সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়ন সময়ের বিকট শব্দে একটি বোয়িং উড়োজাহাজের চাকা পাংচার হয়ে গেছে।
ওই সময় পুরো উড়োজাহাজে ঝাঁকুনি শুরু হয়, যাতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ১৪৮ যাত্রী, তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
ওসমানী বিমানবন্দরের রানওয়েতে শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।
সে সময় থেকে ওসমানীতে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে। বিকল্প ফ্লাইটে যাত্রীদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা যায়, বিমানের বোয়িং-৭৩৭ উড়োজাহাজটির ১৪৮ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে উড্ডয়নের কথা ছিল। এটি রানওয়েতে যাত্রা শুরুর পরপর বিকট শব্দে পেছনের চাকা ফেটে যায়। ওই সময় পুরো উড়োজাহাজে তীব্র ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।
ওই ফ্লাইটের যাত্রী মোস্তাক হায়াত খান বলেন, ‘হঠাৎ করে বিকট শব্দ হয়। এরপর বিমানটিতে ঝাঁকুনি শুরু হয়। এতে যাত্রীদের সকলেই ভয় পেয়ে যান। কেউ কেউ চিৎকারও শুরু করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঝাঁকুনি শুরু হলে পাইলট বিমানের গতি কিছুটা কমান। এরপর আবার উড্ডয়নের চেষ্টা করেন। তখন আবার ঝাঁকুনি শুরু হয়। পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পেছনের চাকা পাংচার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার পর প্রায় ৪০ মিনিট আমরা বিমানের ভেতরে আটকে ছিলাম। পরে আমাদের বিমানবন্দরের লাউঞ্জে আনা হয়।’
চাকা ফেটে রানওয়েতে উড়োজাহাজ আটকে থাকার কারণে ওসমানীতে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রয়েছে জানিয়ে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘ওই উড়োজাহাজের চাকা মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। মেরামতের পর এটি রানওয়ে থেকে সরিয়ে বিমানবন্দরের ফ্লাইট ওঠানামা সচল করা হবে।’
বিকেলের দিকে বিমানবন্দেরর কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে পারে বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনার কারণে যাত্রীদের কোনো ক্ষতি হয়নি জানিয়ে হাফিজ আহমদ বলেন, ‘আটকে পড়া যাত্রীদের বিমান কর্তৃপক্ষ বিকল্প ফ্লাইটে ঢাকায় নিয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে ৭টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতে স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সকালে জীবননগর উপজেলার মোল্লাবাড়ীর মোড় এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এসময় এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৭টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৮২৯ দশমিক ২৭ গ্রাম (৭১ ভরি ৪ রতি)। আটক চোরাকারবারি জুয়েল হোসেন দর্শনার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, স্বর্ণের বারগুলো শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন জুয়েল।
প্রতারণার অভিযোগে আটক নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন (৪৫) র্যাব হেফাজতে মারা গেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র্যাবের হাতে আটক হন জেসমিন। তিনি শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
র্যাবের ভাষ্য, জেসমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল।
মৃত জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক (মন্টু) বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে র্যাব আটকের পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকি। পরে জানতে পারি যে, সে নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখি র্যাবের লোকজন তার চারপাশে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সে মারা যান। ’
জেসমিনের পরিবারের ভাষ্য , জেসমিনের সঙ্গে তার স্বামীর ডিভোর্স হয় ১৭ বছর আগে। এরপর সে তার এক সন্তানকে অত্যন্ত কষ্ট করে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে লালন-পালন করছিল। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ কেউ করতে পারেননি।
মৃতের ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদ হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমার মা চক্রান্তের শিকার হয়েছে। র্যাবের হেফাজতে নির্যাতন চালানোয় আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ’
এ বিষয়ে র্যাব-৫-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, সুলতানার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগ পায় র্যাব। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ ছিল। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখে র্যাব অভিযোগের সত্যতা পায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাকে রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাজশাহীতে নেওয়ার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
বরিশাল নগরীতে পুনরায় ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়া শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। ঈদের আগের নগরীতে ৫ হাজার ইজিবাইক চলাচলের অনুমোদন দেয়া হবে। তবে প্রশিক্ষণ ছাড়া কোনো চালকই ইজিবাইক নিয়ে সড়কে নামতে পারবেন না। এজন্য চালকরা পাবেন আলাদা পোশাক।
