মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তবে ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
উপজেলার মধ্য বাঘড়া এলাকা থেকে শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে আটক করা হয়।
আটক মো. আবু জর বিন আলী (৩৫) মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ছিটিখান এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকার কাফরুলের ইব্রাহিমপুরে পরিবারের সাথে থাকতেন।
আটক যুবকের পরিবার জানায়, গত দেড় বছর ধরে পরিবারের সঙ্গে তার তেমন যোগাযোগ ছিল না। সে মানসিক ভারসাম্যহীন ও ভবঘুরে। ২০২০ সালের আগে তিনি কাকরাইল মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। পরে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়লে পরিবার থেকে তার চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহিন মোড়ল বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যার পরে ওই যুবককে কোরআনের পাতা ছিড়তে দেখা যায়। এরপর বিষয়টি আমি ইউপি চেয়ারম্যানকে জানাই। তিনি থানায় জানালে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়৷’
স্থানীয়রা জানান, গত ১০-১২ দিন যাবৎ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কোরআন শরীফের ছেড়া অংশ পাওয়া যাচ্ছিল। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল।
শ্রীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সরকার জানান, কোরআনের ছেড়া অংশ পাওয়ার অভিযোগ পুলিশ পেয়েছিল। এর মধ্যেই শুক্রবার ওই যুবককে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে, সে মানসিক ভারসাম্যহীন।
তিনি বলেন, ‘আটক যুবককে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় এ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।’
বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী লিমিটেড এর ২৯ তম বার্ষিক সাধারন সভা ২৪ জুন ২০২৫ইং তারিখে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ২০২৪ইং সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক প্রতিবেদন এবং ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জনাব মোস্তফা কামাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীর পরিচালক মিসেস বিউটি আক্তার, ব্যারিষ্টার হাসান রাজিব প্রধান, জনাব মনজুর মো: সাইফুল আজম এফসিএমএ, মিসেস তাহমিনা বিনতে মোস্তফা, জনাব তায়েফ বিন ইউসুফ, মিসেস তানজিমা বিনতে মোস্তফা, জনাব ওয়াশিকুর রহমান, জনাব তানভীর আহমেদ মোস্তফা , মিসেস সামিরা রহমান, মিসেস তাসনিম বিনতে মোস্তফা, জনাব মোঃ বেলায়েত হোসেন ভূইয়া, জনাব মোহাম্মদ সাইদ আহমেদ রাজা এবং মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সানা উল্লাহ, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা শেখ বিল্লাল হোসেন এফসিএ, কোম্পানীর অডিটর এ.কে.এম. আমিনুল হক এফসিএ, সিনিয়র পার্টনার মেসার্স এ.হক এন্ড কোং চাটার্ড একাউন্টেন্টস এবং আবদুর রহিম মিয়া, এফসিএ, পার্টনার মেসার্স ইসলাম জাহিদ এন্ড কোং, চাটার্ড একাউন্টেন্টস, মোঃ ফিরোজুল ইসলাম সিনিয়র এক্সিঃ ভাইস প্রেসিডেন্ট (অর্থ ও হিসাব) ও কোম্পানী সচিব মো: মাসুদ রানা এবং কোম্পানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডার সভায় সংযুক্ত ছিলেন।
মেঘনা ব্যাংক পিএলসি’র ১২তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ২৩ জুন ২০২৫, সোমবার রাজধানীর মহাথালীতে অবস্থিত ম্যাডোনা টাওয়ারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত বার্ষিক সাধারণ সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের সম্মানিত চেয়ারপার্সন মিসেস উজমা চৌধুরী।
বার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান জনাব তানভীর আহমেদ, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মো. আলী আক্তার রেজভী, এফসিএ এবং ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ মামুনুল হক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক জনাব রজব আলী, জনাব এম. নজরুল ইসলাম এবং জনাব হাবিবুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব কাজী আহ্সান খলিল এবং ভারপ্রাপ্ত কোম্পানি সচিব জনাব সজিব কুমার সাহা, এফসিএ এবং ব্যাংকের সম্মানিত শেয়ারহোল্ডারবৃন্দ।
সভায় ব্যাংক নিজেদের পরিষেবা বৃদ্ধি, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি প্রচারণা, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে।
অবশেষে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর মগবাজার এলাকার থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কয়েকদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজী হাবিবুল আউয়ালকে খুঁজছিল বলে জানা যায় । তাকে ধরতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে বলেও জানায় ডিবি।
এর আগে, গত ২২ জুন রাতে পুলিশ সদর দপ্তরের এক দায়িত্বশীল উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, হাবিবুল আওয়ালকে আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা কার্যালয়ে (ডিবি) কার্যালয়ে আনা হচ্ছে। যদিও ডিবির পক্ষ থেকে ওই রাতেই বিষয়টি অস্বীকার করা হয়। এমন প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন মহলের প্রশ্ন তাহলে হাবিবুল আওয়াল কোথায়?
