বগুড়ার কাহালু রেল স্টেশনের পাশের একটি চায়ের দোকানে লোকজনের মধ্যে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপনির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছিল। এর মাঝে কথা উঠল দুই আসনেরই প্রতিদ্বন্দ্বী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমকে নিয়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল খানের মতে, মন্দের ভালো হিরো আলম। তিনি ভালোও নন, খারাপ বলা যাবে না।
ডিশ ব্যবসায়ী থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় হওয়া হিরো আলম একতারা প্রতীক নিয়ে বগুড়ার ৪ ও ৬ আসনে উপনির্বাচনে লড়বেন। তৃণমূল থেকে উঠে আসা এই যুবককে নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনা দুটোই আছে। একই সঙ্গে হিরো আলমের নির্বাচনী প্রচারণাকে তার বাণিজ্যিক কৌশল হিসেবে দেখছেন অনেক ভোটার।
হিরো আলমের ঘনিষ্ঠজন বাবুল খান বলেন, ‘সংসদে ৩০০ সদস্য থাকেন। এর মধ্যে অনেকে আছেন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঠিক মতো বলতে পারেন না। সেই ক্ষেত্রে হিরো আলম তৃণমূল থেকে উঠে আসছে, তিনি গরীব মানুষের দুঃখ-কষ্ট বুঝবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইয়াং জেনারেশনের কাছে হিরো আলম নট ব্যাড। ভালোও বলা যাবে না। খারাপও বলা যাবে না।’
চায়ের দোকানের পাশেই রেজাউল করিমের পানের দোকান। তিনি বলেন, ‘হিরো আলম আমাদের কাছে এসেছিলেন। তিনি গরীব-দুখী মানুষদের ভালোবেসে উন্নয়ন করবেন।’
রবিউল ইসলাম নামে আরেক ভোটার বলেন, ‘আমরা হিরো আলমকে এমপি হিসেবে দেখতে চাই। কারণ হিরো আলম এমন একটা মানুষ, তিনি আমাদের উন্নয়ন করবেই। যেটা এর আগে অন্য কেউ এমপি করেননি।’
কিন্তু হিরো আলম যদি এমপি হওয়ার পর উন্নয়ন না করে তখন কি করবেন? এ প্রশ্নে রবিউল বলেন, ‘আমরা তিন মাস তাকে দেখব। যদি উন্নয়ন না করেন, তাহলে বাতিল করে দেব। কয়েকদিন পরেই তো আরেকটা নির্বাচন আছে।’
হিরো আলমের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কাহালু বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল বারী বলেন, ‘নির্বাচন করতেছে, কিন্তু সে নিজেই তো যোগ্য না। সংসদের গুরুত্বপূর্ণ কি কি কাজ সেটি তো সে বুঝে না। ইয়াং জেনারেশনদের মধ্যে কিছু হিরো আলমকে নিয়ে আমোদ করছে। এর বেশি কিছু না।’
কাহালু উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতা কামাল উদ্দিন কবিরাজও মনে করেন যে, নির্বাচনের চেয়ে ইউটিউব থেকে অর্থ উপার্জনের দিকে আগ্রহ বেশি হিরো আলমের।
কামাল উদ্দিন কবিরাজ বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতৃত্বের কোয়ালিটি নিম্নগামী হচ্ছে। এটা শুভ সংকেত নয়। যদিও পার্লামেন্টে সবাই নির্বাচন করতে পারে।’
এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে ভিন্ন ধারণা পোষণ করছেন বগুড়া-৬ আসনের অনেকে। তারা মনে করছেন যে, হিরো আলম নির্বাচনের পাশাপাশি ভিডিও কনটেন্ট দিয়ে বাণিজ্যিক সুবিধা নিচ্ছেন। অবশ্য তাদের এমন ধারণা অমূলক নয়। কারণ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হিরো আলমের সঙ্গে বেশ কয়েকজন ইউটিউবার যুক্ত হয়েছেন। যে কোনো প্রচারণায় তারা সঙ্গে থাকেন। এসব নির্বাচনী প্রচারণার ভিডিও ইউটিউবে, ফেসবুকে প্রচার করে প্রচুর ভিউ আসে। এতে অর্থ উপার্জন হয়।
হিরো আলমের প্রতিদ্বন্দ্বী বগুড়া-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল বলেন,‘ তিনি একজন নাগরিক। রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী তিনি নির্বাচনে অংশ নিতেই পারেন। এখানে রাজনৈতিক ব্যর্থতা আমি বলবো না, তবে রাজনৈতিক চর্চার একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শূন্যতা থেকে হিরো আলমরা গুরুত্বপূর্ণ এই পদগুলোয় আসছেন। যেমনটি এসেছেন মমতাজ। অথবা এমন আরও কয়েকজন।’
বগুড়া জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ বলেন, ‘হিরো আলমমের রাজনৈতিক দর্শন নেই, অর্থনৈতিক মুক্তির কোনো নির্দেশনা নেই। হিরো আলম তার অদম্য ইচ্ছা দিয়ে তৃণমূল থেকে উঠে এসেছে। কিন্তু তার গণমানুষের জন্য কোনো কর্মসূচি না থাকে তাহলে সংসদে গিয়ে কি ভূমিকা রাখবেন?’
