একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার জন্য রাজশাহীর মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আগামী নির্বাচন আসবে এই বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতেই। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি না ওয়াদা চাই।
রোববার বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আধ ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যের অনেকটা অংশ জুড়েই প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তথ্য তুলে ধরেন। জনসভায় বক্তব্য দেয়ার আগে তিনি রাজশাহীর ২৬টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং ৬টি উন্নয়ন কাজের ভিত্তি স্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণকে দিতে আসে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে জনগণ পায়। এটা হলো বাস্তব কথা।’
‘৯৬ সালে সরকার গঠন করার পরই আমরা চেষ্টা করেছি বাংলাদেশকে উন্নত গড়তে। ৪০ লাখ টন খাদ্য ঘাটতি ছিল। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া- কেউই এদেশের মানুষের খাদ্যের নিরাপত্তা দেয়নি বা চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার এসে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে। মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আজকে বিরোধী দল অনেক কথাই বলে। তারা আমাদেরকে নোটিশ দেয়। আবার বলে আমরা নাকি পালানোর পথ পাব না। বিএনপি-জামায়াত জোটকে জিজ্ঞাসা করি- পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না। পিছু হটে না। জিয়াউর রহমান তো বাধা দিয়েছিলেন, আমাকে দেশে আসতে দেবেন না। আমি বাধা অতিক্রম করেই দেশে ফিরেছিলাম।
‘আবার ২০০৭ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে, তখনও আমি বিদেশে গিয়েছিলাম। আমাকে দেশে ফিরতে দেবে না। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেয়া হয়েছিল। আমি বলেছিলাম- আমি যাব, এই কেস আমি মোকাবেলা করব। আমি দেশে ফিরে এসেছি শুধু বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না। পালায় বিএনপির নেতারাই। বিএনপি নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে। যে নাকি ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়েছিল। আর কোনোদিন রাজনীতি করবে না বলে দেশ থেকে ভেগে গিয়েছিল, পালিয়ে গিয়েছিল।
দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা-তারেক। এমনকি খালেদা জিয়া তারেক-কোকোর মাধ্যমে যে টাকা পাচার করেছিলেন মানি লন্ডারিং করে, ৪০ কোটি টাকা আমরা বাংলাদেশে ফেরত নিয়ে এসেছি। তাদের পাচার করা টাকা। এর জবাব কি তারা দিতে পারবে?’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনো পালায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে। এই সংগঠন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হাতে গড়া সংগঠন। এই সংগঠন যখনই ক্ষমতায় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে।
‘আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ৪০ ভাগ দারিদ্র সীমা আমরা ২০ ভাগে নামিয়েছি। বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা- সব ভাতা দিয়ে যাচ্ছি। মা-বোনদের মাতৃত্বকালীন ভাতা আমরা দেই। দেশের একটা মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। এটাই আমাদের লক্ষ্য। কোনো মানুষ না খেয়ে কষ্ট পাবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই রাজশাহী সব সময় অবহেলিত ছিল। কিছুক্ষণ আগেই আমরা কতগুলো প্রকল্প উদ্বোধন করলাম। ২০০৯ সাল থেকে এই ১৪ বছরে শুধু রাজশাহী জেলা ও মহানগরে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। কিছুক্ষণ আগে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করলাম। ৩৭৫ কোটি টাকার ৬টি প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করলাম। এই প্রকল্পগুলো আমি আপনাদের জন্য উপহার হিসেবে দিয়ে গেলাম।’
তিনি বলেন, ‘এই রাজশাহীর কী অবস্থা ছিল আপনারা একবার চিন্তা করে দেখুন। ২০০১ সালের কথা চিন্তা করেন। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায়। প্রতিনিয়ত রাজশাহীতে ঘটেছে হত্যা, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, ধর্ষণ আর নির্যাতন। এই রাজশাহীর ফাহিমা, মহিমা, রাজুফার ওপর কিভাবে পাশবিক অত্যাচার করেছে বিএনপির ক্যাডার বাহিনী এবং জামায়াত জোট। একটা বাচ্চা মেয়েকে গ্যাং রেপ করা হলো তার বাবা-মা নৌকায় ভোট দিয়েছিল বলে।
‘আরে নৌকায় ভোট না দিলে দেশ স্বাধীন হতো না। দেশ স্বাধীন না হলে তাদের নেতা জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল প্রমোশন পেত না। এটা তারা ভুলে যায়। দেশ স্বাধীন না হলে কোনোদিন ক্ষমতায় আসতে পারত না খালেদা জিয়া। প্রধানমন্ত্রী হতে পারত না। সেই নৌকার ওপর এত রাগ কেন?’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের কোনো ভালো তারা সহ্য করতে পারে না। এটাই হলো বাস্তবতা। খুনিদেরকে খালেদা জিয়া পুরস্কৃত করে, জিয়াউর রহমান পুরস্কৃত করে। জনগণের ভোট চুরি করে তদেরকে পার্লামেন্টে বসায়। যুদ্ধাপরাধীদের জিয়াউর রহমান এমপি-মন্ত্রী পর্যন্ত বানিয়েছে।
‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। সেই ডিজিটালের মাধ্যমে তারা আমাদের গীবত গায়, অপপ্রচার চালায়। আর মানুষকে উস্কানি দেয়। এটাই তাদের কাজ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং করোনার জন্য বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। আমরা যে জিনিস ৬ ডলারে কিনতাম তা কিনতে হবে ৬৮ ডলারে। যে জিনিস ২০০ ডলারে কিনতাম তা কিনতে হবে ৬০০ ডলারে। তারপরও আমরা থেমে থাকিনি। আমরা এক কোটি মানুষের জন্য টিসিবির কার্ড করে দিয়েছি।
‘চাল, ডাল, তেল, চিনি- প্রতিটি জিনিস অতিরিক্ত দাম দিয়ে কিনে আনলেও আমরা তা কম মূল্যে সাধারণ মানুষকে দিচ্ছি; যেন মানুষের কোনো কষ্ট না হয়। আমরা এদেশের প্রতিটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি।’
সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা যে ওয়াদা দেই তা রক্ষা করি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বলেছিলাম, রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়ন করব। আল্লাহর রহমতে আমরা তা করেছি। ২০২০-এ জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আর ২০২১-এ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী করে আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। আগামীতে বাংলাদেশকে আমরা আরও উন্নত করতে চাই। প্রতিটি মানুষ কাজ পাবে। শিল্প-কলকারখানা করে দিচ্ছি।
‘এই রাজশাহীতে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগই ছিল না। এখন ডিজিটাল সেন্টার, ট্রেনিং সবকিছু করে দিয়েছি। এখানে শিল্প-কলকারখানা হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে দিয়েছি। এখানে মানুষের আরও ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। এখানে আন্তর্জাতিক কোনো ক্রিকেট খেলা হয় না। কারণ এখানে উন্নত মানের কোননোহোটেল নাই। অনেক বিত্তশালী আছে রাজশাহীতে। তাদেরকে বলব, আপনার একটা উন্নতমানের হোটেল করেন। আমরা যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট এখানে করতে পারি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার সময়ে আমি আসতে পারিনি। আজকে আপনাদের মাঝে এসে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আপনারা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। গত নির্বাচনে নৌকা মার্কায় আপনারা ভোট দিয়েছেন। আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলছি- আগামী নির্বাচনে আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন কি না ওয়াদা চাই। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ যেন করতে পারি সেজন্য আপনারা নৌকায় ভোট দেবেন প্রত্যাশা করি।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামারের সভাপতিত্বে জনসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, কাজী জাফরউল্লাহ, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রমুখ।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও প্রসারে জাতিসংঘের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে সরকার।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তার্ক-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তার অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথা উল্লেখ করেন।
সরকারের কার্যকর উদ্যোগের ফলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার অনেক কমেছে বলে আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে জানান।
আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার এই আইনের অপব্যবহার বন্ধের ব্যাপারে সজাগ রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এ সংক্রান্ত আইনের গুড প্রাকটিস নিয়ে সরকার আলোচনা করছে। আইনটি নিয়ে সরকার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও পরামর্শ করছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, তথ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকার তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি প্রস্তাবিত আইনের একটি খসড়া প্রকাশিত হয়েছে। আইনটি নিয়ে সরকার অংশীজনদের নিয়ে পরামর্শ করছে।
বৈঠকে হাইকমিশনার জাতিসংঘের সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের পঁচাত্তর বছরপূর্তি উপলক্ষে তার অফিসের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরেন। তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
আইনমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা সফল করতে জাতিসংঘের অধিকতর শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
বৈঠকে জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:একুশে পদকপ্রাপ্ত ভাস্কর শামীম শিকদার মারা গেছেন।
রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্বামী, দুই মেয়েসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
