নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার বড়হট্টি এলাকায় ফসলি জমিতে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা ঘিরে উৎসবে মেতেছে হাজারো মানুষ। প্রতিযোগিতায় কিশোরদের পাশাপাশি ঘোড়সওয়ার কিশোরী তাসমিনা আক্তার ও তার ৮ বছরের ছোট বোন হালিমা আক্তার নজর কেড়েছে সবার।
শনিবার বিকেলে ঐতিহ্যবাহী এই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন স্থানীয় সমাজসেবক জিয়াউর রহমান জনি। এতে নওগাঁর বিভিন্ন উপজেলা, বগুড়া, জয়পুরহাটসহ কয়েকটি জেলার ৫০টি ঘোড়া নিয়ে অংশ নেন প্রতিযোগীরা।
আয়োজকরা দুপুর ২টায় প্রতিযোগিতা শুরুর ঘোষণা দেয়। তার আগেই আশপাশের গ্রাম থেকে মাঠে আসতে শুরু করে লোকজন। নির্ধারিত সময়ের আগেই পুরো ফসলি মাঠ ও রাস্তা কানায় কানায় ভরে যায়। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে নারী-পুরুষ এমনকি বৃদ্ধরাও জড়ো হতে থাকেন। প্রতিযোগিতা শুরু হয় বিকেল ৪টায়।
ঘোড়দৌড় দেখতে আসা উম্মে হাবিবা লিজা বলেন, ‘এই প্রথম মাঠে বসে ঘোড়দৌড় দেখলাম। আমি আমার পরিবারসহ এসেছি। খুব ভালো লাগছে।’
পরিবারের সঙ্গে আসা শিশু তাবাসসুম বলে, ‘আব্বু-আম্মুর সাথে ঘোড়দৌড় খেলা দেখতে এসেছি। কী যে ভালো লাগছে! আগামী বছর এমন আয়োজন হলে আবারও আসবে।’
সামশুল আলম ও লুৎফর রহমান বলেন, ‘নওগাঁর ধামইরহাটের তাসমিনা অনেক সুনাম অর্জন করেছে সারাদেশে। তার সাথে আজ ওর ছোট বোনও ঘোড়দৌড়ে অংশ নিয়েছে। দুই বোনই ভালো করেছে। তাদের ঘোড়দৌড় দেখার জন্যই এসেছি আমরা। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা খুব ভালো লেগেছে।’
ঘোড়দৌড়ে অংশ নেওয়া তাসমিনার ছোট বোন হালিমা আক্তার বলে, ‘এই প্রথম আমি ঘোড়দৌড়ে অংশ নিয়েছি। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছি। খুব ভালো লাগছে। আগামীতেও খেলতে চাই।’
তাসমিনার অভিব্যক্তি, ‘আমার ছোট বোনের খুব ইচ্ছা ছিল সে-ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। আজ ওর ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। আমরা দুই বোন আগামীতেও ঘোড়দৌড়ে অংশগ্রহণ করে যেতে চাই।’
আয়োজক জিয়াউর রহমান জনি বলেন, ‘এলাকার তরুণ ও যুবকদের নির্মল বিনোদন দিতে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে খেলাধুলার আয়োজন করে থাকি। এবার গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলো। স্থানীয় লোকজন বেশ খুশি। আগামীতেও এ ধরনের আয়োজন করা হবে। সেজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ও বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আফরোজ।
অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র দেব, ঘোষনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
অংশগ্রহণকারী তিন বিজয়ীকে পুরস্কার দেয়া হয়। প্রতিযোগিতায় ‘ক’ গ্রুপে প্রথম হয় তাসমিনার ঘোড়া, দ্বিতীয় হয়েছে তার ছোট বোন হালিমা খাতুনের ঘোড়া এবং তৃতীয় হয়েছে সামছুর রহমানের ঘোড়া।
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া অন্য ১৩ প্রতিযোগীকে বিশেষ পুরস্কার দেয়া হয়।
আরও পড়ুন:বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে পুরুষ ও নারী কর্মী নিয়োগের লক্ষ্যে দিনব্যাপী চাকরি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে শেরপুরে। বৃহস্পতিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এই মেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। এই আয়োজন জেলা জুড়ে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এবং জেলা প্রশাসনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় দিনব্যাপী এ মেলা শুরু হয় সকাল ১০টায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার।
