গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি আদায়ে রাজধানীতে পদযাত্রার কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ পদযাত্রা হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে। শনিবার দুপুর ২টায় বাড্ডার হোসেন মার্কেটের কাছ থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত পদযাত্রা হবে।’
বিএনপি নেতারা জানান, শনিবার মহানগর উত্তর বিএনপি ঢাকার বাড্ডা এলাকা থেকে মালিবাগের আবুল হোটেল পর্যন্ত এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মাজার রোড হয়ে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বর পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। একইভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে। প্রতিটি পদযাত্রা দুপুর ২টায় শুরু হবে।
এ দিকে বিদ্যুৎ,গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানো, সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকাসহ সব বিভাগীয় সদরে সমাবেশ করবে বিএনপি। গত বুধবার নয়াপল্টনের সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে সোমবার বিকেলে বাজার তদারকি করা হবে।
দেশজুড়ে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ডিম, ব্রয়লার মুরগি, সবজি,আলু, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে মাননীয় বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে আজ ১৪ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ বিকাল ৫টায় ঢাকা মহানগরের কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটে বাজার তদারকি কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
‘উক্ত বাজার তদারকি কার্যক্রমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব মো. আলীম আক্তার খানসহ অধিদপ্তরের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থাকবেন।’
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে রোববার শেষ হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
সকালে দর্পণ-বিসর্জনের মাধ্যমে বিদায় জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। পরে বিকেল ৪টা থেকে শুরু হয় প্রতিমা বিসর্জন। বিদায়ের করুণ ছোঁয়ায় রাজধানীতে একে একে বুড়িগঙ্গা নদীতে বিসর্জন দেয়া হয় প্রতিমা। একই সময় রাজধানীর উপকণ্ঠে তুরাগ নদেও চলে বিসর্জন।
প্রতিমা বিসর্জনের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সড়কে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি নদীতে ছিল নৌপুলিশের টহল। ফায়ার সার্ভিসের টিমও দায়িত্ব পালন করে।
এদিকে দুপুরে পূজা উদযাপন পরিষদ এবং মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির যৌথ উদ্যোগে বের হয় বর্ণাঢ্য বিজয়া শোভাযাত্রা। বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জনে অংশ নিতে দুপুর গড়াতেই ভক্তরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজামণ্ডপ থেকে ট্রাকে করে প্রতিমা নিয়ে সমবেত হতে শুরু করেন পলাশীর মোড়ে।
পরে শত শত ট্রাক প্রতিমা নিয়ে সদরঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। ঢাকেশ্বরী থেকে শুরু করে বিজয়া শোভাযাত্রাটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, হাইকোর্ট, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, কোর্ট এলাকা হয়ে সদরঘাটে পৌঁছে। রাস্তায়, বিভিন্ন ভবনে পুলিশ ছিল সতর্কাবস্থায়। রাস্তার পাশে দর্শনার্থীর ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।
অধিকাংশ মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও ঢাকেশ্বরী মন্দিরের প্রতিমাটি রেখে দেয়া হয়। তবে এখানে পূজার কাজে ব্যবহৃত দেবীর ফুল, বেলপাতা ও ঘট বিসর্জন দেয়া হয়।
প্রথা অনুযায়ী প্রতিমা বিসর্জনের পর সেখান থেকে জল এনে (শান্তিজল) মঙ্গলঘটে নিয়ে তা আবার হৃদয়ে ধারণ করা হয়। আগামী বছর আবার এই শান্তিজল হৃদয় থেকে ঘটে, ঘট থেকে প্রতিমায় রেখে পূজা করা হবে।
রামকৃষ্ণ মিশনে সন্ধ্যা আরতির পর মিশনের পুকুরে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এরপর ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ ও মিষ্টিমুখ করেন।
সারা দেশে এ বছর ৩১ হাজার ৪৬১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা মহানগরে পূজার সংখ্যা ছিল ২৫২টি। এসব মণ্ডপে শারদীয় উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজা উদযাপন কমিটিও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। মণ্ডপে মণ্ডপে লাগানো হয় সিসিটিভি ক্যামেরা। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি করা হয় মণ্ডপ পাহারার জন্য।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাসমতে- মানুষের মনের আসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেয়াই মূলত বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এ প্রবৃত্তিগুলোকে বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এই আয়োজনের উদ্দেশ্য।
