তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, জামায়াত ও হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমঝোতার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর।
শুক্রবার সকালে রাজশাহী সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা হাঁক-ডাক ছাড়া কিছু নয়। হাঁস ডিম পাড়ার আগে যেমন হাঁক-ডাক করে, আন্দোলন নিয়ে বিএনপিও তেমনই হাঁক-ডাক করে।
রাজশাহীতে ২৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জনসভা সফল করার লক্ষ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ অডিটরিয়ামে বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী। এর আগে রাজশাহী সার্কিট হাউজে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীক। সে লক্ষ্যে দেশ বিনির্মাণের কাজ চলছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠনের পর থেকেই বিএনপি কঠোর, কঠোরতর এবং বিভিন্ন সময় নানা ধরনের নাম দিয়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছে। একবার আন্দোলন করার পর বলে যে শীতের পরে আন্দোলন হবে, গ্রীষ্মের পর হবে, বর্ষার পর হবে, বার্ষিক পরীক্ষার পর হবে। এভাবে নানা টাইম তারা দিয়েছে বিভিন্ন সময়। গত ১৪ বছর ধরে তারা যে ঘোষণা দিয়েছে, ১৬ জানুয়ারির কর্মসূচি ঘোষণাও সেটার ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু না।’
বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। কন্টিনেন্টাল ইউরোপে, অ্যামেরিকায় এবং ইউকে-তে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুতের রেশনিং করা হচ্ছে।
‘বাংলাদেশে সেই হারে দাম বাড়ানো হয়নি। জনগণের যাতে অসুবিধা না হয় সে বিবেচনায় বিদ্যুৎ খাতে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। সেই ভর্তুকি কিছুটা কমানোর জন্য সামান্য দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘২৯ জানুয়ারি জনসভার দিনে রাজশাহী শহর লোকারণ্য হয়ে যাবে। আমরা মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশের ডাক দিয়েছি। তবে পুরো শহরই সেদিন সমাবেশে রূপান্তরিত হবে। তাতে লাখ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটবে।’
আরও পড়ুন:সিলেটের রাজপথে নিজেদের শক্তি দেখাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দুই দল শনিবার দুপুরে নগরের পৃথক স্থানে কর্মসূচি দিয়েছে। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল দুটি এর মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দিতে চাইছে।
জানা যায়, প্রায় ৫ বছর পর একই দিনে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে সিলেটের রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। এর আগে সবশেষ ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে মুখোমুখি হয় তারা। ওইদিন খালেদা জিয়ার সাজার রায়কে কেন্দ্র করে ঘোষিত কর্মসূচি নিয়ে নগরের কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অনেকে। এরপর উভয় দল নানা ইস্যূতে রাজপথে সরব থাকলেও কখনও মুখোমুখি হয়নি।
তবে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি না থাকলেও গত বছরের ৬ নভেম্বর রাতে জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে নগরের রিকাবীবাজারে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
শনিবার ‘বিভাগীয় সমাবেশ’ ও ‘শান্তি সমাবেশ’-এর মাধ্যমে আবার রাজপথে মুখোমুখি হচ্ছে দুদল। দীর্ঘদিন পর একই দিনে দুই দলের কর্মসূচির কারণে সংঘাতের শঙ্কাও দেখা দিয়েছে। তবে দুই দলের নেতাদের প্রত্যাশা, শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে সমাবেশ।
‘আওয়ামী সন্ত্রাস, সরকারের দমন-নিপীড়ন ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে, বিরোধী দলের গ্রেপ্ততারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানোসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা’ দাবিতে গত জানুয়ারিতেই সিলেটসহ সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। শনিবার বেলা ২টায় সিলেট রেজিস্ট্রি মাঠে এই সমাবেশ শুরু হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান।
সমাবেশ সফলে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটজুড়ে কর্মিসভা, পথসভা, জনসংযোগের মাধ্যমে সমাবেশে ব্যাপক জনসমাগমের চেষ্টা করছেন তারা। সমাবেশের বিষয়টি অবহিত করে দলটির পক্ষ থেকে মহানগর পুলিশ কমিশনার বরাবরে চিঠিও দেয়া হয়েছে।
এই সমাবেশ সফলে নগরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে শুক্রবার প্রস্তুতি সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির।
তিনি বলেন, ‘৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিএনপি আহূত বিভাগীয় সমাবেশ ইতিহাস সৃষ্টি করবে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুধু জাতীয়তাবাদী শক্তি নয়, গণতন্ত্রকামী সিলেটবাসীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যের সূচনা হয়েছে। সিলেটবাসী সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ সফলে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।’
