পাঁচ বছর পর রোববার রাজশাহী সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানকার ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হবে আওয়ামী লীগের জনসভা। এ জনসভাকে সামনে রেখে নতুন সাজে সেজেছে রাজশাহী নগরী, থাকছে বিশেষ ট্রেনও। আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসমাগম ঘটবে।
প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে এক মাস ধরে রাজশাহীতে চলছে নানা ধরনের প্রস্তুতি। তাকে স্বাগত জানাতে নগর ও জেলাজুড়ে ৪৪টি তোরণ তৈরি করা হয়েছে। জনসভাস্থলের আশেপাশের সড়কগুলোকে সংস্কার করে চকচকে করা হয়েছে। নগরীর সড়কদ্বীপগুলো ঝেড়ে-মুছে রঙিন করা হয়েছে। নগরজুড়ে প্রজাপতি ও রাজকীয় সব সড়কবাতি লাগানো হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি সংবলিত ব্যানার ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে। এসব ব্যানারে সরকারের উন্নয়ন চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
জনসভা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোববার সকালে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী জেলার সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৮তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করবেন। বিকেলে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন তিনি। এখানে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহীর ৩২ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন , ‘সমাবেশকে কেন্দ্র করে শহরে ২২০টি মাইক ও ১২ টি এলইডি স্ক্রিন থাকবে। এছাড়াও সমাবেশের জন্য ৫ শতাধিক ভলান্টিয়ার রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি ও পায়খানার ব্যবস্থা থাকবে। ’
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে কেন্দ্র করে নগরজুড়ে তিনস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনসভাস্থল ছাড়াও নগরীর চারটি প্রবেশদ্বারসহ প্রতিটি কোণে ছয় সহস্রাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শুধু জনসভাস্থলের নিরাপত্তায় তিন সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য থাকছে।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রফিকুল আলম বলেন, ‘রাজশাহীজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি পয়েন্টেই নিরাপত্তা চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকেও গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।’
থাকছে বিশেষ ট্রেন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজশাহী জনসভা উপলক্ষে পশ্চিম অঞ্চলে রেলওয়েতে চালু করা হয়েছে সাত বিশেষ ট্রেন। রোববার ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত এই ট্রেনগুলো রাজশাহীতে আসবে। বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে সাতটি বিশেষ ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো হল-, নাটোর স্পেশাল, সিরাজগঞ্জ স্পেশাল, জয়পুরহাট স্পেশাল, সান্তাহার স্পেশাল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্পেশাল, রহনপুর স্পেশাল ও রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী স্পেশাল ট্রেন।’
অসীম কুমার তালুকদার বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শেখ হেলালের আবেদনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ট্রেনগুলো বেলা ১২টা থেকে একটার মধ্যেই রাজশাহীতে পৌঁছাবে।’
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীর নেতারা রাজশাহীতে
প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে এরইমধ্যে রাজশাহীতে পৌঁছে গেছেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীর নেতারা। শনিবার বিকেলে রাজশাহী পৌঁছেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ সংগঠনের শীর্ষ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে রাজশাহীতে অবস্থান করছেন।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক পিন্টু বলেন, প্রায় ১৫-২০ জন কেন্দ্রীয় নেতা এরই মধ্যে রাজশাহীতে পৌঁছেছেন। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যেই আমরা জনসভা শুরু করব। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের পর সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে উঠবেন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে পরিদর্শন করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওবায়দুল কাদের বলেন, গত ১৪ বছরে পুরো দেশের মতো রাজশাহীও বদলে গেছে। দেশের বৈপ্লবিক উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। উন্নয়ন-অর্জনের বদলে যাওয়া দৃশ্যপটের ওপর গুরুত্ব দিয়েই প্রধানমন্ত্রী জনসভায় বক্তব্য রাখবেন।
স্মরণকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সমাবেশ হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের আর এক বছর বাকি। তাই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে আওয়ামী লীগ। নৌকায় আবারও মানুষের সমর্থন ও ভোট চাইবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