জেলার ৬ শতাধিক চাকরী প্রত্যাশী পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ স্বশরীরে মেলায় হাজির হয়ে আবেদন করেন। প্রবাস প্রত্যাগত এবং প্রবাসীরাও মেলায় অংশ নেন।
কামারেরচরের রফিক মিয়া বলেন, ‘দালালের মাধ্যমে বিদেশে গেলে নানাভাবে প্রতারিত হতে হয়। অনেকে জমি বিক্রি করে বা ধারদেনা করে বিদেশে গিয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। কারণ দালালের কাজ ও কথায় কোনো মিল থাকে না। এমন সুযোগ করে দেয়ায় এখন আমরা সরকারিভাবে নিরাপদে বিদেশে যেতে পারব।’
যোগনীমুরা থেকে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘নারীরা দালাল বা অন্য প্রতিষ্ঠনের মাধ্যমে বিদেশে গেলে যৌন নির্যাতনসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়। তবে বোয়েসেল-এর মাধ্যমে গেলে হয়রানির আশঙ্কা নেই বলে আমরা শুনেছি। তাই আবেদন করেছি।’
ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বোয়েসেল নৈতিক নিরাপদ ও সাশ্রয়ী অভিবাসন নিশ্চিত করে। দক্ষ হয়ে বিদেশে গেলে কোনো সমস্যা হয় না। আমরা সারাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠাচ্ছি।
‘অতীতে দালালের মধ্যেমে বিদেশে গিয়ে অনেকে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছে। এখন বোয়েসেল-এর মাধ্যেমে বিনা ভোগান্তিতে হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশসহ ইউরোপের নানা দেশে যাওয়া যাবে।’
এদিকে চাকরির এই মেলা ঘিরে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বোয়েসেল-এর মাধ্যমে সরকারিভাবে বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ে অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ ৫০ জন অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে সহজ উপায়ে বিদেশে কর্মী পাঠানোর নানা বিষয় তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন:তিন বছর পর আবার শুরু হচ্ছে প্লাস্টিক মেলা। রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ২২ ফেব্রুয়ারি বসছে চার দিনব্যাপী এই আয়োজন।
বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) ১৫ তম আয়োজন এবারের মেলা। সবশেষ ২০১৯ সালে ১৪তম মেলার আয়োজন করে সংগঠনটি।
রাজধানীর পল্টনে বিপিজিএমইএ’র নিজস্ব কার্যালয়ে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংগঠনের সভাপতি সামিম আহমেদ। এ সময় সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সহ-সভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন ও কাজী আনোয়ারুল হক, সাবেক সভাপতি ইউসুফ আশরাফ, ফেরদৌস ওয়াহেদ এবং শাহেদুল ইসলাম হেলাল উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রধান অতিথি হিসেবে মেলার উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
২৫ ফেব্রুয়ারি মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এবং প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার।
এবারের মেলায় চীন, তাইয়ান, ভারত, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানসহ মোট ১৯টি দেশের ৪৮০টি কোম্পানির ৭৮০টি স্টল বা বুথ থাকবে। এটা আগের আয়োজনের চেয়ে ৬২ শতাংশ বেশি।
মেলায় মেশিনারিজ, মোল্ড, কাঁচামাল উৎপাদনকারী ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেবে।