অপরদিকে একই দিনে সিলেটে ‘শান্তি সমাবেশ’ করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। প্রথমে এই সমাবেশ বিএনপির সমাবেশস্থল রেজিস্ট্রি মাঠে করার ঘোষণা দেয় দলটি। পরে স্থান পরিবর্তন করে সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিকেল ৩টায় এই সমাবেশ শুরু হবে। শান্তি সমাবেশ সফলেও প্রচার চালাচ্ছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের মাধ্যমে রাজপথে নিজেদের শক্ত অবস্থানের জানান দিতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি।
শান্তি সমাবেশ সফলে বৃহস্পতিকার সন্ধ্যায় প্রস্তুতি সভা করে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ। এতে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে স্ব স্ব ওয়ার্ড থেকে মিছিল সহকারে সমাবেশে অংশগ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
সভায় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দেশব্যাপী বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও অগ্নি-সন্ত্রাস রুখে দিতে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। কোনোভাবেই তাদেরকে সাধারণ মানুষের জান-মালের ক্ষতি করার সুযোগ দেয়া হবে না।’
দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি আর ব্যাপক শো-ডাউনের প্রস্তুতির কারণে হঠাৎ করেই সিলেটের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে উত্তাপ। উঁকি দিচ্ছে সংঘাতের শঙ্কাও।
তবে বিএনপি শান্তিুপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে চায় জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘সিলেটের রাজনীতিতে সম্প্রীতির ঐতিহ্য রয়েছে। আমরা আশাবাদী এটা কেউ নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। যার যার কর্মসূচি যার যার মতো করে পালন করবেন। তবে কোনো প্রতিবন্ধকতা এলে তা জয় করে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের সমাবেশ সফল করবে। আমরা সেরকম প্রস্তুতি নিয়েছি।’
বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করলে সংঘাত হবে না জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবসময় শান্তিপূর্ণ রাজনীতির পক্ষে। রাজনৈতিক সহাবস্থানের পক্ষে। তাই আমরা উদারতা দেখিয়ে নিজেদের কর্মসূচির স্থানও পরিবর্তন করেছি। এখন বিএনপি যদি বিশৃঙ্খলা না করে তবে আমাদের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবেই শেষ হবে।’
দুই দলের পৃথক কর্মসূচির কারণে বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশও। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল থেকেই নগরে অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। নগরের সব মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নগরের প্রবেশপথগুলোতে পেকপোস্ট বসানো হয়েছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য পুলিশ সতর্ক রয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা যতদিন রাষ্ট্রক্ষমতায় আছেন দেশের উন্নয়নের ধারাও ততদিন বজায় থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এই ধারা বজায় রাখতে মানুষ আবারও নৌকা প্রতীকে ভোট দেবে বলে মনে করেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন এবং চক্ষু চিকিৎসা সেবা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সামনে আমাদের নির্বাচন আসছে। শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় আছেন, ততদিন দেশে শান্তি-সমৃদ্ধি, উন্নয়ন আছে। দেশের মানুষ পিছিয়ে যেতে চায় না, বিএনপির অন্ধকার যুগে, বোমার যুগে যেতে চায় না। আমরা আশা করবো, জনগণ আগামী নির্বাচনে বিপুল ভোটের শেখ হাসিনার দলকে, শেখ হাসিনার পার্থীকে জয় লাভ করাবে।’
বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে বিএনপি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে চায়। কিন্তু বিএনপি জানে না, আওয়ামী লীগ ইস্পাতের সরকার। এখানে হাত দিলে হাত কেটে যাবে। কারণ জনগণের জন্য যারা কাজ করে, জনগণ তাদের সঙ্গে আছে। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে, শেখ হাসিনার সঙ্গে আছে।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘চক্ষু রোগীরা বিনামূল্যে চোখ অপারেশন ও চোখের লেন্স পাচ্ছেন। রোগীদের যে লেন্স দেয়া হচ্ছে, তার প্রতিটি লেন্সের দাম ২০-৩০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ পাবেন এবং রোগীদের থাকা খাওয়ার ফ্রি ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়া, স্বাস্থ্য সেবার উন্নতি করা এবং দেশের মানুষকে ভালো ও শান্তিতে রাখা আওয়ামী লীগের কাজ। কারণ আমরা মনে করি দেশের মানুষকে ভালো রাখা আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এই রাজনীতি আমরা করতে চাই।’
বিএনপির সমালোচনা করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার বিনামূল্যে মানুষের চোখের অপারেশন করে ও চোখের লেন্স পরায়। আর বিএনপির গ্রেনেড হামলায় বহু মানুষের চোখ উঠে গেছে, চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বিএনপি মানুষের চোখের আলো ছিনিয়ে নেয় আর আওয়ামী লীগ মানুষের চোখের আলো ফিরিয়ে দেয়।’
মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে ছানি অপারেশন এবং চক্ষু চিকিৎসা সেবা প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিনামূল্যে চক্ষু সেবার মাধ্যমে প্রায় ৮ শ লোক নতুন করে চোখের আলো পাবেন। অপারেশন ছাড়া এর আগে প্রায় ৪ হাজার চক্ষু রোগীকে বিভিন্ন চিকিৎসা এবং ৫ হাজার চশমা দেয়া হয়েছে। আগামীতেও মানিকগঞ্জবাসির জন্য বিনামূল্যে চক্ষু সেবার ব্যবস্থা করা হবে।
এ সময় ন্যাশনাল আই কেয়ার এর লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পৌরসভার মেয়র মো. রমজান আলী, কর্নেল মালেক মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাকির হোসেন, সিভিল সার্জন মো. মোয়াজ্জেম আলী চৌধুরী খান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:খুলনা মহানগর বিএনপির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। অথচ যেদিনের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে এই নাশকতার অভিযোগ, সেদিন তিনি ছিলেন পুলিশের হেফাজতে।
তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই দিন তিনি ঘটনাস্থলে তো ছিলেই না, ছিলেন অন্য একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে পুলিশের জিম্মায়। এই বিষয়ে পুলিশ আনুষ্ঠানিক ভাবে কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
সূত্র জানায়, বুধবার দুপুরে খুলনা সদর থানা এলাকায় আহসান আহমেদ রোডে নিজের ছেলেকে কোচিং সেন্টারে দিতে এসে গ্রেপ্তার হন এইচ এম আসলাম হোসেন। পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে পুলিশ বাদী একটি মামলার অজ্ঞাত আসামির তালিকায় ফেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদর থানা সূত্র জানায়, এইচ এম আসলাম হোসেনকে ৪ ডিসেম্বর সদর থানায় পুলিশের করা এক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলাটি দায়ের করেছিলেন সদর থানার এস আই মো. শাহিন কবির। তাতে ৮০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, যাদের মধ্যে ৩৮ জন এজাহারনামীয় ও বাকিরা অজ্ঞাত।
ওই মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ৩ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে খুলনার লোয়ার যশোর রোডের বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেডের দক্ষিণ পাশের গেটের সামনে এই মামলার আসামিরা সারাদেশে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, কেপিআই ধ্বংস ও নাশকতার পরিকল্পনার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র ও ককটেল বোমা নিয়ে সমবেত হন। সেখান থেকে পুলিশ দু’জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি স্টিলের রামদা, একটি কাঠের বাতা ও তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক বাকিদেরকে মামলার আসইম করা হয়েছে।
আরও বলা হয়েছে, এসব আসামি বর্তমান সরকারকে উচ্ছেদ করার জন্য নাশকতার যড়যন্ত্র করছিল।
মামলাটি ১৯৭৪ সালের দ্য স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্টের ১৫(৩)/২৫-ডি ও ১৯০৮ সালের দ্য এক্সপ্লোসিভ সাবস্ট্যান্স অ্যাক্টের ৪ ধারায় রেকর্ড করেছিলেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৩ ডিসেম্বর দুপুরে খুলনা সদর থানা এলাকা থেকে এইচ এম আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময়ে তাকে গত বছরের ২৬ মে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় আটক করে পরদিন সকালে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।
খুলনার জেল সুপার মোহাম্মদ রফিকুল কাদেরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নথিপত্র দেখে নিশ্চিত করেন যে ৪ ডিসেম্বর এইচ এম আসলাম অন্য এক মারামারির মামলায় জেলে ছিলেন। ১৫ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানা পুলিশের কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তবে ঘটনাটি জানতে পেরে কোর্ট পুলিশের কাছে থানা থেকে আসলামকে ফেরত চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাৎক্ষণিক আসলামকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দিয়েছিল পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার তাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমি কিছু জানি না। পরে জেনে জানানো হবে।’
খুলনা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন, ‘আমাদের খুলনা বিএনপির ২ শতাধিক নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছেন। তাদের প্রত্যেককে সরকার বিরোধী নাশকতা মামলার আসামি করা হয়েছে। পুলিশ যে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাচ্ছে তার বড় প্রমাণ আসলামের এই ঘটনা। বাস্তবে আসলে সেদিন ওইরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’
আসলাম হোসেনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আদালত থেকে ওইদিনের ঘটনার সব নথি উদ্ধার করেছি। তাতে স্পষ্ট প্রমাণ হচ্ছে, ঘটনার সময়ে তিনি পুলিশের জিম্মায় ছিলেন। কারাগারে থেকে তিনি বাইরে নাশকতা কীভাবে করলেন?
