বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার বন্ধে হতাশা নেমে এসেছে পাবনার ঐতিহাসিক বিবিসি বাজারের মানুষের মাঝে। মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে এই বাজারে কাশেম মোল্লার একটি রেডিওতে শোনা যেত বিবিসি বাংলার খবর। এক পর্যায়ে তা পরিচিত পায় বিবিসি বাজার নামে।
এ বাজার ও সেই রেডিওর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুক্তিযুদ্ধের আবেগময় স্মৃতি। তাই বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার পুনরায় চালুর পাশপাশি স্মৃতিবিজড়িত রেডিওসহ যুদ্ধের নানা স্মৃতি সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
দীর্ঘ ৮১ বছর পর গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচারে ইতি টানা হয়। ওই রাতে সর্বশেষ প্রচার করা হয় বাংলা ভাষার শ্রোতাদের জন্য শেষ দুটি অধিবেশন।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে প্রায় পৌনে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিবিসি বাজারটির বিস্তৃতি।
স্থানীয়রা জানান, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে যুদ্ধের খবর প্রচারে ছিলো পাকিস্তানি শাসকদের নিষেধাজ্ঞা। ঈশ্বরদীর পাকশী ইউনিয়নের মুক্তিকামী জনতা দেশের পরিস্থিতি জানতে ছুটে আসতেন রূপপুরের চা দোকানি কাশেম মোল্লার দোকানে।
তিন ব্রান্ডের ফিলিপস রেডিওটিতে বিবিসি বাংলায় বাজতো মুক্তিযুদ্ধের খবর, ভিড় করতেন আশেপাশের গ্রামের শত শত মানুষ। আর তা থেকেই মানুষের মুখে মুখে রূপপুরের এই বাজারের নাম হয় বিবিসি বাজার।
মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল্লাহ জানান, রূপপুরসহ আশেপাশের গ্রামের মানুষকে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব গাঁথা শোনানোর অপরাধে পাকিস্তানী সেনাদের নির্যাতনে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিলেণ কাশেম মোল্লা। তবু মুক্তিবার্তা শোনাতে পিছু হটেননি তিনি। রূপপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে তাই বিবিসি বাজার আর কাশেম মোল্লার রেডিও পরম আবেগের নাম।
মুক্তিযোদ্ধা ও পাকশী ইউনিয়ন কমান্ড কাউন্সিল কামন্ডার জাহাঙ্গীর আলম জানান, একাত্তরে পাবনার পাকশী পেপার মিলস, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকায় পাকবাহিনীরা ক্যাম্প বসালে সাধারণের মানুষের বাজার করা কঠিন হয়ে পড়ে। পাকিস্তানি মিলিটারির ভয়ে মানুষ সেখানে যেতে পারত না।
তিনি জানান, ওই সময় সেখানে কাশেম মোল্লার মুদি দোকান ছিল। পাকবাহিনীর দেয়া আগুনে সেই দোকান পুড়ে গেলে তিনি পাকশী ছেড়ে রূপপুর এলাকায় চলে আসেন। তুলনামূলক উঁচু একটি জায়গায় রাস্তার ধারে একটি চা দোকান দেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কাশেম মোল্লার একটা থ্রি ব্যান্ডের রেডিও ছিল। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা তখন ভারতে ট্রেনিং নিচ্ছি, সুযোগ বুঝে দেশে ঢুকে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে নানা অপারেশন চালাচ্ছি। সারা দেশেই তখন এমন সফল অপারেশনগুলো হতে শুরু করেছে। কিন্তু রেডিও পাকিস্তানে এসব খবর পড়া হত না।
‘ফলে আমাদের এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা আর সাধারণ মানুষের কাছে ভরসার নাম হয়ে ওঠে কাশেম মোল্লার ওই ফিলিপস ব্র্যান্ডের থ্রি ব্যান্ডের রেডিও। মুক্তিযুদ্ধের পরে ধীরে ধীরে কাশেম মোল্লার দোকানের পাশে আরও দোকান বাড়তে থাকে। মানুষ আসার সময় বলত, বিবিসি শুনতে যাই, বিবিসির বাজারে যাই। এভাবে বলতে বলতে একটা সময় এই বাজারের নামই হয়ে যায় বিবিসি বাজার।’
২০১৫ সালে মারা গেছেন কাশেম মোল্লা। আর ৩১ ডিসেম্বর থেকে বন্ধ হয়েছে বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার। এতে ভীষণ মন খারাপ বিবিসি বাজারের মানুষের।
কাশেম মোল্লার ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘একদিন বিকেলবেলা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী গ্রামে চলে আসে। তারা দোকানে ঢোকার আগেই বড় ভাই চিন্তা করেছেন যে, রেডিও যদি পাক আর্মিদের হাতে চলে যায়, তাহলে আমরা এই খবরগুলো এই অঞ্চলের মানুষকে শোনাতে পারব না।
‘তখন রেডিওটাকে রক্ষা করার জন্য গোপনে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেন। আমরা একাত্তরে কষ্ট করে যুদ্ধ করেছি, এটা ঠিক। কিন্তু কাশেম মোল্লা জীবন বাজি রেখে বিবিসির সংবাদের মাধ্যমে নানা রকম তথ্য দিয়ে উনি যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি তিনি পাননি।’
