বৈশ্বিক কারণে অর্থনীতিতে চাপ সামলাতে বিশ্ব আর্থিক খাতের অন্যতম প্রধান মোড়ল সংস্থা আইএমএফের কাছ থেকে বাংলাদেশ যে পরিমাণ ঋণ চেয়েছিল সংস্থাটি তার চেয়েও বেশি ঋণ দিচ্ছে।
সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ৪৫০ কোটি (৪.৫ বিলিয়ন) ডলার চেয়েছিল, আইএমএম তার চেয়ে ২০ কোটি ডলার বেশি অর্থ্যাৎ ৪৭০ কোটি (৪.৭০ বিলিয়ন) ডলার দেবে।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফের সদর দপ্তরে সংকটকালে বাংলাদেশের বহুল প্রত্যাশিত এই ঋণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদ। মঙ্গলবার দুপুরে আইএমএফের ওয়েবসাইটে এই ঋণ অনুমোদনের বিষয়টি নিয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
৪২ মাসের চুক্তিতে সরকারের নেয়া ‘অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে’ সহায়তা হিসেবে আইএমএফের এক্সটেন্ডেড ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি (ইসিএফ) এবং এক্সটেন্ডেড ফান্ড ফ্যাসিলিটি (ইএফএফ) থেকে ৩৩০ কোটি (৩.৩ বিলিয়ন) ডলার ঋণ পাবে বাংলাদেশ।
এর অংশ হিসেবে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার তাৎক্ষণিকভাবে ছাড় করা হবে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে আইএমএফ।
এ ছাড়া আইএমএফ এর নবগঠিত রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনিবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) আওতায় বাংলাদেশ পাবে ১৪০ কোটি (১.৪ বিলিয়ন) ডলার। বাংলাদেশই প্রথম এশীয় দেশ, যারা এই তহবিল থেকে ঋণ পাচ্ছে।
এই দুই তহবিল থেকে মোট ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ২.২ শতাংশ সুদে নেয়া এই ঋণ আসবে সাত কিস্তিতে। শেষ কিস্তি আসবে ২০২৬ সালে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কটে পড়া বাংলাদেশ রিজার্ভ বাড়াতে এমন অর্থের প্রত্যাশায় ছিল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়তা করবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার যে সংস্কার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা বাস্তবায়নেও সহায়তা করবে এই ঋণ।
আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার মধ্যে আরও টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সরকারকে উচ্চাভিলাষী সংস্কার কার্যক্রমের গতি বাড়াতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের দেশ হতে গেলে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো খাতে আরও বিপুল বিনিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনেও তা জরুরি।’
তারা বলেছে, বাংলাদেশ সরকার এসব চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও বাংলাদেশ অবগত।
অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেন, ‘রাজস্ব খাতে সংস্কার করলে বাংলাদেশ সামাজিক খাত, উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারবে। তবে সে জন্য কর নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন-উভয় খাতেই হাত দিতে হবে। রাজস্ব সংস্কার হলে সরকারি অর্থায়ন, বিনিয়োগ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নত হবে। এতে সরকারের ব্যয় সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে এবং শাসনব্যবস্থা উন্নত হবে।’
আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) আরও বলেন, ‘আর্থিক খাতের দুর্বলতা কমলে, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা উন্নত করা হলে ও পুঁজিবাজারের উন্নতি করা গেলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করা সম্ভব হবে।’
এ ছাড়া প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন আইএমএফের ডিএমডি। সে জন্য দরকার, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ তৈরি, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শাসনব্যবস্থার উন্নয়ন।
অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেন, ‘রাজস্ব খাতে সংস্কার করলে বাংলাদেশ সামাজিক খাত, উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যয় বৃদ্ধি করতে পারবে। তবে সে জন্য কর নীতি ও রাজস্ব প্রশাসন-উভয় খাতেই হাত দিতে হবে। রাজস্ব সংস্কার হলে সরকারি অর্থায়ন, বিনিয়োগ ও ঋণ ব্যবস্থাপনা উন্নত হবে। এতে সরকারের ব্যয় সক্ষমতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে এবং শাসনব্যবস্থা উন্নত হবে।’
আইএমএফের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘আর্থিক খাতের দুর্বলতা কমলে, নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা উন্নত করা হলে ও পুঁজিবাজারের উন্নতি করা গেলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজনীয় অর্থায়ন করা সম্ভব হবে।’