‘মূল কথা হলো, শনিবার খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে পুলিশ আবার ধড়পাকড় শুরু করেছে। তবে এভাবে আমাদের আন্দোলন দমানো যাবে না।’
দেশের ছয়টি আসনের উপনির্বাচনে কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে ‘বানোয়াট’ আখ্যা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ক্ষমতাসীন দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা শুক্রবার এক বিবৃতিতে এমন আখ্যা দেন।
বিএনপির ছেড়ে দেয়া ছয়টি আসনে বুধবার যে উপনির্বাচন হয়, তাতে সামগ্রিক ভোটার পরিস্থিতি ৫ শতাংশের বেশি হয়নি বলে বৃহস্পতিবার দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, কোনো আসনে ভোটার উপস্থিতি ১৫ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি নয়, তবে বিএনপির হিসাব বলছে, সংখ্যাটা ৫ শতাংশের বেশি হবে না।
ওই বক্তব্যের এক দিন পর দেয়া বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, উপনির্বাচনে সরকার পরিবর্তনের বিষয় থাকে না বলে জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এ নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম থাকে।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি আরও বাড়বে এবং মানুষ ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট দেবে।
উপনির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বুধবার অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনগুলোয় ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে জাতিকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছেন। তিনি বিএনপির এক হিসাব তুলে ধরে বলেছেন, উপনির্বাচনগুলোয় ভোটার উপস্থিতি ৫ শতাংশের বেশি হয়নি, যা সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।’
কাদের আরও বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের লক্ষ্যে এ ধরনের নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন। প্রচণ্ড শীত ও প্রতিকূল আবহাওয়া উপেক্ষা করে ভোটাররা ভোট দিতে এসেছিলেন। সবগুলো উপনির্বাচনে ২৫ শতাংশের বেশি ভোটাররা ভোট প্রদান করেছেন।’
‘এমনকি ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৪৫ শতাংশের মতো। উপনির্বাচনে যেহেতু সরকার পরিবর্তনের কোনো বিষয় থাকে না, সেহেতু জাতীয় নির্বাচনের তুলনায় এটা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ কম থাকে।’
আরও পড়ুন:ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি ও ফুচকা উৎসবের নামে ‘অশ্লীল নৃত্য’ আয়োজনের অভিযোগে করা আলাদা দুটি মামলায় প্রায় চার মাস কারাগারে থাকা রাজবাড়ীর মহিলা দলের নেত্রী সোনিয়া আক্তার স্মৃতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
রাজবাড়ী জেলা কারাগার থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মুক্তি পান তিনি।
মুক্তির পর স্মৃতি বলেন, ‘আমি সঠিক কথাই লিখেছিলাম। সত্যি কথা বলার অপরাধে চার মাস মাসুম দুটি বাচ্চা রেখে আমাকে জেল খাটতে হয়েছে। এতে আমার কোনো আফসোস নেই।
‘কারণ আমি জানি পুরো বাংলাদেশের মানুষ আমার পাশে ছিল। আর আমার দলের জন্য চার মাস কেন, চার বছরও জেল খাটতে পারি।’
স্মৃতি আরও বলেন, ‘একজন সমাজকর্মী হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করি। রাত-বিরাতে মুমূর্ষু রোগীর জন্য বের হই; তাদের রক্ত জোগাড় করে দিই। এ জন্য অনেক খারাপ কথা শুনতে হয়েছে, কিন্তু যাদের উপকার হয়েছে, তাঁরা খুশি হয়েছেন।’
স্মৃতি রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি জেলা মহিলা দলের সদস্য। দুই সন্তানের এ জননী শহরের বেড়াডাঙ্গা এলাকায় থাকেন।
স্মৃতির ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ‘আপত্তিকর’ পোস্টের বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন সামসুল আরেফিন চৌধুরী নামের আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে ৫ অক্টোবর রেকর্ড করা হয়। ওই দিনই স্মৃতিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযোগ অনুযায়ী, গত বছরের ৩১ আগস্ট স্মৃতি তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন, যাতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে ‘আপত্তিকর’ কথা লেখেন। অনেকে পোস্টটি দেখায় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ন ও মানহানি হয়।
মামলায় রাজবাড়ী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হন স্মৃতি। এরপর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। এর শুনানি নিয়ে ৩১ অক্টোবর তাকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেয় হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে ২ নভেম্বর তার জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
চেম্বার আদালত বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠায়। এর ধারাবাহিকতায় ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে শুনানি হয়। পরে ১৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ স্মৃতিকে ছয় মাসের জামিন দেয়।