পরে সোমবার এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) সাংবাদিকদের বলেন, কাজী হাবিবুল আউয়ালকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। তাকে গ্রেফতারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তা সঠিক নয়।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাবিবুল আউয়াল লোকচক্ষুর অন্তরালে অবস্থান করছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় অপর সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাকে গ্রেফতারের পর আলোচনায় আসে তার নাম।
নূরুল হুদার কমিশন আলোচনায় ছিল ২০১৮ সালে ‘দিনের ভোট রাতে’ সম্পন্ন করে। আর কাজী আউয়ালের কমিশন বিতর্কিত ছিল ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের দলীয় ও একই দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করে। এছাড়া বিএনপিকে নির্বাচনে আনা হবে কিনা? এমন প্রশ্নে তার বেশ কিছু নেতিবাচক বক্তব্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়।
জানতে চাইলে ডিবির যুগ্ম কমিশনার নাসিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আইনের আওতায় আনতে জোরালো তত্পরতা চালাচ্ছি। রোববার রাতে তাকে ধরতে দুই দফায় অভিযান চালিয়েছিলাম। প্রথমে খবর পাই তিনি বসুন্ধরা এলাকার একটি বাসায় আছেন। সেখানে আমাদের টিম যাওয়ার পর জানতে পারে, কিছুক্ষণ আগেই তিনি ওই বাসা ত্যাগ করেছেন। পরে আরেকটি এলাকায় তার অবস্থানের তথ্য পাওয়ার পর সেখানেও অভিযান চালানো হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে পাওয়া যায়নি।'
ডিবির যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘রোববার রাতে বসুন্ধরা এলাকায় আরেকটি অভিযান চালিয়ে ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুল মাওলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যেহেতু হাবিবুল আওয়ালকে ধরতে একই এলাকায় অভিযান চালানো হয়, এ কারণে অনেকেই মনে করেছিল আমরা তাকে গ্রেফতার করেছি। তবে তাকে গ্রেফতারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। যখনই পাওয়া যাবে, তখনই তাকে গ্রেফতার করা হবে।'
২০২৪ সালের নির্বাচনের পর ‘আমি-ডামি ভোট' উপাধি পায় কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন তত্কালীন কমিশন। ওই কমিশনের বেশির ভাগ কার্যক্রমই ছিল বিতর্কিত। ভোটের হার নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়। ভোটের দিন বেলা ৩টা পর্যন্ত ২৭ দশমিক ১৫ ভাগ ভোট পড়ে বলে জানানো হলেও এক ঘণ্টার ব্যবধানে ভোটের হার ৪০ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়। ভোটের হার ঘোষণার সময় সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রথমে ২৮ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলে পরে তা সংশোধন করে ৪০ শতাংশের কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ কমিশন সদস্যদের আসামি করে রোববার মামলা করে বিএনপি। মামলায় মোট ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে আছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও পুলিশের সাবেক চারজন আইজিও।
রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহউদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। এই মামলায় সোমবার কে এম নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। নূরুল হুদা এবং হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশন ছাড়াও কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ ও তার নেতৃত্বাধীন কমিশন সদস্যদেরও মামলায় আসামি করা হয়েছে।