তিনি বলেন, বড়-বড় দেশগুলো পৃথিবীতে যুদ্ধ বাধিয়ে আমাদের মত ছোট-ছোট দেশগুলোকে সমস্যায় ফেলেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শক্ত হাতে দেশের হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, উন্নত দেশগুলোর চেয়েও বাংলাদেশের মানুষ সংকটের মধ্যেও ভালো আছেন। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শুক্রবার লিখেন, ‘এমন ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে কেউ যেন এ ধরনের অপরাধ করার সাহস না পায়।’
তিনি লিখেন, ‘মাগুরায় ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশু আছিয়া গত কয়েক দিন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে লড়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ১টায় মৃত্যুবরণ করে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। নির্মম পাশবিকতায় আছিয়ার মৃত্যুর ঘটনা দেশবাসীর মতো আমাকেও ব্যথিত করেছে। তার মৃত্যুর সংবাদে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা দেশ। এই মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা সারা দেশের মানুষকে লজ্জিত করেছে।’
তিনি লিখেন, ‘আছিয়ার ওপর ঘটে যাওয়া নির্মম পাশবিক ঘটনার প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে শহর থেকে গ্রামে। রাজপথ উত্তপ্ত হয়েছে মিছিল আর স্লোগানে। একই সঙ্গে তার ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা ছিল প্রতিটি মানুষের। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর সিএমএইচ থেকে আসা খবরে শোক আর ক্ষোভে এলাকার মানুষ ধিক্কার জানাচ্ছে মানুষরূপী কুলাঙ্গারদের।’
তারেক রহমান আরও লিখেন, ‘আমি শুরুতে এ ঘটনা জানার পর তার চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার ঘোষণা দিয়েছিলাম। অতীতের ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে ধর্ষণকারীদের বিচারের আওতায় না এনে বিভিন্নভাবে পুরস্কৃত করার ফলে দেশে ধারাবাহিকভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।
‘বিচারের দীর্ঘসূত্রিতার ফলে আইনের ফাঁক দিয়ে ধর্ষণকারীরা বারবার রক্ষা পেয়ে যাচ্ছে, যার ফলে ধর্ষণের মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে।’
আরও পড়ুন:মাগুরায় আট বছরের শিশুসহ দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারীদের ওপর সহিংসতা, নিপীড়ন, অনলাইনে হেনস্তার প্রতিবাদ এবং ধর্ষণকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠনের (জিসাস) কেন্দ্রীয় কমিটি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বুধবার দুপুর দুইটার দিকে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন জিসাস সভাপতি ও চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রোকেয়া সুলতানা কেয়া চৌধুরী। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
মানববন্ধনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির। এ ছাড়া বিশেষ বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন জিসাস সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন হেলাল।
কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণপূর্ত কর্মচারী ইউনিয়ন সভাপতি ও জিসাস সহসভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, জিসাস সহসভাপতি এ কে এম এনামুল হক খান, রমজান আলী তিকো, ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন (মিষ্টি), জিসাস যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন রাজু, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রন্জিতা কনা, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী ও কণ্ঠশিল্পী রিয়া খান, চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মালা।
এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জিসাস সহসভাপতি কাজী সুজাউদ্দৌলা সুজা, মহি উদ্দিন হাওলাদার, জিসাস যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তুষার মাহমুদ, জিসাস প্রচার সম্পাদক দিদারুল ইসলাম মেঘ, জিসাস সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্বাস উদ্দিন স্বপন, জিসাসের সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক শাহ আলম, জিসাস সহ-প্রচার সম্পাদক আহমেদ মেহরান, জিসাস সদস্য খোকা মাহমুদ।
কর্মসূচি সঞ্চালনায় ছিলেন জনাব জিসাসের রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জুলহাস মল্লিক।
আরও পড়ুন:বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ে ও নারীর ক্ষমতায়ন ও সমর্থন পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণী ও নারীরা তাদের চারপাশের মানুষদের কাছ থেকে ক্ষমতায়ন ও সমর্থন পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। প্রত্যেক নারীকেও পুরুষের সমান মর্যাদা, নিরাপত্তা ও সুযোগ পাওয়া উচিত।’
তিনি উল্লেখ করেন, তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনজন অসাধারণ ব্যক্তি হলেন তার মা, স্ত্রী ও কন্যা।
তারেক রহমান ফেসবুক পেজে স্ত্রী জোবাইদা রহমান, মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান, মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবিও শেয়ার করেন।
পোস্টে তিনি লিখেন, ‘আমি সবসময় তাদের জন্য প্রতিটি সুযোগ, সাফল্য এবং সুখ চেয়েছি। আমি নিশ্চিত যে আপনারা যারা এটি পড়ছেন তাদের অনেকেরই একই অনুভূতির সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের মতো আমাদেরও উচিত একটি ন্যায়পরায়ণ, সহিষ্ণু ও শ্রদ্ধাশীল সমাজ গঠনে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া, যেখানে ধর্ম, লিঙ্গ, বর্ণ, ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সব মেয়ের ছেলেদের সমান সুযোগ থাকা উচিত এবং তাদের বাড়ির বাইরে পা রাখা উচিত। হয়রানি ছাড়াই ইন্টারনেট ব্যবহার করা উচিত এবং নির্ভয়ে তাদের কণ্ঠস্বর প্রকাশের সুযোগ নেওয়া উচিত।’