কাশেম মোল্লার ঐতিহাসিক রেডিও ও নানা স্বীকৃতি স্মারক এখনও আঁকড়ে আছে পরিবার। মুক্তিযুদ্ধে কাশেম মোল্লা ও রূপপুরবাসীর সাহসিকতার গল্প নতুন প্রজন্মকে জানাতে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দরকার বলে মনে করেন তারা। একই সঙ্গে বিবিসি বাংলার রেডিও সম্প্রচার পুনরায় চালু ও স্মৃতি সংরক্ষণে স্থায়ী উদ্যোগ গ্রহণের দাবি রূপপুরের মানুষের।
কাশেম মোল্লার ছেলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বাবার ঐতিহাসিক রেডিওটি আমরা যত্ম করে নিজেদের কাছে রেখেছি। এখন নতুন প্রজন্মের অনেকেই বিবিসি বাজারের ইতিহাস জানে না।
‘যেহেতু বাংলা ভাষার জন্য লড়াইকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করেছে। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে বিবিসি বাংলা রেডিও সম্প্রচার পুণরায় চালু করবে বলে আমরা আশা করি। একই সঙ্গে বিবিসি বাজারে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি সংগ্রহশালা গড়ে তোলার দাবি জানাই।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ এক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই বিচারক ও নাজির মমিনুল ইসলামের শাস্তির দাবিতে কোর্ট বর্জন করছে আইনজীবীরা। এতে অচল হয়ে পড়ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিচার ব্যবস্থা। জেলা ও দায়রা জজ নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালত ব্যতীত সব আদালতে গিয়েছে আইনজীবীরা ।
দাবি পূরণ না হওয়ায় বুধবার সকাল থেকে আবারও সব আদালত বর্জন করেছে আইনজীবী সমিতি। এতে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি বুধবার থেকে আরও বাড়বে বলে মনে আদালত-সংশ্লিষ্টরা।
আদালতে ঘুরে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে আদালত চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের সমাগম থাকলেও আইনজীবী দেখা যায় নি। তবে বিচার প্রার্থীরা জানতেন না বুধবার থেকে আবারও আদালত করবেন না আইনজীবীরা । বিষয়টি জেনে অনেক বিচারপ্রার্থী হতাশাগ্রস্থ হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থীরা আদালত প্রাঙ্গণে এসে ঘুরে আবারও ফিরে যাচ্ছেন।
বিচার প্রার্থীরা ইচ্ছেকৃতভাবে ফিরে যাচ্ছে না, আইনজীবীরা আদালতের প্রতিটি প্রবেশ দ্বারে দাঁড়িয়ে আদালত থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিচার প্রার্থীদের।
তেমনটি অভিযোগ করেন সরাইল উপজেলা অরুয়াইল থেকে আসা সালমা বেগম। তিনি অভিযোগ করেন, স্বামীর জামিনের আবেদন করতে আসলে আদালতে ভিতর ঢুকতেই ধমকিয়ে বের করে দেয়া হয়েছে তাকে। চার শিশু সন্তান নিয়ে দীর্ঘ দেড় মাস যাবত এই আদালতে চত্বরে ঘুরছেন স্বামী কাউসারকে জামিন করানোর জন্য। তবে আইনজীবী ও বিচারকদের দ্বন্ধে স্বামীর জামিন না করাতে পেরে শিশু সন্তান নিয়ে পথে বসার মত অবস্থা তাদের।
সালমা বেগম বলেন, ‘৬ মাস আগে প্রতিবেশী এক মহিলা তার স্বামী কাউসারের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। আর সেই মামলায় জেল খাটছে তার স্বামী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হওয়ায় স্বামীকে জামিন করানো জন্য হন্য হয়ে ঘুরছে আদালতে।
‘গত ৩ জানুয়ারি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল। মামলায় প্রতিবেশী মহিলার সঙ্গে আপোষ করা হলেও সেদিন আইনজীবী না থাকায় তার স্বামীর জামিন হয় নি। তবে আদালতের বিচারক বলেছিলেন পিপি সাহেবের স্বাক্ষর নিয়ে আসলে জামিন দেয়া হবে। কিন্তু সেদিন ৫০০০ হাজার টাকা দিয়ে পায়ে ধরে কান্নাকাটি করলে তিনি স্বাক্ষর দেননি। বুধবার তার স্বামীর মামলা শুনানি ছিল। কিন্তু সকালে আদালতে প্রবেশ দ্বারে ঢুকতে গেলেই কয়েকজন আইনজীবী আদালতের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে সালামকে ধমকিয়ে আদালত ভবন থেকে বের করে দেয়। এ সময় সাথে ছিল তার চার শিশু সন্তান।’
শুধু সালমা নয়, সরাইল রসূলপুরের মুমিনুল হক, কসবা উপজেলা শাহাদৎ মিয়া, আখাউড়া উপজেলা মনোয়ারা বেগম, বাঞ্ছারাপুরের ইলিয়াস মিয়া, নবীরনগর উপজেলা কৃষ্ণনগর গ্রামের ইছা মিয়া সহ আরও বেশ কয়েকজনকে আইনজীবীদের পথ আটকে দেয়ার কারণে আদালত থেকে ফিরে যেতে হয়েছে।
আদালত থেকে ফিরিয়ে দেয়ার কারণ জানতে চাইলে আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ খান বলেন, ‘আমাদের দাবি অনুযায়ী আদালত বর্জন চলছে। কার্যক্রম যেন না নিতে পারে সেক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আইনজীবী ছাড়া সরাসরি যেন কোনো পিটিশন না নেয় সেই বিষয়ে আমরা প্রয়োজন ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ ব্যাপারে আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আদালতে বিচারক, কর্মকর্তা ও কার্মচারীগণ উপস্থিত রয়েছেন। বিচারকার্যের জন্য সবাই প্রস্তুত রয়েছেন। বিচার চেয়ে আদালতের কাছে দারস্থ হওয়া আইনগত অধিকার। তবে বিচারপ্রার্থীদের আদালতে আসতে না দেয়া সম্পূর্ণ বেআইনী।’
