‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কসহ রাজধানীর পার্কগুলো বাণিজ্যিক মাফিয়াদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। কিছুসংখ্যক মুনফাখোর ইজারার নামে কিছু টাকার বিনিময়ে পার্কগুলোকে বাণিজ্যিক কার্যক্রমে ব্যবহার করছে। আড়ালে আরও অবৈধ টাকা নিয়ে এগুলোকে আস্তে আস্তে গ্রাস করছে তারা। এ অবস্থায় নগরবাসীর শ্বাস নেয়ার জায়গাটুকুও থাকছে না।’
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ শনিবার এক সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
পুরান ঢাকার সদরঘাটে বাহাদুর শাহ পার্ক মুক্তমঞ্চে এই সমাবেশের আয়োজন করে ‘ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ’।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘বাহাদুর শাহ পার্ক ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লবের একটি স্মৃতিবিজড়িত স্থান; যাকে বাংলার প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রাম বলা হয়। অনেক স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীকে এখানে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। এমন ঐতিহাসিক স্থানে এভাবে বাণিজ্যিক ভবন ও রেস্তোরাঁ নির্মাণ করে অপমান করা হচ্ছে। রক্ষার বদলে গ্রাস করা হচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংস করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা শহরে খুব বেশি পার্ক নেই। মানুষ ঠিকভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারে না। পুরান ঢাকার মানুষ বাহাদুর শাহ পার্কে এসে একটু শ্বাস নেয়। সেটাও এখন দখল করে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। এখন মানুষকে সামান্য খোলা জায়গার জন্য, ছোট একটা পার্ক রক্ষার জন্য আন্দোলন করতে হয়। এই পার্ক যেটা দীর্ঘদিনের ঐতিহাসিক একটা স্থান, সেটাও এখন মুনাফাখোরদের ভয়ংকর আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে।’
মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পার্ক সংরক্ষণে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিটি করপোরেশন এই কর্মকাণ্ড বন্ধ না করলে সবাই একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে। আমরা সবার সঙ্গে আছি।
সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ বলেন, ‘আমরা দেখছি সরকার এখন ব্যবসায়ী বান্ধব। জনগণের কথা ভাবে না। সব জায়গায় ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাতে হবে তাদের। পার্কের চারপাশের ফুটপাত, রাস্তায় সিটি করপোরেশন দোকান বসিয়ে টাকা আয় করছে। পার্কেও স্থায়ী খাবারের দোকান বসিয়েছে। সেখানে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে দেশের বিদ্যুতের অপচয় করছে। পার্কের পরিবেশ নষ্ট করছে। গাছ রং করে, বাতি লাগিয়ে, পার্কে চুলা জ্বালিয়ে গাছগুলোকে মেরে ফেলছে। এটা বন্ধ করতে হবে। ঢাকাবাসী এটা মেনে নেবে না।’
আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বাবু রাম ঘোষ বলেন, ‘পার্কবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের শুরুর পর থেকেই আমরা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। মেয়রকেও একাধিকবার জানিয়েছি। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন পার্ক রক্ষায় এমন কার্যক্রম যাতে না ঘটে তা তিনি দেখবেন। কিন্তু উল্টোটা হচ্ছে। এই কর্মকাণ্ড বন্ধ করা না হলে আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোটের সঙ্গে আরও ৬০টি সংগঠনকে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদ-এর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান।
সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খানের সঞ্চালনায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মানজার হোসেন সুইট, লেখক কৌশিক আহমেদ, সাবেক ছাত্রনেতা আতিকুল ইসলামসহ অনেক শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সংগ্রাম পরিষদের নেতারা সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন:দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় নিয়মিত শীর্ষ পাঁচে থাকা ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে জানিয়েছে আইকিউএয়ার।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বাতাসের মানবিষয়ক প্রযুক্তি কোম্পানিটির র্যাঙ্কিংয়ে বুধবার সকাল ৯টা ৪১ মিনিটে দূষিত বাতাসে ১০০টি শহরের মধ্যে দশম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশের রাজধানী।