বাংলাদেশী ভাস্কর শামীম সিকদারের জন্ম ১৯৫২ সালে। তিনি একাত্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি চারুকলা ইনস্টিটিউটের ভাস্কর্য বিভাগের একজন অধ্যাপক ছিলেন। তিনি সিমেন্ট, ব্রোঞ্জ, কাঠ, প্লাস্টার অব প্যারিস, কাদা, কাগজ, স্টিল ও গ্লাস ফাইবার মাধ্যমে কাজ করেন। প্রখ্যাত কমিউনিস্ট বিপ্লবী নেতা সিরাজ সিকদার তার আপন বড় ভাই।
ঢাবির চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের অধ্যাপক শামীম শিকদার ১৯৯০ সালে টিএসসিতে 'স্বোপার্জিত স্বাধীনতা' এবং ফুলার রোড এলাকায় 'স্বাধীনতা সংগ্রাম' নির্মাণ করেন।
এর আগে ১৯৭৪ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করেন।
২০০০ সালে শামীম শিকদার একুশে পদক পান। তার স্বামীর নাম জাকারিয়া চৌধুরী, যিনি একজন কবি । তাদের দুই কন্যা সন্তানের নাম সুইটি ও শান্তি।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ বিষয়ে বিমান ও সাকিবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় মঙ্গলবার বিকেলে ব্র্যান্ডিং ইস্যুতে সাকিবের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকারের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শফিউল আজিম, ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, বিমানের পরিচালকবৃন্দ ও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিকেলে সাকিব আল হাসান বলাকায় এলে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এরপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এ সময় সাকিবের সৌজন্যে একটি কেক কাটা হয়।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাকিব আল হাসান বিমান নিয়ে তার শৈশবের স্মৃতিচারণ করেন। বলেন, ‘শৈশবে খেলার মাঠে মাথার উপর দিয়ে বিমান উড়ে গেলে এক ধরনের ভালো লাগা কাজ করত।
‘বিমানের অসংখ্য ভালো দিক আছে। এগুলো সবার সামনে তুলে ধরতে পারলে বিশ্বের অন্যান্য এয়ারলাইন্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় বিমানের সক্ষমতা বাড়বে। বিশেষ করে নিরাপত্তা ইস্যুতে বিমান কখনও আপোষ করে না। এ ধরনের ইতিবাচক বিষয়গুলো প্রচার হওয়া দরকার।’
মোস্তাফা কামাল উদ্দীন বিমানের ব্র্যান্ডিং ও খেলাধুলা বিষয়ে সহযোগিতার জন্য সাকিব আল হাসানকে ধন্যবাদ জানান।
শফিউল আজিম বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের কার্যক্রম আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমরা সততা, দক্ষতা ও উন্নত সেবার মাধ্যমে এভিয়েশন খাতে বিমানকে সুপ্রিতিষ্ঠিত করতে একযোগে কাজ করব।’
বিমান জানায়, সাকিব আল হাসান এক সময় বিমান ক্রিকেট টিমের সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট টিমের সাবেক চারজন সদস্য বর্তমানে বিমানে বিভিন্ন পদে কর্মরত। বিশ্ববিখ্যাত গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ, ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুকে নাম লেখানো জোবেরা রহমান লিনু এক সময় বিমানের হয়ে খেলতেন।
আরও পড়ুন:পুলিশ কর্মকর্তা হত্যা মামলার পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাব খান সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গ্রেপ্তার হননি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ।
মঙ্গলবার দেশের একাধিক গণমাধ্যমে দুবাইয়ে আরাভ খানের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান পালিয়ে থাকতে পারবেন না। আমি এটুকুই বলতে পারি যে, বাংলাদেশের আসামি কোনো বন্ধু রাষ্ট্রে গিয়ে পালিয়ে থাকতে পারবে না। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে দুবাইয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে।
আরাবকে নিয়ে আলোচনার শুরু যেখান থেকে
পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি আরাব খান ওরফে রবিউল ইসলাম আলোচনায় আসেন মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গোল্ড জুয়েলারি শপ ‘আরাব জুয়েলার্স’ উদ্বোধন ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এ আলোচনা শুরু হয়। শপটির লোগো বানানো হয় ৬০ কেজি সোনা দিয়ে।
আরাবের এই জুয়েলারি শপের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এ নিয়ে সাকিব আল হাসানের ভিডিওবার্তার পর বিষয়টি নজরে আসে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি)।
সে সময় ডিবি মতিঝিল বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘পুলিশ পরিদর্শককে হত্যা মামলার চার্জশিট হয়েছে অনেক আগেই। রবিউল চার্জশিটভুক্ত পলাতক আসামি। জুয়েলারি শপ উদ্বোধনের ঘোষণার পর আইডেন্টিফাই করি, যে ব্যক্তি আরাব খান নামে আইডিটি পরিচালনা করছেন, তিনি পুলিশ পরিদর্শক মামুন এমরান খাঁন হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম। তার ভারতীয় একটি পাসপোর্ট ও বাংলাদেশি পাসপোর্ট আমাদের কাছে রয়েছে।’
রবিউলকে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছিলেন ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজিব আল মাসুদ।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘আমরা তাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজছিলাম। দুবাইতে তিনি অবস্থান করছেন, এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ফলে এখন আমরা ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নেব।’