জামালপুরের মেলান্দহে এক বৃদ্ধ নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের টগারচর এলাকায় সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
৫৫ বছর বয়সী সুরাইয়া বেগম ওই এলাকার আজিজুল হকের স্ত্রী।
মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে এসব তথ্য জানান।
নিহতের স্বজনেরা জানান, বুধবার ভোর সকালে গোয়ালঘর থেকে গরু বের করতে যান নিহত সুরাইয়া বেগম। তার স্বামী আজিজুল হক মসজিদে ফজরের নামাজ পড়ে গোয়াল ঘরে গিয়ে দেখেন স্ত্রীর গলাকাটা লাশ। পরে ডাক চিৎকারে লোকজন আসেন। পুলিশ খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ওসি দেলোয়ার বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।’
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে গত বছর অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা ছিল দুটি, তবে এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩টিতে। এই ১৩টি কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল মাত্র ৬৫ জন।
জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার পাসের হার গত বছরের তুলনায় কমেছে। এ বছর এ বোর্ডে পাস দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। একই সঙ্গে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। তবে সে তুলনায় গত বছরের তুলনায় অকৃতকার্য কলেজের সংখ্যা বেড়েছে।
দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তোফাজ্জুর রহমানের সই করা এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছর এসএসসি পাসের হার ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর এই বোর্ডে পাশের হার ছিল ৯২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। এই বোর্ডের অধীনে রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ৬৭১টি কলেজ থেকে এক লাখ ২৯৩ জন পরীক্ষার্থী রেজিষ্ট্রেশন করে। কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ৯৯ হাজার ৭০৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৭৮ হাজার ৮৪৯ জন উত্তীর্ণ হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিসূত্রে জানা গেছে, উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১১ হাজার ৮৩০ জন। এর মধ্যে ৬ হাজার ২৫৫ জন ছাত্রী ও ৫ হাজার ৫৭৫ জন ছাত্র। গত বছর এই বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছিল ১৫ হাজার ৩৪৯ জন শিক্ষার্থী। সে তুলনায় চলতি বছর জিপিএ-৫ পাওয়ার সংখ্যা কমেছে তিন হাজার ৫১৯ জন।
এ বোর্ডে অকৃতকার্য ১৩টি কলেজগুলো হলো- ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলার গড় কলেজ (১৩ জন পরীক্ষার্থী), ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর মহিলা কলেজ (১১ জন পরীক্ষার্থী), কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে সিংগার ডাবরিরহাট বিএল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭ জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার আলহাজ্ব তমিজ উদ্দীন কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার মারেয়া মডেল হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৭জন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার নাসির উদ্দীন কলেজ (৬জন পরীক্ষার্থী), একই জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার দুহুলা এসসি হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৪জন পরীক্ষার্থী), নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার চৌধুরীরানী হাই স্কুল এন্ড কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার সনকা আদর্শ কলেজ (৩জন পরীক্ষার্থী), গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া মহিলা কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী), দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার উত্তর লক্ষিপুর হাই স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী) ও ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার পীরগঞ্জ কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ (একজন পরীক্ষার্থী)।