বগুড়া সদরের এরুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা হিরো আলম শৈশবে চানাচুর বিক্রি করতেন। পরে তিনি সিডি ও ডিশ সংযোগের ব্যবসা করেন। নিজেই মিউজিক ভিডিও তৈরি করে ডিস লাইনে সম্প্রচার শুরু করেন।
ইউটিউবে প্রায় ৫০০ মিউজিক ভিডিও ছাড়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হিরো আলম। এর আগে ২০১৮ সালে তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তবে দুপুরের আগে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে ভোট বর্জন করেন তিনি।
বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগের কারণে ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার ৪ ও ৬ আসনে উপনির্বাচন হবে। এতে একতারা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন হিরো আলম।
দুই আসনে নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের হলফনামায় দেখা গেছে চার বছরের ব্যবধানে হিরো আলম কোটিপতি হয়েছেন। পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেখিয়েছেন ৫৫ লাখ টাকা। যেখানে ২০১৮ সালে তার কোনো সঞ্চয়পত্র ছিল না। এছাড়া এসময়ের মধ্যে তার কৃষি জমি ২১ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ শতাংশ। স্বর্ণলঙ্কারও বেড়েছে ১০ গুণ, তবে হলফনামায় দেয়া তথ্যে কোটিপতি হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন হিরো আলম। তার দাবি, আইনজীবী তার ভুল হলফনামা তৈরি করেছেন।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রাম শহরে চলন্ত মোটরসাইকেলের ভেতর থেকে সাপ বের হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় মোটরসাইকেলে চালক ছাড়াও এক আরোহী ছিলেন।
রোববার দুপুরে শহরের কলেজ মোড় এলাকার পোস্ট অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেল চালক লুৎফর রহমান বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘রংপুর-দিনাজপুর রুরাল সার্ভিস’ (আরডিআরএস) এর দাশেরহাট শাখার কর্মী ও আরোহী মারুফা আক্তার ওই শাখা ব্যবস্থাপক।
লুৎফর রহমান জানান, মারুফা আক্তার এবং তিনি বিশেষ কাজে কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের দাশেরহাট অফিস শহরে ফিরছিলেন। কলেজ মোড়ের পোস্ট অফিসের সামনে পৌঁছালে দেখতে পান মোটরসাইকেলের হেড লাইটের বক্সের মিটারের ওপরে একটি সাপ ফনা তুলে আছে। এসময় মানুষের ভিড় ও শব্দের কারণে সাপটি গাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়। পরে একটি সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়ে সাপটিকে এক ঘণ্টার চেষ্টায় বের করার পর উৎসুক জনতা পিটিয়ে সেটিকে মেরে ফেলে।
ম্যানেজার মারুফা আক্তার বলেন, এতবড় ঝুঁকিতে পড়তে হবে স্বপ্নেও ভাবিনি। আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে গেছি। আমাদের অফিসটির চারদিকে প্রচুর জঙ্গল রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অবহিত করা হয়েছে ।
শরীয়তপুরে নড়িয়ায় বজ্রপাতে তিন জেলে নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও চারজন।
রোববার বিকেল পৌনে ছয়টার দিকে নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের বাহিরকুশিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন-নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের শাহীন শেখ, সিরাজ ওঝা ও শাহীন মাঝি।
পুলিশের ভাষ্য, উপজেলার বাহিরকুশিয়া গ্রামের সাজু মেম্বারের একটি পুকুরে মাছ শিকার করছিলেন আট জেলে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে হঠাৎ বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। এসময় বজ্রপাতের আঘাতে ঘটনাস্থলেই প্রান হারান তিন জেলে। এছাড়া গুরুতর আহত হন আরও চার জেলে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ডিঙ্গামানিক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আজিজ সরদার বলেন, খবর পেয়ে নিহতদের পরিবারের কাছে গিয়ে তাদের সমবেদনা জানিয়েছি। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিহতদের পরিবারকে সহায়তা করা হবে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, বজ্রপাতে তিন ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করেছে পুলিশ। পরিবারের অনুরোধে নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে মো. মামুন নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার দুপুরে এই ঘটনার পর পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
মিরপুর এলাকার বাসিন্দা মামুন এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
নিহতের পরিবারের দাবি, চোর ভেবে শিশু হাসপাতালে দায়িত্বরত আনসার সদস্য এবং অ্যাম্বুলেন্স চালক ও হেলপারেরা মিলে মামুনকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে।