সামিম আহমেদ বলেন, ‘মেলায় নতুন পণ্য এবং প্রযুক্তির সমাবেশ আগের চেয়ে ভালো থাকবে বলে আশা করছি। ১৫ ধরনের প্ল্যাস্টিক পণ্য নিয়ে মেলায় অংশ নেবে প্রতিষ্ঠানগুলো। মেলায় সরাসরি পণ্য অর্ডারের পাশাপাশি ৫ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ মেশিনারিজ পণ্য বিক্রির অর্ডার পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা আমাদের।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ডলার সংকটের কারণে আমরা প্লাস্টিক পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারছি না। আর কিছুদিন এই অবস্থা চললে প্লাস্টিক পণ্যের দাম আরও বাড়বে। তখন হয়তো পণ্য উৎপাদন বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় থাকবে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে সাবেক সভাপতি শাহেদুল ইসলাম হেলাল বলেন, ‘গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্লাস্টিক খাত। কারণ পণ্য উৎপাদনে ৫০ শতাংশ সময়েই প্রয়োজন হয় বিদ্যুতের। আরও কষ্টের বিষয় হচ্ছে, বেশি দাম দিয়েও নিয়মিত বিদ্যুৎ মিলছে না।’
আরও পড়ুন:‘বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংককে সাহায্য করতেই হবে। যাই হোক না কেন বিশ্বব্যাংক এ ব্যাপারে না করতে পারবে না।’
ঢাকা সফররত বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গকে উদ্দেশ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একথা বলেন।
বিশ্বব্যাংক এমডি ও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল রোববার বিকেল ৩টায় বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে অংশীদারত্ব সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে ছিলেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংক যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
অনুষ্ঠানে ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, ‘বাংলাদেশ তিনটি বিষয়ে খুব ভালো করেছে- নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের ওপর বিনিয়োগ ও পরিবেশ। তবে আরও ভালো করতে হবে। ২০৩১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় দ্বিগুণ করতে হবে। আর সেজন্য প্রয়োজনীয় রিফর্মগুলো করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমদ কায়কাউস, মেট্রোপলিটন চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি নিহাদ কবির, গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) আহসান এইচ মনসুর এবং বিশ্বব্যাংক গ্রুপের প্রতিষ্ঠান মাল্টিলেটারাল ইনভেস্টমেন্ট গ্যারান্টি এজেন্সির (মিগা) ভাইস প্রেসিডেন্ট জুনায়েদ কামাল আহমদ।
উদযাপন অনুষ্ঠানের ফাঁকে সম্মেলন কেন্দ্রটির কার্নিভাল হলে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ও বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যৌথভাবে একটি মাল্টিমিডিয়া ফটো প্রদর্শনী ‘এ জার্নি টুগেদার’ উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীটি রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন নিজ চোখে দেখতে বিশ্ব আর্থিক খাতের মোড়ল সংস্থা বিশ্বব্যাংকের এমডি শনিবার দুপুরে ঢাকায় এসে পৌঁছেন। বাংলাদেশে এটিই তার প্রথম আনুষ্ঠানিক সফর।
তিন দিনের এই সফরে ট্রটসেনবার্গ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এ ছাড়া তিনি বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। তার সঙ্গে থাকবেন দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের জ্যেষ্ঠ এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেহরিন আহমেদ মাহবুব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে অবস্থানকালে অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ ঢাকা ও কক্সবাজারে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়িত কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সুন্দর সম্পর্কের ৫০ বছর উদ্যাপন করতেই মূলত তিনি ঢাকায় এসেছেন। একইসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সরেজমিনে পরিদর্শন করবেন।’
