠি-টিঠি দিয়ে অযথা কেন হয়রান হচ্ছে। আপনারা ভদ্রলোকের মতো থাকতেন, ভদ্রলোকের মতো থাকেন, বেতন-টেতন নেন।’
ইসিকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ইভিএম দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারছেন না। অতীতে নির্বাচন কমিশন ট্রেনিং বাবদ কোটি কোটি টাকা খেয়ে ফেলেছে। আপনারা এরকম কিছু আছে কিনা সেগুলো দেখেন। অযথা জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আপনারা এসব কথা বলে নিজেদের খাটো করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘সংকট একটাই, তা হলো নির্বাচনকালীন সরকারে কে থাকবে? নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগ থাকলে সেই ভোট কোনোদিনই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হবে না। এটা প্রমাণিত। শুধু জাতীয় সংসদে নয়, স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোর ক্ষেত্রেও তাই।
‘সুতরাং এসব অযথা এক্সারসাইজ না করে আসল জায়গায় আসেন। আসল জায়গাটা হচ্ছে, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে হবে। সেটা নিয়ে কাজ করুন, সেটা নিয়ে কথা বলুন, সেটা নিয়ে ঘোষণা দিন। অন্য কোনো কিছু দেশের মানুষ মেনে নেবে না।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মানুষ ন্যায্যমূল্যে চাল-ডাল-তেল কেনার জন্য ট্রাকের পেছনে লাইন দিচ্ছে। অনেকে আবার পাচ্ছেও না। আবার তারা (সরকার) পাতাল রেল করছে। পূর্বাচলের ওই জায়গায় পাতাল রেল করা কি খুব বেশি প্রায়োরিটি হয়ে গেছে? কোনোটাই না। প্রায়োরিটি দেয়া দরকার চাল, ডাল, তেল, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণকে।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ হবে। ৫১ বছরে পর এসেও অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হয় যে স্বাধীনতার মূল চেতনা, মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন আজকে ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।
‘একটি দল ক্ষমতায় থাকার জন্য স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট প্রক্রিয়ায় এদেশের মানুষের কথা বলার অধিকার, গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক অধিকারকে লুট করে বাংলাদেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে গিয়ে সারা বিশ্বে লজ্জ্বায় ফেলে দিয়েছে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম খান আলিমের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, এজেডএম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বিএনপি রমজানের পবিত্রতা নষ্ট করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘দলটি রমজানেও মানুষকে স্বস্তি দিতে চায় না। রমজান মাসে কর্মসূচির নামে তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।’
রাজধানীর মিণ্টো রোডের সরকারি বাসভবনে শনিবার দুপুরে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অতীতে আমরা কখনও পবিত্র রমজান মাসে আন্দোলনের ঘোষণা দেখিনি। সবাই রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে। রমজানে ইফতার পার্টি হয়, সেখানে কথাবার্তা হয় এবং অন্যান্য কর্মসূচি হয়। বিএনপির কর্মসূচি দেখে মনে হচ্ছে তারা রমজানের পবিত্রতাটাও নষ্ট করতে চায়।’
রমজানে দেশে পণ্যের যথেষ্ট মজুদ থাকার পরও যারা দাম বাড়াচ্ছে তাদেরকে গণবিরোধী হিসেবে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্যি যে রমজান কিংবা কোনো উৎসব-পার্বণ এলে আমাদের দেশের কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করতে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়।
‘রমজান সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী আমদানি ও উৎপাদননির্ভর সব পণ্যের সরবরাহ যাতে ঠিক থাকে সে ব্যবস্থা করেছেন। ফলে খাদ্যপণ্যের মজুদ এখন শুধু যথেষ্টই নয়, বরং প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। রমজানে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’
তিনি বলেন, রমজানে যারা দাম বাড়াবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নিচ্ছে। প্রয়োজনে শাস্তির বিধান রাখা হবে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে, বাজার মনিটর করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জনগণকেও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।
‘কেউ যেন পণ্যের সংকট তৈরি ও অযথা দাম বাড়িয়ে অতিরিক্ত মুনাফা করতে না পারে সে ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রিপোর্টিং করাসহ গণমাধ্যমও ভূমিকা রাখতে পারে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী সব অপশক্তির মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দল বিএনপিও পাকিস্তানের দালাল পার্টি। তাদের চেতনায় রয়েছে পাকিস্তান। এদেরকে প্রতিহত, প্রতিরোধ ও পরাজিত করতে হবে।’
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের আয়োজনে ‘২৫ মার্চ, জাতীয় গণহত্যা দিবস’-এর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রশ্ন তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবসে বিএনপির কোনো কর্মসূচি নেই কেন? একাত্তরের গণহত্যার জন্য একটিবারের জন্যও পাকিস্তান দুঃখ প্রকাশ করেনি, ক্ষমা চায়নি। উপরন্তু তারা ৩/৪ লাখ মানুষ আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়নি। অথচ এদেশে এখনও কেউ কেউ বলেন, পাকিস্তান আমল ভালো ছিল। তারা আসলে পাকিস্তানের সেবাদাস, পাকিস্তানের দালাল।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবিরসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য