বর্ষা মৌসুম শুরু হতেই ঢাকার বাতাসে লক্ষণীয় উন্নতি হয়েছে। বায়ুদূষণে বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলো থেকে অনেক দূরে থেকে তালিকার বেশি নিচে অবস্থান করছে বাংলাদেশের রাজধানী। গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর শ্রেণি থেকে ভালো অবস্থায় রয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) সকাল ৯টায় ১৮৩ একিউআই সূচক নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকার শীর্ষস্থান অধিকার করে ছিল কঙ্গোর কিনশাসা। এরপরই ছিল ইন্দোনেশিয়ার দুই শহর—জাকার্তা ও মেদান। শহরদুটির একিউআই স্কোর যথাক্রমে ১৭৭ ও ১৬৬।
শীর্ষ পাঁচের অপর দুই শহর হচ্ছে ভারতের দিল্লি ও পাকিস্তানের লাহোর। দিল্লির স্কোর মেদানের মতোই ১৬৬ এবং লাহোরের ১৬০।
শীর্ষ এই পাঁচ শহরের বাতাসই এদিন ‘অস্বাস্থ্যকর’। একিউআই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে বিবেচিত হয়। তালিকার পরের বেশ কয়েকটি শহরের মান ছিল একটু ভালো, অর্থাৎ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’।
কণা দূষণের এই সূচক ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
ঢাকার কী অবস্থা
গত কয়েকদিনের মতো আজও ঢাকার একিউআই স্কোর ছিল ‘মাঝারি’ পর্যায়ে। এই সময়ে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৮। একিউআই সূচক ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’ বলে গণ্য করা হয়। আর ৫০ বা তার কম হলে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়।
এই সময় দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ৩১তম স্থানে অবস্থান করছিল ঢাকা। দুদিন আগে যা ছিল ২১ এবং গতকাল ছিল ২৬। অর্থাৎ গত তিন দিন ধরে একটু একটু করে উন্নতি হয়ে চলেছে ঢাকার বায়ুমান।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’ চালুর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থ লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা হলো।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘অর্থ লেনদেনে নতুন যুগের সূচনা! স্বাগত জানাই গুগল পে-কে বাংলাদেশে। এখন লেনদেন হবে আরো সহজ, আরো স্মার্ট!’
মঙ্গলবার দেওয়া ওই পোস্টে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘বাংলাদেশে আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলো গুগলের ডিজিটাল পেমেন্ট সেবা ‘গুগল পে’।’
জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি পালনে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ৭ টি উপ-কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর সই করা এই কমিটি বিএনপি’র মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেইজে প্রকাশ করা হয়েছে।
ব্যবস্থাপনা উপ-কমিটিতে শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিকে আহ্বায়ক ও ড. আবদুল্লাহ আল-মামুনকে সদস্য সচিব, প্রচার ও মিডিয়া উপ-কমিটিতে অধ্যাপক ডা. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেলকে আহ্বায়ক ও আতিকুর রহমান রুমনকে সদস্য সচিব, শৃঙ্খলা উপ-কমিটিতে সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব, অভ্যর্থনা উপ-কমিটিতে হাবিব-ঊন-নবী খান সোহেলকে আহ্বায়ক ও মিসেস শামা ওবায়েদকে সদস্য সচিব, যোগাযোগ উপ-কমিটিতে ড. মাহদী আমিনকে আহ্বায়ক ও এহসান মাহমুদকে সদস্য সচিব, আপ্যায়ন উপ-কমিটিতে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সকে আহ্বায়ক ও নুরুল ইসলাম নয়নকে সদস্য সচিব এবং দাপ্তরিক উপ-কমিটিতে অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদকে আহ্বায়ক ও মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারীকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত নানা কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকার অসংখ্য বাড়ির উঁচু দেওয়ালের আড়ালে ঢাকা পড়ে আছে এক অদৃশ্য পরিশ্রমী শ্রেণি; তারা নিরলসভাবে দিনরাত খেটে চলেছেন। তাদের শ্রম স্বীকৃত নয়, নিয়ন্ত্রিত নয় এবং সুরক্ষিতও নয়।
