ডান্ডাবেড়ি পরানোর ক্ষেত্রে নীতিমালা প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট।
ডান্ডাবেড়ি পরানোয় গাজীপুরের আলী আজম ও শরীয়তপুরের সেলিম রেজাকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা তা জানতে চাওয়া হয় রুলে।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে সোমবার বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতের রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
কারাগারে থাকা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের প্যারোলে মুক্তির পর ডান্ডাবেড়ি পড়ানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রোকনুজ্জামান সুজা।
আদেশের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দৈনিক পত্রিকায় প্যারোলে মুক্তি দেয়ার পর ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে জানাজায় নেয়ার প্রকাশ হয়। এটি অসাংবিধানিক। বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে আমরা রিট করি। আদালত শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।
‘রুলে ডান্ডাবেড়ি পরানোয় নীতিমালা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, একই সঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’
গাইবান্ধা জেলা কারাগারে এক নারী হাজতিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগ, এক প্রধান কারারক্ষীর সঙ্গে এক নারী কয়েদির ‘অবৈধ কর্মকাণ্ড’ দেখে ফেলায় তার মেয়েকে এই নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী হাজতির নাম মোর্শেদা খাতুন সীমা। তিনি দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। সীমা মাদক মামলায় প্রায় পাঁচ বছর ধরে গাইবান্ধা কারাগারে বন্দি।
লোমহর্ষক নির্যাতনের বর্ণনা তুলে ধরে হাজতি সীমার উন্নত চিকিৎসা ও নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীর মা করিমন নেছা। সেই অভিযোগের কপি নিউজবাংলার হাতেও এসেছে।
অভিযুক্তরা হলেন- গাইবান্ধা জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী (সুবেদার) আশরাফুল ইসলাম, নারী কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা ও আলেফা, কারারক্ষী তহমিনা ও সাবানা, সিআইডি আনিছ ও হাবিলদার মোস্তফা।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) জেলা প্রশাসককে দেয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, হাজতি মোর্শেদা খাতুন সীমা একটি মামলায় (হাজতি নং-৫০৮) প্রায় ৫ বছর ধরে গাইবান্ধা জেলা কারাগারে বন্দি। কিছুদিন আগে কারাগারে কর্মরত সুবেদার আশরাফুল ইসলাম ও মহিলা কয়েদি (রাইটার) মেঘলা খাতুনের মধ্যে চলমান অবৈধ কার্যকলাপ দেখে ফেলেন নারী হাজতি সীমা।
বিষয়টি জানতে পেরে সুবেদার আশরাফুল ও মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন সীমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। ঘটনা জানাজানির ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে তারা কারাগারের ভেতরে সীমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতে থাকেন।
একপর্যায়ে সুবেদার আশরাফুল ও তার সহযোগীরা হাজতি সীমার স্বামী খোকন মিয়াকে গাইবান্ধা কারাগারে ডেকে আনেন। তারা অভিযুক্তরা সীমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা ও আপত্তিকর তথ্য দিয়ে সীমার সংসার ভেঙে দেন।
এতোসবের পর হাজতি সীমা এসব ঘটনা জানিয়ে জেল সুপারের কাছে বিচার দেবেন জানালে সুবেদার আশরাফুল তাকে ভয়-ভীতি ও হুমকি দেন। এক পর্যায়ে ২০ মার্চ দুপুরে সুবেদার আশরাফুলের নেতৃত্বে মহিলা কয়েদি মেঘলা খাতুন, রেহেনা ও আলেফা এবং কারারক্ষী তহমিনা ও সাবানা কারাগারের মহিলা ইউনিটের ভেতরের বারান্দায় লাঠি দিয়ে পেটাতে থাকেন। পরে সেলের ভেতরে নিয়ে সীমাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে রশি দিয়ে দুই পা বেঁধে আবারও মারধর করেন। উপরন্তু নির্যাতনের এসব ঘটনা বাইরে প্রকাশ করলে সীমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হয়।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, করিমন নেছা একাধিকবার তার মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলেও সে সুযোগ দেয়া হয়নি। অবশেষে হাজিরার তারিখে আদালতে মেয়ের সাক্ষাৎ পান মা করিমন নেছা। এদিন সীমা মায়ের কাছে নির্যাতনের ঘটনার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা জেলা কারাগারের অভিযুক্ত প্রধান কারারক্ষী আশরাফুল ইসলাম মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিষয়টির সঙ্গে আমি জড়িত নই। আমার নামটা কেন আসতেছে জানা নেই।
‘ঘটনাটি এক মাস আগের। আরেক প্রধান কারারক্ষী মোস্তফার ডিউটির সময়ের। কিন্তু আমার নাম কেন হচ্ছে বিষয়টি জানি না।’
অপর অভিযুক্ত মহিলা কারারক্ষী তহমিনা আক্তার মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সেদিন যা ঘটেছিল তার বিপরীত ঘটনা তুলে ধরে অভিযোগ করা হয়েছে। আরেফিন নামে এক নারী কারারক্ষী ও তার স্বামীর মদদে এই বন্দি এসব মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।’
কারারক্ষী তহমিনা আরও বলেন, ‘এই বন্দী (সীমা) একাধিক মামলার আসামি। প্রশাসনের লোকজনের ওপর হাত তোলার একাধিক অভিযোগ ও মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ঘটনার দিনও সাবানা নামে এক নারী কারারক্ষীর গায়ে হাত তুলেছিলেন এই বন্দি।’
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা কারাগারের জেল সুপার জাভেদ মেহেদী মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকাল (মঙ্গলবার) এডিসি মহোদয় তদন্তে এসেছিলেন। ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে ভেতরের ব্যাপারে পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে একটি ব্যাপার তৈরি হয়েছে, যা ফোনে বলা সম্ভব নয়। তবে ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিসি) মো. মশিউর রহমান মোবাইল ফোনে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) বিষয়টির তদন্ত করেছি। খুব দ্রুত জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেব। এরপরই জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে জেলা প্রশাসন।’