আরও পড়ুন:ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্যামকুড় সীমান্তে বিএসএফের এক গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন।
ভারতের পাকুড়া সীমান্তে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ৩০ বছর বয়সী আরিফুল ইসলাম শ্যামকুড় পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা।
স্থানীয় সংবাদকর্মী মশিউর রহমান টিংকু জানান, আরিফুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সীমান্তের ওপারে গরু আনতে যায়। ভোররাতে ফেরার পথে ভারতের পাখিউড়া ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যসের সামনে পড়ে। সেসময় বিএসএফ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে অন্যরা পালিয়ে গেলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আরিফুল ইসলাম।
শ্যামকুড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মরদেহ ভারতে রয়েছে। আমরা মরদেহ দেশে ফেরত আনার জন্য বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।’
বরিশালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই, তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে।
বরিশাল বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার গাইন বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘এবারে কোনো কলেজেই শূন্য পাস নেই। তবে শতভাগ পাস রয়েছে ৩৪টি কলেজে। এবারে ইংরেজি সাবজেক্টে তুলনামূলক ফলাফল খারাপ হয়েছে পরীক্ষার্থীদের।’
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৬ দশমিক ৯৫ ভাগ। গত বছর পাসের হার ছিল ৯৫ দশমিক ৭৬। তবে গত বছরের তুলনায় পাসের হার কম হলেও ফলাফলে সবাই সন্তুষ্ট বলে জানিয়েছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এদিকে এবারে জিপিএ ৫ পেয়েছে ৭৩৮৬ জন, যা গত বছরের তুলনায় ২৫৮৫ জন কম।
অরুন কুমার বলেন, ‘৬১ হাজার ৮৮৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ৫৩ হাজার ৮০৭ জন। এর মধ্যে ছেলে ২৫ হাজার ৫৮৮ ও মেয়ে ২৮ হাজার ২১৯ জন। ৭ হাজার ৩৮৬ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের মধ্যে ছেলে দুই হাজার ৫৮০ ও মেয়ে ৫ হাজার ৮০৬ জন।’
৩৩১ কলেজের পরীক্ষার্থীরা ১২৫ কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং পুরো পরীক্ষায় বহিষ্কার হয়েছেন ২০ জন পরীক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৭ জন বিজ্ঞান বিভাগের, ১২ জন মানবিক ও একজন ব্যবসায় শিক্ষার।
বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ১২ হাজার ৭২ জন, পাশ করেছে ১০ হাজার ৮৬১ জন, মানবিক বিভাগে পরীক্ষার্থী ছিল ৪০ হাজার ৩১১ জন ও পাস করেছেন ৩৪ হাজার ৬৭৩ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৯ হাজার ৫০২ জন ও পাস করেছে ৮ হাজার ২৭৩ জন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, বরিশাল বিভাগে এবারে পাসের হারে এগিয়ে রয়েছে ভোলা জেলা। এই জেলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ৯। এরপরে ৯১ দশমিক ১২ ভাগ নিয়ে এগিয়ে আছে বরিশাল। ঝালকাঠিতে পাসের হার ৮৮ দশমিক ২৫, পিরোজপুরে ৮৮ দশমিক ১৮, বরগুনায় ৮৭ দশমিক ৮৩ ও পটুয়াখালীতে পাসের হার ৭৩ দশমিক ৭৫ ভাগ।
ভোলা পাসের হারে এগিয়ে থাকলেও দুই হাজার ২৯৭টি জিপিএ-৫ এ পেয়ে এগিয়ে বরিশাল জেলা। এ ছাড়া ভোলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬৫৩ জন, ঝালকাঠিতে ২৯৮ জন, পিরোজপুরে ৫৪৭ জন, বরগুনায় ৫২৭ জন ও পটুয়াখালীতে ৪৮৪ জন।
এদিকে ফলাফলে খুশি হয়ে বরিশালে কলেজে কলেজে উচ্ছ্বাস করেছে শিক্ষার্থীরা। কাঙ্খিত ফলাফল পেয়ে খুশি তারা।
আরও পড়ুন:রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে ছাত্রদের চেয়ে এগিয়ে ছাত্রীরা।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বুধবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রীদের পাসের হার ৮৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আর ছাত্রদের পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৭ ভাগ। জিপিএ-৫ প্রাপ্তি ছাত্রীর সংখ্যা ১১ হাজার ৯৫৭ জন। আর জিপিএ ৫ পাওয়া ছাত্রের সংখ্যা ৯ হাজার ৮৯৮ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এবার পাস করেছে এক লাখ ৩ হাজার ৩৮৫ জন। পাসের হার ৮১ দশমিক ৬০। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ হাজার ৮৫৫ জন শিক্ষার্থী। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির দিক দিয়ে গতবারের চেয়ে কমেছে। গত বছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিল ৯৭ দশমিক ২৯ শতাংশ।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, ‘এ বছর শতভাগ পাশ করেছে ৩১ টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। শতভাগ ফেল করেছে এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৯টি।’