নিহতের বড় ভাই মাসুদ রানা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামুন সকালে মা ও তার স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে আসে। অসুস্থ মেয়েকে ডাক্তার দেখানোর পর পরিবারের সদস্যদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়।
‘দুপুরের দিকে এক ব্যক্তি ফোন করে জানায় যে আমার ভাই খুন হয়েছে। হাসপাতালে এসে জানলাম আনসার সদস্য ও হাসপাতালের অ্যাম্বুলেসের চালক ও হেলপাররা চোর বলে ধাওয়া দিয়ে ধরে পিটিয়ে আমার ভাইকে মেরে ফেলেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভাই কোনো অপরাধ করে থাকলে তার বিচারের জন্য দেশে আইন আছে। একজন মানুষকে এভাবে কেন ওরা পিটিয়ে মারবে। এখন ওর বউ-বাচ্চার দায়িত্ব কে নেবে? আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
হাসপাতালের সামনে ভ্রাম্যমাণ দোকানের জুতা বিক্রেতা আল আমিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দুপুরে দেখি একজন দৌড় দিছে। তার পিছে কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে তাকে ধরে নিয়ে হাসপালের ভেতরে চলে যায়। পরে ভেতরে গিয়ে দেখি সে মারা গেছে।’
শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উৎপল বড়ুয়া বলেন, ‘শুনেছি জনতা গণধোলাই দিয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
নির্দিষ্ট করে আনসার সদস্য ও অ্যাম্বুলেন্স চালকদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নিহতের মরদেহ উদ্ধারকারী শেরে বাংলা নগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এএসএম আল মামুন সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠান।
বিকেল ৪টার দিকে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘মামুন পেশায় একজন চা বিক্রেতা। শিশু হাসপাতালের সামনে ঘোরাফেরার সময় তাকে চোর সন্দেহে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। নিহতের পরিবারের সদস্যরা থানায় এসে অভিযোগ দিয়েছেন।’
শেরে বাংলা নগর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) শাহজাহান মণ্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছে। ইতোমধ্যে ঢাকার বাইরে একজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তার নাম-ঠিকানা এখনও জানতে পারিনি। তাকে ঢাকায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।’
মারধর করে হত্যার ঘটনায় আনসার সদস্য সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় ঢাকা মহানগর আনসারের জোন কমান্ডার মো. আম্বার হোসেনের কাছে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ইতোমধ্যে একজনকে ঢাকার বাইরে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করছে পুলিশ।
‘আনসার সদস্য মারেনি। ফুটেজে আনসার সদস্যদের কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এটা ভুল তথ্য। মানুষ গুজব ছড়াচ্ছে।’
বরিশাল -২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমের সামনে উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইদ্রিস সরদারের ওপর হামলার ঘটনায় দলটির তিন নেতাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান পলাশ, শিকারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রিয়াজুল ইসলাম কাজী ও বামরাইল ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য জসিম উদ্দিন রুবেলকে সাময়িকভাবে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হলো।
এ বিষয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন বেপারি সাংবাদিকদের বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখ জনক। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে রোববার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনের সামনে মারধর ও লাঞ্চনার শিকার হন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ৪৫ বছর বয়সী ইদ্রিস সরদার ।
তিনি জানান, হামলার ঘটনার আগ মুহুর্তে সংসদ সদস্য মো. শাহে আলমকে সালাম দিয়ে কুশল-বিনিময় করতে যান তিনি। তখন উজিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ইকবাল তাকে দেখে কটুক্তি করেন। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে এমপির সামনে হাফিজুরের অনুসারীরা মারধর শুরু করেন।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্তে ৭টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহের মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভারতে স্বর্ণ চোরাচালানের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার সকালে জীবননগর উপজেলার মোল্লাবাড়ীর মোড় এলাকায় অভিযান চালায় বিজিবি। এসময় এক সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তার কাছ থেকে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ৭টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়, যার ওজন ৮২৯ দশমিক ২৭ গ্রাম (৭১ ভরি ৪ রতি)। আটক চোরাকারবারি জুয়েল হোসেন দর্শনার দক্ষিণ চাঁদপুর গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে।