কক্সবাজারের চকরিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সেলিম ও শফিউল আলম নামে দুই যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে গত ইউপি নির্বাচনের সৃষ্ট বিরোধের জের রয়েছে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তরপাড়ায় এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম ওই এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে। অপরজন শফিউল আলম একই এলাকার আবু সালামের ছেলে।
নিহত সেলিমের পিতা নুর মোহাম্মদ জানান, স্থানীয় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম ও সেলিমের মধ্যে গত ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মানিকপুর উত্তরপাড়া বাজার এলাকার নবীন ক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায় নিহতদের ওপর।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত সেলিমকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। অপরজন শফিউল আলমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে নেয়ার পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শফিউল আলমের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেনে সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক।
প্রসঙ্গত, বিগত ইউপি নির্বাচনে বর্তমান মেম্বার জাহেদুল ইসলামের সঙ্গে সেলিম ও শফিউল আলমের বড় ভাই শামসুল আলম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনের দিন দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে এই জোড়া হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘নিহত দুজনই একটি হত্যা মামলার আসামি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের জের ধরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বিসিক শিল্পনগরীতে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক প্রকৌশলীর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে৷ নিহত প্রকৌশলীর নাম জাং জি বিন। তিনি চীনের নাগরিক।
পুলিশ জানায়, পঞ্চবটিতে বিসিক শিল্পনগরীর ভেতরে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণাধীন ভবনের একতলায় তার রাখার ফাঁকা জায়গার পাশে কাঠের ওপর দাঁড়িয়ে কাজের নির্দেশনা দিচ্ছিলেন ওই প্রকৌশলী৷ এমন সময় ওই ফাঁকা জায়গা দিয়ে তিনি আন্ডারগ্রাউন্ডে পড়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়৷ পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, ওই প্রকৌশলীকে বেলা সোয়া ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে৷
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আযম বলেন, নিহত জাং জি বিন প্রকৌশলী হিসেবে নির্মাণাধীন ভবনটিতে কর্মরত ছিলেন৷ চায়না এই নাগরিক রাজধানীর মুগদা এলাকায় থাকতেন। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি নেয়ার অভিযোগে করা মামলায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার শাহাবাগ থানা পুলিশ। এ মামলার বাদী হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মুন্সী রুহুল আসলাম সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবিতে হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার কিছু অবজারভেশনসহ রুলটি খারিজ হয়ে যায়, যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে।
পরবর্তীতে এ কর্মকর্তা অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় জাল রায় প্রস্তুত করে বিচারপতিদের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই স্বাক্ষর দেন। তিনি রিট শাখাসহ আরডি শাখার কর্মরত অজ্ঞাত আসামিদের সহযোগিতায় মামলার রেকর্ড থেকে মূল রায় সরিয়ে জাল রায় ঢুকিয়ে রাখেন। সংশ্লিষ্ট রিট শাখার অনুলিপি বিভাগ থেকে জাল রায়ের নকল সংগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অন্যায় সুবিধা নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন।
পুলিশ আরও জানায়, তবে ফেনী পিটিআইয়ের পরিদর্শক (বিজ্ঞান) মো. জাকির হোসেন আগেই রেকর্ড থেকে মূল রায়ের একটি সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। ২০২২ সালের ২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর মূল রায়ের সার্টিফাইড কপির ফটোকপিসহ এ সংক্রান্ত একটি জালিয়াতির অভিযোগ করেন তিনি। বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হলে তিনি বিচারপতি নাইমা হায়দার, জাকির হোসেন ও জিনাত হকের সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন। এ বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রদান করে ২০১৬ সালের মামলার রুল ডিসচার্জ করে দেন। একইসঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্টারকে অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার নির্দেশ দেন।
এর ফলে শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম পেনাল কোডের ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।
এরপর গত ১৫ এপ্রিল বাদি হয়ে হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। আদালত ঢাকার শাহাবাগ থানায় মামলা নথিভুক্তর আদেশ দেন। মামলার পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় যায়।
শিবচর থানার ওসি সুব্রত গোলদার বলেন, ‘শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে মঙ্গলবার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