বরিশাল নগরীতে সাবেক সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মেয়াদকালে ২৬শ’ ইজিবাইক চলাচলের অনুমোদন দেয়া হয়েছিলে। পরবর্তী মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ এই হলুদ রঙের ইজিবাইকগুলোর লাইসেন্স নবায়ন না করায় নগরীতে অবৈধ হিসেবে গণ্য হয় চার যাত্রী বহনকারী ব্যাটারিচালিত এই তিন চাকার ইজিবাইক।
অনুমোদন না থাকায় কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের ব্যানারে বরিশাল নগরীতে ইজিবাইকের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এতে নগরীতে যানজট বেড়ে যায়। নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্কশপে তৈরি এসব বাহন নিয়ন্ত্রণে পুলিশও বার বার পদক্ষেপ নিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে।
এ অবস্থায় বরিশাল নগরীতে যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে ৫ হাজার হলুদ ইজিবাইক চলাচলের অনুমতি দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। রোববার প্রথম পর্যায়ে ৩০ জন হলুদ অটো বা অযান্ত্রিক ইজিবাইক চালকের কাছে ব্লু বুক ও পোশাক হস্তান্তর করা হয়েছে ওয়াপদা কলেইন সংলগ্ন স্থানে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। কাউকে চাঁদা দেয়া থেকে বিরত থাকতেও ইজিবাইক চালকদের নির্দেশ দেন মেয়র।
শিশুদের চালক হিসেবে না রাখাসহ মহাসড়কে এই ইজিবাইক না চালানোন জন্য অনুরোধ করেছেন মহানগর পুলিশ প্রধান সাইফুল ইসলাম।
এদিকে এই মুহূর্তে বরিশাল নগরীতে ইজিবাইক চলাচলে লাইসেন্স দেয়াকে নির্বাচনী কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। এই ইজিবাইক ইস্যুতে বাসদ বরিশালের সদস্য সচিব মনীষা চক্রবর্তী ও মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। এ নিয়ে তাদেরকে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নানা বক্তব্য দিতেও দেখা গেছে।
মনীষার দাবি, ইজিবাইক-অটোচালক ও মালিকদের ভোট বাগাতে মেয়াদের শেষ সময়ে এসে সাদিক আব্দুল্লাহ এমন পদক্ষেপ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন:চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুছ ‘স্যার’ না বলার জন্য অনুরোধ জানিয়ে নিজ কার্যালয়ের সামনে নোটিশ লাগিয়েছেন।
সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক উমর ফারুক ব্যক্তিগত কাজে রংপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যান। সেখানে জেলা প্রশাসককে ‘স্যার’ বলতে বাধ্য করায় তিনি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা হয়। এর মধ্যেই মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুছ তাকে স্যার না বলার অনুরোধ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ কুদ্দুসের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে নোটিশ জারির মাধ্যমে স্যার না ডাকার জন্য সাধারণ জনগণকে অনুরোধ করেন। গত ২৪ মার্চ নোটিশটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করে লিখেন ‘‘আসসালামু আলাইকুম, আমার নির্বাচনী এলাকার সকল জনগণকে বিনীত অনুরোধ করছি, দয়া করে আমাকে ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করবেন না। আমি আপনাদের ভাই, বন্ধু, আপনাদের সেবক এবং সেবক হয়েই থাকতে চাই।’’
এই বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ কুদ্দুস বলেন, ‘আসলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার বাবার সময় থেকে চলাফেরা। একটা আবেগ কাজ করে আমাদের মাঝে। তারা যখন আমাকে স্যার বলে তখন নিজের কাছে বিব্রতবোধ হয়।
‘অনেকে হয়তো চিন্তা করতে পারেন যে, আমি অনেক বড় একটা পদে আছি আমাকে স্যার বলা খুব দরকার। কিন্তু আসলে তা নয়, আমি আসলে জনগণের সেবক হিসেবে থাকতে চাই।’
আরও পড়ুন:দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপি সংগ্রাম করছে দাবি করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদবেদিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন সম্ভব হয়েছে। আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। তখন যে স্বপ্ন ছিল, আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের। আজকে এত বছর পরেও আমাদের গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিতে হচ্ছে। আমাদের লড়াই- সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
‘আমাদের ভোটের অধিকার হারিয়ে গেছে, আমাদের কথা বলার অধিকার হারিয়ে গেছে। সাংবাদিকদের সত্য কথা লেখার অধিকার হারিয়ে গেছে। এখানে কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আমরা এই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করছি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের কী দুর্ভাগ্য! দেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণীকে শুধু গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের জন্য তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নির্বাসিত করা হয়েছে। ৩৫ লাখের বেশি আমাদের নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা হচ্ছে।’