২৪ জানুয়ারি রাতে তিনি ঢাকা ছাড়বেন বলে জানান মেহরিন।
সংবাদ সম্মেলনে আসছেন বিশ্বব্যাংক এমডি
বিকেল ৫টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিডিয়া বাজারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক উপস্থিত থাকবেন।
আরও পড়ুন:জাবের অ্যান্ড জুবায়েরের বসন্ত-গ্রীষ্মকালের এই আন্তর্জাতিক ফেব্রিক মেলা শুরু হচ্ছে রোববার। প্রতিষ্ঠানটির এটি ১২তম আয়োজন। ছয়দিনব্যাপী এই মেলা চলবে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
২০১৭ সাল থেকে প্রতি বছর দু’বার করে জাবের অ্যান্ড জুবায়ের এই আন্তর্জাতিক কাপড়ের মেলার আয়োজন করে আসছে। একটি মেলা আয়োজিত হয় বসন্ত-গ্রীষ্মকালের আন্তর্জাতিক বাজারকে লক্ষ্য রেখে। আর অন্যটি শীত-শরৎকালের বাজারকে ঘিরে।
এবারের মেলায় প্রদর্শিত বেশিরভাগ ফ্যাব্রিক্সই পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উপাদানে তইর। মোট ২০০টি নতুন ডিজাইনের কালেকশন এবং ৪০টি নতুন কাপড় উদ্ভাবন নিয়ে আসছে এবার জাবের অ্যান্ড জুবায়ের।
ইতোমধ্যে অনেক বিদেশি ক্রেতা ও প্রতিষ্ঠান মেলায় আসার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে। আয়োজক প্রতিষ্ঠানটির প্রত্যাশা, এবারের আয়োজনে ব্যাপকসংখ্যক বিদইশ ক্রেতাদের সমাগম ঘটবে।
রেজিস্ট্রেশন করতে নিচে দেয়া লিংকটি ক্লিক করতে হবে:
https://www.znzfashion.com/registration
আরও পড়ুন:বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে শুক্রবার। রোববার আখেরি মোনজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে এবারের আয়োজন।
এই পর্বে ইজতেমায় আগতদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে রাজধানী ও আশপাশের ১১টি পয়েন্টে ডাইভারশন দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডাইভারশন পয়েন্টগুলো রোববার ভোর ৪টা থেকে কার্যকর হবে। এই সময়ে যানবাহন কোন পথে চলবে তারও নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।
ডাইভারশন পয়েন্টগুলো হলো- ধউর ব্রিজ, ১৮ নং সেক্টর পঞ্চবটী ক্রসিং, পদ্মা ইউলুপ, ১২ নং সেক্টর খালপাড়, মহাখালী ক্রসিং, হোটেল রেডিসন ব্লু ক্রসিং, প্রগতি সরণি (বিশ্বরোড), কুড়াতলী ফ্লাইওভার লুপ-২, মহাখালী ফ্লাইওভার পশ্চিম পাশ, মিরপুর দিয়াবাড়ী বাসস্ট্যান্ড ক্রসিং ও আশুলিয়া বাজার ক্রসিং।
যেসব পথে যানবাহন চলবে
আখেরি মোনাজাতের আগের রাত অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি রাত ২টা থেকে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহন আব্দুল্লাহপুর, ধউর ব্রিজ মোড় পরিহার করে মহাখালী-বিজয় সরণি-গাবতলী হয়ে চলাচল করবে।
আশুলিয়া থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহন আব্দুল্লাহপুরে না এসে ধউর ব্রিজ ক্রসিং দিয়ে ডানে মোড় নিয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করবে।
মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ সব ধরনের যানবাহন মহাখালী ক্রসিং-এ বামে মোড় নিয়ে বিজয় সরণি-গাবতলী দিয়ে চলাচল করবে।
কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী বড় বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানগুলোকে হোটেল র্যাডিসন গ্যাপে ডাইভারশন দেয়া হবে। উল্লিখিত যানবাহনগুলোকে বিকল্প সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
আখেরি মোনাজাতের দিন ভোর ৪টা থেকে প্রগতি সরণি ক্রসিং-আব্দুল্লাহপুর-ধউর ব্রিজ-আশুলিয়া ক্রসিং-মিরপুর মাজার রোড থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক, চিড়িয়াখানা থেকে বেড়িবাঁধ সড়ক এবং পল্লবী ইস্টার্ন হাউজিং এলাকা থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