চণ্ডীপাঠ, বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী তিথিতে ‘আনন্দময়ীর’ আগমনে ৯ অক্টোবর দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের সূচনা হয়। পরবর্তী ৫ দিন রাজধানীসহ দেশব্যাপী পূজামণ্ডপগুলোতে পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে ভক্তরা দেবী দুর্গার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। দশমী তিথিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুর্গোৎসব।
দেবী দুর্গা এ বছর মর্ত্যে আগমন করেন দোলা বা পালকিতে চড়ে। দেবীর এই আগমনের ফলাফল হবে মড়ক, যা শুভ ইঙ্গিত নয়। এ ছাড়াও দেবী স্বর্গে ফিরে যাবেন ঘোটক বা ঘোড়ায় চড়ে।
শাস্ত্রমতে, দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল ছত্রভঙ্গ হয়। ঘোটকে গমন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খল অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। এটি যুদ্ধ-বিগ্রহ, আশান্তি, বিপ্লবের ইঙ্গিতবহ।
সনাতন ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী ফিরে গেলেন স্বর্গলোকের কৈলাসে স্বামীর ঘরে। পরের বছর শরতে আবার তিনি আসবেন এই ধরণীতে, যা তার বাবার গৃহ।
আরও পড়ুন:এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দেশে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১৪ জন।
এদিকে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৬০ জন ডেঙ্গু রোগী। এই সংখ্যাসহ চলতি বছরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৪২ হাজার ৪৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে রোববার পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে দুজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও একজন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার। বাকি একজন ময়মনসিংহ বিভাগের।
একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৬৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনে ৩২৮ ও বাকিরা ঢাকার বাইরে সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬৯৭ জন। আর জানুয়ারি থেকে রোববার ১৩ অক্টোবর রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ছাড়পত্র পেয়েছেন মোট ৩৮ হাজার ৬৪৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, হাসপাতালে নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১১১, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২০৭, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১২১ ও খুলনা বিভাগে ৭১ জন রয়েছেন।
আরও পড়ুন:বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
ডিএমপি জানায়, রোববার বিসর্জনের মাধ্যমে শেষ হতে যাচ্ছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা। এ অনুষ্ঠান উৎসবমুখর ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বিসর্জন শোভাযাত্রার সম্ভাব্য রুট হচ্ছে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হতে বের হয়ে পলাশী মোড়-জগন্নাথ হল-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট বটতলা-সরকারি কর্মচারী হাসপাতাল -পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স-নগর ভবন-গোলাপশাহ মাজার-বঙ্গবন্ধু স্কয়ার-গুলিস্তান-নবাবপুর লেভেল ক্রসিং -নবাবপুর রোড-মানসী হল ক্রসিং-রথখোলার মোড়-রায়সাহেব বাজার মোড়-শাঁখারীবাজার-জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়-সদরঘাট বাটা ক্রসিং-পাটুয়াটুলী মোড় ও সদরঘাট টার্মিনাল মোড় হয়ে ওয়াইজঘাট গিয়ে শেষ হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিজয়া শোভাযাত্রা ও প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে স্বাভাবিক নিরাপত্তার পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশও মোতায়েন থাকবে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, পলাশী মোড় ও বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় তিনটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। পলাশীর মোড়, রায় সাহেব বাজার ও ওয়াইজঘাটে স্থাপন করা হয়েছে তিনটি ওয়াচ টাওয়ার।
এ ছাড়া ডগ স্কোয়াড, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন টিম ও সোয়াট দল সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে।
ডিএমপির পক্ষ থেকে নির্ধারিত সময় ও রুট অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হাতে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বস্ত্র ও পাট এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে শনিবার রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ‘নির্বাচন কমিশনে কেমন সংস্কার চাই’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেমিনারে প্রধান আলোচক ছিলেন নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যাদেরকে নিয়োগ দেয়, তাদের ক্ষেত্রে ইসি যে রিপোর্ট দেয়, সেটিই যেন চূড়ান্ত হয়। এটি জবাবদিহি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে।