তারেক রহমান আরও বলেন, “বিএনপির নীতি প্রণয়নে একটি নিরাপদ ও সুরক্ষিত সমাজে নারীর অব্যবহৃত সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দেয়, যেখানে দলের ‘ফ্যামিলি কার্ড’ কর্মসূচি, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ঋণ, তরুণীদের শিক্ষার জন্য অ্যাকাডেমিক ও বৃত্তিমূলক প্রকল্পের মতো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
উপসংহারে তিনি বলেন, ‘আসুন আমরা একসঙ্গে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ এবং ব্যক্তিগত আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন:নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সামনে রেখে শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি আধুনিক রাষ্ট্রের অন্যতম নির্ধারক হচ্ছে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। আসুন, আমরা নারীদের প্রতি উগ্রতা, বিদ্বেষ এবং অশ্রদ্ধামূলক সকল আচরণকে না বলি এবং এই লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা সুসংহত করার জন্য আহ্বান জানাই।’
গত ১৫ বছরে হাজার হাজার পুরুষ, নারী গুম, খুন, অত্যাচারিত হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিগত বছরগুলোতে অমানবিক সংগ্রাম করেছে ওই পরিবারগুলোর নারীরা। জুলাইতেও আন্দোলনের শুরু এই বাংলাদেশের নারীদের হাতেই। শহীদ হয়েছে আমাদের সন্তানরা, ছোট শিশুকন্যাও। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্ট্রান, বৌদ্ধ, সকলেই এই আন্দোলনের শরিক।’
মির্জা ফখরুল আশা করেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই যেখানে নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়াই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ লক্ষ্য থাকবে। লিঙ্গ, বয়স, পেশা নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক যেন রাস্তাঘাটে চলাফেরা করতে নিরাপদ বোধ করে, এমন বাংলাদেশই আমাদের কাম্য। বাড়ি থেকে রাস্তায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে, অফিসে, সর্বত্র তাদের আত্মসম্মানকে মূল্যায়ন করা উচিত।’
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘আজকের ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে উগ্রবাদের কোনো জায়গা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (শনিবার) আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারীরা আমাদের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির অংশীদার। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের প্রাক্কালে আসুন আমাদের অগ্রগতি দ্রুততর করতে পদক্ষেপ নিই।’
আরও পড়ুন:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগের চেয়ে এখন বেশ ভালো আছেন।
তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) শারীরিকভাবে আগের চেয়ে বেশ ভালো আছেন। তাকে ডাক্তাররা বাসায় গিয়ে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি দেশবাসীকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’
লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের একটি হলে জিয়া পরিষদ, ইউকে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে চাইলে বইয়ে-কিতাবে (সংবিধানে) যা লিখা আছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। দেশ চালাতে হবে, আইনানুগ সুশাসনের মাধ্যমে।
‘কোনো অবস্থাতেই কারও নিজস্ব ইচ্ছার প্রতিফলনই বাংলাদেশে ঘটবে না। দেশ চলবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন আর সংবিধানের আলোকে।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এ নেতা বলেন, ‘তৎকালীন সত্তরের গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্যরা যারা ছিলেন, তারাই গণপরিষদ করেছিলেন, সংসদ করেছিলেন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যখন এরশাদের পতন হলো, তখন তো ছাত্রনেতারা বলেননি আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি। সুতরাং আমরাই যা বলব, তাই হবে।
‘তখন যেই সংবিধান ছিল, সেই সংবিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল।’
ডা. জাহিদ বলেন, ‘বায়ান্নকে যেমন অস্বীকার করা যাবে না, বাষট্টিকে অস্বীকার করতে পারবেন না, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানকে ভুলতে পারবেন না। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমূল্যায়ন করতে পারবেন না, পঁচাত্তরের ৭ নভেম্বরকে অস্বীকার করতে পারবেন না, নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে অবমাননা করতে পারবেন না। ঠিক তেমনিভাবে ২৪-এর জুলাই আন্দোলনকেও কেউ অসম্মান করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন:সারা বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন করা যায় কি না, সে বিষয়ে দেশের আলেম-ওলামাদের ভেবে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
রাজধানীর ইস্কাটনে অবস্থিত লেডিস ক্লাবে রবিবার তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আলেম-ওলামা ও মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এ আহ্বান জানান।
লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘রমজান আমাদের শেখায় সংযমী হতে; কীভাবে ধৈর্যশীল হতে হবে। কীভাবে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। একই সঙ্গে আল্লাহর যা যা সৃষ্টি আছে, সবকিছুর পাশে আমাদের দাঁড়ানোর শিক্ষা দেয়। আল্লাহর সৃষ্টিকে যত্ন নেওয়ার শিক্ষা দেয় রমজান।’
তিনি বলেন, ‘একজন মুসলমান হিসেবে একটি প্রশ্নই আমার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। খ্রিস্টান সম্প্রদায় সারা বিশ্বে তাদের বড়দিন একই দিনে একসঙ্গে পালন করে। এখানে উপস্থিত ওলামা-মাশায়েখগণকে অনুরোধ করব, সারা দেশে আরও অনেক জ্ঞানী ওলামা মাশায়েখ রয়েছেন, সবাই মিলে চিন্তা করে দেখতে পারি কি না যে, বাংলাদেশের মানুষ সারা বিশ্বের মানুষের সঙ্গে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন করতে পারি কি না।
‘বিজ্ঞানের যুগে এটি করা সম্ভব কি না, কোনো উপায় বের করা যায় কি না। এই বিষয়টি আপনাদের চিন্তা করার জন্য অনুরোধ করব।’
ওই সময় তিনি দেশের শান্তি কামনা এবং দেশবাসীর জন্য দোয়া চান।
তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে দেশের ভেতরে ও বাইরে থেকে কিছু লোক ওলামা-মাশায়েখদের সঙ্গে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এই বিভেদ দিয়ে শুধু বিএনপিকে ধ্বংস নয়, একটি ফাটল সৃষ্টি করে (তারা) দেশকে ধ্বংস করবে, যার সুযোগ নেবে বিদেশি অপশক্তি।’
আরও পড়ুন:
তরুণদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ঘোষণা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি তথা এনসিপি।
জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন এ রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ হয়।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে শুক্রবার বিশাল এক জনসভার মধ্য দিয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হয়।
জুলাই শহীদ মো. ইসমাইল হোসেন রাব্বির বোন মিম আক্তার জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে তিনি দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব আখতার হোসেনের নাম ঘোষণা করেন।
পরে আংশিক কমিটির অন্য সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন আখতার হোসেন।
নতুন এ কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, আরিফুল ইসলাম আদীব, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও নাহিলা সারওয়ার নিবা, মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল) ও সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল), মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী এবং সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক হিসেবে আবদুল হান্নান মাসউদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জড়ো হন বিপুলসংখ্যক ছাত্র-জনতা। নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘিরে পতাকা হাতে নিয়ে, মাথায় পতাকা বেঁধে মিছিল নিয়ে তাদের উচ্ছ্বাস করতে দেখা যায়।
বিকেল সাড়ে ৪টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তারেক রেজার কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের মূল পর্ব শুরু হয়। এরপর অন্যন্য ধর্মগ্রন্থগুলো পাঠ এবং জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। তারপর জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং জুলাই অভ্যত্থানের ওপর নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। পরে বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা।
অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা আকবর খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জেনারেল সেক্রেটারি মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন্দ ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের নির্বাহী সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবদুল মান্নান, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, খেলাফত মজলিসের নেতা আহমেদ আবদুল কাদের, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব সাখাওয়াত হোসেন রাজী, ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এ কে এম আজহারুল ইসলাম, এবি পার্টির নেতা দিদারুল আলম ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল।
অনুষ্ঠানে কূটনীতিকদের মধ্যে ঢাকায় ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস রেন্ডাল, পাকিস্তান হাই কমিশনের কাউন্সেলর কামরান ধাঙ্গালও আসেন।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মাধ্যমে এক অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দেড় দশক ধরে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটিয়েছে। কিন্তু আমাদের স্মরণ রাখতে হবে, হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা কেবল একটি সরকার পতন করে আরেকটি সরকার বসানোর জন্যই ঘটেনি।