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ‘গত বছরের ৬ নভেম্বর থেকে শুরু হয় এইচএসসি পরীক্ষা। রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আওতায় বিভাগের আট জেলায় এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২৯ হাজার ৪২৩ জন। এর মধ্যে পরীক্ষা দেয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ জন। এর মধ্যে ছাত্র ৬৬ হাজার ৯৪৩ জন আর ছাত্রী ৫৯ হাজার ৭৫৭ জন। বিভাগের আট জেলার ৭৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী ২০১টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তিন উপগ্রুপের মধ্যে দ্বিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে তিন গ্রুপের ৭ কর্মী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের সঙ্গে সিএফসি ও বিজয় গ্রুপের কর্মীদের যৌথভাবে সংঘর্ষ শুরু হয়।
বিবাদমান গ্রুপগুলো হলো শাটল ট্রেনের বগি ভিত্তিক উপগ্রুপ সিক্সটি নাইন, সিএফসি ও বিজয়। সিক্সটি নাইন গ্রুপ সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিতি। সিএফসি ও বিজয় গ্রুপ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
সংঘর্ষের সময় সিক্সটি নাইনের কর্মীরা শাহ জালাল হলের সামনে ও ভিতরে, সিএফসি কর্মীরা শাহ আমনের ভেতরে এবং বিজয়ের কর্মীরা সোহরাওয়ার্দী মোড়ে অবস্থান নেয়। সিক্সটি নাইন ও বাকি দুই গ্রুপের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় গ্রুপগুলোর নেতা-কর্মীদের।
পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল টিম রাত পৌনে ১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে রাত সাড়ে চারটার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ায় তিন পক্ষ। সোয়া পাঁচটায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশনের একটি চায়ের দোকানে বসে ধূমপান করছিলেন সিক্সটি নাইন গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের এক কর্মী ৷ তখন সেখানে পাশের একটি টেবিলে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন বিজয় ও সিএফসির তৃতীয় বর্ষের কয়েকজন কর্মী ৷
একপর্যায়ে ধূমপানের ধোঁয়া ছড়ালে সিএফসির এক কর্মী প্রতিবাদ করেন ৷ তিনি ধূমপানকারীর শিক্ষাবর্ষ জানতে চান। পরে সিক্সটি নাইনের ওই কর্মী নিজেকে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে সিএফসির কর্মী তার ওপর চড়াও হন ৷ জুনিয়র হয়ে কেন এভাবে প্রকাশ্যে ধূমপান করছেন এসব নিয়ে তর্কাতর্কিতে জড়ান ৷
একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। পরবর্তীতে প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশের সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মেডিক্যালের প্রধান কর্মকর্তা ডা. মো. আবু তৈয়ব জানান, সংঘর্ষে সাতজন মেডিক্যালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিক্সটি নাইন গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বলেন, ‘জুনিয়রদের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে বলে শুনেছি। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাদাফ খান বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে স্টেশন তলায় (চায়ের দোকান) আমাদের এক কর্মীকে সিক্সটি নাইন গ্রুপের কর্মীরা মারধর করে ৷ পরবর্তীতে সিক্সটি নাইনের কর্মীদের বিজয় গ্রুপের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। আমরা আমাদের ছেলেদের হলে ঢুকিয়ে দিই। কিন্তু ভোররাতে সিক্সটি নাইনের কর্মীরা আমাদের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে।’
বিজয় গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ বলেন, ‘সেক্রেটারির ছেলেরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাদের ছেলেদের সঙ্গে ঝামেলা করে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বলেন, ‘খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম সেখানে গিয়েছে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। এ ধরনের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। জড়িতদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। নিরাপত্তা জোরদার করতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য