‘এ ক্ষেত্রে সরকার যেন হস্তক্ষেপ না করে। নির্বাচনের সময় মন্ত্রণালয়গুলোর ওপর খবরদারির ক্ষমতা ইসিকে দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সার্বিকভাবে রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে পড়েছিল। অনেক জায়গায় মাটির সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। কাজেই দায়দায়িত্ব এখন থেকেই শুরু। অনেক রক্ত ঝরেছে।
‘৫০০ থেকে ৭০০ মানুষের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। তারা বলেছে, কোনো অসুবিধা নেই। কাজেই আমরা যদি ঠিক করতে না পারি, তাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ডিসিরা নির্বাচন করেন, এ কথা ঠিক নয়। আইনে ৩০০ আসনে ৩০০ রিটার্নিং অফিসার দেয়া যাবে। আবার ডিসিদের দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।’
তিন ধাপে ইসি গঠন করা যেতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তৃতীয় ধাপে পার্লামেন্ট থেকে চূড়ান্ত প্রস্তাব যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে। প্রথম ধাপে সবার নামই প্রকাশ করা হবে।
সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘দলের প্রার্থী হতে হলে দলের প্রাথমিক সদস্য পদে অন্তত তিন বছর থাকতে হবে। তৃণমূলে এক/দুই বছর থেকে প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
‘এ ছাড়া নারী প্রার্থী ৫০ জন বা ১০০ জন, যাই করেন, সেটা সরাসরি নির্বাচনে করেন। সংরক্ষিত আসনে নারীদের কোনো অংশগ্রহণ থাকে না, তবে এটা করবেন কি না, সেটা আপনারা রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নেবেন।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক এবং নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘নির্বাচন একটা দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এটা এক দিনের বিষয় নয়। এখানে সহিংসতামুক্তভাবে প্রচারণা থেকে শুরু করে ভোট গণনা হয়। নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু এবং গ্রহণযোগ্য হতে হবে। পুরো প্রক্রিয়া সঠিক হতে হবে।
‘যে নির্বাচন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করে না, সেটা সংবিধানের লঙ্ঘন। সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহায়তা না করলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দল সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবে না। গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজসহ আরও অংশীজনদের সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে।’
বদিউল আরও বলেন, ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক ঐকমত্য এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন প্রয়োজন। নিরপেক্ষ, সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করবে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
‘নির্বাচন কমিশন নিয়োগের এখতিয়ার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের নয়। এ সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার।’
আরও পড়ুন:জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার উত্থান এবং জনজীবনে সংকটের অভিযোগ করে তার দায়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে শনিবার দুপুরে সমাবেশে সংগঠনটি এ দাবি জানায়।
বিক্ষোভ সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে দলটির চেয়ারম্যান ইমাম হায়াত বলেন, ‘দেশে ধর্মের নামে অধর্ম, উগ্রবাদ, জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। সাম্প্রদায়িক, সামাজিক, রাজনৈতিক ক্ষেত্রে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছে।
‘একই সঙ্গে অসহনীয়ভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও জনজীবনে ব্যাপক সংকটের দায়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। ওই সরকারের স্বৈরতন্ত্র থেকে মুক্তির জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছি। বিগত জুন, জুলাই এবং আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রকৃত পক্ষে সব মানুষের আন্দোলন ছিল, তবে আন্দোলনে বিগত স্বৈরাচারের পতন হলেও জনগণের আন্দোলনের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা ছিনতাই হয়ে গিয়েছে।’
ওই সময় আরও বক্তব্য দেন দলের মহাসচিব শেখ রায়হান, দলটির নেতা আবু আরেফ সরতাজ, এমদাদুল হক সাইফ, সুফি আহমেদ শাহ, হাফেজ ইলিয়াসসহ অনেকে।
আরও পড়ুন:শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও পূজা পরিদর্শন করতে শনিবার বিকেলে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে যাবেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বেলা তিনটায় প্রধান উপদেষ্টা ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে দুর্গাপূজা পরিদর্শন করতে যাবেন। তিনি সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ প্রধান উপদেষ্টার মন্দির পরিদর্শনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টার আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এসএসএফসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে কাজ করছে। সাধারণ মানুষের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
মন্তব্য