র্যাঙ্কিংয়ে দূষিত বাতাসের দিক থেকে ওই সময়ে শীর্ষে ছিল পাকিস্তানের করাচি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল কাজাখস্তানের আস্তানা ও চীনের উহান।
গত কয়েক দিন ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ছিল। র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানেও ছিল বিভিন্ন সময়, তবে আজ সকালে সে তুলনায় উন্নতি হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানীর বাতাস।
নির্দিষ্ট স্কোরের ভিত্তিতে কোনো শহরের বাতাসের ক্যাটাগরি নির্ধারণের পাশাপাশি সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ভালো নাকি ক্ষতিকর, তা জানায় আইকিউএয়ার।
কোম্পানিটি শূন্য থেকে ৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘ভালো’ ক্যাটাগরিতে রাখে। অর্থাৎ এ ক্যাটাগরিতে থাকা শহরের বাতাস জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।
৫১ থেকে ১০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘মধ্যম মানের বা সহনীয়’ হিসেবে বিবেচনা করে কোম্পানিটি।
আইকিউএয়ারের র্যাঙ্কিংয়ে ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘সংবেদনশীল জনগোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরিতে ধরা হয়।
১৫১ থেকে ২০০ স্কোরে থাকা শহরের বাতাসকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ ক্যাটাগরির বিবেচনা করা হয়।
র্যাঙ্কিংয়ে ২০১ থেকে ৩০০ স্কোরে থাকা শহরগুলোর বাতাসকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। তিন শর বেশি স্কোর পাওয়া শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করে আইকিউএয়ার।
সকালের নির্দিষ্ট ওই সময়ে ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৬৮। এর মানে হলো ওই সময়ে অস্বাস্থ্যকর বাতাসের মধ্যে বসবাস করতে হয়েছে রাজধানীবাসীকে।
এর আগে মঙ্গলবার ঢাকার বাতাসের স্কোর ছিল ১৯৮। অর্থাৎ, গতকালও রাজধানীর বাতাস অস্বাস্থ্যকর ছিল, তবে স্কোরের দিক থেকে হিসাব করলে মঙ্গলবারের বাতাসের মান আজকের তুলনায় খারাপ ছিল।
আইকিউএয়ার জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকার বাতাসে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অতি ক্ষুদ্র কণা পিএম২.৫-এর উপস্থিতি ছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইও) আদর্শ মাত্রার চেয়ে ১৭ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
আরও পড়ুন:ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কে গাছ কাটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আবাহনী মাঠের বিপরীতে ‘সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলনের’ ব্যানারে মঙ্গলবার প্রায় কয়েকশত মানুষ গাছ কাটা বন্ধের প্রতিবাদ জানান।
স্থানীয়দের ভাষ্য, সড়কদ্বীপ উন্নয়নের নামে গাছ কাটা হচ্ছে। এটি এমনভাবে তৈরি হচ্ছে যেখানে পরবর্তী সময়ে গাছ রোপণ করা হলেও টিকে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
বক্তারা বলেন, গাছ কেটে কোনো উন্নয়ন হয় না। প্রতিবাদী ফেস্টুন ও বক্তৃতার ভেতর দিয়ে তারা গাছ বাঁচানোর এই আন্দোলনে সবাইকে যোগ দেয়ারও আহ্বান জানান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, এলাকাবাসীর মধ্য থেকে শারমিন মুর্শিদ, ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, আমিরুল রাজিব, মান্নান মুনির, ইমতিয়াজ আলম বেগ, মোস্তফা জামান, সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির এবং আমিনুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
প্রথম শ্রেণিতে ৪১ সহোদর ও জমজকে ভর্তি নিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে তাদের অভিভাবকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী শফিকুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন জানান, বেসরকারি স্কুল, স্কুল অ্যান্ড কলেজ (মাধ্যমিক, নিম্ন মাধ্যমিক ও সংযুক্ত প্রাথমিক স্তর) শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা-২০২২ অনুসারে কোনো প্রতিষ্ঠানে আবেদনকারী শিক্ষার্থীর সহোদর/সহোদরা বা জমজ ভাই/বোন যদি আগে থেকে অধ্যয়নরত থাকে, সেসব সহোদর বা জমজকে সংশ্লিষ্ট ভর্তি কমিটি আবেদন যাচাই-বাছাই করে ভর্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই বিধান অনুযায়ী, ৪১ জন সহোদর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করে, কিন্তু ১৬ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পরিপত্র দেয়। যেখানে বলা হয়, শুধুমাত্র ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে এন্ট্রি শ্রেণিসহ অন্য শ্রেণিতে মোট আসনের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী সহোদর ও জমজ ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে ভর্তি করাতে পারবে। এ বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়। কারণ তারা যখন আবেদন করে, তখন ৫ শতাংশের বিধান ছিল না। এ কারণে আদালত এই ৪১ জনের ক্ষেত্রে ওই বিধান স্থগিত করে রুল জারি করেছেন। পাশাপাশি তাদের ভর্তি করাতে নির্দেশ দিয়েছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার রাতে র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর দক্ষিণখান ও আশুলিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেসুর রহমান মুকুল।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী নামের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা নদী পারাপারে সহযোগী মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপারে সহযোগিতার কারণে রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা বীর মুক্তিযুদ্ধা ইউনুছ আলীকে রাজাকারদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায় এবং রাজাকার ক্যাম্পের টর্চার সেলে নির্যাতনের পর ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করে।
এ ঘটনায় শহীদ ইউনুস আলীর ছেলে ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে নকিব হোসেন আদিল সরকার ও মোখলেছুর রহমান মুকুলসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। পরে আদালত বিচারিক কার্যক্রমের জন্য মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠায়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ২০১৭ সালে অভিযোগের তদন্ত শেষে তদন্ত সংস্থা নকিব হোসেন ও মোখলেছুরসহ ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। গত ২৩ জানুয়ারি এ দুজনসহ ৭ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় আদালত।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার নকিব হোসেন ও মোখলেছুর ২০১৫ সালে মামলার তদন্ত কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই পলাতক ছিলেন। ২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তারা আত্মগোপনে চলে যান।
গ্রেপ্তার এড়াতে নাকিব রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এবং মোখলেছুর আশুলিয়া ইপিজেড এলাকায় বিভিন্ন ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। তারা দুইজনেই একাধিকবার বাসা পরিবর্তন করেন।
র্যাব আরও জানায়, এ সময় পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে তারা অন্যের রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড দিয়ে মোবাইল ফোনে ব্যবহার করতেন।
আরও পড়ুন:রাজধানীর ভাটারায় মধ্যরাতে ট্রাকের ধাক্কায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার এক চালক নিহত হয়েছেন।
সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে ভাটারা গোলচত্বরে দুর্ঘটনার কবলে পড়া ওই ব্যক্তি মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা যান।
২৮ বছর বয়সী মোহাম্মদ রূপচাঁদ মিয়া ময়মনসিংহের ধুবাউড়া থানার রঘু রামপুর গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে।
নিহতের ভাই কালা চাঁদ মিয়া বলেন, রাতে আমার ভাই অটো চালিয়ে ভাটারা গোলচত্বরে টার্ন নিচ্ছিল। এ সময় পেছন থেকে একটি বালিভর্তি ট্রাক তার রিকশাকে ধাক্কায় দেয়। এতে গাড়িটি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে তিনি গুরুতর আহত হন।
তিনি বলেন, পরে আমরা খবর পেয়ে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। সকাল ১০টার দিকে চিকিৎসক আমার ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, মরদহে ময়নতদন্তের জন্য ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার পর থেকে রাজধানীতে মেট্রোরেলের টিকিট বিক্রি করে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই কোটি টাকা আয় হয়েছে। আর যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার।
মঙ্গলবার এলিফ্যান্ট রোডে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এমএএন সিদ্দিক এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, দেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬-এর উদ্বোধন হয়েছে গত ২৮ ডিসেম্বর। এর একদিন পর থেকে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও মেট্রোরেল চালু হওয়ার পর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মেট্রোরেলে মোট ৩ লাখ ৩৫ যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। এতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