‘জাতীয় নাগরিক পার্টি হবে একটি গণতান্ত্রিক, সমতাভিত্তিক ও জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল। রাজনীতিতে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোনো স্থান হবে না।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ বরং রাষ্ট্রের আষ্টেপৃষ্ঠে জেঁকে বসা ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আকাঙ্ক্ষা থেকে এই অভ্যুত্থানে সাড়া দিয়েছিল, যেন জনগণের অধিকারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র পুনর্গঠিত হয়। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিচ্ছি।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘সারা দেশের মানুষের কাছে আহ্বান থাকবে আজকের তরুণরা যে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে, আপনারা সবাই দোয়া করবেন যেন মহান রব্বুল আলামিন, মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের এ তরুণদের স্বপ্নকে বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করার তৌফিক দান করেন। এই তরুণরা যেন তাদের নেতৃত্বে যারা বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়েছে সেই খুনি, গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তাদের দোসরদের বিচার করতে সক্ষম হয়।
‘বাংলাদেশে ৫৪ বছর পরে আমরা যে সুযোগ পেয়েছি, এতে একটি নতুন সংবিধানের বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। এ তরুণরা স্বপ্ন দেখে আগামীর বাংলাদেশ এক নতুন সংবিধানের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।’
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পাটির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনে আমরা সকল শ্রেণির মানুষ খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করেছি। আমরা শুধু আপানাদের একটা কথা বলতে চাই, ৫ আগস্টে খুনি হাসিনা পালিয়ে যাবার পর দেশ গঠনের যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলাম, সেই স্বপ্ন পূরণে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি সম্মানবোধ থাকে আগামীর বাংলাদেশ হবে অপ্রতিরোধ্য।
“খুনি হাসিনা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো নিজ হাতে ধ্বংস করে দিয়েছে। সকল রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে। এ সকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে সেই মানুষদের বসাতে হবে যারা যোগ্য। কোন ‘মাই ম্যান’কে বসানো যাবে না। এই খুনি হাসিনার বিচারের ব্যাপারে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোনো অপরাধীর জন্য যেন কেউ সুপারিশ না করি।”
নতুন রাজনৈতিক দলের দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যতদিন না পর্যন্ত এ দেশ থেকে পরিবারতন্ত্র কবরস্থ হবে, আমরা ততদিন লড়ে যাব। এ দেশে কামারের ছেলে মন্ত্রী হবে, কুমারের ছেলে প্রধানমন্ত্রী হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে দেশের নেতৃত্ব গড়ে উঠবে।
‘আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, এখানে ভেদাভেদ থাকবে না, মতামত-দ্বিমত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘বিদেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকবে, কিন্তু প্রেসক্রিপশনের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই।’
নতুন রাজনৈতিক দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতন্ত্রের বাংলাদেশ। তরুণরা নেতৃত্ব দিয়ে চাঁদাবাজ ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ গড়বে। আগামীর বাংলাদেশে আর আগের মতো রাতে ভোট হবে না। সব দল-মত নির্বিশেষে সুখে শান্তিতে বসবাস করবে।
‘আজ যেভাবে রাজনৈতিক দলগুলো এখানে এসেছে, আগামী দিনে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে সব দল মিলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা হবে। এটা দেশবাসীর কাছে আমাদের প্রতিশ্রুতি।’
নতুন এ কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে নুসরাত তাবাসসুম, মনিরা শারমিন, মাহবুব আলম, সারওয়ার তুষার, অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন, তুজরুবা জাবিন, সুলতান মুহাম্মদ জাকারিয়া, ড. আতিক মুজাহিদ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, অর্পিতা শ্যামা দেব, তানজিল মাহমুদ, অনিক রায়, খালেদ সাইফুল্লাহ, জাবেদ রাসিম, এহতেশাম হক এবং হাসান আলীর নাম ঘোষণা করা হয়।
যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে আবদুল্লাহ আল আমিন, আরিফ সোহেল, রশিদুল ইসলাম রিফাত, মাহিন সরকার, মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, আকরাম হোসাইন, এস এম সাইফ মুস্তাফিজ, সালেহ উদ্দিন সিফাত (দপ্তরে সংযুক্ত), আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, ফরিদ উদ্দীন, মোহাম্মদ ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, লুৎফর রহমান, মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম তুহিন, মুশফিকুর সালেহিন, ড. জাহিদুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম মুসা, হুমায়রা নুর, মুশফিকুর রহমান জুহান, মোল্লা মোহাম্মদ ফারুক এহসান, সাগুপ্তা বুশরা বিসমা, আহনাফ সাঈদ খান, আবু সাঈদ মোহাম্মদ সুজাউদ্দিন, মীর আরশাদুল হক, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, তারেক রেজা, মশিউর রহমান, জয়নাল আবেদিন শিশির, মোহাম্মদ মুনতাসির রহমান, গাজী সালাউদ্দিন তানভীর, তামিম আহমেদ এবং তাহসিন রিয়াজের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
যুগ্ম মুখ্য সংগঠক হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের দায়িত্ব পালন করবেন মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, ডা. মাহমুদা মিতু, মোল্লা রহমতুল্লাহ, এম এম শাহরিয়ার ও জোবায়ের আরিফ।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য