বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় নির্বাচন করতে পারবেন না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তার ভাই ও বোন মুচলেকা দিয়ে বলেছেন, তিনি রাজনীতি করবেন না। এখন তিনি ১০ ডিসেম্বর এসে ক্ষমতা দখল করবেন, শেখ হাসিনার পতন ঘটাবেন! এসব হলো জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও তাদের লোকদের কিছু খোরাক দেয়ার জন্য।’
জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বৃহস্পতিবার শেখ সেলিম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ভাই ও বোন প্রধানমন্ত্রীর কাছে গিয়ে অনুরোধ করেছিল তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় আনার জন্য। আসামিকে সরাসরি বাসায় আনা যায় না। যদি বাসায় বসে আবার রাজনীতি করে। সেই জন্য তাদের বললো (প্রধানমন্ত্রী) বাসায় এসে যদি আবার রাজনীতি করে তাহলে সেটাতো দেয়া যাবে না। তখন তারা মুচলেকা দিয়ে বলেছে খালেদা জিয়া রাজনীতি করবে না।’
২০০৭ সালে রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে তারেক রহমানের বিদেশে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেকের ৩০ বছরের সাজা হয়েছে। মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের সাজা হয়েছে। দেশে এলে তাকে কারাগারে যেতে হবে, নির্বাচন তো দূরের কথা।’
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপের চেষ্টার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলেছিল।আমরা কি সেখানে গিয়ে বলেছি, আসো আমরা সালিশি করি? কিছুদিন আগে মালয়েশিয়ার নির্বাচন নিয়ে একই ধরনের অভিযোগ উঠেছিল। ওখানে কি আমরা হস্তক্ষেপ করেছি? আমাদের দেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার নেই।’
বাংলাদেশের নির্বাচনে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি হলে সেটা দেখার জন্য দেশের জনগণই যথেষ্ট বলে জানান শেখ সেলিম। তিনি বলেন, ‘যে দেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুর ডাকে রক্ত দিতে পারে। সেই দেশের জনগণ বাইরের মাতব্বরি মেনে নেবে না।’
সিলেটের ছয়টি আসনের ৪৭ প্রাথীর মধ্যে ১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। আর স্থগিত করা হয়েছে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এ ঘোষণা দেন।
এ ১৬ জন ছাড়া বাকিদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ড. এ কে আবদুল মোমেন, জাকের পার্টির মো. আবদুল হান্নান, ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইউসুফ আহমদের।
আসনটিতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আবদুল বাছিতের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
সিলেট-২ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুল মান্নান খান, জাকের পার্টির মো. ছায়েদ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলতাফুর রহমান সোহেল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসেনের।
এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহিয়া চৌধুরীর আয়কর রিটার্নের কাগজ জমা না দেয়ায় সকালে তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করায় বিকেলে জেলা রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।
আসনটিতে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, ইকবাল হোসেন ও মোশাহিদ আলীর।
মোকাব্বির খানের মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, প্রার্থী মোকাব্বির খান গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়নপত্রে নিজেই সই করেন, কিন্তু তিনি যে দলের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন, তার কোনো প্রমাণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি, যে কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী মেয়র পদে থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বিধান না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ, ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কফিল আহমদ চৌধুরীর। মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, মো. ফখরুল ইসলাম।
আসনটিতে মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে ইসলামী ঐক্যজোটের মো. মইনুল ইসলামের।
সিলেট-৪ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. নাজিম উদ্দিন কামরান, জাকের পার্টির মো. আলী আকবরের। মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেনের।
সিলেট-৫ আসনে সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মো. খায়রুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন শিকদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবীর, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলম ও তৃণমূল বিএনপির কয়ছর আহমদ কাওসারের।
সিলেট-৬ আসনের সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষাণা করা হয়েছে। এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির শমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আতাউর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সাদিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন:নোয়াখালী
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ঋণ খেলাপি হওয়ায় মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