পাতাল রেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনের বিষয়ে এমএএন সিদ্দিক বলেন, দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবার মেট্রোরেলের (এমআরটি লাইন-১) নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টায় পূর্বাচল সেক্টর ৪-এ ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন ১-এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি জনসম্মুখে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। এরপর সুধি সবাবেশে ভাষণ দেবেন। সেখানে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে।
মেট্রোরেলের লাইন-১ এর ডিপো নির্মাণ হবে নারায়ণগঞ্জের জেলার পিতলগঞ্জ। এই কাজের জন্য জাপানের টোকিও কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও দেশীয় ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।
পুরো প্রকল্পটির কাজ ১২ টি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে। এরমধ্যে প্যাকেজে সিপি-১ এর আওতায় ডিপো এলাকায় ভুমি উন্নয়ন করার কাজটি শুরু হবে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর। যেখানে ডিপো নির্মাণ করা হবে সেখানে অনেক উঁচু নিচু জায়গা আছে। সেগুলো ভরাট করার কাজ শুরু হবে। তারপর সেখানেই ডিপো নির্মাণ করা হবে।
প্রকল্পের নথি বলছে, পাতাল ও উড়াল মিলে মেট্রোরেল লাইন-১ এর মোট দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত পাতাল অংশের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। অন্যদিকে নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত নির্মাণ হবে উড়ালপথ, যার দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার। পাতাল পথে স্টেশন হবে ১২টি এবং উড়ালপথে থাকবে ৭টি। উভয় পথে মোট ১৯টি স্টেশন হবে ।
আরও পড়ুন:লেখক-প্রকাশকদের নিরাপত্তার হুমকি থাকলে তা পুলিশকে জানাতে বলেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। পুলিশ সে অনুযায়ী নিরাপত্তা দেয়ার ব্যবস্থা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একুশে বইমেলা প্রাঙ্গনে মঙ্গলবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা জানান।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘একুশে বইমেলায় ধর্মীয় উসকানিমূলক লেখা বা বই প্রকাশের নামে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা ঠেকাতে সাইবার মনিটরিং ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। কোনো লেখক বা প্রকাশকের হুমকির শঙ্কা থাকলে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব। কোনো সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও হুমকি মাথায় নিয়ে এবার অন্য বছরের চেয়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে।’
তিনি বলেন, ‘বইমেলায় থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মেলা কেন্দ্রিক নিরাপত্তার পাশাপাশি শহীদ মিনার কেন্দ্রিক ও শাহবাগ-নীলক্ষেত কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশেপাশে তল্লাশি দল থাকবে, সন্দেহজনক কিছু দেখলে তারা তল্লাশি করবেন। মূল মেলা প্রাঙ্গনে প্রবেশের আগে প্রতিটি প্রবেশপথে আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর থাকবে।
‘এ ছাড়া কাউকে সন্দেহ হলে তাকে পৃথক কক্ষে নিয়ে তল্লাশি করা হবে। মেলা প্রাঙ্গনসহ আশেপাশের এলাকার প্রতিটি জায়গা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। মেলা প্রাঙ্গনে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক পোশাকধারী সদস্যও মোতায়েন থাকবে। মেলার আশেপাশে মোটরসাইকেল ও গাড়ি টহল থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া সিটিটিসি, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, ক্রাইম সিন ভ্যান ও ডগ স্কোয়াড প্রস্তুত থাকবে। যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
‘মেলায় মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিস মোতায়েন থাকবে। ডিএমপি কন্ট্রোল রুমের ভেতরে ব্রেস্ট ফিডিং কক্ষ থাকবে। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিত মেলা প্রাঙ্গনে আসবেন ও নিরাপত্তা বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করবেন।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য