এ ছাড়া প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করতে কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন আইএমএফের ডিএমডি। সে জন্য দরকার, বাণিজ্য ও প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির সহায়ক পরিবেশ তৈরি, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও শাসনব্যবস্থার উন্নয়ন।
৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ পেতে ও চলমান অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার কয়েক মাস ধরেই সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনা করছে। চলতি জানুয়ারিতে যখন আইএমএফের ডিএমডি বাংলাদেশ সফরে আসেন, তখন এসব সংস্কারে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মৌলিক এসব সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার প্রতিও আইএমএফের ডিএমডি গুরুত্বারোপ করেন তখন।
সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক কী সংস্কারে হাত দিয়েছে, যাতে আইএমএফ সমর্থন করছে-আইএমএফের ডিএমডির ঢাকা সফরের সময় এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জানা যায়, ভর্তুকি কমাতে জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে সরকার। এরপর গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। রিজার্ভের গণনাপদ্ধতি আইএমএফের চাওয়া অনুযায়ী করা হচ্ছে এবং জ্বালানি তেলের দাম মাসে মাসে সমন্বয় করার ঘোষণাও দিয়েছে সরকার।
আইএমএফও তাদের বিবৃতিতে বলেছে, করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল বাংলাদেশ, কিন্তু যুদ্ধের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তাতে বৈদেশিক বাণিজ্যে চলতি হিসাব ভারসাম্যে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, টাকার মান কমে গেছে এবং বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়েছে। সাম্প্রতিক এই অর্থনৈতিক জটিলতাগুলো মোকাবেলায় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ একগুচ্ছ সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকার মনে করে, প্রবৃদ্ধির গতি ত্বরান্বিত করতে, বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণে, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে এবং জলবায়ু সহনশীলতা তৈরি করতে হলে তাতৎক্ষণিক এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদী কাঠামোগত সমস্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকিগুলোকেও আমলে নিতে হবে।
বাংলাদেশকে ঋণ দিতে গত নভেম্বরে ঢাকায় কর্মকর্তা পর্যায়ের বৈঠকে প্রাথমিক সমঝোতায় পৌঁছায় আইএমএফ। সেই ঋণচুক্তির শর্তসহ খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বাংলাদেশ সফর করেন আইএমএফের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ।
এরপর বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে আইএমএফ এর নির্বাহী বোর্ডের সভায় ওঠে এবং অনুমোদন পায়।
আরও পড়ুন:যুদ্ধবিধ্বস্ত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের অভিযাত্রায় প্রবাসীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন।
জাতিসংঘের সদরদপ্তরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আয়োজিত ‘উন্নয়নের এজেন্ট হিসেবে প্রবাসী, অভিবাসী এবং বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাসুদ বিন মোমেন প্রবাসীদের ক্ষমতায়নে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল উদ্ভাবনের পাশাপাশি আইসিটি শিক্ষার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নিজ দেশের পণ্যের অন্যতম ভোক্তা হিসেবে প্রবাসীরা রপ্তানি বৃদ্ধি ও রপ্তানি বৈচিত্র্য আনয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তারা বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক মডেল তৈরিতে অবদান রাখে এবং নিজ দেশে তাদের পরিবার ও পরিচালিত ব্যবসায় অর্থ পাঠিয়ে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করেন।’
বিশ্ব অর্থনীতির একটি প্রধান চালিকা শক্তি এশিয়া অঞ্চল। ২০২৩ সালে এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ। আগের বছর ২০২২ সালে যা ছিল ৪ দশমিক ২ শতাংশ। সে সুবাদে এই অঞ্চলে সামগ্রিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার বাস্তবতায় এটি একটি আশার খবর।
বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া থেকে প্রকাশিত ‘এশিয়ান ইকোনমিক আউটলুক অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন প্রগ্রেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য, ‘একটি অনিশ্চিত বিশ্ব: চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে উন্নয়নের জন্য সংহতি ও সহযোগিতা’।