স্মৃতির বাবা আবদুস সাত্তার মল্লিক বলেন, ‘বাংলাদেশে জামিন হয়, কিন্তু মুক্তি মেলে না। আমার বাচ্চা আমার কাছে ফিরে এসেছে। আমার বুকের মানিক। আমার খুব ভালো লাগছে।’
রাজবাড়ী জেলা বারের আইনজীবী ও স্মৃতির মনোনীত আইনজীবী নেকবর হোসেন মনি জানান, বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির মামলা ও ফেসবুক গ্রুপ ‘খাদক বাঙ্গালী’র আয়োজনে রাজবাড়ী শিশু পার্কে অশ্লীল নৃত্য আয়োজন করার অভিযোগে মামলায় জামিন পান স্মৃতি। সন্ধ্যায় জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
সোনিয়া আক্তার স্মৃতি জামিন পেলে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন:মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় পাচ্ছে মেহেরপুর জেলা। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ লক্ষ্যে একটি বিল পাস হয়েছে।
অধিবেশনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ‘মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয়, মেহেরপুর বিল-২০২৩’ উত্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস হয়।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিরোধী দলীয় সদস্যরা। তাদের প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এরপর বিলের ওপর আনীত সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করেন স্পিকার।
১০ জানুয়ারি সংসদে বিলটি উত্থাপনের পর তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আদেশ-১৯৭৩ এর বিধানাবঈ পরিপালন করতে হবে। রাষ্ট্রপতি হবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য।
আচার্য নির্ধারিত শর্তে স্বনামধন্য একজন শিক্ষাবিদকে চার বছরের জন্য উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন। কোনো ব্যক্তি একাদিক্রমে বা অন্য কোনোভাবে উপাচার্য হিসেবে দুই মেয়াদের বেশি নিয়োগ লাভের যোগ্য হবেন না। আচার্য যেকোনো সময় উপাচার্যের নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
বিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্মচারীদের চাকরির শর্তাবলী নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বেতনভোগী শিক্ষক ও কর্মচারী, সংসদ সদস্য বা স্থানীয় সরকারের কোনো পদে নির্বাচিত হতে প্রার্থী হতে চাইলে ওই নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি থেকে ইস্তফা দেবেন।
বিলে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনে আচার্যের অনুমোদন নিয়ে ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। বিজনেস ইনকিউবেটর হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্থাপিত বা পরিচালিত কোনো বিজনেস ইনকিউবেটর, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে সব সহযোগিতা দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা শিক্ষার্থী কর্তৃক কোনো উদ্ভাবন, মেধাস্বত্ব, আবিষ্কার বা প্রক্রিয়া, বাজারজাত এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য সহযোগিতা প্রদান।
আরও পড়ুন:আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সরকারের একের পর এক উন্নয়ন কাজ দেখে বিএনপি অন্তর্জ্বালায় ভুগছে। কত যে জ্বালা! পদ্মা সেতুর জ্বালা, মেট্রোরেলের জ্বালা, বঙ্গবন্ধু ট্যানেলের জ্বালা, উড়াল সেতুর জ্বালা, ১০০ সেতুর জ্বালা, ১০০ সড়কের জ্বালা। এই জ্বালায় তারা মরে যাচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল (এমআরটি লাইন-১) নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা জানান।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচল ৪ নম্বর সেক্টরে ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-১ নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘সামনে আছে রূপপুর, মাতারবাড়ি, পায়রা, রামপাল বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, সমুদ্র বিজয়, সীমান্ত বিজয়। এসবই শেখ হাসিনার উন্নয়নের অর্জন। এই অর্জন বিএনপি সইতে পারছে না।’
আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর সরকার পতন, তারেক রহমানের আগমন সবই ভুয়া। বিএনপির আন্দোলন ও সরকার পতন সবই ভুয়া। ‘বিএনপি শুরু করেছে বিক্ষোভ দিয়ে, এখন করছে নীরব পদযাত্রা। পথ হারিয়ে বিএনপি এখন পদযাত্রায়।
‘আপনাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। যতদিন শেখ হাসিনার হাতে থাকবে দেশ, পথ হারাবে না বাংলাদেশ। কাজেই আপনারা প্রস্তুত থাকুন, সামনে খেলা হবে, ডিসেম্বরে ফাইনাল খেলা। ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, আগুন-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ও অস্ত্র পাচারের বিরুদ্ধে খেলা হবে?’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এই জনপদে দুইজন মানুষ কোনোদিন অস্তিত্ব হারাবেন না। একজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের স্বাধীনতার জন্য। তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য