ফেরারি আসামি আরাব খানের মালিকানাধীন আরাব জুয়েলার্স উদ্বোধন হয় ১৫ মার্চ রাতে। দুবাইয়ে নিউ গোল্ড সোক হিন্দ প্লাজার ৫ নম্বর ভবনের ১৬ নম্বর দোকানটি তার।
সর্বশেষ সোমবার দুবাইয়ে থাকা আরাবের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন গ্রহণের কথা শুনেছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। চট্টগ্রামের এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়ির নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
আরও পড়ুন:কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং এর যথাযথ সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াকরণ ও বিদেশে রপ্তানি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তিনি ডাল, পেঁয়াজ ও সরিষার আবাদ, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সংশ্লিষ্টদের গভীর মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, কোনো জমি যেন অলস পড়ে না থাকে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সভাকক্ষে মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তিনি এসব নির্দেশনা দেন।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, ‘কোনো জমি অলস না রেখে চাষের আওতায় আনার ওপর আবারও গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, সিলেট অঞ্চলে এখনও অনেক জমি অলস পড়ে থাকে। চাষাবাদ হচ্ছে না। সেসব জমি চাষের আওতায় আনতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে উপকূলীয় অঞ্চলের চিংড়ি ঘের মালিকদের প্রযুক্তিগত ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের নির্দেশ দেন। বলেন, ঘের মালিকরা যেন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারে এবং ঘের থেকে বালু পরিষ্কার করতে পারে।
এছাড়া তিনি বিদেশি জাতের মাছের পরিবর্তে স্থানীয় জাতের মাছ চাষে বেশি মনোযোগ দেয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী যেকোনো প্রকল্পে ‘দারিদ্র্য বিমোচন’ শব্দটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার আপত্তির বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে মানবসম্পদ উন্নয়ন শব্দটি বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো প্রকল্পের অধীনে কেবল অবকাঠামো নির্মাণ করাটাই সব সময় বুদ্ধিমানের কাজ নয়। জনগণকে সেবা দেয়ার জন্য অবকাঠামো ও ভবনের অধীনে মেশিনারিজ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় জনবল তৈরি এবং তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদানের দরকার রয়েছে।’
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সরকারি প্রকল্পে আমদানি করা যানবাহনের পরিবর্তে প্রগতি থেকে স্থানীয়ভাবে সংযোজিত যানবাহন ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেন।
উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি পরামর্শক নিয়োগের প্রবণতা কমানো এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিজ সংস্থার নিয়মকানুন মেনে চলারও নির্দেশ দেন সরকার প্রধান।
দেশের বর্তমান সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘ফেব্রুয়ারিতে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। মার্চে সেটি আরও বাড়তে পারে। তবে বোরোর বাম্পার ফলন হলে বৈশাখ থেকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।’
মান্নান বলেন, বাংলাদেশের মতো অর্থনীতিতে পণ্যের প্রবাহ মসৃণ নয়। এখানে কিছু অজানা ও অদৃশ্য সমস্যা রয়ে গেছে। আমাদের মতো ক্রমবর্ধমান অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
‘আমি মনে করি, বর্তমানে সার্বিক অর্থনীতি আগের তুলনায় অনেক ভাল। রেমিটেন্স, রপ্তানি ও কৃষি ফলনের অবস্থা যেভাবে আছে, তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
আসন্ন রমজানে মূল্যস্ফীতি কমানোর ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে একসঙ্গে বেশি করে পণ্য কেনার প্রবণতা থাকে। আর তা ব্যবসায়ীদের অতিরিক্ত মুনাফা করার সুযোগ তৈরি করে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রবণতা রোধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমরা সরবরাহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি।’
মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি ইন্দো-বাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন উদ্বোধন করায় একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। দুই প্রতিবেশী দেশ ১৩১ দশমিক ৫৭ কিলোমিটার আন্তঃসীমান্ত পাইপলাইন তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে ভারত থেকে পেট্রোলিয়াম বিশেষ করে ডিজেল আমদানি করবে বাংলাদেশ।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিকল্পনা সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে বিশ্ব সম্প্রদায়ের জোরালো পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। অব্যাহত এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ক্যাবল নিউজ নেটওয়ার্ক (সিএনএন) টিভিকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাৎকারের প্রথম পর্ব মঙ্গলবার সকালে সম্প্রচার হয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশটি রাতে প্রচারিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘আমি মনে করি যে সাধারণ মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এই যুদ্ধ (ইউক্রেনে) বন্ধ করতে বিশ্বের এগিয়ে আসা উচিত।’
যুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে কোনো সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি আমরা। কোনো বিরোধ থাকলে সংলাপের মাধ্যমে সমাধান করা যায়। আমরা কখনই কোনো ধরনের আগ্রাসন বা কোনো সংঘর্ষকে সমর্থন করি না।’
তিনি ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রচেষ্টা চালানোর জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।
বিখ্যাত সাংবাদিক রিচার্ড কোয়েস্টের নেয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা ইউক্রেনের যুদ্ধ, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এবং ঋণ দেয়ার মাধ্যমে চীনের সৃষ্ট মরণফাঁদ ও রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে অনেক প্রশ্নের জবাব দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বিশ্বাস করি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অত্যন্ত স্পষ্ট, ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি অনুসরণ করছি, তাই যখন আমরা কোনও মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আক্রমণ দেখি, আমরা অবশ্যই এর বিরোধিতা করি। যুদ্ধ এক পক্ষের দ্বারা সংঘটিত হতে পারে না, উভয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ভূখণ্ডে (স্বাধীনভাবে) বসবাস করার এবং তাদের নিজস্ব অঞ্চল রক্ষার অধিকার রয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তার দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সমর্থন করে এমন প্রতিটি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বাড়ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সকলের কাছাকাছি, চীন, যুক্তরাষ্ট্র বা ভারত। যারা আমাদের উন্নয়নে সহযোগিতা করছেন, আমরা তাদের সঙ্গে আছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। তারা বিনিয়োগ করছে এবং কিছু নির্মাণকাজ করছে, ‘এটিই মূল কথা।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কারো ওপর নির্ভরশীল নই।’
চীন থেকে ঋণ নেয়ার বিষয়ে আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক। আমরা বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান থেকে বেশিরভাগ ঋণ নিয়ে থাকি। চীন থেকে আমাদের ঋণ খুবই কম। এটা শ্রীলঙ্কা বা অন্য কারো মতো নয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অকারণে সরকার কোনো ঋণ বা কোনো মেগা প্রকল্প নেয় না। কোনো মেগা প্রকল্প বা ঋণ নেয়ার ক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করি কোন প্রকল্প থেকে আমরা রিটার্ন পেতে পারি এবং আমরা সুবিধাভোগী হব।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে বাংলাদেশের কী প্রয়োজন জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি, তারা যেন তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে চাপ দেয়। শুধু তাই নয়, আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে সংলাপও শুরু করেছি। দুর্ভাগ্যক্রমে, তারা সঠিকভাবে সাড়া দিচ্ছে না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ইতিমধ্যে চীন, আসিয়ান দেশ, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের সাথে কথা বলেছে এবং মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে দেশটির ওপর চাপ দেয়ার জন্য তাদের অনুরোধ করেছে।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত, মিয়ানমার সরকার কারো কথাই শুনছে না। এটাই সমস্যা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশি (এক কোটি) মানুষের প্রতিবেশী ভারতে আশ্রয় দেওয়ার কথা বিবেচনা করে মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা (১২ লাখ) বাংলাদেশের জন্য একটি ‘বড় বোঝা’ হয়ে উঠছে। কারণ দেশটিতে অতিরিক্ত জনসংখ্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে তাদের (রোহিঙ্গাদের) খাওয়াতে হবে। আমাকে তাদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন:
১৪৪৪ হিজরি সনের পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখার সংবাদ পর্যালোচনা এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য বৈঠকে বসছে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি।
বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে এই বৈঠক হবে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করবেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে তা সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তাতে জনাতে সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ফোন নম্বরগুলো হলো- ০২-২২৩৩৮১৭২৫, ০২-৪১০৫০৯১২, ০২-৪১০৫০৯১৬, ০২-৪১০৫০৯১৭।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য