নোয়াখালী-৩ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। এরমধ্যে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরনসহ চারজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। অন্যরা হলেন জাসদের জয়নাল আবদীন, স্বতন্ত্র আবুল কাশেম ও মনিরুল ইসলাম।
এ আসনে বৈধ প্রার্থী জাকের পার্টির মো. বাহার উদ্দিন, স্বতন্ত্র মিনহাজ আহমেদ, স্বতন্ত্র ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া।
এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে তিনজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। তারা হলেন স্বতন্ত্র আক্তার হোসেন ফয়সাল, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ ও সাম্যবাদী দলের মহিউদ্দিন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্ট অনুযায়ী মামুনুর রশিদ কিরন একজন ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তার মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মামুনুর রশিদ কিরন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হালনাগাদ করা আছে। সব কাগজপত্র দেয়ার পরও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বাতিল করেছেন। আমি নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করব।
কক্সবাজার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদসহ পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে যাচাই-বাচাইয়ের প্রথম পর্ব শেষে কক্সবাজারের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লালদীঘি শাখা থেকে ফিস প্রিজারভারস নামের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সালাহউদ্দিন আহমদসহ অন্য পরিচালকরা প্রায় অর্ধ শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়।
এরপর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হলেও ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমদ এখনো সেই ঋণের একজন জামিনদার।মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমদ একজন ঋণখেলাপি ছিলেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে অজুহাতে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেটি আদালতের মাধ্যমে স্টে করা ছিল। কেন মনোনয়ন বাতিল করা হলো আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব।
এদিকে কক্সবাজার-১ আসনে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাইয়ে শেষে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, কমেডিয়ান কমর উদ্দিন আরমান ও শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াছের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কমেডিয়ান কমর উদ্দিন মুকুলসহ বাকি চারজনের মনোনয়ন কেন বাতিল করা হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, দ্বিতীয় পর্বে কক্সবাজার ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয় যাচাই-বাচাই করা হবে। যাদের বিবেচনায় রাখা হয়েছে তাও জানানো হতে পারে।
এ ছাড়া কক্সবাজার- ২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ বাদশা ও কক্সবাজার-২ আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের মনোনয়ন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীতে দলটির সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া কাউকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে না।নির্বাচন জমে উঠেছে। কিছু বিচ্ছিন্ন রাজনৈতিক দল ছাড়া সবাই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এমনকি বিএনপির অনেক নেতাও দলটির ভুল দর্শন পরিত্যাগ করে নির্বাচনে এসেছেন। নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কা এবং নীল নকশা বাস্তবায়ন হবে না বলেই দু-একটি দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি। রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি নির্বাচনে আসতে ভয় পায়।’
ওসি এবং ইউএনও রদবদল নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার প্রশাসনিক রদবদল করছে না, কর্মকর্তাদের বদলি করছে নির্বাচন কমিশন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের আপত্তি নাই।’
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘ভাড়া করা টোকাই দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা করছে বিএনপি। বিএনপি নেতা-কর্মী পাচ্ছে না। তাই ভাড়া করা টোকাই দিয়ে বোমা হামলা, পেট্রোল বোমা মারাসহ এসব অপকর্ম করছে। অনেকে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বেরিয়ে সুস্থ রাজনীতিতে ফিরে এসেছেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ।’
আগামীতে বিএনপির আরও অনেকে স্বাভাবিক রাজনীতির ধারায় আসবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের সাহস থাকলে তারেক রহমানকে রাজপথে আসার আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি জনসমর্থনের অভাবে তাদের আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেই কারণে তারা সন্ত্রাস, অগ্নিসন্ত্রাস, হিংসা, চোরাগুপ্তা হামলা, নাশকতা করছে। স্বাভাবিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে তারা রাজনীতিটাকে সন্ত্রাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন গাড়ি পোড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতির সমর্থন না দিয়ে তারা জনগণকে শত্রু ভাবে। বেলাল হোসেনের মতো একজন নিরীহ বাস হেলপারকে ৮০ শতাংশ পুড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের নির্বাচন এলেই কিছু মানুষ বা গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে। জনসমর্থহীন এসব গোষ্ঠী নির্বাচনে হেরে যাবে। সবসময় তারা পেছনের দরজা খোলা রাখে। পেছনের দরজা দিয়ে তারা ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করে।’
এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, সুজিত রায় নন্দী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাপা, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)-এর প্রার্থী সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
তিনি বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত খেলাপি ঋণের কারণে ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘কার্ডের বিষয়টি আমার নলেজে ছিল না। বিষয়টি আমি দ্রুত সমাধান করে আপিল করবে। আপিলে আমার মনোনয়নপত্র ফিরে পাব বলে আশা প্রকাশ করছি।’
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিজেই উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন ডলি সায়ন্তনী।
সেদিন তিনি বলেন, ‘আমার জন্ম পাবনা শহরের সোনাপট্টি এলাকায়। দাদার বাড়ি সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ভায়না গ্রামে। সেখানে আমার চাচারা থাকেন। এজন্য আমি সেখানে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি পাবনা-২ আসনের মানুষ আমার পাশে থাকবে।’
আরও পড়ুন:বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার যশোরের যুবদল নেতাকে হাসপাতালে চিকিৎসার সময় ডান্ডাবেড়ি পরানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়েছে।
যুবদল নেতা আমিনুর রহমান মধুর স্ত্রী হাইকোর্টে এ রিট করেন।
রিট করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
তিনি বলেন, ‘রিটটি মাননীয় বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে।’
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর যুবদল নেতাকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। ওই দিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তিনি আদালতের কাছে সুয়োমোটো (স্বতঃপ্রণোদিত) আদেশ প্রার্থনা করেন।
তখন হাইকোর্ট বলেছিলেন, ‘জঙ্গি সম্পৃক্ততাসহ হিনিয়াস ক্রাইমের (জঘন্য অপরাধের) ক্ষেত্রে সাধারণত অপরাধীকে ডান্ডাবেড়ি পরানো হয়। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের একাধিক সিদ্ধান্তও রয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ডান্ডাবেড়ি পরানো যাবে, সে বিষয়ে গাইডলাইন আছে।’
তখন আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেবেন না বলে রিট করার পরামর্শ দেন। তার প্রেক্ষিতেই মধুর স্ত্রী এ রিট দায়ের করেন।
গত ২ নভেম্বর যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আমদাবাদ গ্রাম থেকে পুলিশ মধুকে আটক করে। এরপর ১২ নভেম্বর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকা অবস্থায় আমিনুর রহমান মধু হৃদরোগে আক্রান্ত হন।
কারাগার থেকে তার দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি ও হাতকড়া লাগিয়ে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ওই রাতেই তাকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
আমিনুর রহমান মধুর দুই পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে ও ডান হাতে হাতকড়া লাগানো অস্থায় হাসপাতালের মেঝেতে রেখে তার চিকিৎসা দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রার্থী মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
রোববার সকালে মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সভাকক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের প্রথম পর্বে ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহি বি চৌধুরী (মাহি বদরুদ্দোজা চৌধুরী) বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব।
নানা অনিয়মের কারণে এই আসনের ১১ জন প্রার্থীর মধ্যে তিন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুজাফর রিপন।
বাকি দুজনের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার কবিরের ভোটার তালিকা গরমিল থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। আর বিএনএম প্রার্থী ফরিদ হোসেনের মনোনয়নপত্রে সমর্থনকারী স্থানীয় না হওয়ার কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
এ ছাড়া অন্য ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে।
২৮ অক্টোবরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদন করা হয় বলে রোববার জানিয়েছেন বিএনপির আইনজীবী কামরুল ইসলাম সজল।
তিনি বলেন, জামিন আবেদন বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি সাহেদ নুর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করি সেখানেই শুনানি হবে।
এর আগে গত ২২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত) ফয়সাল আতিক বিন কাদেরের আদালতে ফখরুলের এই মামলা জামিন আবেদনের শুনানি হয়। তবে আদালতে তখন তার জামিন হয়নি।
সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করছিল বিএনপি। ওই সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে দৈনিক বাংলা মোড়, কাকরাইল ও পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান দলটির নেতা-কর্মীরা। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনেও হামলা হয়।
পরদিন গুলশানের বাসা থেকে আটক করা হয় বিএনপি মহাসচিবকে। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্য নেয়া হয় গোয়েন্দা কার্যালয়ে। পরে বিএনপি মহাসচিবকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।
মন্তব্য