কুমিল্লার হোমনায় এক নারীকে তার ছেলে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার নিলখী ইউনিয়নের লালবাগ এলাকায় বুধবার বেলা ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাণ হারানো রায়জুলের নেসা (৬৫) হোমনা থানার নিলখী ইউনিয়নের লালবাগ এলাকার প্রয়াত চাঁদ মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় ছেলে আবুল হোসেনকে (৪৫) আটক করেছে পুলিশ।
হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আবুল হোসেন তার মাকে নিয়ে একই ঘরে থাকতেন। মঙ্গলবার রাতে তিনি তার মায়ের সঙ্গে ছিলেন।
তিনি জানান, রায়জুলের নেসার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধারের সময় ছেলে আবুল হোসেন ঘরে ছিলেন না। পরে সকালে পুলিশ তাকে আটক করে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে হোমনা থানার ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওই ছেলে তার মায়ের সঙ্গে একাই থাকত। তাই আমরা তদন্তের স্বার্থে তাকে আটক করেছি। মরদেহ কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলমান।’
এক নারীর সঙ্গে বরগুনার তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদিন মিঠুর অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার কমিটি বিলুপ্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আপত্তিকর ভিডিওতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অস্তিত্ব টের পাওয়ায় ও মেয়াদ সংক্রান্ত ইস্যু থাকায় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।’
এদিকে নিউজবাংলার হাতে আসে ফাঁস হওয়া ভিডিওটি। সেখানে মিঠুর সঙ্গে আরও তিনজনকে দেখা যায়।
তারা তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবি-উল-কবির, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচা কোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয়রা।
ভিডিও ফাঁসের পর বরগুনার তালতলী থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটির বাদী নিশানবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চুও ছিলেন ওই ভিডিওতে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বাদীর ( কামরুজ্জামান বাচ্চু) সঙ্গে ওই নারীর আগে থেকেই পরিচয় ছিল। ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে তার সঙ্গে লঞ্চে যাত্রার ওই পরিকল্পনা হয়।
ইতোমধ্যে ওই নারীকে পর্নোগ্রাফির মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ দিকে তালতলী থানায় করা ওই মামলার আসামি দুইজন। ওই নারী এবং জাহিদুল ইসলাম সবুজ নামে এক ব্যক্তি। ইতোমধ্যে সবুজকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সবুজের স্ত্রী মেহেরুন মিমের দাবি, ধর্ষণের বিচার চাওয়ায় ঈদের দিন বিকেলে তার স্বামীকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন:পাবনার ভাঙ্গুড়ায় সংবাদ প্রকাশের জেরে এক সাংবাদিককে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার পুঁইবিল গ্রামে মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আহত দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি মানিক হোসেনকে গুরুতর অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মারধরের সময় তার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নেয়া হয়। মানিক ভাঙ্গুড়া প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
অভিযোগে জানা যায়, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চক লক্ষীকোল গ্রামের দুগ্ধ ব্যবসায়ী রাজীব আহমেদ এবং কৈডাঙ্গা গ্রামের আবুল বাশার দীর্ঘদিন ধরে নকল দুধ তৈরির করে বাজারজাত করে আসছেন। এ নিয়ে কিছুদিন আগে মানিক হোসেনসহ কয়েকজন সাংবাদিক নকল দুধ তৈরির ভিডিও ধারণ করেন।
এসব ভিডিও উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে দেখালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মতবিনিময় সভায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সুশীল সমাজের বক্তারা এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেন।
পরে এ নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাজিব আহমেদ ও আবুল বাশারের নেতৃত্বে বায়েজিদ, রাজিব ও মাহাতাবসহ ১০ থেকে ১২জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী মঙ্গলবার সকালে পুঁইবিল সড়কে মানিককে একা পেয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেযন।
পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে মানিককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যায়। অবস্থা মুমূর্ষু হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসকরা মানিককে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
আহত প্রতিনিধি মানিক বলেন, ‘সংবাদ প্রকাশের পর থেকে নকল দুধ তৈরির ব্যবসায়ীরা বাড়িতে এসে কয়েকদিন হুমকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় আমাকে পিটিয়ে পা ভেঙে দিয়েছে এবং সেই পেটানোর ভিডিও করেছে তারা। আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল কেড়ে নিয়েছে। আমি আমার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ইকরামুন নাহার শেলী বলেন, ‘এক্সরেতে দেখা যায় মানিকের পায়ের হার ডিসপ্লেস হয়ে গেছে। এর চিকিৎসা ভাঙ্গুড়ায় সম্ভব নয়। তাই পাবনা পাঠানো হয়েছে।’
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, ‘পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এ বিষয়ে মামলা রুজু হলে আসামিদের আটক করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া নকল দুধ তৈরির বিষয়টি বর্তমানে খুবই আলোচিত। এ বিষয়েও আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মন্তব্য