চীনের হাইনান প্রদেশে মঙ্গলবার শুরু হয়েছে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া-২০২৩ এর বার্ষিক সম্মেলন। ছিয়ংহাই সিটির বোয়াও শহরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত তা চলবে। বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতাসহ প্রায় দুই হাজার ব্যক্তি অংশ নিচ্ছেন এই সম্মেলনে।
ফোরামে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক ঐকমত্যকে সুসংহত করার লক্ষ্যে উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিকরণ, দক্ষতা ও নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সহযোগিতার পাশাপাশি বর্তমান ও ভবিষ্যতের কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা হয়।
মূল প্রতিবেদনে আশা করা হয়েছে, ‘এ বছর অঞ্চলটি বিশ্বকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের দিকে নিয়ে যাবে। বৈশ্বিক চাহিদা দুর্বল হওয়া এবং অনিশ্চয়তার চাপ সত্ত্বেও এশীয় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে রয়েছে। যদিও বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় এশিয়ান রপ্তানিকারকদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু চীনের উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক পরিবর্তন এশিয়ার বাকি অংশ এবং বিশ্বের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত পাঠাচ্ছে।’
বোয়াও ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল লি বাওডং বলেছেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চয়তা থেকে উত্তরণে এশিয়া মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। বিশ্বব্যাপী মন্দার মধ্যে এশিয়া সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতিকে ত্বরান্বিত করবে। এক্ষেত্রে আঞ্চলিক উৎপাদন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও আর্থিক একীকরণ এবং সংহতির অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে।’
প্যানেল আলোচনায় বলা হয়, আগামী দিনের অনিশ্চয়তা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও চীনের দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এশিয়ার অর্থনীতি এ বছর শক্তিশালী অবস্থানে যাবে।
বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া একটি বেসরকারি অলাভজনক আন্তর্জাতিক সংস্থা। এশিয়ার ২৮টি দেশ নিয়ে ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি এশিয়ায় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচার এবং আঞ্চলিক অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করে আসছে।
চীন তার পুরো হাইনান দ্বীপকে বিশ্বব্যাপী প্রভাবশালী এবং উচ্চ স্তরের ফ্রি ট্রেড পোর্ট বা এফটিপিতে পরিণত করার লক্ষ্যে ২০২০ সালে একটি মাস্টার প্ল্যান প্রকাশ করে। তারপর থেকে হাইনান এফটিপি-র উন্নয়নে সহায়তার জন্য শূন্য শুল্ক এবং সহজ বাজার ও বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করাসহ নীতি সহজীকরণ করেছে।
বলা হয়, হাইনানে ২০২৩ সালের মধ্যে স্বতন্ত্র কাস্টমস ব্যবস্থা চালুর জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছে চীন। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ দ্বীপ জুড়ে নিজস্ব কাস্টমস কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে বোয়াও ফোরাম এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সংলাপ ও ঐকমত্য তৈরি করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে পরিণত হয়েছে।
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের গ্রাহকদের ১০৪ কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ তদন্তের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পরিচালকদের প্রতারণার খপ্পরে হোমল্যান্ড লাইফ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অর্থ আত্মসাত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে প্রতিষ্ঠানটির ১৪ গ্রাহকের পক্ষে রহিমা আক্তার একটি রিট করেন।
রিটে অর্থ সচিব, ইন্সরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলিটরি অথোরিটির চেয়ারম্যান, দুর্ণীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, হোমল্যান্ড ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রতিষ্ঠানটির ১৪ পরিচালককে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
রিটকারিপদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আক্তার রসুল মুরাদ, আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম ও দিদারুল আলম।
পরে ব্যারিস্টার কাজল সাংবাদিকদের বলেন, আদালত শুনানি শেষে হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা লোপাটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