যাদের কথা বলা হচ্ছে তারা গৃহকর্মী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী, আবার কিশোরীও হয়ে উঠতে না পারা অনেক মেয়ে রয়েছে। তারা রান্না করেন, ঘরবাড়ি পরিষ্কার করেন, শিশুদের দেখাশোনা করেন— মানুষের বাসার এমন অসংখ্য কাজের দায়িত্ব পালন করছেন তারা। তবে সমাজে তাদের এই অবদান উন্নয়ন কিংবা শ্রমিক অধিকারবিষয়ক বৃহত্তর আলোচনায় বরাবরই উপেক্ষিত থেকে যায়।
এই তো গত ১৬ জুন সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক গৃহকর্মী দিবস পালিত হলো। অথচ দেশের এই শ্রমজীবী শ্রেণির অবস্থানে কোনো অর্থবহ স্বীকৃতি বা পরিবর্তন আসার কোনো লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি।
বাড়ছে সংখ্যা ও ঝুঁকি
সরকারি জরিপ বলছে, এই খাতে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯৯-২০০০ সালে যেখানে নারী শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ছিল ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ, তা ২০১৬-১৭ সালে বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৩ শতাংশ।
এ ছাড়া, ২০১১ সালে ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স রাইটস নেটওয়ার্কের (ডিআরডব্লিউএন) হিসাবে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রায় ২০ লাখ গৃহকর্মী নিয়োজিত, যাদের অনেকেই দরিদ্র পরিবার থেকে আসা অল্পবয়সী মেয়ে।
বিশ্বব্যাপী এই সংখ্যা আরও বিস্ময়কর। প্রকাশিত তথ্যমতে, সারা বিশ্বে প্রায় ১০৫ লাখ মানুষ বেতনভুক্ত গৃহকর্মী—যা কানাডার মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের সমান।
বাংলাদেশে এই শ্রমিকরা মাসে গড়ে মাত্র ১৫ ডলার (প্রায় ১৭৫৫ টাকা) আয় করেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিআইএলএস)।
২০২২ সালে অক্সফামের এক সমীক্ষা জানায়, ৯৩ শতাংশ নারী গৃহকর্মী তাদের কর্মস্থলে হয়রানির শিকার হন। এর মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানসিক নির্যাতনের শিকার, ৬১ শতাংশ মৌখিক নির্যাতন এবং ২১ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার।
নেই চুক্তি, নেই সুরক্ষা
শহুরে পরিবারগুলোতে এই গৃহকর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তাদের অধিকাংশই কোনো আনুষ্ঠানিক চাকরির কাঠামোর আওতায় নেই। বিআইএলএসের তথ্য অনুযায়ী, ৯০ শতাংশের বেশি গৃহকর্মীর কোনো লিখিত চুক্তি নেই।
১২ বছর বয়স থেকেই ধানমণ্ডির এক বাড়িতে কাজ করা ১৬ বছর বয়সী রিনা বলেন, ‘কাজের কোনো নির্দিষ্ট সময় নাই। ভোরে উঠি, কাজ শেষ হয় গভীর রাইতে। অসুস্থ হইলে বা সামান্য ভুল করলে গালাগালি বা মার খাই। অভিযোগ করারও কেউ নাই।’
বন্ধ দরজার আড়ালে নির্যাতন
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা আবারও গৃহকর্মীদের প্রতি সহিংসতা ও অপমানের বিষয়টি সামনে এনেছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো গৃহকর্মীদের ওপর নিয়মিত শারীরিক নিপীড়ন, মৌখিক অবমাননা, এমনকি যৌন সহিংসতার ঘটনাও নথিভুক্ত করছে। ভয়ে, কিংবা জীবিকা হারানোর আশঙ্কায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই ঘটনাগুলো প্রকাশ পায় না।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (এএসকে) মামলার দায়িত্বে থাকা ফারজানা আখতার বলেন, ‘আমরা নিয়মিত অভিযোগ পাই, বিশেষ করে অল্পবয়সী মেয়েদের কাছ থেকে যাদের কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শহরে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই অতি দরিদ্র পরিবার থেকে আসে। কেউ কেউ পড়াশোনার আবার কেউ ভালো জীবনের প্রতিশ্রুতি পেয়ে আসে। তবে আসার পর আটকে পড়ে শোষণ-নির্যাতনের ফাঁদে।’