কাকলী ও মিরপুর থেকে উত্তরাগামী প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, সিএনজি চালিত অটোরিকশাকে নিকুঞ্জ-১ গেটের সামনে ডাইভারশন দেয়া হবে।
প্রগতি সরণি থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী যানবাহনকে কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচে লুপ-২ এ ডাইভারশন দেয়া হবে।
২২ জানুয়ারি উত্তরার বাসিন্দা, বিমান যাত্রী ও বিমান ক্রু বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সব ধরনের যানবাহনের চালকদের বিমানবন্দর সড়ক পরিহার করে বিকল্প হিসেবে মহাখালী, বিজয় সরণি হয়ে মিরপুর-গাবতলী সড়ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে।
বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে আনা-নেয়ার জন্য আখেরি মোনাজাতের দিন ট্রাফিক-উত্তরা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় একটি বড় মাইক্রোবাস পদ্মা ইউলুপ, ২টি মিনিবাস নিকুঞ্জ-১ আবাসিক এলাকার গেট এবং ১টি বড় মাইক্রোবাস কুড়াতলী লুপ-২ এ ফ্রি পরিবহন সার্ভিসের জন্য ভোর ৪টা থেকে মোতায়েন থাকবে।
গাড়ি পার্কিং
ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে ডিএমপি যানবাহন পার্কিংয়ের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করেছে।
খিলক্ষেত থেকে আদুল্লাহপুর হয়ে ধউর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে কোন যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।
ইজতেমায় আগতদের যানবাহন নিম্নবর্ণিত স্থানগুলোতে (বিভাগ অনুযায়ী) যথাযথভাবে পার্কিং করতে হবে-
ক) ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ পার্কিং: ১৬ নং সেক্টর এলাকাধীন বিজিএমইএ ভবন, ১০ নং, ১১ নং ৫ নং ব্রিজের ঢাল।
খ) সিলেট বিভাগ পার্কিং: উত্তরা ১৫ নং সেক্টর, ২ নং ব্রিজের ঢাল থেকে উলোদাহা মাঠ পর্যন্ত।
গ) খুলনা বিভাগ পার্কিং: উত্তরা ১৭ ও ১৮ নং সেক্টরের খালি জায়গা (বউবাজার মাঠ)।
ঘ) রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগ পার্কিং: প্রত্যাশা হাউজিং।
ঙ) বরিশাল বিভাগ পার্কিং: ধউর ব্রিজ ক্রসিং সংলগ্ন বিআইডব্লিউটিএ ল্যান্ডিং স্টেশন।
চ) ঢাকা মহানগরী পার্কিং: ৩০০ ফুট রাস্তা এলাকায় খালি জায়গা।
নির্ধারিত পার্কিং স্থানে মুসল্লিবাহী যানবাহন পার্কিংয়ের সময় অবশ্যই গাড়ির চালক/হেলপার গাড়িতে অবস্থান করবেন এবং মালিক ও চালক একে অপরের মোবাইল নম্বর নিয়ে রাখবেন; যাতে বিশেষ প্রয়োজনে তাৎক্ষণিকভাবে পারস্পরিক যোগাযোগ করা যায়।
আরও পড়ুন:আর মাত্র ১০দিন। এরপরই শুরু হবে বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বই মেলা।
এবারের বইমেলায় ৫৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। আর মোট স্টল থাকছে ৮৫৭টি। এসবের মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে থাকবে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠান ও ৭১০টি ইউনিট। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠান থাকবে ১০৩টি আর ইউনিট থাকবে ১৪৭টি।
সব মিলে মেলায় এবার প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৪টি।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ শনিবার বইমেলার সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রস্তুতি নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পনামাফিকই এগিয়ে যাচ্ছে। যথা সময়ে যেন মেলা শুরু করা যায় সেজন্য আমরা এটা সার্বক্ষণিক মনিটরে রাখব।’
কে এম খালিদ বলেন, ‘বইমেলার জন্য একটা নীতিমালা আছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই মেলায় অংশগ্রহণ করছে তাদের সেই নীতিমালা মানতে হবে। যদি কেউ নীতিমালার বাইরে যায় তাদের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এই ফোর্সের জন্য মেলা প্রাঙ্গণে একটা অফিসও আমরা করে দিয়েছি।’