ইন্সুরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলিটরি অথোরিটির চেয়ারম্যান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি বিষয়টি নিয়ে তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করা হয়েছে।
দুদক বরাবর হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের একটি আবেদন আগামী দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আগামী ৪ জুন এ ব্যাপারে শুনানির তারিখ ধার্য থাকবে বলেও জানিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন:
পবিত্র মাহে রমজান এবং স্বাধীনতা দিবসকে স্মরণীয় করে রাখতে বেঙ্গল গ্রুপের পক্ষ থেকে কিছু উপহার মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিমখানার শিশুদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
২৬ মার্চ এবং পবিত্র রমজানের দিনগুলোকে আরও উৎসবমুখর করতে বেঙ্গল গ্রুপ এগিয়ে এসেছে মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিমখানার শিশুদের জন্য উপহার নিয়ে। মাস্তুল ফাউন্ডেশনের এতিম শিশুরা, ধন্যবাদ জানাতে একটি ছোট অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানটি শুরু হয় কোরআন তিলাওয়াত এর মধ্য দিয়ে।
অনুষ্ঠানে বেঙ্গল পলিমার ওয়্যারস লিমিটেডের ডিজিএম জোহেব আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত হয়েছি এই এতিম শিশুদের পাশে থাকতে পেরে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যান্ড ম্যানেজার সমীর কুমার এবং সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মুস্তাফিজুর রহমান।
মাস্তুল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কাজী রিয়াজ রহমান বলেন, আমরা খুবই আনন্দিত বেঙ্গল গ্রুপকে আমাদের পাশে পেয়ে। আমরা সবসময় তাদের পাশে চাই। মাস্তুল ফাউন্ডেশন বরাবরের ন্যায় এ রমজানেও ১ লক্ষ অসহায় রোজাদারদের ইফতার করানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
বেঙ্গল গ্রুপ বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী। বেঙ্গল গ্রুপ সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের উন্নতির জন্য অনুরূপ সি.এস.আর কার্যক্রম বরাবর করে থাকে।
পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি দরে ব্রয়লার মুরগি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেয়ার পর খুচরা বাজারে এর দাম কমতে শুরু করেছে।
রমজানের প্রথম দিন শুক্রবার রাজধানীর শ্যামবাজার, সূত্রাপুর বাজার, ধুপখোলা বাজার ঘুরে দেখা গেছে ব্রয়লার মুরগি ২৫০-২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারও রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২৬০-২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
অযৌক্তিক দামে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করায় বৃহস্পতিবার এ খাতে দেশের চার প্রধান প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী ফার্মস ও সিপি বাংলাদেশকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এরপর কোম্পানিগুলো খামার পর্যায়ে নির্ধারিত এ দামে মুরগি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেয়।
এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারে হাড়সহ গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি, হাড়ছাড়া ১ হাজার টাকা কেজি, খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি, বকরি ১ হাজার টাকা কেজি।
এছাড়া বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মতোই প্রকারভেদে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি, বুটের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, খেসারি ডালের বেসন ১০০ টাকা যা গত সপ্তাহেও একই দাম ছিল। মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা আর চিকন মসুর ডাল ১৪৫ টাকায় অপরিবর্তিত দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনির মূল্য গত সপ্তাহের সমান ১২০ টাকা কেজি, মুড়ি ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, আলু ২৫ টাকা, লেবু প্রকারভেদে ৪০-৬০-৮০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
শ্যামবাজারের রাতুল এন্টারপ্রাইজের শফিকুল মোড়ল বলেন, ‘এখন এমন সময় আইছে যে রমজানেও মানুষের আনাগোনা কম দেখা যাচ্ছে। অথচ রমজান মাস আইলে মানুষের ভীড় লাইগ্যা থাকত। আর এখন হাতেগোনা মানুষ বাজারে আসতাছে। যেই হারে দাম বাড়ছে, মানুষও কী কইরা কিনবো? দাম কমলেই ভালা, আমরার বেচে বিক্রি বেশি হয়।’
মাছের দর কমেছে কিছুটা
রুই মাছ গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। বাজারে প্রকারভেদে রুই ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঙাশ ২৫০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কমে ২০০ টাকায়, ইলিশ ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাহিদা বেড়েছে তরমুজ বেলের