গৃহকর্মী নিয়োগে অস্বচ্ছতা
এই অল্পবয়সী শ্রমিকদের অনেককেই শহরে আনা হয় দালালদের মাধ্যমে, অর্থাৎ অপ্রাতিষ্ঠানিক ‘নিয়োগ এজেন্ট’ বা দূরসম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে। এরা কোনো আইনি কাঠামোর আওতায় পড়েন না, বরং কমিশন খেয়ে মেয়েদের অনিরাপদ ও অপরিচিত ঘরে পাঠিয়ে দেন।
এমনই একজন সাবেক দালাল নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বীকার করেন, ‘এটা এক ধরনের ছায়া বাজার। কোনো রেজিস্ট্রেশন নেই, সরকারের নজরদারি নেই। চাহিদা আর যোগানের খেলা। কিছু মেয়েকে তো জিনিসের মতো হাতবদল করা হয়।’
সম্প্রতি ঢাকার কিছু কিছু এলাকায় কয়েকটি প্রশিক্ষিত গৃহকর্মী সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে, যারা তুলনামূলক ভালো পারিশ্রমিক দেয়। তবে এসব উদ্যোগ এখনও খুবই সীমিত।
কাগজে নীতি, বাস্তবে শূন্যতা
২০১৫ সালে সরকার ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি’ চালু করে। ওই নীতিতে ন্যূনতম মজুরি, নির্ধারিত কর্মঘণ্টা, বিশ্রাম ও ছুটির ব্যবস্থা, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও আইনি অভিযোগের সুযোগের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই নীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি হিসেবে বিবেচিত হলেও, তার বাস্তবায়ন কার্যত শূন্য। গৃহকর্মীদের শ্রম আইন ২০০৬-এর আওতাভুক্ত না করায় এই নীতি মেনে চলার জন্য নিয়োগকর্তার ওপর কোনো আইনি বাধ্যবাধকতা নেই।
আওয়াজ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. নাজমা আক্তার বলেন, ‘কেবল আলাদা একটি নীতিই যথেষ্ট নয়। আইনগত বাধ্যবাধকতা ও প্রয়োগ ছাড়া কিছুই বদলাবে না।’
এ কারণে অধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন ধরেই গৃহকর্মকে শ্রম আইনের আওতায় আনতে দাবি জানিয়ে আসছেন।
বিপদের মুখে একটি প্রজন্ম
আইনি ও অর্থনৈতিক লড়াইয়ের বাইরেও এই অনিয়ন্ত্রিত খাত আরও গভীর প্রভাব ফেলে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত শিশুদের ক্ষেত্রে বাস্তবতা আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
শিক্ষা ও সহায়তার সুযোগ না থাকায় হাজার হাজার শিশু অল্প বয়সেই শ্রমে নিযুক্ত হচ্ছে, যা দারিদ্র্যের চক্রকে আরও জটিল করে তোলে।
১৪ বছর বয়সী মুন্নি তৃতীয় শ্রেণি পড়ার পর স্কুল ছেড়েছে। সে বলে, ‘আমি শিক্ষক হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন আমি অন্যের সন্তান সামলাই, আর আমার নিজের বাচ্চা গ্রামে আমার মায়ের কাছে রয়েছে।’
সম্প্রতি ১৫ বছর বয়সী আরেক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয় তার কর্মস্থলের সামনে থেকে; এ ঘটনায় দুজনকে আটক করা হয়েছে।
তাছাড়া, বহু গৃহকর্মীর সন্তান বড় হয় তার মায়ের থেকে দূরে কোনো গ্রাম বা বস্তিতে। বিষয়টি আর্থিক কষ্টের পাশাপাশি গৃহকর্মীদের মানসিক চাপও বাড়ায়।
এমন প্রেক্ষাপটে দেশ যখন উন্নয়নের পথে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে, তখন প্রশ্ন থেকে যায়— কার উন্নয়ন?
যতদিন না প্রতিদিন লাখ লাখ পরিবারকে সচল রাখা গৃহকর্মীদের আইনি সুরক্ষা ও সামাজিক মর্যাদার আওতায় আনা হবে, ততদিন এই উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি থেকে যাবে অসম্পূর্ণ ও কষ্টদায়ক।
মন্তব্য