টাস্কফোর্সের কারণে মুক্ত চিন্তার কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যার যার মত সে প্রকাশ করবে। কিন্তু একটা জিনিসি মাথায় রাখতে হবে। কারও বিরুদ্ধে হিংসা-বিদ্বেষ বা অগ্রহণযোগ্য কিছু আমরা চাই না। এটি মুক্ত জায়গা। আমাদের প্রাণের মেলা। এখানে আমরা চাই না কেউ কাউকে নিয়ে কোনো ধরনের কটাক্ষ করুক।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টায় সশরীরে এসে মেলা উদ্বোধন করবেন। এখন পর্যন্ত তেমন সিদ্ধান্তই রয়েছে। তিনি উদ্বোধন ও পরিদর্শন শেষে মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।’
আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ নিয়ে কে এম খালিদ বলেন, ‘বইমেলার নিয়ম-নীতির বাইরে আমরা যেতে পারব না। তারা যদি নিয়মনীতির মধ্যে আসে তাহলে তাদের ব্যাপারে আামাদের যে সিদ্ধান্ত সেটি তাদের জানানো হবে।’
বইমেলার নিয়ম-নীতি সংস্কারের জন্য আদর্শ প্রকাশনী যে দাবি তুলেছে সেটির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সংস্কার সময়ের ব্যাপার। তাৎক্ষণিক চাইলে তো আর হবে না।’
তিনি বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে কুৎসা বা অপবাদ রটানো মুক্ত চিন্তার বহিঃপ্রকাশ হতে পারে না। সমাজ, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জাতীয় পতাকা, জাতির পিতা- এসবের ব্যাপারে কোনো আপোষ করা যাবে না।’
‘এখন মুক্ত চিন্তার দোহাই দিয়ে যদি জাতির পিতাকে কটাক্ষ করে কোনো বই লেখা হয় তাহলে সেই বই....। গত বছর আদর্শের বইতে আপত্তিকর কিছু বিষয় ছিল। সেসব বিষয়ে তাদের আপত্তি জানানো হয়েছে। সব প্রতিষ্ঠানকে মেলার নিয়ম মেনে আসতে হবে।’
আরও পড়ুন:আসন্ন অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় এখন পর্যন্ত স্টল বরাদ্দ পায়নি আদর্শ প্রকাশনী। এ ঘটনায় উদ্বেগ, ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বই মেলা কোনো সরকার বা একক দলের নয়। অথচ ভিন্ন মতের কারণেই বাংলা একাডেমী প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এ ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ।
‘বাংলা একাডেমি একুশের বইমেলায় মুক্ত বুদ্ধি চর্চার উপযুক্ত স্থান হিসেবে যুগ যুগ ধরে বিবেচিত হয়ে আসছে। সরকারবিরোধী ও ভিন্নমতের বই প্রকাশের অভিযোগে আদর্শ প্রকাশনীকে আসন্ন বই মেলায় স্টল বরাদ্দ না দেয়াটা খুবই উদ্বেগজনক এবং নিন্দনীয়।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একুশে বইমেলা দল-মত নির্বিশেষে সবার প্রাণের মেলা হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছিল। কিন্তু তিনটি ভিন্ন মতের বইয়ের জন্য ছয় শতাধিক বই প্রকাশকারী সংস্থা আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ স্থগিত করার মাধ্যমে বাংলা একাডেমী ভিন্ন মত দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হলো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর আগেও কয়েকবার বাংলা একাডেমী একুশের বই মেলায় ভিন্নমতের বই প্রকাশের কারণে প্রকাশনা সংস্থার স্টল স্থগিত বা বাতিল করেছে।
‘আমি বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষকে একুশের বইমেলাকে দলীয়করণ না করার আহ্বান জানাই এবং আসন্ন বই মেলায় আদর্শ প্রকাশনীসহ ভিন্নমতের বই প্রকাশকারী অন্যান্য প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না করে তাদের স্টল বরাদ্দের আহ্বান জানাই, যাতে বই মেলা দল-মত নির্বিশেষের সবার প্রাণের মেলা হিসেবে পুনরায় বিবেচিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য