ইফতারিতে শরবত বানাতে তরমুজ ও বেলের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। বাজারে ৪০ টাকা কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। আর প্রকারভেদে ১০০ থেকে ১৪০ টাকা হালি বেল বিক্রি হচ্ছে।
তরমুজ কিনতে আসা রিফাত হাসান বলেন, ‘তরমুজ কেজি ও পিস উভয় ভাবেই কিনতে পারছি। কেজি হিসেবে কিনলে ৪০ টাকা আর পিস হিসেবে কিনলে দেখা যাচ্ছে প্রকারভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:খামার পর্যায়ে দাম ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা ব্রয়লার মুরগি বিক্রির আশ্বাস দিয়েছে এ খাতে দেশের চার প্রধান প্রতিষ্ঠান কাজী ফার্মস, প্যারাগন পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, আফতাব বহুমুখী ফার্মস ও সিপি বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার অযৌক্তিক দামে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করায় চার কোম্পানিকে তলব করে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এরপর কোম্পানিগুলো খামার পর্যায়ে নির্ধারিত এ দামে মুরগি বিক্রির প্রতিশ্রুতি দেন।
শুক্রবার থেকে এ চারটি কোম্পানি নতুন দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করবে করলে ভোক্ত পর্যায়ে এর দাম কমবে বলে আশা করছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, রোজায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দামে ৩০-৪০ টাকার একটা প্রভাব পড়বে। আশা করছি, ভোক্তা পর্যায়ে কেজিপ্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম কমবে ৩০-৪০ টাকা।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘কাজী ফার্ম, সিপি, প্যারাগন ও আফতাব ফার্মের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। কোম্পানিগুলো আজ পর্যন্ত প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা করে মিলগেটে বিক্রি করেছে। তারা আজ বৈঠকে আমাদের জানিয়েছেন, আগামীকাল থেকে ১৯০-১৯৫ টাকায় বিক্রি করবে। আশা করছি, ভোক্তা পর্যায়ে এখন দাম ৩০-৪০ টাকা কমবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তাদের আহ্বান করেছি, আপনারা এই রমজান মাসে একটু কম লাভ করেন। তারা একমত হয়েছেন। ফার্ম থেকে ব্রয়লার আসছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা রেটে। সে ক্ষেত্রে তো খোলাবাজারে ২৫০ টাকা হবেই।’
ব্রয়লারের দাম কমাতে প্রয়োজনে বর্ডার উন্মুক্ত করে দেয়া হবে বলেও জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
আরও পড়ুন:‘ঈদ ফেস্টিভ্যাল’ শীর্ষক ক্যাম্পেইন চালু করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ বাংলাদেশ।
মাসব্যাপী ক্যাম্পেইনটি ২৩ মার্চ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে, যেখানে থাকছে মেগা ডিল, হট ডিল, ফায়ারওয়ার্ক ভাউচার, দারাজ ক্লাব-কয়েন বুস্ট, শেইক শেইক, মিস্ট্রি বক্সসহ আকর্ষণীয় অফার। এ ছাড়াও ক্যাম্পেইন চলাকালীন গ্রাহকরা তাদের কেনা পণ্য রিভিউ করে জিতে নিতে পারবেন আকর্ষণীয় গিফট।
ডায়মন্ড স্পন্সর হিসেবে ক্যাম্পেইনে বাটা, হ্যায়ার, ইনফিনিক্স, লোটো, স্টুডিও এক্স, রিয়েলমি, ডেটল এবং লাইফবয়ের মতো ব্র্যান্ড পার্টনারদের সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছে গোল্ড স্পন্সর ফ্যাব্রিলাইফ, ফার্নিকোম, গোদরেজ, ম্যানফেয়ার, ম্যারিকো, মোশন ভিউ, মটোরোলা, নেসক্যাফে, সিঙ্গার, ডাভ এবং সিলভার স্পন্সর বাজাজ ইলেকট্রিকালস, লগিটেক, লুই উইল, বিয়ার্ডো, স্কিন পিওর, ভিট, রিবানা, স্কেমেই, স্টোন রোজ, স্বপন্স ওয়ার্ল্ড, টিপি-লিংক, রিন এবং অরাইমোর মতো ব্র্যান্ড পার্টনাররা।
এ ক্যাম্পেইনে পেমেন্ট পার্টনার হিসেবে থাকছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, এইচএসবিসি, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেড, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেড ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক। নন-কমার্শিয়াল পার্টনার হিসেবে থাকছে লিয়া’স বিউটি বক্স, গ্ল্যামফ্রিক বাই ফারিন, পাউডার রুম বাই এশা রুশদি, ল্যাভিশ বুটিক এবং পালস হেলথ কেয়ার।
ঈদ ফেস্টিভ্যাল সম্পর্কে দারাজ বাংলাদেশের চিফ মার্কেটিং অফিসার তালাত রহিম বলেন, ‘আমরা এই ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমাদের গ্রাহকদের মাসজুড়ে সাশ্রয়ী কেনাকাটার অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত। গ্রাহকদের সেরা ডিল ও অফার দেওয়ার বিষয়টি দারাজ বরাবরই অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে।
‘আমাদের ঈদ ফেস্টিভ্যালও তারই অংশ। আমরা আমাদের স্পন্সর ও পার্টনারদের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। তাদের কারণেই এই ক্যাম্পেইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য