ওই সময় বিএনপির চলমান আন্দোলন অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘এই মহান দিনে, স্বাধীনতার শুভলগ্নে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে শপথ গ্রহণ করছি, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে, চাল, ডাল, তেলের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনার জন্য ও দেশকে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য আমরা যে সংগ্রাম শুরু করেছি, তা চালিয়ে যাব।’
স্বাধীনতার মাসের গুরুত্ব সবার মধ্যে তুলে ধরতে এবং শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এটিআই) ধান ক্ষেতে জাতীয় পতাকা এবং সবজির প্লটে মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ তৈরি করেছেন এটিআইয়ের ছাত্র ও শিক্ষকরা। এতে ছাত্র, শিক্ষক ও স্থানীয়রাও অনেক খুশি।
স্বাধীনতার মাসে এটিকে জনসাধারণের সামনে প্রদর্শন করার জন্য ২৪ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিউর রহমান আতিক এমপি।
এটিআইয়ের অধ্যক্ষ সাইফুল আজম খান বলেন, ‘শেরপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের প্রায় ৪০ একর জমির বিশাল এলাকায় ধান ও সবজির প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। স্বাধীনতার মাসের গুরুত্ব সবার মাঝে তুলে ধরতে ধান ও সবজির প্লটে সবার দৃষ্টি কাড়ে এমন এক বিশাল পতাকা, মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ করা হয়েছে।
‘ধান ক্ষেতের ক্যানভাসে ১৬০ ফিট দৈর্ঘ্য, ৯৬ ফুট প্রস্থ ও ৩২ ফুট বৃত্তের ব্যাসার্ধের জাতীয় পতাকা তৈরি করা হয়েছে। পতাকার সবুজ অংশ বঙ্গবন্ধু-১০০ ও হাইব্রিড এবং মাঝখানের লাল বৃত্তের অংশ দুলালি সুন্দরী ধানের চারা দিয়ে সাজানো হয়েছে। পতাকার সবুজ অংশ দিয়ে বুঝানো হয়েছে বাংলার প্রকৃতিকে আর মাঝখানে লাল বৃত্ত দিয়ে বুঝানো হয়েছে লক্ষ শহীদের রক্ত। এবং পাশেই সবজির প্লটে লাল শাক ও পাট শাকের চারা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশের মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ। এতে আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় যেন সকলে সহযোগিতা করতে পারে সেজন্য এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
কলেজ শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম জিহান বলেন, ‘আমাদের কলেজে এত সুন্দর একটি পতাকা, মানচিত্র ও স্মৃতিসৌধ করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের অধ্যক্ষ স্যারের নির্দেশনায় স্বাধীনতার মাসকে সামনে রেখে এ কাজটি করেছি। এ কাজটির ফলে আমরা স্বাধীনতার গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পেরেছি।’
প্রতিষ্ঠানের সপ্তম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি বলেন, ‘আমাদের স্যারদের সহযোগিতায় এমন সুন্দর কাজটি করেছি। কৃষির মাধ্যমে দেশকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সবার মাঝে। অনেকেই দেখতে আসছেন। এমন সৃজনশীল কাজ দেখে খুশি হচ্ছেন এবং আমাদের প্রশংসা করছেন।’
স্থানীয় কবি ও সাহিত্যিক আব্দুল আলীম বলেন, ‘কলেজের শিক্ষক ও ছাত্ররা মিলে এমন একটি কাজ করেছে যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এখানে আমাদের দেশকে জাতির সামনে তুলে ধরেছে তারা। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এভাবেই সকল কিছু করে দেখাতে হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য অনেক কিছু করে যাচ্ছেন।’
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুকে জানতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শেরপুর জেলায় এটাই ব্যতিক্রমী ও প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রশংসা জানিয়েছেন সরকার দলীয় হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান আতিক।
তিনি বলেন, ‘আমাদের ছেলে-মেয়েদের সত্যিকারের ইতিহাস জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধকে জানাতে এখানে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এতে আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পেয়েছি। এবার আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মতো আরও সবাইকে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করার দরকার।’
আরও পড়ুন:একাত্তরের ২৫ মার্চ গণহত্যা নিয়ে বিএনপির বক্তব্যে পাকিস্তানের ভাষ্যের প্রতিফলন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মহান স্বাধীনতা দিবসে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে রোববার ভোরে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে শনিবার বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের ভুলে ২৫ মার্চে গণহত্যা হয়েছিল।
এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘পাকিস্তান যা বলে, তারা (বিএনপি) তাই বলে। কারণ তারা পাকিস্তানি ভাবধারায় উজ্জীবিত, তাদের হৃদয়ে পাকিস্তানি চেতনা। তারা এমনটাই বলবে, এটাই হওয়া সমীচীন।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার শত্রুরা সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ এমন নানান পোশাকে স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করে। তাই এই অপশক্তিকে পরাস্ত করতে হবে।’
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সোনার বাংলা গড়ার পথে রয়েছে। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া এখন অন্যতম অঙ্গীকার।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য