মহেশপুর-৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, স্বর্ণের বারগুলো শুল্ক কর ফাঁকি দিয়ে জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন জুয়েল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাকে টিকে রাখার জন্য নজিরবিহীন দুর্নীতি করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মহান স্বাধীনতার দিবস উপলক্ষে রোববার দুপুরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি একথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গুম, খুনের মাধ্যমে তারা মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ৫২ বছর আগে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। সেই গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে। গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষের ভোটের, কথা বলার ও লেখার অধিকার নেই। এক কথায় কোনো অধিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন প্রচেষ্টা নিয়ে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তারা বাকশাল করছে। তবে এসবের বিরুদ্ধে আজ বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ আমরা গণতন্ত্র উদ্ধারের জন্য, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন করছি। দেশের মানুষ তার অধিকার, ভোটের অধিকার এবং শান্তিতে বসবাস করার অধিকার আদায়ে আন্দোলন শুরু করেছে।
‘আজকের এই দিনে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আশা করছি তারা গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের আন্দোলনে শরিক হবে।’
কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, ডা. জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন:প্রতারণার অভিযোগে আটক নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিন (৪৫) র্যাব হেফাজতে মারা গেছেন। স্বজনদের অভিযোগ, নির্যাতনের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
গত বুধবার বেলা ১১টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে র্যাবের হাতে আটক হন জেসমিন। তিনি শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
র্যাবের ভাষ্য, জেসমিনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে আটক করা হয়েছিল।
মৃত জেসমিনের মামা ও নওগাঁ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নাজমুল হক (মন্টু) বলেন, ‘আমার ভাগ্নিকে র্যাব আটকের পর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিতে থাকি। পরে জানতে পারি যে, সে নওগাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখি র্যাবের লোকজন তার চারপাশে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে রাজশাহী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে সে মারা যান। ’
জেসমিনের পরিবারের ভাষ্য , জেসমিনের সঙ্গে তার স্বামীর ডিভোর্স হয় ১৭ বছর আগে। এরপর সে তার এক সন্তানকে অত্যন্ত কষ্ট করে অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে লালন-পালন করছিল। তার বিরুদ্ধে কখনো কোনো দুর্নীতি কিংবা অনিয়মের অভিযোগ কেউ করতে পারেননি।
মৃতের ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহেদ হোসেন সৈকত বলেন, ‘আমার মা চক্রান্তের শিকার হয়েছে। র্যাবের হেফাজতে নির্যাতন চালানোয় আমার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ’
এ বিষয়ে র্যাব-৫-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব বলেন, সুলতানার বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার একটি অভিযোগ পায় র্যাব। তার ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ ছিল। ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখে র্যাব অভিযোগের সত্যতা পায়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাবের হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু আটকের পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে দ্রুত তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকেরা তাকে রাজশাহীতে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাজশাহীতে নেওয়ার পর তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। শুক্রবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ট্রোক করে তিনি মারা যান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শনিবার দুপুরে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
মন্তব্য